hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

যেসব কারণে ঈমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৫
ঈমানের ক্ষতি সাধনকারী বিষয়সমূহ
ঈমানের ক্ষতিসাধনকারী বিষয়সমূহ হলো বান্দার পাপ। পাপ তার কমবেশি হওয়ার দিক থেকে ঈমানের উপর প্রভাব ফেলে। পাপের মাত্রা যত বাড়বে তার ঈমান ততবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনকি বান্দা যদি কুফরী পর্যায়ের পাপ করে বসে অথবা পাপকে হালাল মনে করে, সেটা অন্তর দ্বারা হোক, জিহবার দ্বারা হোক অথবা অঙ্গের দ্বারা হোক তবে তা তাকে ঈমান থেকে বের করে দেয়। তখন সে মুরতাদ হয়ে যায়। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের মতানুযায়ী কুফর ও শিরক ব্যতীত অন্যান্য পাপসমূহ দুভাগে বিভক্ত।

১. কবীরা গোনাহ। ২. সগীরা গোনাহ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

﴿وَيَقُوْلُوْنَ يَا وَيْلَتَنَا مَالِ هٰذَا الْكِتَابِ لَا يُغَادِرُ صَغِيْرَةً وَّلَا كَبِيْرَةً اِلَّاۤ اَحْصَاهَا﴾

অপরাধীরা বলতে থাকবে, হায় দুর্ভাগ্য আমাদের, এটা কেমন গ্রন্থ! এতে তো কবীরা গোনাহ ও সগীরা গোনাহ কোনকিছুই বাদ দেয়া হয়নি; বরং সবকিছুই রেখে দেয়া হয়েছে। (সূরা কাহফ- ৪৯)

১. কবীরা গোনাহের সংজ্ঞা :

اَلْكَبِيْرَةُ : هِيَ كُلُّ مَعْصِيَةِ يَتَرَتَّبُ عَلَيْهَا حَدٌّ فِي الدُّنْيَا، أَوْ عُقُوْبَةٌ، أَوْ تَوَعُّدٌ بِالنَّارِ، أَوْ عَذَابٌ، أَوْ لَعْنَةٌ، أَوْ غَضَبٌ

কবীরা ঐ সকল গোনাহকে বলা হয়, যার জন্য দুনিয়াতে কোন শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে অথবা যার জন্য জাহান্নামের ভয় দেখানো হয়েছে অথবা যে পাপের জন্য লানত বা অভিশাপ বর্ষণ করা হয়েছে অথবা যে পাপের জন্য আল্লাহর গযবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

২. সগীরা গোনাহের সংজ্ঞা :

اَلصَّغِيْرَةُ : هِيَ كُلُّ مَعْصِيَةٍ لَا يَتَرَتَّبُ عَلَيْهَا حَدٌّ فِي الدُّنْيَا، وَلَا وَعِيْدٌ فِي الْاٰخِرِةِ

সগীরা ঐ সকল গোনাহকে বলা হয়, যার জন্য দুনিয়াতে কোন হদ্দ বা শাস্তি নির্ধারণ করা হয়নি এবং পরকালেও কোন আযাবের হুমকি দেয়া হয়নি।

যেসব কারণে সগীরা গোনাহ কবীরা গোনাহে পরিণত হয় :

১. অনবরত গোনাহ করতে থাকা।

২. গোনাহকে হালকা ও তুচ্ছ মনে করা।

৩. সগীরা গোনাহ করে আনন্দ লাভ করা এবং গর্ব করা।

৪. সগীরা গোনাহকারী যদি আলিম হয়, তবে তার এই সগীরা গোনাহ কবীরা গোনাহে চলে যায়। কেননা মানুষ তার অনুসরণ করে থাকে।

৫. সগীরা গোনাহ অনেক সময় কবীরা গোনাহের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ইবনুল আম্বারী তার কবিতায় বলেন,

خَلِّ الذُّنُوْبَ حَقِيْرَهَا وَكَثِيْرَهَا فَهُوَ التُّقٰى

كُنْ مِثْلَ مَاشٍ فَوْقَ أَرْضِ الشَّوْكِ يحْذَرُ مَا يَرٰى

لَا تَحْقِرَنَّ صَغِيْرَةً إِنَّ الْجِبَالَ مِنَ الْحَصٰى

তুমি পাপকে ছেড়ে দাও, তা ছোট হোক আর বড় হোক। এটাই হলো তাক্বওয়া।

তুমি এমন হও, যেমন কোন কাটাযুক্ত রাস্তা দিয়ে কেউ চলাচল করে

আর সে কাটাবিদ্ধ হওয়ার ভয় করে।

তুমি কোন সগীরা গোনাহকে হালকা মনে করো না।

কেননা পাহাড় বালুকণা থেকেই হয়। [শু‘আবুল ঈমান, ৬৯১৯।]

ইবনে মুবারক তার কবিতায় বলেন,

رَأَيْتُ الذُّنُوْبَ تُمِيْتُ الْقُلُوْبَ وَيُتْبِعُهَا الذِّلَّ إِدْمَانُهَا

وَتَرْكُ الذُّنُوْبِ حَيَاةُ الْقُلُوْبِ وَخَيْرٌ لِنَفْسِكَ عِصْيَانُهَا

আমি দেখেছি যে, পাপ অন্তরকে মেরে ফেলে।

আর লাঞ্ছনা পাপীর সাথে লেগে থাকে।

পাপ ত্যাগ করলে অন্তর জীবন লাভ করে।

সুতরাং পাপ ত্যাগ করো- এটাই তোমার জন্য উত্তম। [শু‘আবুল ঈমান, ৬৯১৮।]

গোনাহের পুনরাবৃত্তির হুকুম :

কোন গোনাহ বারবার করা অথবা গোনাহের মধ্যে ডুবে থাকা বা অনবরত গোনাহের কাজ চালিয়ে যাওয়া এবং গোনাহ থেকে বিরত না হওয়া, তওবা ইস্তেগফার না করা এবং গোনাহের কাজে আনন্দ লাভ করা- এসব কাজ কবীরা গোনাহের পর্যায়ে পড়ে। এগুলো যদি সগীরা গোনাহের ক্ষেত্রেও হয়ে থাকে তবে তা কবীরা গোনাহের পর্যায়ে চলে যায়। কেননা ধারাবাহিকভাবে পাপ কাজে অনবরত ডুবে থাকার ফলে বান্দার অন্তর পাপে ছেয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তার অন্তরে আর ঈমান থাকে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

﴿بَلٰى مَنْ كَسَبَ سَيِّئَةً وَّاَحَاطَتْ بِهٖ خَطِيْٓئَتُهٗ فَأُولٰٓئِكَ اَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيْهَا خَالِدُوْنَ﴾

হ্যাঁ, যে পাপ অর্জন করবে এবং তাঁর পাপ তাকে পরিবেষ্টন করে রাখবে, সে জাহান্নামের অধিবাসী হবে। আর সে সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। (সূরা বাকারা- ৮১)

আল্লাহ তাদের ক্ষমা করেন যারা পাপের পুনরাবৃত্তি করে না :

﴿وَالَّذِيْنَ اِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَةً اَوْ ظَلَمُوْاۤ اَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللهَ فَاسْتَغْفَرُوْا لِذُنُوْبِهِمْؕ وَمَنْ يَّغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلَّا اللهُ وَلَمْ يُصِرُّوْا عَلٰى مَا فَعَلُوْا وَهُمْ يَعْلَمُوْنَ﴾

যারা কোন অশ্লীল কাজ করে ফেলে কিংবা নিজেদের জীবনের প্রতি অত্যাচার করে ফেলে, তৎক্ষনাৎ আল্লাহকে স্মরণ করে নিজেদের অপরাধসমূহের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে (তারাই মুমিন)। আর আল্লাহ ব্যতীত কে আছে, যে অপরাধসমূহ ক্ষমা করতে পারে? আর তারা যা (পাপ) করেছে, তার উপর জেনে-শুনে অটল থাকে না। (সূরা আলে ইমরান- ১৩৫)

সগীরা গোনাহকে হালকা মনে করা যাবে না :

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ إِيَّاكُمْ وَمُحَقَّرَاتِ الذُّنُوْبِ فَإِنَّهُنَّ يَجْتَمِعْنَ عَلَى الرَّجُلِ حَتّٰى يُهْلِكْنَهٗ وَإِنَّ رَسُوْلَ اللهِ ضَرَبَ لَهُنَّ مَثَلًا كَمَثَلِ قَوْمٍ نَزَلُوْا أَرْضَ فَلَاةٍ فَحَضَرَ صَنِيْعُ الْقَوْمِ فَجَعَلَ الرَّجُلُ يَنْطَلِقُ فَيَجِيءُ بِالْعُوْدِ وَالرَّجُلُ يَجِيءُ بِالْعُوْدِ حَتّٰى جَمَعُوْا سَوَادًا فَأَجَّجُوْا نَارًا وَأَنْضَجُوْا مَا قَذَفُوْا فِيْهَا

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, তোমাদের উপর আবশ্যক হচ্ছে পাপকে হালকা মনে না করা। কেননা এ সকল পাপ যখন কোন বান্দার উপর একত্র হয়, তখন তা তাকে ধ্বংস করে দেয়। অতঃপর নবী ﷺ একটি সম্প্রদায়ের উদাহরণ পেশ করলেন যে, তারা একটি খোলা ময়দানে অবতরণ করল। অতঃপর খাদ্য প্রস্তুত করার জন্য বাবুর্চি আসল। অতঃপর তাদের একজন লাকড়ি সংগ্রহ করতে গেল এবং সে তা নিয়ে আসল। আর আরো একজন গেল সেও কিছু নিয়ে আসল। অতঃপর দেখা গেল যে, লাকড়ির একটি বোঝাই জমা হয়ে গেল। অতঃপর তারা আগুন জালাল এবং তাদের কাজ সমাধা করল। [মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৮১৮।]

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ لِىْ رَسُوْلُ اللهِ  : يَا عَائِشَةُ اِيَّاكِ وَمُحَقَّرَاتِ الذُّنُوْبِ فَإِنَّ لَهَا مِنَ اللهِ طَالِبًا

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে বলেছেন, হে আয়েশা! তুমি ছোট পাপ থেকে সাবধান থাকো। কেননা আল্লাহর পক্ষ থেকে এরও অনুসন্ধানকারী রয়েছে। [দারেমী, হা/২৭৮২; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৪১৫।]

প্রতিটি গোনাহের ফলে অন্তরে কালো দাগ পড়ে :

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ قَالَ إِنَّ الْعَبْدَ إِذَا أَخْطَأَ خَطِيْئَةً نُكِتَتْ فِيْ قَلْبِهٖ نُكْتَةٌ سَوْدَاءُ فَإِذَا هُوَ نَزَعَ وَاسْتَغْفَرَ وتَابَ سَقَلَ قَلْبُه وَإِنْ عَادَ زِيْدَ فِيْهَا حَتّٰى تَعْلُوْ قَلْبُه وَهُوَ الرَّانُ الَّذِيْ ذَكَرَ اللهُ ﴿ كَلَّا بَلْ رَانَ عَلٰى قُلُوْبِهِمْ مَّا كَانُوْا يَكْسِبُوْنَ﴾

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, বান্দা যখন কোন গোনাহ করে তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে। অতঃপর যখন সে তা হতে বিরত হয় এবং তওবা করে তখন তার অন্তর খালি হয়। কিন্তু যদি সে আবার পাপ করে তাহলে ঐ দাগ আরো বাড়তে থাকে। এমনকি এই দাগে তার অন্তর ছেয়ে যায়। আর এটাই হচ্ছে সেই দাগ যার কথা কুরআনের এ আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘সাবধান! তারা যা পাপ অর্জন করেছে তার ফলে তাদের অন্তর বেকে গেছে’’। [তিরমিযী, হা/৩৩৩৪।]

মুমিন গোনাহকে অত্যধিক ভয় করে :

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنُ مَسْعُوْدٍ عَنْ النَّبِيِّ قَالَ إِنَّ الْمُؤْمِنَ يَرٰى ذُنُوْبَهٗ كَأَنَّهٗ قَاعِدٌ تَحْتَ جَبَلٍ يَخَافُ أَنْ يَقَعَ عَلَيْهِ وَإِنَّ الْفَاجِرَ يَرٰى ذُنُوْبَهٗ كَذُبَابٍ مَرَّ عَلٰى أَنْفِهٖ

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেছেন, মুমিন তার পাপকে এ রকম দেখে যে, একটি পাহাড় তার মাথার উপর ঝুলে আছে। সে ভয় করে যে, কখন তা তার উপর পড়ে যায়। আর অপরাধী তার পাপকে এ রকম দেখে যে, যেমন একটি মাছি তার উপর দিয়ে উড়ে গেল। [সহীহ বুখারী, হা/৬৩০৮।]

কবীরা গোনাহে লিপ্ত ব্যক্তির হুকুম :

আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আকীদা অনুযায়ী কবীরা গোনাহে লিপ্ত ব্যক্তি ঈমান থেকে বের হয়ে যায় না তবে দুনিয়াতে সে ত্রুটিপূর্ণ ঈমানদার থাকে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন