মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
দ্বাদশ পরিচ্ছেদ: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দৃঢ়তা ও ধীরস্থিরতা
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/408/14
একজন দাওয়াত-কর্মীর পক্ষে তার সকল কর্মে এবং সর্ব বিষয়ে ধৈর্য, সহনশীলতা ও দৃঢ়তার নীতি গ্রহণ করা ব্যতীত নিজ দাওয়াত কর্মে সফল হওয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এ বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। সর্ব কাজে ধীরতা ও দৃঢ়তার নীতি অবলম্বন করেছেন । অনেক নির্ভরযোগ্য ও সহীহ হাদীসের মাধ্যমে বিষয়টি আমাদের কাছে স্পষ্ট হবে । দৃষ্টান্ত স্বরূপ আমরা এখানে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করছি।
প্রথম দৃষ্টান্ত: উসামা বিন যায়েদ রা. এর সাথে
সাহাবী উসামা বিন যায়েদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে জুহায়নার হারাকাহ নামকস্থানে যুদ্ধাভিযানে প্রেরণ করলেন। আমরা প্রত্যুষে তাদের উপর চড়াও হয়েছি এবং পরাভূতও করে ফেলেছি। তিনি বলেন, আমি এবং জনৈক আনসারী সাহাবী তাদের একজনকে আঘাত করলাম। অতঃপর তাকে যখন আমরা বেষ্টন করে ফেললাম। সে বলল, লা ইলাহা ইল্লাললাহ। তিনি বলেন, এরপর আনসারী বিরত হয়ে গেল আর আমি তাকে আমার বর্শা দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে ফেললাম। আমরা মদীনায় ফিরে আসলে এ খবর নবীজীর নিকট পৌঁছে গেল। তিনি আমাকে বললেন, ‘হে উসামা! সে লা ইলাহা ইল্লাললাহ বলার পরও তুমি তাকে হত্যা করলে?’ আমি বললাম, ‘ইয়া রাসূলাললাহ ! সেতো এটি জীবন রক্ষার্থে বলেছে।’ তিনি তারপরও বললেন, ‘তুমি তাকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরও হত্যা করলে?’ উসামা বলেন, ‘নবীজী একথাটি বার বার বলে যাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে আমি এ বলে আফসোস করেছিলাম! আহ্! আমি যদি সেদিনের আগে ইসলাম গ্রহণ না করতাম। [সহীহ আল - বুখারী , কিতাবুল মাগাযী। হাদীস নং (৪২৬৯) এবং সহীহ মুসলিম , কিতাবুল ঈমান। হাদীস নং (১৫৯)]
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, আমি বললাম, ‘ইয়া রাসূলাললাহ ! সে এটি অস্ত্রের ভয়ে বলেছে।’ তখন তিনি বললেন, ‘তাহলে তুমি তার বক্ষ বিদীর্ণ করলে না কেন? তাহলে তো জানতে পারতে সেটি সে সত্যিকারার্থে অন্তর দিয়ে বলেছিল কিনা।’ [সহীহ মুসলিম , কিতাবুল ঈমান। হদীস নং (৯৭)।]
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘কেয়ামত দিবসে যখন লা ইলাহা ইল্লাললাহ উপস্থিত হবে তখন তুমি তার সাথে কি করবে?’ আমি বললাম, ‘আপনি আমার জন্যে গুনাহ মাফের দু‘আ করুন।’ তিনি বললেন, ‘কেয়ামত দিবসে যখন লা ইলাহা ইল্লাললাহ উপস্থিত হবে তখন তুমি তার সাথে কি করবে?’ এরপর রাসূলুল্লাহ ক্রমাগত এটিই বলে যেতে থাকলেন, অন্য কিছু বলেননি। ‘কেয়ামত দিবসে যখন লা ইলাহা ইল্লাললাহ উপস্থিত হবে তখন তুমি তার সাথে কি করবে।’ [সহীহ মুসলিম , কিতাবুল ঈমান। হদীস নং (৯৭)।]
তাইতো নবীজীই ছিলেন দৃঢ়তা ও ধীরস্থিরতার ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা বড় ব্যক্তিত্ব। তিনি কোন কাফেরকে - তারা আর ইসলাম গ্রহণ করবে না মর্মে - যথেষ্ট রূপে নিশ্চিত না হয়ে হত্যার সিদ্ধান্ত নিতেন না।
আনাস বিন মালেক রা. বলেন, ‘নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে কোন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাইলে একমাত্র সকাল বেলা এবং যথেষ্ট পরিমাণে অপেক্ষা করার পর অভিযান শুরু করতেন। যদি সেখানে আযান শুনতেন, তাহলে যুদ্ধ হতে বিরত হয়ে যেতেন। আর যদি আযান না শুনতেন, তাহলে তাদের উপর হামলা করতেন... ।
দ্বিতীয় দৃষ্টান্ত: যুদ্ধের প্রাক্কালে
নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবীদেরকে তাদের দাওয়াত কর্ম পরিচালনার ক্ষেত্রে ধীরতা ও স্থিরতার প্রশিক্ষণ দান করতেন। তার প্রশিক্ষণের একটি দিক যেমন, তিনি কোন বাহিনীকে অভিযানে প্রেরণ করলে দলনেতাকে এ মর্মে পরামর্শ দিতেনঃ
তুমি দুশমনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার পূর্বে তাদের নিম্নোক্ত যে কোন একটি প্রস্তাব গ্রহণ করার প্রতি আহবান করবে।
(ক) ইসলাম গ্রহণ ও হিজরতের প্রতি অথবা হিজরত ছাড়া ইসলাম গ্রহণের প্রতি। এবং তারা হবে (অধিকারের দিক দিয়ে) গ্রাম্য-বেদুইন মুসলমান সমতুল্য।
(খ) যদি তারা এতে সম্মত না হয় তাহলে জিযিয়া - কর আদায় করতে বলবে। (গ) আর এতেও অস্বীকৃতি জানালে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে যুদ্ধ শুরু করে দেবে।
তৃতীয় দৃষ্টান্ত: সালাতের ক্ষেত্রে
ধীরস্থিরতা ও তাড়াহুড়া না করার প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাললামের নিজ সাহাবাদের প্রশিক্ষণ দানের একটি উদাহরণঃ যেমন তিনি বলেন-
‘ইকামত হয়ে গেলে সালাতের জন্য তোমরা অতি দ্রুততার সাথে দৌড়িয়ে আসবে না বরং হেঁটে হেঁটে শান্ত শিষ্টভাবে আসবে। এরপর যতটুকু পাবে আদায় করবে, আর যা ছুটে যাবে পূরণ করবে।’ [সহীহ আল - বুখারী কিতাবুল জুমুআ। হাদীস নং ৯০৮ এবং সহীহ মুসলিম , কিতাবুল মাসাজিদ। হাদীস নং ৬০২]
তিনি আরো বলেন, ‘সালাতের ইকামত দেয়া হলে তোমরা আমি বের হওয়ার পূর্বে দাঁড়াবে না।’ [সহীহ মুসলিম । কিতাবুল মাসাজিদ। হাদীস নং ৬০৪]
ধীরস্থিরতার মর্যাদা ও উচ্চ মাকামের করণেই আল্লাহ তাআলা সেটি ভালোবাসেন। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবী আশজ্জ কে লক্ষ করে বলেছিলেন, ‘তোমার মাঝে এমন দুটো অভ্যাস বিদ্যমান যা আল্লাহ পছন্দ করেন: সহনশীলতা ও ধীরস্থিরতা।’
নবীরাই সাধারণত আল্লাহর সমগ্র সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ এবং অনুকরণীয় আদর্শ। ধৈর্য ও সহনশীলতার সর্বোচ্চ শিখরে তাদের বিচরণ। তাদের মধ্য হতে যিনি মর্যাদার দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেন এবং তিনি সর্বাধিক সফল মানব। তিনিই হলেন সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম । যার কোন তুলনা বা দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে আর নেই।
চতুর্থ দৃষ্টান্ত: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুদ্ধনীতি প্রসঙ্গে
আনাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শত্রুদের কোন এলাকায় প্রভাত উদ্ভাসিত হওয়ার পরই আক্রমণ করতেন। প্রথমে আযানের প্রতি কর্ণপাত করতেন, যদি ঐ এলাকা হতে আযানের আওয়াজ ভেসে উঠত, তখন আর আক্রমণ করতেন না। অন্যথায় তাদের উপর আক্রমণ চালাতেন।
একবার এক ব্যক্তিকে ‘আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর’ বলতে শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘লোকটি স্বভাবের উপর প্রতিষ্ঠিত।’ তারপর লোকটি ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ বললে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘লোকটি জাহান্নামের আজাব হতে মুক্তি পেল।’ [সহীহ মুসলিম ২৮৮,৩৮৩]
আনাস রা. হতে বর্ণিত, ‘কোন সম্প্রদায়ের সাথে যুদ্ধ করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রভাতের পূর্বে তাদের উপর কোন ধরনের আক্রমণ করতেন না এবং তিনি আযান শোনার অপেক্ষা করতেন। আযান শোনা গেলে আক্রমণ হতে বিরত থাকতেন। আর আযান না শুনলে তাদের উপর আক্রমণ চালাতেন।’ [সহীহ আল - বুখারী ৮৯,৬১০]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে, কত সতর্কতা অবলম্বন করতেন এবং শত্রুদের উপর আক্রমণে কোন প্রকার তাড়াহুড়া করতেন না, এটা তারই একটি প্রমাণ।
আব্দুলহ বিন সারজাস আল -মুযানি রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘সুন্দর বেশভুসা, [অর্থাৎ দেখতে শুনতে সুন্দর দেখুন: ফায়জুল কবীর লিল মুযানী ২৭৭/২] ধীরস্থিরতা এবং মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা নবুওয়তের পঁচিশ ভাগের এক ভাগ।’ [তিরমিযি: ১৯৫/২]
এতে প্রমাণিত হয় প্রত্যেক বিষয়ে ধীরস্থিরতা এবং গতিশীলতা উত্তম ও প্রশংসিত। তবে আখেরাতের বিষয়ে শরীয়তের মূলনীতি অনুসরণ করার শর্তে তাড়াহুড়া করা, কাজ যথাসম্ভব দ্রুত সম্পন্ন করা এবং প্রতিযোগী হওয়া অবশ্যই ভাল, প্রশংসনীয় এবং শুভ লক্ষণ। এ ধরনের প্রতিযোগী হওয়া এবং তাড়াহুড়া করাকে আল্লাহ অবশ্যই পছন্দ করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/408/14
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।