hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

যেসব কারণে ঈমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৩২
اَلشِّرْكُ (আশ্শিরক) শিরকের পরিচয়
اَلشِّرْكُ (আশ্শিরক) শব্দের আভিধানিক অর্থ- অংশীদারিত্ব করা, সমকক্ষ করা, সমান করা, ভাগাভাগি করা, সম্পৃক্ত করা ইত্যাদি। পরিভাষায় যেসব গুণাবলি কেবল আল্লাহর জন্য নির্ধারিত সেসব গুণে অন্য কাউকে গুণান্বিত করা বা এতে অন্য কারো অংশ আছে বলে মনে করা শিরক। শিরকের ক্ষেত্রে এটা লক্ষ্যণীয় যে, এতে উভয় শরীকের অংশ সমান হওয়া জরুরি নয় বরং অল্পতে অংশীদার হলেও তাকে শরীক বলা হয়। তাই আল্লাহ তা’আলার হকের সামান্যতম অংশ অন্যকে দিলেই তা শিরকে পরিণত হবে। তাওহীদের বিপরীত হলো শিরক।

শিরকের পরিণাম :

শিরকের পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। আল্লাহ বলেছেন-

﴿وَاِذْ قَالَ لُقْمَانُ لِاِبْنِهٖ وَهُوَ يَعِظُهٗ يَا بُنَيَّ لَا تُشْرِكْ بِاللهِؕ اِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيْمٌ﴾

স্মরণ করো, যখন লুকমান স্বীয় ছেলেকে বলেছিলেন, হে আমার ছেলে! আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না। নিশ্চয় শিরক হচ্ছে বড় যুলুম। (সূরা লুক্বমান- ১৩)

عَنْ عَبْدِ اللهِ ، قَالَ : سَأَلْتُ النَّبِيَّ أَيُّ الذَّنْبِ أَعْظَمُ عِنْدَ اللهِ قَالَ : أَنْ تَجْعَلَ لِلّٰهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী ﷺ কে জিজ্ঞেস করলাম যে, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বড় গোনাহ কোনটি? রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তুমি আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করবে, অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। [সহীহ বুখারী, হা/৪৪৭৭; মুসলিম, হা/২৬৭; আবু দাউদ, হা/২৩১২; তিরমিযী, হা/৩১৮২; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৬১২।]

শিরক করে মারা গেলে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না :

﴿اِنَّ اللهَ لَا يَغْفِرُ اَنْ يُّشْرَكَ بِهٖ وَيَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذٰلِكَ لِمَن يَّشَآءُ﴾

নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরীক স্থাপন করার অপরাধ ক্ষমা করবেন না। এটা ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেবেন। (সূরা নিসা- ৪৮)

عَنْ اُسَامَةَ بْنَ سَلْمَانَ اَنَّ اَبَا ذَرٍّ الْغِفَارِيْ  : حَدَّثَهُمْ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ : اِنَّ اللهَ يَغْفِرُ لِعَبْدِهٖ مَا لَمْ يَقَعُ الْحِجَابِ قِيْلَ : يَا رَسُوْلَ اللهِ وَ مَا الْحِجَابُ ؟ قَالَ : اَنْ تَمُوْتَ النَّفْسُ مُشْرِكَةٌ

জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেছেন, বান্দার জন্য সর্বদাই ক্ষমা রয়েছে যতক্ষণ পর্যন্ত হিযাব বা পর্দা পতিত না হয়। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! হিযাব বা পর্দা কী? তিনি বললেন, মুশরিক অবস্থায় কারো মৃত্যু হওয়া। [মুস্তাদরাক আলাস সাহীহাইন, ইমাম হাকেম, হা/৭৬৬০।]

শিরক করলে জান্নাত হারাম হয়ে যায় :

﴿اِنَّهٗ مَنْ يُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَاْوَاهُ النَّارُؕ وَمَا لِلظَّالِمِيْنَ مِنْ اَنْصَارٍ﴾

যারা আল্লাহর সাথে শিরক করবে আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন; তাদের স্থায়ী আবাসস্থল হচ্ছে জাহান্নাম। আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। (সূরা মায়েদা- ৭২)

عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : مَنْ مَاتَ يُشْرِكُ بِاللهِ شَيْئًا دَخَلَ النَّارَ

আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন কিছুকে আল্লাহর সাথে শরীক করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, সে জাহান্নামে যাবে। [বুখারী, হা/১২৩৮; মুসলিম, হা/২৭৮; মুসনাদে আহমদ, হা/৩৬২৫।]

শিরক করলে সব আমল বাতিল হয়ে যায় :

﴿وَلَقَدْ اُوْحِيَ اِلَيْكَ وَاِلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكَۚ لَئِنْ اَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ﴾

নিশ্চয় তোমার প্রতি ও তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি ওহী করা হয়েছে যে, যদি তুমি আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন কর, তবে নিঃসন্দেহে তোমার কর্ম নিষ্ফল হয়ে যাবে এবং অবশ্যই তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। (সূরা যুমার- ৬৫)

শিরকের কারণ :

১। আল্লাহ সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করা :

আল্লাহ সম্পর্কে মন্দ ধারণাই শিরকের মূল কারণ। যে কোন শিরকের পেছনে আল্লাহ সম্পর্কে কোন না কোন দোষ-ত্রুটি ও মন্দ ধারণা কাজ করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿اِذْ قَالَ لِاَبِيْهِ وَقَوْمِهٖ مَاذَا تَعْبُدُوْنَ اَئِفْكًا اٰلِهَةً دُوْنَ اللهِ تُرِيْدُوْنَ فَمَا ظَنُّكُمْ بِرَبِّ الْعَالَمِيْنَ﴾

যখন ইবরাহীম তাঁর পিতা ও সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা কীসের পূজা করছ? তোমরা কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা অলীক মাবুদগুলোকে চাও? তাহলে সারা বিশ্বের রব সম্বন্ধে তোমাদের ধারণা কী? (সূরা সাফাফাত : ৮৫-৮৭)

২। আল্লাহকে যথাযথ মর্যাদা না দেয়া :

﴿وَمَا قَدَرُوا اللهَ حَقَّ قَدْرِهٖ وَالْاَرْضُ جَمِيْعًا قَبْضَتُهٗ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّماوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ ۢبِيَمِيْنِهٖؕ سُبْحَانَهٗ وَتَعَالٰى عَمَّا يُشْرِكُوْنَ﴾

তারা আল্লাহকে যথাযথ সম্মান করে না। কিয়ামতের দিন সমস্ত পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুষ্টিতে এবং আকাশমন্ডলী থাকবে ভাঁজকৃত- তাঁর ডান হাতে। অতএব তারা তাঁর সাথে যাকে শরীক করে তিনি তার থেকে অনেক পবিত্র ও মহান। (সূরা যুমার- ৬৭)

৩। আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞতা ও মূর্খতা :

﴿قُلْ اَفَغَيْرَ اللهِ تَأْمُرُوْٓنِّۤيْ اَعْبُدُ اَيُّهَا الْجَاهِلُوْنَ﴾

বলো, হে মূর্খরা! তোমরা কি আমাকে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদাত করতে আদেশ করছ? (সূরা যুমার- ৬৪)

শিরকের প্রকারভেদ

তাওহীদ আল্লাহর একত্ববাদকে বুঝায়। আর শিরক তার এ একত্ববাদকে নাকচ করে দেয়। তাওহীদ যেমন তিন প্রকার তার বিপরীত শিরকও তিন প্রকার। নিচে তা বর্ণনা করা হলো :

১। اَلشِّرْكُ فِى الرُّبُوْبِيَّةِ (আশ্শিরকু ফির-রুবূবিয়্যাহ) :

আল্লাহর ক্ষমতা এবং সার্বভৌমত্বে কাউকে শরীক করা। যেমন আল্লাহ ছাড়া কাউকে কল্যাণ-অকল্যাণের মালিক, বিপদ থেকে মুক্তিদাতা বা সন্তানদাতা বলে মনে করা।

২। اَلشِّرْكُ فِى الْاَسْمَاءِ وَالصِّفَاتِ (আশ্শিরকু ফিল আসমা ওয়াস সিফাত) :

আল্লাহর নাম এবং তাঁর গুণাবলির ক্ষেত্রে শিরক করা। আল্লাহর গুণাবলির সাথে সৃষ্টির গুণাবলির তুলনা করা। তাছাড়া আল্লাহর যেসব গুণ ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে সেগুলো সৃষ্টিরও আছে বলে বিশ্বাস করা। যেমন- আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ ইলমুল গায়েব বা অদৃশ্য জানে বলে বিশ্বাস করা।

৩। اَلشِّرْكُ فِى الْاُلُوْهِيَّةِ (আশ্শিরকু ফিল উলূহিয়্যাহ) :

তা হচ্ছে আল্লাহর ইবাদাতের ক্ষেত্রে কাউকে শরীক করা। যেমন- আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে দু‘আ করা, সিজদা করা, অন্যের নামে মান্নত করা, অন্যকে আল্লাহর মতো ভয় করা, ভালোবাসা, আল্লাহর আইন ব্যতীত অন্য কোন আইনের কাছে বিচার চাওয়া ইত্যাদি।

স্তর হিসেবে শিরক তিন প্রকার

১। اَلشِّرْكُ الْاَكْبَرِ (আশ্শিরকুল আকবার) বড় শিরক :

এটা হলো, আল্লাহর সাথে কাউকে সমকক্ষ স্থির করে আল্লাহর মতো তার ইবাদাত করা ও আনুগত্য করা। এ প্রকার শিরক যে কাউকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়।

২। اَلشِّرْكُ الْاَصْغَرِ (আশ্শিরকুল আসগার) ছোট শিরক :

এটা হচ্ছে, আমল ও মুখের কথায় গায়রুল্লাহকে আল্লাহর সাথে শরীক করা। এ শিরক অনেক বড় কবীরা গোনাহ, কিন্তু এটি ইসলাম থেকে বের করে দেয় না। এটি মুখের কথার দ্বারা হতে পারে আবার কর্মের দ্বারাও সংঘটিত হতে পারে। যেমন- এরূপ কথা বলা যে, আপনি চাইলে আর আল্লাহ চাইলে এ কাজটি হবে, আল্লাহ আর আপনি ছাড়া আমার আর কেউ নেই, এটি আল্লাহ এবং আপনার দান, আল্লাহ আর আপনার উপর ভরসা করছি ইত্যাদি।

৩। اَلشِّرْكُ الْخَفِيْ (আশ্শিরকুল খফী) গোপন শিরক :

এটা হচ্ছে, হৃদয়ের এমন গোপন ইচ্ছা ও মুখের এমন অসতর্কমূলক কথা, যার মাধ্যমে আল্লাহকেও গায়রুল্লাহর সমান করা হয়। এটি কখনো বড় শিরক আবার কখনো ছোট শিরক হতে পারে। গোপনীয়তার কারণে এ শিরকে লিপ্ত ব্যক্তি সঠিকভাবে তা নির্ণয় করতে পারে না। নবী ﷺ বলেন,

اَلشِّرْكُ أَخْفٰى مِنْ دَبِيْبِ النَّمَلِ عَلَى الصَّخْرَةِ السَّوْدَاءِ فِي اللَّيْلَةِ الظُّلْمَاءِ

অন্ধকার রাতে কালো পাথরে যেভাবে পিপিলিকার অবস্থান গোপন থাকে, শিরক তোমাদের মধ্যে ঐভাবে গোপন থাকে। [মুসনাদে রাবী‘ ইবনে হাবীব, হা/৮৭৯।]

বড় শিরকের প্রকারভেদ

বড় শিরক চার প্রকার। আর তা হলো :

১। اَلشِّرْكُ فِى الدَّعْوَةِ (আশ্শিরকু ফিদ-দাওয়াত) আহবানের ক্ষেত্রে শিরক :

আল্লাহকে ডাকার মতো গায়রুল্লাহকে ডাকা। সে ডাক কোন প্রাপ্তি বা মুক্তির জন্য হোক কিংবা শুধু ইবাদাত বা বিনয় প্রকাশার্থে হোক। যেমন, জীবিত পীর, খাজা, গাউস-কুতুবের কাছে সন্তান, রোগ নিরাময়, ব্যবসায় উন্নতি, বিপদ হতে পরিত্রাণ ও পরলৌকিক সুপারিশ ও মুক্তির প্রার্থনা করা। কোন মৃত, কবরস্থ কিংবা অনুপস্থিত পীর দরবেশের নিকট কোন কিছু প্রার্থনা করা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন,

﴿فَاِذَا رَكِبُوْا فِي الْفُلْكِ دَعَوُا اللهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ فَلَمَّا نَجَّاهُمْ اِلَى الْبَرِّ اِذَا هُمْ يُشْرِكُوْنَ﴾

যখন তারা নৌকায় আরোহন করে তখন একনিষ্ঠচিত্তে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে মুক্তি দিয়ে ডাঙ্গায় নিয়ে যান তখনই তারা শিরক করে। (সূরা আনকাবুত- ৬৫)

২। اَلشِّرْكُ فِى النِّيَّةِ (আশ্শিরকু ফিন নিয়্যাত) ইচ্ছা ও সংকল্পের ক্ষেত্রে শিরক :

আমলের মাধ্যমে গায়রুল্লাহকে উদ্দেশ্য করা। এ প্রকার শিরক বিশ্বাসের মাঝে বিরাজ করে। যে ব্যক্তি নিজ আমলের দ্বারা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নৈকট্য কামনা করবে, তার কাছে বিনিময় প্রত্যাশা করবে অথবা শুধু পার্থিব কল্যাণের উদ্দেশ্যেই আমল করবে সে ব্যক্তি ইচ্ছা ও উদ্দেশ্যের ক্ষেত্রেও শিরকে লিপ্ত হবে। আল্লাহর বাণী-

﴿مَنْ كَانَ يُرِيْدُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِيْنَتَهَا نُوَفِّ اِلَيْهِمْ اَعْمَالَهُمْ فِيْهَا وَهُمْ فِيْهَا لَا يُبْخَسُوْنَ اُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ لَيْسَ لَهُمْ فِى الْاٰخِرَةِ اِلَّا النَّارُ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوْا فِيْهَا وَبَاطِلٌ مَّا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ﴾

যারা পার্থিব জীবন ও তার চাকচিক্য কামনা করে, আমি তাদেরকে দুনিয়াতেই পুরোপুরিভাবে তাদের আমলের প্রতিফল ভোগ করিয়ে দেব এবং তাতে তাদের প্রতি কিছুমাত্র কমতি করা হবে না। এরাই হলো সেসব লোক আখিরাতে যাদের জন্য আগুন ছাড়া আর কিছুই নেই। তারা এখানে যা কিছু করেছিল সবই বরবাদ হয়ে গেছে, আর যা কিছু উপার্জন করেছিল সবই বাতিল বলে গণ্য হয়েছে। (সূরা হুদ- ১৫, ১৬)

৩। اَلشِّرْكُ فِى الطَّاعَةِ (আশ্শিরকু ফিত ত্বা‘আত) আনুগত্যের ক্ষেত্রে শিরক :

হুকুম বা বিধান প্রবর্তনের ক্ষেত্রে গায়রুল্লাহকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করা। অথচ বিধান বা হুকুম প্রদান করা আল্লাহর হক বা অধিকারসমূহের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলার বাণী-

﴿اِتَّخَذُوْاۤ اَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ اَرْبَابًا مِّنْ دُوْنِ اللهِ وَالْمَسِيْحَ ابْنَ مَرْيَمَۚ وَمَاۤ اُمِرُوْاۤ اِلَّا لِيَعْبُدُوْاۤ اِلٰهًا وَّاحِدًاۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ سُبْحَانَهٗ عَمَّا يُشْرِكُوْنَ﴾

তারা আল্লাহ ব্যতীত তাদের আলিম ও সংসার বিরাগীদেরকে তাদের প্রভু হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং মারইয়ামের পুত্র মাসীহ্কেও। অথচ তারা এক ইলাহের ইবাদাত করার জন্যই আদিষ্ট হয়েছিল। (কেননা) তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। তারা যাকে শরীক করে তা হতে তিনি কতই না পবিত্র।

(সূরা তাওবা- ৩১)

৪। اَلشِّرْكُ فِى الْمُحَبَّةِ (আশ্শিরকু ফিল মুহাববাত) ভালোবাসার ক্ষেত্রে শিরক :

আল্লাহর সাথে গায়রুল্লাহকে এমনভাবে ভালোবাসা যে, বান্দা গায়রুল্লাহ তথা আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর সামনে বিনীত ও তার দাস হয়ে যায়, চাই সে ভালোবাসা আল্লাহর ভালোবাসার সমান হোক বা কম বেশি হোক। এ প্রকার শিরকের উদাহরণ হলো, গাউস, কুতুব, পীর-ফকির, খাজা, দরগাহ, মাজার ইত্যাদির প্রতি ভালোবাসা। অপর কিছু সম্প্রদায় কর্তৃক আধুনিক পাশ্চাত্য সভ্যতা, সমাজতন্ত্র ইত্যাদির প্রতি অন্ধ ভালোবাসা। পার্থিব জীবন ও ভোগ-বিলাসের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত ভালোবাসা, যা আল্লাহ ও পরকালকে ভুলিয়ে দেয় তাও এ শিরকের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন-

﴿وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّتَّخِذُ مِنْ دُوْنِ اللهِ اَنْدَادًا يُّحِبُّوْنَهُمْ كَحُبِّ اللهِؕ وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اَشَدُّ حُبًّا لِّلّٰهِ﴾

মানুষের মধ্যে কিছু লোক এমনও রয়েছে, যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্য কিছুকে তাঁর সমকক্ষ হিসেবে গ্রহণ করে। তারা তাদেরকে তেমনি ভালোবাসে যেমনটি কেবল আল্লাহকেই ভালোবাসা উচিত। আর যারা (সত্যিকার অর্থে) আল্লাহর উপর ঈমান আনয়ন করে, তারা তো তাঁকেই সর্বাধিক ভালোবাসবে। (সূরা বাক্বারা- ১৬৫)

একজন ঈমানদারের কাছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্যসব সন্তুষ্টির উপর অগ্রাধিকার লাভ করবে। তার মধ্যে কোনকিছুর প্রতি ভালোবাসা আল্লাহর ভালোবাসার চেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করবে না।

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ ، عَنِ النَّبِيِّ قَالَ : تَعِسَ عَبْدُ الدِّيْنَارِ وَعَبْدُ الدِّرْهَمِ وَعَبْدُ الْخَمِيْصَةِ إِنْ أُعْطِيَ رَضِيَ وَإِنْ لَمْ يُعْطَ سَخِطَ

আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক নবী ﷺ হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, যারা দীনার, দিরহাম ও উত্তম পোশাক পরিচ্ছদের দাস, তারা ধ্বংস হয়ে গেল। তাকে দেয়া হলে সে সন্তুষ্ট হয়, আর দেয়া না হলে অসন্তুষ্ট হয়। [সহীহ বুখারী, হা/২৮৮৭; ইবনে মাজাহ, হা/৪১৩৫; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩২১৮; মুসনাদে বাযযার, হা/৮১২০।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন