hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

যেসব কারণে ঈমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

ঈমান বাড়ে ও কমে
ঈমান আনার পর তা জড়বস্তুর মতো এক অবস্থায় থাকে না। বান্দা যখন নেক আমল করতে থাকে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে থাকে তখন তার ঈমান পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকে। আর ঈমানদারের আমলের অনুপাতে তাদের মর্যাদার কম-বেশি হয়ে থাকে। বিপরীতপক্ষে যখন সে আল্লাহর নাফরমানী করতে থাকে তখন তার ঈমান কমতে থাকে। এমনকি কোন কোন নাফরমানী এমন রয়েছে যে, যার কারণে তখন সে আর মুমিনই থাকে না। অর্থাৎ তার ঈমান ভঙ্গ হয়ে যায়।

ঈমান বৃদ্ধি পাওয়া সংক্রান্ত দলিল : আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

﴿اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ الَّذِيْنَ اِذَا ذُكِرَ اللهُ وَجِلَتْ قُلُوْبُهُمْ وَاِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ اٰيَاتُهٗ زَادَتْهُمْ اِيْمَانًا وَّعَلٰى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُوْنَ﴾

নিশ্চয় মুমিন তো তারাই যাদের হৃদয় আল্লাহর স্মরণে কম্পিত হয় এবং তাদের সামনে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হলে তাদের ঈমান আরো বৃদ্ধি পায়। আর তারা তাদের প্রতিপালকের উপরই নির্ভর করে থাকে। (সূরা আনফাল- ২)

﴿وَاِذَا مَاۤ اُنْزِلَتْ سُوْرَةٌ فَمِنْهُمْ مَّنْ يَّقُوْلُ اَيُّكُمْ زَادَتْهُ هٰذِهٖۤ اِيْمَانًاۚ فَاَمَّا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا فَزَادَتْهُمْ اِيْمَانًا وَّهُمْ يَسْتَبْشِرُوْنَ وَاَمَّا الَّذِيْنَ فِيْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ فَزَادَتْهُمْ رِجْسًا اِلٰى رِجْسِهِمْ وَمَاتُوْا وَهُمْ كَافِرُوْنَ ﴾

যখনই কোন সূরা অবতীর্ণ হয় তখন তাদের কেউ কেউ বলে, এটা তোমাদের মধ্যে কার ঈমান বৃদ্ধি করল? (প্রকৃতপক্ষে) যারা মুমিন এটা তাদেরই ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তারাই আনন্দিত হয়। আর যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে, এটা তাদের অপবিত্রতার সাথে আরো অপবিত্রতা যুক্ত করে এবং তাদের মৃত্যু ঘটে কাফির অবস্থায়। (সূরা তাওবা- ১২৪, ১২৫)

﴿نَحْنُ نَقُصُّ عَلَيْكَ نَبَاَهُمْ بِالْحَقِّ اِنَّهُمْ فِتْيَةٌ اٰمَنُوْا بِرَبِّهِمْ وَزِدْنَاهُمْ هُدًى﴾

আমি তোমার নিকট তাদের বৃত্তান্ত সঠিকভাবে বর্ণনা করছি। তারা ছিল কয়েকজন যুবক, তারা তাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান এনেছিল এবং আমি তাদের হেদায়াত আরো বৃদ্ধি করে দিয়েছিলাম। (সূরা কাহফ- ১৩)

﴿وَلَمَّا رَاَى الْمُؤْمِنُوْنَ الْاَحْزَابَ قَالُوْا هٰذَا مَا وَعَدَنَا اللهُ وَرَسُوْلُهٗ وَصَدَقَ اللهُ وَرَسُوْلُهٗ وَمَا زَادَهُمْ اِلَّاۤ اِيْمَانًا وَّتَسْلِيْمًا﴾

যখন মুমিনরা সম্মিলিত শত্রুবাহিনীকে দেখতে পেল তখন তারা বলে উঠল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তো আমাদেরকে এরই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং তাঁর রাসূল সত্যই বলেছেন। এতে তাদের ঈমান ও আনুগত্য আরো বৃদ্ধি পেল।

(সূরা আহযাব- ২২)

﴿هُوَ الَّذِيْۤ اَنْزَلَ السَّكِيْنَةَ فِيْ قُلُوْبِ الْمُؤْمِنِيْنَ لِيَزْدَادُوْاۤ اِيْمَانًا مَّعَ اِيْمَانِهِمْ﴾

তিনিই সেই সত্তা, যিনি মুমিনদের অন্তরে সান্ত্বনা দান করেছেন, যাতে তারা তাদের ঈমানের সাথে আরো ঈমান বাড়িয়ে নেয়। (সূরা ফাতহ- ৪)

হাদীসে ইরশাদ হয়েছে,

حدَّثَنَا ابْنُ سَابِطٍ قَالَ : كَانَ عَبْدُ اللهِ بْنُ رَوَاحَةَ يَأْخُذُ بِيَدِ النَّفَرِ مِنْ اَصْحَابِه فَيَقُوْلُ : تَعَالَوْا نُؤْمِنُ سَاعَةً تَعَالَوْا فَلْنَذْكُرَ اللهَ وَنَزْدَدْ إيْمَانًا، تَعَالَوْا نَذْكُرُه بِطَاعَتِه لَعَلَّه يَذْكُرُنَا بِمَغْفِرَتِه

ইবনে বাসেত (রহ.) বলেন, একদা আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রহ.) কয়েকজন সাথির হাত ধরে বললেন, এসো- আমরা কতক্ষণ ঈমান আনয়ন করি। এসো আমরা আল্লাহকে স্মরণ করি এবং আমাদের ঈমান বৃদ্ধি করি। তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মাগফিরাত দ্বারা আমাদেরকে স্মরণ করবেন। [মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হা/৩১০৬৫।]

عَنْ جُنْدُبٍ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبْيِ وَنَحْنُ فِتْيَانُ حَزَاوَرَةٌ فَتَعَلَّمْنَا الْاِيْمَانَ قَبْلَ اَنْ نَّتَعَلَّمَ الْقُرْاٰنَ فَازْدَدْنَا بِه اِيْمَانًا

জুনদুব ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে থাকতাম। আর আমরা ছিলাম অল্প বয়সী যুবক। তখন আমরা কুরআন শিক্ষা করার পূর্বে ঈমান শিক্ষা করতাম। এভাবে আমরা ঈমান বৃদ্ধি করতাম। [ইবনে মাজাহ, হা/৬১।]

ঈমান কমে যাওয়া সংক্রান্ত দলিল : আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

﴿فِيْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ فَزَادَهُمُ اللهُ مَرَضًا﴾

তাদের অন্তরে রোগ রয়েছে, উপরন্তু আল্লাহ তাদের রোগ আরো বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। (সূরা বাকারা- ১০)

এখানে মুনাফিকীকে রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আল্লাহ মুনাফিকীর কারণে তাদের এ রোগ আরো বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। অর্থাৎ মুনাফিকীর কারণে তাদের ঈমান দুর্বল হয়ে গেছে এবং সেই ঈমানের স্থান মুনাফিকীর রোগ দখল করে নিয়েছে।

﴿قَالُوْا لَوْ نَعْلَمُ قِتَالًا لَّاتَّبَعْنَاكُمْؕ هُمْ لِلْكُفْرِ يَوْمَئِذٍ اَقْرَبُ مِنْهُمْ لِلْاِيْمَانِۚ يَقُوْلُوْنَ بِاَفْوَاهِهِمْ مَّا لَيْسَ فِيْ قُلُوْبِهِمْؕ وَاللهُ اَعْلَمُ بِمَا يَكْتُمُوْنَ﴾

সেদিন তারা ঈমানের চেয়ে কুফরীর অধিক নিকটবর্তী ছিল। আর তারা তাই বলে থাকে, যা তাদের অন্তরে নেই; তারা যে বিষয়ে গোপন করে, আল্লাহ সে সম্পর্কে অধিক পরিজ্ঞাত। (সূরা আলে ইমরান- ১৬৭)

এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তারা সেদিন ঈমানের চেয়ে কুফরীর নিকটবর্তী ছিল। তার মানে হচ্ছে, ঐ দিন তাদের ঈমান দুর্বল হয়ে পড়েছিল।

﴿اَلَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَلَمْ يَلْبِسُوْاۤ اِيْمَانَهُمْ بِظُلْمٍ اُولٰٓئِكَ لَهُمُ الْاَ مْنُ وَهُمْ مُّهْتَدُوْنَ﴾

যারা ঈমান এনেছে এবং নিজেদের ঈমানকে যুলুম দ্বারা কলুষিত করেনি, তাদের জন্য রয়েছে নিরাপত্তা। আর তারাই প্রকৃত হেদায়াতপ্রাপ্ত। (সূরা আন‘আম- ৮২)

এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, যারা ঈমানের সাথে যুলুম অর্থাৎ শিরক মিশ্রিত করবে না তারাই নিরাপত্তা পাবে এবং হেদায়াত লাভ করবে। এ থেকে বুঝা গেল, যদি কেউ ঈমানের সাথে যুলুম মিশ্রিত করে তবে সে এ পুরস্কার পাবে না। কারণ তার ঈমান কমে গেছে এবং দুর্বল হয়ে গেছে।

হাদীসে ইরশাদ হয়েছে,

عَنْ أَبِىْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِىِّ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ - - يَقُوْلُ : مَنْ رَاٰى مِنْكُمْ مُّنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِه فَاِنْ لَّمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِه فَاِنْ لَّمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِه وَذٰلِكَ اَضْعَفُ الْاِيْمَانِ

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন মন্দকর্ম হতে দেখে, সে যেন তার হাত দ্বারা তা প্রতিহত করে। আর যদি সে এতে অক্ষম হয় তবে সে যেন তার জিহবা দ্বারা এটাকে প্রতিহত করে। আর যদি সে এতেও অক্ষম হয় তবে সে যেন তার অন্তর দ্বারা এটাকে প্রতিহত করে। আর এটা হচ্ছে ঈমানের সবচেয়ে দুর্বলতম স্তর। [সহীহ মুসলিম, হা/১৮৬; ইবনে মাজাহ, হা/৪০১৩; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৫৪২; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৪৬০; সুনানে বায়হাকী লি আবি বাকর, হা/২০৬৭৪)]

এ হাদীসে নবী ﷺ যা বললেন তা থেকে বুঝা গেল যে, অন্যায় কাজ প্রতিহতকারী যদি তার শক্তি দ্বারা অথবা জবান দ্বারা সামর্থ্য না রাখে এবং অন্তর দ্বারা তার প্রতিবাদ করে তবে সে ঈমানের সর্বনিম্ন স্তরে অবস্থান করবে। সুতরাং ঈমানের স্তর অনেক সময় নীচে নেমে যায়। অন্য হাদীসে ইরশাদ হয়েছে,

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ قَالَ : ‏ لَا يَزْنِى الزَّانِيْ حِيْنَ يَزْنِيْ وَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلَا يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِيْنَ يَشْرَبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ، وَلَا يَسْرِقُ السَّارِقُ حِيْنَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ‏‏ . ‏ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَأَخْبَرَنِيْ عَبْدُ الْمَلِكُ بْنُ أَبِيْ بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ كَانَ يُحَدِّثُه عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ ثُمَّ يَقُوْلُ : كَانَ أَبُوْ بَكْرٍ يُلْحِقُ مَعَهُنَّ‏ وَلَا يَنْتَهِبُ نُهْبَةً ذَاتَ شَرَفٍ، يَرْفَعُ النَّاسُ اِلَيْهِ اَبْصَارَهُمْ فِيْهَا حِيْنَ يَنْتَهِبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ‏

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেছেন, কোন ব্যক্তি ঈমানদার অবস্থায় ব্যভিচার করতে পারে না। কোন ব্যক্তি ঈমানদার অবস্থায় মদ্যপান করতে পারে না। কোন ব্যক্তি ঈমানদার অবস্থায় চুরি করতে পারে না। আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত অপর সূত্রে আবু বকর নামে একজন বর্ণনাকারী এ হাদীসের সঙ্গে আরো এতটুকু যোগ করেছেন যে, ঈমান থাকা অবস্থায় কেউ দিন-দুপুরে মূল্যবান বস্তু এভাবে ডাকাতি করতে পারে না যে, লোকেরা তার দিকে তাকিয়ে থাকবে আর সে ডাকাতি করে যাবে। [সহীহ বুখারী, হা/২৪৭৫।]

এ হাদীস থেকে বুঝা গেল যে, উল্লেখিত পাপসমূহ করার সময় ব্যক্তি মুমিন থাকে না। অর্থাৎ তখন তার ঈমান তার থেকে সরে যায় অথবা কমে যায় বা দুর্বল হয়ে পড়ে। যদি তার ঈমান শক্তিশালী থাকত তাহলে সে কখনোই এসব অন্যায় কাজে জড়িত হতে পারত না।

অতএব আমাদের কর্তব্য হলো, বেশি বেশি নেক আমল করা, যাতে আমাদের ঈমান আরো বৃদ্ধি পায়। আর সকল প্রকার অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকা, যাতে আমাদের ঈমান কমে না যায়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন