মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আখিরাতের প্রতি ঈমান আনা ঈমানের অন্যতম একটি রুকন। আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা ছাড়া কোন ব্যক্তি মুমিন হতে পারে না। যে ব্যক্তি আখিরাতকে অস্বীকার করবে সে কাফির হয়ে যাবে। কবরের প্রশ্নোত্তর, কবরের আযাব ও শান্তি, পুনরুত্থান, কিয়ামত দিবসের ভয়াবহতা, হাশর-নাশর, হিসাব-নিকাশ, দাড়ি-পাল্লা, পুলসিরাত, ডান অথবা বাম হাতে আমলনামা বিতরণ, প্রতিফল প্রদান, হাউজে কাউসার, জান্নাত-জাহান্নাম ও আল্লাহর সাক্ষাৎ- এসবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা একজন মুমিনের অবশ্য কর্তব্য। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে,
﴿وَبِالْاٰخِرَةِ هُمْ يُوْقِنُوْنَ﴾
আর তারা পরকালের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করে। (সূরা বাকারা- ৪)
পার্থিব জীবন শেষে যখন কেউ মৃত্যুবরণ করে তখনই তার পরকাল শুরু হয়ে যায়। কেননা মৃত্যুর মাধ্যমেই মানুষের দুনিয়ার জীবনের সমাপ্তি ঘটে এবং আখিরাতের দিকে পা বাড়ায়। মৃত্যুর সাথে সাথেই ব্যক্তির সকল আমল বন্ধ হয়ে যায় এবং পরজীবনের সুখ অথবা শাস্তি পেতে আরম্ভ করে। [সূনানে দারেমী, হা/২২৬।]
প্রত্যেক আত্মা মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণকারী; অতঃপর তোমরা আমারই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। (সূরা আনকাবূত- ৫৭)
মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পর তাকে কবরে তিনটি প্রশ্ন করা হবে।
১. مَنْ رَّبُّكَ অর্থাৎ তোমার রব কে?
২. وَمَا دِيْنُكَ অর্থাৎ তোমার দ্বীন কী?
৩. وَمَنْ نَّبِيُّكَ অর্থাৎ তোমার নবী কে ছিলেন?
অতঃপর যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে আল্লাহ সত্যের উপর অটল রাখবেন এবং তারা সঠিকভাবে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারবে। আর যারা কাফির ও মুনাফিক তারা কিছুই বলতে পারবে না। বরং তারা বলবে, হায়! হায়! আমি তো কিছুই জানি না।
আমল অনুযায়ী কবরের শান্তি অথবা শাস্তি হবে :
কবরের শাস্তি ও শান্তির প্রতি ঈমান আনা ওয়াজিব। কবর আখিরাতের প্রথম ধাপ বা স্টেশন। যে ব্যক্তি কবর হতে মুক্তি পাবে (তার জন্য) কবরের পরের ধাপগুলো হতে মুক্তি পাওয়া সহজ হবে। আর যে ব্যক্তি কবর হতে মুক্তি পাবে না তার জন্য এর পরের ধাপগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া আরো কঠিন হবে।
যদি মৃত ব্যক্তিকে আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয় অথবা পানিতে ডুবিয়ে দেয়া হয় অথবা হিংস্র পশু-পাখি খেয়ে ফেলে তবুও সে এ শাস্তি অথবা শান্তি ভোগ করবে। হাদীসে এসেছে,
যায়েদ ইবনে সাবেত ﷺ থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, নিশ্চয় এ জাতি (মানবজাতি) কবরে পরীক্ষার মুখোমুখি হয়। যদি তোমরা (তাদেরকে) দাফন করবে না বলে আশংকা না করতাম, তাহলে আমি তোমাদেরকে কবরের আযাব শুনানোর জন্য আল্লাহর কাছে দু‘আ করতাম, যা আমি শুনতে পাই। [সহীহ মুসলিম, হা/৭৩৯২; মিশকাত, হা/১২৯।]
কিয়ামতের আলামত :
কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার মাধ্যমে পরকাল শুরু হবে। তবে কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার পূর্বে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পাবে। কিয়ামতের লক্ষণগুলো দুই ভাগে বিভক্ত। ১. عَلَامَةُ الصُّغْرٰى তথা ছোট আলামত। ২. عَلَامَةُ الْكُبْرٰى তথা বড় আলামত।
১. ছোট আলামত : যা কিয়ামত নিকটে হওয়া বুঝায়। এগুলো অনেক রয়েছে, এর মধ্যে অনেকগুলো সংঘটিত হয়ে গেছে। যেমন-
১. শেষ নবী মুহাম্মাদ ﷺ এর আগমন হওয়া।
২. আমানতের খিয়ানত করা।
৩. মসজিদ অধিক মাত্রায় সাজ-সজ্জা করা ও তা নিয়ে গর্ব করা।
৪. রাখাল ও নিম্ন শ্রেণির লোকদেরকে বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণের প্রতিযোগিতা করা এবং তা নিয়ে গর্ব করা।
৫. ইয়াহুদিদের সাথে যুদ্ধ ও তাদের নিহত হওয়া।
৬. সময় নিকটবর্তী হওয়া,
৭. আমল কমে যাওয়া।
৮. ফিতনা-ফাসাদ প্রকাশ পাওয়া।
৯. অধিক হত্যাকান্ড হওয়া।
১০. ব্যভিচার ও অন্যায় কাজ অধিক মাত্রায় হওয়া ইত্যাদি।
২. বড় আলামত : যা কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে সংঘটিত হবে এবং কিয়ামত শুরু হওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করবে। এমন বড় আলামত দশটি। যেমন-
১. ইমাম মাহদীর আগমন ঘটবে।
২. দাজ্জালের আবির্ভাব হবে।
৩. ঈসা (আঃ) আকাশ হতে ন্যায়বিচারক হিসেবে অবতরণ করবেন, তিনি খ্রিস্টানদের ক্রুশ ভেঙ্গে দেবেন ও দাজ্জালকে হত্যা করবেন। ইসলামী শরীয়াহ অনুপাতে বিচার পরিচালনা করবেন।
৪. ইয়াজুজ, মাজুজ বের হবে। তাদের ধ্বংসের দু‘আ করবেন, অতঃপর তারা মারা যাবে।
৫. তিনটি বড় ভূমিকম্প হবে। পূর্বে একটি, পশ্চিমে একটি, জাজিরাতুল আরবে একটি।
৬. ধোঁয়া বের হবে, তা হলো আকাশ হতে প্রচন্ড ধোঁয়া নেমে এসে সকল মানুষকে ঢেকে নিবে।
৭. কুরআন জমিন হতে আকাশে তুলে নেয়া হবে।
৮. পশ্চিম আকাশে সূর্য উদিত হবে।
৯. এক অদ্ভুত চতুষ্পদ জন্তু বের হবে।
১০. ইয়ামানের আদন নামক স্থান হতে ভয়ানক আগুন বের হয়ে মানুষদেরকে শামের দিকে নিয়ে আসবে। এটাই সর্বশেষ বড় আলামত।
এ দশটি নিদর্শন সংঘটিত হওয়ার পর পরই কিয়ামত সংঘটিত হবে। [সহীহ বুখারী, হা/৭১২১; সহীহ মুসলিম, হা/৭৪৬৮; আবু দাউদ, হা/৪৩১৩; তিরমিযী, হা/২১৮৩।]
শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, ফলে আল্লাহ যাদেরকে ইচ্ছা করেন তারা ব্যতীত আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সবাই অজ্ঞান হয়ে পড়বে। অতঃপর আবার শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে এবং তৎক্ষণাৎ তারা দন্ডায়মান হয়ে তাকাতে থাকবে। (সূরা যুমার- ৬৮)
তিনবার সিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে। প্রথম ফুঁক হবে فَزَعٌ (ফাযা‘উন) তথা ভীতি সৃষ্টিকারী। দ্বিতীয় ফুঁক صَعْقٌ (সা‘আক) তথা সংজ্ঞা লোপকারী বিকট গর্জন। আর তৃতীয় ফুঁক হবে اَلْقِيَامُ لِرَبِّ الْعَالَمِيْنَ (আল কিয়ামু লি-রাবিবল আলামীন) তথা বিশ্ববাসীর প্রতিপালকের সামনে হাযির হওয়ার ফুঁক। প্রথম ফুঁকটি সাধারণ বিভীষিকা সৃষ্টি করবে এবং মানুষ হতভম্ভ হয়ে যাবে। দ্বিতীয় ফুঁকে সবাই মারা যাবে। তৃতীয় ফুঁকের পর সবাই জীবিত হয়ে আল্লাহর সামনে হাযির হবে।
যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে সেদিনের কর্তৃত্ব তো তাঁরই। অদৃশ্য ও দৃশ্য সবকিছু সম্বন্ধে তিনি পরিজ্ঞাত; আর তিনিই প্রজ্ঞাময় ও সবিশেষ অবহিত। (সূরা আন‘আম- ৭৩)
আর আমি কিয়ামতের দিন ন্যায়বিচারের মানদন্ড স্থাপন করব। সুতরাং কারো প্রতি কোন অবিচার করা হবে না। কারো কর্ম যদি তিল পরিমাণ ওজনেরও হয়, তবুও তা উপস্থিত করব; হিসাব গ্রহণকারীরূপে আমিই যথেষ্ট। (সূরা আম্বিয়া- ৪৭)
তারা যে বিষয়ে পরস্পরের মধ্যে দ্বিমত করত, অবশ্যই আপনার প্রতিপালক কিয়ামতের দিন সে বিষয়ে তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দেবেন। (সূরা জাসিয়া- ১৭)
শাফাআত :
যখন হাশরের ময়দানে মানুষের বিপদ কঠিন হয়ে পড়বে এবং সেখানে তাদের অবস্থান দীর্ঘ হবে, তখন তারা এ ভয়াবহ বিপদ হতে মুক্তি পাওয়ার জন্য তাদের রবের নিকট সুপারিশ করা হোক এর প্রচেষ্টা করবে। রাসূলদের মধ্য হতে যারা উলুল আযম (নূহ, ইবরাহীম, মূসা ও ঈসা আঃ) তাঁরা অপারগতা স্বীকার করবেন। পরে এ বিষয়টি সর্বশেষ রাসূল মুহাম্মাদ ﷺ এর নিকট পৌঁছবে।
আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ ﷺ কে সৃষ্টিজীবের সুপারিশ করার জন্য অনুমতি দেবেন। অতঃপর তিনি সুপারিশ করবেন, যাতে সৃষ্টিজীবের মাঝে ফায়সালা সম্পন্ন করা হয়। এ শাফাআত আল্লাহ তা‘আলা একমাত্র রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জন্য নির্দিষ্ট করেছেন।
ব্যক্তিগত পর্যায়ে আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কারো কোন শাফাআত আল্লাহর কাছে গৃহীত হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
সেদিন দয়াময় যাকে অনুমতি দেবেন এবং যার কথা তিনি পছন্দ করবেন সে ব্যতীত অন্য কারো সুপারিশ কোন কাজে আসবে না। (সূরা ত্বা-হা- ১০৯)
অর্থাৎ সুপারিশকারীকে কিয়ামতের মাঠে আল্লাহ তা‘আলার নিকট থেকে অনুমতি প্রাপ্ত হতে হবে। যার জন্য সুপারিশ করা হবে সেও আল্লাহর পক্ষ হতে মনোনীত হতে হবে। কোন মুশরিকের জন্য কারো সুপারিশ গৃহীত হবে না।
তোমাদের প্রত্যেকেই সেটা (পুলসিরাত) অতিক্রম করবে; এটা তোমার প্রতিপালকের অনিবার্য সিদ্ধান্ত। পরে আমি মুত্তাক্বীদেরকে উদ্ধার করব এবং যালিমদেরকে সেথায় নতজানু অবস্থায় রেখে দেব। (সূরা মারইয়াম- ৭১, ৭২)
পুলসিরাত হলো জাহান্নামের উপর স্থাপিত পুল বা পথ। মানুষ একে অতিক্রম করবে। কেউ অতিক্রম করবে চোখের পলকের ন্যায়। কেউ অতিক্রম করবে বিজলীর ন্যায়। কেউ বাতাসের ন্যায়। কেউ পাখির ন্যায়। কেউ ঘোড়ার ন্যায় চলবে। সকলেই অতিক্রম করবে তাদের কর্মের ফলাফল অনুপাতে।
সর্বপ্রথম আমাদের নবী মুহাম্মাদ ﷺ , অতঃপর তাঁর উম্মাত পুলসিরাত পাড়ি দেবেন। সেদিন একমাত্র রাসূলগণ কথা বলবেন আর তাদের কথা হবে اَللّٰهُمَّ سَلِّمْ سَلِّمْ অর্থাৎ হে আল্লাহ! মুক্তি দাও, মুক্তি দাও। পুলসিরাতের দুধারে হুকের ন্যায় আংটা থাকবে। এর সংখ্যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। সৃষ্টিজীব হতে আল্লাহ যাকে ইচছা করবেন, তাকে এর দ্বারা থাবা মেরে (জাহান্নামে) ফেলে দেয়া হবে। [সহীহ বুখারী, হা/৮০৬; সহীহ মুসলিম, হা/৪৬৯; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৭৩২৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৭১৭।]
পুলসিরাত তরবারীর চেয়ে ধারালো, আর চুলের চেয়ে সুক্ষ্ম ও পিচ্ছিল জাতীয়।
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমার নিকট সংবাদ পৌঁছেছে যে, পুলসিরাত চুলের চেয়ে সূক্ষ্ম আর তরবারীর চেয়ে ধারালো হবে। [সহীহ মুসলিম, হা/৪৭৩।]
সবশেষে একদল যাবে জান্নাতে এবং একদল যাবে জাহান্নামে। জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা এবং জান্নাত ও জাহান্নামের অধিবাসী কারা- এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুন আমাদের বই ‘‘জান্নাতী ও জাহান্নামী কারা’’।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/57/17
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।