মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়াতীম হিসাবে জন্ম গ্রহণ করেছেন। আল্লাহ তাআলা তাকে আশ্রয় দিলেন। তিনি ছিলেন নিঃস্ব। মহান আল্লাহ তাকে অভাবমুক্ত করলেন। তার পিতা আব্দুল্লাহ যখন ইন্তেকাল করলেন তখন তিনি তার মায়ের গর্ভে। আবু লাহাবের দাসী সুআইবা শুরুতে তাকে কয়েকদিন দুধ পান করিয়েছেন। [সহীহ আল - বুখারী- ১২৪/৯] এরপর হালীমা সাদীয়া তাকে দুধ পান করান। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সময় প্রায় চার বছর বনু সাআদ গোত্রে কাটিয়েছেন। তখন তার বক্ষ বিদারণ করা হয়। সাহাবী আনাস রা. থেকে বর্ণিত, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুদের সাথে খেলছিলেন। তখন জিবরীল এসে তাকে নিয়ে যান। তার হৃদপিন্ড বের করে সেখান থেকে একটি রক্তের চাকা ফেলে দেন। এ সময় জিবরীল বলেন, ‘এটি হল শয়তানের অংশ।’ হৃৎপিন্ড বের করে তা একটি স্বর্ণের তশতরিতে ধৌত করলেন। [সহীহ আল বুখারী-৪৬০/১] ধৌত করলেন যমযমের পানি দিয়ে। এরপর তা যথাস্থানে স্থাপন করলেন ও তাকে তার জায়গায় রেখে দিলেন। অপরদিকে তার সাথিরা দৌড়ে এসে মা হালীমাকে খবর দিল যে, মুহাম্মাদকে হত্যা করা হয়েছে। সকলে তার দিকে ছুটে গেল। তারা তাকে গায়ের রং পরিবর্তিত অবস্থায় পেল। [শরহু সহীহ মুসলিম : নববী]
আনাস রা. বলেন আমি তার বুকে সেলাইয়ের চিহ্ন দেখেছি। এ ভয়াবহ ঘটনার পর হালীমা ভয় পেয়ে গেলেন। তিনি তাকে তার মাতা আমেনা বিনতে ওহাবের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে গেলেন।
মা আমেনা তাকে নিয়ে মদীনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। উদ্দেশ্য সন্তানকে তার মামাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া। মদীনার কাজ শেষে তিনি মক্কাভিমুখে রওয়ানা হলেন। পথিমধ্যে আবওয়া নামক স্থানে তিনি ইন্তেকাল করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বয়স মাত্র ছয় বছর তিন মাস দশ দিন। [আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া]
মায়ের ইন্তেকালের পর তার দায়িত্ব নেন দাদা আব্দুল মুত্তালিব। তার বয়স যখন আট বছর তখন দাদা আব্দুল মুত্তালিব ইন্তেকাল করলেন। মৃত্যুকালে তিনি আবু তালেবকে অসীয়ত করে গেলেন তার লালন পালনের দায়িত্ব নিতে। আবু তালেব ছিলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিতা আব্দুল্লাহর সহোদর ভাই।
আবু তালেব শিরকে লিপ্ত থাকা সত্তেবও আজীবন মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদর-যত্নে, স্নেহ-মমতায় আগলে রেখে লালন পালন করে গেলেন। মৃত্যু পর্যন্ত আল্লাহর রাসূলের ভাল বাসায় তিনি ছিলেন অটল, অবিচল। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শাফাআতে তার শাস্তি হালকা করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘সে (আবু তালেব ) এখন অগ্নির কিনারায় রয়েছে। আমি যদি না থাকতাম তাহলে তার অবস্থান হত জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্থানে।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘কেয়ামতের দিন আমার শাফাআত তার কাজে লাগবে। তারপরেও তাকে রাখা হবে অগ্নির কিনারায়। অগ্নি তার পায়ের গোড়ালি স্পর্শ করবে। এর ফলে তার মগজ ফুটতে থাকবে।’ [সহীহ আল - বুখারী ৩৮৮৩, ৩৮৮৪, ৩৮৮৫, সহীহ মুসলিম ২০৯]
তিনি তার চাচা আবু তালেবের সাথে বাণিজ্যের উদ্দেশে সিরিয়া সফর করেন। তার বয়স তখন বারো বছর। নিঃসন্দেহে এটা তার প্রতি আবু তালেবের মমতার বহিঃপ্রকাশ। তিনি মনে করেছিলেন, তাকে যদি মক্কায় রেখে যাই তাহলে কে তাকে আদর-যত্ন করবে। এ সফরে আবু তালেব ও তার সঙ্গীরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে অনেক অলৌকিক বিষয় প্রত্যক্ষ করেছে। এ কারণে তার প্রতি আবু তালেবের আদর-যত্ন আরো বেড়ে যায়।
আবু মূছা আল-আশআরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু তালেব তাকে নিয়ে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে বের হলেন। তাদের কাফেলায় ছিল কুরাইশদের কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি। যখন তারা খ্রিস্ট ধর্মের এক যাজকের কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন তখন সে নিজেই কাফেলার কাছে এলেন। তবে ইতিপূর্বে তিনি এভাবে কখনো কোন কাফেলার কাছে আসেননি। কোন কাফেলার প্রতি নজর দিয়ে দেখেননি। তাকে দেখে গোটা কাফেলা দাঁড়িয়ে গেল। তিনি সকলকে দেখতে লাগলেন। যখন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখলেন, তখন তার হাত ধরলেন। বললেন, এ তো সকল বিশ্ববাসীর নেতা, জগৎসমূহের প্রতিপালকের রাসূল। আল্লাহ তাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছেন। কুরাইশের প্রবীণ লোকগুলো বলল, ‘আপনি তা জানলেন কীভাবে?’ তিনি বললেন, ‘তোমরা যখন পর্বতের ঘাঁটিগুলো অতিক্রম করেছিলে আমি দেখতে পেলাম, প্রতিটি গাছ ও পাথর তাকে সেজদা করছে। আর এরা কোন নবী ব্যতীত অন্য কাউকে সেজদা করে না। আমি তার পৃষ্ঠদেশে নবু্ওয়তে সীল দেখে চিনতে পেরেছি। যা দেখতে আপেলের মত . . . . ।’ (আল-হাদীস)
এ বর্ণনায় আরো এসেছে, সফরকালে মেঘ তাকে ছায়া দিত। আর বৃক্ষসমূহ তাকে ছায়া দিতে ঝুঁকে পড়ত।
খ্রিস্টান এ ধর্ম যাজক আবু তালেবকে বললেন, ‘মক্কায় ফিরে যাওয়ার পথে ইহুদীরা যেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখে না ফেলে, কেননা ইহুদীরা দেখলে তার ক্ষতি করবে।’ তাই আবু তালেব তাকে মক্কাতে ফেরত পাঠিয়ে দিলেন। এরপর খাদিজা বিনতে খুআইলিদ নিজ কর্মচারী মাইসারার সাথে তার ব্যবসা পরিচালনার জন্য তাকে সিরিয়ায় পাঠালেন। এ ব্যবসায় খাদিজা খুবই লাভবান হলেন। মাইসারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে যা কিছু দেখেছে তার সবই খাদিজাকে খুলে বলল। খাদিজা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বিয়ে করতে আগ্রহ প্রকাশ করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিয়ে করলেন। তখন তার বয়স ছিল পঁচিশ বছর। আর খাদিজার বয়স চল্লিশ । [যাদুল মাআদ]
আল্লাহ রাববুল আলামীন শৈশব থেকেই তাকে সকল প্রকার জাহেলী অপবিত্রতা থেকে মুক্ত রেখেছেন। তিনি কখনো কোন প্রতিমাকে সম্মান দেখাননি। কাফেরদের কোন উৎসবে উপস্থিত হননি। উপস্থিত হতে বললেও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। আললাহই তাকে রক্ষা করেছেন। তিনি কখনো মদ্য-পান করেননি। কখনো কোন অশ্লীল কাজ করেননি। কখনো আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করেননি। কোন অসার মজলিসে অংশ গ্রহণ করেননি। তার সম্প্রদায়ের মানুষেরা যে সকল অন্যায় ও অপকর্ম করতো, তিনি তা থেকে সর্বদা দূরে থাকতেন। তিনি এমন সমাজে লালিত পালিত হয়েছিলেন যেখানে পাপাচার, অন্যায় অপকর্ম আর অশ্লীলতার ছিল ছড়াছড়ি। কোন অপকর্মটি ছিল না সে সমাজে? আল্লাহর সাথে শিরক, আললাহকে বাদ দিয়ে অন্যের কাছে প্রার্থনা, অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা, জুলুম-অত্যাচার, জুয়া, মদ্য-পান, ডাকাতি, পতিতাবৃত্তি, গণব্যভিচার, ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যভিচার, জোর-জবরদস্তি করে বিবাহ, রক্তপাত, মানহানী, অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস সবই ছিল সে সমাজে। ইসলাম-পূর্ব এ সমাজে এগুলো চলতো অবাধে। কেহ এসবের বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ করত না। কোন দল এর বিরুদ্ধে লড়াই করত না। এর সাথে সাথে তারা দারিদ্রতার ভয়ে কন্যা সন্তানদের জীবিত কবর দিত। কন্যা সন্তানকে তারা নিজেদের জন্য লজ্জা ও অপমানের বিষয় মনে করত। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সকল বিষয়ে কখনো কোনভাবে জড়িত হননি। তার প্রভু তাকে শিষ্টা-চার শিক্ষা দিয়েছেন, তার শিষ্টা-চার উত্তম হয়েছে। তার সম্প্রদায় তাকে ভালভাবে চিনত বলেই তাকে উপাধি দিয়েছিল ‘আল-আমীন’ বা সত্যবাদী।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বয়স যখন পঁয়ত্রিশ বছর, তখন কুরাইশগন কাবা শরীফ পুনর্নিমাণে হাত দিল। যখন হাজারে আসওয়াদ যথাস্থানে স্থাপনের সময় আসল, তখন তাদের মধ্যে বিবাদ দেখা দিল। কোন গোত্রের লোকেরা এটি যথাস্থানে স্থাপন করার সৌভাগ্য ও কৃতিত্ব অর্জন করবে তা-ই ছিল বিবাদের মূল কারণ। এ নিয়ে গৃহযুদ্ধ বাধার মত অবস্থা সৃষ্টি হল। তারা সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিল; যে ভোর বেলায় সেখানে প্রথম প্রবেশ করবে সে এ বিষয়ে ফয়সালা দেবে। দেখা গেল ভোর বেলায় সবচেয়ে প্রথমে যিনি আসলেন তিনি হলেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সকলে খুশি হল। বলে উঠল, ‘এসেছে আল-আমীন।’ তাকে সকলেই বিচারক হিসাবে মেনে নিল। তিনি একটি চাদর বিছিয়ে হাজরে আসওয়াদ সেখানে রেখে বললেন, ‘প্রত্যেক গোত্রের একজন করে চাদরের কিনারা ধরে হাজরে আসওয়াদ বহন করে যথাস্থানে নিয়ে যাবে।’ সকলে তাই করল। এরপর তিনি নিজ হাতে পাথরটি উঠিয়ে যথাস্থানে রাখলেন। বিবাদ মিটে গেল। সকলেই খুশি হল।
এরপর আল্লাহ তার কাছে নির্জনতা অবলম্বন প্রিয় করে দিলেন। তিনি আল্লাহর ইবাদতের জন্য মানুষদের থেকে অনেক দূরে চলে যেতেন। হেরা পর্বতের এক গুহায় যেয়ে তিনি ইবরাহীমি ধর্ম অনুসারে ইবাদত-বন্দেগী করতে লাগলেন। এমনি করে যখন তার বয়স চল্লিশ বছরে পৌঁছল তখন তাকে আল্লাহ নবুওয়ত দানে ধন্য করলেন। এতে কারো দ্বিমত নেই যে, সোমবার দিন তাকে নবুওয়ত দেয়া হয়েছিল। অধিকাংশের মতে মাসটি ছিল হস্তী বর্ষের একচল্লিশ সনের রবিউল আউয়াল মাস। [যাদুল মাআদ]
জিবরীল ফেরেশতা হেরা গুহায় আসলেন। তিনি তাকে বললেন, ‘পাঠ কর!’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমি পড়তে জানি না।’ তিনি আবার বললেন, ‘পাঠ কর!’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমি পড়তে জানি না।’ এরপর জিবরীল তাকে আলিঙ্গন করলেন। তিনি কষ্ট অনুভব করলেন। তিনি আবার তাকে বললেন, ‘পাঠ কর!’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘আমি পড়তে জানি না।’ তিনি বললেন,
‘‘পড়! তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে এক রক্তপিন্ড থেকে। পড় মহান প্রভুর নামে, যিনি শিক্ষা দিয়েছেন কলম দিয়ে। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জান তো না।’’ [সূরা আল-আলাক- ১-৫]
এ সূরার মাধ্যমেই তিনি নবী হিসেবে দায়িত্ব পেলেন।
তিনি এ ঘটনার পর খাদিজার কাছে গেলেন। তিনি ভীষণ ভয় পেলেন। খাদিজাকে বললেন ‘আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও! আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও!’ তাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দেয়া হল। তার ভয় যখন কিছুটা কেটে গেল তখন খাদিজাকে সকল ঘটনা শুনালেন। খাদিজা ঘটনা শুনে বললেন, ‘আল্লাহ আপনাকে কখনো অসম্মান করবেন না। আপনিতো আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখেন। অসহায়কে সাহায্য করেন। সম্বলহীনকে দান করেন। অতিথিকে মেহমানদারী করেন। সত্য ও ন্যায়ের পথে সহযোগিতা করেন।’ [সহীহ আল - বুখারী -৩, সহীহ মুসলিম ১৬০]
এরপর আল্লাহ রাববুল আলামীন সূরা আল-মুদ্দাসি্সর নাযিল করার মাধ্যমে তাকে রাসূল হিসাবে দায়িত্ব দিলেন। আল্লাহ বললেন,
‘‘হে কম্বল আবৃতকারী! উঠে দাঁড়াও। সতর্ক কর। তোমার প্রতিপালকের মহত্ত্ব ঘোষণা কর। আর তোমার পোশাক পবিত্র কর এবং অপবিত্রতা বর্জন কর।’’ [সূরা আল-মুদ্দাসসির : ১-৫]
এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে ওহী আসতে শুরু করল। এ সূরা নাযিল হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গোপনে দাওয়াত দিতে শুরু করলেন। অগ্রবর্তীগণ তার হাতে ইসলাম গ্রহণ করতে শুরু করলেন। যিনি প্রথম ইসলাম গ্রহণ করলেন তিনি হলেন খাদিজা রা., তারপরে ইসলাম গ্রহণ করেন যায়েদ বিন হারেসা, এরপর আবু বকর রা. অতঃপর এক জনের পর একজন করে মক্কার অনেকে ইসলাম গ্রহণ করলেন। এরপর আল্লাহ তাআলা প্রকাশ্যে দাওয়াত দিতে আদেশ করলেন। তিনি বললেন :
‘‘তোমার নিকট আত্নীয়বর্গকে সতর্ক কর। এবং যারা তোমার অনুসরণ করে সে সকল মু’মিনদের প্রতি বিনয়ী হও। তারা যদি তোমার অবাধ্য হয় তবে তুমি বলো, তোমরা যা কর তা থেকে আমি মুক্ত।’’ [সূরা আশ-শুআরা : ২১৪-২১৬]
তিনি তাদের আল্লাহর দিকে দাওয়াত দিলেন। সাফা পাহাড়ের চূড়ায় উঠে গোত্রের নাম ধরে ধরে সকলকে একত্রিত করলেন। যখন সকলে জমায়েত হল, তিনি প্রশ্ন করলেন, ‘আমি যদি বলি যে এ উপত্যকার পিছনে একটি বাহিনী আছে যা তোমাদের উপর হামলা করবে, তাহলে তোমরা কি আমার কথা বিশ্বাস করবে?’
সকলে উত্তর দিল, ‘হ্যাঁ, কারণ আমরা তোমাকে কখনো মিথ্যা বলতে দেখিনি।’
তিনি বললেন, ‘আমি তোমাদের একটি কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করছি।’ [সহীহ আল - বুখারী ৪৯৭১, সহীহ মুসলিম ১৯৪]
কুরাইশ নেতারা তার দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করল। তারা ক্রোধে অগ্নিশর্মা হল। কিন্তু তারা কেহ তাকে মিথ্যা বলার অপবাদ দিতে পারল না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
‘‘তারা তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছে না, বরং এ যালিমরা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করছে।’’ [সূরা আশ-শুআরা :৩৩]
তারা তাকে এমন কোন গালি দেয়নি যাতে বুঝে আসে তিনি বিগত চল্লিশ বছরে খারাপ ছিলেন। এক আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়ায় তারা তাকে ‘পাগল’ বলেছে, ‘জাদুকর’ বলেছে, ‘কবি’ বলেছে। সকলে জানে এগুলো এমন বিশেষণ যা স্বভাবগত নয় বা চরিত্রের অংশ নয়। তার দাওয়াতের কারণে ছেলে-পিতা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ দেখা দিয়েছে।
তিনি বিভিন্ন মৌসুম বা পর্বকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে দাওয়াতি কর্মসূচী চালিয়েছেন। বাজারে দাওয়াত দিয়েছেন। তায়েফে গিয়েছেন দাওয়াত দিতে। তায়েফ থেকে ফেরার পথে জিনদের একটি দল তার হাতে ইসলাম গ্রহণ করেছে। দাওয়াত দিতে যেয়ে তিনি নির্যাতন-নিপীড়ন, দুঃখ-কষ্ট বরদাশত করেছেন। ধৈর্য ধারণ করেছেন। এরপর আল্লাহ তাকে বাইতুল মুকাদ্দাস ভ্রমণ করিয়েছেন। মিরাজে নিয়েছেন। মিরাজ গমনের পূর্বে জিবরীল এসে তার বক্ষ বিদারণ করেছেন। যমযমের পানি দিয়ে ধৌত করেছেন। হাফেজ ইবনে হাজর বলেন, ‘জীবনে তিনবার তার বক্ষ বিদারণ করা হয়েছে। প্রথমবার ছোট বয়সে, দ্বিতীয়বার নবুওয়তের সময়, তৃতীয়বার ইসরা ও মিরাজে গমনের প্রাককালে।’ [ফতহুল বারী]
মিরাজে তিনি সপ্তম আকাশে গমন করেন। সেখানে নামাজ ফরজ করা হয়। নবীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি দু’ রাকাআত নামাজও আদায় করেছেন। সকাল হওয়ার পূর্বেই তিনি মক্কায় ফিরে আসেন। তিনি তাওহীদের দাওয়াত অব্যাহত রাখেন। হিজরতে পূর্বে মক্কায় তিনি তিন বছরকাল নামাজ আদায় করেন। যখন কুরাইশদের যুলুম-নির্যাতন বেড়ে যায়, এবং আল্লাহর একত্ববাদ-কেন্দ্রিক তেরো বছরের দাওয়াতী জীবন শেষ হয়, তখন তিনি মদীনায় হিজরত করে যাওয়ার অনুমতি পান। মদীনা-জীবনের দশ বছর সময়কালে তার কাছে ইসলামী শরীয়তের অন্যান্য বিধি-বিধান অবতীর্ণ হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/408/4
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।