hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতন অতীত বর্তমান (সালাহউদ্দীন আইউবীর আবির্ভাব পূর্ব ইসলামি বিশ্ব ও বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা)

লেখকঃ মুহাম্মদ আল আবদাহ

১১
৫. প্রতিরোধে দুর্বল সাড়া
এহেন দুর্বলতা আর নানা দলে বিভক্ত হওয়ার কারণে এবং এসব অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাত আর বাতেনী সম্প্রদায়ের বিপর্যয়ের ফলে ইংরেজ আর ক্রুসেডাররা যখন সিরিয়ায় হামলা চায়, তখন বাগদাদ আর অন্যান্য স্থানের মুসলমানরা তাদের ভাইদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারেনি। ক্রুসেডাররা যখন বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত পৌঁছে যায়, মুসলিম জাহান তখনও এসব ঘটনা থেকে দূরে জীবন যাপন করছিল। যেন তাদের কর্ণ বোধির হয়ে আছে। ঠিক অবিকল অনুরূপ ঘটনাই আজ ঘটছে। আজ ইহুদিরা যখন বায়তুল মুকাদ্দাস অধিকার করে নেয়, তখন দূরের বা নিকটের কোন দেশেরই চৈতন্যোদয় হয় না। তারা কেবল প্রতিবাদ করা আর জাতিসংঘ বা বিশ্ব জনমতের নিকট নিন্দা জ্ঞাপন করাই যথেষ্ট মনে করে। ইহুদিরা ফিলিস্তিনী যুবকদের হাত গুঁড়িয়ে দিচ্ছে- এ দৃশ্য কারো অন্তরে নাড়া দেয় না। এ দুর্বল জবাব আর দুর্বল প্রতিবাদ ইতিহাসের ঘটনায় রেকর্ড হয়ে রয়েছে। অথবা আমরা বলতে পারি যে, আদৌ এ সব ঘটনার কোন জবাবই দেয়া হয়নি। হিজরী ৩৬১ সালে যাজীরা অঞ্চলের আর-রাহা নগরীতে রোমানরা হামলা চায়। নগরীর অধিবাসীদের একটা প্রতিনিধি দল বাগদাদ গমন করে রোমের হামলা সম্পর্কে অবহিত করে। বিষয়টা জানাবার জন্য বাগদাদের কিছু বিশিষ্ট বুয়াইহী শাসক বখতিয়ারের নিকট গমন করে তাকে শিকারে মত্ত দেখতে পেয়ে প্রতিবাদ জ্ঞাপন করে ফিরে আসেন।

রোমানদের সঙ্গে জিহাদ শুরু হলে মুসলিম শাসক ইমরান ইবনে শাহিন জিহাদে অংশগ্রহণ করতে অস্বীকার করে। তখন বখতিয়ার এমন ভাব দেখান যে, তিনি জিহাদে গমন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং খলিফার নিকট বিপুল অর্থের দাবি পেশ করেছেন। অথচ তিনি জানেন যে, অর্থ খলিফার হাতে নয়, বরং তাঁর হাতে রয়েছে। এ আহবানে সাড়া দিয়ে খলিফা তার গৃহের আসবাবপত্র বিক্রয় করার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেন। কিন্তু বখতিয়ার সেসব অর্থ নিজের বিশেষ প্রয়োজনের কাজে ব্যয় করেন। ফলে জিহাদ সম্পর্কে কোন আলোচনাই হয়নি।1

ক্রুসেড যোদ্ধারা শাম দেশে উপনীত হলে ত্রিপোলীর শাসনকর্তা কাজি আবু আলী ইবনে আম্মার দ্রুত ছুটে এসে বাগদাদ গমন করেন এবং শাম দেশ মুক্ত করার জন্য মুসলমানদের সাহায্য কামনা করেন। জিহাদের আহবান জানিয়ে তিনি বাগদাদের মসজিদে খুতবা দেন। জনগণ উদ্দীপ্ত হয়ে প্রস্ত্ততি নেয়। সুলতান তাকে সৈন্য প্রেরণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু কার্যত: কিছুই করা হয়নি। ফলে কাজি ত্রিপোলী ফিরে এসে দেখতে পান যে, মিশরের অধিপতি ওবায়দীরা (ফাতেমী) ইংরেজদের বিরুদ্ধে সাহায্য করার পরিবর্তে উল্টো তাঁর শহরটা অধিকার করে নিয়েছে।2

ক্রুসেড যোদ্ধারা বায়তুল মুকাদ্দাস অধিকার করে নেয়ার পর জনগণ অস্থির হয়ে ঊর্ধ্ব শ্বাসে ইরাক ছুটে যায়। তারা বায়তুল মুকাদ্দাসে ক্রুসেডারদের বর্বরতা আর রক্তপাতের বিবরণ পেশ করলে খলিফা ফকীহদেরকে বহির্গত হয়ে জিহাদের জন্য প্রস্ত্তত হতে শাসকদেরকে উদ্বুদ্ধ করেন। জনগণের মধ্যে ছুটোছুটি আর হৈ-চৈ শুরু হয়। অনেক কথাবার্তাও হয়। কিন্তু এসব কোন কাজে আসেনি।3 আমি বিশ্বাস করি না যে, এটা খলিফা বা আলেম সমাজের একটা অভিনয় মাত্র। কিন্তু যে দুর্বলতা আর গভীর সু সুপ্তি মুসলিম জাহানের উপর চেপে বসেছিল, তা তাদেরকে উপযুক্ত প্রস্তাব গ্রহণ করে তা কার্যকর করতে ইতস্তত করে তোলে। ফলে বড় কাজে হাত দিতে তারা বিরত থাকে। হিজরী ৫০৪ সালে বাগদাদের আলেমগনসহ কিছু লোক জিহাদের উদ্দেশ্যে সিরিয়া গমন করার জন্য প্রস্ত্ততি নেয়। কিন্তু ইংরেজদের সংখ্যাধিক্যের কথা জানতে পেরে তাদের অধিকাংশ পথিমধ্য থেকে ফিরে যায়।4

হিজরী ৪৯২ সালের ঘটনাবলী সম্পর্কে ঐতিহাসিক ইবনুল আসীর বলেন . সিরিয়া থেকে যারা ফিরে আসে, তারা রমজান মাসে বাগদাদে কাজি আবূ সায়াদ হারবীর সান্নিধ্যে উপস্থিত হয়। তারা দফতরে এমন কথাবার্তা বলেন, যাতে অনেকের চক্ষু অশ্রুসিক্ত হয়। অনেক অন্তর ব্যথিত হয়। তারা জুমার দিন জামে মসজিদে সমবেত হয়ে ফরিয়াদ জানায়। তারা নিজেরাও ক্রন্দন করে আর অন্যদেরকেও কাঁদায়। পবিত্র নগরী (বায়তুল মুকাদ্দাসে) অকস্মাৎ মুসলমানদের উপর যে বিপদ আপতিত হয়েছে, যেমন পুরুষদেরকে হত্যা করা, নারী আর শিশুদের বন্দী করা, অর্থ- সম্পদ লুণ্ঠন করা ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। তখন খলিফা কাজি দামগানী, আবু বকর শাশী এবং আবুল ওয়াফা ইবনে আকীল হাওয়ান সফর করে আসার নির্দেশ দেন। কোন উদ্দেশ্য সিদ্ধি ছাড়াই তারা সফর করে ফিরে আসেন।5

হিজরী ৫০৫ সালে সালজুক সুলতান সিরিয়ায় মুসলমানদের সহায়তা করার জন্য উদ্দীপ্ত হন। আমির মওদুদসহ অন্যান্য আমিরদের নেতৃত্বে এক বিশাল বাহিনী প্রস্ত্তত করা হয়। এসব আমীরদের মধ্যে ছিলেন তাবরীযের শাসনকর্তা সাকমান আল- কুতবী, মারাগা অঞ্চলের শাসক আহমদীল, মারদিন- এর শাসনকর্তা আমির এলগানী। এ বাহিনী ইংরেজদের নিকট থেকে কিছু দুর্গ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়। কিন্তু অধিকাংশ আমির নিজেদের উপর বিপদ পতিত হওয়ার আশঙ্কায় ফিরে আসেন। এছাড়াও বাতেনী সম্প্রদায়ের লোকেরা আমির মওদুদকে দামেশকের উমা-ইয়া মসজিদের অভ্যন্তরে হত্যা করে। দুর্বল প্রতিরোধের আরো দৃষ্টান্ত দেওয়া যায়। এক্কা প্রাচীরের আশ-পাশে তীব্র লড়াই চলছে। সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ুবী দেখতে পেলেন যে, এক্কা প্রাচীরের অভ্যন্তরের মুসলমানরা দীর্ঘ অবরোধের ফলে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তিনি তাদের কষ্ট লাঘব করতে চাইলেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি মুওয়াহহেদীন শাসনাধীন ‘মাগরেব’ অঞ্চলের শাসক আবু ইয়াকুব ইউসুফ ইবনে আব্দুল মু'মেনের নিকট একটা পয়গাম প্রেরণ করে। পয়গামে তিনি সাহায্য-সহায়তা কামনা করে। বিশেষ করে নৌবহর কামনা করেন, যাতে এক্কায় যুদ্ধরত ইংরেজরা সাহায্য না পায়। আবু ইউসুফের নিকট পয়গাম পৌঁছে। কিন্তু তিনি ক্রুদ্ধ হয়ে সহায়তা দানে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেন। কারণ, সুলতান সাহউদ্দিনের পয়গামে তাঁকে আমীরুল মু'মেনীন বলে সম্বোধন করেননি।

বায়তুল মুকাদ্দাস দখল করে নেয়ার পর মিশরের ওবায়দী শাসকদের প্রতিক্রিয়া কেমন হয়েছিল? তাদের উজির আকম ইবনে বদর জামী ক্রুসেড যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সৈন্য প্রেরণ করেন। আসকানে সৈন্যদের উপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে হত্যা করে এবং আফজলের সৈন্যদের ক্যাম্পে যা কিছু ছিল, সব লুট করে নিয়ে যায়। উজির আফজলের সৈন্যরা পরাজিত হয়। কারণ, তারা যুদ্ধের জন্য তখন প্রস্ত্তত ছিল না। ফলে সৈন্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বন-জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। এ ঘটনা আমাদের ১৯৬৭ সালে আরব- ইসরাইল যুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এ যুদ্ধে মিশরীয় সৈন্যরা ঊর্ধ্বশ্বাসে সিনাই প্রান্তরের দিকে ছুটে যায়। কারণ নেতৃত্ব তখন যুদ্ধের জন্য প্রস্ত্তত হয়নি। ফলে খোলা প্রান্তরে মিশরীয় সৈন্যদের প্রতি গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। এটা ছিল নিছক এক ধরনের রাজনৈতিক চালবাজি।

এ দুঃখজনক অবস্থার জন্য কাজি আবুল মুজাফফর আবিয়ুর্দী অশ্রুপাত করে বায়তুল মুকাদ্দাসের জন্য শোক গাঁথা রচনা করেন। এ শোকগাথায় তিনি মুসলমানদেরকে জিহাদের জন্যও উদ্বুদ্ধ করেন .

مزجنا دماءً بالدموع السواجمفلم يبق منا عُرضةٌ للمراحمِ

وشرُّسلاح المرء دمعٌ يفيضُهإذالحربُ شُبَّت نارها بالصوارمِ

فإيهاً بني الإسلام إنّ وارءكموقائعَ يُلحقن الذُرّى بالمناسمِ

أتهويمة فى ظل أمن وغبطةوعيش كنوّار الخميلة ناعمِ

وإخوانكم بالشام يضحى مقيلُهمظهورَ المذاكى أو بطون القشاعمِ

تسومُهم الرومُ الهوانَ وأنتمُتجرُّون ذيلَ الخفضِ فعـلَ المسالمِ

أرى أمتي لا يُشرعون الى العدىرماحَهُمُ والدينُ واهى الدعائمِ

فليتَهُمُ إذلم يذودوا حميةًعن الدين، ضَنُّوا غيرةً بالمحارمِ

অশ্রু আর পানি আমরা একাকার করেছি।

কাজেই আমাদের পক্ষ থেকে আর দয়ার কোন সুযোগ নেই।

যুদ্ধের আগুন যখন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে,

তখন মানুষ যে অশ্রু প্রবাহিত করে,

তা-ই হল সবচেয়ে নিকৃষ্ট অস্ত্র।

সুতরাং হে ইসলামের সন্তানরা! তোমাদের পেছনে রয়েছে

এমন সব ঘটনাপ্রবাহ, যা প্রাণীর সঙ্গে সংযোগ ঘটায় অশ্রুর।

তুমি কি শান্তি ও নিরাপত্তার ছায়াতলে তা কামনা করছ ?

কামনা করছ তুমি সুখ- স্বাচ্ছন্দ্যের জীবনে তা, যেন বৃক্ষের ছায়ায় আলোর মতো।

আর তোমাদের ভ্রাতারা শাম দেশে বিসর্জন দিচ্ছে তাদের বিশ্রাম,

জবাইকারীর পৃষ্ঠ বা বড় বড় উদরের মতো।

লাঞ্ছিত রোম তাদেরকে লক্ষ্যস্থলে পরিণত করছে আর তোমরা ;

আছ বিনয়ীর বেশে সন্ধি স্থাপনকারীর মতো আচরণ করে।

আমি দেখছি আমার লোকদেরকে, তারা ছুটছে না শত্রু-পানে,

তাদের তীর-বর্শা, যখন কিনা দীনের ভিত্তি নিতান্ত দুর্বল।

যদি তারা না হতো, তবে দীনের প্রতিরোধ হতো না।

তবেতো ঈর্ষাকাতর হয়ে তারা কৃপণতা করতো হারাম কর্মে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন