hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতন অতীত বর্তমান (সালাহউদ্দীন আইউবীর আবির্ভাব পূর্ব ইসলামি বিশ্ব ও বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা)

লেখকঃ মুহাম্মদ আল আবদাহ

২২
২. শক্তিশালী সুন্নীণ রাষ্ট্রের উদ্ভব
১. সুলতান মাহমুদ গযনবী (৩৬০-৪২১ হিজরী)

মাহমুদ ইবনে সুবুক্তগীনের নেতৃত্বে চতুর্থ শতাব্দীর শেষের দিকে প্রাচ্যে এক শক্তিশালী সুন্নীণ রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। এ শক্তিশালী সুন্নীণ রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব তাঁর হাতে ছিল। সাসানী রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তিনি ছিলেন নীশাপুরের শাসনকর্তা। তাঁর পিতা সবুক্তগীন ছিলেন একজন বড় শাসনকর্তা। তিনি ছিলেন গজনির অধিপতি আবু ইসহাকের ক্রীতদাস। শাসন পরিচালনার যোগ্য কাউকে না রেখে তদীয় মুনিব ইন্তিকাল করলে তাঁর হাতে বাইয়াত করার ব্যাপারে সৈন্যরা একমত হয়। কারণ, তাদেরকে শাসন করার যোগ্যতা তাঁর মধ্যে ছিল, তাঁর ছিল প্রজ্ঞা- বুদ্ধিমত্তা এবং সুচরিত্র। তার মৃত্যুর পর পুত্র মাহমুদ শাসন- কর্তৃত্ব লাভ করে খোরা-সানের শাসনকর্তা হন। তিনি সাসানী রাষ্ট্রের পতন ঘটিয়ে বাগদাদে খলিফার জন্য খুতবা পাঠ করেন।

অতঃপর মাহমুদ জিহাদের জন্য প্রস্ত্তত হন এবং দেশের উপর থেকে যুদ্ধ রহিত করেন। এবং তিনি অতীতের সমস্ত ভুল দূর করার সংকল্প করেন হিজরী ৩৯২ সনে তিনি সর্বপ্রথম জিহাদ করেন।1 তাঁর প্রথম জিহাদ অভিযান ছিল ভারত অভিমুখে। এ অভিযানে তিনি দেবলের শাসনকর্তার উপর জয়লাভ করেন। এরপর তিনি ভারতে দেশটির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেন এবং সোমনাথ মন্দিরের সর্ববৃহৎ মূর্তি ধ্বংস করেন। এটা হিজরী ৪১৬ সালের ঘটনা। ফলে ভারত ইসলামি শাসনের নিকট বশ্যতা স্বীকার করে। তিনি ভারতে ইসলামের বাণী প্রচার করেন।

ঐতিহাসিক ইবনুল আসীর তাঁর জীবনী প্রসঙ্গে বলেন: তিনি ছিলেন মহান শাসক মহান মুজাহিদ এবং গাজি। গযনী রাজ্যের অধিপতি আবুল কাসেম। ভারতে তিনি অনেক অভিযানে বিজয়ী হন। তার পূর্বে এবং পরে ভারতে অপর কোন শাসকের পক্ষে এমন বিজয় অর্জন করা সম্ভব হয়নি। তিনি প্রভূত গনিমতের সম্পদ লাভ করেন। এত সবের পরও তিনি ছিলেন অত্যন্ত বিশ্বস্ত। পাপ এবং পাপীকে তিনি ঘৃণা করতেন। আলেম আর মুহাদ্দিসকে তিনি ভালোবাসতেন। দ্বীনদার এবং কল্যাণকর ব্যক্তিদেরকে তিনি ভালোবাসতেন।2

মিশরের ফাতেমী খলিফারা উপহার-উপঢৌকন দিয়ে তাঁর দেশে তাদের প্রোপাগান্ডার ঘাঁটি গড়ে তোলার চেষ্টা চালালে তিনি গ্রন্থ আর উপঢৌকন জ্বালিয়ে দেন।3 এসব প্রোপাগান্ডায় তাদের প্রতিনিধি তাহাতীকেও তিনি হত্যা করেন। কাজি আবু মনসূর মুহাম্মদ ইবনে মুহাম্মদ আল-ইযদীর নিকট তার খচ্চর উপহার হিসাবে প্রেরণ করে তিনি বলেন: এ খচ্চরের পিঠে আরোহণ করত: সবচেয়ে বড় নাস্তিক। এখন তার পিঠে আরোহণ করুক সবচেয়ে বড় তাওহীদবাদী।4 রায় অঞ্চল অধিকার করে তিনি খলিফা কদের বিল্লাহর নিকট পত্র লিখেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন যে, মুইজ্জুদ্দৌলা বুয়াইহীর নিকট তিনি অনেক স্বাধীন রমণী দেখতে পান, যাদের সংখ্যা ছিল পঞ্চাশের অধিক। এদের গর্ভে তার তিরিশটির অধিক সন্তান জন্ম নেয়। এ সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলে . এটা আমার পূর্ব পুরুষদের অভ্যাস। তার ঔরসে বাতেনী সম্প্রদায়ের সঙ্গীদের অনেকেরই জন্ম হয়েছে। তিনি মু’তাযেলী সম্প্রদায়ের লোকজনকে খোরাসানে নির্বাসিত করেন এবং দর্শন ও জ্যোতির্বিদ্যার বই পুস্তক জ্বালিয়ে দেন।5

এ মহান মুজাহিদ শাসক হিজরী ৪২১ সালে ইন্তিকাল করেন। এরপরও গযনীতে তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র দীর্ঘকাল টিকে ছিল। হিন্দুদের বিরুদ্ধে জিহাদে তাঁর দৌহিত্রও ছিল তাঁরই মতো। সুলতান মাহমুদ গযনবীর ভারত অধিকারের পর থেকে হিজরী ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত মুসলিম শাসন অটুট ছিল। এরপর ইংরেজদের শাসন চলে। ইংরেজরা চলে যাওয়ার সময় ভারতের শাসন ক্ষমতা হিন্দুদের হাতে দিয়ে যায়।

২. সেলজুক বংশ

গযনীর শাসকরা ভারতে অভিযান পরিচালনার প্রতি মনোযোগ দেয়, কিন্তু সেলজুক শাসকরা পশ্চিমের প্রতি মনোযোগ দিয়ে রাজধানী বাগদাদকে বুয়াইহী শাসকদের অধিকার থেকে মুক্ত করে। তারা আববাসীয় খলিফাকে বাসাসীরীদের আন্দোলন থেকেও মুক্ত করে। এই বাসাসীরীরা ছিল কায়রোর ওবায়দী শাসকদের সমর্থক। সেলজুক রাষ্ট্র সিরিয়া পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে এবং আনাযোলে রোমের প্রতিবেশী হয়। তারা প্রাচ্যে সমর-কন্দের মা-ওয়ারাউন নহর অতিক্রম করে যায়। তারা ইরাক এবং খোরাসানে রাফেযী এবং বাতেনীদের কোমর ভেঙে দেয়।

হিজরী ৪৩০ সালে সর্বপ্রথম এ রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। সেলজুকের নামানুসারে এ রাষ্ট্রের নামকরণ করা হয়। যিনি ছিলেন কাফের তুর্কি শাসকের অন্যতম সেনাপতি। তুর্কি শাসকের ভয়ে তিনি দেশ ত্যাগ করে মুসলিম দেশে গমন করেন এবং ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর পুত্র মীকাঈল তুর্কি কাফেরদের সঙ্গে যুদ্ধের আয়োজন করে একটা যুদ্ধে নিহত হয়। মীকাঈলের স্থলাভিষিক্ত হয় মুহাম্মদ তুগরল বেগ এবং দাউদ জুগরী বেগ। কার্যত . এ দু’জনই সেলজুক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন করে তাকে সুদৃঢ় এবং সংহত করেন।1

তুগরল বেগের শাসনামলে তারা খোরাসান অধিকার করে বাগদাদ পর্যন্ত পৌঁছে। খলিফা বাসাসীরীদের নেতার হামলার আশঙ্কা রোধ করার জন্য তাদের নিকট ফরিয়াদ করলে তারা বাগদাদ নগরীতে প্রবেশ করে। তুগরল বেগের বাগদাদে প্রবেশের ফলে হিজরী ৪৪৭ সনে মসজিদের দরজা থেকে খলিফাদেরকে গালিগালাজ করে লেখা মুছে ফেলা হয়। রাষ্ট্র প্রধান রাফেযীদের নেতা আব্দুল্লাহ আল-জাল্লাবকে তার ভাড়াবাড়ির কারণে হত্যা করার নির্দেশ দেন।2 তুগরল বেগের মৃত্যুর পর তার ভ্রাতুষ্পুত্র মুহাম্মদ ইবনে দাউদ আলাপ আরসালান রাষ্ট্র প্রধান হন। তার শাসনামলে রাষ্ট্র চরম প্রসার লাভ করে এবং মুসলমানদের হারানো গৌরব ফিরে আসে। মুসলমানরা বিরাট বিজয় লাভ করে। আলপ আরসালান এবং রোম সেনাপতি আরমানুস এর মধ্যে সংঘটিত মাজকুর্দ এর যুদ্ধে মুসলমানরা রোমানদের উপর এমন স্মরণীয় বিজয় লাভ করে যা দীর্ঘদিন থেকে মুসলমানরা শুনতে পায়নি। অথচ এ যুদ্ধে রোম বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা মুসলমানদের চেয়ে কয়েক শত গুণ বেশি ছিল3 এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক ইবনে কাসীর বলেন .

হিজরী ৪৬৩ সালে রোম সেনাপতি আরমানুস পর্বতসম বিশাল বাহিনী নিয়ে এগিয়ে আসে। তার সঙ্গে ইংরেজ সৈন্যও। আলাপ আরসালান স্বল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে তাদের মোকাবিলা করেন। শত্রু পক্ষের ২০ হাজার সৈন্যের বিশাল বাহিনী দেখে সুলতান কিছুটা ভীত হন। তখন ফকীহ আবু নছর মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল মালেক আল বোখারি সুলতানকে শুক্রবার যুদ্ধ শুরু করতে বলেন, সে সময় সমস্ত মসজিদের ইমাম এবং খতিবরা যুদ্ধে তাদের বিজয়ের জন্য দোয়া করবে। উভয় বাহিনী মুখোমুখি হলে সুলতান অশ্ব পৃষ্ঠ থেকে অবতরণ করে আল্লাহর দরবারে সেজদায় পড়ে আল্লাহর নিকট দোয়া করেন। আল্লাহ মুসলমানদেরকে সাহায্য করেন। বিশাল রোমান বাহিনী পরাজিত এবং তাদের অধিপতি বন্দী হয়।4

সুলতান আলাপ আরসালানের ভালো কাজের একটা ঘটনা এখানে উল্লেখ করা যায়। হালব সফরকালে তিনি হালবের শাসনকর্তা মাহমুদ ইবনে মিরদাসকে তার সম্মুখে হাজির হওয়ার নির্দেশ দান করেন। এ সময় মাহমুদ চালাকি করার চেষ্টা করে। উভয়ের মধ্যে দূত শরীফ তরাদ যায়নাবীকে বলে . সুলতানকে বল যে, মাহমুদ আববাসীয় খলিফাদের খিলাত পরিধান করেছে এবং তাদের পক্ষে খুতবা পাঠ করেছে। তখন সুলতান আরসালান বললেন . কোন বস্ত্ত তাদের খুতবার সমান হবে? তারাতো আজানে ‘হাইয়্যা আলা খাইরিল আমাল’ বলে। তাকে অবশ্যই হাজির হতে হবে।5

হিজরী ৪৬২ সালে মক্কার শাসনকর্তার দূত মুহাম্মদ ইবনে আবু হাশেম সুলতানের নিকট আগমন করে খলিফা কায়েম এবং সুলতানের পক্ষে খুতবা পাঠ করা, মিশরের ওবায়দী শাসকের পক্ষে খুতবা পাঠ ত্যাগ করা এবং আজানে ‘হাইয়্যা আলা খাইরিল আমাল’ ত্যাগ করার জন্য বললে সুলতান তাকে ৩০ হাজার দীনার দান করে বলেন . মদিনার আমির এ রকম কাজ করলে আমরা তাকে ২০ হাজার দীনার দান করব। তাঁর সম্পর্কে ঐতিহাসিক ইবনুল আসীর বলেন . আলাপ আরসালান ছিলেন ন্যায়পরায়ণ শাসক, দানশীল এবং বুদ্ধিমান ব্যক্তি। তিনি প্রচুর দান- দক্ষিণা করেন।6

আলাপ আরসালানের পুত্র মালেকশাহ- এর শাসনামলে রাষ্ট্রের শক্তি এবং বিস্তৃতি ঘটে। তবে অন্যান্য রাষ্ট্রের মতো সে রাষ্ট্রেও দ্বীনি জযবা, রাষ্ট্র-প্রীতি আর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং লোকজনের প্রতি কঠোরতার ঘটনা ঘটে। তবে তার একটা ভালো দিক এই যে, সে রাষ্ট্র এমন বীজ বপন করে, যার ফলাফল প্রকাশ পায় পরবর্তীকালে। তাদের স্বনামধন্য উজির ছিলেন হাসান ইবনে আলী, যার উপাধি ছিল নিযামুল মুলক। তিনি মালেক শাহকে পরামর্শ দেন এমন ব্যক্তিকে আমির এবং সেনাপতি নিয়োগ করার জন্য, যার মধ্যে রয়েছে চরিত্র, দীনদারি এবং বীরত্ব। এদের অন্যতম ছিলেন আক সানকার, যিনি ছিলেন নূরুদ্দীন মাহমুদের দাদা। হালব, দিয়ারে বকর ও জাযিরা অঞ্চলের শাসনকর্তা নিযুক্ত করা হয় তাঁকে। ঐতিহাসিক ইবনুল আসীর তাঁর সম্পর্কে বলেন . চরিত্র আর অন্তর্নিহিত গুণ-মাধুর্যের বিচারে তিনি ছিলেন চমৎকার শাসক এবং সবচেয়ে বেশি দানশীল ব্যক্তি।7 তদীয় পুত্র ইমাদুদ্দীন জঙ্গি ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে জিহাদের সূচনা করেন। তাঁরপর তদীয় পুত্র নূরুদ্দীন মাহমুদ ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে দাঁড়ান। সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়ুবী সুলতান যাহের বায়বার্স এবং সুলতান কালাউন ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে যে বিজয় অভিযান শুরু করেন, এ পরিবার তার ভিত্তি স্থাপন করেছিল। এর ফলে মুসলিম জাহানে তাওহীদ ও ঐক্যের যুগের সূচনা হয়।8

‘আক সানকার আল- বারসাকী’ও ছিলেন সুলতান মাহমুদ সেলজুকীর অন্যতম সেনাপতি। তিনি ছিলেন মুসেল অঞ্চলের শাসনকর্তা। ক্রুসেড যুদ্ধে তিনি আত্মনিয়োগ করেন। ৫২০ হিজরীতে মুসেল মসজিদে নামাজরত অবস্থায় বাতেনীরা তাঁকে হত্যা করে। ঐতিহাসিক ইবনুল আসীর তাঁর সম্পর্কে বলেন . তিনি একজন ভালো তুর্কি ক্রীতদাস। গুণী জ্ঞানী এবং নেককারদেরকে তিনি ভালোবাসতেন। সুবিচার পছন্দ করতেন এবং নিজেও সুবিচার করতেন। তিনি ছিলেন অন্যতম উত্তম শাসক। সময় মতো যথারীতি নামাজ আদায় করতেন এবং রাত্রে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন।9 সেলজুকরা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে খেলাফতের মর্যাদা ফিরিয়ে আনেন, যা প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়েছিল: বিশেষ করে নিযামুল মূলকের মন্ত্রিত্বকালে। কারণ তিনি আইন এবং খেলাফতের মর্যাদা পুনঃ প্রতিষ্ঠা করেন ভালোভাবে।10

নিযামুল মুলক জ্ঞানপিপাসাদের জন্য মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার সাহসিকতাপূর্ণ কাজ করেন। হিজরী ৪৫৯ সালে বাগদাদে নিযামিয়া মাদ্রাসার ইমারত নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেন। নীশাপুর ইত্যাদি শহরেও তিনি মাদ্রাসার ইমারত নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেন। সুন্নীণ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার এ ধারা মিসরেও বিস্তার লাভ করে। অথচ তখন মিশর ছিল বাতেনী ওবায়দীদের শাসনাধীনে। খলিফা যাহের- এর উজির আবুল হাসান আলী ইবনে সালাম হিজরী ৫৪৪ সালে একটা মাদ্রাসা স্থাপন করেন এবং তার প্রধান করেন হাফেজ সালাফীকে। আলেকজান্দ্রিয়ায় ছিল শাফেয়িদের একমাত্র মাদ্রাসা। ৫৩২ হিজরীতে আওফিয়া মাদ্রাসা স্থাপিত হয় এবং মাদ্রাসার প্রধান নিযুক্ত করা হয় মালেকি ফকীহ ইবনে তাহের ইবনে আওফকে। এ দু’টি মাদ্রাসার উদ্দেশ্য শিয়াদের ধর্মমত সম্পর্কে অবগত হওয়া এবং সুন্নীণ মাজহাবের প্রতি আহবান জানানো।11

নিযামুল মুলক ছিলেন শাফেয়ি মজহাবের ফকীহ। হাদিস এবং অভিধান বিষয়েও তিনি ছিলেন পন্ডিত ব্যক্তি। ফকীহ আর আলেমদের দ্বারা তার দরবার জমজমাট ছিল। এরা তাঁর সঙ্গে সর্বদা সময় কাটাতেন। তিনি যথাসময়ে নিয়মিত নামাজ আদায় করতেন। তাঁর অন্যতম ভালো কাজ ছিল অন্যায় কর রহিত করা। যেসব আলেম তাকে কঠোর উপদেশ দিতেন এমন ব্যক্তিদেরকে তিনি সম্মান করতেন।12 ঐতিহাসিক আবু শামা তাঁর গুণাবলি আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন . তিনি ছিলেন আলেম , ফকীহ, বিশ্বস্ত, কল্যাণকামী, বিনয়ী এবং ন্যায়পরায়ণ। দ্বীনদারদেরকে তিনি ভালোবাসতেন। তাঁর দান-ছদকা আর ওয়াকফ এর কোন সীমা ছিল না। সারা দুনিয়ায় তাঁর মাদ্রাসা খ্যাত। কোন শহর নগর এমন ছিল না, যেখানে তিনি মাদ্রাসা স্থাপন করেননি। এমনকি যাজীরা ইবনে আমর, যা ছিল দেশের এক প্রান্তে অবস্থিত, সেখানেও তিনি চমৎকার একটা বড় মাদ্রাসা স্থাপন করেন। তিনি যথারীতি নামাজ আদায় করতেন। ইবাদতের কাজে কেউ তাঁকে অতিক্রম করে যেতে পারতো না।13 আবু বকর তরতুশী এসব নির্মল জ্ঞান চর্চার প্রত্যক্ষ করেন এবং ‘সিরাজুল মুলুক’ গ্রন্থে তার বিবরণও দিয়েছেন। বাগদাদ সফরকালে তিনি এসব লক্ষণ প্রত্যক্ষ করেন।

হিজরী ৪৮৫ সালের শুরুতে উজির নিযামুল মূলক সুলতান মারেক শাহের সঙ্গে বাগদাদের উদ্দেশ্যে ইসফাহান থেকে বহির্গত হন। রমজানের দশম তারিখে নিহাওয়ান্দ এর নিকট একটা গ্রাম অতিক্রমকালে জনৈক বাতেনী বালক ভিখারির বেশে তাঁর নিকট আসে। বালকটি নিকটবর্তী হয়ে তাকে ছুরিকাঘাত করে পালাবার চেষ্টা করে, কিন্তু ধরা পড়ে নিহত হয়। কিছুক্ষণ পরই তিনি ইন্তিকাল করেন। আল্লাহ তাঁর প্রতি রহম করুন। বাতেনীরা ৫০০ হিজরীতে তাঁর পুত্র ফখরুল মুলককেও হত্যা করে।14

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন