hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

যেসব কারণে ঈমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৯
اَلْكُفْرُ (আল কুফর) কুফরের পরিচয়
اَلْكُفْرُ (আল কুফর) শব্দের আভিধানিক অর্থ ঢেকে রাখা, গোপন করা। এটি ঈমান শব্দের বিপরীত।

শরীয়াতের পরিভাষায় : নবী ﷺ কর্তৃক আনীত বিষয়াদি, যা অকাট্যভাবে দ্বীনের অঙ্গ বলে প্রমাণিত- এসবের কোন একটি অস্বীকার করাকে কুফর বলা হয়। আর যে অস্বীকার করে তাকে কাফির বলে।

কাজেই আল্লাহ, নবী-রাসূল, ফেরেশতা, আসমানী কিতাব, তাকদীর, কিয়ামত, আখিরাত, হাশর, বিচার, জান্নাত-জাহান্নাম এবং ইসলামের অন্যান্য হুকুম-আহকাম- যা কুরআন ও হাদীস দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত এসবের কোন একটি অস্বীকার করা কুফরী।

কুফর দুধরণের :

(১) কুফরে আকবার বা বড় কুফরী ও (২) কুফরে আসগার বা ছোট কুফরী।

কুফরে আকবার বা বড় কুফরের পরিচয় :

যেসব কাজ মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয় তাকে কুফরে আকবার বা বড় কুফর বলা হয়। আর এগুলো বিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত। এগুলো পাঁচ শ্রেণিতে বিভক্ত :

১. كُفْرُ التَّكْذِيْبِ বা মিথ্যারোপ করার মাধ্যমে কুফরী করা :

কুরআন ও হাদীস বা এগুলোর কোন অংশকে মিথ্যারোপ করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَمَنْ اَظْلَمُ مِمَّنْ كَذَبَ عَلَى اللهِ وَكَذَّبَ بِالصِّدْقِ اِذْ جَآءَهٗؕ اَلَيْسَ فِيْ جَهَنَّمَ مَثْوًى لِّلْكَافِرِيْنَ﴾

যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর মিথ্যারোপ করে এবং যখন তার নিকট সত্য আসে তখন তা প্রত্যাখ্যান করে, তার চেয়ে বড় যালিম আর কে হতে পারে? কাফিরদের ঠিকানা কি জাহান্নাম নয়? (সূরা যুমার- ৩২)

﴿وَمَنْ اَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرٰى عَلَى اللهِ كَذِبًا اَوْ كَذَّبَ بِاٰيَاتِهٖؕ اِنَّهٗ لَا يُفْلِحُ الظَّالِمُوْنَ﴾

যে ব্যক্তি আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে অথবা তাঁর আয়াতসমূহকে প্রত্যাখ্যান করে, তার চেয়ে বড় যালিম আর কে হতে পারে? নিশ্চয় যালিমরা কখনো সফলকাম হবে না। (সূরা আন‘আম- ২১)

এ আয়াতসমূহ থেকে প্রমাণিত হলো, যারা সত্যকে অস্বীকার করে তারা কাফির। অনুরূপভাবে যারা কিছু অংশ বিশ্বাস করে আর কিছু অংশ অস্বীকার করে তারাও কাফির। বর্তমানে অনেক নামধারী মুসলিম রয়েছে, যারা সালাত, সাওম, হজ্জ ইত্যাদিতে যথেষ্ট অগ্রগামী; কিন্তু কুরআনের দন্ডবিধি যেমন চোরের হাত কাটার বিধান, সুদ হারাম হওয়ার বিধান, জিহাদ ফরয হওয়ার বিধান ইত্যাদি মানতে রাজি নয়। পবিত্র কুরআনে তাদেরকেও কাফির বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿اَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُوْنَ بِبَعْضٍۚ فَمَا جَزَآءُ مَنْ يَّفْعَلُ ذٰلِكَ مِنْكُمْ اِلَّا خِزْيٌ فِى الْحَيَاةِ الدُّنْيَاۚ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّوْنَ اِلٰۤى اَشَدِّ الْعَذَابِؕ وَمَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ﴾

তোমরা কি গ্রন্থের কিছু অংশ বিশ্বাস কর আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করে তাদের পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা ব্যতীত কিছুই নেই এবং কিয়ামত দিবসে তারা কঠোর শাস্তির দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। আর তোমরা যা করছ আল্লাহ সে বিষয়ে উদাসীন নন। (সূরা বাক্বারা- ৮৫)

﴿اِنَّ الَّذِيْنَ يَكْفُرُوْنَ بِاللّٰهِ وَرُسُلِه وَيُرِيْدُوْنَ اَنْ يُّفَرِّقُوْا بَيْنَ اللّٰهِ وَرُسُلِه وَيَقُوْلُوْنَ نُؤْمِنُ بِبَعْضٍ وَّنَكْفُرُ بِبَعْضٍ وَّيُرِيْدُوْنَ اَنْ يَّتَّخِذُوْا بَيْنَ ذٰلِكَ سَبِيْلًا -اُولٰٓئِكَ هُمُ الْكَافِرُوْنَ حَقًّاۚ وَاَعْتَدْنَا لِلْكَافِرِيْنَ عَذَابًا مُّهِيْنًا ﴾

যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলদেরকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলদের মধ্যে পার্থক্য করতে চায় এবং বলে, আমরা কতককে বিশ্বাস করি ও কতককে অস্বীকার করি। আর তারা মধ্যবর্তী কোন পথ অবলম্বন করতে চায়, এরাই প্রকৃত কাফির। আর কাফিরদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। (সূরা নিসা- ১৫০, ১৫১)

২. كُفْرُ الْعِنَادِ তথা অস্বীকার ও অহংকার করার মাধ্যমে কুফরী করা :

এটা হলো সত্যকে জেনে-শুনে অহংকারবশত তার অনুসরণ না করা। ইবলিসের কুফরীটা এ প্রকারেরই ছিল। কেননা ইবলিস জেনে-শুনে অহংকারবশত সত্যকে অস্বীকার করেছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَاِذْ قُلْنَا لِلْمَلَآئِكَةِ اسْجُدُوْا لِاٰدَمَ فَسَجَدُوْاۤ اِلَّاۤ اِبْلِيْسَؕ اَبٰى وَاسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِيْنَ﴾

যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বলেছিলাম, তোমরা আদমকে সিজদা করো, তখন ইবলিস ব্যতীত সকলে সিজদা করেছিল। সে অস্বীকার করল ও অহংকার করল এবং কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। (সূরা বাক্বারা- ৩৪)

৩. كُفْرُ الشَّكِّ তথা সন্দেহ করার মাধ্যমে কুফরী করা :

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কোন কথা তথা ইসলামের নির্ধারিত বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করাই এ প্রকারের কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। যেমন- কিয়ামত সম্বন্ধে সন্দেহ করা বা মিথ্যা ধারণা পোষণ করা অথবা তাকে অস্বীকার করা এবং তাকে সত্য বলে না মানা। এ জাতীয় কাফিরদের বক্তব্যকে আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনের নিম্নের আয়াতে তুলে ধরেছেন।

﴿وَمَاۤ اَظُنُّ السَّاعَةَ قَآئِمَةً وَّلَئِنْ رُّدِدْتُّ اِلٰى رَبِّيْ لَاَجِدَنَّ خَيْرًا مِّنْهَا مُنْقَلَبًا﴾

আমি মনে করি না যে, কিয়ামত হবে। আর আমি যদি আমার প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবর্তিত হই, তবে নিশ্চয় আমি এর চেয়ে আরো উৎকৃষ্ট স্থান লাভ করব। (সূরা কাহফ- ৩৬)

৪. كُفْرُ الْاَعْرَاضِ তথা মুখ ফিরিয়ে নেয়া বা বিমুখতার মাধ্যমে কুফরী করা :

ইসলাম যা দাবি করে তাকে গুরুত্ব না দিয়ে তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া এবং তাতে বিশ্বাস না করা। এ জাতীয় কাফির সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا عَمَّاۤ اُنْذِرُوْا مُعْرِضُوْنَ﴾

যারা অস্বীকার করে ঐ সমস্ত জিনিসকে, যে সম্বন্ধে তাদেরকে ভয় দেখানো হয় এবং তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়। (সূরা আহকাফ- ৩)

৫. كُفْرُ النِّفَاقِ তথা নিফাকীর মাধ্যমে কুফরী করা :

মুখে ইসলামকে প্রকাশ করা এবং অন্তরে ও কাজে তার বিরোধিতা করা এ প্রকার কুফরের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّقُوْلُ اٰمَنَّا بِاللهِ وَبِالْيَوْمِ الْاٰخِرِ وَمَا هُمْ بِمُؤْمِنِيْنَ﴾

মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা বলে- আমরা আল্লাহর উপর এবং বিচার দিনের উপর ঈমান আনয়ন করেছি; অথচ তারা মোটেই ঈমানদার নয়। (সূরা বাক্বারা- ৮)

কুফরে আসগার তথা ছোট কুফরীর পরিচয় :

ছোট কুফর হচ্ছে, এমন কথা বা কাজ, যা কুফরী হলেও একজন মানুষকে ইসলাম থেকে বের করে দেয় না। যেমন, নিয়ামতের অকৃতজ্ঞতার মাধ্যমে কুফরী করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَضَرَبَ اللهُ مَثَلًا قَرْيَةً كَانَتْ اٰمِنَةً مُّطْمَئِنَّةً يَّأْتِيْهَا رِزْقُهَا رَغَدًا مِّنْ كُلِّ مَكَانٍ فَكَفَرَتْ بِاَنْعُمِ اللهِ فَاَذَاقَهَا اللهُ لِبَاسَ الْجُوْعِ وَالْخَوْفِ بِمَا كَانُوْا يَصْنَعُوْنَ ﴾

আল্লাহ দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন এক জনপদের, যা ছিল নিরাপদ ও প্রশান্ত; সেখানে সর্বদিক হতে প্রচুর জীবনোপকরণ আসত। অতঃপর তারা আল্লাহর অনুগ্রহকে অস্বীকার করল, ফলে তারা যা করত সেজন্য আল্লাহ তাদেরকে ক্ষুধা ও ভীতির স্বাদ গ্রহণ করালেন। (সূরা নাহল- ১১২)

এ আয়াতে বর্ণিত فَكَفَرَتْ (ফাকাফারাত) শব্দটি আল্লাহর নিয়ামতের অকৃতজ্ঞতা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।

কুফরীর পরিণাম :

ইচ্ছাকৃতভাবে কুফরী কথা উচ্চারণ করলে ঈমান চলে যায়। পূর্বে নামায, রোযা, হজ্জ, ইবাদাত-বন্দেগী যতকিছু করা হয়েছে সব বাতিল হয়ে যায়। বিবাহ নষ্ট হয়ে যায়। কাজেই তওবা করে পুনরায় মুসলমান হতে হবে।

কুফরী জঘন্য অপরাধ। তাই এর শাস্তিও কঠোর। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-

﴿فَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا قُطِّعَتْ لَهُمْ ثِيَابٌ مِّنْ نَّارٍ يُّصَبُّ مِنْ فَوْقِ رُءُوْسِهِمُ الْحَمِيْمُ - يُصْهَرُ بِهٖ مَا فِيْ بُطُوْنِهِمْ وَالْجُلُوْدُ - وَلَهُمْ مَّقَامِعُ مِنْ حَدِيْدٍ - كُلَّمَاۤ اَرَادُوْاۤ اَنْ يَّخْرُجُوْا مِنْهَا مِنْ غَمٍّ اُعِيْدُوْا فِيْهَا وَذُوْقُوْا عَذَابَ الْحَرِيْقِ﴾

যারা কুফরী করে তাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে আগুনের পোষাক, তাদের মাথার উপর ঢেলে দেয়া হবে ফুটমত্ম পানি, যা দ্বারা তাদের উদরে যা আছে তা এবং তাদের চর্ম বিগলিত করা হবে। আর তাদের জন্য থাকবে লৌহ নির্মিত মুগুর। যখনই তারা যন্ত্রণাকাতর হয়ে জাহান্নাম হতে বের হতে চাইবে তখনই তাদেরকে তাতে ফিরিয়ে দেয়া হবে। তাদেরকে বলা হবে, দহন যন্ত্রণা আস্বাদন করো। (সূরা হাজ্জ, ১৯-২২)

আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

﴿وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا فَتَعْسًا لَّهُمْ وَاَضَلَّ اَعْمَالَهُمْ - ذٰلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوْا مَاۤ اَنْزَلَ اللهُ فَاَحْبَطَ اَعْمَالَهُمْ﴾

আর যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য ধ্বংস এবং আল্লাহ তাদের আমল নিষ্ফল করে দিয়েছেন। কারণ আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তারা তা অপছন্দ করছে; তাই আল্লাহ তাদের আমল বরবাদ করে দিয়েছেন। (সূরা মুহাম্মাদ- ৮, ৯)

যারা কুফরী করে, শয়তান তাদের অভিভাবক এবং তারা হলো জাহান্নামী। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে :

﴿وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا أَوْلِيَاؤُهُمُ الطَّاغُوْتُ يُخْرِجُوْنَهُمْ مِنَ النُّوْرِ إِلَى الظُّلُمَاتِ أُولٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيْهَا خَالِدُوْنَ﴾

যারা কাফির তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত। তারা তাদেরকে আলো থেকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। আর তারাই হচ্ছে জাহান্নামের অধিবাসী। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। (সূরা বাকারা- ২৫৭)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন