মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
বিশতম পরিচ্ছেদ: ইহুদী ও খৃষ্টান লেখক কর্তৃক রাসূল হিসাবে স্বীকৃতি দান
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/408/22
১. ন্যায়পরায়ণ ইহুদী পনিডতদের স্বীকৃতিঃ
ইহুদী ও খৃষ্টানদের আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়ার একটি কৌশল হল, তাদের মধ্যে যারা নিরপেক্ষ, ন্যায়পরায়ন তাদের বক্তব্যকে প্রমাণ হিসাবে পেশ করা। যারা সত্য গোপন করেনি, মধ্যপন্থী, আল্লাহ সত্য গ্রহণের তাওফিক তাদের দিয়েছেন ইসলামের সমর্থনে তাদের বক্তব্য ঠিক আল্লাহর বাণী
وَشَهِدَ شَاهِدٌ مِنْ أَهْلِهَا
(তাদের পরিবারের একজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিলো) এর মত। যে সকল ইহুদী আলেম ও পন্ডিতকে খোদ ইহুদীরা তাদের ধর্মের বিদ্বান বলে স্বীকার করত এ ক্ষেত্রে তাদের কয়েকজনের বক্তব্য উপস্থাপন করা হলঃ
আব্দুল্লাহ বিন সাল্লাম রাদিয়াললাহু আনহুঃ
যদি নবী যুগে ইহুদীদের মধ্য থেকে তাদের সর্বসম্মত শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব এবং তাদের শ্রেষ্ঠ নেতাদের শ্রেষ্ঠ সন্তান, তাদের বিজ্ঞ পন্ডিতদের মাঝে শ্রেষ্ঠ পন্ডিতের সন্তান, তাদের খুব প্রিয় ব্যক্তিদের মাঝে প্রিয় ব্যক্তিত্ত্ব ও প্রিয় ব্যক্তির সন্তান ইসলাম গ্রহণের কথা ঘোষণা করে তাহলে পৃথিবীর সকল ইহুদীদের শিক্ষা গ্রহণের জন্য তা ছিল যথেষ্ট। কেমন হবে, যদি তার অনুসরণ করে ইহুদীদের আরো অসংখ্য ধর্মযাজক. পৌরোহিত- পাদী্র? [হিদায়াতুল হায়ারা ফি আজবিবাতিল ইয়াহুদে ওয়ান নাসারা, পৃ ৫১৪-৫২৫।]
ঐ সেরা ব্যক্তিটি ঈমান এনেছেন আল্লাহ ও তার রাসূলের উপর। আনাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ বিন সাল্লাম জেনেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় পদার্পণ করেছেন। তিনি তার সাথে সাক্ষাত করে বললেন, আমি আপনাকে তিনটি প্রশ্ন করব, যার উত্তর নবী ছাড়া অন্য কেহ অবগত নয়। অতঃপর বললেন, ‘কেয়ামতের প্রথম আলামত কি? জান্নাতীদের প্রথম খাবার কি হবে? সন্তানের মাঝে পিতা অথবা মাতার আকৃতি লক্ষ্য করা যায় কেন?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘এ মাত্র জিবরীল আমাকে জানিয়েছেন এর উত্তর।’ ইবনে সাল্লাম বললেন, ‘ফেরেশ্তাদের মাঝে ইনিইতো ইহুদীদের শত্রু।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘কেয়ামতের প্রথম আলামত হল আগুন। যা পূর্ব থেকে মানুষকে ধাবিত করে পশ্চিমে নিয়ে একত্র করবে। আর জান্নাতবাসীদের প্রথম খাবার হবে মাছের কলিজা। আর সন্তানের আকৃতির রহস্য হল, যদি সঙ্গমের সময় পুরুষের বীর্য নারীর পানির উপর প্রাধান্য লাভ করে তবে সন্তান পুরুষের মত হবে আর যদি নারীর পানি পুরুষের বীর্যের উপর প্রভাব লাভ করে তবে সন্তান নারীর আকৃতি পাবে। উত্তর শুনে ইহুদী পন্ডিত আব্দুল্লাহ বিন সাল্লাম বললেন, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন উপাস্য নেই, আর নিশ্চয় আপনি আল্লাহর রাসূল।’ তিনি আরো বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! ইহুদী বড় মিথ্যারোপকারী জাতি। আপনি তাদের জিজ্ঞেস করার আগে তারা যদি আমার ইসলাম কবুলের বিষয়টি জানতে পারে তাহলে আপনার কাছে আমার ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলবে। তাই তারা জানার আগে আমার বিষয় তাদের প্রশ্ন করুন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের ডেকে পাঠালেন। তারা উপস্থিত হওয়ার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হে ইহুদী সম্প্রদায়! আললাহকে ভয় কর। আল্লাহর শপথ করে বলছি, যিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তোমরা জান আমি আল্লাহর সত্য নবী। আমি সত্য কিতাব নিয়ে এসেছি, অতএব তোমরা ইসলাম গ্রহণ কর। তিনবার বলার পরও তারা বলল, ‘আমরা জানিনা।’ অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রশ্ন করলেন, ‘আব্দুল্লাহ বিন সাল্লাম সম্পর্কে তোমাদের মন্তব্য কি?’ তারা বলল, ‘তিনি আমাদের নেতা, নেতার ছেলে, আমাদের মাঝে মহাজ্ঞানী, এবং মহা জ্ঞানীর ছেলে, আমাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ আলেম এবং আলেমের সন্তান।’ রাসূল বললেন, ‘যদি সে ইসলাম গ্রহণ করে তবে তোমারা কি মতামত দেবে?’ তারা বলল, ‘আল্লাহ তাকে এ থেকে রক্ষা করুক, কখনো তার ইসলাম গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’ রাসূল আবার বললেন, ‘যদি সে ইসলাম গ্রহণ করে তবে তোমারা কি মতামত দেবে?’ তারা বলল, ‘আল্লাহ তাকে এ থেকে রক্ষা করুক, কখনো তার ইসলাম গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’ রাসূল আবার বললেন, ‘যদি সে ইসলাম গ্রহণ করে তবে তোমারা কি মতামত দেবে?’ তারা বলল, ‘আল্লাহ তাকে এ থেকে রক্ষা করুক, কখনো তার ইসলাম গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’ নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হে ইবনে সাল্লাম বেরিয়ে এসো!’ আব্দুল্লাহ বিন সাল্লাম তাদের সম্মুখে এলেন অতঃপর ঘোষণা করলেন ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন উপাস্য নেই, আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল। হে ইহুদীরা আললাহকে ভয় কর! আল্লাহর শপথ করে বলছি, যিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, নিশ্চয় তোমরা জানো মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল, এবং তিনি সত্য নিয়ে আগমন করেছেন।’ তারা বলল, ‘তুমি মিথ্যা বলেছ। এ ব্যক্তি আমাদের মধ্যে নিকৃষ্ট এবং নিকৃষ্টের সন্তান।’ তারা এভাবে বলেই চলল। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বের করে দিলেন। [সহীহ আল - বুখারী, ৩৩২৯, ৩৯১১,৪৪৮০, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ২১০/৩।]
আব্দুল্লাহ বিন সাল্লাম হতে বর্ণিত, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় আগমন করলে লোকেরা তার দিকে দ্রুত ধাবিত হলো এবং বলতে লাগল, ‘আল্লাহর রাসূল আগমন করেছেন! আল্লাহর রাসূল আগমন করেছেন!! আল্লাহর রাসূল আগমন করেছেন!!!’ আমিও তাকে দেখতে মানুষের সাথে শামিল হলাম। অতঃপর তার মুখ মন্ডলের দিকে তাকিয়ে বুঝে ফেললাম যে, এটা কোন মিথ্যাবাদীর চেহারা হতে পারে না। তখন তার মুখ থেকে প্রথম যে কথা শুনলাম তা হল, ‘হে লোক সকল! সালামের প্রসার কর। মানুষকে আহার দাও। আত্মীয়তার বন্ধনকে অটুট রাখ। মানুষ যখন ঘুমে থাকে তখন নামায পড়। তাহলে নিরাপদে আল্লাহর জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ [ইবনে মাজা, ৩২৫১, তিরমিযি, ২৪৮৫।]
আল্লাহ তাআলা এ রাববানী, ধার্মিক আলেম আব্দুল্লাহ বিন সাল্লামের প্রশংসা করেছেন। সাআদা বিন আবু ওয়াক্কাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘যমীনে বিচরণকারী কারো ব্যাপারে ‘লোকটি জান্নাতবাসী’ বলতে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শুনিনি, তবে আব্দুল্লাহ বিন সাললামের ব্যাপারে বলেছেন [প্রমাণিত যে, নবী স. আরো অনেকের ব্যাপারে জান্নাতবাসী বলে সুসংবাদ দিয়েছেন, তম্মধে আশারা মুবাশি্শরা, কারো কারো মত হলো সা’দ বিন আবু ওয়াক্কাসের উ&&দ্দশ্য ছিল তখনকার সময় যারা জীবিত তারা। কারণ আব্দুল্লাহ বিন সাল্লাম তাদের পর ও জীবিত ছিলেন। আশারা মুবাশি্শরার মধ্যে তার সময় সা’দ ও সাঈদ ছাড়া আর কেহ অবশিষ্ট ছিল না। তাছাড়া ‘যারা যমীনে বিচরণ করছেন ’ এ উক্তিটি সা’দা বিন আবু ওয়াক্কাস রা. এর নিজস্ব মন্তব্য। ফাতহুল বারি ১২৯-১৩০/৭।] এবং বলেনঃ
‘বনী ইসরাঈলের একজন এর অনুরূপ সাক্ষ্য দিল।’ আয়াতটি তার ব্যাপারে অবর্তীণ হয়েছে।
২.যায়েদ বিন সুয়ানাহ- ইহুদী পাদ্রীঃ
তিনি বললেন, নবুওয়াতের যত আলামত আছে, সবগুলো আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মধ্যে পেয়েছি যখন তার চেহারায় দৃষ্টি দিলাম। তবে দুটি আলামত সম্পর্কে তাকে যাচাই করা বাকি থেকে যায়। তা হলঃ
১. অজ্ঞতার উপর তার ধৈর্য প্রাধান্য পেয়ে থাকে, ২. তার প্রতি অজ্ঞতাপুর্ন আচরণ তার মাঝে অজ্ঞতাকে বৃদ্ধি না করে সহিষ্ণুতাকে প্রবল করে। এ দুটিও যাচাই করার পর আমি আমার গন্তব্য পেয়ে যাই। হে উমার! তুমি সাক্ষী থাক, আমি আললাহকে রব, ইসলামকে ধর্ম, এবং মুহাম্মাদকে নবী হিসাবে গ্রহণ করে সন্তুষ্ট হলাম। তোমাকে আরো সাক্ষী করছি, আমার প্রচুর সম্পদ রয়েছে, তার অর্ধেক উম্মতে মুহাম্মাদীর জন্য দিয়ে দিলাম। উমার রা. বললেন, তোমার এ দান উম্মতে মুহাম্মাদীর অংশ বিশেষের উপর নয় কি? কারণ তুমি তো সবাইকে পাবে না। আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, কিছু অংশের উপর।’ অতঃপর আমরা উভয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হলাম। বললাম, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন উপাস্য নেই, আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।’
এ যায়েদ বিন সুয়ানাহ রাসূলের প্রতি ঈমান আনলেন। তাকে সত্যায়ন করলেন। তার কাছে দীক্ষা নিলেন এবং তার সাথে অনেক যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করলেন। অতঃপর তাবুক অভিযানে থাকা অবস্থায় মৃত্যু বরন করেন। [মাজমাউয যাওয়াদে ২৩৯,২৪০/৮।]
৩. যে ইসলাম গ্রহণ করল মৃত্যুর সময়ঃ
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবু বকর রা. উমার রা. একজন ইহুদী আলেমের নিকট আসলেন। যে ছিল তাওরাতের প্রচারক। সে তার প্রিয় সন্তানের মৃত্যু শয্যায় শোকে সান্তনা স্বরূপ তাওরাত পাঠ করছিলো। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমাকে ঐ আল্লাহর শপথ করে বলছি, যিনি তাওরাত নাযিল করেছেন, তুমি কি তোমার কিতাবে আমার গুণাবলি ও মক্কা হতে আমাকে বের করে দেওয়া সম্পর্কে তথ্যাবলী পেয়েছো?’ সে মাথা দিয়ে ইংগিত করে বলল, ‘না।’ তার ছেলে বলল, ‘হায়! যিনি তাওরাত নাযিল করেছেন তার শপথ করে বলছি, ‘আমরা আপনার গুণাবলি ও আপনাকে দেশ থেকে বহিস্কার করে দেয়ার বিষয় তাওরাতে পেয়েছি। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন উপাস্য নেই, এবং নিশ্চয় আপনি আল্লাহর রাসূল।’ এরপর সে মৃত্যু বরণ করল। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘ইহুদীকে তোমাদের ভাই থেকে পৃথক করে দাও তারপর এর কাফনের ব্যবস্থা করা হলো, তাকে সুগনিদ্ধ মাখানো হলো এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযা আদায় করেন।’ [মুসনাদে আহমদ ৪১১/৫ ইবনে কাসির ২৫৫/২।]
এ তিনটি ঘটনা যা উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করা হল, এগুলোতে ইহুদী ধর্মযাজকদের এ স্বীকৃতি রয়েছে যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্য, এবং তার গুণাবলি তাওরাতে উল্লেখ রয়েছে। এবং ইহুদী সম্প্রদায় তাদের ছেলে মেয়েকে যে রূপ চিনতে পারে অনুরূপ তারা চিনে নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে। আল্লাহ বলেনঃ
‘‘বল, সত্য তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে প্রেরিত; সুতরাং যার ইচ্ছা বিশ্বাসকরুক এবং যার ইচ্ছা প্রত্যাখ্যান করুক।’’
৪.ইহুদীদের মধ্য থেকে যে মৃত্যু শয্যায় মুসলমান হলোঃ
আনাস রা.হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একজন ইহুদী যুবক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমত করতো সে অসুস্থ হলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখার উদ্দেশে এসে মাথার পাশে বসলেন এবং তার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘ইসলাম গ্রহণ কর।’ যুবকটি তার পিতার দিকে তাকালো। পিতা বলল, ‘আবুল কাসেম (মুহাম্মাদ) এর আনুগত্য কর’ যুবকটি মুসলমান হয়ে গেল। নাসায়ীর বর্ণনা মতে- অতঃপর যুবকটি বলল, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন উপাস্য নেই আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল।’ অতঃপর নবী কারীম বেরোবার সময় বললেন, ‘সমস্ত প্রসংশা আল্লাহর জন্য যিনি তাকে আগুন থেকে রক্ষা করলেন।’ [সহীহ আল - বুখারী ১৩৫৭,৫৬৫৭।]
দ্বিতীয়তঃ ন্যায়পরায়ণ খ্রিষ্টান পন্ডিতের থেকে স্বীকৃতিঃ
আল্লাহর দিকে আহবানের কৌশলের মধ্যে, একটি হলো খ্রিষ্টানদেরকে আল্লাহর দিকে আহবানের সময় তাদের ন্যায়পরায়ন আলেম-পন্ডিতদের স্বীকৃতিকে এবং তাদের মধ্যে যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে তাদেরকে প্রমাণ হিসাবে উপস্থাপন করা। এটা
وَشَهِدَ شَاهِدٌ مِنْ أَهْلِهَا ﴿২৬﴾ سورة يوسف
‘পরিবারের একজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিল’ এর মত।
এখানে কতিপয়ের বিবরণ দেয়া হলঃ
১. নাজ্জাসী- ইথিওপিয়ার সম্রা্ট
জাফর বিন আবু তালেব রা. যখন নাজ্জাসীর সামনে সূরা মারইয়ামের প্রথম থেকে পাঠ করলেন। নাজ্জাসী এমিনভাবে কেঁদে ফেলে যে চোখের পানিতে তার দাঁড়ি ভেজে যায় এবং তার পরিষদবর্গও তেলাওয়াত শুনে কেঁদে ফেলে। নাজ্জাসী প্রতিনিধিকে বলেছিলো, ‘তোমাদের সাথি মুহাম্মাদ ঈসা ইবনে মারইয়াম সম্পর্কে কি বলে?’ জাফর বললেন, ‘তার বিষয় তিনি বলেন যা কোরআনে আছে, ‘ঈসা আল্লাহর রূহ, এবং তার কালেমা। আল্লাহ তাকে পাঠিয়েছেন বাতুল- কুমারী মারিয়ামের মধ্যে- যাকে কোন পুরুষ স্পর্শ করেনি।’ অতঃপর নাজ্জাসী একটি লাঠি উত্তোলন করলো এবং বললোঃ ‘ওহে পুরোহিত ও সাধু সন্ন্যাসী সম্প্রদায়! তোমরা ঈসা সম্পর্কে যা বল তা এরচেয়ে বেশি কিছু নয়।’ এবং প্রতিনিধিকে বলল, ‘শুভেচ্ছা তোমাদেরকে এবং তোমরা যার নিকট থেকে এসেছো তাকেও শুভেচ্ছা। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি তিনি আল্লাহর রাসূল। আর তিনি সেই ব্যক্তিত্ব যার ব্যাপারে ঈসা সুভ সংবাদ দিয়েছে। যদি আমি রাজত্ব পরিচালনার দায়িত্বে না থাকতাম তাহলে অবশ্যই আমি তার নিকট আসতাম এবং তার পাদুকায় চুমো খেতাম।’ [সিয়ার আ’লামীন নুবালা ৪২৮-৪৪৩।]
২. সালমান আল- ফারেসী রা.
সালমান আল- ফারেসীর ঘটনাতো আশ্চর্য জনক। তিনি খ্রিষ্টানদের একদল বড় জ্ঞানীদের মাঝে জীবন যাপন করছিলেন। যখন তিনি ঐ আলেমদের মধ্যে সর্বশেষ আলেমের সাথে রোমের আমুরিয়াতে ছিলেন, তার মৃত্যু সন্নিকটে এলে সে সালমান আল ফারেসীকে এ বলে অন্তিম উপদেশ দিল যে, ‘পবিত্র ভূমি থেকে প্রেরিত, এমন একজন নবীর যুগ তুমি পাবে, যার হিজরতের স্থান হবে দুই পাহাড়ের মধ্য দিয়ে একটি অনুর্বর ভূমির খেজুর গাছ বিশিষ্ট একটি অঞ্চলের দিকে। তার মধ্যে নবুওয়তের অনেক আলামত থাকবে। দুই স্কন্দের মধ্য স্থানে নবুওয়তের সীলমোহর থাকেব। তিনি উপহার গ্রহণ করবেন। তবে সাদকা খাবেন না। অতএব তোমার যদি ঐ শহরে যাওয়ার সুযোগ হয়, তবে তুমি তাই কর। কারণ তুমি তার নবুওয়ত কালের একেবারে সন্নিকটে।’
সালমান আল-ফারেসী যাত্রা করলো এবং সে সব আলামাত প্রত্যক্ষ করলো যা তাকে বলা হয়েছে অতঃপর,সে ইসলাম গ্রহণ করলো। [সিয়ার আ’লামীন নুবালা৫০৯-৫১০/১।]
৩.রোম সম্রা্ট হিরাক্লিয়াসঃ
পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যের সম্রাট হিরাক্লিয়াস (Heraclius) আবু সুফিয়ানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে বললঃ ..... আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘সে প্রতারণা করে কিনা?’ তুমি বললে, ‘না।’ রাসূলগণ এমনি হন তারা প্রতারণা করেন না। তোমাকে প্রশ্ন করলাম, তিনি কি করতে আদেশ করে? তুমি বললে, ‘তিনি আদেশ করেন আল্লাহর বন্দেগী করতে, তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করতে এবং নিষেধ করেন মূতির্র আরাধনা হতে। আর আদেশ করে নামায আদায় করতে, সত্য বলতে, নীতি নৈতিকতার উপর চলতে।’
তুমি যা বলেছো তা যদি সত্য হয়, তবে তিনি আমার দু’ পায়ের অংশটুকু পর্যন্ত অধিকার করবেন। আমি তার আগমন সম্পর্কে জানতাম। তবে তিনি তোমাদের মধ্য থেকে আসবে বলে ধরণা করিনি। যদি আমি তার কাছে পৌঁছতে সক্ষম হবো বলে মনে করতাম, তবে অবশ্যই সাক্ষাতের চেষ্টা করতাম। যদি আমি তার কাছে উপস্থিত হতাম, তাহলে অবশ্যই আমি তার কদম ধুয়ে দিতাম।’ [সহীহ আল - বুখারী, ০৭, ১৭৭৩।] অতঃপর বললেন, ‘হে রোমানগণ! যদি তোমাদের সুপথ ও কামিয়াবী কামনা কর, এবং তোমাদের রাজ্য স্থিতি কামনা কর? তবে এই নবীর বাইয়াত গ্রহণ কর।’ কিন্তু হিরাক্লিয়াস রাজ্য আকঁড়ে থাকতে চাইলো, ত্যাগ করতে চাইলো না। তাই ইসলাম গ্রহণ করতে পারেনি।
এ সব ঘটনা প্রমাণ বহন করে যে, আহলে কিতাবের ন্যায়পরায়ণ ও নীতিবানরা আল্লাহর রাসূলের জন্য প্রস্ত্তত ছিলো, এবং তিনি যে আল্লাহর সত্য রাসূল তা স্বীকার করেছিল। তাই পরবর্তীতে কোন মিথ্যাবাদীর মিথ্যা বা ছিদ্র অনুসন্ধান গ্রহণ যোগ্য নয়। [হিদায়াতুল হিয়ারা ৫২৫।]
খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিরাট একদল ইসলাম গ্রহণ করেছে, এবং সাক্ষ্য দিয়েছে যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল সমগ্র মানুষের জন্যই। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘‘তাদের মধ্যে বহু জ্ঞানপিপাসু আলেম এবং বহু সংসার বিরাগী দরবেশ রয়েছে, আর এই কারণে যে, তারা অহংকারী নয়।’’ [সূরা মায়েদা, ৮২।]
তাই যুক্তির কথা হলো সকল খ্রিষ্টানগণ তাদের ন্যায়পরায়ণ, সত্যানুরাগী, ধর্মপ্রাণ বিদ্বানদের পথ অনুসরণ করবে এবং তারা আল্লাহর আনুগত্য করবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/408/22
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।