hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলমানদের পতন অতীত বর্তমান (সালাহউদ্দীন আইউবীর আবির্ভাব পূর্ব ইসলামি বিশ্ব ও বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা)

লেখকঃ মুহাম্মদ আল আবদাহ

১৫
৩. কারামেতা সম্প্রদায়
কারামেতাদের সম্পর্কে বলার নতুন কিছু নেই। তাদের সম্পর্কে অনেকেই লিখেছেন। আর তাদের প্রসঙ্গটা মুসলমানদের মধ্যে প্রসিদ্ধ। তারা নিজেদের আক্বীদা-বিশ্বাস স্পষ্ট ব্যক্ত করে ঘোষণা দেয় তাদের নাস্তিক্যবাদী কর্মকান্ডের, ওবায়দীদের মতো শিয়া ইজম দ্বারা নিজেদেরকে আড় করে রাখে না। তবে তাদের সূচনা আর বীভৎস কর্মকান্ড, অন্যান্য শিয়া সুলভ তৎপরতা বা শিয়া ইজম দ্বারা যা প্রচ্ছন্ন করে রাখে, সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা অপরিহার্য।

হিজরী তৃতীয় শতকের শেষের দিকে ২৭৮ সালে কারামেতাদের উদ্ভব কোন বিস্ময়কর বা আকস্মিক ঘটনা ছিল না। নাস্তিক্যবাদী বাতেনী সম্প্রদায় ইসলামকে আঘাত করার জন্য যে ভূখন্ডটি বেছে নিয়েছিল, তার দাবিই ছিল সকল স্থানে বাণী প্রচারক ছড়িয়ে দেয়া, যারা স্বচ্ছ সুন্নীণ পরিবেশে তাকওয়ার প্রদর্শনী করবে, আবার দার্শনিক পরিবেশে প্রকাশ করবে দর্শনের প্রতি ভালোবাসা। এসব প্রচারকদের অন্যতম ছিল হুসাইন আহওয়াজী, যে কুফা ভূখন্ডে আগমন করে গন্ডমূর্খ সাধারণ নাগরিকদেরকে বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয়। সে সাধারণ মানুষকে অবস্থান্তরে নিয়ে যায়; নিয়ে যায় তাদেরকে কুফরি আর নাস্তিক্যবাদী দর্শনের দ্বারপ্রান্তে। নিয়ে যায় মানুষকে এমন বিশ্বাসের কাছাকাছি যে, মুসলমানদের হত্যা করা সাওয়াবের কাজ। এদের দলের জনৈক ব্যক্তি ছিল হামদান কারমাত। তার নামানুসারে তার অনুসারীরা কারামেতা নামে অভিহিত হয়।

হিজরী ২৮৬ সালে এই বিশ্রী আহবান বাহরাইনের কাতীফ এবং তৎ সন্নিহিত অঞ্চলে বিস্তার লাভ করে। পারস্যের আবু সাঈদ জানাবী এ আহবানে সাড়া দেয়। অনতিবিলম্বে বাগদাদের খেলাফতের সঙ্গে সংঘাতে সে বিজয় অর্জন করে এবং সমস্ত বন্দীকে হত্যা করে। হিজরী ২৮৯ সনে সিরিয়ার প্রতি তাদের দৃষ্টি পড়ে এবং তারা দামেশক অবরোধ করে। দামেশক শাসক ‘তাগজ’ এর সঙ্গে তাদের যুদ্ধ আর সংঘাত চলে। তূলুনী শাসকদের প্রতিনিধি হিসাবে ‘তাগজ’ দামেশক শাসন করেছিলেন। তাদের অন্যতম কর্তা ব্যক্তি জকরুয়াহ ইবনে মাহরুয়াহ দামেশক আর ইরাকের সীমান্ত অঞ্চলে কুফার দিক হামলা চালিয়ে বিপর্যয় সৃষ্টি করে। রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেয়। হিজরী ২৯৪ সালে তার জীবনাবসান হয়।

বাহরাইনে কারামেতাদের অন্যতম নেতা ছিল আবু তাহের আল- জানাবী সুলায়মান ইবনে হাসান। তার বীভৎস কর্মকান্ড তাতারি আর ক্রুসেডারদেরকেও হার মানায়। বাতেনীরা ব্যতীত অন্য কেউ এমন বর্বরোচিত কর্মকান্ড করতে পারেনি। তার একটা উদাহরণ দেওয়া যায়। হিজরী ৩১২ সনে হাজিদের একটা দল ইরাকে ফিরে আসছিল। এরা তাদেরকে সর্ব সান্ত করে সব কিছু লুণ্ঠন করে নিয়ে যায়। ক্ষুধা আর পিপাসায় তাদের অধিকাংশেরই সেখানে মৃত্যু হয়।1

৩১৭ হিজরী সনে মসজিদুল হারামে হাজিগণ সমবেত হন এহেন পাপিষ্ঠ খাবীছের উপর আক্রমণ চালানোর জন্য। কিন্তু মসজিদে যারা সমবেত হয়েছিলেন, তাদের সকলকে হত্যা করে লাশ জমজম কূপে নিক্ষেপ করা হয়। মক্কার রাস্তা ঘাটে এবং আশপাশে ৩০ হাজারের অধিক লোককে হত্যা করা হয়। কা’বা শরীফের গিলাফ খুলে নিয়ে তা তার সঙ্গীদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়। মক্কাবাসীদের বাড়িঘর লুণ্ঠন করা হয়। হাজারে আসওয়াদ খুলে তাদের কেন্দ্রস্থল ‘হাজর’এ সঙ্গে করে নিয়ে যায়।2 বুকাইর ইবনে আহমদ আল হাদ্দাদ বলেন . ‘আমি যেন হাফেজ মুহাম্মদ ইবনে আবুল হুসাইনকে দেখছি। তার প্রতি তরবারি চালানো হচ্ছে আর তিনি দু’হাতে দরজার চৌকাঠ ধরে আছেন। এমতাবস্থায় কা’বার আস্তানায় তাঁর মস্তক লুটিয়ে পড়ে।3

ঐতিহাসিক ইবনে কাসীর বলেন, তাদের আমির আবু তাহের তার প্রতি আল্লাহর লা’নত- কা’বা শরীফের দরজায় বলে . আমি আল্লাহ, আমি সৃষ্টিকুলকে সৃষ্টি করি এবং ধ্বংস করি। ইবনে কাসীর আরো বলেন . আল্লাহ তাআলা তাৎক্ষনিকভাবে এসব নাস্তিক বিধর্মীর শাস্তির ব্যবস্থা করেননি, যেমন তিনি করেছিলেন আসহাবুল ফীল এর ক্ষেত্রে। তারা ছিল খ্রিস্টান, আর এরা হচ্ছে ইহুদি নাছারা এবং মজুসী তথা অগ্নিপুজকদের মধ্যে নিকৃষ্ট লোক। কারণ, আল্লাহ তাআলা কা’বা শরীফের সম্মানকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আগমনের পূর্বাভাস করেছেন। তাঁর পরে আর কোন শরিয়ত প্রেরণ করেননি। তখন কা’বা শরীফের ধ্বংস সাধিত হলে মানব মন অবিশ্বাসী হতো। অবশ্য শরিয়ত নাজিল করার পর আল্লাহ চান যে, মুসলমানরা শরিয়ত রক্ষা করুক, শরিয়তকে মর্যাদা দান করুক এবং কাফির মুশরিকদের দমন করুক।4

৩৬০ হিজরী সালে এই কারামেতারা দামেশক পৌঁছে সেখানকার নাগরিকদের সঙ্গে এমন আচরণ করে, যা কোন চক্ষু দেখেনি এবং কোন কর্ণ কখনো শ্রবণ করেনি।5

আববাসিয়া সাম্রাজ্যকে দুর্বল করার চেষ্টা

কারামেতারা শক্তি অর্জন করলে আবু তাহের আল-জানাবী তাদের নেতৃত্ব গ্রহণ করে, তখন ইরাকের বেশির ভাগ মানুষ তাদের সঙ্গে থাকার কথা প্রকাশ করে। ওয়াসেত এবং আইনুত তামর শহরে তারা নানা দলে বিভক্ত হয়। ইতিপূর্বে তারা নিজেদেরকে গোপন রাখতো। আববাসীয় খলিফা তাদের সঙ্গে লড়াই করে বিজয় লাভ করেন।

হিজরী ৩৭৫ সালে কারামেতারা কুফার কর্তৃত্ব লাভ করে। তখন বুয়াইহী শাসকও তাদের সঙ্গে কোমল আচরণ করে। কিন্তু তারা বুয়াইহীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতে অস্বীকার করলে সংঘাত সৃষ্টি হয়। এ সংঘাতে তাদের নেতা হাসান ইবনে মুনযির নিহত হলে তারা কুফা ত্যাগ করে।6

কারামেতা আর বুয়াইহীদের সম্পর্ক

হিজরী ৩৬০ সালে কারামেতারা দামেশকে আধিপত্য লাভ করে। ইতিপূর্বে দামেশকের কর্তৃত্ব ছিল মিশরের ওবায়দীদের পক্ষ থেকে জাফর ইবনে ফালাহ এর হাতে। কারণ, কারামেতারা দামেশকের শাসক সাবিক ইবনে তাগজ এর সঙ্গে একমত হয়েছিল যে, সে তাদেরকে ৩ লক্ষ দীনার দান করবে। তারা যখন সিরিয়ায় যুদ্ধের সংকল্প করে, তখন তাদের নেতা হুসাইন ইবনে আহমদ ইবনে বাহরাম বুয়াইহীদের সহায়তা কামনা করে তাদের বাদশাহ বখতিয়ারকে প্রেরণ করেন। তিনি এতে সাড়া দেন এবং দাবি পূরণ করেন।7

ফাতেমীদের সঙ্গে কারামেতাদের সম্পর্ক

ওবায়দী শাসক মুইয মিসরে কারামেতাদের যুদ্ধের অভিপ্রায় বিষয়ে জানতে পেরে তাদের নিকট একটা পত্র প্রেরণ করেন। এতে তিনি নিজের এবং আহলে বায়তের শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করেন। তিনি একথাও উল্লেখ করেন যে, উভয়ের মূল আহবান একই। আর কারামেতারাতো পূর্ব থেকেই তার এবং তার পূর্ব পুরুষদের প্রতি আহবান জানিয়ে আসছে।8 কিন্তু হাসান ইবনে আহমদ ইবনে আবু সাঈদ তার এসব কথার কর্ণপাত করেনি। বরং সে মিসরে হামলা চালিয়ে পরাজিত হয়ে ফিরে আসে। ফিলিস্তিনের রামাল্লা শহরে তার মৃত্যু হয়।9 এটা ছিল স্বাভাবিক। মূল আহবান এক হলেও অন্তরতো ক্ষুদ্র। দুনিয়ার পদ- মর্যাদার প্রতি কুকুরের মতো ছুটে যাওয়া- এটাইতো এ যুগে কার্যকর আছে।

কারামেতাদের দুর্বলতা এবং তাদের পতন

তাদের দুর্বলতার সূচনা এভাবে হয়েছে যে, তাদের সদর দফতর হিজর-এ জনৈক আহবায়কের নিকট তারা একত্র হয়। আর সে আহবায়ক ছিল তাদের প্রতি বিদ্বেষ ভাবাপন্ন। সে জনৈক ব্যক্তিকে নির্দেশ দেয় আপন ভাইকে হত্যা করার জন্য। লোকটি তা-ই করে। কিন্তু আবু তাহের ব্যাপারটা ফাঁস করে দেয় এবং অনেক নেতা-কর্তাকে হত্যার করার পর তাকেও হত্যা করা হয়।10 অতঃপর সেলজুকদের হাতে সুন্নীণদের যুগ ফিরে আসে এবং বুয়াইহীরা দুর্বল হয়ে পড়ে। এরপর ওবায়দীরাও দুর্বল হয়ে পড়ে। পুনরায় তাদের কেন্দ্রে ফিরে যাওয়া ছিল স্বাভাবিক ব্যাপার। এর পর তারা হয়ে পড়ে বিলীন। তবে তাদের চিহ্ন আর বিশ্বাস নিশ্চিত হয়নি। ইরানে তাদের প্রতিনিধি হিসাবে হাশাশী সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়। হাসান ইবনে সাববাহ ছিল এই নব উদ্ভূত সম্প্রদায়ের নেতা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন