মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর পেছনে বসেছিলাম। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, হে বালক! আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিক্ষা দেব। (কথাগুলো মনে রাখবে) তুমি আল্লাহর হেফাযত করো তাহলে আল্লাহ তোমার হেফাযত করবেন। যখন তুমি কিছু চাইবে তখন আল্লাহর কাছেই চাইবে। যখন তুমি কোন সাহায্য প্রার্থনা করবে তখন আল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করবে। আর জেনে রেখো! গোটা জাতি যদি কোন বিষয়ে তোমার উপকার করার জন্য একত্র হয়, তবে তারা সকলে মিলে ততটুকুই উপকার করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। পক্ষান্তরে গোটা জাতি যদি কোন বিষয়ে তোমার ক্ষতি করার জন্য একত্র হয়, তবে সকলে মিলে তোমার ততটুকুই ক্ষতি করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। কলম তুলে রাখা হয়েছে এবং (তাকদীর লিখিত) কিতাব শুকিয়ে গেছে। [তিরমিযী, হা/২৫১৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৬৯; মিশকাত, হা/৫৩০২।]
সৃষ্টিজগৎ তৈরির বহু পূর্বেই আল্লাহ তা‘আলা ভবিষ্যৎ ঘটনাবলি লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন- এ বিশ্বাস পোষণ করতে হবে। আল্লাহর নিকট অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বলতে কিছু নেই। তার কাছে সব কিছুই বর্তমান। আল্লাহ তা‘আলা সর্বপ্রথম কলম সৃষ্টি করে তাকে নির্দেশ দিলেন, লিখ! কলম প্রশ্ন করল, কী লিখব? আল্লাহ বললেন, লিখ- ‘‘যা সংঘটিত হয়েছে এবং যা সংঘটিত হবে।’’ এ থেকে বুঝা যায়, যা কিছু সংঘটিত হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে তা সবকিছুই আল্লাহর পরিকল্পনা অনুযায়ী হচ্ছে। সৃষ্টির পূর্বে এবং আমল করার পূর্বেই আল্লাহ এসব বিষয় সম্পর্কে অবহিত। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,
তুমি কি জান না যে, আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে আল্লাহ তা জানেন। এ সবই আছে এক কিতাবে; নিশ্চয় এটা আল্লাহর নিকট সহজ। (সূরা হজ্জ- ৭০)
আল্লাহ যা কিছু নির্ধারণ ও সম্পাদন করেছেন সবকিছুই লাওহে মাহফুজের মধ্যে লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। লাওহে মাহফুজে যেভাবে অন্যান্য সবকিছু লিপিবদ্ধ আছে সেভাবে তাকদীরের বিষয়টিও লিখা আছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿مَا فَرَّطْنَا فِى الْكِتَابِ مِنْ شَيْءٍ﴾
কিতাবে কোনকিছুই আমি বাদ দেইনি। (সূরা আন‘আম- ৩৮)
তাকদীর চারভাবে নির্ধারিত হয় :
১. সকল সৃষ্টিজীবের তাকদীর। এটা আসমান-জমিন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বৎসর আগে লাওহে মাহফুজে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
২. সারা জীবনের তাকদীর। বান্দার মাঝে রূহ বা আত্মা ফুঁকে দেয়ার সময় হতে তার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত যা কিছু সংঘটিত হবে তা নির্ধারণ করা।
৩. বাৎসরিক তাকদীর। এটা হলো, প্রত্যেক বৎসর যা কিছু সংঘটিত হবে তা নির্ধারণ করা। এটা প্রত্যেক বৎসরের কদরের রাতে থাকে। যে রাতে কুরআন নাযিল হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
হা-মীম, শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের; আমি এটা অবতীর্ণ করেছি এক বরকতময় রজনীতে। আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র। এ রাতে আমার আদেশক্রমে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ে ফায়সালা হয়। নিশ্চয় আমি রাসূল প্রেরণ করে থাকি। (সূরা দুখান, ১-৫)
৪. দৈনন্দিন তাকদীর। আর তা হলো সম্মান, অপমান (কিছু) দেয়া না দেয়া, জীবিত করা, মৃত্যু দান ইত্যাদি যা দৈনন্দিন সংঘটিত হবে, তা নির্ধারণ করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা আছে সবাই তাঁর নিকট প্রতিদিন প্রার্থনা করে, তিনি সর্বদা মহান কার্যে রত। (সূরা আর রহমান- ২৯)
মহাবিশ্বের এ কর্মক্ষেত্রে প্রতি মুহূর্তে আল্লাহ তা‘আলার কর্মতৎপরতার এক সীমাহীন ধারাবাহিকতা চলছে। কাউকে তিনি মারছেন আবার কাউকে জীবন দান করছেন। কারো উত্থান ঘটাচ্ছেন আবার কারো পতন ঘটাচ্ছেন। কাউকে আরোগ্য দান করছেন আবার কাউকে রোগাক্রান্ত করছেন। কাউকে ডুবন্ত অবস্থা থেকে রক্ষা করছেন আবার কাউকে নিমজ্জিত করছেন। সকল সৃষ্টিকে নানাভাবে রিযিক দান করছেন।
ভাগ্যের দোহাই দিয়ে আমল বাদ দেয়া যাবে না :
ভাগ্যের ভাল-মন্দ আল্লাহর হাতে। তবে ভাগ্যের দোহাই দিয়ে চেষ্টা না করা ইসলাম সমর্থন করে না। আল্লাহ অবশ্যই ভালো কাজের ভালো ফল এবং মন্দ কাজের মন্দ ফল দিয়ে থাকেন। ভাগ্যে যা আছে চেষ্টার পর তা-ই হয়। অতএব উপযুক্ত চেষ্টার পর যা ফলে তাকে ভাগ্য মনে করে সন্তুষ্ট থাকা উচিত। এ ব্যাপারে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা ‘বাকীউল গারকাদ’ নামক জায়গায় এক জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। ইতোমধ্যে নবী ﷺ আমাদের নিকট আগমন করলেন এবং বসে পড়লেন। আমরাও তাঁর চারদিকে বসে পড়লাম। তাঁর নিকট একটি ছড়ি ছিল। তিনি ছড়িটি দিয়ে মাটির উপর আঘাত করছিলেন। এ সময় তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই অথবা এমন কোন প্রাণী নেই, যার জায়গা জান্নাতে অথবা জাহান্নামে নির্দিষ্ট করা হয়নি। এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! তাহলে আমরা কি আমাদের সে লিখিত ভাগ্যের উপর নির্ভর করে আমল ছেড়ে দেব না? জবাবে রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, না- তোমরা আমল করে যাও। কেননা সৌভাগ্যশালীদের জন্য সৌভাগ্যের কাজ করা সহজ করে দেয়া হয় আর দুর্ভাগাদের জন্য দুর্ভাগ্যের কাজ করা সহজ করে দেয়া হয়। এরপর তিনি (তাঁর কথার সমর্থনে) কুরআনের এ আয়াত আবৃত্তি করলেন, ‘‘কাজেই যে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দান করে, তাকওয়ার পথ অনুসরণ করে এবং ভালো কথাকে সত্য বলে আখ্যা দেয়, আল্লাহ তার জন্য সহজকে অর্থাৎ সৎকর্মকে সহজ করে দেন।’’ (সূরা লাইল : ৫-৭) [সহীহ বুখারী, হা/৪৯৪৯; সহীহ মুসলিম, হা/৬৯০৩; মিশকাত, হা/৭৫।]
আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে ইচ্ছাশক্তি দান করেছেন। পৃথিবীতে কেউ যদি নেক আমল করতে চায় আল্লাহ তা‘আলা তাকে স্বীয় ইচ্ছানুযায়ী সাহায্য করেন। আবার কেউ যদি গোমরাহ হতে চায় এবং অন্যায় ও পাপাচারে লিপ্ত হতে চায় তাতেও আল্লাহ তা‘আলা তাকে বাধা প্রদান করেন না।
তাই আমাদের কর্তব্য হলো আমল করতে থাকা, তাকদীর সম্পর্কে বেশি জিজ্ঞাসাবাদ না করা এবং এ আকীদা পোষণ করা যে, আল্লাহ তা‘আলা যা কিছু করেন ইনসাফ ও ন্যায় ভিত্তিক করেন।
তাকদীরের ব্যাপারে আমাদের করণীয় :
১. কল্যাণ অর্জনের জন্য ও অকল্যাণ বর্জনের জন্য কেবল আল্লাহরই মুখাপেক্ষী হওয়া। সৎকর্ম সম্পাদন ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহর কাছে এমনভাবে সাহায্য প্রার্থনা করা যে, তিনি যেন সৎকর্ম সম্পাদন সহজ করে দেন এবং পাপকাজ হতে বিরত রাখেন।
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, শক্তিধর ঈমানদার দুর্বল ঈমানদারের তুলনায় আল্লাহর নিকট উত্তম ও অতীব পছন্দনীয়। তবে প্রত্যেকের মধ্যেই কল্যাণ নিহিত আছে, যাতে তোমার উপকার রয়েছে তা অর্জনে তুমি আগ্রহী হও এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করো। তুমি অক্ষম হয়ে যেও না এবং এমনটি বলো না যে, যদি আমি এমন এমন করতাম তবে এমন হতো না। বরং এ কথা বলো যে, আল্লাহ তা‘আলা যা নির্দিষ্ট করেছেন এবং যা চেয়েছেন তাই করেছেন। কেননা لَوْ (যদি) শব্দটি শয়তানের কর্মের রাস্তা খুলে দেয়। [সহীহ মুসলিম, হা/ ৬৯৪৫; ইবনে মাজাহ, হা/৭৯; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৫৭২১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৭৯১; মিশকাত, হা/৫২৯৮।]
২. আল্লাহর নির্ধারিত বিষয়ের উপর ধৈর্যধারণ করা এবং তা সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নেয়া।
আবু হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উবাদা ইবনে সামেত (রাঃ) তাঁর ছেলেকে বললেন, হে আমার পুত্র! ঈমানের প্রকৃত স্বাদ তুমি ততক্ষণ পর্যন্ত পাবে না যতক্ষণ না এ বিষয়ে জ্ঞাত হবে, যে বিপদ তোমাকে আক্রমণ করেছে তা তোমাকে ছেড়ে যেত না। আর যে বিপদ তোমাকে আক্রমণ করেনি তা তোমার জন্য আসার ছিল না। [আনু দাউদ, হা/৪৭০২।]
তাকদীরের প্রতি সন্তুষ্ট থাকা আল্লাহর রুবূবিয়্যাতের প্রতি সন্তুষ্ট থাকার অন্তর্ভুক্ত। তাই সকল মুমিনের পক্ষে আল্লাহর ফায়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকা অপরিহার্য। কারণ আল্লাহর কর্ম ও ফায়সালা সবকিছুই ভালো, ইনসাফভিত্তিক ও হিকমতপূর্ণ।
সুতরাং যে তাকদীরের প্রতি ঈমান আনবে সে পেরেশানী হতে বেঁচে থাকবে। তার জীবন হতে ব্যাকুলতা ও দোদুল্যমনতা দূর হবে। হারিয়ে যাওয়া বা ছুটে যাওয়া বস্তুর উপর সে চিন্তিত হবে না। ভবিষ্যতকে ভয় পাবে না। সে জানতে পারবে যে, তার বয়স সীমিত ও রুজীও পরিমিত। কাপুরুষতা বয়স বাড়াতে পারে না। কার্পণ্যতা রুজী বাড়াতে পারে না। সে বিপদের উপর ধৈর্যধারণ করবে, পাপ ও ক্রটিপূর্ণ কর্ম সম্পাদন করার কারণে ক্ষমা চাইবে। আর আল্লাহ যা তার জন্য নির্ধারণ করেছেন তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে। এভাবে সে পবিত্র ও শান্তিময় জীবন লাভ করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কোন বিপদ আসে না। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে বিশ্বাস করে, তিনি তার অন্তরকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে জ্ঞানী। (সূরা তাগাবুন- ১১)
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/57/18
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।