hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শাশ্বত জীবন ব্যবস্থা (হক দীন)

লেখকঃ আশ-শাইখ আবদুর রহমান ইবন হাম্মাদ আ-লে উমার

আল্লাহ কর্তৃক মানব সন্তান, জিন জাতি ও অন্যান্যদেরকে সৃষ্টির উদ্দেশ্য
হে জ্ঞানবান, যখন আপনি জানলেন যে, নিশ্চয় আল্লাহ আপনার রব্ব, যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। তাহলে নিশ্চয় তিনি আপনাকে অহেতুক সৃষ্টি করেন নি। বরং আপনাকে তাঁর ইবাদত করার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর উক্তিই এর প্রমাণ,

﴿ وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦ مَآ أُرِيدُ مِنۡهُم مِّن رِّزۡقٖ وَمَآ أُرِيدُ أَن يُطۡعِمُونِ ٥٧ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلرَّزَّاقُ ذُو ٱلۡقُوَّةِ ٱلۡمَتِينُ ٥٨ ﴾ [ الذاريات : ٥٦، ٥٨ ]

“আমি আমি জ্বিন ও মানব জাতিকে আমার ইবাদত করার জন্যই সৃষ্টি করেছি। আমি তাদের থেকে কোনো খাদ্যদ্রব্য চাই না এবং আমাকে তারা খাওয়াক, এটাও চাইনা। নিশ্চয় তিনিই আল্লাহ, যিনি খাদ্যদাতা, সুদৃঢ় শক্তির অধিকারী”। (আয-যারিয়াত- ৫৬-৫৮)

আয়াতগুলোর সারমর্ম:

প্রথম আয়াতটিতে আল্লাহ বলেছেন- তিনি জ্বিন [জিন: তারা হচ্ছে আল্লাহর এক বিবেকসম্পন্ন সৃষ্টি। যাদেরকে আল্লাহ তাদের ইবাদাতের জন্য সৃষ্টি করেছেন, যেমন বনী আদমকে সৃষ্টি করেছেন। তারা আদম সন্তানের মতই যমীনে বাস করে। কিন্তু আদম সন্তানরা তাদের দেখতে পায় না।] জাতি ও আদম সন্তানদেরকে শুধুমাত্র তাঁকে ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় আয়াতে বলেছেন, তিনি তাঁর বান্দাদের থেকে অমুখাপেক্ষী। আর তিনি তাদের থেকে রিযকও চান না, খানাও চান না; কেননা তিনিই রিযিকদাতা, শক্তিশালী। মানুষ বা অন্য কিছুকে একমাত্র তাঁর পক্ষ থেকেই রিযিক দেওয়া হয়। তিনি ঐ সত্তা যিনি বৃষ্টি দান করেন এবং মাটির মধ্য হতে রিযিক বের করেন।

অপর দিকে পৃথিবীর জ্ঞানহীন অন্যান্য প্রাণী সম্পর্কে বলা যায়, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এগুলোকে মানুষের জন্য তৈরী করেছেন, যাতে আল্লাহর আনুগত্যের ক্ষেত্রে মানুষরা এদের সহযোগিতা নিতে পারে এবং ইসলামী শরী‘আত অনুযায়ী এগুলোকে ব্যবহার করতে পারে। পৃথিবীর প্রতিটি সৃষ্ট ও প্রতিটি নড়াচড়া ও নিস্তব্ধতাকে আল্লাহ তা‘আলা এক তাৎপর্যপূর্ণ করে তৈরী করেছেন, যা তিনি কুরআনে বর্ণনা করেছেন ও জ্ঞানের মান অনুযায়ী আল্লাহর শরী‘আতের আলিমগণ এটা উপলব্ধিও করেন। এমনকি বয়সের ভিন্নতা, রিযিক, বিপদ আপদের পার্থক্য, তাও আল্লাহর নির্দেশেই হয়ে থাকে; যাতে জ্ঞানী বান্দাদের পরীক্ষা করা যায়। অতঃপর আল্লাহর নির্ধারিত তাকদীরের উপরে যিনি খুশী থাকেন ও তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করেন এবং আল্লাহ যা পছন্দ করেন সে কাজ করার জন্য কষ্ট করেন, তার উপরে আল্লাহও খুশী হন এবং তিনি দুনিয়াতে ও মৃত্যুর পরে আখিরাতে সৌভাগ্যের অধিকারী হন। আর যে আল্লাহর নির্ধারিত তাকদীরের উপরে খুশী থাকে না, তার কাছে আত্মসমর্পণ করে না, তার আনুগত্য দেখায় না, আল্লাহ তার উপর রাগান্বিত হন। দুনিয়া আখিরাতে সে ভাগ্যহত, সে হতভাগ্য বিড়ম্বনা-পতিত দূর্ভাগা। এধরনের অবস্থায় পতিত হওয়া থেকে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি চাচ্ছি। তাঁর কাছে তাঁর অসন্তুষ্টি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

মৃত্যুর পরে পুনরুত্থান হিসাব কিতাব কাজের প্রতিদান এবং জান্নাত ও জাহান্নাম

হে জ্ঞানবান, যখন আপনি জানলেন যে, নিশ্চয় আল্লাহ আপনাকে তাঁর ইবাদাত করার জন্য তৈরী করেছেন। এরপর জানুন যে, তিনি তাঁর রাসূলদের উপরে অবর্তীর্ণ সকল গ্রন্থে, তিনি যে মৃত্যুর পর জীবিতাবস্থায় পুনরুত্থান করবেন ও প্রতিফলের নিবাসস্থলে আপনার কর্মের প্রতিফল দিবেন তা বলে দিয়েছেন। কেননা মানুষ মৃত্যুর মাধ্যমে এ কর্মময় নশ্বর জগতের জীবন হতে মৃত্যুর পরে ফলাফলের ও চিরস্থায়ী জগতে প্রস্থান করে। অতএব, যখন আল্লাহর পক্ষ হতে মানুষের জন্য নির্ধারিত আয়ূষ্কাল পূর্ণ হয়ে যায়, আল্লাহ মৃত্যুর ফিরিশতাকে তার শরীর হতে রূহকে কব্জ করার নির্দেশ দেন। সে শরীর হতে রূহ বের হওয়ার পূর্বে মৃত্যুর যন্ত্রণা ভোগ করার পরে মৃত্যু বরণ করে।

তখন তার রূহ যদি পূর্বেই আল্লাহর প্রতি ঈমান এনে থাকে, তাঁর আনুগত্য দেখিয়ে থাকে, তবে তাকে আল্লাহ নিয়ামতের গৃহে রেখে দেবেন। পক্ষান্তরে তার রূহ যদি আল্লাহকে অস্বীকারকারী হয়, মৃত্যুর পরে পুনরুত্থান ও প্রতিফল লাভকে মিথ্যা বলে থাকে, তবে তাকে আল্লাহ শাস্তি গৃহে ঐ সময় পর্যন্ত রেখে দিবেন যতক্ষণ না দুনিয়ার নির্ধারিত দিন সমাপ্ত হয়ে কিয়ামত অনুষ্ঠিত হয় এবং একক আল্লাহ ছাড়া সকল অবশিষ্ট সৃষ্ট মৃত্যুবরণ করে। আল্লাহ সকল সৃষ্টকে এমনকি পশুকেও পুনরুত্থান করবেন। প্রথমে যেমনভাবে তাঁর সৃষ্টকে সৃষ্টি করেছিলেন তেমনি শারীরিক পূর্ণতা দান করে তাদের শরীরে তিনি তাদের রূহ ফিরিয়ে দিবেন; এজন্য যে পুরুষ-মহিলা, শাসক-শাসিত, ধনী-দরিদ্র সকলেই কৃতকর্মের ফলাফল দান ও হিসাব-কিতাব করা যায়। সুতরাং তিনি কারো প্রতি যুলুম করবেন না। কেননা অত্যাচারিত সেদিন অত্যাচারী থেকে প্রতিশোধ নিবে। এমনকি প্রাণীরাও যারা তার উপর অত্যাচার করেছিল পরস্পর একে অন্য থেকে প্রতিশোধ নিবে। তিনি এদেরকে নির্দেশ দিবেন “মাটি হয়ে যাও” কেননা এরা জান্নাত বা জাহান্নাম কোথাও প্রবেশ করবে না। আর সে দিন মানব সন্তান ও জ্বিন প্রত্যেকের আমল অনুযায়ী পুরস্কার দেওয়া হবে। যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিলেন, তাঁর আনুগত্য করেছিলেন, তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ করেছিলেন তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যদিও তিনি দুনিয়ার সব চেয়ে দরিদ্র ব্যক্তি হয়ে থাকেন, অন্যদিকে কাফির মিথ্যাবাদীদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন, যদিও তারা পৃথিবীতে সর্বাধিক ধনী ও মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿إِنَّ أَكۡرَمَكُمۡ عِندَ ٱللَّهِ أَتۡقَىٰكُمۡۚ﴾ [ الحجرات : ١٣ ]

“নিশ্চয় যে সবচেয়ে তাকওয়াসম্পন্ন, সেই আল্লাহর কাছে বেশি মর্যাদাবান”। (হুজরাত-১৩)

জান্নাত:

জান্নাত নিয়ামতের স্থান। এখানে বিভিন্ন প্রকারের এমন নিয়ামত বিদ্যমান যা কারো পক্ষে অনুমান করা সম্ভব নয়। এখানে একশত স্তর রয়েছে। আল্লাহর প্রতি তাদের ঈমান ও তাদের আনুগত্যের মান অনুযায়ী বিভিন্ন স্তরের অধিকারী সেখানে অবস্থান করবেন। জান্নাতের সর্বনিম্ন স্তরের অধিবাসীকে ঐ নিয়ামত দেওয়া হবে যা দুনিয়ার সবচেয়ে নিয়ামত উপভোগকারী বাদশাহর নিয়ামতের চেয়ে সত্তর গুণ বেশি।

জাহান্নাম:

আমরা এ জাহান্নাম থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। এটি মৃত্যুর পরে আখেরাতে শাস্তির স্থল। সেখানে বিভিন্ন প্রকারের কষ্ট ও শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে, যার স্মরণ অন্তরকে ভীত সন্ত্রস্ত করে তোলে, চক্ষুকে কাঁদায়। যদি আখিরাতে মৃত্যুবরণের সুযোগ থাকত তাহলে শুধু এর অবস্থা দেখেই জাহান্নামবাসীরা মৃত্যুবরণ করত। পক্ষান্তরে মৃত্যু মাত্র একবারই হয়ে থাকে, যার মাধ্যমে মানুষগণ ইহলৌকিক জীবন থেকে পারলৌকিক জীবনে প্রস্থান করে। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে পূর্ণাঙ্গ আকারে মৃত্যু, পুনরুত্থান, হিসাব, পুরস্কার, জান্নাত ও জাহান্নামের অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা এসেছে। আমরা এখানে যা যা উল্লেখ করলাম, তা ঐগুলোর ইঙ্গিত মাত্র।

মৃত্যুর পর পুনরুত্থান, হিসাবকাল, প্রতিফল লাভ সম্পর্কে অসংখ্য দলীল রয়েছে। মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

﴿ ۞مِنۡهَا خَلَقۡنَٰكُمۡ وَفِيهَا نُعِيدُكُمۡ وَمِنۡهَا نُخۡرِجُكُمۡ تَارَةً أُخۡرَىٰ ٥٥ ﴾ [ طه : ٥٥ ]

“এ (মাটি) থেকেই আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এর মধ্যেই আমরা তোমাদেরকে ফিরিয়ে দেব। এর থেকেই তোমাদেরকে আমরা পুনরায় বের করব”। (ত্বহাঃ ৫৫)

﴿ وَضَرَبَ لَنَا مَثَلٗا وَنَسِيَ خَلۡقَهُۥۖ قَالَ مَن يُحۡيِ ٱلۡعِظَٰمَ وَهِيَ رَمِيمٞ ٧٨ قُلۡ يُحۡيِيهَا ٱلَّذِيٓ أَنشَأَهَآ أَوَّلَ مَرَّةٖۖ وَهُوَ بِكُلِّ خَلۡقٍ عَلِيمٌ ٧٩ ﴾ [ يس : ٧٨، ٧٩ ]

“আর সে আমাদের জন্য উপমা বর্ণনা করে, অথচ সে নিজের জন্ম বৃত্তান্ত ভুলে গেছে। সে বলে, পচাগলা হাঁড়কে কে জীবিত করবে? বলে দিন, এগুলোকে তিনিই জীবিত করবেন যিনি সেগুলোকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন। তিনি সকল সৃষ্টি সম্পর্কে সর্বজ্ঞানী” (ইয়াসীন- ৭৮-৭৯)

﴿ زَعَمَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ أَن لَّن يُبۡعَثُواْۚ قُلۡ بَلَىٰ وَرَبِّي لَتُبۡعَثُنَّ ثُمَّ لَتُنَبَّؤُنَّ بِمَا عَمِلۡتُمۡۚ وَذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٞ ٧ ﴾ [ التغابن : ٧ ]

“কাফিররা ধারণা করেছে যে, তারা কখনো পুনরুত্থিত হবে না। তুমি বল, অবশ্যই তোমার রব্বের শপথ, নিশ্চয় তোমরা পুনরুত্থিত হবে, অতঃপর নিশ্চয় তোমাদেরকে তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবহিত করা হবে এবং এটি আল্লাহর পক্ষে একেবারেই সহজ”। (আত্ তাগাবুন-৭)

আয়াতসমূহের সারমর্ম:

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা প্রথম আয়াতটিতে বলেছেন, নিশ্চয় তিনি মানব সন্তানদেরকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন। এটা ঐ সময়ের কথা, যখন তিনি তাদের পিতা আদমকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি আরও বলেন: তিনি অবশ্যই তাদেরকে মৃত্যুর পরে কবরের মাটিতে ফিরিয়ে আনবেন; যাতে তাদের সম্মান রক্ষা হয়। আরও জানিয়েছেন যে, দ্বিতীয়বার তিনি তাদেরকে মাটি থেকে বের করবেন। এরপর প্রথম থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেককেই আল্লাহ জীবিত বের করবেন এবং তাদের হিসাব কিতাব করবেন, অতঃপর তাদের পুরস্কার দিবেন।

দ্বিতীয় আয়াতটিতে পুনরুত্থানে মিথ্যারোপকারী কাফির, যে ধ্বংস হয়ে যাওয়া হাঁড় জীবিত করাকে আশ্চর্য মনে করে, আল্লাহ তার প্রতিউত্তর দিয়েছে। তিনি বলেন, যে, তিনি এ হাঁড়কে জীবিত করতে সক্ষম। কেননা তিনি একে নাস্তি হতে অস্তিত্বে প্রথমবার নিয়ে এসেছিলেন।

তৃতীয় আয়াতে আল্লাহ মৃত্যুর পরে পুনরুত্থানে মিথ্যারোপকারী কাফিরদের ধারণাকে বাতিল প্রতিপন্ন করেছেন ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহর শপথ করে জোরালো ভাষায় বলে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন যে, নিশ্চয় অতি নিকট সময়ে আল্লাহ তাদেরকে উত্থান করবেন এবং তাদের সকল কৃতকর্ম যা তারা করেছেন জানিয়ে দিবেন, এর উপরে প্রতিফল দান করবেন এবং এ কাজ আল্লাহর জন্য একেবারেই সহজ।

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, নিশ্চয় তিনি যখন পুনরুত্থান ও জাহান্নামে মিথ্যারোপকারীদেরকে পুনরুত্থান ঘটাবেন তখন তাদেরকে জাহান্নামের আগুনে সাজা দিবেন। তাদেরকে বলা হবে,

﴿ذُوقُواْ عَذَابَ ٱلنَّارِ ٱلَّذِي كُنتُم بِهِۦ تُكَذِّبُونَ ٢٠ ﴾ [ السجدة : ٢٠ ]

“ঐ জাহান্নামের শাস্তি উপভোগ কর, যাতে তোমরা মিথ্যারোপ করতে”। (সিজদাহ-২০)

মানুষের কৃতকর্ম ও কথাবার্তায় সংযম

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জানাচ্ছেন, নিশ্চয় মানুষগণ যা করে ও করবে ভাল হোক, মন্দ হোক, প্রকাশ্য হোক, অপ্রকাশ্য হোক সব কিছুই আল্লাহ জানেন। এগুলো তিনি তার নিকট লাওহে মাহফুজে আসমান যমীন ও মানুষ সৃষ্টির পূর্বেই লিখে রেখেছেন। এরপর তিনি প্রতিটি মানুষের জন্য দু’জন ফেরেশতা, একজন ডানে ভালো কৃতকর্ম লেখার জন্য, আর অপরজন বামে খারাপ কৃতকর্ম লেখার জন্য নিয়োজিত করে দিয়েছেন, তাদের থেকে কোনো কিছু বাদ পড়ে না। আল্লাহ আরো বলেছেন, নিশ্চয় হিসাবের দিনে প্রত্যেককে তাদের আমলনামা দেওয়া হবে, যাতে তারা যা বলেছে ও করেছে লেখা হয়েছে। তারা তা পড়বে এবং এ থেকে কোনো কিছুকে অস্বীকার করবে না। যদি কেউ কিছু অস্বীকার করে তাহলে আল্লাহ তার কান, চোখ, দু’হাত ও চামড়া যা যা করেছে, সেগুলোকে কথা বলাবেন।

বিস্তারিতভাবে মহাগ্রন্থ কুরআনে এর বর্ণনা এসেছে, মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ مَّا يَلۡفِظُ مِن قَوۡلٍ إِلَّا لَدَيۡهِ رَقِيبٌ عَتِيدٞ ١٨ ﴾ [ق: ١٨ ]

“যে শব্দই তার মুখে উচ্চারিত হয় সেটা সংরক্ষণের জন্যই সেখানে চির উপস্থিত পর্যবেক্ষক (ফিরিশতা) তার কাছে বিদ্যমান থাকে”। (ক্বাফ-১৮)

আল্লাহ আরও বলেন,

﴿ وَإِنَّ عَلَيۡكُمۡ لَحَٰفِظِينَ ١٠ كِرَامٗا كَٰتِبِينَ ١١ يَعۡلَمُونَ مَا تَفۡعَلُونَ ١٢ ﴾ [ الانفطار : ١٠، ١٢ ]

“এবং নিশ্চয় তোমাদের উপরে তত্ত্বাবধানের জন্য সম্মানিত আমল লিখকবৃন্দ নিযুক্ত রয়েছেন। তোমরা যা কর তা তারা জানেন”। (ইনফিতার- ১০-১২)

আয়াতসমূহের ব্যাখ্যাঃ

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা বলেছেন, নিশ্চয় তিনি প্রতিটি মানুষের জন্য দুইজন ফিরিশতা নির্ধারণ করেছেন। তার ডান পার্শ্বে থাকেন ‘রকীব’ বা পর্যবেক্ষক, যিনি তার সমগ্র পূণ্যের কাজ লিপিবদ্ধ করেন। বাম পার্শ্বে থাকেন ‘আতীদ’, বা ‘অতন্দ্র প্রহরী’ যিনি তার পাপের কাজসমূহকে লিপিবদ্ধ করেন। অবশেষে শেষ দুটি আয়াতে তিনি আরো জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি প্রত্যেকের জন্য সম্মানিত ফিরিশতাদের নিযুক্ত করেছেন, তাদের সকল কর্মকাণ্ড লিপিবদ্ধ করার জন্য। তিনি আরো জানিয়েছেন যে, তিনি ঐ সমস্ত ফিরিশতাদেরকে মানুষের সকল কৃতকর্ম সম্পর্কে জানা ও লেখার শক্তি দিয়েছেন, যেমন তিনিও এগুলোকে জেনেছেন এবং নিজের নিকটে লাওহে মাহফুজে তাদের সৃষ্টির পূর্বেই লিখে রেখেছেন।

সাক্ষ্যদান (শাহাদাত)

আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, “নিশ্চয় আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোনো হক্ব ইলাহ (উপাস্য) নেই এবং সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর রাসূল বা প্রেরিত পুরুষ। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য এবং কিয়ামত সমাগত, যাতে কোনো সন্দেহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ কবরে অবস্থিত সকলকে হিসাব দান ও পুরস্কার দেয়ার জন্য পুনরুত্থান করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ তার কিতাবে অথবা তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মারফত যা বলেছেন সবই সত্য। হে জ্ঞানবান, আমি আপনাকে ঐ সাক্ষ্যদানের প্রতি ঈমান আনার ঘোষণা দেওয়া এবং দাবী অনুযায়ী আমল করার দিকে আহ্বান জানাচ্ছি। এটিই পরিত্রাণের পথ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন