hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতন অতীত বর্তমান (সালাহউদ্দীন আইউবীর আবির্ভাব পূর্ব ইসলামি বিশ্ব ও বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা)

লেখকঃ মুহাম্মদ আল আবদাহ

২৭
১. আস্থা পুনঃ প্রতিষ্ঠা
আররাহা অঞ্চল বিজয় ও আস্থা স্থাপন

উজির নিযামুল মুলক জ্ঞান সাধনা আর মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন এবং যোগ্যতর ব্যক্তিদেরকে শাসক নিযুক্ত করার জন্য সেলজুক শাসকদেরকে উদ্বুদ্ধ করেন। কিছুটা বিলম্বে হলেও উজির নিযামুল মুলুকের এসব কার্যক্রমের সুফল দেখা দেয়। হিজরী পঞ্চম শতাব্দীর শুরুত্বে ইমাদুদ্দীন জঙ্গি ইবনে আক সংকার কাজি বাহাউদ্দীন শহরজুরীর ওয়াজে উদ্বুদ্ধ হয়ে ‘মুসেল’ অঞ্চলের শাসনভার গ্রহণ করেন। নুরুদ্দিন জঙ্গি যোগ্যতা ও দৃঢ়তার সঙ্গে শাসনকার্য পরিচালিত করেন এবং জিহাদের সূচনা করেন, যা ফল দান করে। তদীয়-পুত্র নূরুদ্দীন মাহমুদ অতঃপর সালাহউদ্দীন ইউসুফের হাতে এর শুভ-ফল দেখা দেয়। দ্বীনদারী, বীরত্ব আর ইসলামের কল্যাণ কামনার দিক থেকে এ দু’জন শাসনকর্তা অন্যতম সেরা মুসলিম শাসক।

উজির নিযামুল মুলক এবং আলেম সমাজ সংস্কার আর সংশোধন প্রচেষ্টায় যেসব কাজ করেন, তা ছিল পানির বিন্দুর মতো, যা মাটির ফাটলের মধ্যে বিন্দু বিন্দু পানি মরীচিকার মতো চিক চিক করে; অতঃপর একত্র হয়ে স্বচ্ছ পানির ফোয়ারা সৃষ্টি করে। মুসলিম মিল্লাত তার দুর্বলতার যুগেও জিহাদের ডাকে সজীব ও সতেজ হয়ে উঠে। তার অনুভূতির গভীরে বান ডাকে, উচ্চাভিলাসের জন্য তাকে করে তোলে জাগ্রত। ত্রিপোলির শাসনকর্তা কাজি ফখরুল মুলক আবু আলী ইবনে আম্মার জিহাদের আহবান নিয়ে বাগদাদ আগমন করলে খলিফা তার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরকে প্রেরণ করেন তাঁকে অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করার জন্য। তারা তাঁর সঙ্গে মিলিত হয়ে তাঁকে যোগ্য আসনে বসান। সেলজুক শাসনকর্তাও অনুরূপ কাজ করেন। তাঁর সঙ্গে যে আচরণ করা হয় অন্য কোন শাসকের সঙ্গে তেমন আচরণ করা হয়নি। এ সবতো ছিল দুনিয়ার জিহাদের ফল। আর আখেরাতের ফলতো আরো অনেক বড়।1

ইমাদুদ্দীন জঙ্গি ও ‘আররাহা’ অঞ্চল পুনরুদ্ধার

সুলতান মুহাম্মদ সেলজুকীর শাসনামলে ইমাদুদ্দীন জঙ্গি বাগদাদে পুলিশ বাহিনীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মুসেল এর শাসনকর্তা মাসউদ ইবনুল বারসাকীর ইন্তিকাল হলে কাজি বাহাউদ্দীন শহরজুরী এবং সালাহউদ্দীন মুহাম্মদ সুলতানের নিকট আবেদন জানান, ইমাদুদ্দীনকে মুসেলের শাসনকর্তা নিযুক্ত করার জন্য। সুলতান তাঁর যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে পেরে এ প্রস্তাবে একমত হন।

ইমাদুদ্দীন জঙ্গি অল্প সময়ের মধ্যে জাযিরার অধিকাংশ অঞ্চলকে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হন। অতঃপর তিনি সিরয়ির প্রতি মনোনিবেশ করেন এবং কিছু দুর্গ অধিকার করে নেন। রোম আর ফিরিঙ্গিরা ইমাদুদ্দীনের কর্মকান্ড দর্শন করে হালব অবরোধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ইমাদুদ্দীন জঙ্গি তাদের সংখ্যার প্রতি দৃষ্টি না দিয়ে হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে তাদের নিকটেই অবস্থান গ্রহণ করেন। এবং কাজি কামালুদ্দীন শহরজুরীকে বাগদাদে সুলতান মাসউদের নিকট প্রেরণ করেন তাকে বাস্তবতা সম্পর্কে অবহিত করে তাঁর নিকট সাহায্য কামনার জন্য। ইমাদুদ্দীনকে সুলতানের সৈন্যদের সাহায্য কামনা সম্পর্কে ভীতি প্রদর্শন করে কাজি বললেন . সুলতানের সৈন্যরা আগমন করলে তাকে প্রমাণ হিসাবে গ্রহণ করবে এবং শহরের মালিক হবে। তখন ইমাদুদ্দীন জঙ্গি বলেন . এই দুশমনদের লোভ হচ্ছে আমার সম্পর্কে। দুশমনরা হালব অধিকার করলে শাম দেশে আর ইসলাম অবশিষ্ট থাকবে না। সর্বাবস্থায় হালব অধিকার করার জন্য কাফেরদের চেয়ে মুসলমানরাই বেশি যোগ্য।2

জঙ্গির উক্তি তাঁর পূর্ববর্তী শাসনকর্তাদের উক্তির চেয়ে ভিন্ন। কাফেরদের সাহায্য-সহায়তা গ্রহণ করে হলেও শাসন কর্তৃত্ব লাভে তারা ছিল চরম লোভী। আমরা দেখতে পাই যে, জঙ্গি সুলতানের সাহায্য নিয়ে হালব মুসলিম অধিকারে আনতে বাধ সাধেননি। হিজরী ৫২২ সনে হালব শহরকে আত্মসমর্পণ করাতে জঙ্গি সক্ষম হন। এভাবে ফিরিঙ্গিরা একজন শক্তিশালী ব্যক্তির মুখোমুখি দাঁড়ায়। যার পক্ষে সৈন্য আর সম্পদ সংগ্রহ করা সম্ভব। অবস্থা স্বাভাবিক হলে সে দেখতে পায় সে, সব কিছু ঠিকঠাক, তখন ফিরিঙ্গিদের মুখোমুখি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং আসারির দুর্গ অধিকারের চেষ্টা চালায়। হালব ও আন্তাকিয়ার মধ্যস্থলে ছিল এ দুর্গের অবস্থান। আর এটা এজন্য যে, তা ছিল মুসলমানদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। দুর্গ অবরোধ করে ক্রুসেডাররা অশ্বারোহী এবং পদাতিক বাহিনী নিয়ে বহির্গত হয়। বিজয় মুসলমানদের পদ চুম্বন করে। ক্রুসেডারদের সাথে এটা ছিল মুসলমানদের প্রথম সংঘাত। হারেম দুর্গ বাসীরা ভীত হয়ে মুসলমানদের সঙ্গে সমঝোতা করে নেয়। তখন থেকে জমানা অনেক দূর এগিয়ে যায়। এসব কাজে মুসলমানরা শক্তিশালী হয়। কাফেরদের শক্তি খর্ব হয়। তারা বুঝতে পারে যে, দেশে এমন কিছু ঘটেছে, যা ধারণা- কল্পনাও করা যায়নি।

তারা সব কিছুর মালিক হবে- এমন আশা করার পরও ছোটরাই তাদের হাতের সব কিছুর মালিক হতে সক্ষম হয়।3 হিজরী ৫৩২ সনে রোমানরা বিশাল বাহিনী নিয়ে অগ্রসর হয়। ফিরিঙ্গিরাও ছিল তাদের সঙ্গে। হালবের আশপাশের অঞ্চলের উপর তারা কর্তৃত্ব স্থাপন করে। অতঃপর তারা সিজার শহর অবরোধ করে। সিজার শহরের অধিপতি সুলতান ইবনে মুনকিস আল-কিনানী জঙ্গির নিকট সাহায্য কামনা করে দূত প্রেরণ করেন। তিনি আসেন এবং তার সাহায্যে দাঁড়ান। প্রতিদিন রোমানদের পক্ষ থেকে বাহিনী প্রেরিত হয়। তারা বলে . খোলা ময়দানে বেরিয়ে এসো। আমরাই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। তিনি এটা করেন তাদেরকে ভয় দেখাবার জন্য। কিন্তু রোম বাদশাহ নিরাপত্তাকেই অগ্রাধিকার দান করেন এবং অতি সদরপণে স্বদেশে পাড়ি জমান।

হিজরী ৫৩৪ সনে জঙ্গি ফিরিঙ্গিদের দেশে অভিযান চালালে সকলে সমবেত হয়ে তাঁর মোকাবিলা করে। বারিন দুর্গের নিকটে তাদের সঙ্গে মুখোমুখি হয়। এ সময় মুসলমানরা এমন ধৈর্য ধারণ করে, যার কোন তুলনার কথা শোনা যায়নি। অবশ্য লাইলাতুল হারীর (কাদেসিয়া) এর সাথেই এর তুলনা চলে। আল্লাহ মুসলমানদেরকে সাহায্য করেন। ফিরিঙ্গি শাসকরা পলায়ন করে। অতঃপর নিরাপদে বারীন দুর্গ অধিকার করা হয়। হালবের পার্শ্ববর্তী মুসলমানরা শান্তি লাভ করে এবং হালবকে তাদের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করে।4

জঙ্গির অভিপ্রায় ছিল জাযিরা অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা, যাতে দুশমনদের সঙ্গে মোকাবিলা করা সহজ হয়। ফলে তিনি হাকারিয়া অঞ্চল সফর করেন। তখন এ অঞ্চল ছিল কুর্দীদের অধিকারে। তিনি তা অধিকার করে আক অঞ্চলও দখল করেন। আর এসব কিছু ছিল তাঁর একটা বড় কাজের ভূমিকা। আর সে বড় কাজটা ছিল আররাহা অঞ্চল জয় করা। হিজরী ৫৩৯ সনে জঙ্গি এই শহর অবরোধ করার সিদ্ধান্ত নেন। নগরটি ছিল ক্রুসেডারদের শাসনাধীন আর তার শাসক ছিল জোসলীন। ২৮ দিন নগরটি অবরোধ করে রাখার পর শক্তি প্রয়োগে তা অধিকার করা হয়। ক্রুসেডাররা অবনত হয়। পাদ্রী পুরোহিতদের পদানত করা হয়। নগরে জারি করা হয় ইসলামি বিধান। খ্রিস্টানদের নিকট নগরটি ছিল সর্বাধিক মর্যাদার অধিকারী। অতঃপর আশপাশের দুর্গগুলোরও পতন ঘটে। ফলে গোটা জাযিরা অঞ্চল ফিরিঙ্গিদের শাসন আর অত্যাচার থেকে মুক্ত হয়।5

এ পর্যায়ের কাজ সমাপ্ত করা জঙ্গির পক্ষে সম্ভব হয়নি। জেবর দুর্গ অবরোধকালে তিনি নিহত হন। জাযিরা অঞ্চলে ফোরাত নদীর তীরে এ দুর্গ অবস্থিত। তাঁর সম্পর্কে ঐতিহাসিক ইবনুল কাসীর বলেন . ‘জীবন চরিতের বিবেচনায় তিনি ছিলেন উত্তম শাসকদের অন্যতম। তিনি ছিলেন বীর, সাহসী যোদ্ধা এবং দৃঢ়চেতা।’’ তিনিই তো ক্রুসেড যুদ্ধের সূচনা করেন এবং মুসলমানদের অন্তরে আস্থা ফিরিয়ে আনেন। অবশ্য তাঁর পুত্র নুরুদ্দীন মাহমুদের হাতে জিহাদী কর্মকান্ডের নবায়ন হয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন