মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
‘‘প্রতিটি আত্না মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে। তবে তোমাদের যথাযথ প্রতিদান কেয়ামতের দিনই প্রদান করা হবে। যাকে জাহান্নাম হতে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সেই সফলতা অর্জন করবে। পার্থিব জীবন শুধু ধোকার সামগ্রী।’’ [সূরা আলে ইমরান : ১৮৫]
‘‘দুনিয়ায় বিদ্যমান সব কিছুই ধ্বংসশীল। একমাত্র তোমার রবের চেহারাই বদ্যমূল থাকবে। তিনি অহংবোধ সম্পন্ন, সম্মানিত।’’ [সূরা আর-রাহমান : ২৬-২৭]
সকল নবী ও রাসূলদের মধ্যমণি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহধাম ত্যাগ করে গেলেন। আয়েশা রা. এর বর্ণনা, তিনি রাসূলের সর্বশেষ বাক্যের ব্যাপারে বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাতে পানি ভর্তি একটি ছোট পাত্র ছিল, তিনি তাতে হাত চুবিয়ে মুখ মন্ডল মুছতে ছিলেন, আর বলতে ছিলেন, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মৃত্যুর রয়েছে ভীষণ কষ্ট।’ অতঃপর হাত খাড়া করে বললেন, ‘হে আল্লাহ! উত্তম বন্ধুর সান্নিধ্যই কাম্য।’ এরপর প্রাণ চলে গেলে, তার হাত ঢলে পড়ে যায়। তার সর্ব শেষ বাক্য ছিল [সহীহ আল - বুখারী ৪৪৩৭, ৪৬৩ সহীহ মুসলিম : ২৪৪৪]
اللهم في الرفيق الأعلى
‘হে আল্লাহ! উত্তম বন্ধুর সান্নিধ্যই কাম্য।’
আয়েশা রা. বলেন, ‘যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইন্তেকাল করেন, তখন আবু বকর রা. তার স্ত্রীর গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। খাজরাজ বংশীয় হারেস সন্তানদের বসতিতে। যা মদীনা হতে এক মাইল দূরে। উমার রা. দাড়িয়ে বলতে লাগলেন, ‘আল্লাহর শপথ করে বলছি, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মারা যাননি।’ আয়েশা রা. বলেন, আমার অন্তরেও তাই বদ্ধমূল ছিল। আল্লাহ অবশ্যই তাকে পুনরায় জীবন দান করবেন। তিনি তার মৃত্যুর সংবাদ রটানো লোকদের হাত পা কর্তন করে দিবেন। এমন সময় আবু বকর রা. তার ঘোড়ায় চড়ে মসজিদের নববীতে প্রবেশ করলেন। কারো সাথে কোনো কথা না বলে সরাসরি আয়েশার ঘরে ঢুকলেন। রাসূলের কাছে চলে গেলেন, তার উপর একটি ইয়ামানী দামী চাদর রাখা ছিল। আবু বকর রা. চেহারা মুবারক হতে চাদর উঠালেন, চুমু খেলেন এবং কেঁদে ফেললেন। বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা, মাতা আপনার জন্য উৎসর্গ। জীবিত, মৃত উভয় অবস্থায়ই আপনি প্রশংসিত ও সফল। আল্লাহর শপথ! আপনি আর দ্বিতীয়বার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবেন না। চিরন্তন নিয়মানুসারে একবার মৃত্যু স্বাদ গ্রহণ করে নিয়েছেন।’ অতঃপর ঘর থেকে বের হলেন। তখনও উমার রা. তার সে কথাই বলে যাচ্ছিলেন। আবু বকর রা. বললেন, ‘হে শপথ করে ভাষন দানকারী, বসে যাও!’ উমার রা. বসলেন না। আবার বললেন, ‘উমার বসে যাও!’ তিনি বসলেন না। আবু বকর রা. সালাত ও সালামের পর লোকজনকে উদ্দেশ্য করে বক্তব্য প্রদান করা শুরু করলে উমার রা. বসে পড়লেন। অন্যরাও উমারকে রেখে আবু বকরের কাছে জমায়েত হতে শুরু করল। আবু বকর রা. আল্লাহর প্রসংশা এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর সালাত পড়ে বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে মুহাম্মাদের ইবাদত করত, তাকে বলছি, মুহাম্মাদ মারা গেছেন। আর যে আল্লাহর ইবাদত করত, তাকে বলছি, আল্লাহ চিরঞ্জীব, কখনো মৃত্যু বরণ করবেন না। আল্লাহ তাআলা বলেছেন :
‘‘মুহাম্মাদ তো একজন রাসূল। তার পূর্বেও অনেক রাসূল অতীত হয়ে গেছে। যদি সে মারা যায় কিংবা নিহত হয়, তবে কি তোমরা পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে? আর যে ব্যক্তি পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে, সে আল্লাহর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। তবে আল্লাহ কৃতজ্ঞ বান্দাদের অতি সত্বর প্রতিদান দিবেন।’’ [সুরা আলে ইমরান : ১৪৪]
আল্লাহর শপথ! আবু বকরের তেলাওয়াতের আগে মনে হচ্ছিল, মানুষ এ আয়াত সম্পর্কে কিছুই জানতো না। তার মুখ হতে সবাই এ আয়াত গ্রহণ করল, সকলের মুখে মুখে এ আয়াতের গুঞ্জণ ছিল। সায়ীদ ইবেন মুসাইয়েব বলেন, ‘আবু বকরের মুখে এ আয়াত শুনে উমার রা. বললেন, আমি তো হতভম্ব হয়ে গেলাম। আমার পা শরীরের বোঝা সইতে পারছিল না, মনে হচ্ছিল মাটিতে পড়ে যাবো। আবু বকরের মুখে এ আয়াত শুনে আমার বিশ্বাস হল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যু বরণ করেছেন। মানুষের মাঝে কান্নার রোল পড়ে গেল। এ দিকে আনসারী সাহাবায়ে কেরাম রা. সাকিফা বনী সায়েদাতে সাদ বিন উবাদাকে নিয়ে জড়ো হল। তারা বলল, ‘আমাদের আনসারদের পক্ষ হতে একজন আমীর হবে এবং তোমাদের মুহাজিরদের পক্ষ হতে একজন আমীর হবে।’ আবু বকর রা. উমার রা. এবং আবু উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ রা. একত্র হয়ে সেখানে গেলেন। উমার রা. আগে কথা বলতে চাইলে আবু বকর রা. তাকে থামিয়ে দেন। উমার রা. বলেন, আমি মনে মনে এমন কতগুলো সুন্দর সুন্দর কথা সাজিয়ে ছিলাম, আমার আশংকা ছিল, আবু বকর সে রকম কথা বলতে পারবে না। অতঃপর আবু বকর রা. কথা বলতে আরম্ভ করলেন। তার বক্তব্যে মনে হচ্ছিল, তিনি আরবের সবচেয়ে সুসাহিত্যিক, সুবক্তা। আবু বকর বললেন, ‘আমাদের পক্ষ হতে আমীর হবে, আর তোমাদের পক্ষ থেকে উজীর হবে।’ হিববাব বিন মুনজির বললেন, ‘না, এটা হবে না। আমাদের মধ্যে থেকেও আমীর হবে, তোমাদের মধ্যে থেকেও আমীর হবে।’ আবু বকর রা. পুনরায় বললেন, ‘না, আমাদের মধ্য থেকে আমীর হবে, আর তোমাদের মধ্য থেকে উজীর হবে। কারণ, আরব বলতে মূলত কুরাইশগণ-ই, তাদের বংশই প্রাচীন আরব। তোমরা উমারের হাতে কিংবা আবু উবাইদার হাতে বায়আত গ্রহণ করো। উমার রা. বললেন, ‘না, বরং আমরা আপনার হাতে বায়আত গ্রহণ করব। আপনি আমাদের নেতা, আপনি আমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি এবং আপনিই ছিলেন রাসূলের নিকট সবচেয়ে বেশি প্রিয়।’ এ বলে উমার রা. তার হাত ধরে বায়আত করলেন। অতঃপর সমস্ত মানুষ তার হাতে বায়আত করল। কেউ কেউ বলল, তোমরা সাদ বিন উবাদাকে হত্যা করলে। উমার রা. বললেন, ‘আল্লাহ-ই তাকে হত্যা করেছে।’ [সহীহ আল - বুখারী ১১৪১, ১৪২, ৩/১১৩, ৩৬৬৭, ৩৬৬৮, ৭/১৯, ৪৪৫২, ৪৪৫৩,৪৪৫৪, ৮/১৪৫]
আয়েশা রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মৃত্যুর দিন আল্লাহ তাআলা উমর রা. এবং আবু বকর রা. এর খুতবার মাধ্যমে বিশাল অনুগ্রহ করেছেন। উমার রা. মানুষের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করে দিয়েছেন, যার ফলে ঘাপটি মেরে থাকা মুনাফেকদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়ে যায়। তারা ভয় পেয়ে যায়। এর পর আবু বকর রা. এর খুতবার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা সঠিক বিষয়টি প্রকাশ করে দিয়েছেন। সকলেই বলতে বলতে চলে গেল :
‘‘মুহাম্মাদ তো একজন রাসূল-ই। তার পূর্বেও অনেক রাসূল অতীত হয়ে গেছে। যদি সে মারা যায় কিংবা নিহত হয়, তবে কি তোমরা পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে। আর যে ব্যক্তি পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে, সে আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না। তবে আল্লাহ কৃতজ্ঞ বান্দাদের অতি সত্বর প্রতিদান দিবেন।’’ [সুরা আলে ইমরান : ১৪৪]
মঙ্গলবার দিন উমার রা. প্রথমে এবং পরে আবু বকর রা. ভাষণ প্রদান করেন। এর দ্বারাও মুসলিম উম্মাহ খুব উপকৃত হয়ে ছিল।
আনাস বিন মালেক রা. বলেন, বনী সাকিফাতে আবু বকরের হাতে বায়আত গ্রহণ সমাপ্তির পরের দিন আবু বকর মিম্বারে উঠে বসলেন, উমার রা. খুতবা দিতে দাড়ালেন। তিনি আবু বকরের পূর্বে খুতবা দিলেন। আল্লাহর প্রসংশা এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর দরুদ পড়লেন। অতঃপর বললেন, উপস্থিত জনগণ! আমি গতকাল একটি কথা বলে ছিলাম, যার ভিত্তি আল্লাহর কিতাবে নেই এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও আমাকে সে ব্যাপারে কোনো নিদের্শনা দেননি। তবে আমার ধারণা ছিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের বিষয়টি চুরান্ত করে আমাদের পরেই ইন্তেকাল করবেন। আল্লাহ তাআলা তোমাদের মধ্যে তার কিতাব বিদ্যমান রেখেছেন। যদি তোমরা এর অনুসরণ কর, তবে তোমরাও সঠিক পথ পাবে। যেমন এর মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও সঠিক পথ পেয়েছেন। আল্লাহ তাআলা তোমাদের নেতৃত্বের বিষয়টি তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তির উপর ন্যস্ত করেছেন। যিনি ছিলেন সাউর গুহায় রাসূলের সাথি। তোমরা তার হাতে বায়আত গ্রহণ কর। সাকিফাতে বায়আতের পর এখানে তার হাতে সকলে সাধারণভাবে বায়আত গ্রহণ করলো। অতঃপর আবু বকর রা. উঠে দাড়ালেন। তিনি আল্লাহর প্রশংসা এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর দরুদ পড়ে বললেন, ‘উপস্থিত মানবমন্ডলী! আমাকে তোমাদের নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে, অথচ আমি তোমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি নই। আমি যদি ভাল কাজ করি, তোমরা আমাকে সহযোগিতা করবে। আর যদি খারাপ কাজ করি, তোমরা আমাকে সোজা করে দেবে। সত্যবাদীতা হল আমানত, আর মিথ্যা হল খেয়ানত। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি দূর্বল, সে আমার নিকট শক্তিশালী, যতক্ষণ না আমি আল্লাহর ইচ্ছায় তার দূর্বলতা দূর করে দেব। তোমাদের মধ্যে যে শক্তিশালী সে আমার নিকট দূর্বল, যতক্ষণ না আমি আল্লাহর ইচ্ছায় তার থেকে অধিকার আদায় করে দেব। যে জাতি জিহাদ ত্যাগ করবে, আল্লাহ তাদের উপর লাঞ্ছনা চাপিয়ে দিবেন। যে জাতি অশ্লীলতার প্রসার করবে, আল্লাহ তাদের মধ্যে বিপদ-মুসীবত ব্যাপক করে দিবেন। আমি যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ এবং তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অনুসরণ করব, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আমার অনুসরণ করবে। আমি যদি আল্লাহ এবং তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাফরমানী করি, তাহলে তোমাদের দায়িত্বে আমার কোনো আনুগত্য নেই। তোমরা নামাজের জন্য প্রস্ত্ততি নাও। আল্লাহ সবার উপর রহম করুন।’ অতঃপর আবু বকর রা. এর খেলাফত চলতে থাকল।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মক্কায় নুবওয়ত প্রদান করা হয়েছে। তিনি মক্কায় তের বছর ছিলেন। তার কাছে অহী আসতো। তিনি মানব জাতিকে আল্লাহর প্রতি আহবান জানাতেন। অতঃপর মদীনায় হিজরত করেন এবং সেখানে তিনি দশ বছর জীবিত থাকেন। অতঃপর তেষট্টি বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
ইবনে কাসীর রহ. বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদের সাথে সর্বশেষ জোহরের নামাজ পড়েন, বৃহস্পতিবার। অতঃপর জুমাবার, শনিবার এবং রবিবার পূর্ণ তিন দিন সাহাবাদের থেকে অনুপস্থিত থাকেন। অবশেষে সোমবার দিন তিনি ইন্তেকাল করেন।
আমরা পূর্বে উল্লেখ করেছি, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ইন্তেকালের পর আবু বকর রা. বক্তব্য প্রদান করেন এবং লোকজন বনি সায়েদার সাকিফাতে তার হাতে বায়আত গ্রহণ করে। সোমবারের অবশিষ্ট দিন এবং মঙ্গলবারের পুরো দিন মানুষ আবু বকরের হাতে বায়আত গ্রহণে ব্যস্ত ছিল। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাফন দাফন এর ব্যবস্থা করা হয়। কাপড়ের উপরেই তাকে গোসল দেয়া হয়। সাদা তিনটি কাপড় তাকে পরিধান করানো হয়। সেখানে জামা এবং পাগড়ী দেয়া হয়নি। কেউ তার জানাজার ইমামতি করেনি। সকলেই তার উপর একা একা নামাজ পড়েছে। প্রথমে পুরুষ, অতঃপর বাচ্চারা, অতঃপর নারী, অতঃপর গোলাম এবং বাদীগণ। প্রসিদ্ধ মতানুসারে তিনি সোমবার দিন ইন্তেকাল করেন এবং বৃহস্পতিবার তাকে দাফন করা হয়। লাহাদ পদ্ধতিতে তার কবর খনন করা হয়েছে। তার পাশে ইটের গাঁথুনি দেয়া হয়েছে। আধা হাত উচু এবং উটের চুটির ন্যায় করে দেয়া হয়েছে। আয়েশা রা. এর ঘরে, মসজিদের পূর্ব পাশে এবং তার ঘরের পশ্চিম কোনায় তাকে দাফন করা হয়। ৮৬ হিজরিতে আব্দুল মালিক বিন অলীদ মসজিদ সম্প্রসারণ করেন। তখন মদীনার গর্ভনর ছিল উমার ইবনে আব্দুল আজীজ রহ.। তিনি তাকে মসজিদ সম্প্রসারণ করার নিদের্শ দেন। তিনি পূর্ব পাশসহ মসজিদ সম্প্রসারণ করেন, যার কারণে আর্য়েশা রা. এর ঘর- যার ভেতর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কবরও রয়েছে- মসজিদের মধ্যে পড়ে যায়।
এ পরিচ্ছেদের সারকথা ও শিক্ষনীয় বিষয়ঃ
নবী এবং রাসূলগণ আল্লাহর প্রিয় বান্দা, তা সত্বেও তারা মৃত্যবরণ করেছেন। কারণ, এ দুনিয়া কারো জন্য স্থায়ীত্বের স্থান নয়। দুনিয়ার সম্পদ ক্ষণস্থায়ী, তার ভোগ বিলাস ধোকার বস্ত্ত। আল্লাহর জন্য যা ব্যয় করা হয়, তা ব্যতীত কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। সব কিছুই ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বার বার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ‘রাফিকে আলার জন্য’ এর দ্বারা বুঝা যায়, নবী, রাসূল এবং নেককার লোকদের এ স্থানটি খুব মর্যাদার।
মৃতের চোখ বন্ধ করে, দাড়ি বেধে দিয়ে, লাশ ঢেকে রাখতে হয়।
মৃত ব্যক্তিদের জন্য দুআ করা। কারণ, এ দুআতে ফেরেশতাগণ আমীন বলেন। এ জন্যই আবু বকর বলেছেন, জীবিত এবং মৃত উভয় অবস্থায় আপনি তাইয়্যেব (ভাল)।
কোনো মুসলমান বিপদ-মুসীবতে পতিত হলে বলবে :##
إنا لله وإنا إليه راجعون، اللهم أجرني في مصيبتي واخلف لي خيرا منها
চোখের পানি এবং অন্তরের ব্যথা নির্গত করে কাঁদার বৈধতা।
চিল্লা-চিৎকার করা, কাপড় চোপড় ছেড়া, বুক চাপড়ানো ইত্যাদি শরীয়তের অকাট্য দলীল দ্বারা নিষিদ্ধ।
মানুষ বড় হওয়া সত্বেও তার থেকে কিছু কিছু জিনিস ছুটে যাওয়া স্বাভাবিক। কখনো ভুল হতে পারে, কখনো সে ভুলে যেতে পারে।
আবু বকর রা. এর ফজিলত, তার ইলম এবং জ্ঞানের ব্যাপকতা। তিনি খুব দৃঢ়চেতা কণ্ঠে বলেছেন, যে মুহাম্মদের ইবাদত করত, তার জানা উচিত মুহাম্মাদ মারা গেছে। যে আল্লাহর ইবাদত করে, তার জানা উচিত, আল্লাহ চিরঞ্জীব, তিনি মারা যাবেন না।
উমার রা. এর আদব, শিষ্টাচার এবং উত্তম চরিত্রের প্রমাণ। আবু বকরের খুতবার সময় তিনি বাধার সৃষ্টি করেননি। বরং অন্যান্য সাহাবাদের সাথে তিনিও বসে গেছেন খুতবা শুনতে।
বনি সাকিফাতের বিতর্ক নিরসনে উমার রা. এর প্রজ্ঞা লক্ষণীয়। তিনি সর্ব প্রথম আবু বকর রা. এর হাতে বায়আত করেন। অতঃপর অন্যান্য লোক বায়আত শুরু করে। এভাবেই বিরোধের মিমাংসা হয়ে যায়। আল্লাহ সকল প্রশংসার মালিক।
আবু বকর রা. এর ভাষা পান্ডিত্য। তিনি সাকিফাতে খুতবা দিয়েছেন। যার ব্যাপারে উমার রা. বলেছেন, সে কথা বলায় সকলের চাইতে বিশুদ্ধভাষী ছিল।
উমার রা. এর খুতবার দ্বারা মুনাফেকদের অন্তরে ভয়ের সঞ্চার হয়েছে। অতঃপর আবু বকর রা. এর খুতবার দ্বারা আল্লাহ সত্য স্পষ্ট করে দিলেন।
আবু বকর রা. এর প্রগাড় রাজনৈতিক দূর-দর্শিতা প্রকাশ পায়। তিনি বলেছেন, সত্যবাদীতা হল আমানত, মিথ্যা হল খেয়ানত। দূর্বল তার নিকট শক্তিশালী, যতক্ষণ না তিনি তার অধিকার বুঝিয়ে দিবেন। শক্তিশালী তার নিকট দূর্বল, যতক্ষণ না তার থেকে অধিকার বুঝে নিবেন। যে পর্যন্ত তিনি আল্লাহ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আনুগত্য করবেন, সে পর্যন্ত তার অনুসরণের আহবান জানিয়েছেন। আল্লাহর নাফরমানী এবং তার অবাধ্যতায় কোনো অনুসরণ করা যাবে না।
উমার রা. এর প্রজ্ঞা এবং তার আত্মিক ও বুৎপত্তিগত সাহস। তিনি আবু বকর রা. এর পূর্বে ভাষণ দিয়েছেন এবং তার গতকালের কথা প্রত্যাহার করেছেন, ভুল স্বীকার করেছেন। আবু বকর রা. এর অবস্থানকে মজবুত করেছেন। আরো বলেছেন, আবু বকর রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একান্ত বন্ধু। সাউর গুহায় রাসূলুল্লার সঙ্গী ছিলেন।
কাফনের জন্য সাদা কাপড় মুস্তাহাব। তিন কাপড়ে কাফন দেয়া মুস্তাহাব, যাতে পাগড়ি কিংবা জামা থাকবে না। লাহাদ পদ্ধতি কবর খনন করা, তার উপর ইট বিছিয়ে দেয়া এবং উটের চুটির মত করে আধা হাতের ন্যায় উচু করা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/408/32
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।