hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

দয়া ও ভালোবাসার অনন্য বিশ্ব নবী

লেখকঃ আবু আব্দুর রাহমান

২৬
চবিবশতম পরিচ্ছেদ: অসুস্থতার সূচনা ও আবু বকর রা. কে ইমামতির দায়িত্ব প্রদান
নবুওয়তের দশম বছর হজ সম্পাদন শেষে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনাতেই অবস্থান করেন। জিলহজের বাকি অংশ, মহররম এবং সফর মাসে তিনি সুস্থই ছিলেন। এ সময়ে তিনি উসামা বিন যায়েদকে প্রধান করে একটি সৈন্যদল গঠন করেন। মুসলিম মুজাহিদগণ যার প্রস্ত্ততিতে ব্যস্ত ছিল। সফর মাসের প্রায় শেষ অংশে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থতা বোধ করতে আরম্ভ করেন। ২২ সফর, ২৯ সফর আবার কেউ সফর পরবর্তী রবিউল আউয়ালের প্রথমাংশের কথাও বলেছে। এ সময়ের মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদের শহীদগণের জন্য জানাযার ন্যায় নামাজ পড়েছেন। বাকীর কবরস্থানে গিয়ে সালাম করেছেন এবং শেষ বারের মত তাদের জন্য দুআ করেছেন। একবার বাকী হতে ফেরার সময় দেখেন, আয়েশা রা. মাথার ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। আর বলছেন, হায় মাথা! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমার বলার প্রয়োজন নেই, বরং আমিই বলছি, আমার মাথা ব্যথা করছে। হায় মাথা!’ আয়েশা রা. বলেন, এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আয়েশা, তোমার এতে অসুবিধা কোথায়? তুমি যদি আমার আগে মারা যাও, আমি তোমার কাফনের ব্যবস্থা করব, তোমার জানাযার নামাজ পড়ব এবং আমি নিজেই তোমার দাফন ক্রিয়া সম্পন্ন করব।’ আয়েশা রা. বলেন, আমি বললাম, ‘আমি মারা গেলে তো মজাই হবে, আরেক জন নারী নিয়ে আমার ঘরে নতুন করে সংসার পাততে পারবেন।’ আয়েশা রা. বলেন, ‘এ কথা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে দিলেন। [ইবনে হিশাম : ৪/৩২০ আল-বিদায়া ও আল-নেহায়া : ৫/২২৪ ফাতহুল বারী : ৮/১২৯-১৩০ আহমদ : ৬/১৪৪ সুনানে দারামি : ৮০] অসুস্থতা বাড়তে বাড়তে তীব্র আকার ধারণ করল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মায়মুনার ঘরে। তিনি সকল স্ত্রীদের ডেকে আমার ঘরে অসুস্থকালীন সময়টি থাকার অনুমতি নিলেন।’ [ইবনে হিশাম : ৪/৩২০ আল-বিদায়া ও আল-নেহায়া : ৫/২২৩-২৩১ কেউ কেউ বলেছেন ঘটনাটি হল সফরের ২৯ তারিখ, বৃহস্পতিবারের। তের দিন ছিলেন অসুস্থ অবস্থায়। এটাই অনেকের বক্তব্য। ফাতহুল বারী : ৮/১২৯]

আয়েশা রা. বলেন, প্রথম যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুস্থতা আরম্ভ হয়, তখন তিনি মায়মুনার ঘরে অবস্থান করছিলেন। ধীরে ধীরে রোগ বৃদ্ধি পেলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল স্ত্রীদের কাছে আমার ঘরে থাকার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। সকলে আমার ঘরে থাকার জন্য মত দিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবনে আববাস রা. এবং অপর এক জন লোকের কাঁধে ভর করে, মাটির সাথে পা হেচরে হেচরে আমার ঘরে প্রবেশ করেন। আয়েশা রা. বলতেন, আমার ঘরে যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অসুখ বৃদ্ধি পায়, তখন তিনি বললেন, ‘পরিস্কার সাত কলস পানি আমার গায়ে ঢেলে দাও, আমি যাতে সুস্থ হয়ে লোকদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলতে পারি।’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অপর স্ত্রী হাফসা রা. এর গোসল খানায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বসিয়ে আমরা তার উপর সে কলসগুলোর পানি ঢালতে থাকি। এক সময় হাতের ইশারায় বলতে লাগলেন যে, ‘তোমরা যথেষ্ট করেছো।’ অতঃপর সকলের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে গেলেন, সবাইকে নিয়ে নামাজ পড়লেন এবং সকলকে সম্বোধন করে ভাষণ দিলেন। [সহীহ আল - বুখারী ১৯৮, সহীহ মুসলিম : ৪১৮]

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লেন, তখন তিনি বলেন, ‘লোকজন কি নামাজ পড়ে নিয়েছে?’ আমরা বললাম, ‘না, তারা নামাজ পড়েনি। হে আল্লাহর রাসূল! তারা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।’ তিনি বললেন, ‘গোসলখানায় আমার জন্য কিছু পানি রাখ।’ আমরা পানি রেখে দিলাম। তিনি গা ধুয়ে নিলেন। অতঃপর খুব কষ্ট করে উঠতে চাইলেন, সক্ষম হলেন না। বেহুশ হয়ে পড়ে গেলেন। হুশ ফিরে আসলে আবার বলেন, ‘লোকজন কি নামাজ পড়ে নিয়েছে?’ আমরা বললাম, ‘না, আল্লাহর রাসূল! তারা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।’ তিনি বললেন, ‘গোসলখানায় আমার জন্য কিছু পানি রাখ।’ আয়েশা বললেন, আমরা পানি রেখে দিলাম। তিনি বসে গাঁ ধুলেন। অতঃপর উঠে দাড়াতে চাইলেন, কিন্তু সক্ষম হলেন না, বেহুশ হয়ে পড়ে গেলেন। আবার হুশ ফিরে এলে বলেন, ‘লোকজন কি নামাজ পড়ে নিয়েছে?’ আমরা বললাম, ‘না, তারা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, ‘গোসলখানায় আমার জন্য কিছু পানি রাখ। আমরা পানি রেখে দিলাম, তিনি বসে গাঁ ধুয়ে নিলেন। অতঃপর উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করলেন, কিন্তু সক্ষম হলেন না। বেহুশ হয়ে পড়ে গেলেন। আবার হুশ ফিরে পেয়ে জিজ্ঞাসা করেন, ‘লোকজন কি নামাজ পড়ে নিয়েছে?’ আমরা বললাম, ‘না, তারা আপনার অপেক্ষা করছে, হে আল্লাহর রাসূল! আয়েশা রা. বলেন, তখন লোকজন এশার নামাজের জন্য মসজিদে বসে বসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অপেক্ষা করতে ছিল। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন লোক পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, ‘আবু বকরকে নামাজ পড়াতে বল। লোকটি এসে আবু বকরকে বলল, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে নামাজ পড়াতে বলেছেন।’ আবু বকর রা. ছিলেন কোমল হৃদয়ের মানুষ। তিনি উমার রা.কে বললেন, ‘উমার! আপনি নামাজ পড়ান।’ উমার রা. তাকে বললেন, ‘আপনি এর জন্য আমার চেয়ে বেশি উপযোগী।’ আয়েশা রা. বলেন, ‘কয়েক দিন আবু বকর নামাজ পড়ালেন। এরপর যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেকে কিছুটা হালকা মনে করলেন, তখন তিনি দু’জন লোকের কাধে ভর করে জোহর নামাজের জন্য মসজিদে গেলেন। আবু বকর রা. অন্যান্য সাহাবাদের নিয়ে নামাজ পড়তে ছিলেন। আবু বকর রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখে পিছনে সরে আসার প্রস্ত্ততি নিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশারা করে পিছে সরে আসতে বারণ করলেন। তাদের দু’জনকে বললেন, ‘আমাকে তার পাশে বসিয়ে দাও।’ আবু বকর দাড়িয়ে দাড়িয়ে রাসূল রা. এর অনুসরণ করছেন, অন্যান্য লোকজন আবু বকরকে অনুসরণ করছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে বসে নামাজ পড়ছেন। [সহীহ আল - বুখারী ৬৮৭, সহীহ মুসলিম ৪১৮] এ নামাজটি ছিল জোহরের, এতে কোনো সন্দেহ নেই। [কারো ধারণা এ নামাজটি ছিল, ফজরের। তাদের দলিল, ইবনে আববাস হতে আরকাম বিন শারাহবিল এর রেওয়াতে। আবু বকর যেখানে শেষ করেছেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখান থেকে কেরাত পড়া আরাম্ভ করেছেন। ইবনে মাজার বর্ণাকৃত এ হাদিসটির সনদ যদিও হাসান, তবে এর দ্বারা দলিল দেয়া সংঘত নয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বকরের অতি নিকটে গিয়েছেন ফলে কেরাত শুনেছেন এরও তো সম্ভাবনা রয়েছে। তার ব্যাপারে আছে, আস্তে কেরাত পড়ার নামাজেও তিনি অনেক সময় অপরকে শুনার মতো আওয়াজ করে কেরাত পড়তেন। যেমন আবু কাতাদার হাদীসে এর প্রমাণ বিদ্যমান আছে। এর পরেও যদি মেনে নেই যে, জোরে কেরাত পড়ার নামাজ ছিল, তবু প্রমাণিত হয় না যে, এটা ফজরের নামাজ ছিল, বরং মাগরিবের নামাজ হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা রয়েছে। সহীহ আল - বুখারী ও মুসলিমে উম্মে ফজল হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন : আমি মাগরিবের সময় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে والمرسلات عرفا সুরা পড়তে শুনেছি। এর পরে কোনো দিন জমাতের সহিত নামাজ পড়েননি, ইহধাম ত্যাগ করে যান। সহীহ আল-সহীহ আল - বুখারী ৭৬৩, ৪৪২৯ সহীহ সহীহ মুসলিম ৪৬২, ইবনে হাজার রহ. বলেন, নাসায়ীর একটি বর্ণনায় আছে, উম্মে ফজল যে নামাজের কথা উল্লেখ করেছে, সে নামাজ তার বাড়িতে ছিল। ইমাম শাফি রহ. বলেছেন, যে অসুখে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করেছেন, সে অসুখে এক ওয়াক্ত নামাজ শুধু মসজিদে পড়েছেন। আর সেটা এ নামাজই যে নামাজে তিনি বসে নামাজ পড়েছেন এবং যেখানে আবু বকর প্রথমে ইমাম ছিল পরবর্তীতে মুক্তাদি হয়েছেন। আর অন্যদের তাকবীর শুনাতেন। আল-ফাতহ : ২/১৭৫] আবু বকরকে ইমাম বানানোর ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খুব আগ্রহ ছিল। এ জন্য তিনি বার বার তাগিদও করেছেন। আয়েশা রা. বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুখ বেড়ে যাওয়ার পর বেলাল এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নামাজের সংবাদ দিলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আবু বকরকে নামাজ পড়াতে বল।’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আবু বকর কোমল হৃদয়ের মানুষ। যখন সে নামাজ পড়াতে দাড়াবে, তখন মানুষ তার আওয়াজ শুনতে পাবে না। আপনি বরং উমারকে নামাজ পড়াতে বলুন।’ তিনি বললেন, ‘আবু বকরকে বল নামাজের ইমামতি করার জন্য।’ তখন আমি হাফসাকে বললাম, ‘তুমি বল, আবু বকর কোমল হৃদয়ের মানুষ, আপনার জায়গায় সে দাড়ালে মানুষ তার আওয়াজ শুনতে পাবে না। আপনি যদি উমারকে হুকুম করতেন...’ সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাই বলল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা শুনে বলেন, ‘তোমরা তো ইউসুফকে ধোকা দেয়া নারীদের মতো হয়ে গেছ। আবু বকরকে বল, সে নামাজের ইমামতি করবে।’ হাফসা আয়েশাকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘আমি আপনার কাছ থেকে কোনো ভাল কিছুর আশা করতে পারি না।’ আয়েশা রা. বলেন, ‘তারা সকলে আবু বকরকে নামাজ পড়াতে বলে। আবু বকর নামাজ আরম্ভ করলেন। এদিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও কিছু সুস্থতা অনুভব করলেন। তখন তিনি দু’জন ব্যক্তির কাঁধে ভর করে মসজিদে রওয়ানা হলেন। তার পা দু’টি মাটিতে হেচরে চলছিল। এভাবেই তিনি মসজিদে প্রবেশ করেন। আবু বকর টের পেয়ে পিছু হটতে লাগলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশারা করে নিজ স্থানে স্থির থাকতে বললেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অগ্রসর হয়ে আবু বকরের ডান পাশে বসলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে বসে নামাজের ইমামতি করছেন, আর আবু বকর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ করছেন, অন্যান্য মানুষ অনুসরণ করছে আবু বকরকে।’

যে কারণে আয়েশা রা. আবু বকরের ইমামতি অপছন্দ করেছেন তা হল, আয়েশা রা. বলেন, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বার বার আবু বকরের ইমামিতে আপত্তি জানানোর কারণ ছিল যে, এটাকে মানুষ অশুভ লক্ষণ মনে করবে। আমি এটাকে আবু বকর হতে হটাতে চেয়ে ছিলাম। আর এ জন্যই তাকে ও হাফসাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরাতো ইউসুফের সাথে প্রতারণাকারী নারীদের মতো।’ [সহীহ আল - বুখারী ৭১৩, সহীহ মুসলিম : ৪১৮]

ইবনে কাসির রহ. বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বকরকে ইমামতির জন্য প্রাধান্য দিয়েছেন। এর অর্থ, তিনি সকল সাহাবাদের চেয়ে বেশি জ্ঞানী এবং কুরআন ভাল করে তেলাওয়াত করতে পারেন। সহীহ মুসলিমে আছে, ‘ভাল করে কুরআন তেলাওয়াতকারীই ইমামতি করবে...’’ [সহীহ মুসলিম : ৬৭৩] আর আবু বকরের মধ্যে এ সকল গুনই বিদ্যমান ছিল। [আল-বিদায়া ও আল-নিহায়া : ৫/২৩৪]

এ পরিচ্ছেদের সারকথা ও শিক্ষনীয় বিষয়ঃ

উহুদের শহীদ ও বাকী কবরস্থানে শায়িত কবরবাসীদের যিয়ারত করা, তাদের জন্য দুআ করা মুস্তাহাব। তবে এর জন্য স্বতন্ত্রভাবে সফর করা কিংবা এতে কোনো ধরনের বেদআতের সংমিশ্রন অনাকাঙ্খিত ও পরিত্যাজ্য।

স্বামীর জন্য নিজ স্ত্রীর গোসল, কাফন-দাফন ইত্যাদির বৈধতা। তদ্রুপ নারীর জন্য নিজ স্বামীর গোসল, কাফন-দাফন ইত্যাদির বৈধতা প্রমাণিত হয়।

মুমুর্ষ অবস্থায় কোনো অসুবিধার কারণে একাধিক স্ত্রীর বর্তমানে এক স্ত্রীর ঘরে থাকার জন্য অন্যান্য স্ত্রীদের থেকে অনুমতি নেয়া। তারা অনুমিত দিলে ভাল। অন্যথায় লটারীর মাধ্যমে নির্ণয় করা হবে।

মানব প্রকৃতি, রোগ ও বেহুশ হওয়া থেকে নবীগণও নিরাপদ নয়। তবে তারা উম্মাদ হন না। কারণ এটা একটা বড় ত্রুটি; এ থেকে নবীগণ মুক্ত। এর দ্বারা তাদের সওয়াব বৃদ্ধি পায়, মর্যাদা উন্নত হয় এবং অন্যদেরও সান্ত্বনা মিলে। এর আরেকটি ইতিবাচক দিক হল, নবীদের মধ্যে অলৌকিক নিদর্শন, সুস্পষ্ট প্রমাণাদি দেখে অনেকের বিভ্রান্তির সম্ভাবনা ছিল। এর দ্বারা তাদের ভ্রম দূর হবে। তারাও দেখে নিবে যে, নবীগণও আল্লাহর ইচ্ছার বিপরীতে নিজের ক্ষতি কিংবা উপকার করতে সক্ষম নন।

বেহুশ হয়ে গেলে গাঁ ধুয়ে নেয়া মুস্তাহাব। এর দ্বারা বেহুশ অবস্থার ক্লান্তিভাব দূর হয়, শক্তি ফিরে আসে এবং শরীরের তাপ কমে।

ইমামের আসতে সামান্য দেরী হলে, মুসলীলগণ তার অপেক্ষা করবে, আর যদি তার আসতে অনেক দেরী হয়, মুসল্লীদেরও কষ্ট হয়, তবে উপস্থিত লোকদের মধ্য থেকে যে সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী সেই নামাজ পড়াবে।

সকল সাহাবাদের উপর আবু বকরের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়। এর ঘটনায় তার এবং অন্যদের জন্যও ইঙ্গিত যে, খেলাফতের উপযুক্ত একমাত্র তিনিই। কারণ, সাধারণ জনগণ নিয়ে নামাজ পড়ার অধিকার একমাত্র খলীফারই। দ্বিতীয়ত, সাহাবায়ে কেরাম নিজেরাও বলেছেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকে আমাদের দ্বীনের জন্য মনোনীত করেছেন, আমরা তাকে আমাদের দুনিয়ার জন্যও মনোনীত করলাম।’

জামাতে অংশ গ্রহণ করা অসম্ভব এমন কোনো কারণ থাকলে ইমাম বা খলীফা অন্য কাউকে প্রতিনিধি করতে পারেন। তবে, সে যেন সকলের চেয়ে উত্তম ব্যক্তি হয়।

উমর রা. এর ফজিলতের বিষয়টি লক্ষণীয়। কারণ, আবু বকর রা. তার উপর নির্ভর করেছেন, তাকে নামাজ পড়াতে অনুরোধ করেছেন। অন্য কাউকে নামাজ পড়াতে বলেননি।

সম্মুখে প্রশংসা করার বৈধতা : যদি অহংবোধ, গরিমার আশংকা না থাকে। এ হাদীসে উমার রা. আবু বকর রা. কে ‘আপনি এর জন্য উপযুক্ত বলে’ তার সম্মুখে প্রসংশা করেছেন।

উপযুক্ত ব্যক্তিদের গুরু দায়িত্ব গ্রহণ না করার বৈধতা প্রমাণিত হল, যদি সেখানে এমন কেউ বিদ্যমান থাকে, যে উত্তম রূপে সে দায়িত্ব আঞ্জাম দিতে পারবে।

প্রতিনিধিত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিও অপর নির্ভরযোগ্য কাউকে খলীফা বা প্রতিনিধি করার অধিকার রাখে। যেমন এখানে আবু বকর রা. উমার রা. কে প্রতিনিধি বানাতে চেয়েছেন।

যে সকল ইবাদত সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে, তার মধ্যে নামাজ গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত।

সে সময় জীবিত নয়জন স্ত্রীদের ভেতর আয়েশা রা. এর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হল।

আদব, সম্মান, মর্যাদা ও স্থান কাল বিবেচনায় রেখে খলীফাদের পরামর্শ দেয়ার বৈধতা প্রমাণিত হয়।

কোনো কারণ বশত মুক্তাদিদের ইমামের পাশে দাড়ানোর বৈধতা প্রমাণিত হয়। যেমন তাকবীর পৌঁছানোর জন্য, জায়গার সংকীর্ণতার দরুন, নারীদের জন্য নারী ইমাম হলে, মুক্তাদী একজন হলে এবং বস্ত্রহীন লোকদের ইমাম হলে ইত্যাদির ক্ষেত্রে।

ইমামের তাকবীর শোনা না গেলে মুক্তাদিদের উচ্চ স্বরে তাকবীর বলার বৈধতা।

পূর্ণ অক্ষম না হলে জামাতে অবশ্যই উপস্থিত হওয়া।

সাধারণ জ্ঞানী ও উত্তম ব্যক্তিদের তুলনায় অধিক জ্ঞানী ও পরহেজগার ব্যক্তিই ইমামতির অধিক হকদার।

ইমাম হলেন অনুসরণীয় ব্যক্তি। সে যখন বসে নামাজ পড়বে, মুক্তাদিগণও বসে নামাজ পড়বে। সে যখন দাড়িয়ে নামাজ পড়বে, মুক্তাদিগণও দাড়িয়ে নামাজ পড়বে।

নামাজে কাঁদাতে কোনো দোষ নেই। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে কিংবা ইনিয়ে বিনিয়ে কাঁদা নিষেধ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন