মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সপ্তম পরিচ্ছেদ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উত্তম চরিত্র
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/408/9
প্রথমতঃ যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্দর চরিত্র দেখে বিমুগ্ধ হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে তাদের সংখ্যা অগণিত। সেই চরিত্র তার বদান্যতা হোক বা দান হোক অথবা তার ক্ষমা মার্জনা, ধীরতা-সহনশীলতা হোক, কিংবা তা নম্রতা- ধৈর্যশীলতা বা তার ন্যায়পরায়ণতা- বিনয় হোক, বা তার দয়া- দান অথবা শক্তি - বীরত্ব হোক।
অনেক ক্ষেত্রে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুন্দর চরিত্রের প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছেন। নিম্নে তার বর্ণনা করা গেল।
(১) মুসলমানের জীবনে সুন্দর চরিত্রের বিষয়টি ব্যাপক, বিশেষ করে আল্লাহর দিকে আহবান কারীদের জীবনে গুরুত্ববহ। কারণ এটা হল ঈমানের সাথে সম্পর্কিত বিষয়ের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুমিনদের মধ্যে যার ঈমান যতটা পরিপূর্ণ সে ততটা সুন্দর চরিত্রের অধিকারী।’ [তিরিমিজী ৪৭৭/৩, আবু দাউদ ২২০/৪]
(২) সুন্দর চরিত্র সকল সমাজের জন্য একটি আবশ্যকীয় বিষয় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যা আল্লাহর দিকে আহবানকারী সকলের মধ্যে থাকা আবশ্যক।
কেননা যে এ সকল চারিত্রিক গুণাবলির অধিকারী হবে সে কেয়ামত দিবসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সবচেয়ে প্রিয় ও সবচেয়ে বেশি নিকটে থাকবে।
তিনি বলেছেন, ‘নিশ্চয় সেই ব্যক্তিই আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয় ও কেয়ামতের দিন সবচেয়ে বেশি আমার নিকটে বসবে যার চরিত্র তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুন্দর।’ [তিরমিজী ৩৭০/৪]
কবি যথার্থই বলেছেন :
জাতি সমূহ তত দিন টিকে থাকবে
যতদিন তাদের চরিত্র ঠিক থাকবে।
আর যদি তাদের চরিত্র সমূহ নষ্ট হয়ে
যায় তাহলে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে।
৪। সুন্দর চরিত্র সবচেয়ে বড় ইবাদত, সবচেয়ে বড় দান এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের বড় সহায়ক। উত্তম চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া মানুষের প্রধানতম কর্তব্য। বিশেষ করে যারা মানুষকে এর দিকে দাওয়াত দেবে তাদের জন্য তো অবশ্যই। এজন্যই তিনি বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন মুমিনের পাললায় সবচেয়ে বেশি ভারী হবে সুন্দর চরিত্র।’ [আবু দাউদ ২৫৩/৪] তিনি আরো বলেছেন, ‘নিশ্চয় মুমিন ব্যক্তি সুন্দর চরিত্রের কারণে অব্যাহত সিয়াম পালনকারী ও সালাত আদায়কারীর সওয়াব লাভ করবে।’ [আবু দাউদ ২৫২/৪]
আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘চারটি বিষয় যখন তোমার মধ্যে থাকবে তখন দুনিয়ার প্রাচুর্য তোমার থেকে ছুটে গেলে তোমার কোন অনুতাপ করা উচিত নয় : আমানত রক্ষা করা, সত্য কথা বলা, সৎ চরিত্র ও লোভ-লালসা মুক্ত হওয়া।’ [আহমাদ ১৭৭/২]
এই গুণাবলির মাধ্যমে একজন মুসলিম সমস্ত মঙ্গল ও বরকতের অধিকারী হতে পারে। তিনি আরো বলেছেন, ‘পুণ্য হল উত্তম চরিত্র।’ [সহীহ মুসলিম ১৯৮০/৪]
৫। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকল মুসলমানদের সুন্দর চরিত্রের অর্জন করার জন্য নির্দেশ দিয়ে গেছেন। বিশেষ করে দাওয়াত-কর্মীদের। তিনি মুআয বিন জাবাল রা. কে ইয়েমেনের গভর্নর, বিচারক ও ইসলামের দিকে আহবানকারী হিসেবে পাঠানোর সময় সৎ-চরিত্র অবলম্বনের জোরালো আদেশ করে বলেছেন, ‘মানুষের সাথে সুন্দর ব্যবহার কর।’ [তিরমিজী ৩৫৫/৪]
৬। সুন্দর চরিত্র একটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা আল্লাহ তাআলা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ ব্যাপারে আদেশ করেছেন এবং এর জন্য তার প্রশংসা করেছেন।
‘‘তুমি ক্ষমা করে যাও এবং সৎ কাজের আদেশ কর এবং মূর্খদের থেকে ফিরে থাক।’’ [সূরা আল-আরাফ ১৯৯]
আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন:
وَإِنَّكَ لَعَلى خُلُقٍ عَظِيمٍ
‘আপনি সুমহান চরিত্রের উপর অধিষ্ঠিত।’ [সূরা আল-কলম ৪]
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি প্রেরিত হয়েছি মানুষের উত্তম চরিত্রগুলো পরিপূর্ণ করার জন্য।’ [বাইহাকী ১৯২/১০]
আয়েশা রা. কে জিজ্ঞাসা করা হল রাসূলের চরিত্র সম্পকে,র্ তিনি উত্তর দিলেন, ‘নিশ্চয় তোমাদের নবীর চরিত্র সম্পূর্ণ কুরআন।’ [সহীহ মুসলিম ৫১৩/১]
৭। সুন্দর চরিত্র ইসলামের দিকে, হেদায়াতের দিকে মানুষকে আকর্ষণ করার সবচেয়ে বড় মাধ্যম। এজন্য রাসূলের চরিত্রে অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে যে, তিনি সর্বাবস্থায় বিশেষ করে আল্লাহর দিকে আহবান করার ক্ষেত্রে সুন্দর চরিত্রের সাথে নিজেকে উপস্থাপন করতেন। ফলে মানুষ সামনের দিকে আসতে লাগল এবং আল্লাহ তাআলার দয়ায় ও নবীর সুন্দর চরিত্রের কারণে মানুষ দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করতে লাগল।
এবং কত মানুষ যে তার সুন্দর চরিত্রের কারণে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে তার হিসাব নাই।
যেমন একজন বলেছিলেন যে, তোমার চেহারা অপেক্ষা আমার কাছে পৃথিবীতে আর কারো চেহারা এত ঘৃণ্য ছিল না, এখন তোমার চেহারা আমার নিকট সবচেয়ে বেশি প্রিয় হয়ে গেছে। [সহীহ আল - বুখারী ৮৭/৭, সহীহ মুসলিম ১৩৮৬/৩]
অন্য একজন বলেছিল ‘হে আল্লাহ তুমি আমাকে ও মুহাম্মাদকে দয়া কর, আমাদের সাথে আর কাউকে দয়া কর না।’ [সহীহ আল - বুখারী ৪৩৮/১০]
এ ব্যক্তি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ক্ষমায় এতটা প্রভাবিত হয়েছে যে, সে আল্লাহর রহমত যা সকলের জন্য উন্মুক্ত তাকে নিজের জন্য ও রাসূলের জন্য সীমিত করে দিয়েছে তার প্রার্থনায়। এরপরও রাসূল তাকে কোন কটু কথা বললেন না।
অন্য আরেকজন বলেছিল, ‘আমার পিতা- মাতার শপথ! তার পূর্বে ও তার পরে তার চেয়ে উত্তম কোন শিক্ষক আমি দেখিনি।’ [সহীহ মুসলিম ৩৮১/১]
চতুর্থ আরেকজন বলেছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায় তোমরা ইসলাম গ্রহণ কর, কেননা মুহাম্মাদ যাকে দান করে সে কখনো অভাবের ভয় করে না।’ [সহীহ মুসলিম ১৮০৬/৪]
পঞ্চম আরেকজন বলেছিল, ‘আল্লাহর শপথ! অবশ্যই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে দেয়ার মত দিয়েছেন। নিশ্চয় তিনি আমার নিকট ছিলেন সকলের চেয়ে নিকৃষ্ট। তিনি আমাকে দান করতে থাকেন, ফলে তিনি আমার নিকট সবচেয়ে বেশি প্রিয় হয়ে যান।’ [সহীহ মুসলিম ১৮০৬/৪]
ষষ্ঠ আরেক ব্যক্তি, যাকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। সে বলেছিল, ‘আমি তোমাদের নিকট মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তম ব্যক্তির কাছ থেকে এসেছি। অতঃপর সে তার সম্প্রদায়কে ইসলামের দিকে আহবান করতে থাকে। ফলে তাদের মধ্যে থেকে অনেক মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। এ বিষয়ে আরো অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে।’ [সহীহ আল - বুখারী ২৯১০, সহীহ মুসলিম, ৮৪৩]
৮। সুন্দর চরিত্র প্রত্যেক মুসলিম বিশেষ করে সকল সাচ্চা দায়ীর জন্য আবশ্যক। কেননা তার দ্বারা সাধারণ ও অসাধারণ সকল মানুষ সর্বক্ষেত্রে মুক্তি পায় ও সফলতা লাভ করে। এই তাৎপর্যের কারণে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার প্রভুর নিকট সুন্দর চরিত্রের পথ দেখাতে দু‘আ করতেন। রাতের নামাজ শুরু করার সময় বলতেন।
واهدنى لأحسن الأخلاق لا يهدى لأ حسنها إلا أنت
‘তুমি আমাকে সবচেয়ে বেশি সুন্দর চরিত্রের পথ দেখাও! সুন্দর চরিত্রের পথ একমাত্র তুমিই দেখাতে পার।’ [সহীহ মুসলিম ৫৩৪/১]
তিনি আরো বলেছেন, ‘তুমি যেমন আমার শরীরের গঠন সুন্দর করেছো, তেমনি তুমি আমার চরিত্র সুন্দর করে দাও।’ [বাইহাকী, আহমাদ ৬৮/৬]
৯। সুন্দর সৎ চরিত্রবান ব্যক্তি সকল মানুষের কাছে প্রিয় এমন কি শত্রুর কাছেও। সে সকল শ্রেণীর মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পারে। যেই তার সাথে চলাফেরা করে তাকে ভালবাসে। সে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার সাহায্যে তার মহান উদ্দেশ্য সহজভাবে বুঝাতে পারে। কেননা আল্লাহর পথের আহবানকারীরা তাদের ধন-সম্পদ দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করে না। বরং হাস্যোজ্জল চেহারা ও সুন্দর চরিত্র দিয়েই আকৃষ্ট করে থাকে।
১০। নিশ্চয় যে আহবানকারী সুন্দর চরিত্রে চরিত্রবান নয়, তার আহবান থেকে মানুষ দূরে সরে যায়।
তার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থেকে মানুষ উপকৃত হয় না। কেননা মানুষের প্রকৃতি এমন যে, তারা অহংকারী ও অবজ্ঞাকারী থেকে কোন কিছু গ্রহণ করে না। আল্লাহ তাআলা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যথার্থ বলেছেন :
‘‘আল্লাহ তাআলার রহমতে তুমি তাদের প্রতি কোমল হয়েছো, যদি তুমি কর্কশবাসী কঠিন হৃদয়ের অধিকারী হতে, তাহলে তারা তোমার থেকে দূরে সরে যেত। সুতরাং তুমি তাদের ক্ষমা করে দাও ও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং যে কোন বিষয়ে তুমি তাদের সাথে পরামর্শ কর।’’ [সূরা আলে ইমরান ১৫৯]
‘‘অবশ্যই তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্যে থেকে একজন রাসূল এসেছে যার কাছে তোমাদের ক্ষতিকর বিষয় কষ্টদায়ক ও তোমাদের কল্যাণকামী এবং মুমিনদের প্রতি দয়ার্দ্র ও দয়ালু।’’ [সূরা আত-তাওবা ১২৮]
‘‘অবশ্যই আল্লাহ তাআলা ম’মিনদের উপর ইহসান করেছেন যখন তিনি তাদের নিকট তাদের মধ্যে থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের নিকট তার আয়াতসমূহ আবৃতি করেন। তাদের সংশোধন করেন ও তাদের কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেন।’’ [সূরা আলে ইমরান ১৬৪]
‘‘হে নবী! আমি তোমাকে সাক্ষ্য দাতা, শুভসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী হিসেবে প্রেরণ করেছি এবং আল্লাহর অনুমতিতে আল্লাহর দিকে আহবানকারী ও উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা স্বরূপ। তুমি ম’মিনদের শুভসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশাল মর্যাদা রয়েছে।’’ [সূরা আল-আহযাব ৪৫-৪৭]
ইসলামের দিকে প্রত্যেক আহবানকারীর কর্তব্য হল যে, সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আদর্শ ও ইমাম হিসেবে গ্রহণ করবে।
‘‘অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। যে আল্লাহ ও আখেরাতের আশা করে এবং আললাহকে অধিক হারে স্মরণ করে তার জন্য।’’ [সূরা আল-আহযাব ২১]
১১। নিশ্চয় উম্মতের সংশোধন, হেদায়েত ও উন্নতি নির্ভর করে স্বচ্ছ ও পরিষ্কার উৎস থেকে আহরণ এবং বিকৃত ধ্বংসাত্মক চিন্তা ফিকির থেকে দূরে থাকার উপর। আল্লাহর দিকে আহবানকারীরা সুন্দর চরিত্র আঁকড়িয়ে ধরলে এ উৎস অনুসারে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করলে ও সে অনুপাতে নিজে আমল করলে তবেই তো নিশ্চিত হবে উন্নতি ও অগ্রগতি। এর অন্যথা কাম্য নয় আল্লাহর কাছে।
‘‘শপথ আসরের! নিশ্চয় সকল মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত, তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করেছে। এবং তারা পরস্পর সত্যের নির্দেশ দেয় এবং ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেয়।’’ [সূরা আল-আসর]
এখানে সত্যের আহবান করার পূর্বে আমল করার কথা বলা হয়েছে।
১২। উত্তম চরিত্র দাওয়াতের ক্ষেত্রে দায়ীকে আলোকিত হৃদয়ের অধিকারী করে তোলে। তার অনুভূতি গুলো খুলে দেয়। ফলে সে সত্যের ক্ষেত্রগুলো অন্তর দৃষ্টি দিয়ে দেখতে পায়। আর তখন সে ব্যক্তি, স্থান-কাল-পাত্র উপযোগী দাওয়াতের সঠিক পদ্ধতি ও মাধ্যম অবলম্বন করতে পারে।
‘‘হে ঈমানদারগণ যদি তোমরা আল্লাহ তাআলাকে ভয় কর, তাহলে তিনি সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করার উপলব্ধি দান করবেন।’’ [সূরা আল-আনফাল ২৯]
১৩। দাওয়াতে সুন্দর চরিত্র একটি কার্যকরী পদ্ধতি যা আগুন থেকে মুক্তি দান করে এবং সফলতার শীর্ষ মর্যাদা জান্নাতুন নাঈম এর অধিকারী করে। আর এটাই আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির পর প্রত্যেক মুসলমানের প্রত্যাশা। এজন্যই এক ব্যক্তিকে রাসূল জিজ্ঞাসা করে বললেন তুমি নামাজের মধ্যে কি বল?
সে বলল আমি নামাজে তাশাহহুদ পড়ার পর আল্লাহর কাছে জান্নাত চাই এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাই।
তিনি বললেন, ‘ওহে শুন! আল্লাহর শপথ! তোমার গুঞ্জন কতই না সুন্দর! মুআজের গুঞ্জন নয়। আমরা যেন এমন গুঞ্জন করতে পারি।’ [আবু দাউদ ৭৯২]
এটা প্রমাণ করে যে, আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের পর সমস্ত কথা, কাজ ও দাওয়াত সবই জান্নাত লাভ করার জন্য ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই করা হবে।
যে নিজ চরিত্রকে সুন্দর করবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান্নাতে তার জন্য উত্তম বাড়ির যিম্মা নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি সত্যের উপর অটল থাকার পরও ঝগড়া বিবাদ পরিহার করবে, আমি তার জন্য জান্নাতের প্রান্তে একটি ঘরের দায়িত্ব নিলাম। যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা - যদি তা হাসি তামাশার জন্যও হয়ে থাকে- পরিহার করবে আমি তার জন্য জান্নাতের মধ্যবর্তী স্থানে একটি ঘরের দায়িত্ব নিলাম। যে নিজ চরিত্রকে উন্নত করবে আমি তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ শিখরে একটি ঘরের দায়িত্ব নিলাম।’ [আবু দাউদ ৭৮০]
১৪। সুন্দর চরিত্রের কারণেই সবচেয়ে বেশি মুসলমান জান্নাতে প্রবেশ করবে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল কোন আমল মানুষকে বেশি জান্নাতে নিয়ে যাবে? তিনি বললেন, ‘আল্লাহ ভীতি ও সুন্দর চরিত্র।’ [তিরমিজী ৩৬৩/৪] তিনি আরো বলেন, ‘নিশ্চয় জাহান্নাম প্রত্যেক সহজ সরল ও কোমল হৃদয়বান ব্যক্তির জন্য হারাম।’ এ ব্যাপারে আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আমি তোমাদের কি বলব না তার কথা, যার জন্য জাহান্নাম হারাম ও যে জাহান্নামের জন্য হারাম? সে হল প্রত্যেক সহজ সরল কোমল হৃদয়ের অধিকারী ব্যক্তি।’ [তিরমিজী ৬৫৪/৪]
দ্বিতীয়ঃ সুন্দর চরিত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আমল
সুন্দর চরিত্র একটি পরিব্যাপ্ত বিষয় যার মধ্যে রয়েছে সহিষ্ণুতা, সহনশীলতা, ধীর-স্থিরতা, দানশীলতা, বদান্যতা, ক্ষমা, মার্জনা, দয়া, নম্রতা, ধৈর্য, স্থিতিশীলতা, অবিচলতা, ন্যায়-পরায়ণতা, ইনসাফ, সত্যবাদিতা, সুন্দর ব্যবহার, প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করা, অঙ্গীকার পালন করা, আত্মত্যাগ, করুণা, অভাব প্রকাশ না করা, বিনয়, সাধনা, উৎকর্ষ, কর্ম-উদ্যম, মমতাবোধ, মনুষ্যত্ব বোধ, সাহসিকতা, আমানতদারী, ঐকান্তিকতা এগুলো যা উল্লেখ করা হলো আল্লাহর পথের আহবানে তা সুন্দর চরিত্র নামে আখ্যায়িত।
যে মহান চরিত্রের প্রশংসা আল্লাহ তাআলা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ব্যাপারে করেছেন তা হচ্ছে সম্পূর্ণ দীন। আর সুন্দর চরিত্র হল তার একটি অংশ। যেমন ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. ফাতাওয়ায় উল্লেখ করেছেন, আর ইবনু কায়্যিম রহ. মাদারিজুস সালেকীনে বলেছেন সুন্দর চরিত্র চারটি ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত। এগুলো ছাড়া তাকে কল্পনা করা যায় না। ভিতগুলো হলঃ
(১) ধৈর্য (২) ইফফাত বা অভাব মুক্ত ভাব (৩) সাহসিকতা (৪) ন্যায়পরায়ণতা।
এই চারটা গুণ সকল উন্নত চরিত্রের সূচনাস্থল।
আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই মহান সুন্দর চরিত্রসমূহের দিকগুলো নিজ জীবনে বাস্তবায়ন করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/408/9
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।