মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
বিশ্বনবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শ (ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম রহ. এর যাদুল মা‘আদ হতে সংক্ষেপিত)
লেখকঃ ড. আহমাদ ইবন উসমান আল-মাযইয়াদ
১৭
(১৫) পানাহার প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা [যাদুল মা‘আদ ১/১৪২।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/418/17
(ক) আহার প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালার বিবরণ:
১. যা কিছু খাবার উপস্থিত করা হতো তা তিনি ফিরিয়ে দিতেন না, আর যা কিছু মওজুদ নেই তার জন্য ভনিতা বা কৃত্রিমতা করতেন না, বরং পবিত্র-হালাল বস্তুসমূহ হতে যা কিছু তাঁর সামনে পেশ করা হতো তা থেকে খেয়ে নিতেন। কিন্তু তাঁর রুচিসম্মত না হলে হারাম না বলে তা পরিত্যাগ করতেন, রুচিসম্মত না হওয়া সত্ত্বেও কোনো কিছু নিজের উপর জরবদস্তি করে খেতেন না। তিনি কখনই কোনো খাবারে দোষ প্রকাশ করেন নি, খাবার তাঁর রুচিসম্মত হলে খেয়েছেন, আ রুচিসম্মত না হলে পরিত্যাগ করেছেন, যেমন তিনি অভ্যস্ত না হওয়ায় ‘দ্বাব্ব’ [বা ষাণ্ডা জাতীয় এক প্রকার প্রাণী।] খাননি।
২. যা কিছু মওজুদ থাকতো তা হতে তিনি আহার করতেন, আর কিছুই না পেলে তিনি ধৈর্যধারণ করতেন, এমনকি তিনি ক্ষুধার কারণে পেটে পাথর বাঁধেন, এক চাঁদ, দু’চাঁদ ও তিন চাঁদ অতিবাহিত হতো, কিন্তু তার ঘরে আগুন প্রজ্বলন করা হতো না।
৩. তাঁর আদর্শ ছিল না যে, নিজেকে একই প্রকার খাবারের উপর অভ্যস্ত করে নেওয়া এমনভাবে যে, তা ছাড়া অন্য কিছুই খাবেন না।
৪. তিনি ভেঁড়া, দুম্বা ও মুরগীর গোশ্ত এবং হুবারা পাখির গোশ্ত, জঙ্গলী গাধার গোশ্ত, খারগোশ ও সামুদ্রিক খাদ্য এবং ভূনা খাদ্য খেয়েছেন। কাঁচা খেজুর ও শুকনা খেজুর খেয়েছেন। তিনি ‘সারীদ’- অর্থাৎ গোশ্ত ও রুটি মেশানো এক প্রকার উপাদেয় খাবার খেয়েছেন। তিনি যায়তুনের তৈল দিয়ে রুটি খেয়েছেন। তিনি তাজা খেজুরের সাথে খিরা খেয়েছেন। তিনি রান্নাকৃত কদু খেয়েছেন এবং তিনি সেটি পছন্দ করতেন। তিনি ডেকচিতে অবশিষ্ট শুকনা গোশতের টুকরো খেয়েছেন এবং তিনি দুধের সর দিয়ে খেজুর খেয়েছেন।
৫. তিনি গোশ্ত পছন্দ করতেন এবং তাঁর নিকট অত্যধিক পছন্দনীয় ছিল বকরীর বাহু ও অগ্রবর্তী অংশ।
৬. তিনি স্বদেশের নবাগত ফল খেতেন এবং তা থেকে আত্মরক্ষা করতেন না।
৭. অধিকাংশ সময় তাঁর খাবার যমীনের উপর দস্তরখানে রাখা হতো।
৮. তিনি ডান-হাতে আহার করার নির্দেশ দিতেন এবং বাম-হাতে খেতে নিষেধ করতেন। এবং বলতেন: “শয়তান বাম-হাতে খায় এবং বাম হাতে পান করে।” [মুসলিম।]
৯. তিনি তিন আঙ্গুলে আহার করতেন এবং তিনি আহার শেষে আঙ্গুল চেটে খেতেন।” [মুসলিম।]
১০. তিনি হেলান দিয়ে খাবার খেতেন না।” [বুখারী।]
আর হেলান বা ঠেস্ লাগানো তিন প্রকারে হয়ে থাকে : - ১. একপার্শ্বে ঝুঁকে আহার করা, ২. চারজানু হয়ে বসে আহার করা, ৩. এক হাতের উপর ঠেস্ দিয়ে বসে অপর হাতে আহার করা, উক্ত তিন প্রকারই নিন্দিত। তিনি উভয় হাঁটু খাড়া অবস্থায় পাছার উপর বসে আহার করতেন এবং বলতেন: “আমি বসি যেভাবে একজন দাস বসে আর আহার করি যেভাবে একজন দাস আহার করে।
১১. যখন তিনি খাবারে হাত রাখতেন তখন
«بسم الله» .
‘বিসমিল্লাহ্’ বলতেন এবং তিনি আহারকারীকে ‘বিসমিল্লাহ্’ বলার নির্দেশ দিতেন, তিনি আরো বলেন: “যখন তোমাদের কেউ খাবার খায় তখন শুরুতে যেন ‘বিসমিল্লাহ্’ বলে, আর যে শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ্’ বলতে ভুলে গেলো সে যেন বলে:
«بسم الله في أوله وآخره»
‘বিসমিল্লাহি ফী আওয়ালিহী ওয়া আখিরীহী।”
“শুরুতে ও শেষে আল্লাহর নামে।” [তিরমিযী।]
১২. তিনি বলেন: “যে খাবারে আল্লাহর নাম নেয়া হয় না, শয়তান তাকে নিজের জন্য হালাল করে নেয়।” [মুসলিম।]
১৩. তিনি খাবার খেতে বসে মেহমানদের সাথে কথা বলতেন এবং তাদের উপর বারংবার খাবার উঠিয়ে দিতেন, যেমনটি অতি আপ্যায়ণকারী লোকেরা করে থাকে।
১৪. যখন তার সামনে থেকে খাবার খাওয়ার পর বাকী অংশ উঠিয়ে নেওয়া হতো তখন তিনি বলতেন:
«الحمد لله حمداً كثيراً طيباً مباركا فيه غير مكفي ولا مودع ولا مستغنى عنه ربنا» .
“পাক-পবিত্র, বরকতময় অনেক অনেক প্রশংসা আল্লাহর জন্য, হে আমাদের প্রভু! যে খাদ্য হতে নির্লিপ্ত হতে পারবো না, আর যা থেকে কখনই চিরতরে বিদায় নিতে পারবো না এবং তা হতে অমুখাপেক্ষীও হবো না।” [বুখারী।]
১৫. তিনি কারো নিকট পানাহার করলে তাদের জন্যে দু‘আ না করা পর্যন্ত বের হতেন না এবং বলতেন:
«أفطر عندكم الصائمون وأكل طعامكم الأبرار وصلت عليكم الملائكة» .
“তোমাদের সাথে ইফতার করলো রোযাদারগণ, তোমাদের আহার গ্রহণ করলো সৎ লোকগণ এবং তোমাদের জন্য শান্তি কামনা করলো ফেরেশতাগণ।” [আবু দাউদ।]
১৬. যদি কেউ মিসকীন-অভাবগ্রস্ত লোকদের মেহমানদারী করতো তিনি তার জন্যে দু‘আ করতেন এবং তার প্রশংসা করতেন।
১৭. তিনি ছোট কিংবা বড়, স্বাধীন কিংবা ক্রীতদাস, বেদুঈন কিংবা মুহাজির বা ভিনদেশী যে কারো সাথে বসে পানাহার করতে ঘৃণা করতেন না।
১৮. রোযারত অবস্থায় তাঁর সামনে খাবার পেশ করা হলে তিনি বলতেন: আমি রোযাদার।” [বুখারী, মুসলিম।] এবং মেহমানের প্রতি নির্দেশ জারী করেন যে, যদি সে রোযাদার হয়, তাহলে যেন মেজবানের জন্যে দু‘আ করে, আর যদি সে রোযাদার না হয় তাহলে যেন আহার করে।” [মুসলিম।]
১৯. কেউ বিশেষভাবে খাবার তৈরী করে তাঁকে দাওয়াত দিলে, তখন তার সাথে অন্য কেউ এসে শামিল হলে, তিনি মেজবানকে তার সম্পর্কে অবহিত করে বলতেন: এই ব্যক্তি আমাদের সাথে এসেছে, তোমার ইচ্ছা হলে তাকে অনুমতি দিতে পার, নতুবা তুমি চাইলে সে চলে যাবে।” [বুখারী।]
২০. সাহাবীদের কেউ কেউ তাঁর নিকট অভিযোগ করলো যে, তারা পানাহার করে পরিতৃপ্তি লাভ করে না, তখন তিনি তাদেরকে নির্দেশ প্রদান করেন যে, তোমরা বিচ্ছিন্নভাবে না হয়ে একত্রে খাবার খাও এবং আল্লাহর নাম নিবে, এতে তোমাদের খাদ্যে বরকত হবে।” [আবু দাউদ।]
২১. তিনি বলেছেন : “আদম-সন্তান পেটের চেয়ে অধিক নিকৃষ্ট কোনো পাত্র পূর্ণ করেনি, তার জন্যে কয়েকটি লোকমাই যথেষ্ট ছিল, যদ্বারা স্বীয় পিঠ সোজা রাখবে, আর অত্যধিক প্রয়োজন হলে এক -তৃতীয়াংশ খাবারের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ পানীয়ের জন্য এবং এক-তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য।” [তিরমিযী, ইবন মাজাহ।]
২২. এক রাত্রে তিনি ঘরে প্রবেশ করে খাবার তালাশ করে কিছুই পেলেন না, তখন তিনি বললেন:
«اللهم أطعم من أطعمني واسق من سقاني» .
‘আল্লা-হুম্মা আত্বয়িম মান আত্বআমানী, ওয়াসকি মান-সাক্বানী।”
“হে আল্লাহ! যে আমাকে আহার করাবে তুমি তাকে আহার করাও, আর যে আমাকে পান করাবে তুমি তাকে পান করাও।’ [মুসলিম।]
(খ) পান করা প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালার বিবরণ [যাদুল মা‘আদ ২/৩৬৬; ৪/২০৯।]
১. পান করা প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা ছিল সর্বাপেক্ষা পূর্ণাঙ্গ, যাতে স্বাস্থ্যের হেফাযত হয়। ঠান্ডা-মিষ্টি পানীয় তাঁর নিকট সর্বাধিক পছন্দনীয় ছিল। তিনি কখনো খালেস দুধ পান করতেন, আবার কখনো পানি-মিশ্রিত দুধ, তিনি দুধ পান করে বলতেন:
«اللهم بارك لنا فيه وزدنا منه» .
‘আল্লা-হুম্মা বারিক লানা-ফিহ্, ওয়াযিদনা-মিনহু,
“হে আল্লাহ্ ! তুমি আমাদের এ খাদ্যে বরকত দাও এবং তা আরো বেশী করে দাও, নিঃসন্দেহে এমন কোনো বস্তু নেই যা খানা-পিনার জন্য যথেষ্ট হতে পারে একমাত্র দুধ ব্যতীত।” [তিরমিযী।]
২. খাবারের উপর পান করা তাঁর আদর্শ ছিল না, তাঁর জন্যে রাতের প্রথমভাগে ‘নবীয’ বানানো হতো এবং তিনি তা সকালে এবং আগামী রাতে এবং দ্বিতীয় দিনে ও রাতে এবং তৃতীয় দিন আসর পর্যন্ত পান করতেন, অতঃপর অবশিষ্টগুলি খাদেমকে পান করাতেন অথবা ঢেলে দিতে নির্দেশ দিতেন।
‘নাবীয’ মানে পানিতে পাকা খেজুর ঢেলে রেখে তা মিষ্টি করা, তিন দিন পর নেশাদ্রব্যে পরিণত হওয়ার আশঙ্কায় তিনি তা পান করতেন না।
৩. তাঁর অভ্যাসগত আদর্শ ছিল বসাবস্থায় পান করা এবং যে দাঁড়ানো অবস্থায় পান করে তাকে তিনি ধমক দেন, তবে তিনি একদা দাঁড়ানো অবস্থায় পান করেন, কেউ বলেন: তা বিশেষ প্রয়োজনে ছিল, আর কেউ বলেন: নিষেধাজ্ঞা রহিত করার জন্য ছিল, আবার কেউ বলেন : উভয়টি জায়েয ঘোষণা করার জন্য ছিল।
৪. তিনি পানি পান করতে তিনবার নিঃশ্বাস নিতেন এবং বলতেন: “এটি অধিক তৃপ্তিদায়ক, অধিক হযমকারী এবং অধিক উপকারী।” [মুসলিম।] এখানে তিনি তিনবার ‘নিঃশ্বাস নিতেন’ এর অর্থ হচ্ছে, তিনি পাত্রের বাইরে নিঃশ্বাস ফেলতেন, যেরূপ অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তিনি বলেছেন: “যখন তোমাদের কেউ পান করে তখন যেন পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস না ফেলে, বরং নিঃশ্বাস ফেলার সময় মুখ থেকে পাত্র সরিয়ে নিবে।” [তিরমিযী, ইবন মাজাহ।] তিনি পাত্রের ফাটল দিয়ে কিংবা মশকের মুখে মুখ লাগিয়ে পান করতে নিষেধ করেছেন।
৫. আর তিনি ‘আল-হামদুলিল্লাহ্’ বলতেন যখন পান শেষ করতেন এবং বলেন: “নিশ্চয় আল্লাহ্ সেই বান্দার উপর রাযী হন যে খাবার আহার করলে ‘আল-হামদুলিল্লাহ্’- বলে এবং পানীয় পান করলে ‘আল-হামদুলিল্লাহ’, বলে।” [মুসলিম।]
৬. তাঁর জন্যে মিষ্টি পানি আনা হতো, ভাল-উত্তম পানি যা লবণাক্ত নয় এবং তা থেকে তিনি গতকালের পুরানোটি গ্রহণ করতেন।
৭. তিনি পান করার পর অবশিষ্ট অংশ ডানে উপস্থিত ব্যক্তিকে দিতেন যদিও তাঁর বামে কোনো প্রবীণ ব্যক্তি থাকে।
৮. তিনি খাবার পাত্র ঢেকে রাখতে এবং মুখ বন্ধ করতে নির্দেশ দিতেন, যদিও এক টুকরা কাঠ দিয়ে হয় এবং যেন সে সময় ‘বিসমিল্লাহ্’ বলা হয় সে নির্দেশনা দিতেন।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/418/17
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।