HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্য
লেখকঃ মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান
আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে আশরাফুল মাখলুকাত(সৃষ্টির সেরা জীব) হিসাবে সৃষ্টি করেছেন । তিনি তাদের প্রতিপালক ও হায়াত-মওতের মালিক। মহাবিশ্বের আর সবকিছু তিনি তাদেরই কল্যাণে সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের সেবায় নিয়োজিত রেখেছেন। তাঁরই কাছে আবার মানুষকে ফিরে যেতে হবে। হিসাব দিতে হবে, জীবনের সকল কর্মকান্ডের। হিসাবে যারা সফলকাম হবে, তারা প্রবেশ করবে অফুরন্ত নিআ’মতে পরিপূর্ণ জান্নাতে। আর যারা ব্যর্থ হবে, তারা নিক্ষিপ্ত হবে কঠিন ও ভয়ানক শাস্তির নিবাস জাহান্নামে।
ইহজগতে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ সমাজ জীবন মানবতার একান্ত কাম্য । পরিবার হচ্ছে সমাজ ও রাষ্ট্রের ভিত্তিমূল এবং তার অন্যতম অঙ্গ। পরিবারের শান্তি- শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার উপর কার্যত নির্ভর করে সামাজিক শান্তি, সমৃদ্ধি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা। মাতা-পিতা হচ্ছেন পরিবারের কর্ণধার, সন্তানের জন্মদাতা ও লালন- পালনকারী ।
যে কোন ব্যক্তির জন্য মাতা-পিতাই হচ্ছেন আল্লাহ তা’আলার সবচাইতে বড় নি’আমত। সন্তানের অস্তিত্ব, জন্ম ও লালন-পালন ইত্যাকার বিষয়ে আল্লাহর পরেই মাতা-পিতার অবদান সবচাইতে বেশী । এ কারণে সন্তানের প্রতি মাতা-পিতার অধিকারও অনেক বেশী। তাই আল্লাহ তা’আলা মানব জাতির প্রতি তাঁর ইবাদত-বন্দেগী করার পরই মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার ও তাদের অধিকার আদায়ের প্রতি সমধিক গুরুত্ব প্রদান করেছেন।
আল্লাহর ইবাদত- বন্দেগী করলে এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার ও তাদের অধিকার আদায় করলে, তাদের নাফারমানী করা থেকে দুরে থাকলে একদিকে যেমন সুখী ও সমৃদ্ধশালী পরিবার ও সমাজ বিনির্মাণের মাধ্যমে মানুষের ইহজীবন শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্বাচ্ছন্দে ভরপুর হয়ে উঠবে, অপরদিকে পরকালীন অনন্ত জীবনে তদ্রুপ তারা লাভ করবে আল্লাহর অফুরন্ত নি’আমতে ভরা জান্নাত। সেখানে রয়েছে সীমাহীন শান্তি ও অনাবিল সুখ- সম্ভোগ।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ও সমাজ ব্যবস্থা অনেকাংশেই ইসলামী নয়। বিধায় সন্তানের প্রতি মাথা-পিতার কি কি অধিকার রয়েছে এবং মাথা-পিতার ব্যপারে কি করণীয় তা আমাদের অনেকেরই অজানা। বরং এ ব্যপারে আমরা খুবই অসচেতন ও গাফেল । অথচ একটি সুন্দর জীবন, একটি সুখী-সমৃদ্ধশালী সমাজ গড়ে তোলার জন্য মাতা-পিতার অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে সচেতন থাকা নিতান্ত প্রয়োজন। এই প্রয়োজন উপলব্ধি করেই এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তুলে ধরার জন্য আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস । পুস্তিকা পাঠ করে কেউ উপকৃত হলে এবং মাতা-পিতার অধিকারের প্রতি লোকেরা সচেতন ও যত্নবান হলে আমার প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে বলে মনে করবো।
এ কাজে যারা আমাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতঞ্জতা প্রকাশ করছি, বিশেষ করে মুহতারাম মুহাম্মদ সানোয়ার হোসেন ভাইয়ের প্রতি। পুস্তিকাটি লিখার কাজে তিনিই আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন এবং তাঁর তত্তাবধানেই পুস্তিকাটির প্রথম প্রকাশ সম্পন্ন হয়। বইটিতে কোন ভুলত্রুটি কারো দৃষ্টিগোচর হলে এবং তা আমাদের জানালে কৃতঞ্জার সাথে গ্রহণ করা হবে । ইনশাআল্লাহ আল্লাহ পাক আমাদের এ নগণ্য প্রচেষ্টা কবুল করুন। আমীন।
বিনয়াবনত
মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান
ইহজগতে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ সমাজ জীবন মানবতার একান্ত কাম্য । পরিবার হচ্ছে সমাজ ও রাষ্ট্রের ভিত্তিমূল এবং তার অন্যতম অঙ্গ। পরিবারের শান্তি- শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার উপর কার্যত নির্ভর করে সামাজিক শান্তি, সমৃদ্ধি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা। মাতা-পিতা হচ্ছেন পরিবারের কর্ণধার, সন্তানের জন্মদাতা ও লালন- পালনকারী ।
যে কোন ব্যক্তির জন্য মাতা-পিতাই হচ্ছেন আল্লাহ তা’আলার সবচাইতে বড় নি’আমত। সন্তানের অস্তিত্ব, জন্ম ও লালন-পালন ইত্যাকার বিষয়ে আল্লাহর পরেই মাতা-পিতার অবদান সবচাইতে বেশী । এ কারণে সন্তানের প্রতি মাতা-পিতার অধিকারও অনেক বেশী। তাই আল্লাহ তা’আলা মানব জাতির প্রতি তাঁর ইবাদত-বন্দেগী করার পরই মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার ও তাদের অধিকার আদায়ের প্রতি সমধিক গুরুত্ব প্রদান করেছেন।
আল্লাহর ইবাদত- বন্দেগী করলে এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার ও তাদের অধিকার আদায় করলে, তাদের নাফারমানী করা থেকে দুরে থাকলে একদিকে যেমন সুখী ও সমৃদ্ধশালী পরিবার ও সমাজ বিনির্মাণের মাধ্যমে মানুষের ইহজীবন শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্বাচ্ছন্দে ভরপুর হয়ে উঠবে, অপরদিকে পরকালীন অনন্ত জীবনে তদ্রুপ তারা লাভ করবে আল্লাহর অফুরন্ত নি’আমতে ভরা জান্নাত। সেখানে রয়েছে সীমাহীন শান্তি ও অনাবিল সুখ- সম্ভোগ।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ও সমাজ ব্যবস্থা অনেকাংশেই ইসলামী নয়। বিধায় সন্তানের প্রতি মাথা-পিতার কি কি অধিকার রয়েছে এবং মাথা-পিতার ব্যপারে কি করণীয় তা আমাদের অনেকেরই অজানা। বরং এ ব্যপারে আমরা খুবই অসচেতন ও গাফেল । অথচ একটি সুন্দর জীবন, একটি সুখী-সমৃদ্ধশালী সমাজ গড়ে তোলার জন্য মাতা-পিতার অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে সচেতন থাকা নিতান্ত প্রয়োজন। এই প্রয়োজন উপলব্ধি করেই এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তুলে ধরার জন্য আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস । পুস্তিকা পাঠ করে কেউ উপকৃত হলে এবং মাতা-পিতার অধিকারের প্রতি লোকেরা সচেতন ও যত্নবান হলে আমার প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে বলে মনে করবো।
এ কাজে যারা আমাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতঞ্জতা প্রকাশ করছি, বিশেষ করে মুহতারাম মুহাম্মদ সানোয়ার হোসেন ভাইয়ের প্রতি। পুস্তিকাটি লিখার কাজে তিনিই আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন এবং তাঁর তত্তাবধানেই পুস্তিকাটির প্রথম প্রকাশ সম্পন্ন হয়। বইটিতে কোন ভুলত্রুটি কারো দৃষ্টিগোচর হলে এবং তা আমাদের জানালে কৃতঞ্জার সাথে গ্রহণ করা হবে । ইনশাআল্লাহ আল্লাহ পাক আমাদের এ নগণ্য প্রচেষ্টা কবুল করুন। আমীন।
বিনয়াবনত
মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান
সদ্ব্যবহার বলা হয়, মাতা-পিতার প্রতি সহানুভুতিশীল হওয়া, তাদের সাথে সুন্দর ও কোমল আচরণ করা, তাঁদের প্রতি দয়া পরবশ হওয়া ও যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা, তাদের প্রতি যত্নবান হওয়া এবং তাঁদের অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রেখে তাঁদের সেবাযত্ন করা ও তাদের যাবতীয় প্রয়োজন পূরণ করা। [সালেহ ইবন আব্দুর রহমান ইবন হুমাইদ, আব্দুর রহমান ইবন মুহাম্মাদ ইবন মালুহ (এর তত্ত্বাবধনে রচিত), মাসু’আহ নাদরাতুন না’ঈম, দারুল ওয়াসীলা, ৩য় সং, ১৪২৫ হিজরী, ২০০৪ইং. ৩খ, পৃ. ৭৬৭; ইমাম বুখারী, আদাবুল মুফরাদ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওয়াকফ ও ইসলামী বিষয়ক মন্ত্রণালয় ১৪০১. পৃ.১০,১১]
ইমাম আবুল লাইস সমরকন্দী (রঃ) সন্তানের উপর মাতা-পিতার অধিকার এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার সম্পর্কে লিখেছেন, তাঁদের যখন পানাহারের প্রয়োজন হয় তখন তাঁদেরকে পানাহার করানো । তাঁদের পোশাকের প্রয়োজন হলে পোশাক-পরিচ্ছেদ দেয়া।
তাঁদের যখন যে সেবাযত্নের প্রয়োজন হয় তখন সেই সেবা প্রদান করা। তাঁরা ডাকলে সানন্দে তাঁদের ডাকে সাড়া দেয়া, তাঁরা কোন কাজের আদেশ করলে তা পালন করা, তাঁদের সাথে নম্রভাবে বিনয়ীর সুরে কথা বলা, তাঁদের নাম ধরে না ডাকা, তাঁদের আগে না হাটা, তাঁদের সামনে ও উপরে না বসা। তাঁদের পিছনে ও নিচে বসা এবং সব সময় তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা। তাঁদের নাফরমানী ও অবাধ্যতা থেকে দুরে থাকা। [নাদরাতুন না’ঈম, ৩খ, পৃ.৭৭৯]
ইমাম আবুল লাইস সমরকন্দী (রঃ) সন্তানের উপর মাতা-পিতার অধিকার এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার সম্পর্কে লিখেছেন, তাঁদের যখন পানাহারের প্রয়োজন হয় তখন তাঁদেরকে পানাহার করানো । তাঁদের পোশাকের প্রয়োজন হলে পোশাক-পরিচ্ছেদ দেয়া।
তাঁদের যখন যে সেবাযত্নের প্রয়োজন হয় তখন সেই সেবা প্রদান করা। তাঁরা ডাকলে সানন্দে তাঁদের ডাকে সাড়া দেয়া, তাঁরা কোন কাজের আদেশ করলে তা পালন করা, তাঁদের সাথে নম্রভাবে বিনয়ীর সুরে কথা বলা, তাঁদের নাম ধরে না ডাকা, তাঁদের আগে না হাটা, তাঁদের সামনে ও উপরে না বসা। তাঁদের পিছনে ও নিচে বসা এবং সব সময় তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা। তাঁদের নাফরমানী ও অবাধ্যতা থেকে দুরে থাকা। [নাদরাতুন না’ঈম, ৩খ, পৃ.৭৭৯]
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا
আপনার প্রতিপালক ফায়সালা করে দিয়েছেন যে তোমরা আল্লাহ ছাড়া আর আর কারো ইবাদত করবে না এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে। [সুরা বানী ইসরাঈল:২৩]
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَ بَنِي إِسْرَائِيلَ لَا تَعْبُدُونَ إِلَّا اللَّهَ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا
আমি বনী ইসরাঈলের নিকট থেকে অঙ্গীকার নিয়েছি যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারো উপাসনা করবে না এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে। [সুরা আল-বাকারা :৮৩]:
وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا
তোমরা আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগী করো, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করো। [সুরা আন-নিসা:৩৬]
তিনি অন্য এক আয়াতে বলেনঃ
وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلى أَنْ تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا
তোমার মাতা-পিতা যদি আমার সাথে এমন সব বিষয়কে শরীক করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। [সুরা লুকমান : ১৫]
উপরোক্ত আয়াতসমুহে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগী করার ও তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করার নি©র্দশের পাশাপাশি মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অতএব, আল্লাহর হকের পরেই বড় হক হচ্ছে, মাতা-পিতার হক।
وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا
আপনার প্রতিপালক ফায়সালা করে দিয়েছেন যে তোমরা আল্লাহ ছাড়া আর আর কারো ইবাদত করবে না এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে। [সুরা বানী ইসরাঈল:২৩]
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَ بَنِي إِسْرَائِيلَ لَا تَعْبُدُونَ إِلَّا اللَّهَ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا
আমি বনী ইসরাঈলের নিকট থেকে অঙ্গীকার নিয়েছি যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারো উপাসনা করবে না এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে। [সুরা আল-বাকারা :৮৩]:
وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا
তোমরা আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগী করো, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করো। [সুরা আন-নিসা:৩৬]
তিনি অন্য এক আয়াতে বলেনঃ
وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلى أَنْ تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا
তোমার মাতা-পিতা যদি আমার সাথে এমন সব বিষয়কে শরীক করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। [সুরা লুকমান : ১৫]
উপরোক্ত আয়াতসমুহে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগী করার ও তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করার নি©র্দশের পাশাপাশি মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অতএব, আল্লাহর হকের পরেই বড় হক হচ্ছে, মাতা-পিতার হক।
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
يَا يَحْيَى خُذِ الْكِتَابَ بِقُوَّةٍ وَآَتَيْنَاهُ الْحُكْمَ صَبِيًّا ﴿১২﴾ وَحَنَانًا مِنْ لَدُنَّا وَزَكَاةً وَكَانَ تَقِيًّا ﴿১৩﴾ وَبَرًّا بِوَالِدَيْهِ وَلَمْ يَكُنْ جَبَّارًا عَصِيًّا ﴿১৪﴾
হে ইয়াহইয়া! দৃড়তার সাথে এই গ্রন্থ ধারণ করো আমি তাকে শৈশবেই বিচার বুদ্ধি ও প্রজ্ঞা দান করেছিলাম এবং নিজের পক্ষ থেকে দয়াদ্রতা ও পবিত্রতা দান করেছি। সে ছিল পরহেজগার। মাতা-পিতার অনুগত এবং সে উদ্ধত নাফরমান ছিলো না। [সুরা মারইয়াম:১২-১৪]
ঈসা আ.বলেন
وَأَوْصَانِي بِالصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ مَا دُمْتُ حَيًّا ﴿৩১﴾ وَبَرًّا بِوَالِدَتِي
তিনি (আল্লাহ) আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যতদিন জীবিত থাকি ততদিন নামায কায়েম ও যাকাত আদায় করতে এবং জননীর অনুগত থাকতে। [সুরা মারইয়াম:৩১-৩২]
يَا يَحْيَى خُذِ الْكِتَابَ بِقُوَّةٍ وَآَتَيْنَاهُ الْحُكْمَ صَبِيًّا ﴿১২﴾ وَحَنَانًا مِنْ لَدُنَّا وَزَكَاةً وَكَانَ تَقِيًّا ﴿১৩﴾ وَبَرًّا بِوَالِدَيْهِ وَلَمْ يَكُنْ جَبَّارًا عَصِيًّا ﴿১৪﴾
হে ইয়াহইয়া! দৃড়তার সাথে এই গ্রন্থ ধারণ করো আমি তাকে শৈশবেই বিচার বুদ্ধি ও প্রজ্ঞা দান করেছিলাম এবং নিজের পক্ষ থেকে দয়াদ্রতা ও পবিত্রতা দান করেছি। সে ছিল পরহেজগার। মাতা-পিতার অনুগত এবং সে উদ্ধত নাফরমান ছিলো না। [সুরা মারইয়াম:১২-১৪]
ঈসা আ.বলেন
وَأَوْصَانِي بِالصَّلَاةِ وَالزَّكَاةِ مَا دُمْتُ حَيًّا ﴿৩১﴾ وَبَرًّا بِوَالِدَتِي
তিনি (আল্লাহ) আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যতদিন জীবিত থাকি ততদিন নামায কায়েম ও যাকাত আদায় করতে এবং জননীর অনুগত থাকতে। [সুরা মারইয়াম:৩১-৩২]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম, অতঃপর সেখানে কুরআন তিলাওয়াত শুনতে পেলাম। জিজ্ঞেস করলাম, এই ব্যক্তি (তিলাওয়াতকারী) কে? ফেরেশতাগণ বললেন, হারিসা ইবন নুমান (রা)।( রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে লক্ষ্য করে বললেনঃ) পুণ্যের প্রতিদান এরূপই। সে ছিল তার মায়ের সাথে সর্বাপেক্ষা সদাচরণকারী। [ইমাম আবু আব্দুল্লাহ, হাকিম নিশাপুরী, আল মুস্তাদরাক, দারুল কিতাবিল আরাবি, বৈরূত,৪ খ,প.১১৫;]
ইয়ামেনে উওয়াইস করনী নামে একজন মুসলমান বাস করতেন। মায়ের খেদমতে মশগুল তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সাক্ষৎ করতে পারেননি। কিন্তু মায়ের খেদমতের বদৌলতে আল্লাহর দরবারে তাঁর মর্যাদা ছিল অনেক ঊর্ধ্বে। তিনি ছিলেন মুসতাজাবুদ দাওয়াত। অর্থাৎ তাঁর দুআ কবুল করা হতো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উমার (রা) এর উদ্দেশ্যে বলেন, সম্ভব হলে তাকে তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার অবেদন করবে। উমার (রা)- এর যুগে ইয়ামেনের একটি সাহায্যকারী দলের সাথে তিনি খলিফার দরবারে আসেন। উমার (রা) তাঁর নিকট দুআ চাইলে তিনি তাঁর জন্য দুআ করেন। [এ বর্ণনা তিনটি হাদিসের সার-সংক্ষেপ। দেখুন, সহিহ মুসলিম, কিতাবু ফাযায়িলিস সাহাবা। হাদিস নং২২৩,২২৪,২২৫]
মায়ের খেদমতের সুবাদেই তিনি এ মর্যাদা লাভ করেন।
ইয়ামেনে উওয়াইস করনী নামে একজন মুসলমান বাস করতেন। মায়ের খেদমতে মশগুল তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সাক্ষৎ করতে পারেননি। কিন্তু মায়ের খেদমতের বদৌলতে আল্লাহর দরবারে তাঁর মর্যাদা ছিল অনেক ঊর্ধ্বে। তিনি ছিলেন মুসতাজাবুদ দাওয়াত। অর্থাৎ তাঁর দুআ কবুল করা হতো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উমার (রা) এর উদ্দেশ্যে বলেন, সম্ভব হলে তাকে তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার অবেদন করবে। উমার (রা)- এর যুগে ইয়ামেনের একটি সাহায্যকারী দলের সাথে তিনি খলিফার দরবারে আসেন। উমার (রা) তাঁর নিকট দুআ চাইলে তিনি তাঁর জন্য দুআ করেন। [এ বর্ণনা তিনটি হাদিসের সার-সংক্ষেপ। দেখুন, সহিহ মুসলিম, কিতাবু ফাযায়িলিস সাহাবা। হাদিস নং২২৩,২২৪,২২৫]
মায়ের খেদমতের সুবাদেই তিনি এ মর্যাদা লাভ করেন।
আব্দুল্লাহ ইবন আববাস (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কোন নেককার সন্তান যখন স্বীয় মাতা-পিতার প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকায় তখন আল্লাহ তাআলা তার প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে তার আমলনামায় একটি মকবুল হজ লিপিবদ্ধ করে দেন। সাহাবিগণ আরয করলেন, যদি সে দৈনিক একশতবার এভাবে তাকায়? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ’’ (প্রত্যেক দৃষ্টির বিনিময়ে সে এই সাওয়াব পেতে থাকবে) আল্লাহ অতি মহান, অতি পবিত্র তাঁর ভান্ডারে কোন অভাব নেই। [মিশকাতুল মাসাবীহ, আদব, অনুঃ সৎকাজ ও সদ্ব্যবহার, পৃ.৪২১ (বায়হাকী বরাত)]
আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (র) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, কোন আমল আল্লাহর নিকট সবচাইতে বেশি প্রিয়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ সময় মতো নামায আদায় করা। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কোন কাজ? তিনি বললেনঃ মাতা-পিতার সাথে সুন্দর আচারণ করা ।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরপর? তিনি বললেনঃ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা । [ইমাম আবু আব্দুলত্মাহ মুহাম্মাদইবন ইসমাল আল বুখারী, সহিহ আল বুখারী, মাওয়াকীতুস সালাত, অনুঃ ৫, ফাদলুস সালাত লি-ওয়াকতিহা; ইমাম মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল কুশাইরি, সহিহ মুসলিম, ঈমান, অনুঃ ৩৬, আল্লাহর প্রতি ঈমান উত্তম আমল হওয়ার বর্ণনা, নং ১৭৩]
আমর ইবন আবাসা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের সূচনালগ্নে-তখন তিনি গোপনে ইসলাম প্রচার করতেন- আমি তার খেদমতে হাজির হয়ে বললাম, আপনি কে? তিনি বললেনঃ আল্লাহর রসুল! আল্লাহ আমাকে রসুল হিসেবে পাঠিয়েছেন। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ তিনি আপনাকে কি বিধান সহকারে পাঠিয়েছেন? তিনি বললেনঃ আল্লাহ আমাকে তাঁর দাসতব করা , প্রতিমা ভেঙ্গে ফেলা, সদ্ব্যবহার ও সদাচরণের মাধ্যমে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার নির্দেশসহকারে পাঠিয়েছেন। [আল মুস্তাদরাক ৪ খ, পৃ. ১৪৮]
আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরপর? তিনি বললেনঃ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা । [ইমাম আবু আব্দুলত্মাহ মুহাম্মাদইবন ইসমাল আল বুখারী, সহিহ আল বুখারী, মাওয়াকীতুস সালাত, অনুঃ ৫, ফাদলুস সালাত লি-ওয়াকতিহা; ইমাম মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ আল কুশাইরি, সহিহ মুসলিম, ঈমান, অনুঃ ৩৬, আল্লাহর প্রতি ঈমান উত্তম আমল হওয়ার বর্ণনা, নং ১৭৩]
আমর ইবন আবাসা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের সূচনালগ্নে-তখন তিনি গোপনে ইসলাম প্রচার করতেন- আমি তার খেদমতে হাজির হয়ে বললাম, আপনি কে? তিনি বললেনঃ আল্লাহর রসুল! আল্লাহ আমাকে রসুল হিসেবে পাঠিয়েছেন। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ তিনি আপনাকে কি বিধান সহকারে পাঠিয়েছেন? তিনি বললেনঃ আল্লাহ আমাকে তাঁর দাসতব করা , প্রতিমা ভেঙ্গে ফেলা, সদ্ব্যবহার ও সদাচরণের মাধ্যমে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার নির্দেশসহকারে পাঠিয়েছেন। [আল মুস্তাদরাক ৪ খ, পৃ. ১৪৮]
মুয়াবিয়া ইবন জাহিমা আস-সুলামী (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পরকালীন নাজাত লাভের উদ্দেশ্যে আপনার সাথে জিহাদে যেতে চাই। তিনি বললেনঃ আফসোস তোমার জন্য! তোমার মা কি বেঁচে আছেন? আমি বললাম, হ্যাঁ, বেঁচে আছেন। তিনি বললেন যাও, তার খেদমতে আত্মনিয়োগ করো। এরপর আমি অন্যদিক থেকে এসে আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালীন মুক্তির আশায় আপনার সাথে জিহাদে যেতে চাই। তিনি বললেনঃ আফসোস তোমার জন্য! তোমার মা কি বেঁচে নেই? আমি বললাম হ্যাঁ, বেঁচে আছেন। তিনি বললেনঃ যাও, তাঁর সেবা কর। অতঃপর আমি তাঁর সামনের দিক দিয়ে এসে বললাম, হে আল্লাহর রসুল! আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালীন সফলতা লাভের আশায় আপনার সাথে জিহাদে শামিল হতে চাই । তিনি বললেনঃ আফসোস তোমার জন্য! তোমার মা কি বেঁচে নেই? আমি বললাম, ইয়া রাসুল্লাহ! আমার মা বেঁচে আছেন। তিনি আমাকে বললেনঃ আফসোস তোমার জন্য! তুমি তোমার মায়ের চরণ আঁকড়ে ধর। সেখানেই রয়েছে জান্নাত। [ইমাম মুহাম্মাদ ইবন মাজাহ আল কাজভীনি, সুনানু ইবন মাজাহ, কাদীমী কুতুবখানা, করাচী, কিতাবুল জিহাদ. পৃ. ১৭]
আবু সাইদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন , জনৈক ব্যক্তি ইয়েমেন থেকে হিজরত করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এসেছে । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বললেনঃ তুমি শিরক পরিত্যাগ করে এসেছো। তবে তোমার জিহাদ বাকি রয়ে গেছে। ইয়েমেনে কি তোমার মাতা-পিতা নেই? লোকটি বলল, হ্যাঁ আছেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তারা কি তোমাকে জিহাদে আসার অনুমতি দিয়েছেন? জবাবে লোকটি বলল, না, অনুমতি দেয়নি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বললেনঃ তোমার মাতা-পিতার কাছে যাও, তাঁরা অনুমতি দিলে জিহাদের জন্য এসো। অন্যথায় তাদের সেবা- যত্ন করো। [আহমাদ আব্দুর রহমান আল- বান্না, ফাতহুর রাববানী (শরহে মুসনাদে আহমাদ) দারুল হাদিস কায়রো, ১৯ খ, পৃ. ৩৬; ইমাম আবু দাউদ আস-সিজিস্তানী, সুনান আবু দাউদ, দারু ইহয়াউস সুন্নাহ আল নাবাবিয়্যা, ৩ খ, পৃ.১৭]
আনাস(র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এসে আরয করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার জিহাদে যাওয়ার খুব ইচ্ছা, অথচ আমার সেই সামর্থ্য নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার মাতা-পিতা কেউ বেঁচে আছেন কি? লোকটি বলল, আমার মা বেঁচে আছেন। তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের সেবায় নিয়োজিত থেকে আল্লাহর সাক্ষাত লাভ করো । এটা যদি তুমি করতে পারো, তাহলে তুমি হজ ও উমরা এবং আল্লাহর পথে জিহাদকারী হিসাবে পরিগণিত হবে। [ইমাম আল মুনযিরী , আত-তারগীব ওয়াত তারহিব, দারু ইহয়াউত তুরাস আল আরাবী বৈরুত, ৩য় সং, ১৩৮৮ হি, ১৯৮৮সন, ৩খ,প.৩১৫]
আব্দুল্লাহ ইবন উমার (র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এসে আরয করলো, হে আল্লাহর রসুল! আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালীন নাজাত লাভের উদ্দেশ্যে আপনার সাথে জিহাদ করার জন্য এসেছি । আমাকে আসতে দেখে আমার মাতা-পিতা দুজনই কাঁদছিলেন। একথা শুনে তিনি লোকটিকে বললেনঃ তুমি তাঁদের কাছে ফিরে যাও এবং তাঁদের মুখে হাসি ফুটাও, যেমনিভাবে তুমি তাঁদেরকে কাঁদিয়েছিলে। [ইবন মাজাহ, পৃ. ২০০, আল-মুস্তাদরাক, ৪খ, পৃ. ১২৫]
আব্দুল্লাহ ইবন আমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলল, আমি আল্লাহর নিকট থেকে প্রতিদান পাওয়ার আসায় আপনার নিকট হিজরত ও জিহাদের বাইআত করছি। তিনি লোকটিকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার মাতা-পিতার মধ্যে কেউ কি জীবিত আছেন? লোকটি উত্তরে বলল, তাঁরা উভয়ে জীবিত আছেন। তিনি লোকটিকে বললেনঃ তুমি বাস্তবিকই আল্লাহর নিকট থেকে হিজরত ও জিহাদের প্রতিদান পেতে চাও? লোকটি জবাবে বলল হ্যাঁ, পেতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করলেনঃ তুমি তোমার মাতা-পিতার কাছে ফিরে যাও তাঁদের সাথে সদ্ব্যবহার করতে থাকো। [সহিহ মুসলিম, কিতাবুল বির, অনু: মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার ।]
মুআবিয়া ইবন জাহিমা (রা) থেকে বর্ণিত। একদিন আমার পিতা জাহিমা (রা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বললেন ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি জিহাদে অংশ গ্রহণ করার ইচ্ছা করেছি। এ ব্যাপারে আমি আপনার সাথে পরামর্শ করতে এসেছি। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার মা জীবিত আছেন কি? সে বললো হ্যাঁ, আছেন । তিনি বললেনঃ যাও , মায়ের খেদমতে আত্মনিয়োগ করো। কেননা জান্নাত তাঁর পায়ের কাছে। [আল মুস্তাদরাক, ৪খ,পৃ. ১৫১ ফাতহুর রাববানী, ১৯ খ, পৃ.৩৬]
আবু সাইদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন , জনৈক ব্যক্তি ইয়েমেন থেকে হিজরত করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এসেছে । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বললেনঃ তুমি শিরক পরিত্যাগ করে এসেছো। তবে তোমার জিহাদ বাকি রয়ে গেছে। ইয়েমেনে কি তোমার মাতা-পিতা নেই? লোকটি বলল, হ্যাঁ আছেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তারা কি তোমাকে জিহাদে আসার অনুমতি দিয়েছেন? জবাবে লোকটি বলল, না, অনুমতি দেয়নি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বললেনঃ তোমার মাতা-পিতার কাছে যাও, তাঁরা অনুমতি দিলে জিহাদের জন্য এসো। অন্যথায় তাদের সেবা- যত্ন করো। [আহমাদ আব্দুর রহমান আল- বান্না, ফাতহুর রাববানী (শরহে মুসনাদে আহমাদ) দারুল হাদিস কায়রো, ১৯ খ, পৃ. ৩৬; ইমাম আবু দাউদ আস-সিজিস্তানী, সুনান আবু দাউদ, দারু ইহয়াউস সুন্নাহ আল নাবাবিয়্যা, ৩ খ, পৃ.১৭]
আনাস(র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এসে আরয করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার জিহাদে যাওয়ার খুব ইচ্ছা, অথচ আমার সেই সামর্থ্য নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার মাতা-পিতা কেউ বেঁচে আছেন কি? লোকটি বলল, আমার মা বেঁচে আছেন। তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের সেবায় নিয়োজিত থেকে আল্লাহর সাক্ষাত লাভ করো । এটা যদি তুমি করতে পারো, তাহলে তুমি হজ ও উমরা এবং আল্লাহর পথে জিহাদকারী হিসাবে পরিগণিত হবে। [ইমাম আল মুনযিরী , আত-তারগীব ওয়াত তারহিব, দারু ইহয়াউত তুরাস আল আরাবী বৈরুত, ৩য় সং, ১৩৮৮ হি, ১৯৮৮সন, ৩খ,প.৩১৫]
আব্দুল্লাহ ইবন উমার (র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এসে আরয করলো, হে আল্লাহর রসুল! আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালীন নাজাত লাভের উদ্দেশ্যে আপনার সাথে জিহাদ করার জন্য এসেছি । আমাকে আসতে দেখে আমার মাতা-পিতা দুজনই কাঁদছিলেন। একথা শুনে তিনি লোকটিকে বললেনঃ তুমি তাঁদের কাছে ফিরে যাও এবং তাঁদের মুখে হাসি ফুটাও, যেমনিভাবে তুমি তাঁদেরকে কাঁদিয়েছিলে। [ইবন মাজাহ, পৃ. ২০০, আল-মুস্তাদরাক, ৪খ, পৃ. ১২৫]
আব্দুল্লাহ ইবন আমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলল, আমি আল্লাহর নিকট থেকে প্রতিদান পাওয়ার আসায় আপনার নিকট হিজরত ও জিহাদের বাইআত করছি। তিনি লোকটিকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার মাতা-পিতার মধ্যে কেউ কি জীবিত আছেন? লোকটি উত্তরে বলল, তাঁরা উভয়ে জীবিত আছেন। তিনি লোকটিকে বললেনঃ তুমি বাস্তবিকই আল্লাহর নিকট থেকে হিজরত ও জিহাদের প্রতিদান পেতে চাও? লোকটি জবাবে বলল হ্যাঁ, পেতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করলেনঃ তুমি তোমার মাতা-পিতার কাছে ফিরে যাও তাঁদের সাথে সদ্ব্যবহার করতে থাকো। [সহিহ মুসলিম, কিতাবুল বির, অনু: মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার ।]
মুআবিয়া ইবন জাহিমা (রা) থেকে বর্ণিত। একদিন আমার পিতা জাহিমা (রা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বললেন ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি জিহাদে অংশ গ্রহণ করার ইচ্ছা করেছি। এ ব্যাপারে আমি আপনার সাথে পরামর্শ করতে এসেছি। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার মা জীবিত আছেন কি? সে বললো হ্যাঁ, আছেন । তিনি বললেনঃ যাও , মায়ের খেদমতে আত্মনিয়োগ করো। কেননা জান্নাত তাঁর পায়ের কাছে। [আল মুস্তাদরাক, ৪খ,পৃ. ১৫১ ফাতহুর রাববানী, ১৯ খ, পৃ.৩৬]
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا
আমি মানুষকে মাতা-পিতার সাথে সুন্দর আচরণের তাগিদ দিয়েছি।
তার মা অনেক কষ্টে তাকে গর্ভে ধারণ করেছে এবং বহু কষ্ট করে ভূমিষ্ট করেছে। গর্ভে ধারণ করা ও দুধ পান করানোর (কঠিন কাজের) সময়কাল হলো আড়াই বছর। [২ সুরা আল-আহকাফঃ ১৫]
তিনি আরো বলেনঃ
وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْنًا عَلَى وَهْنٍ وَفِصَالُهُ فِي عَامَيْنِ أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيرُ
আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করার জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট স্বীকার করে গর্ভে ধারণ করেছে। আর দুধ ছাড়ানো হয় দু’বছরের মধ্যে। এ নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার মাতা-পিতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। [১ সুরা লুকমানঃ ১৪]
আবু হুরাইরা (র) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে হাজির হয়ে জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসুলুল্লাহ ! আমার সুন্দর আচরণের সবচাইতে বেশি হকদার কে? তিনি বললেনঃ তোমার মা। সে পূনরায় জিজ্ঞেস করলো, এরপর কে? তিনি বললেনঃ তোমার মা। সে পূনরায় জিজ্ঞেস করলো তারপর কে? তিনি বললেনঃ তোমার মা। সে আবারও জিজ্ঞেস করলো এরপর কে? তিনি বললেনঃ তোমার পিতা। [২সহিহ আল বুখারী, এইচ এম সাঈদ কম্পানী,আদব মঞ্জিল, করাচী, কিতাবুল আদব, ২খ, পৃ;৮৮২; সহিহ মুসলিম, প্রাগুক্ত আরো দ্রঃ ইবন মাজাহ, পৃ. ২৬০ আল মুসতাদরাক, ৪খ, পৃ. ১৫০ ফাতহুর রববানী ১৯খ , পৃ. ৩৮]
বাহ্য ইবন হাকিম তাঁর পিতার সূত্রে তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি আরয করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি কার সাথে সবচাইতে বেশী ভালো ব্যবহার করব? তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের সাথে। আমি পূনরায় জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কার সাথে? তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের সাথে। তিনি আবারও জিজ্ঞস করলেনঃ তারপর কার সাথে? এবারও তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের সাথে। আমি পূনরায় জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কার সাথে? তিনি বললেনঃ তোমার পিতার সাথে। অতঃপর পর্যায়ক্রমে নিকটতম আত্মীয়- স্বজনের সাথে। [৩ আল মুস্তাদরাক, ৪খ, পৃ. ১৫০;]
মিকদাম ইবন মা’দিকারাব (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের মায়েদের সম্পর্কে তোমাদের উপদেশ দিচেছন। অর্থাৎ তাদের সাথে সদাচরণ করার আদেশ দিচেছন। একথা তিনি তিনবার বললেন । নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের পিতাদের সম্পর্কে তোমাদের উপদেশ দিচেছন । নিশ্চয় আল্লাহ পর্যায়ক্রমে নিকটবর্তিদের সম্পর্কে তোমাদের উপদেশ দিচেছন। (সদাচারের) [১ ইবন মাজাহ; পৃ. ২৬০]
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে জিহাদে যাওয়ার অনুমতি চাইলে তিনি বললেনঃ তোমার মাতা-পিতা কি বেঁচে আছে? লোকটি বললো, হাঁ, বেঁচে আছেন। তিনি বললেনঃ তাদের মাঝে জিহাদ করো। [২ সহিহ মুসলিম, আবু দাউদ, প্রাগুক্ত]
অর্থাৎ তাদের সেবা-যত্ন ও খেদমতে আত্মনিয়োগ কর। এটাই জিহাদ। আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করেছি , হে আল্লাহর রাসুল! মহিলাদের উপর সবচাইতে বেশি অধিকার কার ? তিনি জবাব দিলেনঃ তার স্বামীর। বললাম, পুরুষের উপর সবচাইতে বেশি অধিকার কার? তিনি বললেনঃ তার মায়ের। [৩ আল মুসতাদরাক,৪খ পৃ. ১৫০]
وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا
আমি মানুষকে মাতা-পিতার সাথে সুন্দর আচরণের তাগিদ দিয়েছি।
তার মা অনেক কষ্টে তাকে গর্ভে ধারণ করেছে এবং বহু কষ্ট করে ভূমিষ্ট করেছে। গর্ভে ধারণ করা ও দুধ পান করানোর (কঠিন কাজের) সময়কাল হলো আড়াই বছর। [২ সুরা আল-আহকাফঃ ১৫]
তিনি আরো বলেনঃ
وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْنًا عَلَى وَهْنٍ وَفِصَالُهُ فِي عَامَيْنِ أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيرُ
আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করার জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট স্বীকার করে গর্ভে ধারণ করেছে। আর দুধ ছাড়ানো হয় দু’বছরের মধ্যে। এ নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার মাতা-পিতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। [১ সুরা লুকমানঃ ১৪]
আবু হুরাইরা (র) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে হাজির হয়ে জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসুলুল্লাহ ! আমার সুন্দর আচরণের সবচাইতে বেশি হকদার কে? তিনি বললেনঃ তোমার মা। সে পূনরায় জিজ্ঞেস করলো, এরপর কে? তিনি বললেনঃ তোমার মা। সে পূনরায় জিজ্ঞেস করলো তারপর কে? তিনি বললেনঃ তোমার মা। সে আবারও জিজ্ঞেস করলো এরপর কে? তিনি বললেনঃ তোমার পিতা। [২সহিহ আল বুখারী, এইচ এম সাঈদ কম্পানী,আদব মঞ্জিল, করাচী, কিতাবুল আদব, ২খ, পৃ;৮৮২; সহিহ মুসলিম, প্রাগুক্ত আরো দ্রঃ ইবন মাজাহ, পৃ. ২৬০ আল মুসতাদরাক, ৪খ, পৃ. ১৫০ ফাতহুর রববানী ১৯খ , পৃ. ৩৮]
বাহ্য ইবন হাকিম তাঁর পিতার সূত্রে তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি আরয করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি কার সাথে সবচাইতে বেশী ভালো ব্যবহার করব? তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের সাথে। আমি পূনরায় জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কার সাথে? তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের সাথে। তিনি আবারও জিজ্ঞস করলেনঃ তারপর কার সাথে? এবারও তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের সাথে। আমি পূনরায় জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কার সাথে? তিনি বললেনঃ তোমার পিতার সাথে। অতঃপর পর্যায়ক্রমে নিকটতম আত্মীয়- স্বজনের সাথে। [৩ আল মুস্তাদরাক, ৪খ, পৃ. ১৫০;]
মিকদাম ইবন মা’দিকারাব (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন; রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের মায়েদের সম্পর্কে তোমাদের উপদেশ দিচেছন। অর্থাৎ তাদের সাথে সদাচরণ করার আদেশ দিচেছন। একথা তিনি তিনবার বললেন । নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের পিতাদের সম্পর্কে তোমাদের উপদেশ দিচেছন । নিশ্চয় আল্লাহ পর্যায়ক্রমে নিকটবর্তিদের সম্পর্কে তোমাদের উপদেশ দিচেছন। (সদাচারের) [১ ইবন মাজাহ; পৃ. ২৬০]
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে জিহাদে যাওয়ার অনুমতি চাইলে তিনি বললেনঃ তোমার মাতা-পিতা কি বেঁচে আছে? লোকটি বললো, হাঁ, বেঁচে আছেন। তিনি বললেনঃ তাদের মাঝে জিহাদ করো। [২ সহিহ মুসলিম, আবু দাউদ, প্রাগুক্ত]
অর্থাৎ তাদের সেবা-যত্ন ও খেদমতে আত্মনিয়োগ কর। এটাই জিহাদ। আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করেছি , হে আল্লাহর রাসুল! মহিলাদের উপর সবচাইতে বেশি অধিকার কার ? তিনি জবাব দিলেনঃ তার স্বামীর। বললাম, পুরুষের উপর সবচাইতে বেশি অধিকার কার? তিনি বললেনঃ তার মায়ের। [৩ আল মুসতাদরাক,৪খ পৃ. ১৫০]
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। কিছু দিন আবু হুরাইরা (রা)- এর মা এক বাড়ীতে এবং আবু হুরাইরা (রা আল্প দুরে ভিন্ন এক বাড়ীতে বসবাস করতেন। আবু হুরাইরা (রা) যখনই বাইরে কোথাও যাওয়ার ইচ্ছা করতেন তখন মায়ের ঘরের দরজায় এসে দাঁড়িয়ে বলতেন, ইয়া আম্মাজান! আস সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। তাঁর মা ভিতর থেকে বলতেন, প্রিয় পুত্র! ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। অতঃপর আবু হুরাইরা (রা) বলতেন, আম্মাজান, শৈশবকালে যেভাবে আপনি স্নেহ ও মায়া-মমতাসহকারে আমাকে লালন-পালন করছিলেন তেমনিভাবে যেন আল্লাহ তাআলা আপনার প্রতি রহম করেন। জবাবে তিনি বলতেন , প্রিয় পুত্র! এ বৃদ্ধ বয়সে তুমি আমার সাথে যেমন সুন্দর ও সদাচরণ করছো তেমনি আল্লাহও যেন তোমার প্রতি রহমত বর্ষণ করেন। [১ ইমাম সুয়ূতী, আদ দুররুল মানসুর, ৫খ পৃ. ২৬০; আদাবুল মুফরাদ, পৃ.১০]
যেভাবে সন্তানের ওপর মাতা-পিতার অধিকার রয়েছে তেমনিভাবে সন্তানের সম্পদের ওপরও তাদের অধিকার রয়েছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
يَسْأَلُونَكَ مَاذَا يُنْفِقُونَ قُلْ مَا أَنْفَقْتُمْ مِنْ خَيْرٍ فَلِلْوَالِدَيْنِ
‘‘হে নবী লোকেরা আপনাকে জিজ্ঞেস করে , আমরা কি ব্যয় করবো? আপনি তাদেরকে বলে দিন, যে মালই তোমরা ব্যয় করো না কেন? তার প্রথম হকদার হলো তোমার মাতা-পিতা।’’ [২ সুরা আল বাকারা ২১৫]
এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট স্বীয় পিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বললো, তিনি যখনই ইচ্ছা করেন আমার সম্পদ নিয়ে নেন । রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার পিতাকে ডাকলেন । লাঠি ভর করে এক দুর্বল বৃদ্ধ হাযির হলেন। তিনি বৃদ্ধকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। বৃদ্ধলোকটি জবাব দিলেন, হে আল্লাহর রসুল! এক সময় আমার এ ছেলে দুর্বল অসহায় ও কাপর্দকহীন ছিল । আমি তখন ছিলাম শক্তিশালী ও বিত্তশালী। আমি কখনও তাকে আমার সম্পদ নিতে বাধা দেইনি। আজ আমি দুর্বল ও কাপর্দকহীন, সে শক্তিশালী ও বিত্তশালী । এখন তার সম্পদ আমাকে দেয় না। একথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তুমি এবং তোমার সম্পদ তোমার পিতার। [১ ইবনু মাজাহ , তিজারাত, পৃ. ১৬৫; ইউসুফ ইসলাহি, হুসনে মুয়াশারাহ, অনুবাদ আব্দুল কাদের, মাতা-পিতা ও]
মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার সম্পর্কে হাসান বসরী (রা) কে জিজ্ঞেস করা হরে তিনি বলেনঃ তোমার মালিকানাধীন সম্পদ তাঁদের প্রয়োজন মাফিক ব্যয় করবে। তাঁরা যা আদেশ করেন তা যদি গুনার কাজ না হয় , তা মেনে চলবে। [২ আদ দুররুল মানসুর, ৫খ, পৃ.২৪৯]
يَسْأَلُونَكَ مَاذَا يُنْفِقُونَ قُلْ مَا أَنْفَقْتُمْ مِنْ خَيْرٍ فَلِلْوَالِدَيْنِ
‘‘হে নবী লোকেরা আপনাকে জিজ্ঞেস করে , আমরা কি ব্যয় করবো? আপনি তাদেরকে বলে দিন, যে মালই তোমরা ব্যয় করো না কেন? তার প্রথম হকদার হলো তোমার মাতা-পিতা।’’ [২ সুরা আল বাকারা ২১৫]
এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট স্বীয় পিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বললো, তিনি যখনই ইচ্ছা করেন আমার সম্পদ নিয়ে নেন । রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার পিতাকে ডাকলেন । লাঠি ভর করে এক দুর্বল বৃদ্ধ হাযির হলেন। তিনি বৃদ্ধকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। বৃদ্ধলোকটি জবাব দিলেন, হে আল্লাহর রসুল! এক সময় আমার এ ছেলে দুর্বল অসহায় ও কাপর্দকহীন ছিল । আমি তখন ছিলাম শক্তিশালী ও বিত্তশালী। আমি কখনও তাকে আমার সম্পদ নিতে বাধা দেইনি। আজ আমি দুর্বল ও কাপর্দকহীন, সে শক্তিশালী ও বিত্তশালী । এখন তার সম্পদ আমাকে দেয় না। একথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তুমি এবং তোমার সম্পদ তোমার পিতার। [১ ইবনু মাজাহ , তিজারাত, পৃ. ১৬৫; ইউসুফ ইসলাহি, হুসনে মুয়াশারাহ, অনুবাদ আব্দুল কাদের, মাতা-পিতা ও]
মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার সম্পর্কে হাসান বসরী (রা) কে জিজ্ঞেস করা হরে তিনি বলেনঃ তোমার মালিকানাধীন সম্পদ তাঁদের প্রয়োজন মাফিক ব্যয় করবে। তাঁরা যা আদেশ করেন তা যদি গুনার কাজ না হয় , তা মেনে চলবে। [২ আদ দুররুল মানসুর, ৫খ, পৃ.২৪৯]
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কোন সন্তান পিতার স্নেহ-ভালবাসা, লালন-পালন এবং কষ্টের হক আদায় করতে বা তার বদলা দিতে সক্ষম নয়। তবে সে যদি তাঁকে কারো দাস রূপে পায়, অতঃপর তাঁকে খরিদ করে মুক্ত করে দেয়, তাহলে কিছু হক আদায় হয়। [১ সহিহ মুসলিম, কিতাবুল ইতক, অনু: পিতাকে আযাদ করার ফযিলত; হা: ১৫১০; ইমাম আবু ঈসা মুহাম্মাদ ইবন ঈসা তিরমিযী , জামে আত-তিরমিযী, মুখতার এন্ড কম্পানী দেওবন্দ ইন্ডিয়া, ২খ, পৃ. ১২; আবু দাউদ, ৩ খ , পৃ. ৩৩৫]
আবু মুসা আশ’আরী (রা) থেকে বর্ণিত। একবার আব্দুল্লাহ ইবন উমার (র) দেখলেন, জনৈক ইয়েমেনী স্বীয় মাতাকে পিঠে বসিয়ে কাবা শরীফ তাওয়াফ করছিল এবং আবেগের সাথে এ কবিতা পাঠ করছিল-
আমি তাঁর নিতান্ত অনুগত সাওয়ারী উট
যখন তাঁর সাওয়ারী ভয়ে ভাগে তখন আমি দেইনা ছুট।
অতঃপর সে আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রা.) কে দেখে জিজ্ঞেস করল, আপনি কি মনে করেন, আমি আমার মায়ের বদলা দিয়েছি? ইবন উমার (র) বললেন; মায়ের বদলা! এটা তো তাঁর এক ‘আহ’ শব্দের বদলাও হয়নি। [২ নাদরাতুন নাঈম,৩খ পৃ. ৭৭৮; আদাবুল মুফরাদ পৃ. ১০-১১;]
একবার এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাযির হয়ে অভিযোগ করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার মা বদ-মেজাজী মানুষ। একথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ‘যখন তোমাকে গর্ভে ধারণ করে একাধারে ন’মাস সীমাহীন কষ্ট সহ্য করেছেন, তখনতো তিনি খারাপ মেজাযের ছিলেন না? লোকটি বলল, আমি সত্য বলছি, তিনি বদ মেজাযী। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ‘‘তোমার খাতিরে তিনি যখন রাতের পর রাত জাগতেন, তোমাকে দুধ পান করাতেন, তখন তো তিনি বদ মেজাযী ছিলেন না ।‘‘ লোকটি বলল, আমি অমার মায়ের সে সব কাজের প্রতিদান দিয়ে ফেলেছি’’। ‘‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি সত্যিই প্রতিদান দিয়ে ফেলেছো ?’’ সে বলল. আমি মাকে আমার কাঁধে চড়িয়ে হজ্জ করিয়েছি। ‘‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তুমি কি তাঁর সেই কষ্টের বদলা দিতে পারো, যা তোমার ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় তিনি সহ্য করেছেন?’’ [১ ইউসুফ ইসলাহী হুসনে মু’আশারাত, পৃ. ৪৯]
আবু মুসা আশ’আরী (রা) থেকে বর্ণিত। একবার আব্দুল্লাহ ইবন উমার (র) দেখলেন, জনৈক ইয়েমেনী স্বীয় মাতাকে পিঠে বসিয়ে কাবা শরীফ তাওয়াফ করছিল এবং আবেগের সাথে এ কবিতা পাঠ করছিল-
আমি তাঁর নিতান্ত অনুগত সাওয়ারী উট
যখন তাঁর সাওয়ারী ভয়ে ভাগে তখন আমি দেইনা ছুট।
অতঃপর সে আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রা.) কে দেখে জিজ্ঞেস করল, আপনি কি মনে করেন, আমি আমার মায়ের বদলা দিয়েছি? ইবন উমার (র) বললেন; মায়ের বদলা! এটা তো তাঁর এক ‘আহ’ শব্দের বদলাও হয়নি। [২ নাদরাতুন নাঈম,৩খ পৃ. ৭৭৮; আদাবুল মুফরাদ পৃ. ১০-১১;]
একবার এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাযির হয়ে অভিযোগ করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার মা বদ-মেজাজী মানুষ। একথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ‘যখন তোমাকে গর্ভে ধারণ করে একাধারে ন’মাস সীমাহীন কষ্ট সহ্য করেছেন, তখনতো তিনি খারাপ মেজাযের ছিলেন না? লোকটি বলল, আমি সত্য বলছি, তিনি বদ মেজাযী। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ‘‘তোমার খাতিরে তিনি যখন রাতের পর রাত জাগতেন, তোমাকে দুধ পান করাতেন, তখন তো তিনি বদ মেজাযী ছিলেন না ।‘‘ লোকটি বলল, আমি অমার মায়ের সে সব কাজের প্রতিদান দিয়ে ফেলেছি’’। ‘‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি সত্যিই প্রতিদান দিয়ে ফেলেছো ?’’ সে বলল. আমি মাকে আমার কাঁধে চড়িয়ে হজ্জ করিয়েছি। ‘‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তুমি কি তাঁর সেই কষ্টের বদলা দিতে পারো, যা তোমার ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় তিনি সহ্য করেছেন?’’ [১ ইউসুফ ইসলাহী হুসনে মু’আশারাত, পৃ. ৪৯]
সন্তানের ইসলাম গ্রহণের পরও যদি মাতা-পিতা কুফর ও শিরকের পংকিলতায় নিমজ্জিত থাকে এবং তাকে কুফরীতে ফিরে আসতে বাধ্য করে, তবে কোনক্রমেই তাদের কথা মানা ও তাদের আনুগত্য করা যাবে না । কেননা আল্লাহর নাফরমানীমুলক কাজে কোন মানুষের আনুগত্য করা হালাল নয়। তবে অবশ্যই মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার ও সদাচরণ করে যেতে হবে।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلى أَنْ تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا
মাতা-পিতা যদি আমার সাথে কাউকে শরীক করার জন্য তোমার উপর চাপ প্রয়োগ করে- যে সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই- তাহলে অবশ্যই তাদের আনুগত্য করবে না এবং দুনিয়ার জীবনে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। আর তাদের আনুগত্য করবে যারা আমার দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। [২ সুরা লুকমানঃ ১৫]
মাতা-পিতা সমতানকে কুফরী করার জন্য যত কঠিন চাপ প্রয়োগ করুক না কেন, তাদের কথা মানা ও তাদের আনুগত্য করা যাবে না। তবে তাদের সাথে অবশ্যই সদ্ব্যবহার ও সুন্দর আচরণ করে যেতে হবে ।
আবু বাকর (রা) এর কন্যা আসমা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আমার মা মুশরিক অবস্থায় আমার নিকট এসেছিলেন। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট আরয করলাম, আমার মা আমার নিকট এসেছেন, তিনি ইসলাম থেকে বিমুখ রয়েছেন। আমি কি তাঁর সাথে সদ্ব্যবহার করব? তিনি বললেন হ্যাঁ, মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার করো। [১ সহিহ আল বুখারী, ২খ, পৃ. ৮৮৪; সহিহ মুসলিম, কিতাবুয যাকাত ২খ, পৃ. ৬৯৬;]
আবু হুরাইরা (রা) মুসলমান হওয়ার পরও দীর্ঘদিন যাবত তাঁর মা শিরকে নিমজ্জিত ছিলেন। তিনি মাকে সর্বদা শিরকের পরিণাম সম্পর্কে সর্তক করতেন এবং ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিতেন। আর তাঁর মাও সর্বদা অস্বীকৃতি জানাতে থাকতেন। তা সত্বেও আবু হুরাইরা (রা) তাঁর মায়ের ইজ্জত- সম্মান, খেদমত ও আনুগত্যে কোন প্রকার ত্রুটি করেননি।
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার মা মুশরিক থাকা অবস্থায় আমি তাঁকে সর্বদা ইসলাম গ্রহণ করার দাওয়াত দিতাম। একদিন আমি তাঁকে ইসলামের দাওয়াত দিলে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে আমাকে এমন কিছু কথা শুনালেন, আমার অন্তর বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়ে উঠে। আমি ক্রন্দনরত অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাযির হয়ে আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি সব সময় আমার মাকে ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকি, তিনি সব সময় তা অস্বীকার করতে থাকেন। আজ আমি তাকে ইসলামের দাওয়াত দিলে তিনি রাগান্বিত হয়ে আপনার শানে বেয়াদবী করে বসেন এবং আপনাকে গালমন্দ করেন। আমি তা সহ্য করতে পারিনি। আপনি আল্লাহর দরবারে দুআ করুর, যেন তিনি আবু হুরাইরার মাকে হেদায়েত নসীব করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআ করলেনঃ হে আল্লাহ! আপনি আবু হুরাইরার মাকে হেদায়েত করুন। আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লমের দুআর সুসংবাদ নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়লাম। আমি বাড়ি পৌছে দেখি ঘরের দরজা বনদ্ধ। তিনি আমার পায়ের শব্দ শুনে ভেতর থেকে বললেন, আবু হুরাইরা অপেক্ষা কর। আমি পানি পড়ার শব্দ শুনতে পেলাম। আবু হুরাইরা (রা) বলেন, তিনি তাড়াতাড়ি গোসল শেষ করে দোপাট্টা পরিধান করে উড়না পরা ছাড়াই দরজা খুলে দিলেন। অতঃপর বললেন; আবু হুরাইরা! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসুল। আমি আনন্দে ক্রন্দনরত অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাযির হয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আপনাকে সুসংবাদ শুনাতে এসেছি। আল্লাহ তাআলা আপনার দুআ কবুল করেছেন। তিনি আবু হুরাইরার মাকে হেদায়েত নসীব করেছেন। একথা শুনে তিনি খুশি হলেন এবং আল্লাহর প্রশংসা ও গুনগান করলেন এবং আমাকে নসিহত করলেন।
এরপর আমি আরয করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি দুআ করুন যেন আল্লাহ আমাকে এবং আমার মাকে সকল মুমিনের প্রিয় বানিয়ে দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআ করলেনঃ ইয়া আল্লাহ! আবু হুরাইরা ও তার মায়ের প্রতি ভালবাসা সকল মুমিনের অন্তরে সৃষ্টি করে দিন এবং তাদের উভয়ের অন্তরে সকল মুসলমানের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিন। এ দুআর পর যে মুসলমানই আমাকে দেখেছে অথবা আমার কথা শুনেছে সেই আমাকে ভালোবেসেছে। [১ সহিহ মুসলিম, ফাযায়িল অধ্যায়, অনুঃ আবু হুরাইরা (রা)- এর ফযিলত। হাদিস নং ২৪৯১]
এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلى أَنْ تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا
মাতা-পিতা যদি আমার সাথে কাউকে শরীক করার জন্য তোমার উপর চাপ প্রয়োগ করে- যে সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই- তাহলে অবশ্যই তাদের আনুগত্য করবে না এবং দুনিয়ার জীবনে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। আর তাদের আনুগত্য করবে যারা আমার দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। [২ সুরা লুকমানঃ ১৫]
মাতা-পিতা সমতানকে কুফরী করার জন্য যত কঠিন চাপ প্রয়োগ করুক না কেন, তাদের কথা মানা ও তাদের আনুগত্য করা যাবে না। তবে তাদের সাথে অবশ্যই সদ্ব্যবহার ও সুন্দর আচরণ করে যেতে হবে ।
আবু বাকর (রা) এর কন্যা আসমা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আমার মা মুশরিক অবস্থায় আমার নিকট এসেছিলেন। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট আরয করলাম, আমার মা আমার নিকট এসেছেন, তিনি ইসলাম থেকে বিমুখ রয়েছেন। আমি কি তাঁর সাথে সদ্ব্যবহার করব? তিনি বললেন হ্যাঁ, মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার করো। [১ সহিহ আল বুখারী, ২খ, পৃ. ৮৮৪; সহিহ মুসলিম, কিতাবুয যাকাত ২খ, পৃ. ৬৯৬;]
আবু হুরাইরা (রা) মুসলমান হওয়ার পরও দীর্ঘদিন যাবত তাঁর মা শিরকে নিমজ্জিত ছিলেন। তিনি মাকে সর্বদা শিরকের পরিণাম সম্পর্কে সর্তক করতেন এবং ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিতেন। আর তাঁর মাও সর্বদা অস্বীকৃতি জানাতে থাকতেন। তা সত্বেও আবু হুরাইরা (রা) তাঁর মায়ের ইজ্জত- সম্মান, খেদমত ও আনুগত্যে কোন প্রকার ত্রুটি করেননি।
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার মা মুশরিক থাকা অবস্থায় আমি তাঁকে সর্বদা ইসলাম গ্রহণ করার দাওয়াত দিতাম। একদিন আমি তাঁকে ইসলামের দাওয়াত দিলে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে আমাকে এমন কিছু কথা শুনালেন, আমার অন্তর বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়ে উঠে। আমি ক্রন্দনরত অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাযির হয়ে আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি সব সময় আমার মাকে ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকি, তিনি সব সময় তা অস্বীকার করতে থাকেন। আজ আমি তাকে ইসলামের দাওয়াত দিলে তিনি রাগান্বিত হয়ে আপনার শানে বেয়াদবী করে বসেন এবং আপনাকে গালমন্দ করেন। আমি তা সহ্য করতে পারিনি। আপনি আল্লাহর দরবারে দুআ করুর, যেন তিনি আবু হুরাইরার মাকে হেদায়েত নসীব করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআ করলেনঃ হে আল্লাহ! আপনি আবু হুরাইরার মাকে হেদায়েত করুন। আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লমের দুআর সুসংবাদ নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়লাম। আমি বাড়ি পৌছে দেখি ঘরের দরজা বনদ্ধ। তিনি আমার পায়ের শব্দ শুনে ভেতর থেকে বললেন, আবু হুরাইরা অপেক্ষা কর। আমি পানি পড়ার শব্দ শুনতে পেলাম। আবু হুরাইরা (রা) বলেন, তিনি তাড়াতাড়ি গোসল শেষ করে দোপাট্টা পরিধান করে উড়না পরা ছাড়াই দরজা খুলে দিলেন। অতঃপর বললেন; আবু হুরাইরা! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসুল। আমি আনন্দে ক্রন্দনরত অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাযির হয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আপনাকে সুসংবাদ শুনাতে এসেছি। আল্লাহ তাআলা আপনার দুআ কবুল করেছেন। তিনি আবু হুরাইরার মাকে হেদায়েত নসীব করেছেন। একথা শুনে তিনি খুশি হলেন এবং আল্লাহর প্রশংসা ও গুনগান করলেন এবং আমাকে নসিহত করলেন।
এরপর আমি আরয করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি দুআ করুন যেন আল্লাহ আমাকে এবং আমার মাকে সকল মুমিনের প্রিয় বানিয়ে দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআ করলেনঃ ইয়া আল্লাহ! আবু হুরাইরা ও তার মায়ের প্রতি ভালবাসা সকল মুমিনের অন্তরে সৃষ্টি করে দিন এবং তাদের উভয়ের অন্তরে সকল মুসলমানের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিন। এ দুআর পর যে মুসলমানই আমাকে দেখেছে অথবা আমার কথা শুনেছে সেই আমাকে ভালোবেসেছে। [১ সহিহ মুসলিম, ফাযায়িল অধ্যায়, অনুঃ আবু হুরাইরা (রা)- এর ফযিলত। হাদিস নং ২৪৯১]
আবু তুফায়েল (রা) বলেন, আমি দেখলাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিয়’রানা নামক স্থানে গোশত বন্টন করছিলেন। এমন সময় একজন মহিলা এসে সরাসরি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকটে চলে গেলেন। তিনি তাঁর জন্য নিজের চাদর বিছিয়ে দিলেন। অতঃপর ভদ্র মহিলাটি তার ওপর আসন গ্রহণ করলেন। (বর্ণনাকারী বলেন)
আমি লোকদের কাছে জানতে চাইলাম, ইনি কে,? তারা বললেন, ইনি হচেছন রাসুল্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দুধ মা- হালীমা সাদিয়া (রা)। তিনি তাঁকে দুধ পান করিয়েছিলেন। [২ আবু দাউদ, ৪ খ, পৃ. ৩৩৫]
আমি লোকদের কাছে জানতে চাইলাম, ইনি কে,? তারা বললেন, ইনি হচেছন রাসুল্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দুধ মা- হালীমা সাদিয়া (রা)। তিনি তাঁকে দুধ পান করিয়েছিলেন। [২ আবু দাউদ, ৪ খ, পৃ. ৩৩৫]
আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রা) বলেন, আমার বিবাহ বন্ধনে এমন একজন মহিলা ছিল যাকে আমি ভালবাসতাম। অথচ আমার পিতা উমার (রা) তাকে অপছন্দ করতেন। একদিন তিনি আমাকে বললেন, তুমি তাকে তালাক দাও। আমি তালাক দিতে অস্বীকার করলে উমার (রা) রাসুল্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিষয়টি অবহিত করলেন। রাসুল্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেনঃ তাকে তালাক দাও এবং তোমার পিতার আনুগত্য করো। আমি তাকে তালাক দিলাম। [১ আবু দাউদ আদব , অনুঃ বিররুল ওয়ালিধাইন, ৪থ, পৃ. ৩৩৫; আল মুস্তাদরাক, কিতাবুল বির ওয়াস সিলা, খ, পৃ. ১৫২]
এক ব্যক্তি আবুদ দারদা (রা)-এর নিকট এসে বলল, আমার পিতা আমাকে অনেক পিড়াপীড়ি করে বিয়ে দিয়েছেন। এখন তিনি আমাকে নির্দেশ দিচেছন, আমার সে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার জন্য। আবুদ দারদা (রা) বলেন, আমি তোমাকে একথা বলতে পারবো না যে, তুমি তোমার মাতা-পিতার নাফরমানী করো এবং এ কথাও বলব না যে, তুমি তোমার স্ত্রীকে তালাক দাও। তবে তুমি চাইলে আমি তোমাকে একটি হাদীস শুনাব যা আমি রাসুল্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছ থেকে শুনেছি। আমি তাকে বলতে শুনেছি, পিতা জান্নাতের স্রেষ্ঠ দরজা, তুমি যদি চাও তাহলে এ দরজাটা নিজের জন্য সুরক্ষিত কর। আর যদি চাও , তাহলে এটাকে ভেঙ্গে ফেলতে পারো। [২ আত তারগীব ওয়াত তারহীব, ৩খ, পৃ. ৩১৬-৩১৭ ; ফতহুর রববানী; ১৯খ, পৃ.৩৮]
এক ব্যক্তি আবুদ দারদা (রা)-এর নিকট এসে বলল, আমার পিতা আমাকে অনেক পিড়াপীড়ি করে বিয়ে দিয়েছেন। এখন তিনি আমাকে নির্দেশ দিচেছন, আমার সে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার জন্য। আবুদ দারদা (রা) বলেন, আমি তোমাকে একথা বলতে পারবো না যে, তুমি তোমার মাতা-পিতার নাফরমানী করো এবং এ কথাও বলব না যে, তুমি তোমার স্ত্রীকে তালাক দাও। তবে তুমি চাইলে আমি তোমাকে একটি হাদীস শুনাব যা আমি রাসুল্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছ থেকে শুনেছি। আমি তাকে বলতে শুনেছি, পিতা জান্নাতের স্রেষ্ঠ দরজা, তুমি যদি চাও তাহলে এ দরজাটা নিজের জন্য সুরক্ষিত কর। আর যদি চাও , তাহলে এটাকে ভেঙ্গে ফেলতে পারো। [২ আত তারগীব ওয়াত তারহীব, ৩খ, পৃ. ৩১৬-৩১৭ ; ফতহুর রববানী; ১৯খ, পৃ.৩৮]
আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের হায়াত ও জীবিকার প্রশস্ততা কামনা করে, সে যেন মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করে এবং আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখে। [৩ফতহুর রববানী ১৯ খ, পৃ. ৩৫, আত তারগীব ওয়াত তারহীব ৩য় খ, পৃ. ৩১৭]
মুয়ায ইবন আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করে, তার জন্য সুসংবাদ হলো, আল্লাহ তাআলা তার হায়াত বৃদ্ধি করে দেবেন। [৪ আত তারগীব ওয়াত তারহীব ৩ খ, পৃ. ৩১৭; আল মুস্তাদরাক ৪খ , পৃ. ১৫৪]
ওয়াহাব ইবন মুনিয়্যা (রা) বলেনঃ মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার সন্তানে হায়াত বৃদ্ধি করে দেয়। [১ আদ দুরুল মানসুর, ৫খ, পৃ. ২৬৭;]
সাওবান (র) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ দুআ ব্যতীত কোন কিছুই তাকদিরকে ফিরাতে পারে না । নেক আমল ব্যতীত কোন কিছুই হায়াত বাড়াতে পারে না। আর ব্যক্তির কৃত গুনাহ-ই তাকে জীবিকা থেকে বঞ্চিত করে। [২ ইবন মাজাহ, পৃ. ১০ আরো দ্রঃ মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী;]
ইবন উমার (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের পিতাদের (পিতা ও দাদার ) সাথে সদ্ব্যবহার ও সদাচরণ করো, তাহলে তোমাদের সন্তানরাও তোমাদের সাথে সদাচরণ করবে । তোমরা সচ্চরিত্রবান হও, তোমাদের নারীরাও সচ্চরিত্রবান হবে। [৩ আত তারগীব ওয়াত তারহীব ৩ খ, পৃ. ৩১৮;]
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পরনারীর প্রতি কুদ্রষ্টি দেয়া থেকে নিজেদেরকে পবিত্র রাখ এবং সচ্চরিত্রবান হও, তোমাদের নারীরাও সচ্চরিত্রবান ও পবিত্র হবে । তোমাদের বাপদাদাদের সাথে সদ্ব্যবহার করো, তোমাদের সন্তানরাও তোমাদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে.....। [৪ আত তারগীব ওয়াত তারহীব ৩ খ, পৃ. ৩১৭;]
ইবন উমার (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তিন ব্যক্তি চলার পথে বৃষ্টির কবলে পড়ে পর্বত গুহায় আশ্রয় নেয় । এমন সময় একখানা প্রকান্ড পাথর পাহাড় থেকে গড়িয়ে গুহার মুখে এস পড়ে । ফলে গুহার মুখ সম্পুর্ণরুপে বন্ধ হয়ে যায় । তখন তারা একে অপরকে বলল, তোমরা নিজেদের এমন কোন নেক আমলের কথা স্বরণ করো যা একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে । আর সেই নেক আমলের অসীলা করে আল্লাহর নিকট দুআ করো। আশা করা যায়, এর বদৌলতে তিনি বিপদ দূর করে দেবেন। অতঃপর তাদের একজন বলল, হে আল্লাহ ! আমার অতিশয় বৃদ্ধ মাতা-পিতা ছিলেন এবং ছোট ছোট কয়েকটি বাচ্চাও ছিল । আমি তাদের জন্য মেষ ও দুম্বা চরাতাম এবং আসার সময় তাদের জন্য দুধ দোহন করে আনতাম। আমার সন্তানদের দুধ পান করানোর আগেই আমার মাত-পিতাকে দুধ পান করাতাম। ঘটনাক্রমে একদিন চারণ বৃক্ষ আমাকে দুরে নিয়ে যায়। ফলে ঘরে ফিরতে আমার সন্ধ্যা হয়ে গেল। আমি এসে তাদেরকে (মাতা-পিতাকে) ঘুমন্ত অবস্থায় পেলাম। প্রতিদিনের ন্যায় আজও দুধ দোহন করে দুধের পাত্র নিয়ে তাঁদের কাছে আসলাম এবং পাত্র হাতে নিয়ে তাঁদের শিয়রে দাঁড়িয়ে থাকলাম। তাঁদের ঘুম থেকে ডাকা এবং তাঁদের আগে বাচচাদেরকে দুধ পান করানো আমি ভালো মনে করলাম না। অথচ আমার বাচ্চাগুলো (ক্ষুধার যাতনায়) আমার পায়ে পড়ে কাঁদছিল। আমার ও তাদের এ অবস্থা সকাল পর্যন্ত বিদ্যমান রইল। (অবশেষে আমার মাতা-পিতা ঘুম থেকে জাগার পর প্রথমে তাঁদেরকেই দুধ পান করালাম) ইয়া আল্লাহ! তুমি যদি জান যে, আমি এ কাজটি একমাত্র তোমার সন্তুষ্টির জন্য করেছিলাম, তাহলে এর অসীলায় আমাদের জন্য (গুহার মুখ থেকে) পাথরটি এতটুকু সরিয়ে দাও যাতে আমরা আকাশ দেখতে পাই। তখন আল্লাহ তাআলা পাথরটি এতটুকু পরিমাণ সরিয়ে দিলেন যে, তারা আকাশ দেখতে পাচ্ছিলো ...। [১ সহিহ আল বুখারী, ২খ, পৃ.৮৮৩ সহিহ মুসলিম, যিকির ওয়াদ দুয়া, অনুঃ ২৭, তিন গুহাবাসির ঘটনা; ৪খ, পৃ. ২৭৪৩]
মুয়ায ইবন আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করে, তার জন্য সুসংবাদ হলো, আল্লাহ তাআলা তার হায়াত বৃদ্ধি করে দেবেন। [৪ আত তারগীব ওয়াত তারহীব ৩ খ, পৃ. ৩১৭; আল মুস্তাদরাক ৪খ , পৃ. ১৫৪]
ওয়াহাব ইবন মুনিয়্যা (রা) বলেনঃ মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার সন্তানে হায়াত বৃদ্ধি করে দেয়। [১ আদ দুরুল মানসুর, ৫খ, পৃ. ২৬৭;]
সাওবান (র) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ দুআ ব্যতীত কোন কিছুই তাকদিরকে ফিরাতে পারে না । নেক আমল ব্যতীত কোন কিছুই হায়াত বাড়াতে পারে না। আর ব্যক্তির কৃত গুনাহ-ই তাকে জীবিকা থেকে বঞ্চিত করে। [২ ইবন মাজাহ, পৃ. ১০ আরো দ্রঃ মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী;]
ইবন উমার (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের পিতাদের (পিতা ও দাদার ) সাথে সদ্ব্যবহার ও সদাচরণ করো, তাহলে তোমাদের সন্তানরাও তোমাদের সাথে সদাচরণ করবে । তোমরা সচ্চরিত্রবান হও, তোমাদের নারীরাও সচ্চরিত্রবান হবে। [৩ আত তারগীব ওয়াত তারহীব ৩ খ, পৃ. ৩১৮;]
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পরনারীর প্রতি কুদ্রষ্টি দেয়া থেকে নিজেদেরকে পবিত্র রাখ এবং সচ্চরিত্রবান হও, তোমাদের নারীরাও সচ্চরিত্রবান ও পবিত্র হবে । তোমাদের বাপদাদাদের সাথে সদ্ব্যবহার করো, তোমাদের সন্তানরাও তোমাদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে.....। [৪ আত তারগীব ওয়াত তারহীব ৩ খ, পৃ. ৩১৭;]
ইবন উমার (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তিন ব্যক্তি চলার পথে বৃষ্টির কবলে পড়ে পর্বত গুহায় আশ্রয় নেয় । এমন সময় একখানা প্রকান্ড পাথর পাহাড় থেকে গড়িয়ে গুহার মুখে এস পড়ে । ফলে গুহার মুখ সম্পুর্ণরুপে বন্ধ হয়ে যায় । তখন তারা একে অপরকে বলল, তোমরা নিজেদের এমন কোন নেক আমলের কথা স্বরণ করো যা একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে । আর সেই নেক আমলের অসীলা করে আল্লাহর নিকট দুআ করো। আশা করা যায়, এর বদৌলতে তিনি বিপদ দূর করে দেবেন। অতঃপর তাদের একজন বলল, হে আল্লাহ ! আমার অতিশয় বৃদ্ধ মাতা-পিতা ছিলেন এবং ছোট ছোট কয়েকটি বাচ্চাও ছিল । আমি তাদের জন্য মেষ ও দুম্বা চরাতাম এবং আসার সময় তাদের জন্য দুধ দোহন করে আনতাম। আমার সন্তানদের দুধ পান করানোর আগেই আমার মাত-পিতাকে দুধ পান করাতাম। ঘটনাক্রমে একদিন চারণ বৃক্ষ আমাকে দুরে নিয়ে যায়। ফলে ঘরে ফিরতে আমার সন্ধ্যা হয়ে গেল। আমি এসে তাদেরকে (মাতা-পিতাকে) ঘুমন্ত অবস্থায় পেলাম। প্রতিদিনের ন্যায় আজও দুধ দোহন করে দুধের পাত্র নিয়ে তাঁদের কাছে আসলাম এবং পাত্র হাতে নিয়ে তাঁদের শিয়রে দাঁড়িয়ে থাকলাম। তাঁদের ঘুম থেকে ডাকা এবং তাঁদের আগে বাচচাদেরকে দুধ পান করানো আমি ভালো মনে করলাম না। অথচ আমার বাচ্চাগুলো (ক্ষুধার যাতনায়) আমার পায়ে পড়ে কাঁদছিল। আমার ও তাদের এ অবস্থা সকাল পর্যন্ত বিদ্যমান রইল। (অবশেষে আমার মাতা-পিতা ঘুম থেকে জাগার পর প্রথমে তাঁদেরকেই দুধ পান করালাম) ইয়া আল্লাহ! তুমি যদি জান যে, আমি এ কাজটি একমাত্র তোমার সন্তুষ্টির জন্য করেছিলাম, তাহলে এর অসীলায় আমাদের জন্য (গুহার মুখ থেকে) পাথরটি এতটুকু সরিয়ে দাও যাতে আমরা আকাশ দেখতে পাই। তখন আল্লাহ তাআলা পাথরটি এতটুকু পরিমাণ সরিয়ে দিলেন যে, তারা আকাশ দেখতে পাচ্ছিলো ...। [১ সহিহ আল বুখারী, ২খ, পৃ.৮৮৩ সহিহ মুসলিম, যিকির ওয়াদ দুয়া, অনুঃ ২৭, তিন গুহাবাসির ঘটনা; ৪খ, পৃ. ২৭৪৩]
আবু উসাইদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় সালামা গোত্রের এক ব্যক্তি এসে বলল , হে আল্লাহর রাসুল! মাতা-পিতার ইন্তিকালের পর তাঁদের সাথে আমার সদ্ব্যবহার করার কিছু অবশিষ্ট আছে কি? তিনি বললেন হাঁ, আছে। (চারটি কাজের মাধ্যমে তাঁদের সাথে সদ্ব্যবহার অব্যাহত রাখতে পার) তাঁদের জন্য দুআ ও ক্ষমা প্রার্থনা করা। তাঁদের মৃত্যুর পর তাঁদের কৃত ওয়াদা সমুহ পূর্ণ করা। তাঁদের সাথে যাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে তাঁদের সাথে সদ্য্বহার ও সুন্দর আচরণ করা। তাঁদের বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। [১আবু দাউদ ,আদব, অনুঃ মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার, ৪ খ, পৃ. ৩৩২ নং ৫১৪২ ; ইবন মাজাহ, আদব, পৃ. ২৩০ আল মুস্তাদরাক , বির ওয়াস সিলা, ৪ খ, পৃ. ১৫৪,]
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাতে মানুষের মর্যাদা অবশ্যই বৃদ্ধি করা হবে । সে বলবে , এট (মর্যাদা বৃদ্ধি কিভাবে হলো? বলা হবে তোমার জন্য তোমার সন্তানের ক্ষমা প্রার্থনার বদৌলতে। [২ ইবন মাজাহ ,আদব অধ্যায়, অনুঃ , মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার;]
আবু হুরাউরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ মারা যাওয়ার পর তার সমস্ত নেক আমল বনদ্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি নেক আমল যা তার মৃত্যুর পরও চালু থাকে। এক. সদকায়ে জারিয়া। [৩ মসজিদ, মাদ্রাসা ও জনকল্যাণমূলক কাজ প্রভৃতি।] দুই. তাঁর রেখে যাওয়া জ্ঞান ভান্ডার যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়। তিন. তার সৎ সন্তান যারা তার জন্য দুআ করতে থাকে। [১ সহিহ মুসলিম, আল ওসিয়্যাহ, অনুঃ মৃত্যুর পর মানুষের যে সওয়াব যোগ হয়, ৩খ, পৃ. ১২৫৫ নং ১৬৩১]
আনাস (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কারো মাতা-পিতা উভয়ে অথবা একজন এমতাবস্থায় ইন্তিকাল করল যে, সে তাঁদের অবাধ্য ছিল। কিন্তু তাঁদের মৃত্যুর পর সে তাঁদের জন্য সর্বদা দুআ ও ইস্তিগফার করতে থাকে এবং তাঁদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। অবশেষে আল্লাহ তাআলা তাকে নেককার লোকদের মধ্যে শামিল করে নেন। [৬২ওয়ালীউদ্দিন মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল্লাহ আত তিবরিযী; মিশকাতুল মাসাবীহ, আদব, অনুঃ মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার, পৃ. ৪২১; (বায়হাকী) বরাত;]
আবু হুরাউরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ মারা যাওয়ার পর তার সমস্ত নেক আমল বনদ্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি নেক আমল যা তার মৃত্যুর পরও চালু থাকে। এক. সদকায়ে জারিয়া। [৩ মসজিদ, মাদ্রাসা ও জনকল্যাণমূলক কাজ প্রভৃতি।] দুই. তাঁর রেখে যাওয়া জ্ঞান ভান্ডার যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়। তিন. তার সৎ সন্তান যারা তার জন্য দুআ করতে থাকে। [১ সহিহ মুসলিম, আল ওসিয়্যাহ, অনুঃ মৃত্যুর পর মানুষের যে সওয়াব যোগ হয়, ৩খ, পৃ. ১২৫৫ নং ১৬৩১]
আনাস (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কারো মাতা-পিতা উভয়ে অথবা একজন এমতাবস্থায় ইন্তিকাল করল যে, সে তাঁদের অবাধ্য ছিল। কিন্তু তাঁদের মৃত্যুর পর সে তাঁদের জন্য সর্বদা দুআ ও ইস্তিগফার করতে থাকে এবং তাঁদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। অবশেষে আল্লাহ তাআলা তাকে নেককার লোকদের মধ্যে শামিল করে নেন। [৬২ওয়ালীউদ্দিন মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল্লাহ আত তিবরিযী; মিশকাতুল মাসাবীহ, আদব, অনুঃ মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার, পৃ. ৪২১; (বায়হাকী) বরাত;]
বুরাইদা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে বসা ছিলাম। তখন একজন মহিলা তাঁর খেদমতে এসে আরয করল, আমি আমার মাকে একটি দাসী দান করেছি। ইতিমধ্যে তিনি ইন্তিকাল করেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ দাসী দান করার প্রতিদান তুমি অবশ্যই পাবে এবং মীরাস হিসেবে দাসীটিও তুমি ফেরত পাবে। মহিলাটি আরয করল, হে আল্লাহর রাসুল! এক মাসের রোযা তাঁর অনাদায় রয়ে গেছে , আমি কি তাঁর পক্ষ থেকে সে রোযা কাযা আদায় করবো? তিনি বললেনঃ তুমি তাঁর কাযা রোযা আদায় করো। সে বলল, আমার মা কখনও হজ করেননি, আমি কি তাঁর পক্ষ থেকে হজ করবো? তিনি বললেনঃ তুমি তার পক্ষ থেকে হজ করো। [৩ সহিহ মুসলিম, সিয়াম, অনুঃ মৃত ব্যক্তির কাযা রোযা আদায় করা, ২খ, পৃ.৮০৫, নং ১১৪৯]
ইবন আববাস (রা)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এসে আরয করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার মা এক মাসের রোযা অনাদায় রেখে মারা যান । আমি কি তাঁর রোযাগুলো পালন করব? তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের যদি কোন ঋণ থাকতো, তুমি কি তা পরিশোধ করতে না? লোকটি বলল, হ্যাঁ, পরিশোধ করতাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আল্লাহর ঋণ সর্বাগ্রে পরিশোধযোগ্য। [১ প্রাগুক্ত, পৃ. ৮০৪,নং ১১৪৮]
ইবন আববাস (রা)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এসে আরয করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার মা এক মাসের রোযা অনাদায় রেখে মারা যান । আমি কি তাঁর রোযাগুলো পালন করব? তিনি বললেনঃ তোমার মায়ের যদি কোন ঋণ থাকতো, তুমি কি তা পরিশোধ করতে না? লোকটি বলল, হ্যাঁ, পরিশোধ করতাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আল্লাহর ঋণ সর্বাগ্রে পরিশোধযোগ্য। [১ প্রাগুক্ত, পৃ. ৮০৪,নং ১১৪৮]
আব্দুল্লাহ (রা) বর্ণনা করেন। আস’আদ ইবন উবাদা (রা) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট আরয করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার মা মানত করেছিলেন, কিন্তু তা আদায় করার পূর্বেই তিনি ইন্তিকাল করেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ তুমি তার পক্ষ থেকে মানত পুরো করে দাও। [২ সহিহ আল বুখারী; কিতাবুল হিয়াল, অনুঃ যাকাত. সম্পর্কে, নং ৬৯৯; আরো দ্রঃ আবু দাউদ, মুয়াত্তা, নাসাঈ]
আব্দুল্লাহ ইবন আববাস (রা) বর্ণনা করেন। এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট আরয করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার মা ইন্তিকাল করেছেন, তিনি কোন অসিয়াত করে যাননি। আমি যদি তাঁর পক্ষ থেকে সাদকাহ করি তাহলে কি তাঁর কোন উপকারে আসবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, উপকারে আসবে....। [৩ আবু দাউদ, কিতাব আল-অসায়া; অনুঃ যে অসিয়াত না করে মৃত্যু বরণ করল, তার পক্ষ থেকে দান করা, ৩খ, পৃ. ১১৮]
আব্দুল্লাহ ইবন আববাস (রা) বর্ণনা করেন। এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট আরয করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার মা ইন্তিকাল করেছেন, তিনি কোন অসিয়াত করে যাননি। আমি যদি তাঁর পক্ষ থেকে সাদকাহ করি তাহলে কি তাঁর কোন উপকারে আসবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, উপকারে আসবে....। [৩ আবু দাউদ, কিতাব আল-অসায়া; অনুঃ যে অসিয়াত না করে মৃত্যু বরণ করল, তার পক্ষ থেকে দান করা, ৩খ, পৃ. ১১৮]
আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমার পিতার বন্ধুদের ব্যাপারে যত্নবান হও। তাদের সাথে সর্ম্পক ছিন্ন করো না, (যদি ছিন্ন কর) তাহলে আল্লাহ তাআলা তোমার নুর বিলুপ্ত করে দেবেন। [১ নাদরাতুন নাঈম , ৩ খ পৃ.৭৭৫ হাইসামী আল মাজমা; ৮খ,পৃ.১৪৭ বরাত;]
অব্দুল্লাহ ইবন উমার(রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির সর্বাপেক্ষা বড় সৎকাজ হচ্ছে, পিতার বন্ধুদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। [২ সহিহ মুসলিম, বির ওয়াস সিলা, অনুঃ মাতা-পিতার বন্ধু বান্ধবদের সাথে সদাচরণ করার ফযিলত ৪খ, পৃ. ১৯৭৯, নং ১২, আরো দ্রঃ তিরমিযী, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ]
আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন এক আরব বেদুইন তাঁর সাথে মক্কার পথে মিলিত হলো। আব্দুল্লাহ (রা) তাকে সালাম দিলেন এবং তার সাওয়ারী গাধার উপর তাকে তুলে নিলেন। তিনি নিজের মাথার পাগড়ীও তাকে দিয়ে দিলেন। (তার এক সফরসঙ্গী) ইবন দীনার বলেন, আমরা তাকে(আব্দুল্লাহকে) বললাম, আল্লাহ তাআলা আপনাকে কল্যাণ দান করুন। তারা তো গ্রামবাসী। তারা অল্প কিছু পেলেই তাতে সন্তুষ্ট হয়। (দুদিরহাম দিয়ে দিলেই তো যথেষ্ট হতো) আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রা) বললেন, এ লোকটির পিতা উমার ইবনুল খাত্তাব (রা) এর বন্ধু ছিলেন। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোন ব্যক্তির সর্বোত্তম সৎকাজ হচ্ছে পিতার বন্ধুদের সাথে তার সুসম্পর্ক বজায় রাখা। [৩ নাদরাতুন নাঈম ৩খ, পৃ. ৭৭৪]
আবু দারদা (রা) বলেন, আমি মদিনায় আসলে আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রা) আমার নিকট উপস্থিত হয়ে বলতে লাগলেন, আবু দারদা। তোমার নিকট কেন এসেছি তা কি তুমি জান?
আবু দারদা (রা) বললেন, আমি তো তা জানি না । আব্দুল্লাহ (রা) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কবরে অবস্থিত নিজের পিতার সাথে সুন্দর আচরণ করতে চায় , তার উচিত, পিতার মৃত্যুর পর তাঁর বন্ধু- বান্ধবদের সাথে সুন্দর আচরণ করা। এরপর তিনি বললেন, ভাই! আমার পিতা উমার (রা)-এর সাথে আপনার পিতার ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। আমি সেই বন্ধুত্বের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনপূর্বক তার হক আদায় করতে চাই। [১ আলাউদ্দীন আলী ইবন বালবান, আল-ইহসান বা- তরতিবে সহিহ ইন হাববান, দারূল কুতুবুল ইলমিয়া, বৈরুত, ১ম সং, ১৮০৭ হি . ১৯৮৭ সন, ১খ,পৃ. ৩২৯]
অব্দুল্লাহ ইবন উমার(রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির সর্বাপেক্ষা বড় সৎকাজ হচ্ছে, পিতার বন্ধুদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। [২ সহিহ মুসলিম, বির ওয়াস সিলা, অনুঃ মাতা-পিতার বন্ধু বান্ধবদের সাথে সদাচরণ করার ফযিলত ৪খ, পৃ. ১৯৭৯, নং ১২, আরো দ্রঃ তিরমিযী, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ]
আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন এক আরব বেদুইন তাঁর সাথে মক্কার পথে মিলিত হলো। আব্দুল্লাহ (রা) তাকে সালাম দিলেন এবং তার সাওয়ারী গাধার উপর তাকে তুলে নিলেন। তিনি নিজের মাথার পাগড়ীও তাকে দিয়ে দিলেন। (তার এক সফরসঙ্গী) ইবন দীনার বলেন, আমরা তাকে(আব্দুল্লাহকে) বললাম, আল্লাহ তাআলা আপনাকে কল্যাণ দান করুন। তারা তো গ্রামবাসী। তারা অল্প কিছু পেলেই তাতে সন্তুষ্ট হয়। (দুদিরহাম দিয়ে দিলেই তো যথেষ্ট হতো) আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রা) বললেন, এ লোকটির পিতা উমার ইবনুল খাত্তাব (রা) এর বন্ধু ছিলেন। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোন ব্যক্তির সর্বোত্তম সৎকাজ হচ্ছে পিতার বন্ধুদের সাথে তার সুসম্পর্ক বজায় রাখা। [৩ নাদরাতুন নাঈম ৩খ, পৃ. ৭৭৪]
আবু দারদা (রা) বলেন, আমি মদিনায় আসলে আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রা) আমার নিকট উপস্থিত হয়ে বলতে লাগলেন, আবু দারদা। তোমার নিকট কেন এসেছি তা কি তুমি জান?
আবু দারদা (রা) বললেন, আমি তো তা জানি না । আব্দুল্লাহ (রা) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কবরে অবস্থিত নিজের পিতার সাথে সুন্দর আচরণ করতে চায় , তার উচিত, পিতার মৃত্যুর পর তাঁর বন্ধু- বান্ধবদের সাথে সুন্দর আচরণ করা। এরপর তিনি বললেন, ভাই! আমার পিতা উমার (রা)-এর সাথে আপনার পিতার ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। আমি সেই বন্ধুত্বের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনপূর্বক তার হক আদায় করতে চাই। [১ আলাউদ্দীন আলী ইবন বালবান, আল-ইহসান বা- তরতিবে সহিহ ইন হাববান, দারূল কুতুবুল ইলমিয়া, বৈরুত, ১ম সং, ১৮০৭ হি . ১৯৮৭ সন, ১খ,পৃ. ৩২৯]
আবু হুরাইরা(রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা সমগ্র মাখলুক সৃষ্টি করে যখন অবসর হলেন, তখন রেহেম (আত্মীয়তা) উঠে দাঁড়িয়ে রাহমানুর রাহীমের কোমর ধরল। আল্লাহ বললেনঃ থাম! (তুমি কি চাও) রেহেম আরয করল, এটা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করার স্থান। আল্লাহ তাআলা বললেনঃ তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও, যে ব্যক্তি তোমার সাথে সম্পর্ক বহাল রাখবে, আমিও তার সাথে সম্পর্ক বহাল রাখবো। আর যে ব্যক্তি তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে , আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন্ করবো। রেহেম বলল, হ্যাঁ আমি রাযি আছি, হে আমার প্রতিপালক! আল্লাহ বললেনঃ ঠিক আছে তোমার সাথে আমার এ অঙ্গীকার থাকল। [১সহিহ আল বুখারী, আদব, অনুঃ ১৩, যে ব্যক্তি আত্মীয়ের সাথে সদ্ব্যবহার করে আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেন, নং৫৯৮৭; সহিহ মুসলিম, বির ওয়াস সিলা , অনুঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা, নং ২৫৫৪]
আবু হুরাইরা(রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘রেহেম’’ শব্দটি রহমান থেকে উদ্ভুত। তাই আল্লাহ তাআলা বলেনঃ যে ব্যক্তি তোমার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে, আমিও তার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখবো। আর যে ব্যক্তি তোমাকে ছিন্ন করবে, আমিও তাকে ছিন্ন করবো। [২সহিহ আল বুখারী প্রাগুক্ত]
আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘রেহেম আল্লাহর আরশের সাথে ঝুলন্ত রয়েছে। সে বলে যে আমার সাথে সম্পর্ক অটুট রাখবে, আল্লাহও তার সাথে সম্পর্ক অটুট রাখবেন। আর যে আমাকে ছিন্ন করবে, আল্লাহও তাকে ছিন্ন করবেন। [৩ সহিহ মুসলিম প্রাগুক্ত৪ সহিহ আল বুখারী, আদব, অনুঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার ফযিলাত, নং ৫৯৮৪ সহিহ]
জুবায়ের ইবন মুতয়িম (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্কারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। [৫ সহিহ আল বুখারী, আদব, অনুঃ প্রতিদানে আত্মীয়তার হক আদায় হয় না, নং ৫৯১১]
আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ সে ব্যক্তি আত্মীয়তা রক্ষাকারী নয়, যে শুধু বিনিময় স্বরুপ তা রক্ষা করে। বরং সে ব্যক্তিই আত্মীয়তা রক্ষাকারী, যার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার পর সে তা পূনঃস্থাপন করে। []
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার এমন কিছু আত্মীয় স্বজন রয়েছে, আমি তাদের সাথে সদাচরণ করি, কিন্তু তারা আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে । আমি তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করি, কিন্তু তারা আমার সাথে দুর্ব্যবহার করে। আমি তাদের সাথে ধৈর্যধারণ করি, কিন্তু তারা আমার সাথে মূর্খতা প্রদর্শন করে। জবাবে তিনি বললেনঃ তুমি যেরূপ বললে, যদি এরূপ আচরণই করে থাকো, তবে তুমি যেন তাদের মুখের উপর গরম ছাই নিক্ষেপ করছো। তুমি যতক্ষণ এ নীতির উপর বহাল থাকবে, ততক্ষণ আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তোমার সাথে একজন সাহায্যকারী থাকবেন যিনি তাদের ক্ষতিকে প্রতিরোধ করবেন। [১ সহিহ মুসলিম প্রাগুক্ত ২৫৫৮;২ সহিহ আল বুখারী, আদব, আত্মীয়ের সাথে সদ্ব্যবহারে রিযক বৃদ্ধি পায়, নং ৫৯৮৫-৬, সহিহ মুসলিম প্রাগুক্ত]
আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি স্বীয় জীবিকা বৃদ্ধি ও দীর্ঘায়ূ কামনা করে, সে যেন আত্মীয় স্বজনের উত্তম ব্যবহার করে। []
আব্দুর রহমান ইবন আউফ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ তাবারকা ওয়া তাআলা বলেনঃ আমি আল্লাহ আমি রহমান। রেহম (আত্মীয়ত)কে আমিই সৃষ্টি করেছি। আর রেহম শব্দটি আমি আমার (রহমান) নাম থেকে নিঃসৃত করেছি। সুতরাং যে ব্যক্তি আত্মীয়তাকে সংযোজিত করবে, আমি তাকে (আমার রহমতের সাথে) সংযোজিত করবো। আর যে ব্যক্তি আত্মীয়তাকে ছিন্ন করবে; আমিও তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেবো। [১ আবু দাউদ, যাকাত, অনুঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা, নং ১৬৯৪]
আব্দুল্লাহ ইবন আউফ (রা) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতে শুনেছিঃ সে সম্প্রদায়ের প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষণ হয় না, যাদের মাঝে আতমীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী বিদ্যমান রয়েছে। [২. মিশকাতুল মাসাবীহ, প্রাগুক্ত, (বায়হাকী বরাত)]
আবু বাকর (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ বিদ্রোহ করা ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা অপেক্ষা কোন পাপই এত জঘন্য নয় যে, এ পাপকারীকে আল্লাহ তাআলা শীঘ্রই এ পৃথিবীতে শাস্তি প্রদান করেন এবং পরকালেও তার জন্য তা জমা করে রাখেন। [৩. আবু দাউদ, আদব, অনুঃ বিদ্রোহ করা নিষিদ্ধ; আরো দ্রঃ তিরমিযী, ইবন মাজাহ]
ব্যাখ্যাঃ বিদ্রোহ ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার পাপ এতই জঘন্য যে , দুনিয়াতে শীঘ্রই এ পাপের শাস্তি প্রদান করা হবে। কিন্তু দুনিয়াতে শাস্তি দেয়ার মাধ্যমেই এ পাপ মোচন হবে না। বরং পরকালেও এর জন্য তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের বংশসমূহের এ পরিমাণ পরিচয় অর্জন করো, যাতে তোমরা নিজেদের আত্মীয়তার হক আদায় করতে পার। কেননা আত্মীয়তা রক্ষা করার মাধ্যমে আপনজনদের মাধ্যে সম্প্রীতি অর্জিত হয়, ধন- সম্পদ ও হায়াত বৃদ্ধি পায়। [৪. তিরমিযী, বির ওয়াস সিলা, অনুঃ বংশ পরিচয় জানা;]
আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রা) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে এসে আরয করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি একটি জঘন্য পাপ করেছি । আমার
তওবার কোন ব্যবস্থা আছে কি? তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার মা জীবিত আছেন কি? সে বলল, না। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন তোমার কোন খালা জীবিত আছেন কি? সে বলল, হ্যাঁ। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ যাও, তাঁর খেদমত করো। [১. তিরমিযী, বির ওয়াস সিলা, অনুঃ খালার সাথে সৎ ব্যবহার করা; আল মুস্তাদরাক, বির ওয়াস সিলা]
ব্যাখ্যাঃ তওবা ছাড়া কবীরা গুনাহ মাফ হয় না। আর মায়ের অবর্তমানে খালার সাথে সদাচরণ করা তওবা কবুল হওয়ার জন্য সহায়ক। তাই নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খালার খেদমত করার আদেশ করছেন।
সাঈদ ইবনে আস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ পিতার অধিকার যেমন সন্তানের উপর রয়েছে, তেমনি ছোট ভাইয়ের ওপরও বড় ভাইয়ের অধিকার রয়েছে। [২ . তিরমিযী, প্রাগুক্ত, আল মুস্তাদরাক, প্রাগুক্ত,]
আবু হুরাইরা(রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘রেহেম’’ শব্দটি রহমান থেকে উদ্ভুত। তাই আল্লাহ তাআলা বলেনঃ যে ব্যক্তি তোমার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে, আমিও তার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখবো। আর যে ব্যক্তি তোমাকে ছিন্ন করবে, আমিও তাকে ছিন্ন করবো। [২সহিহ আল বুখারী প্রাগুক্ত]
আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘রেহেম আল্লাহর আরশের সাথে ঝুলন্ত রয়েছে। সে বলে যে আমার সাথে সম্পর্ক অটুট রাখবে, আল্লাহও তার সাথে সম্পর্ক অটুট রাখবেন। আর যে আমাকে ছিন্ন করবে, আল্লাহও তাকে ছিন্ন করবেন। [৩ সহিহ মুসলিম প্রাগুক্ত৪ সহিহ আল বুখারী, আদব, অনুঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার ফযিলাত, নং ৫৯৮৪ সহিহ]
জুবায়ের ইবন মুতয়িম (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্কারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। [৫ সহিহ আল বুখারী, আদব, অনুঃ প্রতিদানে আত্মীয়তার হক আদায় হয় না, নং ৫৯১১]
আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ সে ব্যক্তি আত্মীয়তা রক্ষাকারী নয়, যে শুধু বিনিময় স্বরুপ তা রক্ষা করে। বরং সে ব্যক্তিই আত্মীয়তা রক্ষাকারী, যার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার পর সে তা পূনঃস্থাপন করে। []
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার এমন কিছু আত্মীয় স্বজন রয়েছে, আমি তাদের সাথে সদাচরণ করি, কিন্তু তারা আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে । আমি তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করি, কিন্তু তারা আমার সাথে দুর্ব্যবহার করে। আমি তাদের সাথে ধৈর্যধারণ করি, কিন্তু তারা আমার সাথে মূর্খতা প্রদর্শন করে। জবাবে তিনি বললেনঃ তুমি যেরূপ বললে, যদি এরূপ আচরণই করে থাকো, তবে তুমি যেন তাদের মুখের উপর গরম ছাই নিক্ষেপ করছো। তুমি যতক্ষণ এ নীতির উপর বহাল থাকবে, ততক্ষণ আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তোমার সাথে একজন সাহায্যকারী থাকবেন যিনি তাদের ক্ষতিকে প্রতিরোধ করবেন। [১ সহিহ মুসলিম প্রাগুক্ত ২৫৫৮;২ সহিহ আল বুখারী, আদব, আত্মীয়ের সাথে সদ্ব্যবহারে রিযক বৃদ্ধি পায়, নং ৫৯৮৫-৬, সহিহ মুসলিম প্রাগুক্ত]
আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি স্বীয় জীবিকা বৃদ্ধি ও দীর্ঘায়ূ কামনা করে, সে যেন আত্মীয় স্বজনের উত্তম ব্যবহার করে। []
আব্দুর রহমান ইবন আউফ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ তাবারকা ওয়া তাআলা বলেনঃ আমি আল্লাহ আমি রহমান। রেহম (আত্মীয়ত)কে আমিই সৃষ্টি করেছি। আর রেহম শব্দটি আমি আমার (রহমান) নাম থেকে নিঃসৃত করেছি। সুতরাং যে ব্যক্তি আত্মীয়তাকে সংযোজিত করবে, আমি তাকে (আমার রহমতের সাথে) সংযোজিত করবো। আর যে ব্যক্তি আত্মীয়তাকে ছিন্ন করবে; আমিও তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেবো। [১ আবু দাউদ, যাকাত, অনুঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা, নং ১৬৯৪]
আব্দুল্লাহ ইবন আউফ (রা) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতে শুনেছিঃ সে সম্প্রদায়ের প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষণ হয় না, যাদের মাঝে আতমীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী বিদ্যমান রয়েছে। [২. মিশকাতুল মাসাবীহ, প্রাগুক্ত, (বায়হাকী বরাত)]
আবু বাকর (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ বিদ্রোহ করা ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা অপেক্ষা কোন পাপই এত জঘন্য নয় যে, এ পাপকারীকে আল্লাহ তাআলা শীঘ্রই এ পৃথিবীতে শাস্তি প্রদান করেন এবং পরকালেও তার জন্য তা জমা করে রাখেন। [৩. আবু দাউদ, আদব, অনুঃ বিদ্রোহ করা নিষিদ্ধ; আরো দ্রঃ তিরমিযী, ইবন মাজাহ]
ব্যাখ্যাঃ বিদ্রোহ ও আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার পাপ এতই জঘন্য যে , দুনিয়াতে শীঘ্রই এ পাপের শাস্তি প্রদান করা হবে। কিন্তু দুনিয়াতে শাস্তি দেয়ার মাধ্যমেই এ পাপ মোচন হবে না। বরং পরকালেও এর জন্য তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের বংশসমূহের এ পরিমাণ পরিচয় অর্জন করো, যাতে তোমরা নিজেদের আত্মীয়তার হক আদায় করতে পার। কেননা আত্মীয়তা রক্ষা করার মাধ্যমে আপনজনদের মাধ্যে সম্প্রীতি অর্জিত হয়, ধন- সম্পদ ও হায়াত বৃদ্ধি পায়। [৪. তিরমিযী, বির ওয়াস সিলা, অনুঃ বংশ পরিচয় জানা;]
আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রা) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে এসে আরয করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি একটি জঘন্য পাপ করেছি । আমার
তওবার কোন ব্যবস্থা আছে কি? তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার মা জীবিত আছেন কি? সে বলল, না। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন তোমার কোন খালা জীবিত আছেন কি? সে বলল, হ্যাঁ। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ যাও, তাঁর খেদমত করো। [১. তিরমিযী, বির ওয়াস সিলা, অনুঃ খালার সাথে সৎ ব্যবহার করা; আল মুস্তাদরাক, বির ওয়াস সিলা]
ব্যাখ্যাঃ তওবা ছাড়া কবীরা গুনাহ মাফ হয় না। আর মায়ের অবর্তমানে খালার সাথে সদাচরণ করা তওবা কবুল হওয়ার জন্য সহায়ক। তাই নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খালার খেদমত করার আদেশ করছেন।
সাঈদ ইবনে আস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ পিতার অধিকার যেমন সন্তানের উপর রয়েছে, তেমনি ছোট ভাইয়ের ওপরও বড় ভাইয়ের অধিকার রয়েছে। [২ . তিরমিযী, প্রাগুক্ত, আল মুস্তাদরাক, প্রাগুক্ত,]
* মাতা-পিতা আল্লাহ র শ্রেষ্ঠ নেআমত। সন্তানের জনম ও তাদের লালন-পালনে আল্লাহর পরেই মাতা-পিতার অবদান সবচাইতে বেশী। মাতা-পিতার অবদান ও ইহসানের কৃতজ্ঞতা জানালে আল্লাহর ইহসানের কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। তাদের অকৃতজ্ঞতা আল্লাহর অকৃতজ্ঞতারই শামিল।
* মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করলে ঈমান পরিপূর্ণ হয় এবং ইসলামী জীবন যাত্রা সুন্দর হয়।
* মাতা-পিতার আনুগত্য করা উত্তম ইবাদত ও শ্রেষ্ঠ আনুগত্য।
* মাতা-পিতার সন্তুষ্টি জান্নাতের চাবিকাটি। মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার জান্নাতের পথে ধাবিত করে। যাকে আল্লাহ মাতা-পিতার সেবা- যত্ন ও খেদমত করার সৌভাগ্য দান করেছেন, প্রকৃতপক্ষে তাকে তিনি জান্নাতের পথে চলারই সুযোগ করে দিয়েছেন। যে ব্যক্তি এ সৌভাগ্য অর্জন করেছে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
* মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করলে, তাঁদের সেবা-যত্ন ও খেদমত করলে হায়াত বৃদ্ধি পাবে।
* মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করলে পরকালে মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং মানুষের কাছে সে প্রসংসিত হবে।
যে ব্যক্তি মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করে, তার সন্তানরাও তার সাথে সদ্ব্যবহার করবে, তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে এবং তাকে মর্যাদা প্রদান করবে। মাতা-পিতার সাথে ভালো আচরণ করলে আল্লাহ তার সন্তানদেরকেও সেই শিক্ষাই দেবেন।
* মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করলে এবং তাদের সেবা-যত্ন করলে বিপদ মুসিবত দুর হয় ও দুশ্চিন্তা মুক্ত হওয়া যায়।
* যে ব্যক্তি মাতা-পিতার বন্ধুদের সাথে সদাচরণ করবে, তার নুর বিলুপ্ত করা হবে না।
* মাতা-পিতার সন্তুষ্টি আল্লাহর সন্তুষ্টি। মাতা-পিতাকে সন্তুষ্ট করার কাজ করতে থাকলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।
* আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করা, হজ ও উমরা পালন করা ইসলামের গুরুত্বপুর্ণ ইবাদত। যে ব্যক্তি মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করে, তাঁদের অধিকার আদায় করে এবং তাদের সেবা যত্ন করে, আল্লাহ তাকে কবুল হজ ও উমরার সমান সাওয়াব দান করেন।
* মাতা-পিতার খেদমত ও সেবা-যত্ন করা জিহাদের সমতুল্য ইবাদত। ক্ষেত্র বিশেষে তার চাইতেও বড়। মাতা-পিতার খেদমতে নিয়েজিত থাকলে দ্বীন প্রতিষ্ঠাকারী মুজাহিদগণের মধ্যে গণ্য হওয়া যাবে এবং জিহাদের ময়দানে অংশ গ্রহণকারীদের সমতুল্য মর্যাদার অধিকারী হওয়া যাবে। [১ নাদরাতুন নাঈম, ৩ খ, পৃ. ৭৭৯ ; হুসনে মুয়াশারাহ, পৃ. ৭৭-৭৮ ।]
* মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করলে ঈমান পরিপূর্ণ হয় এবং ইসলামী জীবন যাত্রা সুন্দর হয়।
* মাতা-পিতার আনুগত্য করা উত্তম ইবাদত ও শ্রেষ্ঠ আনুগত্য।
* মাতা-পিতার সন্তুষ্টি জান্নাতের চাবিকাটি। মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার জান্নাতের পথে ধাবিত করে। যাকে আল্লাহ মাতা-পিতার সেবা- যত্ন ও খেদমত করার সৌভাগ্য দান করেছেন, প্রকৃতপক্ষে তাকে তিনি জান্নাতের পথে চলারই সুযোগ করে দিয়েছেন। যে ব্যক্তি এ সৌভাগ্য অর্জন করেছে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
* মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করলে, তাঁদের সেবা-যত্ন ও খেদমত করলে হায়াত বৃদ্ধি পাবে।
* মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করলে পরকালে মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং মানুষের কাছে সে প্রসংসিত হবে।
যে ব্যক্তি মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করে, তার সন্তানরাও তার সাথে সদ্ব্যবহার করবে, তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে এবং তাকে মর্যাদা প্রদান করবে। মাতা-পিতার সাথে ভালো আচরণ করলে আল্লাহ তার সন্তানদেরকেও সেই শিক্ষাই দেবেন।
* মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করলে এবং তাদের সেবা-যত্ন করলে বিপদ মুসিবত দুর হয় ও দুশ্চিন্তা মুক্ত হওয়া যায়।
* যে ব্যক্তি মাতা-পিতার বন্ধুদের সাথে সদাচরণ করবে, তার নুর বিলুপ্ত করা হবে না।
* মাতা-পিতার সন্তুষ্টি আল্লাহর সন্তুষ্টি। মাতা-পিতাকে সন্তুষ্ট করার কাজ করতে থাকলে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।
* আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করা, হজ ও উমরা পালন করা ইসলামের গুরুত্বপুর্ণ ইবাদত। যে ব্যক্তি মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করে, তাঁদের অধিকার আদায় করে এবং তাদের সেবা যত্ন করে, আল্লাহ তাকে কবুল হজ ও উমরার সমান সাওয়াব দান করেন।
* মাতা-পিতার খেদমত ও সেবা-যত্ন করা জিহাদের সমতুল্য ইবাদত। ক্ষেত্র বিশেষে তার চাইতেও বড়। মাতা-পিতার খেদমতে নিয়েজিত থাকলে দ্বীন প্রতিষ্ঠাকারী মুজাহিদগণের মধ্যে গণ্য হওয়া যাবে এবং জিহাদের ময়দানে অংশ গ্রহণকারীদের সমতুল্য মর্যাদার অধিকারী হওয়া যাবে। [১ নাদরাতুন নাঈম, ৩ খ, পৃ. ৭৭৯ ; হুসনে মুয়াশারাহ, পৃ. ৭৭-৭৮ ।]
আল্লাহ বলেনঃ
وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا ﴿২৩﴾ وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُلْ رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا ﴿২৪﴾
‘‘তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন, তোমরা তাঁদের ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবে না এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়ে যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলবে না এবং তাদেরকে ভৎর্সনা করবে না। বরং তাদের সাথে সম্মান ও শিষ্টাচারপূর্ণ কথা বলবে এবং বিনয় ও নম্রতাসহকারে তাদের সামনে নত হয়ে থাকবে। আর এ দুআ করতে থাকবেঃ হে আমার প্রতিপালক! তাঁদের উভায়ের প্রতি রহম করো, যেমন তাঁরা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’’ [১ সুরা বনি ইসরাঈলঃ ২৩-২৪]
ব্যাখ্যাঃ মাতা-পিতার সেবা-যত্ন আনুগত্য করা এবং সব সময়ই তাঁদের সাথে সদ্ব্যবহার করা ওয়াজিব। তবে মাতা-পিতা বার্ধক্যে উপনিত হলে তাঁরা সন্তানের সেবা-যত্নের প্রতি অধিক মুখাপেক্ষী হয়ে পড়েন এবং সন্তানের দয়ার উপর নির্ভশীল হয়ে পড়েন। অপরদিকে বার্ধক্যের চাপে মানুষের মেজাজ রুক্ষ ও খিটখিটে হয়ে যায় এবং বিবেক-বুদ্ধিও কম বেশী লোপ পায়। ফলে তাঁরা অবুঝ শিশুর মতো দাবী দাওয়া পেশ করতে থাকে, যা পূরণ করা সন্তানের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। তখন সন্তানের পক্ষ থেকে সামান্য বিমুখতাও তাঁদের অন্তরকে ক্ষত-বিক্ষত করে দেয়। পবিত্র কোরান এসব অবস্থায় মাতা-পিতার সন্তুষ্টি ও তাঁদের সুখ-শান্তি বিধানের আদেশ দেয়ার সাথে সাথে সন্তানকে তার শৈশবকাল স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, আজ মাতা-পিতা যতটুকু তোমার মুখাপেক্ষী, এক সময় তুমি তাঁদের এর চাইতেও বেশী মুখাপেক্ষী ছিলে। তখন তাঁরা যেমন তাঁদের আরাম আয়েশ হারাম করে তোমার চাওয়া পাওয়া ও বাহানা পূরন করেছিলেন, তোমার অবুঝ কথাবার্তাকে স্নেহ মমতার আবরণ দ্বারা ডেকে দিয়েছিলেন, তেমনি তাঁদের মুখাপেক্ষিতা ও অসহায়ত্বের দুঃসময়ে তাঁদের অবদানের কথা স্মরণ করে ঋণ পরিশোধ করা ও তাঁদের সেবা-যত্ন করা এবং তাঁদের সাথে সদ্ব্যবহার করা তোমাদের অপরিহার্য কর্তব্য।
আলোচ্য আয়াতসমূহে মাতা-পিতার বার্ধক্যে উপনীত হওয়া সম্পর্কিত কতিপয় আদেশ দান করা হয়েছে।
একঃ তাঁদেরকে উহ-শব্দটিও বলবে না। অর্থাৎঃ তাঁদের কথা শুনে সামান্যতম বিরক্তি প্রকাশ পায়, এমন ধরণের কোন শব্দ উচ্চারণ করবে না । তাঁদের কথা যতই অযৌক্তিক ও কর্কশ হোক না কেন।
দুইঃ মাতা-পিতার মর্যাদার প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। কথা-বার্তা বলার সময় তাদের মান-সম্মানের প্রতি খেয়াল রেখে কথা বলতে হবে। তাঁদের অযৌক্তিক দাবী ও রুক্ষ মেযায হাসিমুখে সইতে হবে। কোন সময় বিরক্ত হয়ে এমন কোন কথা উচ্চারণ করা যাবে না, যাতে তাঁরা সামান্যতমও মনে কষ্ট পায় এবং যা তাঁদের মান-সম্মানের পরিপন্থী হয়।
তিনঃ এ আদেশে মাতা-পিতার সাথে কথা বলার আদব শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তাঁদের উভায়ের সাথে পরম ভক্তি, শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির সাথে নত ও বিনম্র স্বরে কথা বলতে হবে।
চারঃ মাতা-পিতার সামনে নিজেকে অক্ষম এবং নত ও বিনম্রভাবে পেশ করতে হবে। মাতা-পিতার প্রতি পূর্ণ আন্তরিকতা, মায়া-মমতা এবং ভক্তি ও শ্রদ্ধা সহকারে নিজেকে ছোট করে তাঁদের সামনে হাজির হতে হবে।
পাঁচঃ পঞ্চম আদেশ, মাতা-পিতার সন্তুষ্টি ও সুখ-শান্তি ষোল আনা নিশ্চিত করা মানুষের সাধ্যাতীত। কাজেই সাধ্যানুযায়ী চেষ্টার সাথে সাথে তাঁদের জন্য দোয়া করতে হবে, তিনি যেন মেহেরবানী করে তাঁদের সকল মুশকিল আসান করে দেন এবং তাঁদের সব ধরনের কষ্ট দূর করে দেন। সর্বশেষ আদেশ হচ্ছে, মাতা-পিতার মৃত্যুর পরও তাঁদের জন্য অব্যাহতভাবে দুআ করে যেতে হবে। [১ . মুফতী মুহাম্মদ শফী মায়ারিফুল কোরান। অনুঃ মাওঃ মহিউদ্দীন খান পৃ. ৭৭২-৭৭৩]
পবিত্র কোরানে এসেছে, আল্লাহ বলেনঃ
وَأَمَّا الْغُلَامُ فَكَانَ أَبَوَاهُ مُؤْمِنَيْنِ فَخَشِينَا أَنْ يُرْهِقَهُمَا طُغْيَانًا وَكُفْرًا ﴿৮০﴾ فَأَرَدْنَا أَنْ يُبْدِلَهُمَا رَبُّهُمَا خَيْرًا مِنْهُ زَكَاةً وَأَقْرَبَ رُحْمًا ﴿৮১﴾
অতঃপর বালকটির ব্যাপারে- তার মাতা-পিতা ছিল ঈমানদার। আমি আশংকা করলাম, সে অবাধ্যতা ও কুফর দ্বারা তাদেরকে প্রভাবিত করবে। অতঃপর আমি ইচ্ছা করলাম, তাদের পালনকর্তা তাদেরকে তার চাইতে পবিত্র ও ভালোবাসায় শ্রেষ্ঠতম একটি সন্তান দান করুন। [১. সুরা আল কাহাফঃ ৮০-৮১]
ব্যাখ্যাঃ খিযির আলাইহিস সালাম যে বালকটিকে হত্যা করেন, তিনি তার স্বরূপ এই বর্ণনা করেন যে, তার প্রকৃতিতে কুফর ও মাতা-পিতার অবাধ্যতা নিহিত ছিল। তার মাতা- পিতা ছিল সৎকর্ম পরায়ণ। আমার আশংকা ছিল যে, ছেলেটি বড় হয়ে তার মাতা-পিতাকে বিব্রত করবে এবং কষ্ট দেবে। সে কুফরে লিপ্ত হয়ে মাতা-পিতার জন্য বিপদ হয়ে দাঁড়াবে। [২ . মায়ারিফুল কোরান। অনুঃ মাওঃ মহিউদ্দীন খান]
আল্লাহ বলেনঃ
وَالَّذِي قَالَ لِوَالِدَيْهِ أُفٍّ لَكُمَا أَتَعِدَانِنِي أَنْ أُخْرَجَ وَقَدْ خَلَتِ الْقُرُونُ مِنْ قَبْلِي وَهُمَا يَسْتَغِيثَانِ اللَّهَ وَيْلَكَ آَمِنْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ
যে ব্যক্তি স্বীয় মাতা-পিতাকে বলে, ধিক তোমাদের প্রতি, তোমরা আমাকে খবর দিচ্ছো, আমি আবার পুনরুত্থিত হবো, অথচ আমার পূর্বে বহু লোক গত হয়ে গেছে? আর (তার) মাতা-পিতা আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে বলে, তোমার ধ্বংস (অনিবার্য)। তুমি ঈমান আনো। নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। [৩ . সুরা আল আহকাফ :১৭]
ব্যাখ্যাঃ এ আয়াতে আল্লাহ মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তানদের বর্ণনা দিয়েছেন, যারা মাতা-পিতার অবাধ্য হয় এবং আল্লাহ ও পরকালকে অস্বীকার করে। তারা যদি ঈমানদার মাতা-পিতার আনুগত্য না করে এবং আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান না আনে, তবে তাদের ধ্বংস অর্থাৎ ইহকালে নানা ধরনের বিপদাপদ ও কষ্ট কঠোরতা এবং পরকালে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়া অনিবার্য। [১. দেখুন মুহাম্মদ আলী সাবুনী, সাফওয়াতুত-তাফাসীর, ৩ খ, পৃ. ১৯৬]
وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا ﴿২৩﴾ وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُلْ رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا ﴿২৪﴾
‘‘তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন, তোমরা তাঁদের ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবে না এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়ে যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলবে না এবং তাদেরকে ভৎর্সনা করবে না। বরং তাদের সাথে সম্মান ও শিষ্টাচারপূর্ণ কথা বলবে এবং বিনয় ও নম্রতাসহকারে তাদের সামনে নত হয়ে থাকবে। আর এ দুআ করতে থাকবেঃ হে আমার প্রতিপালক! তাঁদের উভায়ের প্রতি রহম করো, যেমন তাঁরা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’’ [১ সুরা বনি ইসরাঈলঃ ২৩-২৪]
ব্যাখ্যাঃ মাতা-পিতার সেবা-যত্ন আনুগত্য করা এবং সব সময়ই তাঁদের সাথে সদ্ব্যবহার করা ওয়াজিব। তবে মাতা-পিতা বার্ধক্যে উপনিত হলে তাঁরা সন্তানের সেবা-যত্নের প্রতি অধিক মুখাপেক্ষী হয়ে পড়েন এবং সন্তানের দয়ার উপর নির্ভশীল হয়ে পড়েন। অপরদিকে বার্ধক্যের চাপে মানুষের মেজাজ রুক্ষ ও খিটখিটে হয়ে যায় এবং বিবেক-বুদ্ধিও কম বেশী লোপ পায়। ফলে তাঁরা অবুঝ শিশুর মতো দাবী দাওয়া পেশ করতে থাকে, যা পূরণ করা সন্তানের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। তখন সন্তানের পক্ষ থেকে সামান্য বিমুখতাও তাঁদের অন্তরকে ক্ষত-বিক্ষত করে দেয়। পবিত্র কোরান এসব অবস্থায় মাতা-পিতার সন্তুষ্টি ও তাঁদের সুখ-শান্তি বিধানের আদেশ দেয়ার সাথে সাথে সন্তানকে তার শৈশবকাল স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, আজ মাতা-পিতা যতটুকু তোমার মুখাপেক্ষী, এক সময় তুমি তাঁদের এর চাইতেও বেশী মুখাপেক্ষী ছিলে। তখন তাঁরা যেমন তাঁদের আরাম আয়েশ হারাম করে তোমার চাওয়া পাওয়া ও বাহানা পূরন করেছিলেন, তোমার অবুঝ কথাবার্তাকে স্নেহ মমতার আবরণ দ্বারা ডেকে দিয়েছিলেন, তেমনি তাঁদের মুখাপেক্ষিতা ও অসহায়ত্বের দুঃসময়ে তাঁদের অবদানের কথা স্মরণ করে ঋণ পরিশোধ করা ও তাঁদের সেবা-যত্ন করা এবং তাঁদের সাথে সদ্ব্যবহার করা তোমাদের অপরিহার্য কর্তব্য।
আলোচ্য আয়াতসমূহে মাতা-পিতার বার্ধক্যে উপনীত হওয়া সম্পর্কিত কতিপয় আদেশ দান করা হয়েছে।
একঃ তাঁদেরকে উহ-শব্দটিও বলবে না। অর্থাৎঃ তাঁদের কথা শুনে সামান্যতম বিরক্তি প্রকাশ পায়, এমন ধরণের কোন শব্দ উচ্চারণ করবে না । তাঁদের কথা যতই অযৌক্তিক ও কর্কশ হোক না কেন।
দুইঃ মাতা-পিতার মর্যাদার প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। কথা-বার্তা বলার সময় তাদের মান-সম্মানের প্রতি খেয়াল রেখে কথা বলতে হবে। তাঁদের অযৌক্তিক দাবী ও রুক্ষ মেযায হাসিমুখে সইতে হবে। কোন সময় বিরক্ত হয়ে এমন কোন কথা উচ্চারণ করা যাবে না, যাতে তাঁরা সামান্যতমও মনে কষ্ট পায় এবং যা তাঁদের মান-সম্মানের পরিপন্থী হয়।
তিনঃ এ আদেশে মাতা-পিতার সাথে কথা বলার আদব শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ তাঁদের উভায়ের সাথে পরম ভক্তি, শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির সাথে নত ও বিনম্র স্বরে কথা বলতে হবে।
চারঃ মাতা-পিতার সামনে নিজেকে অক্ষম এবং নত ও বিনম্রভাবে পেশ করতে হবে। মাতা-পিতার প্রতি পূর্ণ আন্তরিকতা, মায়া-মমতা এবং ভক্তি ও শ্রদ্ধা সহকারে নিজেকে ছোট করে তাঁদের সামনে হাজির হতে হবে।
পাঁচঃ পঞ্চম আদেশ, মাতা-পিতার সন্তুষ্টি ও সুখ-শান্তি ষোল আনা নিশ্চিত করা মানুষের সাধ্যাতীত। কাজেই সাধ্যানুযায়ী চেষ্টার সাথে সাথে তাঁদের জন্য দোয়া করতে হবে, তিনি যেন মেহেরবানী করে তাঁদের সকল মুশকিল আসান করে দেন এবং তাঁদের সব ধরনের কষ্ট দূর করে দেন। সর্বশেষ আদেশ হচ্ছে, মাতা-পিতার মৃত্যুর পরও তাঁদের জন্য অব্যাহতভাবে দুআ করে যেতে হবে। [১ . মুফতী মুহাম্মদ শফী মায়ারিফুল কোরান। অনুঃ মাওঃ মহিউদ্দীন খান পৃ. ৭৭২-৭৭৩]
পবিত্র কোরানে এসেছে, আল্লাহ বলেনঃ
وَأَمَّا الْغُلَامُ فَكَانَ أَبَوَاهُ مُؤْمِنَيْنِ فَخَشِينَا أَنْ يُرْهِقَهُمَا طُغْيَانًا وَكُفْرًا ﴿৮০﴾ فَأَرَدْنَا أَنْ يُبْدِلَهُمَا رَبُّهُمَا خَيْرًا مِنْهُ زَكَاةً وَأَقْرَبَ رُحْمًا ﴿৮১﴾
অতঃপর বালকটির ব্যাপারে- তার মাতা-পিতা ছিল ঈমানদার। আমি আশংকা করলাম, সে অবাধ্যতা ও কুফর দ্বারা তাদেরকে প্রভাবিত করবে। অতঃপর আমি ইচ্ছা করলাম, তাদের পালনকর্তা তাদেরকে তার চাইতে পবিত্র ও ভালোবাসায় শ্রেষ্ঠতম একটি সন্তান দান করুন। [১. সুরা আল কাহাফঃ ৮০-৮১]
ব্যাখ্যাঃ খিযির আলাইহিস সালাম যে বালকটিকে হত্যা করেন, তিনি তার স্বরূপ এই বর্ণনা করেন যে, তার প্রকৃতিতে কুফর ও মাতা-পিতার অবাধ্যতা নিহিত ছিল। তার মাতা- পিতা ছিল সৎকর্ম পরায়ণ। আমার আশংকা ছিল যে, ছেলেটি বড় হয়ে তার মাতা-পিতাকে বিব্রত করবে এবং কষ্ট দেবে। সে কুফরে লিপ্ত হয়ে মাতা-পিতার জন্য বিপদ হয়ে দাঁড়াবে। [২ . মায়ারিফুল কোরান। অনুঃ মাওঃ মহিউদ্দীন খান]
আল্লাহ বলেনঃ
وَالَّذِي قَالَ لِوَالِدَيْهِ أُفٍّ لَكُمَا أَتَعِدَانِنِي أَنْ أُخْرَجَ وَقَدْ خَلَتِ الْقُرُونُ مِنْ قَبْلِي وَهُمَا يَسْتَغِيثَانِ اللَّهَ وَيْلَكَ آَمِنْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ
যে ব্যক্তি স্বীয় মাতা-পিতাকে বলে, ধিক তোমাদের প্রতি, তোমরা আমাকে খবর দিচ্ছো, আমি আবার পুনরুত্থিত হবো, অথচ আমার পূর্বে বহু লোক গত হয়ে গেছে? আর (তার) মাতা-পিতা আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে বলে, তোমার ধ্বংস (অনিবার্য)। তুমি ঈমান আনো। নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। [৩ . সুরা আল আহকাফ :১৭]
ব্যাখ্যাঃ এ আয়াতে আল্লাহ মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তানদের বর্ণনা দিয়েছেন, যারা মাতা-পিতার অবাধ্য হয় এবং আল্লাহ ও পরকালকে অস্বীকার করে। তারা যদি ঈমানদার মাতা-পিতার আনুগত্য না করে এবং আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান না আনে, তবে তাদের ধ্বংস অর্থাৎ ইহকালে নানা ধরনের বিপদাপদ ও কষ্ট কঠোরতা এবং পরকালে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়া অনিবার্য। [১. দেখুন মুহাম্মদ আলী সাবুনী, সাফওয়াতুত-তাফাসীর, ৩ খ, পৃ. ১৯৬]
আবদুর রহমান ইবন আবূ বাকরা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি কি তোমাদেরকে সবচাইতে বড় কবীরা (জঘন্যতম) গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করবো না। একথা তিনি তিন বার বললেন। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, কেন নয়, অবশ্যই করবেন, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেনঃ আল্লাহর সাথে শিরক করা, মাতা- পিতার নাফরমানী করা। তিনি হেলান দিয়ে বসা ছিলেন, অতঃপর সোজা হয়ে বসে বলতে লাগলেন, (খুব ভালো করে শোন!) মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। তিনি বার বার একথা বলতে থাকনে। অবশেষে আমরা (মনে মনে) বললাম, হায়! তিনি যদি চুপ হয়ে যেতেন। [সহীহ আল- বুখারী, আদব, অনুঃ ৬; মাতা- পিতার নাফরমানী কবীরা গুনাহ; সহীহ মুসলিম, ঈমান, অনুঃ সবচাইতে বড় কবীরা গুনাহ সমূহের বর্ণনা, ১ খ, পৃ. ৯১, নং ৮৭, আরো দ্রঃ তিরমিযী।]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমর ইবন হাযম (রা.) এর মাধ্যমে ইয়েমেনবাসীদের নিকট একখানা পত্র প্রেরণ করেছিলেন। তাতে তিনি তাদেরকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার নিকট সবচাইতে বড় কবীরা গুনাহ হবে- ১. আল্লাহর সাথে শরীক করা, ২. অন্যায়ভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করা, ৩. আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা, ৪. মাতা-পিতার নাফরমানী করা, ৫। সতী সাধ্বী মহিলার ওপর অপবাদ দেয়া। ৬. যাদু শিক্ষা করা, ৭. সুদ খাওয় ও ৮। ইয়াতীমের সম্পদ ভক্ষণ করা।১
আবদুললাহ ইবন আমর ইবনুল আস (রা.) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কবীরা গুনাহসমূহ হচ্ছে, ১. আল্লাহর সাথে শরীক করা ২. মাতা- পিতার অবাধ্য হওয়া, ৩. মানুষ হত্যা করা ও ৪. মিথ্যা শপথ করা।২
তাইসালা ইবন মাইয়্যাস (রা.) বলেন, আমি একটি সাহায্যকারী দলের সদস্য ছিলাম। সেখানে আমি কিছু পাপ কাজ করে ফেলেছি। সেটাকে কবীরা গুনাহ বলেই আমি ধরে নিয়েছিলাম। ইবনে উমর রা. এর নিকট বিষয়টি উলেলখ করলে তিনি বললেন, তুমি যে সব গুনার কথা বলছো, তা কি কি? আমি বললাম, তা হচ্ছে এই এই। ইবনে উমার রা. বললেন, এগুলো কবীরা গুনাহ নয়। কবীরা গুনাহ হচ্ছে নয়টি।
১. আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরীক করা, ২. অন্যায়ভাবে কোন মানুষকে হত্যা করা, ৩. যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা, ৪. সতী সাধ্বী নারীর প্রতি মিথ্যা অপবাদ দেয়া, ৫. সুদ খাওয়া, ৬. অন্যায়ভাবে ইয়াতীমের সম্পদ ভক্ষণ করা, ৭. মাসজিদুল হারাম- এ হারামকে হালাল মনে করা, ৮. কাউকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা ও বিদ্রুপ করা ও ৯. মাতা পিতার নাফরমানীর মাধ্যমে তাঁদেরকে কাঁদানো।
তাইসালা রা. বলেন, ইবনে উমার রা. আমার মধ্যে ভয়-ভীতি ও আতংক দেখে বললেন, তুমি কি জাহান্নামে প্রবেশ করাকে খুব ভয় করছো? আমি বললাম জি হ্যাঁ। তিনি আবারও জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান্নাতে যেতে চাও? আমি বললাম হ্যাঁ, যেতে চাই। তিনি আমার কাছে জানতে চাইলেন, তোমার মাতা- পিতা বেঁচে আছেন কি? আমি বললাম, আমার মা বেঁচে আছেন। তিনি আমাকে বললেন, আল্লাহর শপথ করে বলছি, তুমি যদি তাঁর সাথে নম্রভাবে কথা বল এবং তাঁর ভরণ- পোষণের ব্যবস্থা করো, তাহলে তুমি অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে, যতক্ষণ না তুমি কবীরা গুনাহে লিপ্ত হবে।৩
সাহাবী আনাস রা. থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট কবীরা গুনাহের কথাবলা হলে তিনি বলেনঃ কবীরা গুনাহ হলো- আল্লাহর সাথে শরীক করা ও মাতা- পিতার অবাধ্য হওয়া।১
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির নিজের মাতা- পিতাকে গালি দেয়া অন্যতম কবীরা গুনাহ। সাহাবীগণ বললেন, কোন লোক কি নিজের মাতা- পিতাকে গালি দেয়? তিনি বললেন : হ্যাঁ দেয়। কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির পিতাকে গালি দেয়, প্রত্যুত্তরে সেও তার পিতাকে গালি দেয়। অনুরূপভাবে সে অপর কোন ব্যক্তির মাকে গালি দেয়, এর উত্তরে সেও তার (গালি দাতার) মাকে গালি দেয়।২
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জঘন্যতম কবীরা গুনাহসমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, কোন ব্যক্তির নিজের মাতা- পিতাকে লা’নত করা। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! কোন ব্যক্তি কিভাবে তার মাতা- পিতাকে লা‘নত করতে পারে? তিনি বললেনঃ কোন ব্যক্তি অন্যের পিতাকে গালি দেয়, প্রত্যুত্তরে সেও তার পিতাকে গালি দেয়। অনুরূপভাবে কোন ব্যক্তি অন্যের মাকে গালি দেয়, এর উত্তরে সেও তার মাকে গালি দেয়।৩
আব্দুল্লাহ ইবন আববাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহর নামে পশু যবাই করে, যে ব্যক্তি জমির সীমানা বদলে দেয় এবং যে ব্যক্তি নিজের মাতা- পিতাকে গালি দেয়, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি লা‘নত (অভিসম্পাত) করেন।৪
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমর ইবন হাযম (রা.) এর মাধ্যমে ইয়েমেনবাসীদের নিকট একখানা পত্র প্রেরণ করেছিলেন। তাতে তিনি তাদেরকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার নিকট সবচাইতে বড় কবীরা গুনাহ হবে- ১. আল্লাহর সাথে শরীক করা, ২. অন্যায়ভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করা, ৩. আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা, ৪. মাতা-পিতার নাফরমানী করা, ৫। সতী সাধ্বী মহিলার ওপর অপবাদ দেয়া। ৬. যাদু শিক্ষা করা, ৭. সুদ খাওয় ও ৮। ইয়াতীমের সম্পদ ভক্ষণ করা।১
আবদুললাহ ইবন আমর ইবনুল আস (রা.) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : কবীরা গুনাহসমূহ হচ্ছে, ১. আল্লাহর সাথে শরীক করা ২. মাতা- পিতার অবাধ্য হওয়া, ৩. মানুষ হত্যা করা ও ৪. মিথ্যা শপথ করা।২
তাইসালা ইবন মাইয়্যাস (রা.) বলেন, আমি একটি সাহায্যকারী দলের সদস্য ছিলাম। সেখানে আমি কিছু পাপ কাজ করে ফেলেছি। সেটাকে কবীরা গুনাহ বলেই আমি ধরে নিয়েছিলাম। ইবনে উমর রা. এর নিকট বিষয়টি উলেলখ করলে তিনি বললেন, তুমি যে সব গুনার কথা বলছো, তা কি কি? আমি বললাম, তা হচ্ছে এই এই। ইবনে উমার রা. বললেন, এগুলো কবীরা গুনাহ নয়। কবীরা গুনাহ হচ্ছে নয়টি।
১. আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরীক করা, ২. অন্যায়ভাবে কোন মানুষকে হত্যা করা, ৩. যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা, ৪. সতী সাধ্বী নারীর প্রতি মিথ্যা অপবাদ দেয়া, ৫. সুদ খাওয়া, ৬. অন্যায়ভাবে ইয়াতীমের সম্পদ ভক্ষণ করা, ৭. মাসজিদুল হারাম- এ হারামকে হালাল মনে করা, ৮. কাউকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা ও বিদ্রুপ করা ও ৯. মাতা পিতার নাফরমানীর মাধ্যমে তাঁদেরকে কাঁদানো।
তাইসালা রা. বলেন, ইবনে উমার রা. আমার মধ্যে ভয়-ভীতি ও আতংক দেখে বললেন, তুমি কি জাহান্নামে প্রবেশ করাকে খুব ভয় করছো? আমি বললাম জি হ্যাঁ। তিনি আবারও জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান্নাতে যেতে চাও? আমি বললাম হ্যাঁ, যেতে চাই। তিনি আমার কাছে জানতে চাইলেন, তোমার মাতা- পিতা বেঁচে আছেন কি? আমি বললাম, আমার মা বেঁচে আছেন। তিনি আমাকে বললেন, আল্লাহর শপথ করে বলছি, তুমি যদি তাঁর সাথে নম্রভাবে কথা বল এবং তাঁর ভরণ- পোষণের ব্যবস্থা করো, তাহলে তুমি অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে, যতক্ষণ না তুমি কবীরা গুনাহে লিপ্ত হবে।৩
সাহাবী আনাস রা. থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট কবীরা গুনাহের কথাবলা হলে তিনি বলেনঃ কবীরা গুনাহ হলো- আল্লাহর সাথে শরীক করা ও মাতা- পিতার অবাধ্য হওয়া।১
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির নিজের মাতা- পিতাকে গালি দেয়া অন্যতম কবীরা গুনাহ। সাহাবীগণ বললেন, কোন লোক কি নিজের মাতা- পিতাকে গালি দেয়? তিনি বললেন : হ্যাঁ দেয়। কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির পিতাকে গালি দেয়, প্রত্যুত্তরে সেও তার পিতাকে গালি দেয়। অনুরূপভাবে সে অপর কোন ব্যক্তির মাকে গালি দেয়, এর উত্তরে সেও তার (গালি দাতার) মাকে গালি দেয়।২
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জঘন্যতম কবীরা গুনাহসমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, কোন ব্যক্তির নিজের মাতা- পিতাকে লা’নত করা। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! কোন ব্যক্তি কিভাবে তার মাতা- পিতাকে লা‘নত করতে পারে? তিনি বললেনঃ কোন ব্যক্তি অন্যের পিতাকে গালি দেয়, প্রত্যুত্তরে সেও তার পিতাকে গালি দেয়। অনুরূপভাবে কোন ব্যক্তি অন্যের মাকে গালি দেয়, এর উত্তরে সেও তার মাকে গালি দেয়।৩
আব্দুল্লাহ ইবন আববাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহর নামে পশু যবাই করে, যে ব্যক্তি জমির সীমানা বদলে দেয় এবং যে ব্যক্তি নিজের মাতা- পিতাকে গালি দেয়, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি লা‘নত (অভিসম্পাত) করেন।৪
সাহাবী আবু তুফায়েল আমির ইবন ওয়াসিলা রা. বলেন, আমি আলী রা. এর নিকট ছিলাম। তখন জনৈক ব্যক্তি এসে তাঁকে বলল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আপনাকে এমন কোন কথা বলেছেন, যা অন্য কাউকে বলেননি? বর্ণনাকারী বলেন, তিনি রাগান্বিত হয়ে বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এমন কোন কথা বলেননি, যা তিনি অন্যকে বলেননি। তবে তিনি আমার নিকট চারটি বিষয় বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, হে আমীরুল মু‘মিনীন! সে চারটি বিষয় কি? তিনি বলেনঃ তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি পিতাকে অভিশাপ দেয়, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অভিসম্পাত করেন। যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহর নামে পশু জবাই করে, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অভিসম্পাত করেন। যে ব্যক্তি দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু সৃষ্টি করে এবং যে ব্যক্তি জমির সীমানা বদলে দেয়, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অভিসম্পাত করেন।১
আবূ হুরাইরা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা সপ্ত আসমানের ওপর থেকে সাত প্রকার লোকের ওপর অভিসম্পাত করেন। তাদের মধ্য থেকে এক শ্রেণীর প্রতি একবার করে অভিসম্পাত করেন যা তাদের জন্য যথেষ্ট। তিনি বলেনঃ যারা লূত আ এর জাতির ন্যায় অপকর্ম করে তারা অভিশপ্ত। যারা লূত আ. এর জাতির ন্যায় অপকর্ম করে তারা অভিশপ্ত। যারা লূত আ. এর জাতির ন্যায় অপকর্ম করে তারা অভিশপ্ত যারা গাইরুল্লাহর নামে পশু যবাই করে তারা অভিশপ্ত। যারা মাতা- পিতার অবাধ্য তারা অভিশপ্ত।২
আবূ হুরাইরা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা সপ্ত আসমানের ওপর থেকে সাত প্রকার লোকের ওপর অভিসম্পাত করেন। তাদের মধ্য থেকে এক শ্রেণীর প্রতি একবার করে অভিসম্পাত করেন যা তাদের জন্য যথেষ্ট। তিনি বলেনঃ যারা লূত আ এর জাতির ন্যায় অপকর্ম করে তারা অভিশপ্ত। যারা লূত আ. এর জাতির ন্যায় অপকর্ম করে তারা অভিশপ্ত। যারা লূত আ. এর জাতির ন্যায় অপকর্ম করে তারা অভিশপ্ত যারা গাইরুল্লাহর নামে পশু যবাই করে তারা অভিশপ্ত। যারা মাতা- পিতার অবাধ্য তারা অভিশপ্ত।২
সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন শ্রেণীর লোকের জন্য আল্লাহ তাআলা জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। ১. মাদকাসক্ত ব্যক্তি ২. মাতা- পিতার নাফরমান ব্যক্তি ও ৩. অসৎ স্ত্রীর স্বামী যে নিজের পরিবারে দুস্কর্মের সমর্থন করে।৩
আবূ হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, চার শ্রেণীর লোককে জান্নাতে প্রবেশ করতে না দেয়া এবং জান্নাতের নেআমত উপভোগ করতে না দেয়া আল্লাহ তাআলার হক বা অধিকার। ১. মধ্যপায়ী, ২. সুদখোর ৩. অন্যায়ভাবে ইয়াতীমের মাল ভক্ষণকারী এবং ৪. মাতা- পিতার অবাধ্য সন্তান।১
আবূ হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, চার শ্রেণীর লোককে জান্নাতে প্রবেশ করতে না দেয়া এবং জান্নাতের নেআমত উপভোগ করতে না দেয়া আল্লাহ তাআলার হক বা অধিকার। ১. মধ্যপায়ী, ২. সুদখোর ৩. অন্যায়ভাবে ইয়াতীমের মাল ভক্ষণকারী এবং ৪. মাতা- পিতার অবাধ্য সন্তান।১
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পাঁচশত বছরের রাস্তা থেকে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়। (কিন্তু তিন ব্যক্তি জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না) ১. যে ব্যক্তি দান করে খোঁটা দেয়, ২. মাতা- পিতার অবাধ্য সন্তান, (অথ্যাৎ যে সন্তান মাতা- পিতাকে কষ্ট দেয়, তাদেরকে অসন্তুষ্ট রাখে) ও ৩. যে ব্যক্তি মদপানে অভ্যস্থ।২
সাহাবী জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রা. বলেন, আমরা এক জায়গায় একত্র হয়েছিলাম, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘর থেকে বের হয়ে আমাদের মাঝে এসে বললেনঃ হে মুসলিম জনসমষ্টি! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখো। কেননা সম্পর্ক অটুট রাখার চাইতে দ্রুত কবুল যোগ্য সওয়াবের কাজ আর নেই। আর তোমরা বাড়া-বাড়ি ও সীমালংঘন করা থেকে দূরে থাকো। সীমালংঘন করার চাইতে দ্রুত শাস্তিযোগ্য অপরাধ আর নেই। তোমরা মাতা- পিতার নাফরমানী করা থেকে দূরে থাকো। কেননা এক হাজার বছরের রাস্তা থেকে জান্নাতের ঘ্রাণ পাওয়া যায়। আল্লাহর কসম! মাতা- পিতার অবাধ্য সন্তান, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী, বৃদ্ধ ব্যাভিচারী এবং গর্বভরে টাখনুর নীচে কাপড় পরিধানকারী জান্নাতের সুঘ্রানও পাবে না...।৩
আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন শ্রেণীর লোকের প্রতি কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না। ১. মাতা- পিতাকে কষ্টদানকারী অবাধ্য সন্তান। ২. পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী ও ৩. দাইয়্যূস। আর তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না। ১. মাতা- পিতার অবাধ্য সন্তান। ২. মদপানে আসক্ত ব্যক্তি ও ৩. দান করে খোঁটাদানকারী।৪
সাহাবী জাবির ইবন আব্দুল্লাহ রা. বলেন, আমরা এক জায়গায় একত্র হয়েছিলাম, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘর থেকে বের হয়ে আমাদের মাঝে এসে বললেনঃ হে মুসলিম জনসমষ্টি! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখো। কেননা সম্পর্ক অটুট রাখার চাইতে দ্রুত কবুল যোগ্য সওয়াবের কাজ আর নেই। আর তোমরা বাড়া-বাড়ি ও সীমালংঘন করা থেকে দূরে থাকো। সীমালংঘন করার চাইতে দ্রুত শাস্তিযোগ্য অপরাধ আর নেই। তোমরা মাতা- পিতার নাফরমানী করা থেকে দূরে থাকো। কেননা এক হাজার বছরের রাস্তা থেকে জান্নাতের ঘ্রাণ পাওয়া যায়। আল্লাহর কসম! মাতা- পিতার অবাধ্য সন্তান, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী, বৃদ্ধ ব্যাভিচারী এবং গর্বভরে টাখনুর নীচে কাপড় পরিধানকারী জান্নাতের সুঘ্রানও পাবে না...।৩
আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন শ্রেণীর লোকের প্রতি কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না। ১. মাতা- পিতাকে কষ্টদানকারী অবাধ্য সন্তান। ২. পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী ও ৩. দাইয়্যূস। আর তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না। ১. মাতা- পিতার অবাধ্য সন্তান। ২. মদপানে আসক্ত ব্যক্তি ও ৩. দান করে খোঁটাদানকারী।৪
আব্দুল্লাহ ইবন আবূ আওফা রা. বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বলল, একজন যুবকের মুমূর্ষ অবস্থা। লোকজন তাকে (কালিমা) ‘‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’’ পড়ার উপদেশ দিচ্ছে, কিন্তু সে পড়তে পারছে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেনঃ এ ব্যক্তি কি নামায আদায় করতো? সে বলল, জি হ্যাঁ। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে (যুবকটির উদ্দেশ্যে) রওয়ানা করলেন। আমরাও তাঁর সাথে চললাম। তিনি যুবকের কাছে গিয়ে তাকে কালিমা পড়ার তালকীন দিলেন অর্থাৎ বললেনঃ বল, ‘‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ।’’ সে বলল, আমি বলতে পারছি না। তিনি বললেনঃ কেন, কি হয়েছে? লোকটি বলল, সে তার মায়ের সাথে নাফরমানী করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেনঃ তার মা কি জীবিত আছে? লোকেরা বলল, হ্যাঁ, জীবিত আছেন। তিনি তাঁকে ডেকে আনার নির্দেশ দিলেন। তার বৃদ্ধ মাতা আসলে তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, একি তোমার ছেলে? বৃদ্ধা বলল হ্যাঁ, আমার ছেলে। তিনি বৃদ্ধাকে বললেনঃ তুমি কি মনে করো, যদি একটা ভয়ংকর আগুন প্রজ্জ্বলিত করা হয় এবং তোমাকে বলা হয়, যদি তুমি ছেলের জন্য সুপরিশ করো তাহলে তাকে এ আগুন থেকে নিস্কৃতি দেয়া হবে। অন্যথায় তাকে এ আগুনে ফেলে পুড়িয়ে মারা হবে। এ অবস্থায় তুমি কি সুপারিশ করবে? বৃদ্ধা বলল, জি, হ্যাঁ, সুপারিশ করব। একথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাহলে তুমি আল্লাহ ও আমাকে সাক্ষী রেখে বেলা, তুমি তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে বলছো। বৃদ্ধা বললো, হে আল্লাহ! আমি তোমাকে এবং তোমার রাসূলকে সাক্ষী রেখে বলছি, আমি আমার কলিজার টুকরা সন্তানের প্রতি রাজী হয়ে গেছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবকটির প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ বলো ‘‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু লা- শারীকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু’’ (সন্তানের প্রতি মায়ের সন্তুষ্টির বরকতে যুবকটির মুখ খুলে গেলো এবং তৎক্ষনাত) সে কালিমা পাঠ করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর প্রশংসা করলেন আর বললেনঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আমার অসিলায় এ যুবককে জাহান্নামের কঠিন আযাব থেকে নাজাত দিয়েছেন।১
সাহাবী আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তার নাক ধুলি মলিন হোক! তার নাক ধুলি মলিন হোক। তার নাম ধুলি মলিন হোক (অর্থাৎ সে ধ্বংস হোক) জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! কে সে? তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি মাতা- পিতা উভয়কে অথবা তাঁদের কোন একজনকে বার্ধক্য অবস্থায় পেলো অথচ সে জান্নাতের প্রবেশ করল না।১
কা‘ব ইবন ‘উজরা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মিম্বরের কাছে এসো জামায়েত হও। আমরা সকলে মিম্বরের কাছে এসে জামায়েত হলাম। তিনি মিম্বরের প্রথম ধাপে আরোহন করে বললেনঃ আমীন। দ্বিতীয় ধাপে আরোহন করে পুনরায় বললেন আমীন। তৃতীয় ধাপে আরোহন করে আবারো বললেনঃ আমীন। তিনি মিম্বার থেকে অবতরণ করার পর আমরা তাঁর নিকট আরয করলাম, আজ আমরা আপনার কাছ থেকে এমন কিছু কথা শুনেছি যা ইতিপূর্বে কখনো শুনিনি। তিনি বললেনঃ জিবরাইল (এইমাত্র) আমাকে এসে বললেনঃ সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে রমযান মাস পেয়েছে, অথচ তার গুনাহ মাফ হয়নি। আমি বললাম আমীন (আল্লাহ কুবল করুন)। আমি দ্বিতীয় ধাপে আরোহণ করলে তিনি (জিবরাঈল) বললেনঃ সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যার সামনে আমার নাম উচ্চারণ করা হলো, অথচ সে দরূদ পড়ল না। আমি বললামঃ আমীন। আমি মিম্বারের তৃতীয় ধাপে আরোহন করলে জিবরাঈল বললেনঃ সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে মাতা- পিতা উভয়কে অথবা তাঁদের কোন একজনকে পেল, কিন্তু তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালো না। আমি বললামঃ আমিন।২
ব্যাখ্যাঃ বৃদ্ধ বয়সে মানুষ দ্রুত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। শরীর ক্রমাগত শক্তিহীন, দূর্বল ও নিস্তেজ হতে থাকে। কর্মক্ষমতা ও আতম নির্ভরশীলতা হারিয়ে ফেলে। এমনকি এক পর্যায়ে চলা- ফেরা করার ক্ষমতাও তাদের থাকে না। তখন দুর্বলতা ও অসহায়তব তাঁদেরকে গ্রাস করে ফেলে। ফলে তাঁরা পরনির্ভরশীল তথা সন্তান-সন্ততির ওপর পূর্ণ নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। অপর দিকে বার্ধক্যের চাপে ও চতুর্মূখী রোগ যাতনায় তাঁদের মেজায খিটখিটে, কথা-বার্তা কর্কশ, আচার- আচরণ রূঢ় হয়ে যায়। এ সময়টা হয় মানুষের জন্য চরম দুর্দিন। বানদার এ অসহায় ও দুর্দিনে আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি বিশেষ করুণার হাত প্রসারিত করেন এবং দয়া ও রহমতের দ্বার তাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। ফলে সন্তানের জন্য মাতা- পিতার সন্তুষ্টিকে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং তাঁদের অসন্তুষ্টিকে আল্লাহর অসন্তুষ্টি হিসাবে পরিগণিত করা হয় এবং তাঁদেরকে সন্তানের জন্য জান্নাত ও জাহান্নাম হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। কারণ মাতা- পিতার এ কঠিন মুহূর্তে তাঁরা যে সন্তানের প্রতি সন্তুষ্ট হন আল্লাহ তাআলাও তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তার জন্য জান্নাতের ফায়সালা করে দেন।
পক্ষান্তরে যে সন্তান তার অস্তিত্ব, জনম, শৈশব ও কৈশোর জীবনে তার জন্র মাতা- পিতার এ চরম অসহায় অবস্থায় তাঁদের সেবা- যত্নে আত্মনিয়োগ করার পরিবর্তে তাঁদের অবাধ্য হয় এবং তাঁদের নাফরমানী করে ও তাঁদের মনে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট ও রাগান্বিত হয়ে তার জন্য জাহান্নামের ফায়সালা করে দেন।
বৃদ্ধ মাতা- পিতাকে বা তাদের কোন একজনকে পেয়েও যারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারেনি তারা ধ্বংস হোক- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এ কথাটা জিবরাঈল বললেও এ কথাটা জিবরাঈল এর নয় বরং এটা স্বয়ং আল্লাহ তাআলার ফায়সালা। জিবরাঈল হচেছন বাণী বাহক মাত্র। আল্লাহ তাআলার এ ফায়সালার প্রতি জিবরাঈল এর পূর্ণ সমর্থন ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ফায়সালাকে বিনা বাক্যে গ্রহণ করেছেন। বরং তিনি এর সাথে পূর্ণ একাতম হয়ে এ ফায়সালা কার্যকরী করার জন্য আমীন বলে আল্লাহর কাছে দুআ করেছেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মাতের প্রতি অত্যন্ত রহমদিল ছিলেন। উম্মতের শাস্তির কথা শুনে তিনি বিচলিত হয়ে পড়তেন। উম্মতের ইহকাল ও পরকালীন সুখ- শান্তি ও কল্যাণ সাধন করাই ছিল তাঁর নবুয়্যতী জীবনের মিশন। তা সত্ত্বেও মাতা- পিতার নাফরমান এবং তাঁদের মনে কষ্ট দানকারী সন্তানের ধ্বংসের জন্য তিনি বদদু‘আ করেছেন। কাজেই তাদের ধ্বংস অনিবার্য। তবে যদি তারা তওবা করে এবং নিজেদের ভুল স্বীকার করে মাতা- পিতার পায়ে পড়ে ক্ষমা চেয়ে নেয়। তাঁদের সেবা- যত্নে আত্মনিয়োগ করে তাঁদের সন্তুষ্টি অর্জন করে। আর মাতা- পিতা মারা গেলে নিজেদের কৃত অপরাধের জন্য আল্লাহর দরবারে খালেস ভাবে তওবা করে, মাতা- পিতার জন্য দুআ ও দান-সাদাকা করতে থাকে এবং মাতা- পিতার পক্ষের আত্মীয় স্বজনের সাথে ও মাতা- পিতার বন্ধু-মহলের সাথে সদ্ব্যবহার করতে থাকে, তাহলে আশা করা যায় যে, তারা অনিবার্য ধ্বংস থেকে রেহাই পাবে।
কা‘ব ইবন ‘উজরা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মিম্বরের কাছে এসো জামায়েত হও। আমরা সকলে মিম্বরের কাছে এসে জামায়েত হলাম। তিনি মিম্বরের প্রথম ধাপে আরোহন করে বললেনঃ আমীন। দ্বিতীয় ধাপে আরোহন করে পুনরায় বললেন আমীন। তৃতীয় ধাপে আরোহন করে আবারো বললেনঃ আমীন। তিনি মিম্বার থেকে অবতরণ করার পর আমরা তাঁর নিকট আরয করলাম, আজ আমরা আপনার কাছ থেকে এমন কিছু কথা শুনেছি যা ইতিপূর্বে কখনো শুনিনি। তিনি বললেনঃ জিবরাইল (এইমাত্র) আমাকে এসে বললেনঃ সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে রমযান মাস পেয়েছে, অথচ তার গুনাহ মাফ হয়নি। আমি বললাম আমীন (আল্লাহ কুবল করুন)। আমি দ্বিতীয় ধাপে আরোহণ করলে তিনি (জিবরাঈল) বললেনঃ সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যার সামনে আমার নাম উচ্চারণ করা হলো, অথচ সে দরূদ পড়ল না। আমি বললামঃ আমীন। আমি মিম্বারের তৃতীয় ধাপে আরোহন করলে জিবরাঈল বললেনঃ সে ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে মাতা- পিতা উভয়কে অথবা তাঁদের কোন একজনকে পেল, কিন্তু তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালো না। আমি বললামঃ আমিন।২
ব্যাখ্যাঃ বৃদ্ধ বয়সে মানুষ দ্রুত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। শরীর ক্রমাগত শক্তিহীন, দূর্বল ও নিস্তেজ হতে থাকে। কর্মক্ষমতা ও আতম নির্ভরশীলতা হারিয়ে ফেলে। এমনকি এক পর্যায়ে চলা- ফেরা করার ক্ষমতাও তাদের থাকে না। তখন দুর্বলতা ও অসহায়তব তাঁদেরকে গ্রাস করে ফেলে। ফলে তাঁরা পরনির্ভরশীল তথা সন্তান-সন্ততির ওপর পূর্ণ নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। অপর দিকে বার্ধক্যের চাপে ও চতুর্মূখী রোগ যাতনায় তাঁদের মেজায খিটখিটে, কথা-বার্তা কর্কশ, আচার- আচরণ রূঢ় হয়ে যায়। এ সময়টা হয় মানুষের জন্য চরম দুর্দিন। বানদার এ অসহায় ও দুর্দিনে আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি বিশেষ করুণার হাত প্রসারিত করেন এবং দয়া ও রহমতের দ্বার তাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। ফলে সন্তানের জন্য মাতা- পিতার সন্তুষ্টিকে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং তাঁদের অসন্তুষ্টিকে আল্লাহর অসন্তুষ্টি হিসাবে পরিগণিত করা হয় এবং তাঁদেরকে সন্তানের জন্য জান্নাত ও জাহান্নাম হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। কারণ মাতা- পিতার এ কঠিন মুহূর্তে তাঁরা যে সন্তানের প্রতি সন্তুষ্ট হন আল্লাহ তাআলাও তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তার জন্য জান্নাতের ফায়সালা করে দেন।
পক্ষান্তরে যে সন্তান তার অস্তিত্ব, জনম, শৈশব ও কৈশোর জীবনে তার জন্র মাতা- পিতার এ চরম অসহায় অবস্থায় তাঁদের সেবা- যত্নে আত্মনিয়োগ করার পরিবর্তে তাঁদের অবাধ্য হয় এবং তাঁদের নাফরমানী করে ও তাঁদের মনে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট ও রাগান্বিত হয়ে তার জন্য জাহান্নামের ফায়সালা করে দেন।
বৃদ্ধ মাতা- পিতাকে বা তাদের কোন একজনকে পেয়েও যারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারেনি তারা ধ্বংস হোক- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এ কথাটা জিবরাঈল বললেও এ কথাটা জিবরাঈল এর নয় বরং এটা স্বয়ং আল্লাহ তাআলার ফায়সালা। জিবরাঈল হচেছন বাণী বাহক মাত্র। আল্লাহ তাআলার এ ফায়সালার প্রতি জিবরাঈল এর পূর্ণ সমর্থন ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ফায়সালাকে বিনা বাক্যে গ্রহণ করেছেন। বরং তিনি এর সাথে পূর্ণ একাতম হয়ে এ ফায়সালা কার্যকরী করার জন্য আমীন বলে আল্লাহর কাছে দুআ করেছেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মাতের প্রতি অত্যন্ত রহমদিল ছিলেন। উম্মতের শাস্তির কথা শুনে তিনি বিচলিত হয়ে পড়তেন। উম্মতের ইহকাল ও পরকালীন সুখ- শান্তি ও কল্যাণ সাধন করাই ছিল তাঁর নবুয়্যতী জীবনের মিশন। তা সত্ত্বেও মাতা- পিতার নাফরমান এবং তাঁদের মনে কষ্ট দানকারী সন্তানের ধ্বংসের জন্য তিনি বদদু‘আ করেছেন। কাজেই তাদের ধ্বংস অনিবার্য। তবে যদি তারা তওবা করে এবং নিজেদের ভুল স্বীকার করে মাতা- পিতার পায়ে পড়ে ক্ষমা চেয়ে নেয়। তাঁদের সেবা- যত্নে আত্মনিয়োগ করে তাঁদের সন্তুষ্টি অর্জন করে। আর মাতা- পিতা মারা গেলে নিজেদের কৃত অপরাধের জন্য আল্লাহর দরবারে খালেস ভাবে তওবা করে, মাতা- পিতার জন্য দুআ ও দান-সাদাকা করতে থাকে এবং মাতা- পিতার পক্ষের আত্মীয় স্বজনের সাথে ও মাতা- পিতার বন্ধু-মহলের সাথে সদ্ব্যবহার করতে থাকে, তাহলে আশা করা যায় যে, তারা অনিবার্য ধ্বংস থেকে রেহাই পাবে।
আবু হুরাইরা রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ .... জুরাইজ নামে একজন নেককার ও বুযুর্গ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সব সময় খানকায় ইবাদতে মাশগুল থাকতেন। একদিন তাঁর মা তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য আসলেন। তখন তিনি নামায আদায় করছিলেন। মা তাঁকে ডাকলেন, হে জুরাইজ! তিনি মনে মনে বললেন, হে আল্লাহ! একদিকে আমার মা, অপরদিকে আমার নামায, এই বলে তিনি নামাযে মশগুল হয়ে গেলে। তাঁর মা এসে ডাক দিলেন, জুরাইজ! তিনি আবারও চিন্তা করলেন, হে আল্লাহ! একদিকে আমার মা, অপরদিকে আমার নামায (কি করে মার সাথে কথা বলি)। অতঃপর তিনি নামাযে মাশগুল হয়ে গেলেন। তাঁর মা গত দিনের মতো ফিরে চলে গেলেন। তৃতীয় দিনও মা এসে দেখেন, জুরাইজ নামায আদায় করছে। তিনি ডাক দিলেন, হে জুরাইজ! তিনি মনে মনে বললেন; হে আল্লাহ! একদিকে আমার মা, অপরদিকে আমার নামায। নামাযের মধ্যে কি করে জবাব দেই। তিনি চুপ রইলেন, অতঃপর নামাযে মাশগুল হয়ে গেলেন এতে তাঁর মা মনে খুব কষ্ট পেলেন এবং রাগান্বিত হয়ে বদ দু’আ করলেন, হে আল্লাহ! চরিত্রহীন ব্যভিচারী নারীর চেহারা না দেখিয়ে তাকে মৃত্যু দিও না। এ বদ দু’আ করে নিরাশ হয়ে তিনি সেখান থেকে প্রস্থান করলেন।
ইতিমধ্যে বনী বনী ইসরাঈলের লোকদের মাঝে জুরাইজ ও তাঁর ইবাদত বন্দেগীর কথা আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়। এমন সময় এক অনিন্দ সুন্দরী ব্যভিচারী মহিলা লোকদেরকে বললো, তোমরা যদি মনে করো, তাহলে আমি তাঁকে কাজে ফাঁসিয়ে দেই। এরপর সে জুরাইজের খানকায় উপস্থিত হলো এবং তাঁকে অপকর্মের আহবান জানাতে লাগল। কিন্তু জুরাইজ তার প্রতি বিন্দুমাত্র দৃষ্টিপাত করেননি।
সে জুরাইজ থেকে নিরাশ হয়ে জুরাইজের খানকায় যাতায়াত করত এমন এক রাখালের কাছে গিয়ে নিজেকে তার সামনে পেশ করে দিল। রাখাল তার ষড়যন্ত্রের শিকার হলো। মহিলাটি গর্ভবতী হলো, অতঃপর একটি বাচ্চা প্রসব করল, আর প্রচার করতে লাগল, বাচ্চাটি জুরাইজ কর্তৃক ভূমিষ্ঠ হয়েছে। মহিলাটির এ অপপ্রচার শুনে লোকেরা জুরাইজের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর খানকার সামনে জড়ো হলো। তাঁকে খানকা থেকে টেনে হেঁচেড়ে বের করে তার খানাকাটি ভেঙ্গে ফেললো এবং তাঁকে প্রহার করতে লাগল।
জুরাইজ তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, কি হয়েছে তোমাদের? তারা বলল, তুমি এ নষ্টা ব্যভিচারিনী মহিলার সাথে ব্যভিচার করেছো। আর তোমার মাধ্যমে তার একটি সন্তানও ভূমিষ্ট হয়েছে। তিনি লোকদেরকে বললেন, ঠিক আছে, শিশুটি কোথায়, তাকে নিয়ে এসো। অতঃপর তাকে আনা হলো। তিনি বললেন, তোমরা আমাকে ছেড়ে দাও, আমি (দু রাকাআত) নামায আদায় করি।
নামায শেষ করে তিনি নবজাতক শিশুটির পেটে খোঁচা মেরে জিজ্ঞেস কলেন, বল, তোর পিতা কে? (শিশুটি কয়েকদিনের হলেও আল্লাহ তার যবান খুলে দিয়েছেন) সে বললো, ওমুক রাখার আমার পিতা। একথা শুনে জুরাইজের প্রতি লোকদের ভক্তি-শ্রদ্ধা আরো বেড়ে গেলো, তারা তাঁকে চুমু দেয়া শুরু করল, তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলো এবং বললো, তোমার এ খানকা আমরা সোনা দিয়ে নির্মাণ করে দেব। তিনি বললেন, না, তার প্রয়োজন হবে না। যেভাবে ছিল সেভাবে মাটি দ্বারা নির্মাণ করে দাও। তাই করা হলো।
মুসলিমের অপর বর্ণনায় এসেছে, জুরাইজের মা যদি ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার বদ দু’আ করতেন তাহলে তিনি অবশ্যই ব্যভিচারে লিপ্ত হতেন।১
ইতিমধ্যে বনী বনী ইসরাঈলের লোকদের মাঝে জুরাইজ ও তাঁর ইবাদত বন্দেগীর কথা আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়। এমন সময় এক অনিন্দ সুন্দরী ব্যভিচারী মহিলা লোকদেরকে বললো, তোমরা যদি মনে করো, তাহলে আমি তাঁকে কাজে ফাঁসিয়ে দেই। এরপর সে জুরাইজের খানকায় উপস্থিত হলো এবং তাঁকে অপকর্মের আহবান জানাতে লাগল। কিন্তু জুরাইজ তার প্রতি বিন্দুমাত্র দৃষ্টিপাত করেননি।
সে জুরাইজ থেকে নিরাশ হয়ে জুরাইজের খানকায় যাতায়াত করত এমন এক রাখালের কাছে গিয়ে নিজেকে তার সামনে পেশ করে দিল। রাখাল তার ষড়যন্ত্রের শিকার হলো। মহিলাটি গর্ভবতী হলো, অতঃপর একটি বাচ্চা প্রসব করল, আর প্রচার করতে লাগল, বাচ্চাটি জুরাইজ কর্তৃক ভূমিষ্ঠ হয়েছে। মহিলাটির এ অপপ্রচার শুনে লোকেরা জুরাইজের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর খানকার সামনে জড়ো হলো। তাঁকে খানকা থেকে টেনে হেঁচেড়ে বের করে তার খানাকাটি ভেঙ্গে ফেললো এবং তাঁকে প্রহার করতে লাগল।
জুরাইজ তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, কি হয়েছে তোমাদের? তারা বলল, তুমি এ নষ্টা ব্যভিচারিনী মহিলার সাথে ব্যভিচার করেছো। আর তোমার মাধ্যমে তার একটি সন্তানও ভূমিষ্ট হয়েছে। তিনি লোকদেরকে বললেন, ঠিক আছে, শিশুটি কোথায়, তাকে নিয়ে এসো। অতঃপর তাকে আনা হলো। তিনি বললেন, তোমরা আমাকে ছেড়ে দাও, আমি (দু রাকাআত) নামায আদায় করি।
নামায শেষ করে তিনি নবজাতক শিশুটির পেটে খোঁচা মেরে জিজ্ঞেস কলেন, বল, তোর পিতা কে? (শিশুটি কয়েকদিনের হলেও আল্লাহ তার যবান খুলে দিয়েছেন) সে বললো, ওমুক রাখার আমার পিতা। একথা শুনে জুরাইজের প্রতি লোকদের ভক্তি-শ্রদ্ধা আরো বেড়ে গেলো, তারা তাঁকে চুমু দেয়া শুরু করল, তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলো এবং বললো, তোমার এ খানকা আমরা সোনা দিয়ে নির্মাণ করে দেব। তিনি বললেন, না, তার প্রয়োজন হবে না। যেভাবে ছিল সেভাবে মাটি দ্বারা নির্মাণ করে দাও। তাই করা হলো।
মুসলিমের অপর বর্ণনায় এসেছে, জুরাইজের মা যদি ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার বদ দু’আ করতেন তাহলে তিনি অবশ্যই ব্যভিচারে লিপ্ত হতেন।১
আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মাতা- পিতার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার আদেশের অনুগত হয়ে সকাল বেলায় উপনীত হয়, সে যেন তার জন্য জান্নাতের দু’টি দরজা খোলা অবস্থায় ভোর করল। যদি তাঁদের একজন বেঁচে থাকে। (যার সে অনুগত থাকে) তবে সে জান্নাতের একখানা দরজা খোলা অবস্থায় ভোর করল। আর যে ব্যক্তি মাতা- পিতার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার আদেশের নাফরমান হিসেবে সকাল বেলায় উপনীত হয়, তার জন্য জাহান্নামের দু’খানা দরজা খোলা অবস্থায় সে সকাল করল। জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, যদি তাঁরা উভয়ে পুত্রের প্রতি জুলুম করে? তিনি বললেনঃ যদিও তাঁরা পুত্রের প্রতি জুলুম করে, যদিও তাঁরা পুত্রের প্রতি জুলুম করে, যদিও তাঁরা পুত্রের প্রতি জুলুম করে।১
আব্দুল্লাহ ইবন আমর রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মাতা- পিতার অসন্তুষ্টির মধ্যে আল্লাহর অসন্তুষ্টি নিহিত রয়েছে।২
আবূ উমামা রা. থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যক্তি এসে আরয করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! সন্তানের ওপর মাতা- পিতার কি অধিকার আছে? তিনি বলেনঃ তাঁরা উভয়ে তোমার জান্নাত ও জাহান্নাম।৩
সাহবী আবুদ দারদা রা. থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যক্তি তাঁর নিকট এসে বলল, আমার একজন স্ত্রী আছে, আমার মা আমাকে আদেশ করেন, তাকে তালাক দিতে। তখন আবুদ দারদা রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, মাতা- পিতা হচ্ছে জান্নাতের শ্রেষ্ঠ দরজা। তুমি ইচ্ছা করলে দরজাটিকে রক্ষা করতে পার। ইচ্ছা করলে দরজাটি নষ্টও করতে পার।৪
আব্দুল্লাহ ইবন আমর রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মাতা- পিতার অসন্তুষ্টির মধ্যে আল্লাহর অসন্তুষ্টি নিহিত রয়েছে।২
আবূ উমামা রা. থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যক্তি এসে আরয করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! সন্তানের ওপর মাতা- পিতার কি অধিকার আছে? তিনি বলেনঃ তাঁরা উভয়ে তোমার জান্নাত ও জাহান্নাম।৩
সাহবী আবুদ দারদা রা. থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যক্তি তাঁর নিকট এসে বলল, আমার একজন স্ত্রী আছে, আমার মা আমাকে আদেশ করেন, তাকে তালাক দিতে। তখন আবুদ দারদা রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, মাতা- পিতা হচ্ছে জান্নাতের শ্রেষ্ঠ দরজা। তুমি ইচ্ছা করলে দরজাটিকে রক্ষা করতে পার। ইচ্ছা করলে দরজাটি নষ্টও করতে পার।৪
সাহাবী আবূ হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন ব্যক্তির দু’আ কবুল হয়। এতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই। একঃ মাজলুমের দুআ, দুইঃ মুসাফিরের দুআ, তিনঃ সন্তানের বেলায় মাতা- পিতার দুআ।৫
ব্যাখ্যাঃ মাতা-পিতার সন্তুষ্টি ও তাঁদের মমতাপূর্ণ অন্তরের দুআ সন্তানের জন্য সবচাইতে বড় সৌভাগ্যের বিষয়। পক্ষান্তরে সন্তানের জীবনের সবচাইতে বড় দুর্ভাগ্য হলো, সন্তানের প্রতি মাতা- পিতার দুঃখ ও ভারাক্রান্ত হৃদয়ের বদ দুআ। মাতা- পিতার অধিকার আদায়, তাঁদের সেবা- যত্ন ও সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে তাঁদের দু’আ নেয়া এবং তাঁদের মনে কষ্ট দেয়া ও তাঁদের বদদু’আ থেকে বেঁচে থাকা সন্তানের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য। তাঁরা দু’আ বা বদদু’আ থেকে বেঁচে থাকা সন্তানের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য। তাঁরা দু’আ বা বদদু’য়া যাই করেন, সন্তানের বেলায় তা নিঃসন্দেহে কবুল হয়।
ব্যাখ্যাঃ মাতা-পিতার সন্তুষ্টি ও তাঁদের মমতাপূর্ণ অন্তরের দুআ সন্তানের জন্য সবচাইতে বড় সৌভাগ্যের বিষয়। পক্ষান্তরে সন্তানের জীবনের সবচাইতে বড় দুর্ভাগ্য হলো, সন্তানের প্রতি মাতা- পিতার দুঃখ ও ভারাক্রান্ত হৃদয়ের বদ দুআ। মাতা- পিতার অধিকার আদায়, তাঁদের সেবা- যত্ন ও সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে তাঁদের দু’আ নেয়া এবং তাঁদের মনে কষ্ট দেয়া ও তাঁদের বদদু’আ থেকে বেঁচে থাকা সন্তানের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য। তাঁরা দু’আ বা বদদু’আ থেকে বেঁচে থাকা সন্তানের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য। তাঁরা দু’আ বা বদদু’য়া যাই করেন, সন্তানের বেলায় তা নিঃসন্দেহে কবুল হয়।
সাহাবী আবু বাকরা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সব গুনাহ আল্লাহ তাআলা যতটা ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন। তবে মাতা- পিতার নাফরমানীর গুনাহ (ক্ষমা করেন না) বরং এর শাস্তি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে মৃত্যুর পূর্বে পার্থিক জীবনে দেয়া হবে।১
সাহাবী মুগীরা ইবনে শোবা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা তোমাদের ওপর মায়ের নাফরমানী, কন্যা শিশুকে জীবিত কবর দেয়া, কৃপণতা করা ও ভিক্ষা বৃত্তি হারাম করে দিয়েছেন। আর বৃথা তর্ক-বিতর্ক, অধিক জিজ্ঞাসা সম্পদ নষ্ট করাকে তোমাদের জন্য অপছন্দ করেছেন।২
ব্যাখ্যাঃ সন্তানের জন্য মায়েরা যে সীমাহীন কষ্ট করে থাকেন, তার এক মুহূর্তের বদলা সন্তান সারা জীবনেও দিতে পারবে না। মায়েদের মন অত্যন্ত নরম। সামান্য কথাতেই অন্তরে আঘাত লেগে যেতে পারে, তাঁদের মন আহত হয়ে যেতে পারে। মায়ের সন্তুষ্টির প্রতিদান হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত লাভ। আর মায়ের অসন্তুষ্টির প্রতিফল হচ্ছে, আল্লাহর অসন্তুষ্টি এবং চির জাহান্নাম। সুতরাং মায়ের সাথে কথা- বার্তা ও আচার- আচরণে অত্যন্ত সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে, যেন মায়ের মনে সামান্যতম কষ্টও না লাগে। মায়ের মনে কষ্ট দেয়া, তাঁর নাফরমানী করা ও অবাধ্য হওয়া থেকে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত রাখতে হবে। মায়ের অধিকার আদায়, তাঁর সেবা- যত্ন ও সন্তুষ্টির জন্য জীবন উজাড় করে দেয়া সন্তানের অপরিহার্য কর্তব্য।
ব্যাখ্যাঃ সন্তানের জন্য মায়েরা যে সীমাহীন কষ্ট করে থাকেন, তার এক মুহূর্তের বদলা সন্তান সারা জীবনেও দিতে পারবে না। মায়েদের মন অত্যন্ত নরম। সামান্য কথাতেই অন্তরে আঘাত লেগে যেতে পারে, তাঁদের মন আহত হয়ে যেতে পারে। মায়ের সন্তুষ্টির প্রতিদান হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত লাভ। আর মায়ের অসন্তুষ্টির প্রতিফল হচ্ছে, আল্লাহর অসন্তুষ্টি এবং চির জাহান্নাম। সুতরাং মায়ের সাথে কথা- বার্তা ও আচার- আচরণে অত্যন্ত সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে, যেন মায়ের মনে সামান্যতম কষ্টও না লাগে। মায়ের মনে কষ্ট দেয়া, তাঁর নাফরমানী করা ও অবাধ্য হওয়া থেকে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত রাখতে হবে। মায়ের অধিকার আদায়, তাঁর সেবা- যত্ন ও সন্তুষ্টির জন্য জীবন উজাড় করে দেয়া সন্তানের অপরিহার্য কর্তব্য।
উমার ইবনে আব্দুল আযীয র. ইবনে মিহরানকে বলেছেন, তুমি কখনো রাজা-বাদশাহদের দরবারে যাবে না। যদিও তুমি তাদেরকে ভালো কাজের আদেশ করো এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করো। কোন বেগানা নারীর সাথে কখনো নির্জন অবস্থান করবে না, যদিও তা কুরআন শিক্ষা দেয়ার জন্য হয়। আর মাতা- পিতার অবাধ্য সন্তানের সাথে কখনো বন্ধুতব করবে না। কেননা সে তো নিজের মাতা- পিতারই অবাধ্য, তোমাকে কিভাবে সে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে? (কখনো তা করতে পারেন।)১
ব্যাখ্যাঃ মাতা- পিতাই সন্তানের জনমদাতা ও সবচাইতে বড় আপনজন। সন্তানকে তাঁরা নিজেদের জীবনের চাইতে বেশী ভালোবাসেন। হৃদয় নিংড়ানো আদর- স্নেহে তাদেরকে প্রতিপালন করেন, নিজেরা না খেয়ে সন্তানকে খাওয়ান। নিজেরা না পরে সন্তানকে পরান। নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়েও তাঁরা সন্তানের সুখ-শান্তি কামনা করেন। সন্তানের একটু কিছু হলে তাঁদের মনের শান্তি ও স্বস্তি দূর হয়ে যায়, চোখের ঘুম হারাম হয়ে যায়, দুশ্চিন্তায় তারা অস্থির, বিচলিত ও বিমূঢ় হয়ে পড়েন। সন্তানের ব্যাপারে মাতা-পিতার এমন অবদানকে ভূলে গিয়ে যে সব সন্তান তাঁদের অবাধ্য হয়ে যায়, এরূপ অবাধ্য ও নিষ্ঠুর প্রাণ পৃথিবীতে আর কাউকে কি বন্ধুরূপে গ্রহণ করতে পারে? কখনো নয়। যদি কারো সাথে বন্ধুতব করতে দেখা যায়, তবে সেটা হবে নিছক অভিনয় ও ধোকা। সুতরাং, ‘‘মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তানের সাথে বন্ধুতব করবে না’’- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ অমোঘ বাণী কতই না বাস্তব।
ব্যাখ্যাঃ মাতা- পিতাই সন্তানের জনমদাতা ও সবচাইতে বড় আপনজন। সন্তানকে তাঁরা নিজেদের জীবনের চাইতে বেশী ভালোবাসেন। হৃদয় নিংড়ানো আদর- স্নেহে তাদেরকে প্রতিপালন করেন, নিজেরা না খেয়ে সন্তানকে খাওয়ান। নিজেরা না পরে সন্তানকে পরান। নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়েও তাঁরা সন্তানের সুখ-শান্তি কামনা করেন। সন্তানের একটু কিছু হলে তাঁদের মনের শান্তি ও স্বস্তি দূর হয়ে যায়, চোখের ঘুম হারাম হয়ে যায়, দুশ্চিন্তায় তারা অস্থির, বিচলিত ও বিমূঢ় হয়ে পড়েন। সন্তানের ব্যাপারে মাতা-পিতার এমন অবদানকে ভূলে গিয়ে যে সব সন্তান তাঁদের অবাধ্য হয়ে যায়, এরূপ অবাধ্য ও নিষ্ঠুর প্রাণ পৃথিবীতে আর কাউকে কি বন্ধুরূপে গ্রহণ করতে পারে? কখনো নয়। যদি কারো সাথে বন্ধুতব করতে দেখা যায়, তবে সেটা হবে নিছক অভিনয় ও ধোকা। সুতরাং, ‘‘মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তানের সাথে বন্ধুতব করবে না’’- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ অমোঘ বাণী কতই না বাস্তব।
আমর ইবন মুররা আল জুহানী রা. বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এসে আরয করল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ এক, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং আপনি আল্লাহর রাসূল। আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায করি, নিজের সম্পদে যাকাত দেই, রমযানের রোযা রাখি। তার একথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে ব্যক্তি এসব কাজের উপর অটল থেকে মৃত্যু বরণ করল, সে কেয়ামতের দিন নবী, সিদ্দীক ও শহীদদের সাথে এমনিভাবে অবস্থান করবে (একথা বলে তিনি হাতের পাশা-পাশি দুটি আঙ্গুল উঠিয়ে দেখালেন)। তবে শর্ত হলো, সে যেন মাতা- পিতার নাফরমান ও অবাধ্য না হয়।১
ব্যাখ্যাঃ মাতা-পিতার নাফরমান ও অবাধ্য না হওয়া জান্নাতে যাওয়ার জন্য শর্ত। সুতরাং ঈমান ও আমলে সালেহ থাকা সত্ত্বেও মাতা- পিতার অবাধ্য সন্তান জান্নাতে যেতে পারবে না।
ব্যাখ্যাঃ মাতা-পিতার নাফরমান ও অবাধ্য না হওয়া জান্নাতে যাওয়ার জন্য শর্ত। সুতরাং ঈমান ও আমলে সালেহ থাকা সত্ত্বেও মাতা- পিতার অবাধ্য সন্তান জান্নাতে যেতে পারবে না।
সাহাবী আবূ উমামা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা তিন ব্যক্তির ইবাদত বন্দেগী ও দান সাদাকা কোনটাই কবুল করেন না। তারা হচ্ছেঃ ১. মাতা- পিতার নাফরমান, ২. দান করে খোঁটা দানকারী ও ৩ তাকদীর অস্বীকারকারী।২
পরিবার থেকে বহিস্কার করলেও মাতা- পিতার নাফরমানী করা যাবে না।
হযরত মু‘আয ইবন জাবাল রা. বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দশটি আদেশ প্রদান করেন। আল্লাহর সাথে কখনো কাউকে শরীক করো না, যদিও তোমাকে হত্যা করা হয় এবং আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। কখনো মাতা-পিতার নাফরমানী করো না, যদিও তাঁরা তোমাকে নিজের সম্পদ ও পরিবার- পরিজন থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।৩
পরিবার থেকে বহিস্কার করলেও মাতা- পিতার নাফরমানী করা যাবে না।
হযরত মু‘আয ইবন জাবাল রা. বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দশটি আদেশ প্রদান করেন। আল্লাহর সাথে কখনো কাউকে শরীক করো না, যদিও তোমাকে হত্যা করা হয় এবং আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। কখনো মাতা-পিতার নাফরমানী করো না, যদিও তাঁরা তোমাকে নিজের সম্পদ ও পরিবার- পরিজন থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।৩
আসমা’ঈ র. বলেন, জনৈক আরব বেদুঈন আমার নিকট বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি মাতা- পিতার নাফরমান ও তাঁদের অনুগত সন্তানের অনুসন্ধানে নিজ গ্রাম থেকে বের হয়ে বহু গ্রাম অতিক্রম করি। অবশেষে এক বৃদ্ধের কাছে এসে পৌঁছি। তার গলায় দড়ি বাঁধা। সে দ্বিপ্রহরের প্রচন্ড গরমে একটি বালতি দ্বারা পানি উঠানোর কাজে নিয়োজিত রয়েছে, যে বালতি দ্বারা পানি উঠানো উটের পক্ষেও অসম্ভব। বৃদ্ধের পিছনে রয়েছে পাকানো দড়ির চাবুক হাতে এক যুবক। সে তাকে উক্ত চাবুক দ্বারা প্রহার করছে। চাবুকের আঘাতে বৃদ্ধের পিঠ ফেটে যাচ্ছে। আমি যুবককে বললাম, সাবধান! আল্লাহকে ভয় করো। এ দুর্বল বৃদ্ধকে প্রহার করা থেকে বিরত হও। বৃদ্ধ লোকটি রশি দ্বারা পানি উঠানোর যে কঠিন কাজে নিয়োজিত তা কি তার জন্য যথেষ্ট নয়? তা সত্ত্বেও তাকে প্রহার করছো? যুবকটি বললো, এতদসত্তেব সে তো আমার পিতা। আমি বললাম, আল্লাহ তাআলা তোমার অকল্যাণ করুন। যুবকটি বললো, থামুন! সে তার পিতার সাথে এরূপ আচরণ করতো। আর তার পিতাও তার দাদার সাথে এ ধরনের আচরণ করতো। তখন আমি বললাম, এই হলো, মাতা- পিতার সবচাইতে বড় নাফরমান ব্যক্তি।১
আসমাঈ রহ. বলেন, জনৈক আরব আমাকে বলেন, আব্দুল মালেক ইবন মারওয়ানের শাসনামলে মুনাযিল নামে এক লোক ছিল। তার ছিল একজন বৃদ্ধ পিতা। তার উপাধি ছিল ফার‘আন। যুবক ছেলেটি তার অবাধ্য ছিল। কবিতার ছন্দাকারে বৃদ্ধ আক্ষেপ করে বলেন, আমার ও মুনাযিলের মাঝে আত্মীয়তা আমাকে এমন প্রতিদান দিয়েছে যেমন ঋণ দাতা ঋণ গ্রহিতাকে ঋণ পরিশোধের জন্য তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। কিছুকাল পর মুনাযিলের সন্তান জুলাইহ মুনাযিলের অবাধ্য হয়ে যায়, সে জুলাইহ কর্তৃক বিপদগ্রস্থ হয়ে বলে, আমার মাল- সম্পদের ব্যাপারে জুলাইহ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে, আর সে আমার অবাধ্য হয়, যখন আমার মেরুদন্ডের হাড় বেকিয়ে ধনুকের মতো হয়ে গেছে। এ অবস্থা দেখে গভর্নর জুলাইহকে প্রহার করতে উদ্যত হলে সে বলে, আমার ব্যাপার তাড়াহুড়া করবেন না। এই হচ্ছে ফার’আন পুত্র মুনাযিল যার সম্পর্কে তার পিতা আক্ষেপ করে বলেছিলো, আমার ও মুনাযিলের মাঝে আত্মীয়তা এমন প্রতিদান দিয়েছে যেমন ঋণ দাতা ঋণ গ্রহিতাকে ঋণ পরিশোধ করার জন্য তাড়িয়ে বেড়ায়। এ কথা শুনে গভর্নর বলেন, ওহে! তুমি তোমার মাতা-পিতার নাফরমানী করেছো, এখন সন্তান কর্তৃক নাফরমানীর শিকার হয়েছো।২
উবাইদ ইবন জুরাইজ থেকে বর্ণিত, তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, মূসা আ. এর ওপর আল্লাহ তাআলা যা নাযিল করেছেন তাতে মাতা- পিতার নাফরমানীর ব্যাপারে কি বলেছেন? জবাবে তিনি বলেন, পিতা সন্তানকে কোন আদেশ করলে সে যদি তা পালন না করে, সেটাই হলো পিতার নাফরমানী। আর পিতা সন্তানের পক্ষ থেকে কোন বিষয়ের সম্মুখীন হয়ে আল্লাহর দরবারে অভিযোগ করলে সেটা হবে পুরোপুরি নাফরমানী ও অবাধ্যতা।১
আসমাঈ রহ. বলেন, জনৈক আরব আমাকে বলেন, আব্দুল মালেক ইবন মারওয়ানের শাসনামলে মুনাযিল নামে এক লোক ছিল। তার ছিল একজন বৃদ্ধ পিতা। তার উপাধি ছিল ফার‘আন। যুবক ছেলেটি তার অবাধ্য ছিল। কবিতার ছন্দাকারে বৃদ্ধ আক্ষেপ করে বলেন, আমার ও মুনাযিলের মাঝে আত্মীয়তা আমাকে এমন প্রতিদান দিয়েছে যেমন ঋণ দাতা ঋণ গ্রহিতাকে ঋণ পরিশোধের জন্য তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। কিছুকাল পর মুনাযিলের সন্তান জুলাইহ মুনাযিলের অবাধ্য হয়ে যায়, সে জুলাইহ কর্তৃক বিপদগ্রস্থ হয়ে বলে, আমার মাল- সম্পদের ব্যাপারে জুলাইহ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে, আর সে আমার অবাধ্য হয়, যখন আমার মেরুদন্ডের হাড় বেকিয়ে ধনুকের মতো হয়ে গেছে। এ অবস্থা দেখে গভর্নর জুলাইহকে প্রহার করতে উদ্যত হলে সে বলে, আমার ব্যাপার তাড়াহুড়া করবেন না। এই হচ্ছে ফার’আন পুত্র মুনাযিল যার সম্পর্কে তার পিতা আক্ষেপ করে বলেছিলো, আমার ও মুনাযিলের মাঝে আত্মীয়তা এমন প্রতিদান দিয়েছে যেমন ঋণ দাতা ঋণ গ্রহিতাকে ঋণ পরিশোধ করার জন্য তাড়িয়ে বেড়ায়। এ কথা শুনে গভর্নর বলেন, ওহে! তুমি তোমার মাতা-পিতার নাফরমানী করেছো, এখন সন্তান কর্তৃক নাফরমানীর শিকার হয়েছো।২
উবাইদ ইবন জুরাইজ থেকে বর্ণিত, তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, মূসা আ. এর ওপর আল্লাহ তাআলা যা নাযিল করেছেন তাতে মাতা- পিতার নাফরমানীর ব্যাপারে কি বলেছেন? জবাবে তিনি বলেন, পিতা সন্তানকে কোন আদেশ করলে সে যদি তা পালন না করে, সেটাই হলো পিতার নাফরমানী। আর পিতা সন্তানের পক্ষ থেকে কোন বিষয়ের সম্মুখীন হয়ে আল্লাহর দরবারে অভিযোগ করলে সেটা হবে পুরোপুরি নাফরমানী ও অবাধ্যতা।১
মাতা- পিতা আল্লাহর বড় নেআমত। নাফরমান সন্তান আল্লাহর নেআমতের অস্বীকার করে। ফলে সে মাতা- পিতার অনুগ্রহকেও অস্বীকার করে।
মাতা-পিতার সন্তুষ্টি আল্লাহর সন্তুষ্টি। তাদের অসন্তুষ্টি আল্লাহর অসন্তুষ্টি। মাতা- পিতার নাফরমান সন্তান আল্লাহর সন্তুষ্টি থেকে দূর হয়ে যায়।
মাতা-পিতার নাফরমানী সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। যে ব্যক্তি মাতা- পিতার সাথে অসদাচরণ করে তার সন্তান, তার প্রতিবেশী ও তার সমাজের লোকেরাও তার সাথে অসদারচরণ করবে।
মাতা-পিতার নাফরমানীর কারণে সমাজ থেকে শান্তি ও নিরাপত্তা দূরীভূত হয়।
নাফরমান সন্তান, মাতা-পিতার নাফরমানীর প্রতিফল দুনিয়াতেও পাবে।
মাতা- পিতার নাফরমানীর কারণে চেহারার লাবণ্যতা ও নূর দূরীভূত হয়।
নাফরমান সন্তান কেয়ামতের দিন আল্লাহর রহমতের দৃষ্টি থেকে বঞ্চিত হবে।২
মাতা-পিতার সন্তুষ্টি আল্লাহর সন্তুষ্টি। তাদের অসন্তুষ্টি আল্লাহর অসন্তুষ্টি। মাতা- পিতার নাফরমান সন্তান আল্লাহর সন্তুষ্টি থেকে দূর হয়ে যায়।
মাতা-পিতার নাফরমানী সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। যে ব্যক্তি মাতা- পিতার সাথে অসদাচরণ করে তার সন্তান, তার প্রতিবেশী ও তার সমাজের লোকেরাও তার সাথে অসদারচরণ করবে।
মাতা-পিতার নাফরমানীর কারণে সমাজ থেকে শান্তি ও নিরাপত্তা দূরীভূত হয়।
নাফরমান সন্তান, মাতা-পিতার নাফরমানীর প্রতিফল দুনিয়াতেও পাবে।
মাতা- পিতার নাফরমানীর কারণে চেহারার লাবণ্যতা ও নূর দূরীভূত হয়।
নাফরমান সন্তান কেয়ামতের দিন আল্লাহর রহমতের দৃষ্টি থেকে বঞ্চিত হবে।২
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন