মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
বিশ্বনবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শ (ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম রহ. এর যাদুল মা‘আদ হতে সংক্ষেপিত)
লেখকঃ ড. আহমাদ ইবন উসমান আল-মাযইয়াদ
৪
(২) সালাত আদায় করা প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালার বিবরণ [যাদুল মা‘আদ: ১/১৯৪]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/418/4
(ক) সানা পাঠ ও কেরাআত প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা:
১. যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের উদ্দেশ্যে দাঁড়াতেন, তখন তিনি ‘তাকবীর’-আল্লাহু আকবার’ বলে সালাত শুরু করতেন এর পূর্বে কিছুই পাঠ করতেন না এবং তিনি কখনই নিয়্যাত মুখে উচ্চারণ করেননি।
২. তিনি তাকবীরে তাহরিমা বলার সময় স্বীয় দু’হাতের আঙ্গুলগুলো সোজা করে তালু ক্বিবলামুখী অবস্থান দু’কানের লতি বরাবর কিংবা কাঁধ বরাবর উঠাতেন, অতঃপর ডান হাত বাম হাতের পিঠের উপর রাখতেন।
৩. তিনি কখনো নিম্নোক্ত দু‘আটি দ্বারা ইসতেফ্তাহ্ পাঠ করতেন:
( اللهم باعد بيني وبين خطاياي كما باعدت بين المشرق والمغرب، اللهم نقني من الذنوب والخطايا كما ينقى الثوب الأبيض من الدنس، اللهم اغسلني من خطاياي بالماء والثلج والبرد )
“হে আল্লাহ ! তুমি আমার ও আমার গুনাহ্ -খাতার মাঝে এমন দূরত্ব সৃষ্টি কর যেমনটি দুরত্ব সৃষ্টি করোছো পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝে। হে আল্লাহ ! আমার পাপ ও ভূলত্রুটিসমূহ হতে আমাকে এমনভাবে পরিষ্কার ও পবিত্র কর যেমনভাবে সাদা বস্ত্র ময়লা হতে পরিস্কার করা হয়। হে আল্লাহ ! আমার যাবতীয় পাপ ও ত্রুটি-বিচ্যূতিগুলো পানি, বরফ ও শিশির দ্বারা ধৌত করে দাও।”
আবার কখনো তিনি নিন্মোক্ত দু‘আটি পাঠ করতেন:
( وجهت وجهي للذي فطر السماوات والأرض حنيفاً وما أنا من المشركين، إن صلاتي ونسكي ومحياي ومماتي لله رب العالمين، لا شريك له وبذلك أمرت وأنا أول المسلمين )
“আমি সেই মহান সত্তার দিকে একনিষ্টভাবে আমার মুখ ফিরাচ্ছি যিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই, নিশ্চয় আমার সালাত, আমার কুরবানী তথা যাবতীয় ইবাদত, আমার জীবন এবং আমার মরণ একমাত্র সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর জন্য, তাঁর কোনো শরীক-অংশীদার নেই, আর এরই জন্য আমি আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।” [মুসলিম]
৪. তিনি ইসতিফতাহ এর দু‘আ পাঠ করার পর ‘আউযু বিল্লাহি মিনাশ্ শাইত্বোনির রাজীম-বলে সূরা ফাতিহা পাঠ করতেন।
৫. তিনি সালাতে দু’বার সেক্তা বা বাকরুদ্ধ বা নিশ্চুপ থাকতেন, একবার তাকবীরে তাহরীমা ও কেরাতের মধ্যখানে, বস্তুত: দ্বিতীয়টি সম্পর্কে মতবিরোধ রয়েছে, কোনো কোন বর্ণনায় তা ছিল সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর, অন্য বর্ণনায় রয়েছে তা ছিল রুকুর পূর্বে।
৬. তিনি সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর আরো একটি সূরা পাঠ করতেন। কখনো কেরাত লম্বা করতেন, আবার কখনো সফর বা অন্যকোনো বিশেষ কারণে কেরাত হাল্কা করতেন, তবে তিনি অধিকাংশ সময়ে মধ্যপন্থা অবলম্বন করতেন।
৭. তিনি ফজরের সালাতে প্রায় ষাট আয়াত, এমনকি একশত আয়াত পাঠ করতেন। তিনি ফজরের সালাত সূরা ‘ক্ব-ফ’ দ্বারা পড়েন এবং সূরা ‘আর-রূম’ দ্বারা, আবার সূরা ‘আত-তাকওয়ীর” দ্বারাও পড়েন। তিনি ফজরের উভয় রাকয়াতে সূরা যিলযাল পাঠ করেন। তিনি সফরকালে ফজরের সালাত ‘মোয়াউযাতাইন’-সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস দ্বারা পড়েন। একদা তিনি ফজরের সালাতে সূরা আল-মু’মিনুন পাঠ আরম্ভ করেন, অতঃপর প্রথম রাকায়াতে মূসা ও হারূন আলাইহিস সালাম এর ঘটনা পর্যন্ত পৌঁছলে তাঁর কাশি আসে, তখন তিনি রুকু করে ফেলেন।
৮. তিনি জুম‘আর দিন ফজরের সালাত ‘আলিফ-লাম-মীম সাজদাহ্ ও আদ-দাহর’ সূরাদ্বয় দ্বারা পড়তেন।
৯. তিনি যুহরের সালাতে কখনো কেরাত লম্বা করতেন, পক্ষান্তরে আসরের সালাত যুহরের কেরাতের অর্ধেক হতো যদি তা লম্বা হয়ে থাকে, আবার সেই অনুপাতে সংক্ষিপ্ত হতো।
১০. তিনি মাগরিবের সালাত একবার সূরা ‘আত-ত্বূর’ দ্বারা আদায় করেন, আরেকবার সূরা ‘আল মুরাসালাত’ দ্বারা।
১১. এশার সালাতে তিনি সূরা ‘আত-তীন’ পাঠ করেন এবং তিনি মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর জন্য এশার সালাতে সূরা ‘আশ-শামস’ ও সূরা ‘আল-আ‘লা’ এবং সূরা ‘আল-লাইল’ অথবা অনুরূপ সূরাসমূহ পাঠ করা নির্ধারিত করে দিয়েছেন, আর মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক এশার সালাতে সূরা বাক্বারা পাঠ প্রসঙ্গে অসম্মতি প্রকাশ করেছেন।
১২. তাঁর আদর্শ ছিল এক রাকাতে পূর্ণ সূরা পাঠ করা, আবার অনেক সময়ে তিনি এক সূরা দু’রাকাআতে পূর্ণ করতেন, আবার অনেক সময় তিনি সূরায় প্রথমাংশ পাঠ করতেন, কিন্তু (ফরয সালাতে) সূরার শেষাংশ কিংবা মধ্যমাংশ থেকে পাঠ করতেন বলে বিশুদ্ধ প্রমাণ পাওয়া যায় না। দুই সূরা এক রাকাআতে পাঠ করা তা নফল সালাতে করতেন। তিনি কোনো নির্দিষ্ট সালাতের জন্য কোনো সূরা এমনভাবে নির্দিষ্ট করতেন না যে ঐ সূরা সেই সালাতেই পড়তে হবে, একমাত্র জুম‘আ ও দুই ঈদের সালাত ব্যতীত।
১৩. তিনি ফজরের সালাতে এক মাস পর্যন্ত রুকুর পরে দু‘আ কুনুত পড়েছিলেন, অতঃপর তা পরিত্যাগ করেন, কিন্তু তাঁর এ কুনুত পাঠ কারণবশত ছিল। [অর্থাৎ ‘রাআল’-‘যাকাওয়ান’ গোত্রদ্বয়ের লোকেরা বি‘রে মা‘উনার নিকট বিশ্বাসঘাতকতা করে সত্তর জন সাহাবীকে হত্যা করলে তাদের উপর বদ-দো‘আস্বরূপ এক মাস পর্যন্ত তিনি কুনূতে নাযিলাহ্ পাঠ করেন। অনুবাদক।] অতঃপর উক্ত কারণ শেষ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট হুকুমও নিঃশেষ হয়ে যায়, তবে তাঁর আদর্শ ছিল বিশেষ বিপদাপদের সময় কুনুতে নাযিলাহ্ পাঠ করা, কিন্তু তা ফজরের সালাতের সাথে নির্দিষ্ট ছিল না।
(খ) সালাতের পদ্ধতি প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা: [যাদুল মা‘আদ : ১/২০৮।]
১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক সালাতের প্রথম রাকাতকে দ্বিতীয় রাকাত অপেক্ষা দীর্ঘায়িত করতেন।
২. তিনি কেরাত পাঠ শেষে শ্বাস ফিরে আসা পর্যন্ত নিশ্চুপ থাকতেন। অতঃপর উভয় হাত উঠিয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে রুকু করতেন এবং দু’টো হাত দিয়ে হাঁটু দু’টো ধারণকারীর ন্যায় আঁকড়ে ধরতেন এবং উভয় হাত পাঁজর থেকে তীরের রশির মতো সোজা করে রাখতেন এবং পিঠটা টেনে সোজা রাখতেন, বস্তুত মাথাটা উঁচু করতেন না এবং খুব নিচুও করতেন না, বরং কোমর ও পিঠের বরাবর রাখতেন।
“সকল ফিরিশতা ও জিবরাইলের প্রতিপালক অত্যন্ত পবিত্র।”
৪. সাধারণত তাঁর রুকু-সিজদাহগুলো দশবার তাসবিহ্ পাঠ করার সমপরিমাণ লম্বা হতো, তবে কখনো রুকু-সিজদাহ্ ক্বিয়ামের সমপরিমাণ দীর্ঘায়িত করতেন, কিন্তু তা শুধুমাত্র ‘সালাতুল লাইল’ বা রাত্রিকালীন সালাত তাহাজ্জুদে করতেন, নচেৎ অধিকাংশ সময় তাঁর নীতি ছিল যে, সমন্বয় ও সুষ্ঠুরুপে সালাত আদায় করা।
৫. তিনি
( سمع الله لمن حمده )
‘সামিআল্লা-হু লিমান হামিদা’
“যে তাঁর (আল্লাহর) প্রশংসা করেছে আল্লাহ তার সে প্রশংসা শুনেছেন।”
এ কথা বলে স্বীয় মাথা উঠাতেন।” [বুখারী] তখন উভয় হাত উত্তোলন করতেন এবং স্বীয় পিঠ সোজা করতেন, অনুরূপ যখন তিনি স্বীয় মাথা সিজদাহ্ হতে উত্তোলন করে পিঠ সোজা করতেন, আর সতর্ক করে বলতেন: “যে ব্যক্তি রুকু-সিজদায় তার পিঠ সোজা করে না, তার সালাতই হয় না।” [সুনানে তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ।]
তিনি রুকু থেকে সোজা হয়ে উঠার পর বলতেন:
( ربنا ولك الحمد )
‘রাব্বানা ওয়ালাকাল হামদ।’
“হে আমাদের রব! তোমারই জন্যে সকল প্রশংসা।”
আবার অনেক সময়ে বলতেন: ‘রাব্বানা লাকাল হামদ।’
আবার অনেক সময়ে বলতেন: ‘আল্লা-হুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদ।’
৬. তিনি এই ক্বিয়ামের রুকনকে রুকুর সমপরিমাণ দীর্ঘায়িত করতেন এবং দাঁড়ানো অবস্থায় বলতেন।
( اللهم ربنا ولك الحمد، ملء السموات والأرض وملء ما شئت من شيء بعدُ، أهل الثناء والمجد أحق ما قال العبد، وكلنا لك عبد، اللهم لا مانع لما أعطيت ولا معطي لما منعت ولا ينفع ذا الجد منك الجد )
“হে আল্লাহ আমাদের রব! তোমার জন্য ঐ পরিমাণ প্রশংসা যা আকাশমণ্ডলী ভর্ত্তি করে দেয়, যা পৃথিবী পূর্ণ করে দেয় এবং যা এই দু‘য়ের মধ্যবর্তী মহাশূন্যকে পরিপূর্ণ করে দেয়, আর এগুলি ছাড়া তুমি অন্য যা কিছু চাও তাও পূর্ণ করে দেয়, হে প্রশংসা ও গৌরবের অধিকারী ! বান্দার সবচেয়ে সত্যকথা, বস্তুত: আমরা সকলই তোমার বান্দা। হে আল্লাহ ! তুমি যা প্রদান কর তা রোধ করার এবং যা তুমি রোধ কর তা প্রদান করার সাধ্য কারো নেই, আর ধনবানের ধন তোমার আযাব থেকে মুক্তি পেতে কোনো উপকারে আসবে না।
৭. অতঃপর তিনি ‘আল্লাহু আকবার’ বলে সিজদায় যেতেন এবং তখন হাতদ্বয় উপরে উঠাতেন না। তখন প্রথমে হাঁটুদ্বয় তারপর উভয় হাত, অতঃপর কপাল ও নাক মাটিতে রাখতেন, তিনি কপাল ও নাকের উপর সিজদা করতেন, পাগড়ীর প্যাচের উপর নয়। তিনি বেশী বেশী যমীনের উপর এবং পানিযুক্ত কাদামাটির উপর সিজদা করতেন এবং খেজুরের পাতা দ্বারা বানানো চাটাই ও পাকা চামড়ার বিছানার উপর সিজদা করতেন।
৮. তিনি সিজদা অবস্থায় স্বীয় কপাল ও নাক পুরোভাবে যমীনে রাখতেন এবং উভয় হাত যমীন থেকে উপরে উঠিয়ে শরীরের দু’পার্শ্ব হতে পৃথক করে ব্যবধানে রাখতেন, ফলে বগলের সাদা অংশ পর্যন্ত দেখা যেতো।
৯. তিনি সিজদায় স্বীয় হাত কাঁধ বরাবর কিংবা দু’কানের লতি বরাবর রাখতেন এবং সিজদায় মধ্যপন্থা অবলম্বন করতেন পাদ্বয়ের আঙ্গুলগুলো ক্বিবলামুখী করে রাখতেন, দু’হাতের তালু ও আঙ্গুলগুলো মাটিতে বিছিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় রাখতেন, খোলে কিংবা গুছিয়ে রাখতেন না।
১১. সিজদার দু‘আ পাঠ শেষে তিনি ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত উত্তোলন না করে মাথা উঠাতেন। অতঃপর সোজা হয়ে বাম-পা বিছিয়ে তার উপর বসতেন এবং ডান পা খাড়া রাখতেন, উভয় হাত উভয় উরুর উপর রেখে উভয় কনুই উভয় উরু বরাবর উপরে রাখতেন, আর ডান হাত হাঁটু সংলগ্ন অংশের উপর রেখে কনিষ্ঠা ও অনামিকা আঙ্গুল দু’টো মুঠো করে এবং মধ্যমা ও বৃদ্ধ আঙ্গুল দু’টোর মাথা এক জায়গায় করে শাহাদাত আঙ্গুলটি উপরে তুলে ইশারা ও নড়াচড়া করে বলতেন:
( اللهم اغفر لي وارحمني واجبرني واهدني وعافني وازرقني )
“হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি রহম কর, আমার প্রয়োজন মিটাও, আমাকে হেদায়াত দাও, আমাকে নিরাপত্তা দান কর এবং আমাকে রিজেক্ব দাও।
১২. তাঁর আদর্শ ছিল এ রুকন তথা দু'সেজদার মাঝখানের বসাটাকে সেজদার সমপরিমাণ দীর্ঘায়িত করা।
১৩. অতঃপর তিনি উভয় উরুর উপর ভর দিয়ে পাদ্বয়ের প্রথমাংশের উপর (দ্বিতীয় রাকাতের জন্যে) সোজা দাঁড়াতেন, আর দাঁড়ানোর সাথে সাথে কেরাত পাঠ আরম্ভ করতেন এবং প্রথম রাকাতের ন্যায় দু‘আ ইস্তিফতাহ পাঠ করার জন্য নিশ্চুপ থাকতেন না। অতঃপর দ্বিতীয় রাকাত প্রথম রাকাতের ন্যায় আদায় করতেন শুধু চারটি বিষয় ব্যতীত, এক. তাকবীরে তাহরীমার পর নিশ্চুপ থাকা, দুই. দু‘আ ইসতিফতা পাঠ করা, তিন. তাকবীরে তাহরীমা, চার. প্রথম রাকাতকে দীর্ঘায়িত করা।
তিনি প্রথম রাকাতকে দ্বিতীয় রাকাত অপেক্ষা লম্বা করতেন, আবার অনেক সময়ে তিনি প্রকাম রাকাত ততক্ষণ দীর্ঘায়িত করতেন, যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো আগন্তক ব্যক্তির পায়ের আওয়াজ আর শুনতেন না।
১৪. তিনি যখন তাশাহহুদের জন্য বসতেন, তখন ডান-হাত ডান-উরুর উপর এবং বাম হাত বাম-উরুর উপর রেখে তর্জনী বা শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন, বস্তুত তখন শাহাদাত আঙ্গুলটি সোজা খাড়া কিংবা একেবারে বিছিয়ে রাখতেন না, বরং সামান্য ঝুঁকিয়ে রাখতেন, আর কনিষ্ঠা ও অনামিকা আঙ্গুল দু'টো মুঠো করে এবং মাধ্যমা ও বৃদ্ধ আঙ্গুল দুটোর মাথা এক জায়গায় করে শাহাদাত আঙ্গুলটি উত্তোলন করে তাশাহহুদ পাঠ করতেন এবং তার প্রতি দৃষ্টিপাত করতেন।
১৫. তিনি এ বৈঠকে সর্বদা আত্তাহিয়্যাতু পড়তেন এবং সাহাবীদেরকে তা শিক্ষা দিতেন:
( التحيات لله والصلوات والطيبات، السلام عليك أيها النبي ورحمة الله وبركاته، السلام علينا وعلى عباد الله الصالحين، أشهد أن لا إله إلا الله وأشهد أن محمداً عبده ورسوله )
“যাবতীয় সাদর-সম্ভাষণ, যাবতীয় সালাত, যাবতীয় পবিত্র ইবাদত খালেসভাবে আল্লাহর জন্য নির্ধারিত। হে নবী ! আপনার উপর সকল প্রকার শান্তি, আল্লাহর রহমত এবং তাঁর বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের উপর ও আল্লাহর সকল নেক বান্দাদের উপরও শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার কোনো উপাস্য নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লা্ল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দাহ ও রাসূল।”
তিনি এই বৈঠক খুবই সংক্ষেপ করতেন, যেন তিনি কোনো উত্তপ্ত পাথরের উপর বসে সালাত আদায় করছেন।
অতঃপর তিনি ‘আল্লাহু আকবার’ বলে উভয় উরুর উপর ভর দিয়ে উভয় পায়ের প্রথমাংশের উপর (তৃতীয় রাকাতের জন্যে) সোজা দাঁড়াতেন এবং স্বীয় হাত উত্তোলন করতেন। অতঃপর সূরা ফাতিহা পাঠ করতেন, আবার অনেক সময় শেষ দু’রাকাতে সূরা ফাতিহার পর কুরআনের কিছু অংশ পড়তেন।
১৬. তিনি শেষ তাশাহহুদে তাওয়াররুক করে বসতেন, “তিনি পাছাকে যমীনে ভর করে বসে স্বীয় পা এক দিকে বের করে দিতেন।”- [সুনানে আবু দাউদ], আর বাম পাকে ডান উরু ও পিন্ডলীর নিচ দিয়ে ডান দিকে বের করে দিয়ে ডান পা খাড়া করে রাখতেন, আবার কখনো ডান -পা বিছিয়ে রাখতেন, তখন ডান-হাত ডান-উরুর উপর করে তর্জনী বা শাহাদাত আঙ্গুলটি খাড়া করে রাখতেন, তিনি সালাতের শেষাংশে এ দু‘আ দ্বারা প্রার্থনা করতেন
( اللهم إني أعوذ بك من عذاب القبر، وأعوذ بك من فتنة المسيح الدجال، وأعوذ بك من فتنة المسيح الدجال، اللهم وأعوذ بك من المأثم والمغرم )
“হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট কবরের আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, আরো দাজ্জালের ফিত্না থেকে আশ্রয় চাচ্ছি, আর আশ্রয় চাচ্ছি দুনিয়ার জীবনের বিপর্যয় এবং মৃত্যুর যাতনা হতে, হে আল্লাহ ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি সমস্ত গুনাহ ও সব রকমের ঋণের দায় হতে।”
অতঃপর ‘আস্-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলে ডান ও বাম দিকে সালাম ফিরাতেন।
১৭. তিনি মুসল্লিকে সূতরা নিতে বলতেন, যদিও তীর ধনুক কিংবা লাঠি দ্বারা হয়। সফরকালে ও মাঠে-ময়দানে তাঁর জন্যে সুতরাস্বরূপ বর্শা গেড়ে রাখা হতো, তিনি তার দিকে ফিরে সালাত আদায় করতেন। কখনও তিনি স্বীয় সাওয়ারীকে চওড়াভাবে রেখে সে দিকে সালাত আদায় করতেন। কখনও তিনি পাল্কি হাত দ্বারা সোজা করে তার শেষ প্রান্তের কাঠের দিকে ফিরে সালাত পড়তেন।
১৮. তিনি দেওয়ালের দিকে ফিরে সালাত আদায় করলে তাঁর ও দেওয়ালের মাঝখানে একটি বকরী যাতায়াতের পথ বাকী থাকতো। তিনি সুতরা থেকে দূরত্বে দাঁড়াতেন না, বরং সুতরার নিকটবর্তী হতে নির্দেশ দিতেন।”
(গ) নামাযের অবস্থায় তাঁর আদর্শমালা: [যাদুল মা‘আদ : ১/২৪১]
১. সালাতের মধ্যে এদিক-ওদিক তাকানো তাঁর আদর্শ ছিল না।
২. সালাতের মধ্যে চক্ষুদ্বয় বন্ধ করা তাঁর নীতি ছিল না।
৩. তিনি সালাত পড়ার সময় স্বীয় মাথা একটু নিচু করে রাখতেন। তিনি সালাত লম্বা করার ইচ্ছায় আরম্ভ করতেন, কিন্তু শিশুর কান্না শুনে তার মায়ের উপর কঠিন হওয়ার ভয়ে তা সংক্ষেপে করে ফেলতেন।
৪. তিনি কখনো তাঁর নাতনী উমামা বিনতে যায়নাবকে কাঁধে বহন করে ফরয সালাত আদায় করতেন, যখন রুকু-সেজদায় যেতেন তখন তাকে কাঁধ থেকে রেখে দিতেন, আবার যখন দাঁড়াতেন তখন তাকে কাঁধে বহন করে নিতেন।
৫. তিনি সালাতরত অবস্থায় কখনো হাসান কিংবা হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এসে তাঁর পিঠে সাওয়ার হতো, তখন পিঠ থেকে পড়ে যাওয়াকে অপছন্দ করায় তিনি সেজদা দীর্ঘায়িত করতেন।
৬. তিনি সালাত আদায় করতেন, তখন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বাহির থেকে এলে হেঁটে গিয়ে তাঁর জন্য দরজা খুলে দিতেন, অতঃপর স্বীয় মুসল্লায় ফিরে আসতেন।
৭. তিনি সালাতরত অবস্থায় হাতের ইশারায় সালামের উত্তর দিতেন।
৮. তিনি সালাতরত অবস্থায় ফুঁক দিতেন এবং (আল্লাহর ভয়ে) স্বশব্দে ক্রন্দন করতেন এবং প্রয়োজনে গলা পরিস্কার করতেন।
৯. তিনি কখনো খালি পায়ে সালাত পড়তেন, আবার কখনো জুতা পরিহিত অবস্থায়। ইয়াহূদীদের বিরোধিতার লক্ষ্যে কখনো জুতা পরিধান করে সালাত আদায় করার নির্দেশ দিতেন।
১০. তিনি কখনো এক কাপড়ে সালাত আদায় করেছেন, কিন্তু অধিকাংশ সময় তিনি দুটি কাপড়ে সালাত পড়তেন।
(ঘ) সালাত শেষে তাঁর আদর্শমালা: [যাদুল মা‘আদ : ১/২৮৫]
১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালামের পর তিনিবার বলতেন: আস্তাগফিরুল্লাহ্, অর্থাৎ “আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।” অতঃপর বলতেন
( اللهم أنت السلام ومنك السلام، تباركت يا ذا الجلال والإكرام )
“হে আল্লাহ! তুমি শান্তিময় এবং তোমা হতেই শান্তি উৎসারিত হয়, তুমি বরকতময় হে মহত্ন ও সম্মানের অধিকারী।”
তিনি উক্ত দু‘আ দু’টি কিবলামুখী পড়ে তাড়াতাড়ি ডান কিংবা বাম দিক দিয়ে ঘুরে মুক্তাদীগণের মুখোমুখি হয়ে বসতেন।
২. তিনি “ফজরের সালাত আদায় করে সালাতের স্থানে সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে থাকতেন।” [তিরমিযী]
৩. তিনি প্রত্যেক ফরয সালাত শেষে নিম্নোক্ত দু‘আগুলো পাঠ করতেন,
( لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك وله الحمدُ وهو على كل شيء قدير . اللهم لا مانع لما أعطيت ولا معطي لما منعت، ولا ينفع ذا الجد منك الجد، لا حول ولا قوة إلا بالله، لا إله إلا الله ولا نعبد إلا إياه، له النعمة وله الفضل وله الثناء الحسن، لا إله إلا الله مخلصين له الدين ولو كره الكافرون )
“আল্লাহ্ ছাড়া সত্যিকার কোনো মা‘বুদ নেই, তিনি এক ও একক, তাঁর কোনো শরীক নেই, সমগ্র রাজত্ব ও প্রশংসা তাঁরই, তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ ! তুমি যা দিয়েছ তা রোধ করার কেউ নেই, আর যা তুমি রোধ করেছ তা দান করার সাধ্য কারো নেই, আর ধনবানের ধন তোমার আযাবের মুকাবিলায় কোনো উপকার করতে পারে না। অসৎ কাজ থেকে বেঁচে থাকার এবং সৎকাজ করার কারো ক্ষমতা নেই আল্লাহর সাহায্য ছাড়া। আল্লাহ্ ছাড়া সত্যিকার কোনো মা‘বুদ নেই, আমরা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করি, সকল নে‘আমত ও সকল অনুগ্রহ তাঁরই, আর তাঁরই সকল সুন্দর গুণগান। আল্লাহ্ ছাড়া সত্যিকার কোনো মা‘বুদ নেই, আমরা তাঁর ইবাদতের জন্যই নিবেদিত, যদিও তা কাফেরদের নিকট অপছন্দনীয়।”
৪. তিনি স্বীয় উম্মতকে প্রত্যেক ফরয সালাত শেষে ‘সুবহানাল্লাহ্’ ৩৩ বার, আল-হামদু লিল্লাহ’ ৩৩ বার এবং ‘আল্লাহু আকবার’ ৩৩ বার পাঠ করে
( لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك وله الحمدُ وهو على كل شيء قدير )
‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর, ১ বার পড়ে মোট ১০০ বার পূর্ণ করার জন্য উৎসাহ প্রদান করেন।”
(ঙ) নফল ও রাত্রিকালীন সালাত প্রসঙ্গে তাঁর আদর্শমালা [যাদুল মা‘আদ : ১/৩১১।]:
১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুন্নাত সালাত ও সাধারণ নফল সালাতসমূহ সাধারণত স্বগৃহে আদায় করতেন, বিশেষ করে মাগরিবের সুন্নাত।
২. তিনি মুক্বিম অবস্থায় সর্বদা দশ রাকাত সালাত নিয়মিত পড়তেন, যোহরের পূর্বে দুই রাকাত ও পরে দুই রাকাত, মাগরিবের পর দুই রাকাত, এশার পর ঘরে এসে দুই রাকাত এবং ফজরের পূর্বে দুই রাকাত।
৩. তিনি সকল নফল সালাত হতে ফজরের সুন্নাতের প্রতি সর্বাধিক তৎপর ছিলেন। তিনি ফজরের সুন্নাত এবং বিতরের সালাত কখনই ছাড়েন নি, সফর অবস্থায়ও না আর মুক্বিম অবস্থায়ও না, আর তাঁর থেকে সফরকালীন অবস্থায় এই দু’টি সালাত ছাড়া অন্য কোনো নিয়মিত নফল সালাত পড়া প্রমাণিত নেই।
৪. তিনি ফজরের সুন্নাত পড়ে ডান কাতে শুইতেন।
৫. তিনি কখনো কখনো যোহরের পূর্বে চার রাকাত পড়তেন। একদা যোহরের পরের দু’রাকাত ছুটে গেলে আসরের পর তা আদায় করেন।
৬. তিনি অধিকাংশ সময়ে তাহাজ্জুদের সালাত দাঁড়ানো অবস্থায় আদায় করতেন, আবার অনেক সময় বসে বসে আদায় করেন, আবার কখনো বসে বসে কেরাত পড়তেন, সামান্য কেরাত অবশিষ্ট থাকতে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং দাঁড়ানো অবস্থায় রুকু করতেন।
৭. তিনি তাহাজ্জুদের সালাত আট রাকাত পড়তেন এবং প্রত্যেক দু’রাকাতের পর সালাম ফিরাতেন। অতঃপর তিনি একটানা পাঁচ রাকাতে বিতিরের সালাত পড়তেন এবং সর্বশেষে শুধু একবার বসতেন, অথবা নয় রাকাতে বিতির পড়তেন এভাবে যে, আট রাকাত একটানা পড়ার পর বসে আত্তাহিয়্যাতু পড়ে সালাম না ফিরিয়ে আবার উঠে এক রাকাত পড়ে বসে আত্তাহিয়্যাতু পড়ে সালাম ফিরাতেন, পরন্তু বিতরের সালামের পর আরো দু’রাকাত পড়তেন, কিংবা উক্ত নয় রাকাতের ন্যায় সাত রাকাতে বিতর পড়তেন, অতঃপর আরো দু’রাকাত বসে পড়তেন।
৮. তিনি রাতের প্রথমাংশে, মধ্যমাংশে ও শেষাংশে বিতরের সালাত আদায় করেন। তিনি ইরশাদ করেন যে, তোমরা তোমাদের রাত্রিকালীন সালাতের শেষাংশ বিতর করো।” [বুখারী ও মুসলিম।]।
৯. তিনি বিতরের পর দু’রাকাত কখনো বসা অবস্থায় পড়তেন, আবার কখনো উক্ত দু রাকাতে বসা অবস্থায় কেরাত পাঠ করার পর রুকু করার ইচ্ছা করলে খাড়া হয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় রুকু করতেন।
১০. তিনি ঘুমিয়ে পড়া কিংবা অসুখের কারণে তাঁর রাত্রিকালীন সালাত-তাহাজ্জুদ ছুটে গেলে তিনি দিনে (দুপুর হওয়ার পূর্বে ১১ রাকাতের পরিবর্তে) ১২ রাকাত সালাত আদায় করতেন।
১১. তিনি কোনো এক রাতে তাহাজ্জুদে একটি আয়াত {সূরা মায়েদার ১১৮ নং আয়াতটি} তিলাওয়াত করেন এবং সেটি সকাল পর্যন্ত বারংবার পুনরাবৃত্তি করতে থাকেন।” [ইবন মাজাহ।]
১২. তিনি রাত্রিকালীন সালাতে কখনো নিম্নঃস্বরে, আবার কখনো উচ্চঃস্বরে কুরআন পাঠ করতেন, আর ক্বিয়াম কখনো লম্বা, আবার কখনো সংক্ষিপ্ত করতেন।
১৩. তিনি বিতিরের সালাতে ‘সূরাতুল আ‘লা ও সূরা ‘কাফিরূন’ এবং সূরা ‘ইখলাস’ পাঠ করতেন, যখন সালাম ফিরাতেন তখন তিনবার বলতেন:
( سبحان الملك القدوس )
‘সুবহা-নাল মালিকিল কুদ্দুস, -তৃতীয়বারে তিনি এই শব্দগুলো একটু বেশী টেনে উচ্চঃস্বরে বলতেন।” [আবু দাউদ, নাসাঈ।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/418/4
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।