hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

দয়া ও ভালোবাসার অনন্য বিশ্ব নবী

লেখকঃ আবু আব্দুর রাহমান

৩০
আঠাশতম পরিচ্ছেদ: মহান বন্ধুর সান্নিধ্য প্রত্যাশা
আয়েশা রা. বলেন, আমি শুনতাম, কোনো নবীকে আল্লাহ তাআলা দুনিয়া এবং আখেরাতের মাঝে কোনটা বেছে নিবে এটার স্বাধীনতা দেয়ার আগ পর্যন্ত মৃত্যু দেন না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যখন রোগের তীব্রতা বেড়ে গেল, তখন তিনি বলতে ছিলেন,

مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِينَ وَحَسُنَ أُولَئِكَ رَفِيقًا

‘‘যে সকল নবী, সিদ্দীক, শহীদ এবং নেককার লোকদের উপর আল্লাহ তাআলা অনুগ্রহ করেছেন, তাদের সঙ্গ, তারাই উত্তম বন্ধু।’’ আয়েশা রা. বলেন, তখনই আমার ধারণা হল, তাকে দুনিয়া এবং আখেরাতের একটি বেছে নেয়ার নির্দেশ এসে গেছে। [সহীহ আল - বুখারী ৪৪৩৬, ৪৪৩৭, ৪৪৬৩, ৪৫৮৬,৬৩৪৮, ৬৫০৯ সহীহ মুসলিম ২৪৪৪]

একটি বর্ণনায় আছে, আয়েশা রা. বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থ অবস্থায় বলতেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতের ঠিকানা দর্শন করিয়ে, দুনিয়া এবং আখেরাতের মাঝে একটি বেছে নেয়ার নির্দেশ না দেয়া হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো নবীর জান কবজ করা হয় না।’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থ হলেন, তার মাথা আমার রানের উপর, কিছুক্ষণ বেহুশ হয়ে থেকে পুনরায় হুশ ফিরে পেলেন। ছাদের দিকে তার মাথা তুলে বললেন, ‘হে আললাহ! সবচেয়ে মহান বন্ধুর সান্নিধ্য কাম্য।’ আমি ধারণা করলাম, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আর আমাদের দিকে আর খেয়াল দিবেন না। আমার বুঝতে বাকি রইল না যে, এটা হল তার সুস্থ অবস্থার বাণীর প্রতিফলন। তিনি সর্বশেষে বলেন, ‘আল্লাহ ! সবেচেয় মহান বন্ধুর সান্নিধ্য কাম্য।’ আয়েশা রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার গায়ে হেলান দেয়া অবস্থায় বলতে শুনেছি,

اللهم اغفر لي وارحمني، وألحقني بالرفيق الأعلى .

‘হে আললাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা করো! আমার উপর রহম করো! উত্তম বন্ধুর সাথে আমাকে মিলিত করো।’ [সহীহ আল - বুখারী ৪৪৪০, ৫৬৬৪]

তিনি আল্লাহর নৈকট্য, সান্নিধ্য, তার নিকট রক্ষিত নেআমত এবং তার পছন্দের বস্ত্তগুলো খুব পছন্দ করতেন। যেমন একটি মেসওয়াক, এটি যেমন মুখ পরিস্কার রাখে তেমনি আল্লাহর সন্তুষ্টিরও কারণ। আয়েশা রা. বলেন, আমার উপর আল্লাহর বড় একটি নেআমত হচ্ছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে, আমার বাড়িতে এবং আমার গলা ও বক্ষের মাঝে মাথা রেখে ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে আল্লাহ তাআলা তার মুখের লালা আর আমার মুখের লালা একত্র করেছেন। ঘটনাটির বিবরণ: আব্দুর রহমান ইবনে আবু বকর রা. হাতে মেসওয়াক নিয়ে আমার ঘরে প্রবেশ করে। তখন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার বুকের সাথে হেলান দিয়ে রেখেছি। আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখলাম, তিনি বার বার আব্দুর রহমানের হাতে রাখা মেসওয়াকের দিকে তাকাচ্ছেন। আমি বুঝলাম, তিনি মেসওয়াকটি পছন্দ করছেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘আপনার জন্য মেসওয়াকটি চাবো?’ তিনি মাথার ইশারায় বললেন, ‘হ্যাঁ।’ আমি মেসওয়াকটি নিয়ে তাকে দিলাম। মেসওয়াক করা তার জন্য দুস্কর হয়ে গেল। আমি বললাম, ‘নরম করে দেই?’ ‘তিনি মাথার ইশারায় অনুমতি দিলেন। আমি নরম করে দিলাম, তিনি এর দ্বারা খুব সুন্দর করে মেসওয়াক করলেন। যেভাবে কখনো করতে দেখিনি। তার হাতে একটি ছোট পাত্রে পানি রাখা ছিল, তিনি হাত দিয়ে পানি তুলে মুখমন্ডল মাছেহ করতে ছিলেন আর বলতে ছিলেন,

لا إله إلا الله إن للموت سكرات .

‘আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, নিশ্চয় মৃত্যুর কষ্ট আছে।’

অতঃপর হাত খাড়া করে বললেন,

اللهم في الرفيق الأعلى .

‘হে আল্লাহ! সবচেয়ে মহান বন্ধুর সান্নিধ্য কাম্য।’

এরপরই তার ইন্তেকাল হল, হাত দু’টি মাটিতে পরে গেল। [সহীহ আল - বুখারী ৮৯০, সহীহ মুসলিম : ২৪৪৪]

আয়েশা রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার গলা ও বুকের মাঝে ইন্তেকাল করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের পর আমি আর কারো মৃত্যু কষ্টকে অপছন্দ করি না।

এ পরিচ্ছেদের সারকথা ও শিক্ষনীয় বিষয়ঃ

সর্বোত্তম বন্ধু হলেন তারা, আল্লাহ তাআলার এ বাণীতে যাদের উল্লেখ করা হয়েছে :

وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَالرَّسُولَ فَأُولَئِكَ مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِينَ وَحَسُنَ أُولَئِكَ رَفِيقًا ﴿النساء :69﴾

‘‘যারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের অনুসরণ করবে, তারা আল্লাহর নেআমত প্রাপ্ত নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও নেককার লোকদের সাথে থাকবে। তারাই উত্তম বন্ধু।’’ [সুরা আন-নিসা : ৬৯] উলামায়ে কেরাম বলেছেন, যারা সর্বোচ্চ স্থানে বসবাস করেন, সে সকল নবী ও রাসূলগণই হচ্ছেন সর্বোত্তম বন্ধু। [ফাতহুল বারি : ৮/১৩৮ ইমাম নববীর ব্যাখা গ্রন্থ : ১৫/২১৯]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তাআলার মহববত এবং উত্তম বন্ধুদের মহববতে আখেরাতকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাত প্রত্যাশা করে, আল্লাহর তার সাক্ষাত প্রত্যাশা করেন।’ [সহীহ আল - বুখারী ৬৫০৭, সহীহ মুসলিম : ২৬৮৩]

আয়েশা রা. এর ফজিলত, তার থেকে আমরা অনেক জ্ঞান অর্জন করেছি। তিনি মৃত্যু মুহূর্তেও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গলা এবং বুকের মাঝে রেখে সেবা প্রদান করেছেন। তিনি এটা আল্লাহর নেআমত মনে করতেন এবং খুব গর্ব করে এর আলোচনা করেতন।

মেসওয়াকের ব্যাপারে রাসূলের গুরুত্বারোপ: মুমুর্ষ অবস্থায়ও তিনি মেসওয়াক করেছেন। কারণ, মেসওয়াক যেমন মুখ পরিস্কার করে, তেমন এর দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টিও অর্জিত হয়।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু যন্ত্রণাতেও ‘লা ইলাহা ইল্লাললাহ, মৃত্যুর ভীষণ কষ্ট।’ উচ্চারণ করেছেন। এর দ্বারা প্রতীয়মান যে, মৃত্যুমুখে পতিত হলে বেশি বেশি এ কালেমাটি পড়া মুস্তাহাব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যার শেষ বাক্য হবে, লা ইলাহা ইল্লাললাহ, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অন্যান্য নবীদের সঙ্গ গ্রহণের অধির আগ্রহ পোষণ করতেন এবং এর জন্য তিনি দুআ করেছেন। যার দ্বারা বুঝে আসে যে, প্রত্যেক মুসলমানের উচিত জান্নাতে নবীদের সঙ্গ পাওয়ার জন্য দুআ করা এবং এর জন্য আগ্রহ রাখা। আললাহ! তোমার রহমতে আমাদের সকলকে তাদের সাথে মিলিত করো।

মৃত্যু কষ্ট ও তার অসহ্য যন্ত্রনা। অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অগ্র পশ্চাতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়েছিল। তা সত্বেও তিনি মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ ভোগ করেছেন। এ দিকটি বিবেচনায় আমাদের অবস্থা একটু ভেবে দেখা দরকার।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন