hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

দয়া ও ভালোবাসার অনন্য বিশ্ব নবী

লেখকঃ আবু আব্দুর রাহমান

৩১
ঊনত্রিশতম পরিচ্ছেদ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শহীদি ইন্তেকাল
আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষবারের মত অসুস্থ হয়ে বলেন, ‘আয়েশা! খায়বারে যে বিষ মাখা গোশ্ত ভক্ষণ করে ছিলাম, তার কষ্ট এখনো আমি অনুভব করছি। সে বিষ ক্রিয়ায় মনে হচ্ছে আমার রগ টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে।’ [সহীহ আল - বুখারী ৪৪২৮]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারে বিষ মাখা বকরীর গোশ্ত খেয়ে তিন বছর বেঁচে ছিলেন। ইন্তেকালের সময়ও সে বিষক্রিয়া বিদ্যমান ছিল। [ফাহুল বারী : ৮/১৩১] বর্ণিত আছে : যে মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বকরীর বিষাক্ত গোশ্ত ভক্ষণ করতে দিয়েছিল, সে ইসলাম গ্রহণ করেছে। সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘কে আপনাকে বলেছে, এতে বিষ আছে?’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘এ বকরীই বলেছে।’ অতঃপর সে ইসলাম গ্রহণ করে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে মাফ করে দেন। কিন্তু এ বিষক্রিয়ায় বাশার ইবনে বারা মৃত্যু বরণ করল। ফলে তাকে হত্যার করার অপরাধে মহিলাটিকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়, কেসাসের বিধান অনুসারে। হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসূলের মৃত্যুর কারণ ছিল বিষক্রিয়া। আবু সালামা বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীয়া বা উপহার গ্রহণ করতেন, সদকা খেতেন না। খায়বারে এক ইহুদী মহিলা বিষ প্রয়োগ করে একটি ভুনা বকরী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হাদীয়া হিসাবে পেশ করল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেলেন, সাথে অন্যরাও খেল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমরা হাত উঠিয়ে নাও। আমাকে এ বকরীই বলছে যে, এর গোশ্ত বিষাক্ত।’ কিন্তু সে খানা খেয়ে রাসূলের সাহাবী বাশার বিন আল-বারা আনসারী মারা যান। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহুদী মহিলার নিকট খবর দিয়ে পাঠালেন. তাকে জিজ্ঞেস করলেন যে, ‘কি কারণে তুমি এ কু কর্ম করেছ?’ সে বলল, যদি আপনি নবী হন, তবে এর দ্বারা আপনার কোনো ক্ষতি হবে না। আর যদি বাদশাহ হতে চান, তাহলে মানুষকে আপনার প্রতারণা হতে মুক্ত করলাম। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ব্যাপারে নিদের্শ জারি করেন। তাকে হত্যা করা হয় বাশার আনসারীকে হত্যার শাস্তি হিসাবে। তাই মৃত্যুর সময় বলেছেন, ‘আমি এখনও খায়বরে ভক্ষণকৃত গোশ্তের বিষক্রিয়া অনুভব করছি। যার কারণে আমার রগ ছিন্ন বিছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।’ বাশারের মা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তার শেষ অসুস্থ অবস্থায় বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কোন জিনিসকে দায়ী করেন? আমার ছেলের মৃত্যুর ব্যাপারে আমি সে গোশ্তকেই দায়ী করি, যা আপনার সাথে খায়বরে খেয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমিও আমার মৃত্যুর ব্যাপারে সে গোশ্তকেই দায়ী করি। এ মুহূর্তে তো আমার রগ টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে।’ [আবু দাউদ : ৪৫১৩, সহীহ আবু দাউদ : ৩/৮৫৫]

ইবনে কাসীর খুব জোর দিয়ে বলেছেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাহাদাতের সাথে মৃত্যু বরণ করেছেন। [আল-বেদায়া ও আল-নেহায়া : ৪/২১০, ২১১, ৪/২১০-২১২, ৫/২২৩-২৪৪] তিনি উদ্ধৃত করেছেন, ‘মুসলমানগণ মনে করেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়তের মর্যাদার সাথে সাথে শহীদ হওয়ার মর্যাদা নিয়েও মৃত্যু বরণ করেছেন।’ [আল-বেদায়া ও আল-নেহায়া : ৪/২১১] ইবনে মাসউদ রা. বলেন, ‘নয় বার শপথ করে এ কথা বলা আমার নিকট অধিক শ্রেয় যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অন্যান্য হত্যার মতই হত্যা করা হয়েছে একবার শপথ করে এ কথা বলার চেয়ে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যা করা হয়নি। কারণ, আল্লাহ তাআলা নিজ অনুগ্রহে যেমন তাকে নবুওয়তের মর্যাদা দিয়েছেন, তেমনি তাকে শাহাদাতের মর্যাদাও দিয়েছেন।’ [আল- বেদায়া ও আল- নেহায়া : ৫/২২৭]

আনাস রা. বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থ থাকাকালীন আবু বকর রা. তাদের নিয়ে নামাজ পড়তেন। সোমবার দিন ফজরের সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হঠাৎ আয়েশা রা. র ঘরের পর্দা খুলে উঁকি দিলেন। সাহাবায়ে কেরাম রা. তখন জামাতে দাড়ানো। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাড়ানো ছিলেন, মনে হচ্ছিল তার চেহারা মুবারক কুরআনের একটি নির্মল পৃষ্ঠা। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেকটা মুচকি হাসির ন্যায় হাসলেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখে তো সাহাবাদের নামাজ ছেড়ে দেয়ার অবস্থা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হচ্ছেন ভেবে আবু বকর রা. পিছনে সরে যেতে লাগলেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতের ইশারা দিয়ে বলেন, তোমরা নামাজ পূর্ণ করো। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়েশার ঘরে প্রবেশ করেন এবং পর্দা টেনে দেন। সে দিনই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করেন।

আরেকটি বর্ণনায় আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে দিন শেষে ইন্তেকাল করেন। আরেকটি বর্ণনায় আছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন দিন পর্যন্ত ঘর থেকে বের হননি। একদিন নামাজের একামত দেয়া হলে আবু বকর এগিয়ে গেলেন ইমামতি করার জন্য। এদিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরের পর্দা তুলে দাড়ালেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন চেহারা বের করে আমাদের দিকে তাকালেন, আমরা তার চেহারার প্রতি দৃষ্টি দিলাম; মনে হল রাসূলের এতো সুন্দর চেহারা আর কোনো দিন দেখিনি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বকরকে সামনে বেড়ে নামাজ পড়ানোর নিদের্শ দিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্দা টেনে ভিতরে চলে গেলেন। আর বের হতে পারেননি। সে বিছানাতেই ইন্তেকাল করেন। [সহীহ আল - বুখারী ৬০৮, ৬৮১, ৭৫৪, ১২০৫, ৪৪৪৮ সহীহ মুসলিম : ৪১৯]

এ পরিচ্ছেদের সারকথা ও শিক্ষনীয় বিষয়ঃ

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাহাদাতের মর্য়াদা নিয়ে আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে গেছেন। আল্লাহ তাকে নবুওয়ত এবং শাহাদাত দু’টিই দান করেছেন।

ইহুদীদের শত্রুতা ইসলামের শুরু যুগ থেকেই। তারা আল্লাহ এবং তার রাসূলের দুশমন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের জন্য প্রতিশোধ নিতেন না কখনো। বরং ক্ষমা করতেন, মাফ করে দিতেন। আলোচিত ঘটনায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহুদী মহিলাকে প্রথম মাফ করে দেন। পরবর্তীতে বাশারের হত্যার অপরাধে তাকে হত্যা করেন। যেহেতু সে তার দেয়া বিষযুক্ত খানা খেয়ে সে মৃত্যু বরণ করেছিলো।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মু’জিযা। ভুনা বকরী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেছে, ‘আমি বিষাক্ত।’

বান্দার উপর আল্লাহর মেহেরবাণী। তিনি কোনো নবীকে তার দীন পূর্ণভাবে প্রচার করার পূর্ব পর্যন্ত মৃত্যু দেননি।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি সাহাবাদের নিখাঁদ মহববত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোমবার দিন সকাল বেলা যখন পর্দা উঠিয়ে তাদের দিকে তাকান, তখন তারা খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাদের নামাজ এবং সারিবদ্ধ দৃশ্য দেখে আনন্দিত হন। পীড়া সত্বেও মুচকি হাসি দেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন