HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
প্রাথমিক তাওহীদ শিক্ষা
লেখকঃ ডঃ আব্দুল আযীয বিন মুহাম্মাদ
সকল প্রশংসা মহান রব্বুল আলামীনের জন্য। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক শ্রে নবী ও রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) , তাঁর পরিবার এবং সকল সাথীবর্গের উপর । (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
অতঃপর তাওহীদের এ কিতাবটি দলীল প্রমাণসহ স্পষ্ট ভাষায় সংক্ষিপ্তাকারে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য লিখা হয়েছে। যাতে তাওহীদের গুরুত্বপূর্ণ বিধানগুলো সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। সাথে এ বিষয়ের কিছু শিক্ষণীয় এবং চরিত্রগত দিকও খেয়াল রাখা হয়েছে।
মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করি তিনি যেন বইটির দ্বারা মুসলিম সমাজকে উপকৃত করেন। ইসলামের জন্য যাঁরা কাজ করেন তাঁদের চেষ্টা-শক্তিতে বরকত দেন এবং সকলকে সৎনিয়ত ও সত্যের অনুসরণের তৌফীক দান করেন। হসাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাঁর পরিবার ও সকল সাথীবর্গের উপর সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক।
বিনিত: লেখক
অতঃপর তাওহীদের এ কিতাবটি দলীল প্রমাণসহ স্পষ্ট ভাষায় সংক্ষিপ্তাকারে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য লিখা হয়েছে। যাতে তাওহীদের গুরুত্বপূর্ণ বিধানগুলো সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। সাথে এ বিষয়ের কিছু শিক্ষণীয় এবং চরিত্রগত দিকও খেয়াল রাখা হয়েছে।
মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করি তিনি যেন বইটির দ্বারা মুসলিম সমাজকে উপকৃত করেন। ইসলামের জন্য যাঁরা কাজ করেন তাঁদের চেষ্টা-শক্তিতে বরকত দেন এবং সকলকে সৎনিয়ত ও সত্যের অনুসরণের তৌফীক দান করেন। হসাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাঁর পরিবার ও সকল সাথীবর্গের উপর সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক।
বিনিত: লেখক
আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মাবুদ নেই ।
মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল।
আমার পালনকর্তা আল্লাহ্।
আমি আমার পালনকর্তার ইবাদাত করি।
আমি আমার পালনকর্তাকে ভালোবাসি।
প্রশ্ন১: আপনার পালনকর্তা কে?
উঃ আমার পালনকর্তা আল্লাহ্
প্রশ্ন২: কে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন ?
উঃ মহান আল্লাহ্ আমাকে এবং সকল মানুষকে সৃষ্টি করেছেন।
প্রশ্ন৩: রাত, দিন এবং চন্দ্র-সূর্য কে সৃষ্টি করেছেন?
উঃ আল্লাহ্ রাত, দিন এবং চন্দ্র-সূর্য সৃষ্টি করেছেন।
প্রশ্ন৪: আমরা যে যমীনের উপর চলাফেরা করছি তা কে সৃষ্টি করেছেন?
উঃ আমরা যে যমীনের উপর চলাফেরা করছি তা আল্লাহ্ তায়া'লা সৃৃষ্টি করেছেন।
প্রশ্ন৫: কে সমুদ্রসমূহ সৃষ্টি এবং নদ-নদী প্রবাহিত করেছেন?
উঃ আল্লাহ্ তায়ালা সমুদ্রসমূহ সৃষ্টি এবং নদ-নদী প্রবাহিত করেছেন।
প্রশ্ন৬: কে আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন?
উঃ আল্লাহ্ তায়ালা আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন।
প্রশ্ন৭: কে গাছ-পালা সৃষ্টি করতঃ তা থেকে ফল উৎপন্ন করেন ?
উঃ আল্লাহ্ তায়ালা গাছ-পালা সৃষ্টি করতঃ তা থেকে ফল উৎপন্ন করেন।
মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল।
আমার পালনকর্তা আল্লাহ্।
আমি আমার পালনকর্তার ইবাদাত করি।
আমি আমার পালনকর্তাকে ভালোবাসি।
প্রশ্ন১: আপনার পালনকর্তা কে?
উঃ আমার পালনকর্তা আল্লাহ্
প্রশ্ন২: কে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন ?
উঃ মহান আল্লাহ্ আমাকে এবং সকল মানুষকে সৃষ্টি করেছেন।
প্রশ্ন৩: রাত, দিন এবং চন্দ্র-সূর্য কে সৃষ্টি করেছেন?
উঃ আল্লাহ্ রাত, দিন এবং চন্দ্র-সূর্য সৃষ্টি করেছেন।
প্রশ্ন৪: আমরা যে যমীনের উপর চলাফেরা করছি তা কে সৃষ্টি করেছেন?
উঃ আমরা যে যমীনের উপর চলাফেরা করছি তা আল্লাহ্ তায়া'লা সৃৃষ্টি করেছেন।
প্রশ্ন৫: কে সমুদ্রসমূহ সৃষ্টি এবং নদ-নদী প্রবাহিত করেছেন?
উঃ আল্লাহ্ তায়ালা সমুদ্রসমূহ সৃষ্টি এবং নদ-নদী প্রবাহিত করেছেন।
প্রশ্ন৬: কে আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন?
উঃ আল্লাহ্ তায়ালা আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন।
প্রশ্ন৭: কে গাছ-পালা সৃষ্টি করতঃ তা থেকে ফল উৎপন্ন করেন ?
উঃ আল্লাহ্ তায়ালা গাছ-পালা সৃষ্টি করতঃ তা থেকে ফল উৎপন্ন করেন।
আমি আল্লাহর ইবাদাত করি।
আমি আল্লাহকে ভালোবাসি।
আল্লাহ্ মানুষকে তাঁর ইবাদাত ও আনুগত্যের জন্য সৃষ্টি করেছেন।
আল্লাহর ইবাদাত ও আনুগত্য করা সকল মানুষের উপর ওয়াজিব।
প্রশ্ন১: আপনার ধর্ম কি?
উঃ আমার ধর্ম ইসলাম।
প্রশ্ন২: ইসলাম কি (কাকে বলে)?
উঃ ইসলাম হলো আল্লাহর একত্ববাদ,তাঁর আনুগত্য করা এবং তাঁর অবাধ্যতা পরিত্যাগ করা।
প্রশ্ন৩: ইসলামের মূল ভিত্তি কি?
উঃ ইসলামের মূল ভিত্তি হল: এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মাবূদ বা উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল।
প্রশ্ন৪: আযান শুনে আমরা সালাত আদায় করি কেন?
উঃ কেননা সালাত হলো ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ, ইহা পালন ব্যতীত মানুষ মুসলিম হতে পারে না।
প্রশ্ন৫: আল্লাহ্ তায়ালা রাসূল হিসেবে আমাদের নিকটে কাকে প্রেরণ করেছেন?
উঃ আল্লাহ্ তায়ালা রাসূল হিসেবে মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে আমাদের নিকটে প্রেরণ করেছেন।
প্রশ্ন৬: আল্লাহ্ তায়ালা মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সকল মানুষের নিকটে কেন প্রেরণ করেছিলেন?
উঃ মানুষকে ইসলাম শিক্ষা দেওয়ার জন্য আল্লাহ্ তায়ালা মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে তাদের নিকটে প্রেরণ করেছিলেন।
প্রশ্ন৭: মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষদেরকে কিসের প্রতি আহ্বান করেন?
উঃ নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষদেরকে এক আল্লাহর ইবাদাত করা ও গাইরুল্লাহর (আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো) ইবাদাত পরিত্যাগের প্রতি আহ্বান করেন।
আমি আল্লাহকে ভালোবাসি।
আল্লাহ্ মানুষকে তাঁর ইবাদাত ও আনুগত্যের জন্য সৃষ্টি করেছেন।
আল্লাহর ইবাদাত ও আনুগত্য করা সকল মানুষের উপর ওয়াজিব।
প্রশ্ন১: আপনার ধর্ম কি?
উঃ আমার ধর্ম ইসলাম।
প্রশ্ন২: ইসলাম কি (কাকে বলে)?
উঃ ইসলাম হলো আল্লাহর একত্ববাদ,তাঁর আনুগত্য করা এবং তাঁর অবাধ্যতা পরিত্যাগ করা।
প্রশ্ন৩: ইসলামের মূল ভিত্তি কি?
উঃ ইসলামের মূল ভিত্তি হল: এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মাবূদ বা উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল।
প্রশ্ন৪: আযান শুনে আমরা সালাত আদায় করি কেন?
উঃ কেননা সালাত হলো ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ, ইহা পালন ব্যতীত মানুষ মুসলিম হতে পারে না।
প্রশ্ন৫: আল্লাহ্ তায়ালা রাসূল হিসেবে আমাদের নিকটে কাকে প্রেরণ করেছেন?
উঃ আল্লাহ্ তায়ালা রাসূল হিসেবে মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে আমাদের নিকটে প্রেরণ করেছেন।
প্রশ্ন৬: আল্লাহ্ তায়ালা মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সকল মানুষের নিকটে কেন প্রেরণ করেছিলেন?
উঃ মানুষকে ইসলাম শিক্ষা দেওয়ার জন্য আল্লাহ্ তায়ালা মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে তাদের নিকটে প্রেরণ করেছিলেন।
প্রশ্ন৭: মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষদেরকে কিসের প্রতি আহ্বান করেন?
উঃ নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষদেরকে এক আল্লাহর ইবাদাত করা ও গাইরুল্লাহর (আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো) ইবাদাত পরিত্যাগের প্রতি আহ্বান করেন।
১- আমার প্রতিপালক আল্লাহ্, তিনি সৃষ্টি কর্তা, সারা বিশ্বের মালিক এবং পরিচালনাকারী। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿ اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ وَكِيلٌ ﴾ [ الزمر :৬২[
অর্থ: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা ও সব কিছুর কর্মবিধায়ক। সূরাহ্ আয্যুমার আয়াত ৬২।
২- আমার পালনকর্তার নিদর্শন এবং সৃষ্টি জীবের মাধ্যমে আমি তাকে জানব। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ وَمِنْ آيَاتِهِ اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ﴾
অর্থ: তাঁর নিদর্শনের অন্যতম হল: দিন, রাত, চন্দ্র এবং সূর্য। সূরা আল-ফুস্সিলাত আয়াত ৩৭।
৩- আল্লাহ্ তায়ালা এক-অদ্বিতীয় এবং শরীকহীন সত্য মা'বূদ। তিনি ব্যতীত অন্য কেহ ইবাদাতের হক্বদার বা যোগ্য নয়। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
} يَا أَيُّهَا النَّاسُ اعْبُدُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ وَالَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ {[ البقرة : ২১[
অর্থ: হে মানব সকল তোমরা তোমাদের সেই পালনকর্তার ইবাদাত করো যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পারো। বাক্বারাহ্ আয়াত-২১।
প্রশ্ন১: আল্লাহ্ আপনাকে কেন সৃষ্টি করেছেন?
উঃ তিনি আমাকে তাঁর ইবাদাত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন, আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ﴾ [ الذاريات : ৫৬]
অর্থ: আমি জ্বিন এবং মানুষকে কেবল মাত্র আমার ইবাদাতের জন্য সৃষ্টি করেছি। সূরাহ্ আয্ যারিয়াত আয়াত ৫৬।
প্রশ্ন২: আল্লাহর ইবাদাত কি?
উঃ তাঁর ইবাদাত হল: একত্ববাদের সহিত আল্লাহর আনুগত্য করা।
প্রশ্ন৩: লাইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এর অর্থ কি?
উঃ আল্লাহ্ ব্যতীত সত্য কোন মা'বূদ বা উপাস্য নাই।
﴿ اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ وَكِيلٌ ﴾ [ الزمر :৬২[
অর্থ: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা ও সব কিছুর কর্মবিধায়ক। সূরাহ্ আয্যুমার আয়াত ৬২।
২- আমার পালনকর্তার নিদর্শন এবং সৃষ্টি জীবের মাধ্যমে আমি তাকে জানব। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ وَمِنْ آيَاتِهِ اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ﴾
অর্থ: তাঁর নিদর্শনের অন্যতম হল: দিন, রাত, চন্দ্র এবং সূর্য। সূরা আল-ফুস্সিলাত আয়াত ৩৭।
৩- আল্লাহ্ তায়ালা এক-অদ্বিতীয় এবং শরীকহীন সত্য মা'বূদ। তিনি ব্যতীত অন্য কেহ ইবাদাতের হক্বদার বা যোগ্য নয়। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
} يَا أَيُّهَا النَّاسُ اعْبُدُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ وَالَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ {[ البقرة : ২১[
অর্থ: হে মানব সকল তোমরা তোমাদের সেই পালনকর্তার ইবাদাত করো যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পারো। বাক্বারাহ্ আয়াত-২১।
প্রশ্ন১: আল্লাহ্ আপনাকে কেন সৃষ্টি করেছেন?
উঃ তিনি আমাকে তাঁর ইবাদাত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন, আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ﴾ [ الذاريات : ৫৬]
অর্থ: আমি জ্বিন এবং মানুষকে কেবল মাত্র আমার ইবাদাতের জন্য সৃষ্টি করেছি। সূরাহ্ আয্ যারিয়াত আয়াত ৫৬।
প্রশ্ন২: আল্লাহর ইবাদাত কি?
উঃ তাঁর ইবাদাত হল: একত্ববাদের সহিত আল্লাহর আনুগত্য করা।
প্রশ্ন৩: লাইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এর অর্থ কি?
উঃ আল্লাহ্ ব্যতীত সত্য কোন মা'বূদ বা উপাস্য নাই।
১- ইসলাম হলো আল্লাহর একত্ববাদ, তাঁর আনুগত্য করতঃ তাঁর অবাধ্য কাজ পরিত্যাগ করা। আল্লাহ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿ وَمَنْ أَحْسَنُ دِينًا مِمَّنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لِلَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ﴾ [ النساء : ১২৫
অর্থ: যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকটে আত্মসমর্পণ করতঃ ভালো কাজ করে; তার চাইতে ধর্মের দিক দিয়ে আর কে উত্তম হতে পারে? সূরাহ্ আন্ নিসা আয়াত -১২৫।
২- ইসলাম সেই ধর্ম যা আল্লাহ্ তায়ালা খুশি হয়ে সকল মানুষের জন্য চয়ন করেছেন। তিনি বলেন:
[ المائدة : ৩] ﴿ وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا ﴾
অর্থ: এবং সন্তুষ্ট চিত্তে ইসলামকে আমি তোমাদের দ্বীন (ধর্ম) মনোনীত করলাম। সূরাহ্ আল্ মায়িদাহ্ আয়াত ৩।
৩- ইসলাম কল্যাণ সৌভাগ্য এবং সন্তুষ্টির ধর্ম। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿بَلَى مَنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لِلَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ فَلَهُ أَجْرُهُ عِنْدَ رَبِّهِ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُم يَحْزَنُونَ﴾ [ البقرة : ১১২ [
অর্থ: অবশ্য যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্যে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করেছে এবং সৎকর্মশীল হয়েছে, ফলতঃ তার জন্য স্বীয় প্রতিপালকের নিকট প্রতিদান রয়েছে এবং তাদের জন্যে কোন ভয় ও চিন্তা নেই। সূরাহ্ বাক্বারাহ্ আয়াত ১১২।
প্রশ্ন১: ইসলামের রুকন্ (স্তম্ভ) কয়টি ও কি কি?
উঃ ইসলামের রুকন্ (স্তম্ভ) পাঁচটি:
ক) এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নাই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল।
খ) সালাত প্রতিা করা। গ) যাকাত প্রদান করা।
ঘ) রমযান মাসের সিয়াম (রোযা) পালন করা।
ঙ) সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বাইতুল্লাহ্ শরীফের হজ্জ করা।
অর্থ: যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকটে আত্মসমর্পণ করতঃ ভালো কাজ করে; তার চাইতে ধর্মের দিক দিয়ে আর কে উত্তম হতে পারে? সূরাহ্ আন্ নিসা আয়াত -১২৫।
২- ইসলাম সেই ধর্ম যা আল্লাহ্ তায়ালা খুশি হয়ে সকল মানুষের জন্য চয়ন করেছেন। তিনি বলেন:
[ المائدة : ৩] ﴿ وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا ﴾
অর্থ: এবং সন্তুষ্ট চিত্তে ইসলামকে আমি তোমাদের দ্বীন (ধর্ম) মনোনীত করলাম। সূরাহ্ আল্ মায়িদাহ্ আয়াত ৩।
৩- ইসলাম কল্যাণ সৌভাগ্য এবং সন্তুষ্টির ধর্ম। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿بَلَى مَنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لِلَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ فَلَهُ أَجْرُهُ عِنْدَ رَبِّهِ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُم يَحْزَنُونَ﴾ [ البقرة : ১১২ [
অর্থ: অবশ্য যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্যে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করেছে এবং সৎকর্মশীল হয়েছে, ফলতঃ তার জন্য স্বীয় প্রতিপালকের নিকট প্রতিদান রয়েছে এবং তাদের জন্যে কোন ভয় ও চিন্তা নেই। সূরাহ্ বাক্বারাহ্ আয়াত ১১২।
প্রশ্ন১: ইসলামের রুকন্ (স্তম্ভ) কয়টি ও কি কি?
উঃ ইসলামের রুকন্ (স্তম্ভ) পাঁচটি:
ক) এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নাই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল।
খ) সালাত প্রতিা করা। গ) যাকাত প্রদান করা।
ঘ) রমযান মাসের সিয়াম (রোযা) পালন করা।
ঙ) সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য বাইতুল্লাহ্ শরীফের হজ্জ করা।
১- আমার নবী মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ্ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
২- বিশ্বের সকল মানুষদেরকে ইসলাম শিক্ষা দেওয়ার জন্য আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রেরণ করেন।
৩- নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্য করা আমাদের জন্য ওয়াজিব (অপরিহার্য)। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا ﴾ [ الحشر : ৭[
অর্থ: এবং রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে যা দেন তা তোমরা আঁকড়ে ধরো এবং যা থেকে তিনি তোমাদেরকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকো। সূরাহ্ আল হাশর আয়াত ৭।
২- বিশ্বের সকল মানুষদেরকে ইসলাম শিক্ষা দেওয়ার জন্য আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রেরণ করেন।
৩- নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্য করা আমাদের জন্য ওয়াজিব (অপরিহার্য)। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا ﴾ [ الحشر : ৭[
অর্থ: এবং রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদেরকে যা দেন তা তোমরা আঁকড়ে ধরো এবং যা থেকে তিনি তোমাদেরকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকো। সূরাহ্ আল হাশর আয়াত ৭।
১- আমাদের পালনকর্তা হলেন সেই আল্লাহ্ যিনি আসমান ও যমীন সমূহের সৃষ্টিকর্তা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ﴾ [ الأعراف : ৫৪]
অর্থ: তোমাদের পালনকর্তা তো তিনিই যিনি আসমান এবং যমীন সৃষ্টি করেছেন। সূরা আল আ'রাফ আয়াত ৫৪।
২- আমাদের রব্ব বা পালনকর্তা হলেন সেই আল্লাহ্ যিনি মানুষকে উত্তম আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেন:
﴿لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ ﴾ [ التين : ৪]
অর্থ: নিশ্চয় মানুষকে আমি সর্বোত্তম আকৃতিতে সৃষ্টি করেছি। সূরাহ্ আত্ত্বীন আয়াত ৪।
৩- আমাদের পালনকর্তা সেই আল্লাহ্ যিনি সবকিছু পরিচালনা করছেন। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الْأَرْضِ ﴾
অর্থ: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আসমান হতে যমীন পর্যন্ত সবকিছু পরিচালনা করেন। সূরাহ্ আস্সাজ্দাহ্ আয়াত ৫।
৪- আল্লাহ্ তায়া'লা জ্বিন এবং মানুষকে তাঁর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
} وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ { [ الذاريات : ৫৬[
অর্থ: আমি জ্বিন এবং মানুষকে কেবলমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি। সূরাহ্ আয্ যারিয়াত ৫৬।
৫- আল্লাহ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আমাদেরকে তাগুতকে অস্বীকার করতে এবং তাঁর প্রতি ঈমান আনতে আদেশ দিয়েছেন। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَىٌ﴾ [ البقرة : ২৫৬
অর্থ: যে ব্যক্তি তাগুতকে অস্বীকার করতঃ আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে সে নিশ্চয় মজবুত রজ্জুকে ধারণ করে। সূরাহ্ আল বাক্বরাহ্ আয়াত ২৫৬।
৬- মজবুত রজ্জু (উরওয়াতুল বুস্কা) হল: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, এর অর্থ: আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই।
﴿ إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ﴾ [ الأعراف : ৫৪]
অর্থ: তোমাদের পালনকর্তা তো তিনিই যিনি আসমান এবং যমীন সৃষ্টি করেছেন। সূরা আল আ'রাফ আয়াত ৫৪।
২- আমাদের রব্ব বা পালনকর্তা হলেন সেই আল্লাহ্ যিনি মানুষকে উত্তম আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেন:
﴿لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ ﴾ [ التين : ৪]
অর্থ: নিশ্চয় মানুষকে আমি সর্বোত্তম আকৃতিতে সৃষ্টি করেছি। সূরাহ্ আত্ত্বীন আয়াত ৪।
৩- আমাদের পালনকর্তা সেই আল্লাহ্ যিনি সবকিছু পরিচালনা করছেন। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الْأَرْضِ ﴾
অর্থ: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আসমান হতে যমীন পর্যন্ত সবকিছু পরিচালনা করেন। সূরাহ্ আস্সাজ্দাহ্ আয়াত ৫।
৪- আল্লাহ্ তায়া'লা জ্বিন এবং মানুষকে তাঁর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
} وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ { [ الذاريات : ৫৬[
অর্থ: আমি জ্বিন এবং মানুষকে কেবলমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি। সূরাহ্ আয্ যারিয়াত ৫৬।
৫- আল্লাহ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আমাদেরকে তাগুতকে অস্বীকার করতে এবং তাঁর প্রতি ঈমান আনতে আদেশ দিয়েছেন। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَىٌ﴾ [ البقرة : ২৫৬
অর্থ: যে ব্যক্তি তাগুতকে অস্বীকার করতঃ আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে সে নিশ্চয় মজবুত রজ্জুকে ধারণ করে। সূরাহ্ আল বাক্বরাহ্ আয়াত ২৫৬।
৬- মজবুত রজ্জু (উরওয়াতুল বুস্কা) হল: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্, এর অর্থ: আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই।
১- আমাদের ধর্ম হলো সেই ইসলাম যা ভিন্ন অন্য কোন ধর্ম আল্লাহ্ গ্রহণ করবেন না। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ﴾ [ آل عمران : ৮৫[
অর্থ: যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম অনুসন্ধান করবে উহা তার নিকট হতে গ্রহণ করা হবেনা। সূরাহ্ আলি ই'মরাণ আয়াত ৮৫।
২- ইসলাম ধর্মের স্তর তিনটি:
ক) ইসলাম খ) ঈমান ও গ) ইহ্সান।
ক- ইসলাম হল: একত্ববাদের সহিত আল্লাহর নিকটে আত্ম-সমর্পণ করতঃ তাঁর অনুসরণ করা এবং শির্ক ও তার অনুসারীদের থেকে মুক্ত হওয়া।
খ- ঈমান হল: আল্লাহ্, তাঁর মালায়িকাগণ (ফেরেশ্তা), কিতাবসমূহ্, রাসূলগণ, কিয়ামত দিবস এবং তাক্বদীরের ভালো মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।
গ- ইহ্সান হল: আপনি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত করবেন যেন আপনি তাঁকে (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) দেখছেন। আর যদি আপনি তাঁকে দেখতে না পান তবে মনে করবেন নিশ্চয় তিনি আপনাকে দেখছেন।
﴿وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ﴾ [ آل عمران : ৮৫[
অর্থ: যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম অনুসন্ধান করবে উহা তার নিকট হতে গ্রহণ করা হবেনা। সূরাহ্ আলি ই'মরাণ আয়াত ৮৫।
২- ইসলাম ধর্মের স্তর তিনটি:
ক) ইসলাম খ) ঈমান ও গ) ইহ্সান।
ক- ইসলাম হল: একত্ববাদের সহিত আল্লাহর নিকটে আত্ম-সমর্পণ করতঃ তাঁর অনুসরণ করা এবং শির্ক ও তার অনুসারীদের থেকে মুক্ত হওয়া।
খ- ঈমান হল: আল্লাহ্, তাঁর মালায়িকাগণ (ফেরেশ্তা), কিতাবসমূহ্, রাসূলগণ, কিয়ামত দিবস এবং তাক্বদীরের ভালো মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।
গ- ইহ্সান হল: আপনি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত করবেন যেন আপনি তাঁকে (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) দেখছেন। আর যদি আপনি তাঁকে দেখতে না পান তবে মনে করবেন নিশ্চয় তিনি আপনাকে দেখছেন।
১- তিনি হলেন: মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ্ বিন আব্দুল মুত্তালিব আল-হাশিমী, আল-কুরায়িশী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), এবং তিনি হলেন সর্বশ্রে ও শেষ নবী।
২- আমাদের নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইসলাম ধর্ম পৌঁছিয়েছেন। আমাদেরকে সকল কল্যাণের আদেশ দিয়েছেন এবং সকল প্রকার অকল্যাণ হতে নিষেধ করেছেন।
৩- রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্য করা আমাদের সকলের উপর ওয়াজিব (আবশ্যক)। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ﴾ [ الأحزاب : ২১ [
অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মাঝে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ। সূরাহ্ আল আহ্যাব আয়াত ২১।
৪- পিতা-মাতা এবং সকল মানুষ থেকে মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বেশী ভালোবাসা আমাদের জন্য ওয়াজিব (আবশ্যক)। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ﴾ ( صحيح البخاري - ১ / ২৪)
অর্থ: তোমাদের কেউ ততক্ষণ পূর্ণ মূ'মিন হতে পারবেনা, যতক্ষণ সে আমাকে তার পিতা, সন্তান এবং সকল মানুষ থেকে বেশী ভালো না বাসবে। বুখারী ও মুসলিম। তাঁর (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভালোবাসা হল: তাঁর অনুসরণ, অনুকরণ এবং আনুগত্য করা।
২- আমাদের নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইসলাম ধর্ম পৌঁছিয়েছেন। আমাদেরকে সকল কল্যাণের আদেশ দিয়েছেন এবং সকল প্রকার অকল্যাণ হতে নিষেধ করেছেন।
৩- রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্য করা আমাদের সকলের উপর ওয়াজিব (আবশ্যক)। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ﴾ [ الأحزاب : ২১ [
অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মাঝে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ। সূরাহ্ আল আহ্যাব আয়াত ২১।
৪- পিতা-মাতা এবং সকল মানুষ থেকে মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বেশী ভালোবাসা আমাদের জন্য ওয়াজিব (আবশ্যক)। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ﴾ ( صحيح البخاري - ১ / ২৪)
অর্থ: তোমাদের কেউ ততক্ষণ পূর্ণ মূ'মিন হতে পারবেনা, যতক্ষণ সে আমাকে তার পিতা, সন্তান এবং সকল মানুষ থেকে বেশী ভালো না বাসবে। বুখারী ও মুসলিম। তাঁর (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভালোবাসা হল: তাঁর অনুসরণ, অনুকরণ এবং আনুগত্য করা।
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল।
১) شَهَادَةُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ এর অর্থ হল: এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নাই।
২) ইবাদাত হলো ঐ সকল কথা ও কাজ যা আল্লাহ্ তায়ালা ভালোবাসেন এবং তাতে তিনি সন্তুষ্ট হন।
৩) ইবাদাত অনেক প্রকার: যেমন: দুয়া' (প্রার্থনা করা), ভয়, ভরসা, সালাত (নামাজ), আল্লাহর স্মরণ এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ইত্যাদী। দুয়া' বা প্রার্থনার দলীল: আল্লাহ্ তায়ালার বাণী:
﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ﴾ (৬০) غافر
অর্থ: তোমাদের পালনকর্তা বলেন:তোমরা আমার নিকট দুআ' কর, আমি তোমাদের দুআ' কবুল করব। নিশ্চয়ই যারা আমার ইবাদাতে অহংকার করে তারা অচিরেই লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। সূরাহ্ আল মু'মিন/গাফির আয়াত-৬০।
ভয়ের দলীল: আল্লাহর বাণী:
﴿فَلَا تَخَافُوهُمْ وَخَافُونِ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ﴾ آل عمران -১৭৫
অর্থ: অতএব, তোমরা তাদেরকে ভয় করো না । বরং আমাকে (আল্লাহকে) ভয় কর, যদি তোমরা মু'মিন হও। সূরাহ্ আলি ইমরান আয়াত-১৭৫। তাওয়াক্কুল বা ভরসার দলীল: আল্লাহর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বাণী:
﴿ وَعَلَى اللَّهِ فَتَوَكَّلُوا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ ﴾ [ المائدة : ২৩
অর্থ: বস্তুতঃ তোমরা যদি মু'মিন হও, তাহলে তোমরা আল্লাহর ওপরই ভরসা কর। সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ আয়াত-২৩। সালাতের দলীল: আল্লাহর বাণী:
﴿وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَلَا تَكُونُوا مِنَ الْمُشْرِكِينَ﴾ [ الروم : ৩১[
অর্থ: তোমরা সালাত কায়েম কর এবং মুশরিকদের অর্ন্তভুক্ত হয়ো না, সূরাহ্ আররূম আয়াত-৩১। যিকির বা আল্লাহর স্মরণের দলীল:
﴿ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا كَثِيرًا﴾
অর্থ: হে, মু'মিনগণ! তোমরা আল্লাহ্ তায়ালাকে অধিক স্মরণ কর। সূরাহ্ আল আহ্যাব আয়াত-৪১। পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার দলীল:
﴿وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا [ الأحقاف : ১৫﴾
অর্থ: এবং আমি মানুষকে স্বীয় পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। সূরাহ্ আল আহ্ক্বাফ আয়াত-১৫।
১- সকল প্রকার ইবাদাত এক,অদ্বিতীয় লাশারীক আল্লাহর জন্যই করতে হবে। অতএব, যে ব্যক্তি কোন ইবাদাত আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের জন্য করবে সে কাফের।
আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَمَنْ يَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهُ بِهِ فَإِنَّمَا حِسَابُهُ عِنْدَ رَبِّهِ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُونَ﴾ [ المؤمنون : ১১৭[
অর্থ: আর যে আল্লাহর সাথে অন্য মা'বূদকে ডাকে সে সম্পর্কে তার নিকট কোন প্রমাণ নেই। তার পালন কর্তার নিকটই তার হিসাব। অবস্থা তো এই যে, নিঃসন্দেহে কাফেররা সফলকাম হবে না। সূরাহ্ আল-মু'মিনূন-১১৭।
২- মানুষ এবং জ্বিন জাতিকে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) কেবল তাঁর ইবাদাতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেন:
﴿وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ﴾ [ الذاريات : ৫৬[
অর্থ: এবং আমি মানব ও জ্বিন জাতিকে কেবল মাত্র আমার ইবাদাত করার জন্য সৃষ্টি করেছি। সূরাহ্ আযযারিয়াত আয়াত-৫৬।
২- যে ব্যক্তি সত্যিকার অর্থে আল্লাহর ইবাদাত করবে সে অবশ্যই ব্যাপক উন্নতি, সৌভাগ্য, শান্তি এবং সুন্দর জীবন লাভ করবে। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾ [ النحل : ৯৭]
অর্থ: যে মু'মিন পুরুষ ও নারী নেক আমল করেছে, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব। তারা যে আমল করতো তার বিনিময়ে আমি অবশ্যই তাদেরকে উত্তম পারিশ্রমিক দিয়ে পুরুষ্কৃত করব। সূরাহ্ আন্ নাহল- ৯৭।
২- শাহাদাতু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ ( شهادة أن محمدا رسول الله ) এর অর্থ: তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সকল বিষয়ে সংবাদ দিয়েছেন তা বিশ্বাস করা, তিনি যা আদেশ করেছেন তা পালন করা, তিনি যা হতে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা এবং তাঁর দেওয়া পদ্ধতি অনুযায়ী আল্লাহর ইবাদাত করা।
ক- আমাদের প্রিয় নবীর নাম: মুহাম্মাদ্ বিন আব্দুল্লাহ্ বিন আব্দুল মুত্তালিব আল-হাশিমী আল-কুরাইশী। অতএব তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরবের সর্বোন্নত বংশে জন্ম গ্রহণ করেন।
খ- আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সকল মানুষের নিকটে নবী ও রাসূল হিসেবে প্রেরণ করতঃ সকলের উপর তার অনুসরণ করা ফরয বা আবশ্যক করেছেন। আল্লাহ্ তায়া'লা বলেন:
﴿قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا﴾ [ الأعراف : ১৫৮[
অর্থ: আপনি বলে দিন, হে মানব জাতি! আমি তোমাদের সকলের জন্য আল্লাহর রাসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। সূরাহ্ আল আ'রাফ আয়াত -১৫৮।
গ- নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় জন্ম গ্রহণ করে সেখানেই অবস্থান করেন। তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষদেরকে তাওহীদ ও এক আল্লাহর ইবাদাতের প্রতি আহ্বান করেন, অতঃপর মদীনায় হিজরত করেন। তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষদেরকে ইসলামের অন্যান্য আহ্কামের ব্যাপারেও আদেশ করেন। যেমন: যাকাত, সিয়াম বা রোজা এবং জিহাদ ইত্যাদী। পরিশেষে ৬৩ (তেষট্টি) বছর বয়সে মদীনাতে তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি অ-ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
ঘ- যে ব্যক্তি নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিরোধীতা করবে সে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি ভোগ করবে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾ [ النور : ৬৩]
অর্থ: যারা রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশের বিরুদ্ধাচারণ করে তাদের সতর্ক থাকা উচিৎ যে, তারা যে কোন বিপদের সম্মুখীন হবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে। সূরাহ্ আন্ নুর আয়াত ৬৩।
ঙ- যে ব্যক্তি রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অনুসরণ করবেন তিনি পরিপূর্ণ সৌভাগ্য এবং বড় সফলতা অর্জন করবেন। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَالرَّسُولَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ﴾
অর্থ: তোমরা আল্লাহ্ ও রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুগত হও, যেন তোমরা করুণা লাভ করতে পার। সূরাহ্ আলি ইমরাণ আয়াত ১৩২। আল্লাহ্ তায়ালা আরো বলেন: ﴿وَإِنْ تُطِيعُوهُ تَهْتَدُوا﴾ [ النور : ৫৪]
অর্থ: তোমরা যদি তাঁর (রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) আনুগত্য কর তাহলে তোমরা হেদায়েত-প্রাপ্ত হবে। সূরাহ্ আন নুর আয়াত ৫৪।
১) شَهَادَةُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ এর অর্থ হল: এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নাই।
২) ইবাদাত হলো ঐ সকল কথা ও কাজ যা আল্লাহ্ তায়ালা ভালোবাসেন এবং তাতে তিনি সন্তুষ্ট হন।
৩) ইবাদাত অনেক প্রকার: যেমন: দুয়া' (প্রার্থনা করা), ভয়, ভরসা, সালাত (নামাজ), আল্লাহর স্মরণ এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ইত্যাদী। দুয়া' বা প্রার্থনার দলীল: আল্লাহ্ তায়ালার বাণী:
﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ﴾ (৬০) غافر
অর্থ: তোমাদের পালনকর্তা বলেন:তোমরা আমার নিকট দুআ' কর, আমি তোমাদের দুআ' কবুল করব। নিশ্চয়ই যারা আমার ইবাদাতে অহংকার করে তারা অচিরেই লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। সূরাহ্ আল মু'মিন/গাফির আয়াত-৬০।
ভয়ের দলীল: আল্লাহর বাণী:
﴿فَلَا تَخَافُوهُمْ وَخَافُونِ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ﴾ آل عمران -১৭৫
অর্থ: অতএব, তোমরা তাদেরকে ভয় করো না । বরং আমাকে (আল্লাহকে) ভয় কর, যদি তোমরা মু'মিন হও। সূরাহ্ আলি ইমরান আয়াত-১৭৫। তাওয়াক্কুল বা ভরসার দলীল: আল্লাহর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বাণী:
﴿ وَعَلَى اللَّهِ فَتَوَكَّلُوا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ ﴾ [ المائدة : ২৩
অর্থ: বস্তুতঃ তোমরা যদি মু'মিন হও, তাহলে তোমরা আল্লাহর ওপরই ভরসা কর। সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ আয়াত-২৩। সালাতের দলীল: আল্লাহর বাণী:
﴿وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَلَا تَكُونُوا مِنَ الْمُشْرِكِينَ﴾ [ الروم : ৩১[
অর্থ: তোমরা সালাত কায়েম কর এবং মুশরিকদের অর্ন্তভুক্ত হয়ো না, সূরাহ্ আররূম আয়াত-৩১। যিকির বা আল্লাহর স্মরণের দলীল:
﴿ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا كَثِيرًا﴾
অর্থ: হে, মু'মিনগণ! তোমরা আল্লাহ্ তায়ালাকে অধিক স্মরণ কর। সূরাহ্ আল আহ্যাব আয়াত-৪১। পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার দলীল:
﴿وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا [ الأحقاف : ১৫﴾
অর্থ: এবং আমি মানুষকে স্বীয় পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। সূরাহ্ আল আহ্ক্বাফ আয়াত-১৫।
১- সকল প্রকার ইবাদাত এক,অদ্বিতীয় লাশারীক আল্লাহর জন্যই করতে হবে। অতএব, যে ব্যক্তি কোন ইবাদাত আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের জন্য করবে সে কাফের।
আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَمَنْ يَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ لَا بُرْهَانَ لَهُ بِهِ فَإِنَّمَا حِسَابُهُ عِنْدَ رَبِّهِ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُونَ﴾ [ المؤمنون : ১১৭[
অর্থ: আর যে আল্লাহর সাথে অন্য মা'বূদকে ডাকে সে সম্পর্কে তার নিকট কোন প্রমাণ নেই। তার পালন কর্তার নিকটই তার হিসাব। অবস্থা তো এই যে, নিঃসন্দেহে কাফেররা সফলকাম হবে না। সূরাহ্ আল-মু'মিনূন-১১৭।
২- মানুষ এবং জ্বিন জাতিকে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) কেবল তাঁর ইবাদাতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেন:
﴿وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ﴾ [ الذاريات : ৫৬[
অর্থ: এবং আমি মানব ও জ্বিন জাতিকে কেবল মাত্র আমার ইবাদাত করার জন্য সৃষ্টি করেছি। সূরাহ্ আযযারিয়াত আয়াত-৫৬।
২- যে ব্যক্তি সত্যিকার অর্থে আল্লাহর ইবাদাত করবে সে অবশ্যই ব্যাপক উন্নতি, সৌভাগ্য, শান্তি এবং সুন্দর জীবন লাভ করবে। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾ [ النحل : ৯৭]
অর্থ: যে মু'মিন পুরুষ ও নারী নেক আমল করেছে, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব। তারা যে আমল করতো তার বিনিময়ে আমি অবশ্যই তাদেরকে উত্তম পারিশ্রমিক দিয়ে পুরুষ্কৃত করব। সূরাহ্ আন্ নাহল- ৯৭।
২- শাহাদাতু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ ( شهادة أن محمدا رسول الله ) এর অর্থ: তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সকল বিষয়ে সংবাদ দিয়েছেন তা বিশ্বাস করা, তিনি যা আদেশ করেছেন তা পালন করা, তিনি যা হতে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা এবং তাঁর দেওয়া পদ্ধতি অনুযায়ী আল্লাহর ইবাদাত করা।
ক- আমাদের প্রিয় নবীর নাম: মুহাম্মাদ্ বিন আব্দুল্লাহ্ বিন আব্দুল মুত্তালিব আল-হাশিমী আল-কুরাইশী। অতএব তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরবের সর্বোন্নত বংশে জন্ম গ্রহণ করেন।
খ- আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সকল মানুষের নিকটে নবী ও রাসূল হিসেবে প্রেরণ করতঃ সকলের উপর তার অনুসরণ করা ফরয বা আবশ্যক করেছেন। আল্লাহ্ তায়া'লা বলেন:
﴿قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا﴾ [ الأعراف : ১৫৮[
অর্থ: আপনি বলে দিন, হে মানব জাতি! আমি তোমাদের সকলের জন্য আল্লাহর রাসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। সূরাহ্ আল আ'রাফ আয়াত -১৫৮।
গ- নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় জন্ম গ্রহণ করে সেখানেই অবস্থান করেন। তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষদেরকে তাওহীদ ও এক আল্লাহর ইবাদাতের প্রতি আহ্বান করেন, অতঃপর মদীনায় হিজরত করেন। তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষদেরকে ইসলামের অন্যান্য আহ্কামের ব্যাপারেও আদেশ করেন। যেমন: যাকাত, সিয়াম বা রোজা এবং জিহাদ ইত্যাদী। পরিশেষে ৬৩ (তেষট্টি) বছর বয়সে মদীনাতে তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি অ-ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
ঘ- যে ব্যক্তি নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিরোধীতা করবে সে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি ভোগ করবে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾ [ النور : ৬৩]
অর্থ: যারা রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশের বিরুদ্ধাচারণ করে তাদের সতর্ক থাকা উচিৎ যে, তারা যে কোন বিপদের সম্মুখীন হবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে। সূরাহ্ আন্ নুর আয়াত ৬৩।
ঙ- যে ব্যক্তি রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অনুসরণ করবেন তিনি পরিপূর্ণ সৌভাগ্য এবং বড় সফলতা অর্জন করবেন। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَالرَّسُولَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ﴾
অর্থ: তোমরা আল্লাহ্ ও রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুগত হও, যেন তোমরা করুণা লাভ করতে পার। সূরাহ্ আলি ইমরাণ আয়াত ১৩২। আল্লাহ্ তায়ালা আরো বলেন: ﴿وَإِنْ تُطِيعُوهُ تَهْتَدُوا﴾ [ النور : ৫৪]
অর্থ: তোমরা যদি তাঁর (রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) আনুগত্য কর তাহলে তোমরা হেদায়েত-প্রাপ্ত হবে। সূরাহ্ আন নুর আয়াত ৫৪।
তাওহীদের সংজ্ঞা: তাওহীদ হলো প্রভুত্ব, ইবাদাত এবং পরিপূর্ণ নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে আল্লাহকে এক-অদ্বিতীয় হিসেবে স্বীকার করে সে অনুযায়ী আমল করা।
তাওহীদের প্রকার: তাওহীদ তিন প্রকার: ১- প্রভুত্বের ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদ, ২- ইবাদাতের ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদ এবং ৩- নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদ।
১- তাওহীদুর রুবুবিইয়াহ্ বা প্রভুত্বের ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদ: আর তা হলো আল্লাহর কর্মে তাঁর একত্ববাদ, যেমন: সৃষ্টি করা, রিযিক্ব দেওয়া, সকল কার্যাদি পরিচালনা করা, জীবন-মৃত্যু দেওয়া ইত্যাদী। অতএব, আল্লাহ্ ছাড়া কোন সৃষ্টিকারী নাই। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ وَكِيلٌ﴾ [ الزمر : ৬২[
অর্থ: আল্লাহ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) প্রত্যেক বস্তুর সৃষ্টিকর্তা এবং তিনি প্রত্যেক বস্তুর ওপর দায়িত্বশীল। সূরা আয্যুমার - ৬২। আল্লাহ্ ছাড়া কোন রিযিকদাতা নাই, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا﴾ [ هود : ৬[
অর্থ: যমীনে এমন কোন বিচরণশীল প্রাণী নেই যার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর ওপর নেই। সূরাহ্ হুদ - ৬। আল্লাহ্ ছাড়া (আসমান যমীনের) কোন পরিচালনাকারী নেই। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الْأَرْضِ﴾ [ السجدة : ৫[
অর্থ: তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত সকল কাজ পরিচালিত করেন। সূরাহ্ আস্সাজদাহ্ আয়াত ৫। আল্লাহ্ ছাড়া জীবন ও মৃত্যু দানকারী কেউ নেই। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿هُوَ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ﴾ [ يونس : ৫৬]
অর্থ: তিনিই (আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ) জীবন ও মৃত্যু দান করেন। আর তোমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তীত হবে। সূরাহ্ ইউনুস আয়াত ৫৬।
এ প্রকার তাওহীদ (তাওহীদুর রুবূবিয়াহ্ ) রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়কালীন কাফেররা স্বীকার করেছিল। কিন্তু এ স্বীকারোw³ তাদেরকে ইসলামে প্রবেশ করেনি। যেমন আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ لَيَقُولُنَّ اللَّهُ﴾
অর্থ: আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন যে, আসমানসমূহ্ ও যমীন কে সৃষ্টি করেছেন? তাহলে তারা অবশ্যই বলবে যে, আল্লাহ্ তায়ালা। সূরাহ্ লুক্বমান আয়াত ২৫।
২- তাওহীদুল উলুহিইয়াহ্ (ইবাদাতের ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদ ): আর তা হলো বান্দার ঐ সকল কর্মে আল্লাহর একত্ববাদ, যে সকল কাজের ব্যাপারে তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) মানুষকে আদেশ দিয়েছেন। অতএব, সকল প্রকার ইবাদাত লাশারীক, এক-অদ্বিতীয় আল্লাহর জন্যই করতে হবে। যেমন: দুয়া' (প্রার্থনা বা আহ্বান করা), ভয়, ভরসা, সহযোগীতা কামনা করা এবং আশ্রয় চাওয়া ইত্যাদী। তাই আমরা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে আহ্বান করব না। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ﴾ [ غافر : ৬০[
অর্থ: তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব। সূরাহ্ গাফির (মু'মিন) আয়াত ৬০। আমরা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করিনা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿فَلَا تَخَافُوهُمْ وَخَافُونِ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ ﴾ [ آل عمران : ১৭৫
অর্থ: (শয়তান তার বন্ধুদেরকে ভয় দেখায়) অতএব, তাদেরকে ভয় করো না, বরং আমাকে ভয় কর, যদি তোমরা মু'মিন হও। সূরাহ্ আলি ইমরান আয়াত ১৭৫। আমরা আল্লাহর উপরই ভরসা করি। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿وَعَلَى اللَّهِ فَتَوَكَّلُوا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ﴾
অর্থ: বস্তুতঃ তোমরা যদি মু'মিন হও, তাহলে তোমরা আল্লাহর উপরই ভরসা কর। সূরাহ্ আল মায়েদাহ্ আয়াত ২৩। আমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারও নিকটে সাহায্য প্রার্থনা করি না। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) মানুষের ভাষায় বলেন: ﴿إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ﴾ [ الفاتحة : ৫
অর্থ: আমরা আপনারই ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকটে সাহায্য প্রার্থনা করি। সূরাহ আল ফাতিহাহ্ আয়াত ৫।
আমরা আল্লাহর নিকটেই আশ্রয় প্রার্থনা করি, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ﴾ অর্থ: আপনি বলুন: আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি মানুষের পালন কর্তার। সূরাহ্ আন্নাস আয়াত ১। আর এ প্রকার তাওহীদ (তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ্) নিয়েই নবীগণের (আলাইহিমুস্ সালাম) আগমণ ঘটেছিল। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ﴾ [ النحل : ৩৬[
অর্থ: আর আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল পাঠিয়েছি (এ সংবাদ দিয়ে) যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং ত্বাগুত (আল্লাহ্ ব্যতীত যা কিছুর ইবাদাত করা হয়) থেকে দূরে থাক। সূরাহ্ আন্নাহল আয়াত ৩৬।
এ প্রকার তাওহীদকেই কাফিররা প্রাক ও আধুনিক যুগে অস্বীকার করেছে। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) কাফেরদের ভাষায় বলেন:
﴿أَجَعَلَ الْآلِهَةَ إِلَهًا وَاحِدًا إِنَّ هَذَا لَشَيْءٌ عُجَابٌ﴾ [ص : ৫[
অর্থ: মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বহু ইলাহের পরিবর্তে এক ইলাহ্ বানিয়ে নিয়েছেন? এতো এক অত্যাশ্চর্য ব্যাপার। সূরাহ্ সোয়াদ আয়াত ৫।
৩ - توحيد الأسماء والصفات : (তাওহীদুল আসমা ওয়াসসিফাত):
আর তা হলো কুরআন এবং সহীহ্ হাদীসে আল্লাহ্ ও রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক আল্লাহর যে সকল নাম ও গুণাবলী উল্লেখ করা হয়েছে তা বাস্তবে ও মূল অর্থে বিশ্বাস করা। আল্লাহ্ তায়ালার অনেক নাম রয়েছে। যেমন: আর-রহ্মান (অসীম দয়ালু), আস্-সামী' (সর্বশ্রোতা), আল-বাসীর (সর্বদ্রষ্টা)। আল-আযীয (মহাপরাক্রমশালী) এবং আল-হাকীম (মহাজ্ঞানী) ইত্যাদী। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ﴾ [ الشورى : ১১[
অর্থ: কোন বস্তুই তাঁর অনুরুপ নয়। বস্তুতঃ তিনি সব কিছু শোনেন ও দেখেন। সূরাহ্ আশ্শুরা আয়াত ১১।
কৃতকার্যগণের গুণাবলী:
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَالْعَصْرِ (১) إِنَّ الْإِنْسَانَ لَفِي خُسْرٍ (২) إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ﴾ [ العصر : ১-৩[
অর্থ: যুগের ক্বসম (অথবা আসরের সময়ের ক্বসম)। নিশ্চয়ই সমস্ত মানুষই ক্ষতির মধ্যে পতিত রয়েছে। কিন্তু যারা ঈমান এনেছে, সৎ আমল করেছে, পরস্পর একে অন্যকে সত্য সম্পর্কে সদুপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পর একে অন্যকে ধৈর্য্য ধারণের উপদেশ দিয়েছে, (তারা ক্ষতির মধ্যে নেই)। সূরাহ্ আল্-আসর আয়াত ১-৩।
অত্র সূরায় আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যুগ বা আসরের সময়ের শপথ করে বলেছেন: সকল মানুষ ক্ষতি ও ধ্বংসের মধ্যে রয়েছে। তবে যারা চারটি গুণে গুণান্বিত হবেন তারা ব্যতীত।
সে চারটি গুণ হল:
১- আল-ঈমান: আর তা হল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) , তাঁর নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা।
২- আল-আ'মালুস্সালিহ্ (সৎকর্ম): যেমন: সালাত (নামায), যাকাত, সিয়াম (রোযা), সত্যবাদীতা এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ইত্যাদী।
৩- পরস্পরকে সদুপদেশ দেওয়া: আর তা হলো, মানুষকে ঈমান ও সৎকর্মের প্রতি আহ্বান করা এবং এ ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া।
৪- পরস্পরকে ধৈর্য্য ধারণের উপদেশ দেওয়া: আর তা হলো, আল্লাহ্ ও রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনুগত্যের কাজে এবং বিপদাপদে ধৈর্য্য ধারণ করা।
তাওহীদের প্রকার: তাওহীদ তিন প্রকার: ১- প্রভুত্বের ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদ, ২- ইবাদাতের ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদ এবং ৩- নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদ।
১- তাওহীদুর রুবুবিইয়াহ্ বা প্রভুত্বের ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদ: আর তা হলো আল্লাহর কর্মে তাঁর একত্ববাদ, যেমন: সৃষ্টি করা, রিযিক্ব দেওয়া, সকল কার্যাদি পরিচালনা করা, জীবন-মৃত্যু দেওয়া ইত্যাদী। অতএব, আল্লাহ্ ছাড়া কোন সৃষ্টিকারী নাই। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ وَكِيلٌ﴾ [ الزمر : ৬২[
অর্থ: আল্লাহ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) প্রত্যেক বস্তুর সৃষ্টিকর্তা এবং তিনি প্রত্যেক বস্তুর ওপর দায়িত্বশীল। সূরা আয্যুমার - ৬২। আল্লাহ্ ছাড়া কোন রিযিকদাতা নাই, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا﴾ [ هود : ৬[
অর্থ: যমীনে এমন কোন বিচরণশীল প্রাণী নেই যার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর ওপর নেই। সূরাহ্ হুদ - ৬। আল্লাহ্ ছাড়া (আসমান যমীনের) কোন পরিচালনাকারী নেই। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الْأَرْضِ﴾ [ السجدة : ৫[
অর্থ: তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত সকল কাজ পরিচালিত করেন। সূরাহ্ আস্সাজদাহ্ আয়াত ৫। আল্লাহ্ ছাড়া জীবন ও মৃত্যু দানকারী কেউ নেই। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿هُوَ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ﴾ [ يونس : ৫৬]
অর্থ: তিনিই (আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ) জীবন ও মৃত্যু দান করেন। আর তোমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তীত হবে। সূরাহ্ ইউনুস আয়াত ৫৬।
এ প্রকার তাওহীদ (তাওহীদুর রুবূবিয়াহ্ ) রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়কালীন কাফেররা স্বীকার করেছিল। কিন্তু এ স্বীকারোw³ তাদেরকে ইসলামে প্রবেশ করেনি। যেমন আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ لَيَقُولُنَّ اللَّهُ﴾
অর্থ: আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন যে, আসমানসমূহ্ ও যমীন কে সৃষ্টি করেছেন? তাহলে তারা অবশ্যই বলবে যে, আল্লাহ্ তায়ালা। সূরাহ্ লুক্বমান আয়াত ২৫।
২- তাওহীদুল উলুহিইয়াহ্ (ইবাদাতের ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদ ): আর তা হলো বান্দার ঐ সকল কর্মে আল্লাহর একত্ববাদ, যে সকল কাজের ব্যাপারে তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) মানুষকে আদেশ দিয়েছেন। অতএব, সকল প্রকার ইবাদাত লাশারীক, এক-অদ্বিতীয় আল্লাহর জন্যই করতে হবে। যেমন: দুয়া' (প্রার্থনা বা আহ্বান করা), ভয়, ভরসা, সহযোগীতা কামনা করা এবং আশ্রয় চাওয়া ইত্যাদী। তাই আমরা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে আহ্বান করব না। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ﴾ [ غافر : ৬০[
অর্থ: তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব। সূরাহ্ গাফির (মু'মিন) আয়াত ৬০। আমরা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করিনা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿فَلَا تَخَافُوهُمْ وَخَافُونِ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ ﴾ [ آل عمران : ১৭৫
অর্থ: (শয়তান তার বন্ধুদেরকে ভয় দেখায়) অতএব, তাদেরকে ভয় করো না, বরং আমাকে ভয় কর, যদি তোমরা মু'মিন হও। সূরাহ্ আলি ইমরান আয়াত ১৭৫। আমরা আল্লাহর উপরই ভরসা করি। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿وَعَلَى اللَّهِ فَتَوَكَّلُوا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ﴾
অর্থ: বস্তুতঃ তোমরা যদি মু'মিন হও, তাহলে তোমরা আল্লাহর উপরই ভরসা কর। সূরাহ্ আল মায়েদাহ্ আয়াত ২৩। আমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারও নিকটে সাহায্য প্রার্থনা করি না। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) মানুষের ভাষায় বলেন: ﴿إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ﴾ [ الفاتحة : ৫
অর্থ: আমরা আপনারই ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকটে সাহায্য প্রার্থনা করি। সূরাহ আল ফাতিহাহ্ আয়াত ৫।
আমরা আল্লাহর নিকটেই আশ্রয় প্রার্থনা করি, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ﴾ অর্থ: আপনি বলুন: আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি মানুষের পালন কর্তার। সূরাহ্ আন্নাস আয়াত ১। আর এ প্রকার তাওহীদ (তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ্) নিয়েই নবীগণের (আলাইহিমুস্ সালাম) আগমণ ঘটেছিল। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ﴾ [ النحل : ৩৬[
অর্থ: আর আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল পাঠিয়েছি (এ সংবাদ দিয়ে) যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং ত্বাগুত (আল্লাহ্ ব্যতীত যা কিছুর ইবাদাত করা হয়) থেকে দূরে থাক। সূরাহ্ আন্নাহল আয়াত ৩৬।
এ প্রকার তাওহীদকেই কাফিররা প্রাক ও আধুনিক যুগে অস্বীকার করেছে। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) কাফেরদের ভাষায় বলেন:
﴿أَجَعَلَ الْآلِهَةَ إِلَهًا وَاحِدًا إِنَّ هَذَا لَشَيْءٌ عُجَابٌ﴾ [ص : ৫[
অর্থ: মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বহু ইলাহের পরিবর্তে এক ইলাহ্ বানিয়ে নিয়েছেন? এতো এক অত্যাশ্চর্য ব্যাপার। সূরাহ্ সোয়াদ আয়াত ৫।
৩ - توحيد الأسماء والصفات : (তাওহীদুল আসমা ওয়াসসিফাত):
আর তা হলো কুরআন এবং সহীহ্ হাদীসে আল্লাহ্ ও রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক আল্লাহর যে সকল নাম ও গুণাবলী উল্লেখ করা হয়েছে তা বাস্তবে ও মূল অর্থে বিশ্বাস করা। আল্লাহ্ তায়ালার অনেক নাম রয়েছে। যেমন: আর-রহ্মান (অসীম দয়ালু), আস্-সামী' (সর্বশ্রোতা), আল-বাসীর (সর্বদ্রষ্টা)। আল-আযীয (মহাপরাক্রমশালী) এবং আল-হাকীম (মহাজ্ঞানী) ইত্যাদী। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ﴾ [ الشورى : ১১[
অর্থ: কোন বস্তুই তাঁর অনুরুপ নয়। বস্তুতঃ তিনি সব কিছু শোনেন ও দেখেন। সূরাহ্ আশ্শুরা আয়াত ১১।
কৃতকার্যগণের গুণাবলী:
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَالْعَصْرِ (১) إِنَّ الْإِنْسَانَ لَفِي خُسْرٍ (২) إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ﴾ [ العصر : ১-৩[
অর্থ: যুগের ক্বসম (অথবা আসরের সময়ের ক্বসম)। নিশ্চয়ই সমস্ত মানুষই ক্ষতির মধ্যে পতিত রয়েছে। কিন্তু যারা ঈমান এনেছে, সৎ আমল করেছে, পরস্পর একে অন্যকে সত্য সম্পর্কে সদুপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পর একে অন্যকে ধৈর্য্য ধারণের উপদেশ দিয়েছে, (তারা ক্ষতির মধ্যে নেই)। সূরাহ্ আল্-আসর আয়াত ১-৩।
অত্র সূরায় আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যুগ বা আসরের সময়ের শপথ করে বলেছেন: সকল মানুষ ক্ষতি ও ধ্বংসের মধ্যে রয়েছে। তবে যারা চারটি গুণে গুণান্বিত হবেন তারা ব্যতীত।
সে চারটি গুণ হল:
১- আল-ঈমান: আর তা হল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) , তাঁর নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা।
২- আল-আ'মালুস্সালিহ্ (সৎকর্ম): যেমন: সালাত (নামায), যাকাত, সিয়াম (রোযা), সত্যবাদীতা এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ইত্যাদী।
৩- পরস্পরকে সদুপদেশ দেওয়া: আর তা হলো, মানুষকে ঈমান ও সৎকর্মের প্রতি আহ্বান করা এবং এ ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া।
৪- পরস্পরকে ধৈর্য্য ধারণের উপদেশ দেওয়া: আর তা হলো, আল্লাহ্ ও রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনুগত্যের কাজে এবং বিপদাপদে ধৈর্য্য ধারণ করা।
১- আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) মানুষের উপর সর্ব প্রথম যে বিষয় ফরয করেছেন তা হলো, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা এবং তাগুতকে অস্বীকার । যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ﴾ [ النحل : ৩৬[
অর্র্থ: আর আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল পাঠিয়েছি যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং ত্বাগুত (আল্লাহ্ ব্যতীত যা কিছুর ইবাদাত করা হয়) থেকে দূরে থাক। সূরাহ্ আন্ নাহ্ল আয়াত ৩৬।
২- ত্বাগুতের অর্থ: আল্লাহ্ ছাড়া যা কিছুর ইবাদাত করা হয় এবং সে তাতে সন্তুষ্ট থাকে।
৩- ত্বাগুতকে অস্বীকার করার নিয়ম হল: আপনি এ বিশ্বাস রাখবেন যে, আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করা বাতিল, তা পরিত্যাগ করতঃ তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবেন। ত্বাগুতীদেরকে কাফির বলে জানবেন এবং তাদের সাথে শত্রুতা রাখবেন।
৪- শির্ক যা তাওহীদের বিপরীত, তাওহীদ হলো যাবতীয় ইবাদাত এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর জন্য করা। শিরক হলো, যে কোন একটি ইবাদাত আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের জন্য করা। যেমন: আল্লাহ্ ছাড়া অন্যকে আহ্বান করা বা ডাকা অথবা গাইরুল্লাহকে সিজদাহ করা ইত্যাদী ।
৫- শির্ক সবচেয়ে বড় ও ক্ষতিকারক গুনাহ্। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ﴾ [ النساء : ১১৬[
অর্থ: নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাঁর সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না, এছাড়া যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। সূরাহ্ আন্নিসা আয়াত ১১৬।
৬- শির্ক যাবতীয় সৎকর্মকে বাতিল বা ধ্বংস করতঃ চিরস্থায়ী জাহান্নামে যাওয়া আবশ্যক করে দেয় এবং জান্নাতে প্রবেশে বাধা দেয়। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ذَلِكَ هُدَى اللّهِ يَهْدِي بِهِ مَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَلَوْ أَشْرَكُواْ لَحَبِطَ عَنْهُم مَّا كَانُواْ يَعْمَلُونَ ﴾ ] الأنعام ৮৮-[
অর্থ: এটাই হলো আল্লাহর হেদায়েত, তিনি তাঁর বান্দাহদের থেকে যাকে ইচ্ছা তাকে হেদায়াত করেন। তারা যদি শির্ক করতো তাহলে তারা যা করতো তা তাদের থেকে সব ব্যর্থ হয়ে যেত। সূরাহ্ আল আন্ আ'ম আয়াত ৮৮। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) অন্যত্রে বলেন:
﴿إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ ﴾ [ المائدة : ৭২[
অর্থ: নিশ্চয়ই যে আল্লাহর সাথে শরীক করে, তার জন্য আল্লাহ্ তায়া'লা জান্নাত হারাম করেছেন এবং তার ঠিকানা হলো জাহান্নাম। সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ - ৭২।
৭- কুফরী তাওহীদকে নষ্ট করে। কুফরী হলো এমন সকল কথা ও কাজ যা তাতে নিপতিত ব্যক্তিকে তাওহীদ ও ঈমান থেকে বের করে দেয়। কুফরীর উদাহরণ: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) অথবা কুরআনের আয়াত বা রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ (৬৫) لَا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ﴾ [ التوبة : ৬৫ - ৬৬[
অর্থ: আপনি বলে দিন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর আয়াত সমূহের সাথে ও তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতে? তোমরা ওযর পেশ করো না, অবশ্য তোমরাই তো ঈমান আনার পর কুফরী করেছ। সূরাহ্ তাওবাহ্ - ৬৫-৬৬।
৮- মুনাফিক্বী (দ্বিমুখিতা) তাওহীদ পরিপন্থী বিষয়। নিফাক্ব হল: মানুষ বাহ্যিকভাবে তাওহীদ ও ঈমান প্রকাশ করবে কিন্তু তার অন্তরে শির্ক ও কুফরী গোপন রাখবে। নিফাক্ব বা মুনাফিক্বীর উদারণ হল: মুখে আল্লাহর প্রতি ঈমান প্রকাশ করা এবং অন্তরে কুফরী গোপন করে রাখা। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَقُولُ آمَنَّا بِاللَّهِ وَبِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَمَا هُمْ بِمُؤْمِنِينَ﴾ [ البقرة : ৮[
অর্থ: আর মানুষদের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা বলে আমরা আল্লাহ্ ও পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করেছি, অথচ তারা মু'মিন নয়। সূরাহ্ আল্ বাক্বারাহ্ আয়াত ৮। অর্থাৎ তারা মুখে বলে আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি কিন্তু বাস্তবে তারা অন্তর থেকে ঈমান আনেনি।
﴿وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ﴾ [ النحل : ৩৬[
অর্র্থ: আর আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল পাঠিয়েছি যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং ত্বাগুত (আল্লাহ্ ব্যতীত যা কিছুর ইবাদাত করা হয়) থেকে দূরে থাক। সূরাহ্ আন্ নাহ্ল আয়াত ৩৬।
২- ত্বাগুতের অর্থ: আল্লাহ্ ছাড়া যা কিছুর ইবাদাত করা হয় এবং সে তাতে সন্তুষ্ট থাকে।
৩- ত্বাগুতকে অস্বীকার করার নিয়ম হল: আপনি এ বিশ্বাস রাখবেন যে, আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করা বাতিল, তা পরিত্যাগ করতঃ তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবেন। ত্বাগুতীদেরকে কাফির বলে জানবেন এবং তাদের সাথে শত্রুতা রাখবেন।
৪- শির্ক যা তাওহীদের বিপরীত, তাওহীদ হলো যাবতীয় ইবাদাত এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর জন্য করা। শিরক হলো, যে কোন একটি ইবাদাত আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের জন্য করা। যেমন: আল্লাহ্ ছাড়া অন্যকে আহ্বান করা বা ডাকা অথবা গাইরুল্লাহকে সিজদাহ করা ইত্যাদী ।
৫- শির্ক সবচেয়ে বড় ও ক্ষতিকারক গুনাহ্। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ﴾ [ النساء : ১১৬[
অর্থ: নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাঁর সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না, এছাড়া যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। সূরাহ্ আন্নিসা আয়াত ১১৬।
৬- শির্ক যাবতীয় সৎকর্মকে বাতিল বা ধ্বংস করতঃ চিরস্থায়ী জাহান্নামে যাওয়া আবশ্যক করে দেয় এবং জান্নাতে প্রবেশে বাধা দেয়। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ذَلِكَ هُدَى اللّهِ يَهْدِي بِهِ مَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَلَوْ أَشْرَكُواْ لَحَبِطَ عَنْهُم مَّا كَانُواْ يَعْمَلُونَ ﴾ ] الأنعام ৮৮-[
অর্থ: এটাই হলো আল্লাহর হেদায়েত, তিনি তাঁর বান্দাহদের থেকে যাকে ইচ্ছা তাকে হেদায়াত করেন। তারা যদি শির্ক করতো তাহলে তারা যা করতো তা তাদের থেকে সব ব্যর্থ হয়ে যেত। সূরাহ্ আল আন্ আ'ম আয়াত ৮৮। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) অন্যত্রে বলেন:
﴿إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ ﴾ [ المائدة : ৭২[
অর্থ: নিশ্চয়ই যে আল্লাহর সাথে শরীক করে, তার জন্য আল্লাহ্ তায়া'লা জান্নাত হারাম করেছেন এবং তার ঠিকানা হলো জাহান্নাম। সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ - ৭২।
৭- কুফরী তাওহীদকে নষ্ট করে। কুফরী হলো এমন সকল কথা ও কাজ যা তাতে নিপতিত ব্যক্তিকে তাওহীদ ও ঈমান থেকে বের করে দেয়। কুফরীর উদাহরণ: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) অথবা কুরআনের আয়াত বা রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ (৬৫) لَا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيمَانِكُمْ﴾ [ التوبة : ৬৫ - ৬৬[
অর্থ: আপনি বলে দিন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর আয়াত সমূহের সাথে ও তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতে? তোমরা ওযর পেশ করো না, অবশ্য তোমরাই তো ঈমান আনার পর কুফরী করেছ। সূরাহ্ তাওবাহ্ - ৬৫-৬৬।
৮- মুনাফিক্বী (দ্বিমুখিতা) তাওহীদ পরিপন্থী বিষয়। নিফাক্ব হল: মানুষ বাহ্যিকভাবে তাওহীদ ও ঈমান প্রকাশ করবে কিন্তু তার অন্তরে শির্ক ও কুফরী গোপন রাখবে। নিফাক্ব বা মুনাফিক্বীর উদারণ হল: মুখে আল্লাহর প্রতি ঈমান প্রকাশ করা এবং অন্তরে কুফরী গোপন করে রাখা। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَقُولُ آمَنَّا بِاللَّهِ وَبِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَمَا هُمْ بِمُؤْمِنِينَ﴾ [ البقرة : ৮[
অর্থ: আর মানুষদের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা বলে আমরা আল্লাহ্ ও পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করেছি, অথচ তারা মু'মিন নয়। সূরাহ্ আল্ বাক্বারাহ্ আয়াত ৮। অর্থাৎ তারা মুখে বলে আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি কিন্তু বাস্তবে তারা অন্তর থেকে ঈমান আনেনি।
এ দিবসের প্রতি বিশ্বাসের অর্থ: দৃঢ় এ বিশ্বাস রাখা যে কিয়ামত দিবস অবশ্যই সংঘটিত হবে। অতএব, আমাদের প্রত্যেকেই বিশ্বাস করে যে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) মানুষদেরকে কবর থেকে উত্থিত করবেন, অতপরঃ তাদের হিসাব নিয়ে কৃতকর্ম অনুযায়ী তাদেরকে প্রতিদান দিবেন। অবশেষে জান্নাতীগণ জান্নাতে এবং জাহান্নামীরা জাহান্নামে স্থায়ী হবে। কিয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাস ঈমানের ছয়টি রুকনের (স্তম্ভের) অন্যতম। কেউ এর প্রতি বিশ্বাস না রাখলে তার ঈমান সঠিক হবে না।
১- পুনরুত্থানে বিশ্বাস:
তা হলো মৃত ব্যক্তিদেরকে কবর থেকে পুনরুজ্জীবিত করা, মৃত শরীরে আত্মা ফিরিয়ে দেওয়া, অতপরঃ সকল মানুষ আল্লাহর সামনে দন্ডায়মান হবে, তারপর তাদেরকে পোশাক, জুতা ও খাতনা বিহীন অবস্থায় এক যায়গায় একত্রিত করা হবে। । পুনরুত্থানের দলীল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ثُمَّ إِنَّكُمْ بَعْدَ ذَلِكَ لَمَيِّتُونَ (১৫) ثُمَّ إِنَّكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ تُبْعَثُونَ﴾ [ المؤمنون : ১৫- ১৬ [
অর্থ: তারপর নিশ্চয়ই তোমাদেরকে এর পরে মৃত্যুবরণ করতে হবে। তারপর নিশ্চয়ই তোমাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন পুনরায় উঠানো হবে। সূরাহ্ আল মু'মিনূন আয়াত ১৫-১৬।
একত্রিত করার (হাশরের) দলীল: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাণী:
﴿ يحشر الناس يوم القيامة حفاة عراة غُرْلا﴾
অর্থ: কিয়ামতের দিন মানুষদেরকে জুতা, পোশাক এবং খাতনা বিহীন অবস্থায় সমবেত করা হবে। বুখারী ও মুসলিম ।
২- হিসাব-নিকাশ এবং মীযানে (দাঁড়ি পাল্লা) বিশ্বাস:
সৃষ্টিজীব দুনিয়াতে যে সকল আমল করেছে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) কিয়ামতের দিন তাদের সে সকল কর্মের হিসাব নিবেন। অতএব, যে ব্যক্তি তাওহীদবাদী এবং আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ও রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুসারী হবেন তাঁর হিসাব খুব সহজ হবে। আর যদি কোন ব্যক্তি শির্ক করে এবং আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ও রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবাধ্য হয়ে থাকে তবে তার হিসাব খুব কঠিন হবে। বড় একটা পাল্লায় আমল সমূহ ওজন করা হবে, ভালো আমল গুলো এক পাল্লায় রাখা হবে, খারাপ আমল গুলো অন্য পাল্লায় রাখা হবে।
যার খারাপ আমলের চেয়ে ভালো আমলের পাল্লা ভারী হবে তিনি জান্নাতী হবেন। অপর দিকে যার ভালো আমলের চেয়ে খারাপ আমলের পাল্লা ভারী হবে সে জাহান্নামী হবে। হিসাবের দলীল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ (৭) فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا (৮) وَيَنْقَلِبُ إِلَى أَهْلِهِ مَسْرُورًا (৯) وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ وَرَاءَ ظَهْرِهِ (১০) فَسَوْفَ يَدْعُو ثُبُورًا (১১) وَيَصْلَى سَعِيرًا﴾ [ الإنشقاق [
অর্থ: অতঃপর যার ডান হাতে তার আমলনামা দেয়া হবে। অতঃপর অচিরেই তার হিসাব নিকাশ সহজ করা হবে। বস্তুতঃ সে তার পরিবারবর্গের নিকট সন্তুষ্ট চিত্তে প্রত্যাবর্তন করবে। কিন্তু যার আমলনামা তার পিঠের পিছনের দিক থেকে দেয়া হবে। অতঃপর সে অচিরেই মৃত্যুকে ডাকবে এবং সে উত্তপ্ত জাহান্নামে প্রবেশ করবে। সূরাহ্ আল ইনশিক্বাক্ব আয়াত ৭-১২।
মীযান বা মাপ যন্ত্রের দলীল হল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا وَكَفَى بِنَا حَاسِبِينَ﴾ (৪৭) [ الأنبياء [
অর্থ: আমি কিয়ামতের দিন ন্যায়বিচারের মানদন্ড স্থাপন করব। অতঃপর কারো ওপর বিন্দুমাত্র যুলুম করা হবে না। আমল যদি সরিষা দানা পরিমাণও হয় তাও আমি উপস্থিত করব। বস্তুত হিসাব গ্রহণকারী হিসেবে আমিই যথেষ্ট। সূরাহ্ আল আম্বিয়া’ আয়াত ৪৭।
৩- জান্নাত ও জাহান্নাম: জান্নাত হলো চির স্থায়ী নিয়ামতের স্থান। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) মুমিন মুত্তাক্বীনগণের জন্য তা প্রস্তুত করে রেখেছেন। যাঁরা তাঁর ও রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনুগত্য করেন। সেখানে আল্লাহ্ তায়া'লা খাদ্য, পানীয়, পোশাক-পরিচ্ছদ এবং পছন্দনীয় বস্তু সহ যাবতীয় নিয়ামত সমূহ জমা করে রেখেছেন।
কিন্তু জাহান্নাম!! তা চিরস্থায়ী শাস্তির স্থান। আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবাধ্য কাফিরদের জন্য আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) এ জাহান্নাম প্রস্তুত করে রেখেছেন। সেখানে রয়েছে বিভিন্ন রকম শাস্তি, যন্ত্রণা এবং দন্ড যা কোন দিন কেউ কল্পনাও করতে পারেনা।
জান্নাতের দলীল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَسَارِعُوا إِلَى مَغْفِرَةٍ مِنْ رَبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِينَ﴾ [ آل عمران : ১৩৩[
অর্থ: আর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা ও জান্নাতের জন্য দ্রুত অগ্রসর হও, যার প্রশস্ততা হলো আসমান ও যমীন সমতুল্য। যা মুত্তাক্বীনদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। সূরাহ্ আলি ইমরান আয়াত ১৩৩। আল্লাহ্ তায়া'লা অন্যত্র বলেন:
﴿فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾ [ السجدة : ১৭[
অর্থ: কেউ জানে না তাদের জন্য তাদের কৃতকর্মের প্রতিদান স্বরূপ (আল্লাহর নিকট) চোখ জুড়ানো কি কি বস্তু গোপন রাখা হয়েছে । সূরাহ্ আস্ সাজদাহ্ - ১৭। জাহান্নামের দলীল হল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ﴾ [ البقرة : ২৪[
অর্থ: সুতরাং তোমরা সে আগুনকে ভয় কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যা কাফিরদের জন্য তৈরী করা হয়েছে। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াত ২৪। অপর স্থানে তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿إِنَّ لَدَيْنَا أَنْكَالًا وَجَحِيمًا (১২) وَطَعَامًا ذَا غُصَّةٍ وَعَذَابًا أَلِيمًا﴾ (১৩( [ المزمل [
অর্থ: নিশ্চয়ই (তাদের জন্য) আমার নিকটে রয়েছে ভারী শিকল ও প্রজ্জলিত আগুন। আর গলায় আটকানো খাদ্য এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। সূরাহ্ আল মুয্যাম্মিল আয়াত ১২-১৩।
হে আল্লাহ্ আমরা আপনার নিকটে জান্নাত এবং তার নিকটবর্তীকারী কথা ও কাজের তৌফীক্ব কামনা করছি। জাহান্নাম এবং তার নিকটবর্তীকারী কথা ও কাজ থেকে আপনার নিকটে আশ্রয় চাচ্ছি। আমীন ।
তা হলো মৃত ব্যক্তিদেরকে কবর থেকে পুনরুজ্জীবিত করা, মৃত শরীরে আত্মা ফিরিয়ে দেওয়া, অতপরঃ সকল মানুষ আল্লাহর সামনে দন্ডায়মান হবে, তারপর তাদেরকে পোশাক, জুতা ও খাতনা বিহীন অবস্থায় এক যায়গায় একত্রিত করা হবে। । পুনরুত্থানের দলীল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ثُمَّ إِنَّكُمْ بَعْدَ ذَلِكَ لَمَيِّتُونَ (১৫) ثُمَّ إِنَّكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ تُبْعَثُونَ﴾ [ المؤمنون : ১৫- ১৬ [
অর্থ: তারপর নিশ্চয়ই তোমাদেরকে এর পরে মৃত্যুবরণ করতে হবে। তারপর নিশ্চয়ই তোমাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন পুনরায় উঠানো হবে। সূরাহ্ আল মু'মিনূন আয়াত ১৫-১৬।
একত্রিত করার (হাশরের) দলীল: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাণী:
﴿ يحشر الناس يوم القيامة حفاة عراة غُرْلا﴾
অর্থ: কিয়ামতের দিন মানুষদেরকে জুতা, পোশাক এবং খাতনা বিহীন অবস্থায় সমবেত করা হবে। বুখারী ও মুসলিম ।
২- হিসাব-নিকাশ এবং মীযানে (দাঁড়ি পাল্লা) বিশ্বাস:
সৃষ্টিজীব দুনিয়াতে যে সকল আমল করেছে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) কিয়ামতের দিন তাদের সে সকল কর্মের হিসাব নিবেন। অতএব, যে ব্যক্তি তাওহীদবাদী এবং আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ও রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুসারী হবেন তাঁর হিসাব খুব সহজ হবে। আর যদি কোন ব্যক্তি শির্ক করে এবং আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ও রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবাধ্য হয়ে থাকে তবে তার হিসাব খুব কঠিন হবে। বড় একটা পাল্লায় আমল সমূহ ওজন করা হবে, ভালো আমল গুলো এক পাল্লায় রাখা হবে, খারাপ আমল গুলো অন্য পাল্লায় রাখা হবে।
যার খারাপ আমলের চেয়ে ভালো আমলের পাল্লা ভারী হবে তিনি জান্নাতী হবেন। অপর দিকে যার ভালো আমলের চেয়ে খারাপ আমলের পাল্লা ভারী হবে সে জাহান্নামী হবে। হিসাবের দলীল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ (৭) فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا (৮) وَيَنْقَلِبُ إِلَى أَهْلِهِ مَسْرُورًا (৯) وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ وَرَاءَ ظَهْرِهِ (১০) فَسَوْفَ يَدْعُو ثُبُورًا (১১) وَيَصْلَى سَعِيرًا﴾ [ الإنشقاق [
অর্থ: অতঃপর যার ডান হাতে তার আমলনামা দেয়া হবে। অতঃপর অচিরেই তার হিসাব নিকাশ সহজ করা হবে। বস্তুতঃ সে তার পরিবারবর্গের নিকট সন্তুষ্ট চিত্তে প্রত্যাবর্তন করবে। কিন্তু যার আমলনামা তার পিঠের পিছনের দিক থেকে দেয়া হবে। অতঃপর সে অচিরেই মৃত্যুকে ডাকবে এবং সে উত্তপ্ত জাহান্নামে প্রবেশ করবে। সূরাহ্ আল ইনশিক্বাক্ব আয়াত ৭-১২।
মীযান বা মাপ যন্ত্রের দলীল হল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا وَكَفَى بِنَا حَاسِبِينَ﴾ (৪৭) [ الأنبياء [
অর্থ: আমি কিয়ামতের দিন ন্যায়বিচারের মানদন্ড স্থাপন করব। অতঃপর কারো ওপর বিন্দুমাত্র যুলুম করা হবে না। আমল যদি সরিষা দানা পরিমাণও হয় তাও আমি উপস্থিত করব। বস্তুত হিসাব গ্রহণকারী হিসেবে আমিই যথেষ্ট। সূরাহ্ আল আম্বিয়া’ আয়াত ৪৭।
৩- জান্নাত ও জাহান্নাম: জান্নাত হলো চির স্থায়ী নিয়ামতের স্থান। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) মুমিন মুত্তাক্বীনগণের জন্য তা প্রস্তুত করে রেখেছেন। যাঁরা তাঁর ও রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনুগত্য করেন। সেখানে আল্লাহ্ তায়া'লা খাদ্য, পানীয়, পোশাক-পরিচ্ছদ এবং পছন্দনীয় বস্তু সহ যাবতীয় নিয়ামত সমূহ জমা করে রেখেছেন।
কিন্তু জাহান্নাম!! তা চিরস্থায়ী শাস্তির স্থান। আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবাধ্য কাফিরদের জন্য আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) এ জাহান্নাম প্রস্তুত করে রেখেছেন। সেখানে রয়েছে বিভিন্ন রকম শাস্তি, যন্ত্রণা এবং দন্ড যা কোন দিন কেউ কল্পনাও করতে পারেনা।
জান্নাতের দলীল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَسَارِعُوا إِلَى مَغْفِرَةٍ مِنْ رَبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِينَ﴾ [ آل عمران : ১৩৩[
অর্থ: আর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা ও জান্নাতের জন্য দ্রুত অগ্রসর হও, যার প্রশস্ততা হলো আসমান ও যমীন সমতুল্য। যা মুত্তাক্বীনদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। সূরাহ্ আলি ইমরান আয়াত ১৩৩। আল্লাহ্ তায়া'লা অন্যত্র বলেন:
﴿فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾ [ السجدة : ১৭[
অর্থ: কেউ জানে না তাদের জন্য তাদের কৃতকর্মের প্রতিদান স্বরূপ (আল্লাহর নিকট) চোখ জুড়ানো কি কি বস্তু গোপন রাখা হয়েছে । সূরাহ্ আস্ সাজদাহ্ - ১৭। জাহান্নামের দলীল হল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ﴾ [ البقرة : ২৪[
অর্থ: সুতরাং তোমরা সে আগুনকে ভয় কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যা কাফিরদের জন্য তৈরী করা হয়েছে। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াত ২৪। অপর স্থানে তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿إِنَّ لَدَيْنَا أَنْكَالًا وَجَحِيمًا (১২) وَطَعَامًا ذَا غُصَّةٍ وَعَذَابًا أَلِيمًا﴾ (১৩( [ المزمل [
অর্থ: নিশ্চয়ই (তাদের জন্য) আমার নিকটে রয়েছে ভারী শিকল ও প্রজ্জলিত আগুন। আর গলায় আটকানো খাদ্য এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। সূরাহ্ আল মুয্যাম্মিল আয়াত ১২-১৩।
হে আল্লাহ্ আমরা আপনার নিকটে জান্নাত এবং তার নিকটবর্তীকারী কথা ও কাজের তৌফীক্ব কামনা করছি। জাহান্নাম এবং তার নিকটবর্তীকারী কথা ও কাজ থেকে আপনার নিকটে আশ্রয় চাচ্ছি। আমীন ।
আক্বীদাহ্ (বিশ্বাস) ও শরীয়তের (মতাদর্শের) সমন্বয় হল ইসলাম ধর্ম। আক্বীদাহ্ দ্বারা সেই সকল বিষয় উদ্দেশ্য যেগুলো আত্মা সত্যায়ন করে, তাতে অন্তর শান্তি পায় এবং হৃদয়ে এমন বিশ্বাস জন্ম হয় যাতে কোন সন্দেহ ও সংশয় থাকে না।
শরীয়ত দ্বারা উদ্দেশ্য হল: সেই সকল কাজ যা করতে ইসলাম আদেশ দিয়েছে। যেমনঃ সালাত (নামাজ), যাকাত, সিয়াম (রোযা), এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ইত্যাদী।
শরীয়ত দ্বারা উদ্দেশ্য হল: সেই সকল কাজ যা করতে ইসলাম আদেশ দিয়েছে। যেমনঃ সালাত (নামাজ), যাকাত, সিয়াম (রোযা), এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ইত্যাদী।
১- আল্লাহ্ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস।
২- তাঁর মালাইকা বা ফেরেশ্তাগণের প্রতি বিশ্বাস।
৩- তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস।
৪- তাঁর রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস।
৫- কিয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাস।
৬- তাক্বদীরের ভালো মন্দের প্রতি বিশ্বাস।
এর দলীল হলো আল্লাহ তায়ালার বাণী:
﴿لَيْسَ الْبِرَّ أَنْ تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ﴾ [ البقرة : ১৭৭[
অর্থ: সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে। বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর, কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রাসূলগণের উপর। সূরাহ্ বাক্বারাহ্ আয়াত ১৭৭। ক্বদরের দলীল হলো আল্লাহর বাণী:
﴿إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ (৪৯) وَمَا أَمْرُنَا إِلَّا وَاحِدَةٌ كَلَمْحٍ بِالْبَصَرِ﴾ [ القمر : ৪৯-৫০[
অর্থ: আমি প্রত্যেক বস্তুকে পরিমিতরূপে সৃষ্টি করেছি। আমার কাজ তো এক মুহূর্তে চোখের পলকের মত। সূরাহ্ আল ক্বামার আয়াত ৪৯-৫০। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنْ الْإِيمَانِ قَالَ أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ﴾ ] صحيح مسلم [
অর্থ: জিবরীল রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে ঈমান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:ঈমান হলো তুমি; আল্লাহ্, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর কিতাব সমূহ, তাঁর রাসূলগণ, কিয়ামত দিবস এবং তাক্বদীরের ভালো মন্দের প্রতি বিশ্বাস রাখবে। সহীহ্ মুসলিম ১/৮৭।
২- তাঁর মালাইকা বা ফেরেশ্তাগণের প্রতি বিশ্বাস।
৩- তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস।
৪- তাঁর রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস।
৫- কিয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাস।
৬- তাক্বদীরের ভালো মন্দের প্রতি বিশ্বাস।
এর দলীল হলো আল্লাহ তায়ালার বাণী:
﴿لَيْسَ الْبِرَّ أَنْ تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ﴾ [ البقرة : ১৭৭[
অর্থ: সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে। বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর, কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রাসূলগণের উপর। সূরাহ্ বাক্বারাহ্ আয়াত ১৭৭। ক্বদরের দলীল হলো আল্লাহর বাণী:
﴿إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ (৪৯) وَمَا أَمْرُنَا إِلَّا وَاحِدَةٌ كَلَمْحٍ بِالْبَصَرِ﴾ [ القمر : ৪৯-৫০[
অর্থ: আমি প্রত্যেক বস্তুকে পরিমিতরূপে সৃষ্টি করেছি। আমার কাজ তো এক মুহূর্তে চোখের পলকের মত। সূরাহ্ আল ক্বামার আয়াত ৪৯-৫০। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿قَالَ فَأَخْبِرْنِي عَنْ الْإِيمَانِ قَالَ أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ﴾ ] صحيح مسلم [
অর্থ: জিবরীল রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে ঈমান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:ঈমান হলো তুমি; আল্লাহ্, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর কিতাব সমূহ, তাঁর রাসূলগণ, কিয়ামত দিবস এবং তাক্বদীরের ভালো মন্দের প্রতি বিশ্বাস রাখবে। সহীহ্ মুসলিম ১/৮৭।
অনেকগুলো বিষয়ের মাধ্যমে ইসলামী আক্বীদার গুরুত্ব প্রকাশ পায়, তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল:
১- আমাদের জীবনে সর্বাধিক প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আক্বীদাহ্। কেননা, অন্তর যদি তার সৃষ্টিকর্তা মহান রব্বুল আ'লামীনের ইবাদাত না করে তবে তা সুখ, শান্তি ও নিয়ামত পাবে না।
২- ইসলামী আক্বীদাহ্ সব চেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ ফরয। এ জন্য কেউ ইসলাম গ্রহণ করতে চাইলে তার নিকটে সর্বপ্রথম ইসলামী আক্বীদার স্বীকারোw³ চাওয়া হয়। যেমন আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿أمرت أن أقاتل الناس حتى يشهدوا أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله﴾
অর্থ: মানুষ যতক্ষন আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূলচ এ কথার সাক্ষ্য না দিবে আমি ততক্ষন তাদের সাথে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি। বুখারী ও মুসলিম।
৩- ইসলামী আক্বীদাই একমাত্র আক্বীদাহ্ যা নিরাপত্তা, শান্তি, সুখ এবং আনন্দ কায়েম করে। আল্লাহ্ বলেন:
﴿ بَلَى مَنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لِلَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ فَلَهُ أَجْرُهُ عِنْدَ رَبِّهِ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ﴾ [ البقرة : ১১২[
অর্থ: হাঁ, যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সমর্পণ করেছে এবং সে সৎকর্মশীলও বটে তার জন্য তার পালনকর্তার কাছে পুরস্কার রয়েছে। তাদের ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। সূরাহ্ বাক্বারাহ্ ১১২। ইসলামী আক্বীদাই কেবল সুস্থতা ও সুখ-সমৃদ্ধি প্রতিা করতে পারে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُوا وَاتَّقَوْا لَفَتَحْنَا عَلَيْهِمْ بَرَكَاتٍ مِنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ﴾ [ الأعراف : ৯৬[
অর্থ: আর যদি সে জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাক্বওয়া (পরহেযগারী) অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের প্রতি আসমানী ও পার্থিব নিয়ামতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম। সূরাহ্ আল আরাফ আয়াত ৯৬।
৪- ইসলামী আক্বীদাই পৃথিবীতে ক্ষমতা লাভ এবং ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্টার মাধ্যম। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَقَدْ كَتَبْنَا فِي الزَّبُورِ مِنْ بَعْدِ الذِّكْرِ أَنَّ الْأَرْضَ يَرِثُهَا عِبَادِيَ الصَّالِحُونَ﴾ [ الأنبياء : ১০৫[
অর্থ: আমি উপদেশের পর যাবুরে লিখে দিয়েছি যে, আমার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাগণ অবশেষে পৃথিবীর অধিকারী হবে। সূরাহ্ আল আম্বিয়া আয়াত ১০৫।
১- আমাদের জীবনে সর্বাধিক প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আক্বীদাহ্। কেননা, অন্তর যদি তার সৃষ্টিকর্তা মহান রব্বুল আ'লামীনের ইবাদাত না করে তবে তা সুখ, শান্তি ও নিয়ামত পাবে না।
২- ইসলামী আক্বীদাহ্ সব চেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ ফরয। এ জন্য কেউ ইসলাম গ্রহণ করতে চাইলে তার নিকটে সর্বপ্রথম ইসলামী আক্বীদার স্বীকারোw³ চাওয়া হয়। যেমন আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿أمرت أن أقاتل الناس حتى يشهدوا أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله﴾
অর্থ: মানুষ যতক্ষন আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূলচ এ কথার সাক্ষ্য না দিবে আমি ততক্ষন তাদের সাথে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি। বুখারী ও মুসলিম।
৩- ইসলামী আক্বীদাই একমাত্র আক্বীদাহ্ যা নিরাপত্তা, শান্তি, সুখ এবং আনন্দ কায়েম করে। আল্লাহ্ বলেন:
﴿ بَلَى مَنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لِلَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ فَلَهُ أَجْرُهُ عِنْدَ رَبِّهِ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ﴾ [ البقرة : ১১২[
অর্থ: হাঁ, যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সমর্পণ করেছে এবং সে সৎকর্মশীলও বটে তার জন্য তার পালনকর্তার কাছে পুরস্কার রয়েছে। তাদের ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। সূরাহ্ বাক্বারাহ্ ১১২। ইসলামী আক্বীদাই কেবল সুস্থতা ও সুখ-সমৃদ্ধি প্রতিা করতে পারে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُوا وَاتَّقَوْا لَفَتَحْنَا عَلَيْهِمْ بَرَكَاتٍ مِنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ﴾ [ الأعراف : ৯৬[
অর্থ: আর যদি সে জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাক্বওয়া (পরহেযগারী) অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের প্রতি আসমানী ও পার্থিব নিয়ামতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম। সূরাহ্ আল আরাফ আয়াত ৯৬।
৪- ইসলামী আক্বীদাই পৃথিবীতে ক্ষমতা লাভ এবং ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্টার মাধ্যম। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَقَدْ كَتَبْنَا فِي الزَّبُورِ مِنْ بَعْدِ الذِّكْرِ أَنَّ الْأَرْضَ يَرِثُهَا عِبَادِيَ الصَّالِحُونَ﴾ [ الأنبياء : ১০৫[
অর্থ: আমি উপদেশের পর যাবুরে লিখে দিয়েছি যে, আমার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাগণ অবশেষে পৃথিবীর অধিকারী হবে। সূরাহ্ আল আম্বিয়া আয়াত ১০৫।
আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার অর্থ: আল্লাহর অস্তিত্বকে নিশ্চিত ও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা। প্রভুত্ব, ইবাদাত এবং নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদকে স্বীকার করা। আল্লাহর প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে শামিল করে:
১- আল্লাহর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) অস্তিত্ব নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করা।
২- আল্লাহর প্রভুত্বে বিশ্বাস স্থাপন করা।
৩- আল্লাহই একমাত্র সত্য ইলাহ্ ও ইবাদাতের যোগ্য এ বিশ্বাস রাখা।
৪- আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর উপর বিশ্বাসরাখা।
এ চারটি বিষয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশা আল্লাহ্।
১- আল্লাহর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) অস্তিত্ব নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করা।
২- আল্লাহর প্রভুত্বে বিশ্বাস স্থাপন করা।
৩- আল্লাহই একমাত্র সত্য ইলাহ্ ও ইবাদাতের যোগ্য এ বিশ্বাস রাখা।
৪- আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর উপর বিশ্বাসরাখা।
এ চারটি বিষয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশা আল্লাহ্।
ক- আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস স্থাপন করা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী। সামান্য সংখ্যক নাস্তিক ব্যতীত কেউ এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেনি। প্রত্যেক সৃষ্টি জীবই পূর্ব তা'লীম ছাড়াই তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে ঈমানের উপর সৃষ্ট। যেমন আমরা আহ্বানকারীদের আহ্বানে সাড়া দেওয়া এবং প্রার্থনাকারীদের প্রার্থীত বস্তু প্রাপ্তির কথা শুনি ও দেখে থাকি, যা আল্লাহর অস্তিত্বের উপর স্পষ্ট প্রমাণ বহন করে। আল্লাহ তা (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ﴾
অর্থ: তোমরা যখন ফরিয়াদ করতে আরম্ভ করেছিলে স্বীয় পালনকর্তার নিকট। তখন তিনি তোমাদের ফরিয়াদের মঞ্জুরী দান করলেন। সূরাহ্ আল আন্ফাল আয়াত ৯।
খ- প্রত্যেকেই জানে কোন কিছু সংঘটিত হলে তার সম্পাদনকারী বা সংঘটক থাকা আবশ্যক। অসংখ্য সৃষ্টিজীব এবং প্রতিনিয়ত আমরা দুনিয়াতে যা দেখছি তারও একজন স্রষ্টা দরকার যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন। তিনিই হলেন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম)। কেননা স্রষ্টা বিহীন সৃষ্টি আসতে পারেনা। তেমনি এটাও অসম্ভব যে কেউ নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করবে, কেননা কোন বস্তু নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করতে পারে না। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿أَمْ خُلِقُوا مِنْ غَيْرِ شَيْءٍ أَمْ هُمُ الْخَالِقُونَ﴾ [ الطور : ৩৫[
অর্থ: তারা কি আপনা-আপনিই সৃজিত হয়ে গেছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা? সূরাহ্ আত্ ত্বুর আয়াত ৩৪।
আয়াতের অর্থ হল: তারা স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্ট হয়নি, আর তারা নিজেরাও নিজেদেরকে সৃষ্টি করেনি, তাহলে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে তাদের স্রষ্টা হলেন মহান আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম)।
গ- আসমান, যমীন,চন্দ্র, সূর্য, তারকা এবং গাছ-পালাসহ সুশৃঙ্খল এ দুনিয়া নিশ্চিতরূপে প্রমাণ করে যে এই পৃথিবীর একজন একক স্রষ্টা রয়েছেন। আর তিনিই হলেন মহান রব্বুল আ'লামীন। তিনি বলেন:
[ النمل -৮৮] ﴿ صُنْعَ اللَّهِ الَّذِي أَتْقَنَ كُلَّ شَيْءٍ ﴾
অর্থ: এটা আল্লাহর কারিগরী, যিনি সবকিছুকে করেছেন সুসংহত। সূরাহ্ আন্ নামল আয়াত ৮৮।
তারকা ও নক্ষত্র সমূহ নির্দিষ্ট নিয়মে চলা-ফেরা করছে, নিজ কক্ষ পথ থেকে বিচ্যুত হয় না। প্রত্যেকটি নক্ষত্র নির্দিষ্ট কক্ষপথে চলে এবং তা কখনও অতিক্রম করে না। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لاَا لشَّمْسُ يَنْبَغِي لَهَا أَنْ تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ وَكُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ﴾ [ يس : ৪০[
অর্থ: সূর্য নাগাল পেতে পারে না চন্দ্রের এবং রাত্রি অগ্রে চলে না দিনের, প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে সন্তরণ করে। সূরাহ্ ইয়াসীন আয়াত ৪০।
﴿إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ﴾
অর্থ: তোমরা যখন ফরিয়াদ করতে আরম্ভ করেছিলে স্বীয় পালনকর্তার নিকট। তখন তিনি তোমাদের ফরিয়াদের মঞ্জুরী দান করলেন। সূরাহ্ আল আন্ফাল আয়াত ৯।
খ- প্রত্যেকেই জানে কোন কিছু সংঘটিত হলে তার সম্পাদনকারী বা সংঘটক থাকা আবশ্যক। অসংখ্য সৃষ্টিজীব এবং প্রতিনিয়ত আমরা দুনিয়াতে যা দেখছি তারও একজন স্রষ্টা দরকার যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন। তিনিই হলেন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম)। কেননা স্রষ্টা বিহীন সৃষ্টি আসতে পারেনা। তেমনি এটাও অসম্ভব যে কেউ নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করবে, কেননা কোন বস্তু নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করতে পারে না। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿أَمْ خُلِقُوا مِنْ غَيْرِ شَيْءٍ أَمْ هُمُ الْخَالِقُونَ﴾ [ الطور : ৩৫[
অর্থ: তারা কি আপনা-আপনিই সৃজিত হয়ে গেছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা? সূরাহ্ আত্ ত্বুর আয়াত ৩৪।
আয়াতের অর্থ হল: তারা স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্ট হয়নি, আর তারা নিজেরাও নিজেদেরকে সৃষ্টি করেনি, তাহলে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে তাদের স্রষ্টা হলেন মহান আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম)।
গ- আসমান, যমীন,চন্দ্র, সূর্য, তারকা এবং গাছ-পালাসহ সুশৃঙ্খল এ দুনিয়া নিশ্চিতরূপে প্রমাণ করে যে এই পৃথিবীর একজন একক স্রষ্টা রয়েছেন। আর তিনিই হলেন মহান রব্বুল আ'লামীন। তিনি বলেন:
[ النمل -৮৮] ﴿ صُنْعَ اللَّهِ الَّذِي أَتْقَنَ كُلَّ شَيْءٍ ﴾
অর্থ: এটা আল্লাহর কারিগরী, যিনি সবকিছুকে করেছেন সুসংহত। সূরাহ্ আন্ নামল আয়াত ৮৮।
তারকা ও নক্ষত্র সমূহ নির্দিষ্ট নিয়মে চলা-ফেরা করছে, নিজ কক্ষ পথ থেকে বিচ্যুত হয় না। প্রত্যেকটি নক্ষত্র নির্দিষ্ট কক্ষপথে চলে এবং তা কখনও অতিক্রম করে না। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لاَا لشَّمْسُ يَنْبَغِي لَهَا أَنْ تُدْرِكَ الْقَمَرَ وَلَا اللَّيْلُ سَابِقُ النَّهَارِ وَكُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ﴾ [ يس : ৪০[
অর্থ: সূর্য নাগাল পেতে পারে না চন্দ্রের এবং রাত্রি অগ্রে চলে না দিনের, প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে সন্তরণ করে। সূরাহ্ ইয়াসীন আয়াত ৪০।
ক- আল্লাহর প্রভূত্বে বিশ্বাসের অর্থ: এ কথা স্বীকার করা যে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সব কিছুর পালনকর্তা, মালিক, সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা, তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন, উপকার ও ক্ষতি পৌছান, সব কিছুই তাঁর, তাঁর হাতে সকল কল্যাণ, তিনি সব কিছু করতে পারেন। এসকল ক্ষেত্রে তাঁর কোন শরীক বা অংশীদার নেই।
আল্লাহর প্রভুত্বে বিশ্বাস হল: দৃঢ় এ বিশ্বাস রাখা যে আল্লাহ্ তায়ালাই একমাত্র রব বা প্রতিপালক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং আল্লাহর কাজে তাঁকে একক হিসেবে বিশ্বাস করা। যেমন: এ আক্বীদাহ্ পোষণ করা যে এ পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা হলেন একমাত্র আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম)। আল্লাহ্ তায়া'লা বলেন:
﴿اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ وَكِيلٌ﴾ [ الزمر : ৬২[
অর্থ: আল্লাহ্ সবকিছুর স্রষ্টা এবং তিনি সবকিছুর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সূরাহ্ আয যুমার আয়াত ৬২। তিনিই সকল সৃষ্টিজীবের রিযিক্বদাতা। আল্লাহ্ বলেন:
﴿وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا﴾ [ هود : ৬[
অর্থ: আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই, যার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর উপর নেই (অর্থাৎ, পৃথিবীর সকল জীবের রিযিকের দায়িত্ব আল্লাহর উপর)। সূরাহ্ হুদ আয়াত ৬।
আল্লাহ্ সবকিছুর মালিক। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا فِيهِنَّ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾ [ المائدة : ১২০[
অর্থ: নভোমন্ডল, ভূমন্ডল এবং এতদুভয়ে অবস্থিত সবকিছুর আধিপত্য আল্লাহরই। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ আয়াত ১২০।
খ- আল্লাহ্ তায়ালা এককভাবে সকল সৃষ্টিজীবের পালনকর্তা। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿ الْحَمْدُ للّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ﴾ ( الفاتحة -২)
অর্থ: যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ্ তায়ালার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা। সূরাহ্ আল ফাতিহা আয়াত ২।
রব্বুল আলামীনের অর্থ: তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সকল সৃষ্টিজীবের সৃষ্টিকর্তা, মালিক, কল্যাণকারী । বিভিন্ন নিয়ামত ও অনুগ্রহের দ্বারা তিনি তাদেরকে লালন পালন করেন।
গ- আল্লাহ্ তায়ালা সকল সৃষ্টিজীবকে তাঁর প্রভুত্বের বিশ্বাস দিয়েই সৃষ্টি করেছেন, এমনকি রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যামানার আরবীয় মুশরিকদেরকেও। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿قُلْ مَنْ رَبُّ السَّمَاوَاتِ السَّبْعِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ (৮৬) سَيَقُولُونَ لِلَّهِ قُلْ أَفَلَا تَتَّقُونَ (৮৭) قُلْ مَنْ بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ يُجِيرُ وَلَا يُجَارُ عَلَيْهِ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ (৮৮) سَيَقُولُونَ لِلَّهِ قُلْ فَأَنَّى تُسْحَرُونَ﴾ [ المؤمنون : ৮৬ ৮৯[
অর্থ: বলুন: সপ্তাকাশ ও মহা-আরশের মালিক কে? অবশ্যই তারা বলবে: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম)। বলুন: তবুও কি তোমরা ভয় করবে না?
বলুন: তোমাদের জানা থাকলে বল, কার হাতে সব বস্তুর কর্র্তৃত্ব, যিনি রক্ষা করেন এবং যার কবল থেকে কেউ রক্ষা করতে পারে না ? অবশ্যই তারা বলবে: আল্লাহর। বলুন: তাহলে কোথা থেকে তোমাদেরকে জাদু করা হচ্ছে? সূরাহ্ আল মু'মিনূন আয়াত ৮৬-৮৯।
আল্লাহ্ তায়ালার প্রভুত্বে বিশ্বাস করলেই কেউ মুসলিম হয়ে যায় না। বরং অবশ্যই তাকে আল্লাহর উলুহিয়্যাতে (ইবাদাতের ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদে) বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। কেননা, আল্লাহর প্রভুত্বে বিশ্বাস স্থাপনের পরও রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কার ক্বুরাইশদের সাথে যুদ্ধ করেছেন।
ঘ- আসমান-যমীন, গ্রহ-উপগ্রহ, তারকা, গাছ-পালা এবং মানুষ ও জ্বিনসহ সারা বিশ্ব মহান আল্লাহর অনুগত ও অধীনে রয়েছে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَهُ أَسْلَمَ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَإِلَيْهِ يُرْجَعُونَ﴾ [ آل عمران ৮৩[
অর্থ: আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে স্বেচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক, তাঁরই অনুগত হবে এবং তাঁর দিকেই ফিরে যাবে। সূরাহ্ আল ইমরান আয়াত ৮৩। অতএব, কোন সৃষ্টি জীবই আল্লাহর শক্তি ও নির্ধারিত তাক্বদীর হতে বের হতে পারবে না।
কেননা, আল্লাহ্ তায়ালাই হলেন তাদের মালিক, তিনি নিজের হিকমত অনুযায়ী যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে পরিচালনা করেন। তিনি সকল জীবের সৃষ্টিকর্তা। আল্লাহ্ ব্যতীত সবকিছু তাঁর তৈরী, দরীদ্র এবং তাদের সৃষ্টিকর্তা মহান রব্বুল আলামীনের নিকটে মুখাপেক্ষী।
ঙ- যখন এটা নিশ্চিত হলো যে আল্লাহ্ তায়ালাই সবকিছুর মালিক তখন জানাগেল, আল্লাহ্ ছাড়া কোন সৃষ্টিকর্তা, রিযিক্বদাতা নেই। একমাত্র আল্লাহই সারা বিশ্বের পরিচালনাকারী। অতএব, আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত একটা পিপিলিকাও নড়ে না। তাই আমাদের জন্য ওয়াজিব হলো আমরা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক রাখব, বিপদাপদে তাঁর নিকটেই প্রার্থনা করব, তাঁর উপর ভরসা রাখবো। কেননা, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) হলেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা, রিযিক্বদাতা এবং মালিক।
আল্লাহর প্রভুত্বে বিশ্বাস হল: দৃঢ় এ বিশ্বাস রাখা যে আল্লাহ্ তায়ালাই একমাত্র রব বা প্রতিপালক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং আল্লাহর কাজে তাঁকে একক হিসেবে বিশ্বাস করা। যেমন: এ আক্বীদাহ্ পোষণ করা যে এ পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা হলেন একমাত্র আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম)। আল্লাহ্ তায়া'লা বলেন:
﴿اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ وَكِيلٌ﴾ [ الزمر : ৬২[
অর্থ: আল্লাহ্ সবকিছুর স্রষ্টা এবং তিনি সবকিছুর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সূরাহ্ আয যুমার আয়াত ৬২। তিনিই সকল সৃষ্টিজীবের রিযিক্বদাতা। আল্লাহ্ বলেন:
﴿وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا﴾ [ هود : ৬[
অর্থ: আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই, যার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর উপর নেই (অর্থাৎ, পৃথিবীর সকল জীবের রিযিকের দায়িত্ব আল্লাহর উপর)। সূরাহ্ হুদ আয়াত ৬।
আল্লাহ্ সবকিছুর মালিক। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا فِيهِنَّ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾ [ المائدة : ১২০[
অর্থ: নভোমন্ডল, ভূমন্ডল এবং এতদুভয়ে অবস্থিত সবকিছুর আধিপত্য আল্লাহরই। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ আয়াত ১২০।
খ- আল্লাহ্ তায়ালা এককভাবে সকল সৃষ্টিজীবের পালনকর্তা। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿ الْحَمْدُ للّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ﴾ ( الفاتحة -২)
অর্থ: যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ্ তায়ালার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা। সূরাহ্ আল ফাতিহা আয়াত ২।
রব্বুল আলামীনের অর্থ: তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সকল সৃষ্টিজীবের সৃষ্টিকর্তা, মালিক, কল্যাণকারী । বিভিন্ন নিয়ামত ও অনুগ্রহের দ্বারা তিনি তাদেরকে লালন পালন করেন।
গ- আল্লাহ্ তায়ালা সকল সৃষ্টিজীবকে তাঁর প্রভুত্বের বিশ্বাস দিয়েই সৃষ্টি করেছেন, এমনকি রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যামানার আরবীয় মুশরিকদেরকেও। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿قُلْ مَنْ رَبُّ السَّمَاوَاتِ السَّبْعِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ (৮৬) سَيَقُولُونَ لِلَّهِ قُلْ أَفَلَا تَتَّقُونَ (৮৭) قُلْ مَنْ بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ يُجِيرُ وَلَا يُجَارُ عَلَيْهِ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ (৮৮) سَيَقُولُونَ لِلَّهِ قُلْ فَأَنَّى تُسْحَرُونَ﴾ [ المؤمنون : ৮৬ ৮৯[
অর্থ: বলুন: সপ্তাকাশ ও মহা-আরশের মালিক কে? অবশ্যই তারা বলবে: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম)। বলুন: তবুও কি তোমরা ভয় করবে না?
বলুন: তোমাদের জানা থাকলে বল, কার হাতে সব বস্তুর কর্র্তৃত্ব, যিনি রক্ষা করেন এবং যার কবল থেকে কেউ রক্ষা করতে পারে না ? অবশ্যই তারা বলবে: আল্লাহর। বলুন: তাহলে কোথা থেকে তোমাদেরকে জাদু করা হচ্ছে? সূরাহ্ আল মু'মিনূন আয়াত ৮৬-৮৯।
আল্লাহ্ তায়ালার প্রভুত্বে বিশ্বাস করলেই কেউ মুসলিম হয়ে যায় না। বরং অবশ্যই তাকে আল্লাহর উলুহিয়্যাতে (ইবাদাতের ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদে) বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। কেননা, আল্লাহর প্রভুত্বে বিশ্বাস স্থাপনের পরও রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কার ক্বুরাইশদের সাথে যুদ্ধ করেছেন।
ঘ- আসমান-যমীন, গ্রহ-উপগ্রহ, তারকা, গাছ-পালা এবং মানুষ ও জ্বিনসহ সারা বিশ্ব মহান আল্লাহর অনুগত ও অধীনে রয়েছে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَهُ أَسْلَمَ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَإِلَيْهِ يُرْجَعُونَ﴾ [ آل عمران ৮৩[
অর্থ: আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে স্বেচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক, তাঁরই অনুগত হবে এবং তাঁর দিকেই ফিরে যাবে। সূরাহ্ আল ইমরান আয়াত ৮৩। অতএব, কোন সৃষ্টি জীবই আল্লাহর শক্তি ও নির্ধারিত তাক্বদীর হতে বের হতে পারবে না।
কেননা, আল্লাহ্ তায়ালাই হলেন তাদের মালিক, তিনি নিজের হিকমত অনুযায়ী যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে পরিচালনা করেন। তিনি সকল জীবের সৃষ্টিকর্তা। আল্লাহ্ ব্যতীত সবকিছু তাঁর তৈরী, দরীদ্র এবং তাদের সৃষ্টিকর্তা মহান রব্বুল আলামীনের নিকটে মুখাপেক্ষী।
ঙ- যখন এটা নিশ্চিত হলো যে আল্লাহ্ তায়ালাই সবকিছুর মালিক তখন জানাগেল, আল্লাহ্ ছাড়া কোন সৃষ্টিকর্তা, রিযিক্বদাতা নেই। একমাত্র আল্লাহই সারা বিশ্বের পরিচালনাকারী। অতএব, আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত একটা পিপিলিকাও নড়ে না। তাই আমাদের জন্য ওয়াজিব হলো আমরা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক রাখব, বিপদাপদে তাঁর নিকটেই প্রার্থনা করব, তাঁর উপর ভরসা রাখবো। কেননা, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) হলেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা, রিযিক্বদাতা এবং মালিক।
ক- ইলাহ্ (মা'বূদ) হিসেবে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের অর্থ: এ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে কেবল মাত্র আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সকল প্রকার ইবাদাতের হক্বদার এবং যোগ্য। যেমন: দুয়া', ভয়, ভরসা, সহযোগীতা প্রার্থনা করা, সালাত, যাকাত, সিয়াম (রোযা) ইত্যাদী। নিশ্চিতভাবে বান্দার জানা উচিৎ আল্লাহ্ তায়ালাই হলেন প্রকৃত মা'বূদ বা ইবাদাতের যোগ্য, তাঁর কোন শরীক নেই। অতএব, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত সত্য কোন মা'বূদ-উপাস্য নেই। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَإِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ﴾ [ البقرة : ১৬৩[
অর্থ: আর তোমাদের মা'বূদ তো এক-ই মা'বূদ, তিনি ছাড়া আর কোন সত্য মা'বূদ নেই, তিনি করুণাময় ও মহান দয়ালু। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াত ১৬৩।
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সংবাদ দিয়েছেন উপাস্য এবং মা'বূদ হলেন একজন। অতএব, আল্লাহ্ ব্যতীত কাউকে ইলাহ্ হিসেবে গ্রহণ করা এবং তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত কারও ইবাদত করা জায়েয নয়।
খ- আল্লাহর উলূহিয়্যাতে বিশ্বাস: তা হলো এ কথা স্বীকার করা যে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) একমাত্র সত্য মা'বূদ, তাঁর কোন শরীক নেই। ইলাহ্ শব্দের অর্থ মাহলুহ্ অর্থাৎ ভালবাসা ও সম্মান সহকারে যার ইবাদাত করা হয়। অতএব, উলুহিয়্যাহ্ হলো, সকল প্রকার ইবাদাতে আল্লাহর একত্ববাদ।
তাই আমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যকে ডাকিনা, তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত কাউকে ভয় করি না।
আমরা কেবল তাঁর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) উপরই ভরসা করি, তাঁকেই সিজদাহ্ করি, তাঁর নিকটেই নত হই। সঙ্গত কারনেই আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত কেউ ইবাদাতের যোগ্য নয়। এ কথারই প্রমাণমেলে আল্লাহ তায়ালার বাণী:
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ ﴾ الفاتحة -৫ ﴿
অর্থ: আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। সূরাহ্ ফাতিহা আয়াত ৫।
গ- উলূহিয়্যাহ্ বা ইবাদাতে আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসের গুরুত্ব: নিম্নোক্ত বিষয়গুলো থেকে আল্লাহর উলূহিয়্যাতের গুরুত্ব বুঝা যায়:
* মানুষ এবং জ্বিন সৃষ্টির একমাত্র উদ্দেশ্য হলো এক অদ্বিতীয়, লাশারীক আল্লাহর ইবাদাত করা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ﴾ [ الذاريات : ৫৬[
অর্থ: আমার ইবাদাত করার জন্যই আমি মানব ও জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করেছি। সূরাহ্ আয্-যারিয়াত আয়াত ৫৬।
* রাসূলগণ (আলাইহিমুস্ সালাম) এবং আসমানি কিতাবসমূহ প্রেরণের উদ্দেশ্য হলো এ কথার স্বীকৃতি দেওয়া যে আল্লাহ্ তায়ালাই একমাত্র সত্য মা'বূদ। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ﴾ [ النحل : ৩৬[
অর্থ: আমি প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং ত্বাগুত থেকে নিরাপদ থাক। সূরাহ্ আন্ নাহ্ল আয়াত ৩৬।
* প্রত্যেক ব্যক্তির উপর সর্ব প্রথম আল্লাহ তায়ালার উলূহিয়্যাতে বিশ্বাস স্থাপন করা ফরয। যেমন: আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মুয়ায বিন জাবাল কে ইয়েমেনে পাঠান তখন তাঁকে যে ওসিয়ত করেন তা হল:
﴿إِنَّكَ تَقْدَمُ عَلَى قَوْمٍ أَهْلِ كِتَابٍ فَلْيَكُنْ أَوَّلَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِ عِبَادَةُ اللَّهِ﴾
অর্থ: তুমি এমন জাতির নিকটে যাচ্ছ যারা আহ্লে কিতাব। অতএব, তাদেরকে সর্বপ্রথম আল্লাহর ইবাদাতের প্রতি দাওয়াত দিবে। বুখারী ও মুসলিম। অর্থাৎ: সকল প্রকার ইবাদাতে আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি আহ্বান করবে।
ঘ- ( لاإله إلاالله ) লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এর গুরুত্ব: জীবনের প্রথম ও শেষে এই মর্যাদাপূর্ণ বাক্য বা কালিমাটি পাঠ ও বিশ্বাস করা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব। যে ব্যক্তি এ কালিমার উপর ( বিশ্বাস সহকারে) মৃত্যু বরণ করবে তিনি জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন। নবী কারীম (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿مَنْ مَاتَ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ دَخَلَ الْجَنَّةَ﴾
অর্থ: আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই, একথা জানা ও বিশ্বাস করা অবস্থায় যে ব্যক্তি ইন্তেকাল করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। সহীহ্ মুসলিম ১/১২৫।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে ইহা স্পষ্ট যে, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ (আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই) এর জ্ঞানার্জন করা সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ন ওয়াজিব।
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ( لاإله الاالله ) এর অর্থ: এক আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই। এখানে আল্লাহ্ ছাড়া সকলের থেকে উলূহিয়্যাহ্ বা ইবাদাতের যোগ্যতাকে অস্বীকার করা হয়েছে। অপর দিকে সকল প্রকার ইবাদাতকে একমাত্র লাশারীক আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করা হয়েছে।
ইলাহ্ শব্দের অর্থ: মা'বূদ বা যার ইবাদত করা হয়। অতএব, যে ব্যক্তি আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত অন্যকারো ইবাদাত করল, সে তাকে ইলাহ্ বা মা'বূদ হিসেবে গ্রহণ করল। এক অদ্বিতীয় আল্লাহ্ ব্যতীত যাদের ইবাদাত করা হয় তারা বাতিল। আল্লাহ্ তায়া'লাই একমাত্র ইলাহ্, অন্তরসমূহ ভালবাসা, সম্মান, বিনয়, নম্রতা, ভয়-ভরসা এবং দুআ'র মাধ্যমে যার ইবাদাত করবে।
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এর অর্থ বাস্তবায়ন ব্যতীত কোন অন্তর খুশী, সুখী ও সৌভাগ্যশীল হতে পারে না। কেননা, কেবল মাত্র এক আল্লাহর ইবাদাতেই রয়েছে পূর্ণ সুখ, শান্তি, নিয়ামত এবং সুন্দর জীবন।
ঙ -اركان لاإله الا الله : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এর ভিত্তিসমূহ: এই মর্যাদাপূর্ণ কালিমাটির দু'টি রোকন বা ভিত্তি রয়েছে, তা হল: না বোধক এবং হাঁ বোধক।
প্রথম রুকন: لاإله ) ( লা-ইলাহা: আর ইহা হলো আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যের ইবাদাতকে অস্বীকার করা, শির্ককে বাতিল হিসেবে বিশ্বাস করা এবং অত্যাবশ্যকভাবে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত যাদের ইবাদাত করা হয় তা কুফরী বলে জানা।
দ্বিতীয় রুকন: ( إِلَّا اللَّه ) ইল্লাল্লাহ্: ইহা হলো সকল প্রকার ইবাদাত এক আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করা এবং তা কেবলমাত্র আল্লাহর নিমিত্তেই সম্পাদন করা। এর দলীল হলো আল্লাহর বাণী:
﴿فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى﴾ [ البقرة : ২৫৬[
অর্থ: যারা গোমরাহ্কারী ত্বাগুতদেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াত ২৫৬।
আল্লাহর বাণী: فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ হলো প্রথম রুকন লা-ইলাহার অর্থ। وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ দ্বিতীয় রোকনের তথা ইল্লাল্লাহর অর্থ।
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহের শর্তাবলী:
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহের সাতটি শর্ত রয়েছে যা একসাথে পাওয়া আবশ্যক। একসাথে সাতটি শর্ত পাওয়া না গেলে তা পাঠকারীর কোন উপকারে আসবে না।
শর্তগুলো নিম্নরুপ:
১ - العلم আল্ ইলম: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্) এর অর্থ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ﴾ ( سورة محمد ১৯)
অর্থ: জেনে রাখুন, আল্লাহ্ ব্যতীত (সত্য) কোন উপাস্য নেই। সূরাহ্ মুহাম্মাদ আয়াত ১৯।
২ -اليقين (দৃঢ় বিশ্বাস): এ কালিমা যে সকল বিষয়ের উপর প্রমাণ বহন করে তাতে দৃঢ় বিশ্বাসী হওয়া। যদি তাতে সন্দিহান ও দোদুল্যমান হয় তবে এ কালিমা তার উপকারে আসবে না। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا﴾
অর্থ: তারাই মু'মিন, যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করে না। সূরাহ্ আল্ হুজরাত ১৫।
৩ - القبول (গ্রহণ করা): এ কালিমা একমাত্র আল্লাহ্ তায়া'লার যে সকল ইবাদাত করা এবং তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত অন্যের ইবাদাত পরিত্যাগ করার প্রমাণ বহন করে তা গ্রহণ করা। কিন্তু কোন ব্যক্তি যদি এ কালিমা পাঠ করতঃ এক আল্লাহর ইবাদাত গ্রহণ না করে, তাহলে সে ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবে যাদের ব্যাপারে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেছেন:-
﴿إِنَّهُمْ كَانُوا إِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ يَسْتَكْبِرُونَ (৩৫) وَيَقُولُونَ أَئِنَّا لَتَارِكُو آلِهَتِنَا لِشَاعِرٍ مَجْنُونٍ (৩৬)﴾[ الصافات :]
অর্থ: তাদের যখন বলা হত, আল্লাহ্ ব্যতীত সত্য কোন উপাস্য নেই, তখন তারা ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করত এবং বলত, আমরা কি এক উন্মাদ কবির কথায় আমাদের উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব। সূরাহ্ আস্ সাফ্ফাত আয়াত ৩৫-৩৬।
৪ - الإنقياد ) (এ কালিমা যে সকল বিষয়ের উপর প্রমাণ বহন করে তা স্বীকার করা: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَنْ يُسْلِمْ وَجْهَهُ إِلَى اللَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى وَإِلَى اللَّهِ عَاقِبَةُ الْأُمُورِ﴾ [ لقمان : ২২ [
অর্থ: যে ব্যক্তি সৎকর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ্ অভিমূখী করে, সে এক মজবুত হাতল ধারণ করে, সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর দিকে। সূরাহ্ লুক্বমান আয়াত ২২। يُسْلِمْ وَجْهَهُ এর অর্থ: স্বীকার করা ও বিনয়ী হওয়া। الْعُرْوَةِ الْوُثْقَى হল: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ যার অর্থ: আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই।
৫ - الصدق )) সত্যবাদীতা: তা হলো এ কালিমা সত্যিকার অর্থে অন্তর থেকে পাঠ করা। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
﴿مَا مِنْ عَبْدٍ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ إِلَّا حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ﴾
অর্থ: (যে ব্যক্তিই সত্যিকার অর্থে অন্তর থেকে সাক্ষ্য দিবে আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল, আল্লাহ্ তাকে জাহান্নামের উপর হারাম করে দিবেন। বুখারী ও মুসলিম।
৬- ( الإخلاص ) খাঁটি একনিতা: তা হলো আমলকে সকল প্রকার শিরক থেকে মুক্ত করা। ফলে মুখলেস ব্যক্তি এ কালিমা পাঠের মাধ্যমে দুনিয়ার কোন লোভ লালসা করবে না। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿إِنَّ اللَّهَ قَدْ حَرَّمَ عَلَى النَّارِ مَنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ يَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ﴾
অর্থ: নিশ্চয় যে ব্যক্তি কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ পাঠ করে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেন। বুখারী ও মুসলিম।
৭ - المحبة ) ( ভালবাসা: এ কালিমা ও যে সকল বিষয়ের উপর তা প্রমাণ বহন করে এবং এর প্রতি আমলকারীগণের প্রতি ভালবাসা থাকা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِلَّهِ﴾ [ البقرة : ১৬৫[
অর্থ: আর কোন লোক এমনও রয়েছে যারা অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে এবং তাদের প্রতি তেমনি ভালবাসা পোষণ করে, যেমন আল্লাহর প্রতি ভালবাসা হয়ে থাকে। কিন্তূ যারা আল্লাহর প্রতি ঈমানদার তাদের ভালবাসা ওদের তুলনায় বহুগুণ বেশী।
অতএব, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ পাঠকারী মু'মিনগণ আল্লাহকে খালেসভাবে ভালবাসেন। আর মুশরিকরা আল্লাহর সাথে তিনি ব্যতীত অন্য মা'বূদদেরকেও ভালবাসে। আর ইহা (আল্লাহর সাথে অন্য মা'বূদকে ভালবাসা) লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এর পরিপন্থি ও তা ভঙ্গকারী বিষয়।
চ - معنى العبادة ) ( ইবাদাতের অর্থ: যে সকল প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য কথা ও কাজ আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ভালবাসেন এবং তাতে খুশী হন তার সমষ্টিকে ইবাদাত বলা হয়। যেমন: আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ভালবাসা, আল্লাহকে ভয় করা, তাঁর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) উপর ভরসা করা, তাঁর নিকটে প্রার্থনা করা, সালাত, যাকাত, পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা, আল্লাহকে স্মরণ করা, মুনাফিক্ব ও কাফিরদের সাথে জিহাদ করা ইত্যাদী।
ইবাদাত অনেক প্রকার। আল্লাহর আনুগত্য মূলক যাবতীয় কাজ ইবাদাতের অন্তর্ভূক্ত। যেমন: কুরআন তেলাওয়াত করা, গরীব দূঃখীদের প্রতি দয়া করা, সত্যবাদীতা, আমানত রক্ষা করা এবং সুন্দর কথা। মু'মিনের যাবতীয় কাজ ইবাদাতের অন্তর্ভূক্ত হতে পারে যদি মু'মিন ব্যক্তি তাঁর কাজের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়ত করে।
বরং আমাদের কেউ যদি আল্লাহর আনুগত্য করতে শক্তি অর্জনের উদ্দেশ্যে খায় বা পান করে অথবা ঘুমায় তবে এর বিনিময়ে তাকে সওয়াব দেওয়া হবে।
অতএব, সৎ নিয়ত ও সঠিক ইচ্ছার কারণে এ সকল অভ্যাস ইবাদাতে পরিণত হয় এবং এর জন্য সওয়াব দেওয়া হয়। তাই জানাগেল সালাত সিয়ামের মত কিছু নির্দিষ্ট নিদর্শনে ইবাদাত সীমাবদ্ধ নয়।
ছ- ইবাদাতের জন্যই আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সকল মাখলুক্বকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ (৫৬) مَا أُرِيدُ مِنْهُمْ مِنْ رِزْقٍ وَمَا أُرِيدُ أَنْ يُطْعِمُونِ (৫৭) إِنَّ اللَّهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ﴾ (৫৮ ([ الذاريات [
অর্থ: আমার ইবাদাত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি। আমি তাদের কাছে জীবিকা চাই না এবং এটাও চাই না যে, তারা আমাকে আহার্য যোগাবে। আল্লাহ্ তায়ালাই তো জীবিকাদাতা শক্তির আধার, পরাক্রান্ত। সূরাহ্ আয্ যারিয়াত আয়াত ৫৬-৫৮।
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সংবাদ দিয়েছেন জ্বিন এবং ইনসানকে কেবলমাত্র তাঁর ইবাদাত করার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। বান্দার ইবাদাতের কোন প্রয়োজন আল্লাহর নেই। বরং আল্লাহর নিকটে নিজের প্রয়োজন থাকার কারণে বান্দারই তাঁর ইবাদাত করা একান্ত আবশ্যক।
শিরক বিহীন এককভাবে আল্লাহর ইবাদাত করার প্রয়োজনীয়তা বান্দার পানাহারের প্রয়োজনীয়তা থেকেও বেশী। মানব হৃদয় একবার আল্লাহর ইবাদাত ও ইখলাসের (একনিষ্টভাবে তাঁর ইবাদাত করা) স্বাদ আসাদন করলে দুনিয়ার কোন বস্তু তার নিকটে এর চাইতে সু-স্বাদু, মিষ্টি এবং উত্তম মনে হবে না। আল্লাহর ইবাদাতকে বাস্তবায়ন করা ব্যতীত কেউ দুনিয়ার কষ্ট ও সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেনা।
জ- ইবাদাতের রোকন বা ভিত্তিসমূহ:
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যে ইবাদাতের আদেশ দিয়েছেন তা দু'টি গুরুত্বপূর্ণ রোকনের উপর প্রতিতিঃ
১- পরিপূর্ণ বিনয়-নম্রতা এবং ভয়।
২- পরিপূর্ণ ভালবাসা।
অতএব, বান্দার প্রতি আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যে ইবাদাত ফরয করেছেন তাতে তাঁর প্রতি পূর্ণ বিনয়-নম্রতা, ভয়, ভালবাসা, আগ্রহ এবং আশা থাকা আবশ্যক।
ভয় ও বিনয়-নম্রতা ব্যতীত শুধু ভালবাসা (যেমন, খাদ্য ও সম্পদের ভালবাসা) ইবাদাত হতে পারে না। তেমনি মহব্বত বা ভালবাসা বিহীন ভয় ইবাদাত নয়, যেমন: হিংস্র জন্তুকে ভয়করা ইবাদাত হিসেবে গণ্য নয়। তাই আমলে যখন ভয় ও ভালবাসা একত্রিত হবে তখনি তা ইবাদাত হিসেবে গণ্য হবে। আর ইবাদাত আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত কারো জন্য করা জায়েয নয়।
ঝ- তাওহীদ তথা একত্ববাদ ইবাদাত ক্ববুলের কারণ: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যে ইবাদাতের আদেশ দিয়েছেন তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদ ব্যতীত তা ইবাদাত বলে গৃহিত হবে না। শির্ক মিশ্রিত ইবাদাত সঠিক নয়। তাওহীদের বাস্তবায়ন এবং ইবাদাতে আল্লাহর একত্ববাদ ছাড়া কেউ আল্লাহর ইবাদাত করেছে বলা যাবে না। অতএব, যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদাত করতে গিয়ে তাঁর সাথে অন্যকে শরীক করে সে আল্লাহর ইবাদাত করে না।
আল্লাহর নিকটে ইবাদাত ক্ববুলের শর্ত হলো, আল্লাহর একত্ববাদ, ইবাদাতে আল্লাহর জন্য ইখলাস থাকা, শির্ক না করা। সাথে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী আমল করতে হবে। অতএব, প্রত্যেক আমল আল্লাহর নিকটে গ্রহণীয় হওয়ার জন্য দু'টি শর্ত রয়েছে:
১- কেবলমাত্র আল্লাহর ইবাদাত করা (এটাই হলো তাওহীদ)।
২- আল্লাহ যে সকল আদেশ করেছেন তার মাধ্যমে ইবাদাত করা। (আর সেটাই হলো রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্য)। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿بَلَى مَنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لِلَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ فَلَهُ أَجْرُهُ عِنْدَ رَبِّهِ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ﴾ [ البقرة -১১২ [
অর্থ: হাঁ, যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সমর্পন করেছে এবং সে সৎকর্মশীলও বটে তার জন্য তার পালনকর্তার কাছে পুরস্কার রয়েছে। তাদের ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াাত ১১২।
أَسْلَمَ وَجْهَه এর অর্থ: তাওহীদের বাস্তবায়ন করতঃ বান্দা তার ইবাদাতকে আল্লাহর জন্যই একনিষ্ট ভাবে করে। وَهُوَ مُحْسِنٌ এর অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্যকারী।
ঞ- শির্ক: শির্ক ঈমান ও তাওহীদ পরিপন্থি বিষয়। কেবলমাত্র এক আল্লাহর উপাস্যে ঈমান আনা এবং সকল ইবাদাতে তাঁকে একক হিসেবে গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব। অপর দিকে আল্লাহর নিকটে শির্ক হলো সবচেয়ে বড় অবাধ্যতা ও মারাত্মক পাপ যা আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ক্ষমা করেন না। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ﴾ [ النساء : ৪৮
অর্থ: নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। সূরাহ্ আন নিসা আয়াত ৪৮। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
[ لقمان : ১৩] إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ ﴾ ﴿
অর্থ: নিশ্চয় আল্লাহ্র সাথে শরীক করা মহা অন্যায়। সূরাহ্ লুক্বমান আয়াত ১৩। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সবচেয়ে বড় গুনাহের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ﴿ أ َنْ تَجْعَلَ لِلَّهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ﴾ অর্থ: সবচেয়ে বড় গুনাহ্ হলো, তুমি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে, অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। বুখারী ১৩/৩৯৪, মুসলিম ১/২৩৮।
শির্ক সকল ভাল আমল নষ্ট ও বাতিল করে দেয়। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَوْ أَشْرَكُوا لَحَبِطَ عَنْهُمْ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾
অর্থ: যদি তারা শির্ক করত, তবে তাদের কাজ কর্ম তাদের জন্যে ব্যর্থ হয়ে যেত। সূরাহ্ আল আন্আম আয়াত ৮৮। শির্ক তাতে নিমজ্জিত ব্যক্তিকে চিরস্থায়ী জাহান্নামী করে দেয়। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ﴾
অর্থ: নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ্ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন। এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম। অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই। সূরাহ্ আল্ মায়িদাহ্ আয়াত ৭২।
শির্কের প্রকার:
প্রকাশ থাকে যে, শির্ক দুই প্রকার: (১) বড় শির্ক ও (২) ছোট শির্ক। নিম্নে উভয় প্রকার শির্কের আলোচনা পেশ করা হল:
১- শির্কে আকবার বা বড় শির্ক: যে কোন আমল আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো জন্য করাই হলো শির্কে আকবার বা বড় শির্ক। অতএব, প্রত্যেক কথা ও কাজ যা আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) পছন্দ করেন তা তাঁর জন্য করাই হলো তাওহীদ (একত্ববাদ) ও ঈমান। আর তিনি ভিন্ন অন্য কারো জন্য করাই হলো শির্ক ও কুফরী।
এ প্রকার শির্কের উদাহরণ: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত অন্যের নিকটে কোন রিযিক্ব বা সুস্থতা কামনা করা, তিনি ভিন্ন অন্যের উপর ভরসা রাখা, আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের জন্য সিজদাহ্ করা ইত্যাদী। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ﴾ [ غافر : ৬০[
অর্থ: তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। গাফির-৬০। অন্য স্থানে আল্লাহ্ বলেন:
﴿وَعَلَى اللَّهِ فَتَوَكَّلُوا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ﴾ [ المائدة : ২৩[
অর্থ: আর আল্লাহর উপর ভরসা কর যদি তোমরা বিশ্বাসী হও। সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ আয়াত ২৩। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
[ النجم : ৬২] ﴿فَاسْجُدُوا لِلَّهِ وَاعْبُدُوا﴾ অর্থ: অতএব আল্লাহকে সিজদাহ্ কর এবং তাঁর ইবাদাত কর। সূরাহ্ আন্ নাজম- ৬২। দুয়া', ভরসা রাখা এবং সিজদাহ্ করা ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত, যার আদেশ আল্লাহ্ তায়ালা দিয়েছেন।
অতএব, যে ব্যক্তি এসকল ইবাদাত আল্লাহর জন্য করবেন তিনি মু'মিন ও একত্ববাদী (আস্তিক), আর যে তা গাইরুল্লাহর জন্য করবে সে মুশরিক ও কাফির (নাস্তিক)।
২- শির্কে আসগার বা ছোট শির্ক: শির্কে আসগার ঐ সকল কথা বা কাজ যা শির্কে আকবারের (বড় শির্কের ) কারণ এবং তাতে পতিত হওয়ার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। যেমন: কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করা। তা কবরের নিকটে সালাত আদায় করা অথবা কোন কবরের উপরে মসজিদ তৈরী করার মাধ্যমে হতে পারে। এ কাজ সম্পূর্ণ হারাম, তা যে করবে তার জন্য রয়েছে অভিশাপ ও আল্লাহর রহমাত থেকে বিতাড়িত হওয়ার ওয়াদা। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿لَعْنَةُ اللَّهِ عَلَى الْيَهُودِ وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ﴾
অর্থ: ইহুদী এবং নাসারাদের (খ্রীষ্টানদের) উপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হউক, কারণ তারা তাদের নাবীদের কবরগুলোকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করেছে। (বুখারী, মুসলিম )।
অতএব, কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করা হারাম, জায়েয নয়। ইহা মৃত ব্যক্তির নিকটে চাওয়া ও প্রার্থনার পথ খুলে দেয়। আর মৃত ব্যক্তির নিকটে চাওয়া শির্কে আকবার বা বড় শির্ক।
﴿وَإِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ﴾ [ البقرة : ১৬৩[
অর্থ: আর তোমাদের মা'বূদ তো এক-ই মা'বূদ, তিনি ছাড়া আর কোন সত্য মা'বূদ নেই, তিনি করুণাময় ও মহান দয়ালু। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াত ১৬৩।
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সংবাদ দিয়েছেন উপাস্য এবং মা'বূদ হলেন একজন। অতএব, আল্লাহ্ ব্যতীত কাউকে ইলাহ্ হিসেবে গ্রহণ করা এবং তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত কারও ইবাদত করা জায়েয নয়।
খ- আল্লাহর উলূহিয়্যাতে বিশ্বাস: তা হলো এ কথা স্বীকার করা যে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) একমাত্র সত্য মা'বূদ, তাঁর কোন শরীক নেই। ইলাহ্ শব্দের অর্থ মাহলুহ্ অর্থাৎ ভালবাসা ও সম্মান সহকারে যার ইবাদাত করা হয়। অতএব, উলুহিয়্যাহ্ হলো, সকল প্রকার ইবাদাতে আল্লাহর একত্ববাদ।
তাই আমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যকে ডাকিনা, তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত কাউকে ভয় করি না।
আমরা কেবল তাঁর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) উপরই ভরসা করি, তাঁকেই সিজদাহ্ করি, তাঁর নিকটেই নত হই। সঙ্গত কারনেই আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত কেউ ইবাদাতের যোগ্য নয়। এ কথারই প্রমাণমেলে আল্লাহ তায়ালার বাণী:
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ ﴾ الفاتحة -৫ ﴿
অর্থ: আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। সূরাহ্ ফাতিহা আয়াত ৫।
গ- উলূহিয়্যাহ্ বা ইবাদাতে আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসের গুরুত্ব: নিম্নোক্ত বিষয়গুলো থেকে আল্লাহর উলূহিয়্যাতের গুরুত্ব বুঝা যায়:
* মানুষ এবং জ্বিন সৃষ্টির একমাত্র উদ্দেশ্য হলো এক অদ্বিতীয়, লাশারীক আল্লাহর ইবাদাত করা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ﴾ [ الذاريات : ৫৬[
অর্থ: আমার ইবাদাত করার জন্যই আমি মানব ও জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করেছি। সূরাহ্ আয্-যারিয়াত আয়াত ৫৬।
* রাসূলগণ (আলাইহিমুস্ সালাম) এবং আসমানি কিতাবসমূহ প্রেরণের উদ্দেশ্য হলো এ কথার স্বীকৃতি দেওয়া যে আল্লাহ্ তায়ালাই একমাত্র সত্য মা'বূদ। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ﴾ [ النحل : ৩৬[
অর্থ: আমি প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং ত্বাগুত থেকে নিরাপদ থাক। সূরাহ্ আন্ নাহ্ল আয়াত ৩৬।
* প্রত্যেক ব্যক্তির উপর সর্ব প্রথম আল্লাহ তায়ালার উলূহিয়্যাতে বিশ্বাস স্থাপন করা ফরয। যেমন: আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মুয়ায বিন জাবাল কে ইয়েমেনে পাঠান তখন তাঁকে যে ওসিয়ত করেন তা হল:
﴿إِنَّكَ تَقْدَمُ عَلَى قَوْمٍ أَهْلِ كِتَابٍ فَلْيَكُنْ أَوَّلَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِ عِبَادَةُ اللَّهِ﴾
অর্থ: তুমি এমন জাতির নিকটে যাচ্ছ যারা আহ্লে কিতাব। অতএব, তাদেরকে সর্বপ্রথম আল্লাহর ইবাদাতের প্রতি দাওয়াত দিবে। বুখারী ও মুসলিম। অর্থাৎ: সকল প্রকার ইবাদাতে আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি আহ্বান করবে।
ঘ- ( لاإله إلاالله ) লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এর গুরুত্ব: জীবনের প্রথম ও শেষে এই মর্যাদাপূর্ণ বাক্য বা কালিমাটি পাঠ ও বিশ্বাস করা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব। যে ব্যক্তি এ কালিমার উপর ( বিশ্বাস সহকারে) মৃত্যু বরণ করবে তিনি জান্নাতীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন। নবী কারীম (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿مَنْ مَاتَ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ دَخَلَ الْجَنَّةَ﴾
অর্থ: আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই, একথা জানা ও বিশ্বাস করা অবস্থায় যে ব্যক্তি ইন্তেকাল করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। সহীহ্ মুসলিম ১/১২৫।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে ইহা স্পষ্ট যে, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ (আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই) এর জ্ঞানার্জন করা সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ন ওয়াজিব।
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ( لاإله الاالله ) এর অর্থ: এক আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই। এখানে আল্লাহ্ ছাড়া সকলের থেকে উলূহিয়্যাহ্ বা ইবাদাতের যোগ্যতাকে অস্বীকার করা হয়েছে। অপর দিকে সকল প্রকার ইবাদাতকে একমাত্র লাশারীক আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করা হয়েছে।
ইলাহ্ শব্দের অর্থ: মা'বূদ বা যার ইবাদত করা হয়। অতএব, যে ব্যক্তি আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত অন্যকারো ইবাদাত করল, সে তাকে ইলাহ্ বা মা'বূদ হিসেবে গ্রহণ করল। এক অদ্বিতীয় আল্লাহ্ ব্যতীত যাদের ইবাদাত করা হয় তারা বাতিল। আল্লাহ্ তায়া'লাই একমাত্র ইলাহ্, অন্তরসমূহ ভালবাসা, সম্মান, বিনয়, নম্রতা, ভয়-ভরসা এবং দুআ'র মাধ্যমে যার ইবাদাত করবে।
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এর অর্থ বাস্তবায়ন ব্যতীত কোন অন্তর খুশী, সুখী ও সৌভাগ্যশীল হতে পারে না। কেননা, কেবল মাত্র এক আল্লাহর ইবাদাতেই রয়েছে পূর্ণ সুখ, শান্তি, নিয়ামত এবং সুন্দর জীবন।
ঙ -اركان لاإله الا الله : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এর ভিত্তিসমূহ: এই মর্যাদাপূর্ণ কালিমাটির দু'টি রোকন বা ভিত্তি রয়েছে, তা হল: না বোধক এবং হাঁ বোধক।
প্রথম রুকন: لاإله ) ( লা-ইলাহা: আর ইহা হলো আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যের ইবাদাতকে অস্বীকার করা, শির্ককে বাতিল হিসেবে বিশ্বাস করা এবং অত্যাবশ্যকভাবে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত যাদের ইবাদাত করা হয় তা কুফরী বলে জানা।
দ্বিতীয় রুকন: ( إِلَّا اللَّه ) ইল্লাল্লাহ্: ইহা হলো সকল প্রকার ইবাদাত এক আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করা এবং তা কেবলমাত্র আল্লাহর নিমিত্তেই সম্পাদন করা। এর দলীল হলো আল্লাহর বাণী:
﴿فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى﴾ [ البقرة : ২৫৬[
অর্থ: যারা গোমরাহ্কারী ত্বাগুতদেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াত ২৫৬।
আল্লাহর বাণী: فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ হলো প্রথম রুকন লা-ইলাহার অর্থ। وَيُؤْمِنْ بِاللَّهِ দ্বিতীয় রোকনের তথা ইল্লাল্লাহর অর্থ।
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহের শর্তাবলী:
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহের সাতটি শর্ত রয়েছে যা একসাথে পাওয়া আবশ্যক। একসাথে সাতটি শর্ত পাওয়া না গেলে তা পাঠকারীর কোন উপকারে আসবে না।
শর্তগুলো নিম্নরুপ:
১ - العلم আল্ ইলম: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্) এর অর্থ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ﴾ ( سورة محمد ১৯)
অর্থ: জেনে রাখুন, আল্লাহ্ ব্যতীত (সত্য) কোন উপাস্য নেই। সূরাহ্ মুহাম্মাদ আয়াত ১৯।
২ -اليقين (দৃঢ় বিশ্বাস): এ কালিমা যে সকল বিষয়ের উপর প্রমাণ বহন করে তাতে দৃঢ় বিশ্বাসী হওয়া। যদি তাতে সন্দিহান ও দোদুল্যমান হয় তবে এ কালিমা তার উপকারে আসবে না। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا﴾
অর্থ: তারাই মু'মিন, যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করে না। সূরাহ্ আল্ হুজরাত ১৫।
৩ - القبول (গ্রহণ করা): এ কালিমা একমাত্র আল্লাহ্ তায়া'লার যে সকল ইবাদাত করা এবং তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত অন্যের ইবাদাত পরিত্যাগ করার প্রমাণ বহন করে তা গ্রহণ করা। কিন্তু কোন ব্যক্তি যদি এ কালিমা পাঠ করতঃ এক আল্লাহর ইবাদাত গ্রহণ না করে, তাহলে সে ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবে যাদের ব্যাপারে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেছেন:-
﴿إِنَّهُمْ كَانُوا إِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ يَسْتَكْبِرُونَ (৩৫) وَيَقُولُونَ أَئِنَّا لَتَارِكُو آلِهَتِنَا لِشَاعِرٍ مَجْنُونٍ (৩৬)﴾[ الصافات :]
অর্থ: তাদের যখন বলা হত, আল্লাহ্ ব্যতীত সত্য কোন উপাস্য নেই, তখন তারা ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করত এবং বলত, আমরা কি এক উন্মাদ কবির কথায় আমাদের উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব। সূরাহ্ আস্ সাফ্ফাত আয়াত ৩৫-৩৬।
৪ - الإنقياد ) (এ কালিমা যে সকল বিষয়ের উপর প্রমাণ বহন করে তা স্বীকার করা: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَنْ يُسْلِمْ وَجْهَهُ إِلَى اللَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَى وَإِلَى اللَّهِ عَاقِبَةُ الْأُمُورِ﴾ [ لقمان : ২২ [
অর্থ: যে ব্যক্তি সৎকর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ্ অভিমূখী করে, সে এক মজবুত হাতল ধারণ করে, সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর দিকে। সূরাহ্ লুক্বমান আয়াত ২২। يُسْلِمْ وَجْهَهُ এর অর্থ: স্বীকার করা ও বিনয়ী হওয়া। الْعُرْوَةِ الْوُثْقَى হল: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ যার অর্থ: আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই।
৫ - الصدق )) সত্যবাদীতা: তা হলো এ কালিমা সত্যিকার অর্থে অন্তর থেকে পাঠ করা। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
﴿مَا مِنْ عَبْدٍ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ إِلَّا حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ﴾
অর্থ: (যে ব্যক্তিই সত্যিকার অর্থে অন্তর থেকে সাক্ষ্য দিবে আল্লাহ্ ছাড়া সত্য কোন মা'বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল, আল্লাহ্ তাকে জাহান্নামের উপর হারাম করে দিবেন। বুখারী ও মুসলিম।
৬- ( الإخلاص ) খাঁটি একনিতা: তা হলো আমলকে সকল প্রকার শিরক থেকে মুক্ত করা। ফলে মুখলেস ব্যক্তি এ কালিমা পাঠের মাধ্যমে দুনিয়ার কোন লোভ লালসা করবে না। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿إِنَّ اللَّهَ قَدْ حَرَّمَ عَلَى النَّارِ مَنْ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ يَبْتَغِي بِذَلِكَ وَجْهَ اللَّهِ﴾
অর্থ: নিশ্চয় যে ব্যক্তি কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ পাঠ করে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেন। বুখারী ও মুসলিম।
৭ - المحبة ) ( ভালবাসা: এ কালিমা ও যে সকল বিষয়ের উপর তা প্রমাণ বহন করে এবং এর প্রতি আমলকারীগণের প্রতি ভালবাসা থাকা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَنْدَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِلَّهِ﴾ [ البقرة : ১৬৫[
অর্থ: আর কোন লোক এমনও রয়েছে যারা অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে এবং তাদের প্রতি তেমনি ভালবাসা পোষণ করে, যেমন আল্লাহর প্রতি ভালবাসা হয়ে থাকে। কিন্তূ যারা আল্লাহর প্রতি ঈমানদার তাদের ভালবাসা ওদের তুলনায় বহুগুণ বেশী।
অতএব, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ পাঠকারী মু'মিনগণ আল্লাহকে খালেসভাবে ভালবাসেন। আর মুশরিকরা আল্লাহর সাথে তিনি ব্যতীত অন্য মা'বূদদেরকেও ভালবাসে। আর ইহা (আল্লাহর সাথে অন্য মা'বূদকে ভালবাসা) লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এর পরিপন্থি ও তা ভঙ্গকারী বিষয়।
চ - معنى العبادة ) ( ইবাদাতের অর্থ: যে সকল প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য কথা ও কাজ আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ভালবাসেন এবং তাতে খুশী হন তার সমষ্টিকে ইবাদাত বলা হয়। যেমন: আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ভালবাসা, আল্লাহকে ভয় করা, তাঁর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) উপর ভরসা করা, তাঁর নিকটে প্রার্থনা করা, সালাত, যাকাত, পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা, আল্লাহকে স্মরণ করা, মুনাফিক্ব ও কাফিরদের সাথে জিহাদ করা ইত্যাদী।
ইবাদাত অনেক প্রকার। আল্লাহর আনুগত্য মূলক যাবতীয় কাজ ইবাদাতের অন্তর্ভূক্ত। যেমন: কুরআন তেলাওয়াত করা, গরীব দূঃখীদের প্রতি দয়া করা, সত্যবাদীতা, আমানত রক্ষা করা এবং সুন্দর কথা। মু'মিনের যাবতীয় কাজ ইবাদাতের অন্তর্ভূক্ত হতে পারে যদি মু'মিন ব্যক্তি তাঁর কাজের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়ত করে।
বরং আমাদের কেউ যদি আল্লাহর আনুগত্য করতে শক্তি অর্জনের উদ্দেশ্যে খায় বা পান করে অথবা ঘুমায় তবে এর বিনিময়ে তাকে সওয়াব দেওয়া হবে।
অতএব, সৎ নিয়ত ও সঠিক ইচ্ছার কারণে এ সকল অভ্যাস ইবাদাতে পরিণত হয় এবং এর জন্য সওয়াব দেওয়া হয়। তাই জানাগেল সালাত সিয়ামের মত কিছু নির্দিষ্ট নিদর্শনে ইবাদাত সীমাবদ্ধ নয়।
ছ- ইবাদাতের জন্যই আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সকল মাখলুক্বকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ (৫৬) مَا أُرِيدُ مِنْهُمْ مِنْ رِزْقٍ وَمَا أُرِيدُ أَنْ يُطْعِمُونِ (৫৭) إِنَّ اللَّهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ﴾ (৫৮ ([ الذاريات [
অর্থ: আমার ইবাদাত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি। আমি তাদের কাছে জীবিকা চাই না এবং এটাও চাই না যে, তারা আমাকে আহার্য যোগাবে। আল্লাহ্ তায়ালাই তো জীবিকাদাতা শক্তির আধার, পরাক্রান্ত। সূরাহ্ আয্ যারিয়াত আয়াত ৫৬-৫৮।
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সংবাদ দিয়েছেন জ্বিন এবং ইনসানকে কেবলমাত্র তাঁর ইবাদাত করার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। বান্দার ইবাদাতের কোন প্রয়োজন আল্লাহর নেই। বরং আল্লাহর নিকটে নিজের প্রয়োজন থাকার কারণে বান্দারই তাঁর ইবাদাত করা একান্ত আবশ্যক।
শিরক বিহীন এককভাবে আল্লাহর ইবাদাত করার প্রয়োজনীয়তা বান্দার পানাহারের প্রয়োজনীয়তা থেকেও বেশী। মানব হৃদয় একবার আল্লাহর ইবাদাত ও ইখলাসের (একনিষ্টভাবে তাঁর ইবাদাত করা) স্বাদ আসাদন করলে দুনিয়ার কোন বস্তু তার নিকটে এর চাইতে সু-স্বাদু, মিষ্টি এবং উত্তম মনে হবে না। আল্লাহর ইবাদাতকে বাস্তবায়ন করা ব্যতীত কেউ দুনিয়ার কষ্ট ও সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেনা।
জ- ইবাদাতের রোকন বা ভিত্তিসমূহ:
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যে ইবাদাতের আদেশ দিয়েছেন তা দু'টি গুরুত্বপূর্ণ রোকনের উপর প্রতিতিঃ
১- পরিপূর্ণ বিনয়-নম্রতা এবং ভয়।
২- পরিপূর্ণ ভালবাসা।
অতএব, বান্দার প্রতি আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যে ইবাদাত ফরয করেছেন তাতে তাঁর প্রতি পূর্ণ বিনয়-নম্রতা, ভয়, ভালবাসা, আগ্রহ এবং আশা থাকা আবশ্যক।
ভয় ও বিনয়-নম্রতা ব্যতীত শুধু ভালবাসা (যেমন, খাদ্য ও সম্পদের ভালবাসা) ইবাদাত হতে পারে না। তেমনি মহব্বত বা ভালবাসা বিহীন ভয় ইবাদাত নয়, যেমন: হিংস্র জন্তুকে ভয়করা ইবাদাত হিসেবে গণ্য নয়। তাই আমলে যখন ভয় ও ভালবাসা একত্রিত হবে তখনি তা ইবাদাত হিসেবে গণ্য হবে। আর ইবাদাত আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত কারো জন্য করা জায়েয নয়।
ঝ- তাওহীদ তথা একত্ববাদ ইবাদাত ক্ববুলের কারণ: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যে ইবাদাতের আদেশ দিয়েছেন তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদ ব্যতীত তা ইবাদাত বলে গৃহিত হবে না। শির্ক মিশ্রিত ইবাদাত সঠিক নয়। তাওহীদের বাস্তবায়ন এবং ইবাদাতে আল্লাহর একত্ববাদ ছাড়া কেউ আল্লাহর ইবাদাত করেছে বলা যাবে না। অতএব, যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদাত করতে গিয়ে তাঁর সাথে অন্যকে শরীক করে সে আল্লাহর ইবাদাত করে না।
আল্লাহর নিকটে ইবাদাত ক্ববুলের শর্ত হলো, আল্লাহর একত্ববাদ, ইবাদাতে আল্লাহর জন্য ইখলাস থাকা, শির্ক না করা। সাথে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর দেখানো পদ্ধতি অনুযায়ী আমল করতে হবে। অতএব, প্রত্যেক আমল আল্লাহর নিকটে গ্রহণীয় হওয়ার জন্য দু'টি শর্ত রয়েছে:
১- কেবলমাত্র আল্লাহর ইবাদাত করা (এটাই হলো তাওহীদ)।
২- আল্লাহ যে সকল আদেশ করেছেন তার মাধ্যমে ইবাদাত করা। (আর সেটাই হলো রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্য)। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿بَلَى مَنْ أَسْلَمَ وَجْهَهُ لِلَّهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ فَلَهُ أَجْرُهُ عِنْدَ رَبِّهِ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ﴾ [ البقرة -১১২ [
অর্থ: হাঁ, যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সমর্পন করেছে এবং সে সৎকর্মশীলও বটে তার জন্য তার পালনকর্তার কাছে পুরস্কার রয়েছে। তাদের ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াাত ১১২।
أَسْلَمَ وَجْهَه এর অর্থ: তাওহীদের বাস্তবায়ন করতঃ বান্দা তার ইবাদাতকে আল্লাহর জন্যই একনিষ্ট ভাবে করে। وَهُوَ مُحْسِنٌ এর অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্যকারী।
ঞ- শির্ক: শির্ক ঈমান ও তাওহীদ পরিপন্থি বিষয়। কেবলমাত্র এক আল্লাহর উপাস্যে ঈমান আনা এবং সকল ইবাদাতে তাঁকে একক হিসেবে গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব। অপর দিকে আল্লাহর নিকটে শির্ক হলো সবচেয়ে বড় অবাধ্যতা ও মারাত্মক পাপ যা আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ক্ষমা করেন না। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ﴾ [ النساء : ৪৮
অর্থ: নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। সূরাহ্ আন নিসা আয়াত ৪৮। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
[ لقمان : ১৩] إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ ﴾ ﴿
অর্থ: নিশ্চয় আল্লাহ্র সাথে শরীক করা মহা অন্যায়। সূরাহ্ লুক্বমান আয়াত ১৩। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সবচেয়ে বড় গুনাহের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: ﴿ أ َنْ تَجْعَلَ لِلَّهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ﴾ অর্থ: সবচেয়ে বড় গুনাহ্ হলো, তুমি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে, অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। বুখারী ১৩/৩৯৪, মুসলিম ১/২৩৮।
শির্ক সকল ভাল আমল নষ্ট ও বাতিল করে দেয়। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَوْ أَشْرَكُوا لَحَبِطَ عَنْهُمْ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾
অর্থ: যদি তারা শির্ক করত, তবে তাদের কাজ কর্ম তাদের জন্যে ব্যর্থ হয়ে যেত। সূরাহ্ আল আন্আম আয়াত ৮৮। শির্ক তাতে নিমজ্জিত ব্যক্তিকে চিরস্থায়ী জাহান্নামী করে দেয়। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ﴾
অর্থ: নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ্ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন। এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম। অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই। সূরাহ্ আল্ মায়িদাহ্ আয়াত ৭২।
শির্কের প্রকার:
প্রকাশ থাকে যে, শির্ক দুই প্রকার: (১) বড় শির্ক ও (২) ছোট শির্ক। নিম্নে উভয় প্রকার শির্কের আলোচনা পেশ করা হল:
১- শির্কে আকবার বা বড় শির্ক: যে কোন আমল আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো জন্য করাই হলো শির্কে আকবার বা বড় শির্ক। অতএব, প্রত্যেক কথা ও কাজ যা আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) পছন্দ করেন তা তাঁর জন্য করাই হলো তাওহীদ (একত্ববাদ) ও ঈমান। আর তিনি ভিন্ন অন্য কারো জন্য করাই হলো শির্ক ও কুফরী।
এ প্রকার শির্কের উদাহরণ: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যতীত অন্যের নিকটে কোন রিযিক্ব বা সুস্থতা কামনা করা, তিনি ভিন্ন অন্যের উপর ভরসা রাখা, আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের জন্য সিজদাহ্ করা ইত্যাদী। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ﴾ [ غافر : ৬০[
অর্থ: তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। গাফির-৬০। অন্য স্থানে আল্লাহ্ বলেন:
﴿وَعَلَى اللَّهِ فَتَوَكَّلُوا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ﴾ [ المائدة : ২৩[
অর্থ: আর আল্লাহর উপর ভরসা কর যদি তোমরা বিশ্বাসী হও। সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ আয়াত ২৩। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
[ النجم : ৬২] ﴿فَاسْجُدُوا لِلَّهِ وَاعْبُدُوا﴾ অর্থ: অতএব আল্লাহকে সিজদাহ্ কর এবং তাঁর ইবাদাত কর। সূরাহ্ আন্ নাজম- ৬২। দুয়া', ভরসা রাখা এবং সিজদাহ্ করা ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত, যার আদেশ আল্লাহ্ তায়ালা দিয়েছেন।
অতএব, যে ব্যক্তি এসকল ইবাদাত আল্লাহর জন্য করবেন তিনি মু'মিন ও একত্ববাদী (আস্তিক), আর যে তা গাইরুল্লাহর জন্য করবে সে মুশরিক ও কাফির (নাস্তিক)।
২- শির্কে আসগার বা ছোট শির্ক: শির্কে আসগার ঐ সকল কথা বা কাজ যা শির্কে আকবারের (বড় শির্কের ) কারণ এবং তাতে পতিত হওয়ার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। যেমন: কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করা। তা কবরের নিকটে সালাত আদায় করা অথবা কোন কবরের উপরে মসজিদ তৈরী করার মাধ্যমে হতে পারে। এ কাজ সম্পূর্ণ হারাম, তা যে করবে তার জন্য রয়েছে অভিশাপ ও আল্লাহর রহমাত থেকে বিতাড়িত হওয়ার ওয়াদা। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿لَعْنَةُ اللَّهِ عَلَى الْيَهُودِ وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ﴾
অর্থ: ইহুদী এবং নাসারাদের (খ্রীষ্টানদের) উপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হউক, কারণ তারা তাদের নাবীদের কবরগুলোকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করেছে। (বুখারী, মুসলিম )।
অতএব, কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করা হারাম, জায়েয নয়। ইহা মৃত ব্যক্তির নিকটে চাওয়া ও প্রার্থনার পথ খুলে দেয়। আর মৃত ব্যক্তির নিকটে চাওয়া শির্কে আকবার বা বড় শির্ক।
ক- এ প্রকার তাওহীদ হলো, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) স্বীয় কিতাবে অথবা রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাদীসে যে সকল নাম ও গুণাবলী নিজের জন্য সাব্যস্ত করেছেন তা তাঁর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সাথে সামঞ্জস্য ও সঙ্গতি রেখে সত্যায়ন করা। আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে তাঁর কোন সাদৃশ্য বা দৃষ্টান্ত নেই। যেমন, তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَاطِرُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ جَعَلَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجًا وَمِنَ الْأَنْعَامِ أَزْوَاجًا يَذْرَؤُكُمْ فِيهِ لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ﴾ [ الشورى : ১১ [
অর্থ: তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের স্রষ্টা। তিনি তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্যে যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং চতুসপদ জন্তুদের মধ্য থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন। এভাবে তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন। কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন। সূরাহ্ আশ শুরা আয়াত ১১।
অতএব, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তাঁর সকল নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে স্বীয় কোন সৃষ্টিজীবের সাদৃশ্য হওয়া থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র। আল্লাহ্ তায়ালার নাম অনেক, তার মধ্যে রয়েছে: আর্ রহ্মান (পরম দয়ালু), আল বাসীর (সর্বদ্রষ্টা), আল আযীয (মহা পরাক্রমশালী) ইত্যাদী। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: [ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ﴾ [ الفاتحة : ৩ ﴿ অর্থ: তিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু। সূরাহ্ আল্ ফাতিহা আয়াত ৩।
অন্য আয়াতে এসেছে:
[[ الشورى : ১১ ﴾ ﴿ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ অর্থ: তিনি সব শুনেন, সব দেখেন। সূরাহ্ আশ-শুরা আয়াত ১১। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ﴾ অর্থ: তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। সূরাহ্ লুক্বমান আয়াত ৯।
খ- আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর প্রতি ঈমান আনার উপকারীতা:
আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর প্রতি ঈমান আনার কিছু উপকারীতা নিচে উল্লেখ করা হল:
১- আল্লাহর পরিচয় জানা। যে ব্যক্তি আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর প্রতি ঈমান আনবে, আল্লাহ্ সম্পর্কে তার জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে। ফলে তাঁর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সম্পর্কে ঐ ব্যক্তির ঈমানের দৃঢ়তা ও স্রষ্টার ক্ষেত্রে তার তাওহীদ (একত্ববাদ) বৃদ্ধি পাবে।
২- আল্লাহর সুন্দর নাম সমূহ দ্বারা তাঁর প্রশংসা করা, আর ইহা উত্তম যিকিরের অন্যতম প্রকার। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا كَثِيرًا﴾ [ الأحزاب : ৪১[
অর্থ: হে মু'মিনগণ, তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর। সূরাহ্ আল্ আহ্যাব আয়াত ৪১।
৩- আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর মাধ্যমে তাঁকে ডাকা ও প্রার্থনা করা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেছেন:
﴿وَلِلَّهِ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى فَادْعُوهُ بِهَا﴾ [ الأعراف : ১৮০[
অর্থ: আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। সূরাহ্ আল আ'রাফ আয়াত ১৮০।
যেমন এমন বলা: হে, আল্লাহ্ নিশ্চয় আমি তোমার নিকটে প্রার্থনা করছি, তুমি রায্যাক্ব (রিযিক্বদাতা) সেহেতু তুমি আমাকে রিযিক্ব দাও ইত্যাদী।
৪- দুনিয়াতে সৌভাগ্য ও সুন্দর জীবন এবং পরকালে জান্নাতের নিয়ামত অর্জন করা।
﴿فَاطِرُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ جَعَلَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجًا وَمِنَ الْأَنْعَامِ أَزْوَاجًا يَذْرَؤُكُمْ فِيهِ لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ﴾ [ الشورى : ১১ [
অর্থ: তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের স্রষ্টা। তিনি তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্যে যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং চতুসপদ জন্তুদের মধ্য থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন। এভাবে তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন। কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন। সূরাহ্ আশ শুরা আয়াত ১১।
অতএব, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তাঁর সকল নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে স্বীয় কোন সৃষ্টিজীবের সাদৃশ্য হওয়া থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র। আল্লাহ্ তায়ালার নাম অনেক, তার মধ্যে রয়েছে: আর্ রহ্মান (পরম দয়ালু), আল বাসীর (সর্বদ্রষ্টা), আল আযীয (মহা পরাক্রমশালী) ইত্যাদী। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: [ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ﴾ [ الفاتحة : ৩ ﴿ অর্থ: তিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু। সূরাহ্ আল্ ফাতিহা আয়াত ৩।
অন্য আয়াতে এসেছে:
[[ الشورى : ১১ ﴾ ﴿ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ অর্থ: তিনি সব শুনেন, সব দেখেন। সূরাহ্ আশ-শুরা আয়াত ১১। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন: ﴿وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ﴾ অর্থ: তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। সূরাহ্ লুক্বমান আয়াত ৯।
খ- আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর প্রতি ঈমান আনার উপকারীতা:
আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর প্রতি ঈমান আনার কিছু উপকারীতা নিচে উল্লেখ করা হল:
১- আল্লাহর পরিচয় জানা। যে ব্যক্তি আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর প্রতি ঈমান আনবে, আল্লাহ্ সম্পর্কে তার জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে। ফলে তাঁর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সম্পর্কে ঐ ব্যক্তির ঈমানের দৃঢ়তা ও স্রষ্টার ক্ষেত্রে তার তাওহীদ (একত্ববাদ) বৃদ্ধি পাবে।
২- আল্লাহর সুন্দর নাম সমূহ দ্বারা তাঁর প্রশংসা করা, আর ইহা উত্তম যিকিরের অন্যতম প্রকার। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا كَثِيرًا﴾ [ الأحزاب : ৪১[
অর্থ: হে মু'মিনগণ, তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর। সূরাহ্ আল্ আহ্যাব আয়াত ৪১।
৩- আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর মাধ্যমে তাঁকে ডাকা ও প্রার্থনা করা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেছেন:
﴿وَلِلَّهِ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَى فَادْعُوهُ بِهَا﴾ [ الأعراف : ১৮০[
অর্থ: আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। সূরাহ্ আল আ'রাফ আয়াত ১৮০।
যেমন এমন বলা: হে, আল্লাহ্ নিশ্চয় আমি তোমার নিকটে প্রার্থনা করছি, তুমি রায্যাক্ব (রিযিক্বদাতা) সেহেতু তুমি আমাকে রিযিক্ব দাও ইত্যাদী।
৪- দুনিয়াতে সৌভাগ্য ও সুন্দর জীবন এবং পরকালে জান্নাতের নিয়ামত অর্জন করা।
দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়নের সুন্দর প্রভাব রয়েছে, কেননা দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণলাভ এবং অকল্যাণ প্রতিহত করা আল্লাহর প্রতি ঈমানেরই ফল। আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার কিছু প্রভাব নিচে উল্লেখ করা হল:
১- আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) মু'মিনদের থেকে সকল প্রকার অপছন্দনীয় জিনিস প্রতিহত করেন। তাদেরকে কঠিন পরিস্থিতি হতে মুক্ত করেন। এবং শত্রুদের চক্রান্ত হতে তাদেরকে হেফাযত করেন। আল্লাহ্ বলেন:
﴿إِنَّ اللَّهَ يُدَافِعُ عَنِ الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ خَوَّانٍ كَفُورٍ ﴾ [ الحج -৩৮ [
অর্থ: আল্লাহ্ মু'মিনদের থেকে শত্রুদেরকে হটিয়ে দেবেন। আল্লাহ্ কোন বিশ্বাসঘাতক অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না। সূরাহ্ আল-হাজ্জ আয়াত ৩৮।
২- ঈমান আনা সুন্দর জীবন, সৌভাগ্য এবং আনন্দের কারণ। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন :
﴿مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾ [ النحل : ৯৭[
অর্থ: যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে ঈমানদার, পুরুষ হোক কিংবা নারী আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরষ্কার দিব যা তারা করত। সূরাহ্ আন্ নাহ্ল আয়াত ৯৭।
৩- ঈমান কুসংস্কার থেকে আত্মাকে পবিত্র করে। যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি সঠিকভাবে ঈমান আনে সে তার সকল বিষয়কে আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত করে। আল্লাহই সমস্ত পৃথিবীর পালনকর্তা, তিনি ব্যতীত কোন সত্য মাবূদ নেই, তাই সে ব্যক্তি কোন সৃষ্টিজীবকে ভয় করে না। কোন মানুষের সাথে তার অন্তরকে সম্পর্কিত রাখে না, ফলে ঐ ব্যক্তি কুসংস্কার ও সংশয় থেকে মুক্ত থাকে।
৪- ঈমানের অন্যতম প্রভাব বা ফল হলো, সফলকাম ও কৃতকার্য হওয়া, প্রার্থিত বস্তু লাভকরা এবং অপছন্দনীয় বস্তু হতে মু্ক্ত থাকা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿أُولَئِكَ عَلَى هُدًى مِنْ رَبِّهِمْ وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ﴾ [ البقرة : ৫[
অর্থ: তারাই নিজেদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথ প্রাপ্ত, আর তারাই যথার্থ সফলকাম। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াত ৫।
৫- ঈমানের সবচেয়ে বড় উপকারীতা হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, জান্নাতে প্রবেশ, স্থায়ী নিয়ামত এবং পরিপূর্ণ রহমত লাভের মাধ্যমে কৃতকার্য হওয়া।
১- আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) মু'মিনদের থেকে সকল প্রকার অপছন্দনীয় জিনিস প্রতিহত করেন। তাদেরকে কঠিন পরিস্থিতি হতে মুক্ত করেন। এবং শত্রুদের চক্রান্ত হতে তাদেরকে হেফাযত করেন। আল্লাহ্ বলেন:
﴿إِنَّ اللَّهَ يُدَافِعُ عَنِ الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ خَوَّانٍ كَفُورٍ ﴾ [ الحج -৩৮ [
অর্থ: আল্লাহ্ মু'মিনদের থেকে শত্রুদেরকে হটিয়ে দেবেন। আল্লাহ্ কোন বিশ্বাসঘাতক অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না। সূরাহ্ আল-হাজ্জ আয়াত ৩৮।
২- ঈমান আনা সুন্দর জীবন, সৌভাগ্য এবং আনন্দের কারণ। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন :
﴿مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾ [ النحل : ৯৭[
অর্থ: যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে ঈমানদার, পুরুষ হোক কিংবা নারী আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরষ্কার দিব যা তারা করত। সূরাহ্ আন্ নাহ্ল আয়াত ৯৭।
৩- ঈমান কুসংস্কার থেকে আত্মাকে পবিত্র করে। যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি সঠিকভাবে ঈমান আনে সে তার সকল বিষয়কে আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত করে। আল্লাহই সমস্ত পৃথিবীর পালনকর্তা, তিনি ব্যতীত কোন সত্য মাবূদ নেই, তাই সে ব্যক্তি কোন সৃষ্টিজীবকে ভয় করে না। কোন মানুষের সাথে তার অন্তরকে সম্পর্কিত রাখে না, ফলে ঐ ব্যক্তি কুসংস্কার ও সংশয় থেকে মুক্ত থাকে।
৪- ঈমানের অন্যতম প্রভাব বা ফল হলো, সফলকাম ও কৃতকার্য হওয়া, প্রার্থিত বস্তু লাভকরা এবং অপছন্দনীয় বস্তু হতে মু্ক্ত থাকা। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿أُولَئِكَ عَلَى هُدًى مِنْ رَبِّهِمْ وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ﴾ [ البقرة : ৫[
অর্থ: তারাই নিজেদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথ প্রাপ্ত, আর তারাই যথার্থ সফলকাম। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াত ৫।
৫- ঈমানের সবচেয়ে বড় উপকারীতা হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, জান্নাতে প্রবেশ, স্থায়ী নিয়ামত এবং পরিপূর্ণ রহমত লাভের মাধ্যমে কৃতকার্য হওয়া।
ফেরেশ্তাগণের অস্তিত্ব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা। তাঁরাও আল্লাহর এক প্রকার সৃষ্টি, আল্লাহ্ তাঁদেরকে যা আদেশ করেন অবাধ্য না হয়ে তাঁরা তা সাথে সাথে পালন করেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿بَلْ عِبَادٌ مُكْرَمُونَ (২৬) لَا يَسْبِقُونَهُ بِالْقَوْلِ وَهُمْ بِأَمْرِهِ يَعْمَلُونَ﴾ (২৭) [ الأنبياء [
অর্থ: বরং ফেরেশ্তাগণ তো আল্লাহর সম্মানিত বান্দা। তারা আগে বেড়ে কথা বলতে পারেন না এবং তারা তাঁর আদেশেই কাজ করেন। সূরাহ্ আম্বিয়া আয়াত ২৬-২৭।
ফেরেশ্তাগণের প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে:
১- ফেরেশ্তাগণ আছেন এ বিশ্বাস রাখা।
২- আমরা যে সকল ফেরেশ্তার নাম জানি যেমন জিবরীল () তাঁদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। যাদের নাম জানিনা তাঁদের প্রতি মুজ্মাল তথা সংক্ষিপ্তাকারে ঈমান রাখা। অর্থাৎ নাম না জানা ফেরেশ্তাগণের অস্তিত্বে সংক্ষেপে বিশ্বাস রাখতে হবে।
৩- ফেরেশ্তাগণের যে গুণসমূহ আমরা জানি তা বিশ্বাস করা।
৪- আমাদের জানামতে আল্লাহর আদেশে তাঁরা যে সকল কাজ করেন তার প্রতি বিশ্বাস রাখা। যেমন: আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষনা করা, ক্লান্তি ও অবসাদ ছাড়া দিন রাত্রি তাঁর ইবাদাত করা। ফেরেশ্তাগণের প্রতি ঈমান আনায়ন ঈমানের অন্যতম রুকন বা স্তম্ভ।
আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ﴾
অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলিমরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ - ২৮৫। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈমান সম্পর্কে বলেছেন:
﴿أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ﴾
অর্থ: ঈমান হলো, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) , তাঁর ফেরেশ্তাগণ, কিতাবসমূহ, রাসূলগণ, ক্বিয়ামত দিবস এবং ভাগ্যের ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস রাখা। সহীহ্ মুসলিম।
﴿بَلْ عِبَادٌ مُكْرَمُونَ (২৬) لَا يَسْبِقُونَهُ بِالْقَوْلِ وَهُمْ بِأَمْرِهِ يَعْمَلُونَ﴾ (২৭) [ الأنبياء [
অর্থ: বরং ফেরেশ্তাগণ তো আল্লাহর সম্মানিত বান্দা। তারা আগে বেড়ে কথা বলতে পারেন না এবং তারা তাঁর আদেশেই কাজ করেন। সূরাহ্ আম্বিয়া আয়াত ২৬-২৭।
ফেরেশ্তাগণের প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে:
১- ফেরেশ্তাগণ আছেন এ বিশ্বাস রাখা।
২- আমরা যে সকল ফেরেশ্তার নাম জানি যেমন জিবরীল () তাঁদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। যাদের নাম জানিনা তাঁদের প্রতি মুজ্মাল তথা সংক্ষিপ্তাকারে ঈমান রাখা। অর্থাৎ নাম না জানা ফেরেশ্তাগণের অস্তিত্বে সংক্ষেপে বিশ্বাস রাখতে হবে।
৩- ফেরেশ্তাগণের যে গুণসমূহ আমরা জানি তা বিশ্বাস করা।
৪- আমাদের জানামতে আল্লাহর আদেশে তাঁরা যে সকল কাজ করেন তার প্রতি বিশ্বাস রাখা। যেমন: আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষনা করা, ক্লান্তি ও অবসাদ ছাড়া দিন রাত্রি তাঁর ইবাদাত করা। ফেরেশ্তাগণের প্রতি ঈমান আনায়ন ঈমানের অন্যতম রুকন বা স্তম্ভ।
আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ﴾
অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলিমরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ - ২৮৫। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈমান সম্পর্কে বলেছেন:
﴿أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ﴾
অর্থ: ঈমান হলো, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) , তাঁর ফেরেশ্তাগণ, কিতাবসমূহ, রাসূলগণ, ক্বিয়ামত দিবস এবং ভাগ্যের ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস রাখা। সহীহ্ মুসলিম।
- সৃষ্টিগত গুণের মধ্যে রয়েছে যা আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উল্লেখ করেছেন: তাঁরা নূর তথা আলোর তৈরী, রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿خُلِقَتْ الْمَلَائِكَةُ مِنْ نُورٍ﴾
অর্থ: ফেরেশ্তাগণকে নূর বা আলো থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। সহীহ্ মুসলিম, ১৪/২৭৩।
- আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সংবাদ দিয়েছেন যে, তিনি ফেরেশ্তাগণকে বিভিন্ন সংখ্যক পাখা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿الْحَمْدُ لِلَّهِ فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ جَاعِلِ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا أُولِي أَجْنِحَةٍ مَثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ يَزِيدُ فِي الْخَلْقِ مَا يَشَاءُ إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾ ( فاطر : ১)
অর্থ: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আসমান ও যমীনের স্রষ্টা এবং ফেরেশতাগণকে করেছেন বার্তাবাহক-তারা দুই দুই, তিন তিন ও চার চার পাখাবিশিষ্ট। তিনি সৃষ্টি মধ্যে যা ইচছা যোগ করেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সক্ষম। সূরাহ্ আল ফাত্বির আয়াত ১।
- রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিবরীল কে ছয়শত পাখাসহ দেখেছেন। বুখারী ও মুসলিম।
- আল্লাহর শক্তিতে ফেরেশ্তাগণ কখনো মানুষের রুপে পরিবর্তিত হয়ে থাকেন। যেমন, মারইয়াম (আলাইহাস্ সালাম) এর নিকটে আল্লাহ্ তায়ালা জিবরীল কে মানুষের আকৃতিতে প্রেরণ করেছিলেন। এমনিভাবে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ইবরাহীম ও লুত্ব আলাইহিমাস্ সালামের নিকটে ফেরেশ্তাগণকে মানুষের আকৃতিতে প্রেরণ করেছিলেন।
- ফেরেশ্তাগণ অদৃশ্য জগত (তাঁদেরকে দেখা যায় না)। তাঁরাও আল্লাহর সৃষ্টি এবং তাঁর ইবাদাত করেন। পালনকর্তা বা মা'বূদ হওয়ার কোন যোগ্যতা তাঁদের মাঝে নেই। বরং তাঁরাই আল্লাহর বান্দা এবং সর্বদা আল্লাহর পূর্ণ আনুগত্য করছেন। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لَا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ﴾ [ التحريم : ৬ [
অর্থ: তারা (ফেরেশ্তাগণ) আল্লাহ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যা আদেশ করেন, তা অমান্য করেন না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করেন। সূরাহ্ আত তাহরীম আয়াত ৬।
﴿خُلِقَتْ الْمَلَائِكَةُ مِنْ نُورٍ﴾
অর্থ: ফেরেশ্তাগণকে নূর বা আলো থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। সহীহ্ মুসলিম, ১৪/২৭৩।
- আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সংবাদ দিয়েছেন যে, তিনি ফেরেশ্তাগণকে বিভিন্ন সংখ্যক পাখা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿الْحَمْدُ لِلَّهِ فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ جَاعِلِ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا أُولِي أَجْنِحَةٍ مَثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ يَزِيدُ فِي الْخَلْقِ مَا يَشَاءُ إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾ ( فاطر : ১)
অর্থ: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আসমান ও যমীনের স্রষ্টা এবং ফেরেশতাগণকে করেছেন বার্তাবাহক-তারা দুই দুই, তিন তিন ও চার চার পাখাবিশিষ্ট। তিনি সৃষ্টি মধ্যে যা ইচছা যোগ করেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সক্ষম। সূরাহ্ আল ফাত্বির আয়াত ১।
- রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিবরীল কে ছয়শত পাখাসহ দেখেছেন। বুখারী ও মুসলিম।
- আল্লাহর শক্তিতে ফেরেশ্তাগণ কখনো মানুষের রুপে পরিবর্তিত হয়ে থাকেন। যেমন, মারইয়াম (আলাইহাস্ সালাম) এর নিকটে আল্লাহ্ তায়ালা জিবরীল কে মানুষের আকৃতিতে প্রেরণ করেছিলেন। এমনিভাবে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ইবরাহীম ও লুত্ব আলাইহিমাস্ সালামের নিকটে ফেরেশ্তাগণকে মানুষের আকৃতিতে প্রেরণ করেছিলেন।
- ফেরেশ্তাগণ অদৃশ্য জগত (তাঁদেরকে দেখা যায় না)। তাঁরাও আল্লাহর সৃষ্টি এবং তাঁর ইবাদাত করেন। পালনকর্তা বা মা'বূদ হওয়ার কোন যোগ্যতা তাঁদের মাঝে নেই। বরং তাঁরাই আল্লাহর বান্দা এবং সর্বদা আল্লাহর পূর্ণ আনুগত্য করছেন। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لَا يَعْصُونَ اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ﴾ [ التحريم : ৬ [
অর্থ: তারা (ফেরেশ্তাগণ) আল্লাহ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যা আদেশ করেন, তা অমান্য করেন না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করেন। সূরাহ্ আত তাহরীম আয়াত ৬।
এ পৃথিবীতে ফেরেশ্তাগণ বিভিন্ন কাজ আঞ্জাম দিচ্ছেন। তাঁরা বিভিন্ন প্রকার এবং প্রত্যেক প্রকারের আলাদা আলাদা কাজ রয়েছে। তাঁদের অন্যতম হলেন:
১- জিবরীল , তিনি আল্লাহর পক্ষ হতে তাঁর রাসূলগণের নিকটে ওহী নিয়ে আসার দায়িত্ব প্রাপ্ত।
২- বৃষ্টি ও তা পরিচালনার দায়িত্বশীল ফেরেশতা হলেন মীকাঈল ।
৩- সিঙ্গায় ফুৎকারের দায়িত্ব প্রাপ্ত ফেরেশ্তা হলেন ইসরাফীল ।
৪- আত্মাসমূহ কবজের দায়িত্বশীল ফেরেশতা হলেন মালাকুল মাওত ও তাঁর সহযোগী বৃন্দ।
৫- বান্দার ভালো মন্দ আমলের হেফাযতে নিয়োজিত ফেরেশ্তাগণ। তাঁরা হলেন কিরামান কাতিবীন (সম্মানীত লেখকদ্বয়)।
৬- মুক্বীম, সফর, নিদ্রা অনিদ্রা এবং সর্বাবস্থায় বান্দাদের হেফাযতে নিয়োজিত ফেরেশতাগণ। তাঁরা হলেন, পর্যবেক্ষনকারীগণ।
- আরো রয়েছেন: জান্নাত জাহান্নামের প্রহরীগণ, ভ্রাম্যমান ফেরেশ্তাগণ: তাঁরা কল্যাণ ও ইলমের মজলিসের অনুসন্ধানে নিয়োজিত, পাহাড়ের দায়িত্বশীল ফেরেশতাগণ, একদল ফেরেশ্তা রয়েছেন যারা সর্বদা সারিবদ্ধভাবে আল্লাহর ইবাদাতে ব্যস্ত রয়েছেন, এতে তাঁরা কোন সময় ক্লান্ত হননা। আল্লাহ্ তায়ালার সৈন্য সংখ্যা তিনি ব্যতীত কেউ জানে না।
১- জিবরীল , তিনি আল্লাহর পক্ষ হতে তাঁর রাসূলগণের নিকটে ওহী নিয়ে আসার দায়িত্ব প্রাপ্ত।
২- বৃষ্টি ও তা পরিচালনার দায়িত্বশীল ফেরেশতা হলেন মীকাঈল ।
৩- সিঙ্গায় ফুৎকারের দায়িত্ব প্রাপ্ত ফেরেশ্তা হলেন ইসরাফীল ।
৪- আত্মাসমূহ কবজের দায়িত্বশীল ফেরেশতা হলেন মালাকুল মাওত ও তাঁর সহযোগী বৃন্দ।
৫- বান্দার ভালো মন্দ আমলের হেফাযতে নিয়োজিত ফেরেশ্তাগণ। তাঁরা হলেন কিরামান কাতিবীন (সম্মানীত লেখকদ্বয়)।
৬- মুক্বীম, সফর, নিদ্রা অনিদ্রা এবং সর্বাবস্থায় বান্দাদের হেফাযতে নিয়োজিত ফেরেশতাগণ। তাঁরা হলেন, পর্যবেক্ষনকারীগণ।
- আরো রয়েছেন: জান্নাত জাহান্নামের প্রহরীগণ, ভ্রাম্যমান ফেরেশ্তাগণ: তাঁরা কল্যাণ ও ইলমের মজলিসের অনুসন্ধানে নিয়োজিত, পাহাড়ের দায়িত্বশীল ফেরেশতাগণ, একদল ফেরেশ্তা রয়েছেন যারা সর্বদা সারিবদ্ধভাবে আল্লাহর ইবাদাতে ব্যস্ত রয়েছেন, এতে তাঁরা কোন সময় ক্লান্ত হননা। আল্লাহ্ তায়ালার সৈন্য সংখ্যা তিনি ব্যতীত কেউ জানে না।
মু'মিনের জীবনে ফেরেশ্তাগণের প্রতি ঈমান আনার বড় প্রভাব রয়েছে। তার মধ্যে নিম্নে কিছু উল্লেখ করা হল:
১- আল্লাহর বড়ত্ব, শক্তি এবং পরিপূর্ণ ক্ষমতা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা। কেননা, সৃষ্টির বড়ত্ব স্রষ্টার বড়ত্বের উপর প্রমাণ বহন করে। ফলে মু'মিন আল্লাহকে আরো বেশী সম্মান ও মর্যাদা দান করে। কারণ আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আলো থেকে বহু সংখ্যক পাখা বিশিষ্ট্য ফেরেশ্তাগণকে সৃষ্টি করেছেন।
২- আল্লাহর আনুগত্যে অটল থাকা, যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে ফেরেশ্তাগণ তার সকল আমল লিপিবদ্ধ করেন সে অবশ্যই আল্লাহকে ভয় করবে, ফলে সে প্রকাশ্য বা গোপনে আল্লাহর অবাধ্য হবে না।
৩- আল্লাহর আনুগত্যে ধৈর্য্য ধারণ করা। মু'মিন ব্যক্তি যখন এ বিশ্বাস রাখবে যে বিশাল পৃথিবীতে হাজারো ফেরেশ্তা তার সাথে আল্লাহর আনুগত্য করছে তখন সে প্রফুল্লতা এবং আত্ম তৃপ্তি অনুভব করবে।
৪- আল্লাহ্ তায়ালা কর্তৃক আদম সন্তানকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার দরুন তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। কেননা, তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) এমন কিছু ফেরেশ্তা নিযুক্ত করেছেন যারা তাদের হেফাযতে সদা প্রস্তুত রয়েছেন।
৫- যখন কেউ মালাকুল মাওতের কথা স্মরণ করবে তখন সতর্ক হবে যে, এই দুনিয়া ধ্বংশশীল, চিরস্থায়ী নয়। ফলে সে ঈমান ও সৎকর্মের মাধ্যমে পরকালের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবে।
১- আল্লাহর বড়ত্ব, শক্তি এবং পরিপূর্ণ ক্ষমতা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা। কেননা, সৃষ্টির বড়ত্ব স্রষ্টার বড়ত্বের উপর প্রমাণ বহন করে। ফলে মু'মিন আল্লাহকে আরো বেশী সম্মান ও মর্যাদা দান করে। কারণ আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আলো থেকে বহু সংখ্যক পাখা বিশিষ্ট্য ফেরেশ্তাগণকে সৃষ্টি করেছেন।
২- আল্লাহর আনুগত্যে অটল থাকা, যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে ফেরেশ্তাগণ তার সকল আমল লিপিবদ্ধ করেন সে অবশ্যই আল্লাহকে ভয় করবে, ফলে সে প্রকাশ্য বা গোপনে আল্লাহর অবাধ্য হবে না।
৩- আল্লাহর আনুগত্যে ধৈর্য্য ধারণ করা। মু'মিন ব্যক্তি যখন এ বিশ্বাস রাখবে যে বিশাল পৃথিবীতে হাজারো ফেরেশ্তা তার সাথে আল্লাহর আনুগত্য করছে তখন সে প্রফুল্লতা এবং আত্ম তৃপ্তি অনুভব করবে।
৪- আল্লাহ্ তায়ালা কর্তৃক আদম সন্তানকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার দরুন তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। কেননা, তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) এমন কিছু ফেরেশ্তা নিযুক্ত করেছেন যারা তাদের হেফাযতে সদা প্রস্তুত রয়েছেন।
৫- যখন কেউ মালাকুল মাওতের কথা স্মরণ করবে তখন সতর্ক হবে যে, এই দুনিয়া ধ্বংশশীল, চিরস্থায়ী নয়। ফলে সে ঈমান ও সৎকর্মের মাধ্যমে পরকালের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবে।
এ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে আল্লাহর কিছু কিতাব রয়েছে, যা তিনি বান্দাদের হেদায়েতের জন্য তাঁর রাসূলগণের প্রতি অবতীর্ণ করেছেন। এ কিতাবগুলো আল্লাহর বাণী যা তিনি নিজে যেভাবে তাঁর জন্য শোভাপায় সেভাবে বলেছেন। এ সকল কিতাবে বিশ্ব মানবতার জন্য উভয় জাগতিক সত্য, আলো এবং পথ নির্দেশনা রয়েছে।
আসমানী কিতাবসমূহে বিশ্বাস তিনটি বিষয়কে শামিল করে:
১- এ বিশ্বাস রাখা যে আসমানী কিতাবসমূহ আল্লাহর পক্ষ থেকেই অবতীর্ণ।
২- আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তাঁর যে সকল কিতাবের নাম আমাদেরকে জানিয়েছেন তা বিশ্বাস করা। যেমন: আল্ ক্বুরআন, যা আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতি অবতীর্ণ করেছেন। তাওরাত যা মূসা এর উপর নাযিল করা হয়েছে, ইন্জীল যা ইসা এর উপর এবং যাবুর যা দাউদ এর প্রতি নাযিল করা হয়েছে।
৩- এ সকল কিতাবের সংবাদ গুলোকে সত্যায়ন করা। যেমন: ক্বুরআনের সংবাদসমূহ। আসমানী কিতাব সমূহের প্রতি বিশ্বাস ঈমানের অন্যতম রোকন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي نَزَّلَ عَلَى رَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي أَنْزَلَ مِنْ قَبْلُ وَمَنْ يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَقَدْ ضَلّ ضَلَالًا بَعِيدًا﴾ [ النساء : ১৩৬َ[
অর্থ: হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন কর এবং বিশ্বাস স্থাপন কর তাঁর রাসূলগণও তাঁর কিতাবসমূহের উপর, যা তিনি নাযিল করেছেন স্বীয় রাসূলগণের উপর এবং সেসমস্ত কিতাবের উপর যেগুলো নাযিল করা হয়েছিল ইতিপূর্বে। যে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাদের উপর, তাঁর কিতাব সমূহের উপর এবং রসূলগণের উপর ও কিয়ামত দিনের উপর বিশ্বাস করবে না, সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু দূরে গিয়ে পড়বে। সূরাহ্ আন নিসা, আয়াত ১৩৬।
অত্র আয়াতে আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর নিজের, তদীয় রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), প্রিয় নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর নাযিলকৃত কিতাব তথা ক্বুরআনুল কারীম এবং ক্বুরআনের পূর্বে নাযিলকৃত আসমানী কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান আনার আদেশ দিয়েছেন। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেও ঈমান সম্পর্কে বলেছেন:
﴿أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ﴾ ) صحيح مسلم -১/ ৮৭(
অর্থ: ঈমান হলো, তুমি আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম), তাঁর ফেরেশ্তাগণ, কিতাবসমূহ, রাসূলগণ (আলাইহিমুস্ সালাম), শেষ দিবস এবং ভাগ্যের ভালোমন্দের প্রতি বিশ্বাস রাখবে। সহীহ্ মুসলিম ১/৮৭।
আসমানী কিতাবসমূহে বিশ্বাস তিনটি বিষয়কে শামিল করে:
১- এ বিশ্বাস রাখা যে আসমানী কিতাবসমূহ আল্লাহর পক্ষ থেকেই অবতীর্ণ।
২- আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তাঁর যে সকল কিতাবের নাম আমাদেরকে জানিয়েছেন তা বিশ্বাস করা। যেমন: আল্ ক্বুরআন, যা আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতি অবতীর্ণ করেছেন। তাওরাত যা মূসা এর উপর নাযিল করা হয়েছে, ইন্জীল যা ইসা এর উপর এবং যাবুর যা দাউদ এর প্রতি নাযিল করা হয়েছে।
৩- এ সকল কিতাবের সংবাদ গুলোকে সত্যায়ন করা। যেমন: ক্বুরআনের সংবাদসমূহ। আসমানী কিতাব সমূহের প্রতি বিশ্বাস ঈমানের অন্যতম রোকন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي نَزَّلَ عَلَى رَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي أَنْزَلَ مِنْ قَبْلُ وَمَنْ يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَقَدْ ضَلّ ضَلَالًا بَعِيدًا﴾ [ النساء : ১৩৬َ[
অর্থ: হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন কর এবং বিশ্বাস স্থাপন কর তাঁর রাসূলগণও তাঁর কিতাবসমূহের উপর, যা তিনি নাযিল করেছেন স্বীয় রাসূলগণের উপর এবং সেসমস্ত কিতাবের উপর যেগুলো নাযিল করা হয়েছিল ইতিপূর্বে। যে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাদের উপর, তাঁর কিতাব সমূহের উপর এবং রসূলগণের উপর ও কিয়ামত দিনের উপর বিশ্বাস করবে না, সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু দূরে গিয়ে পড়বে। সূরাহ্ আন নিসা, আয়াত ১৩৬।
অত্র আয়াতে আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর নিজের, তদীয় রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), প্রিয় নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর নাযিলকৃত কিতাব তথা ক্বুরআনুল কারীম এবং ক্বুরআনের পূর্বে নাযিলকৃত আসমানী কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান আনার আদেশ দিয়েছেন। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেও ঈমান সম্পর্কে বলেছেন:
﴿أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ﴾ ) صحيح مسلم -১/ ৮৭(
অর্থ: ঈমান হলো, তুমি আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম), তাঁর ফেরেশ্তাগণ, কিতাবসমূহ, রাসূলগণ (আলাইহিমুস্ সালাম), শেষ দিবস এবং ভাগ্যের ভালোমন্দের প্রতি বিশ্বাস রাখবে। সহীহ্ মুসলিম ১/৮৭।
নিশ্চয় আল ক্বুরআনুল কারীম আল্লাহর বাণী যা আমাদের প্রিয় নাবী ও আদর্শ মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর নাযিল করা হয়েছে। সঙ্গত কারণেই মু'মিনগণ এ কিতাবকে সম্মান করতঃ তার বিধানাবলী গ্রহণ, তা তেলাওয়াত এবং ক্বুরআন নিয়ে চিন্তা গবেষণার সর্বাত্বক চেষ্টা করে। ক্বুরআনের মহত্ব বর্ণনার জন্য এটাই যথেষ্ট যে তা দুনিয়াতে আমাদের পথ নির্দেশক এবং পরকালে আমাদের নাজাতের কারণ। ক্বুরআনুল কারীমের অনেক বিশেষত্ব রয়েছে যা ক্বুরআনকে অন্যান্য আসমানী কিতাব থেকে মর্যাদাবান করে তোলে।
কুরআরেন কিছু বিশেষত্ব নিম্নে তুলে ধরা হল:
১- ক্বুরআনুল কারীম স্রষ্টার সকল বিধানের সারসংক্ষেপকে শামিল করে এবং পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহে এক আল্লাহর ইবাদাতের যে আদেশ দেওয়া হয়েছে তাকে সত্যায়ণ ও দৃঢ় করে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ الْكِتَابِ وَمُهَيْمِنًا عَلَيْهِ﴾ [ المائدة : ৪৮[
অর্থ: আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি সত্যগ্রন্থ, যা পূর্ববতী গ্রন্থ সমূহের সত্যায়নকারী এবং সেগুলোর বিষয় বস্তুর রক্ষণাবেক্ষণকারী। সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ আয়াত ৪৮।
مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ الْكِتَابِ এর অর্থ: ক্বুরআনুল কারীম পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহে বিশুদ্ধ যা রয়েছে তা সত্যায়ন করে।
وَمُهَيْمِنًا عَلَيْهِ এর অর্থ: ক্বুরআন পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব সমূহের রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং সাক্ষ্যদাতা।
সকল মানুষের জন্য ক্বুরআনকে মজবুতভাবে ধারণ করা ওয়াজিব। সকল সৃষ্টিজীবের উপর ক্বুরআনের আনুগত্য এবং তদানুযায়ী আমল করা আবশ্যক। কিন্তু পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবগুলো নির্দিষ্ট ক্বওম বা জাতির জন্য ছিল। আল্লাহ্ তায়ালা রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে উদ্দেশ্য করে বলেন:
﴿وَأُوحِيَ إِلَيَّ هَذَا الْقُرْآنُ لِأُنْذِرَكُمْ بِهِ وَمَنْ بَلَغَ﴾ [ الأنعام : ১৯[
অর্থ: (আপনি বলুন:) আমার প্রতি এ কুরআন অবর্তীর্ণ হয়েছে, যাতে আমি তোমাদেরকে এবং যাদের কাছে এ কুরআন পৌঁছে সবাইকে ভীতি প্রদর্শন করি। সূরাহ্ আল আন্আম আয়াত ১৯।
২- পবিত্র ক্বুরআনের হেফাযতের দায়িত্ব আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) নিজেই নিয়েছেন। তাই পরিবর্তনকারীর (কালো) হাত এর প্রতি প্রসারিত হয়নি এবং হবে না। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ﴾
অর্থ: আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক। সূরাহ্ আল্ হিজর - ৯।
কুরআরেন কিছু বিশেষত্ব নিম্নে তুলে ধরা হল:
১- ক্বুরআনুল কারীম স্রষ্টার সকল বিধানের সারসংক্ষেপকে শামিল করে এবং পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহে এক আল্লাহর ইবাদাতের যে আদেশ দেওয়া হয়েছে তাকে সত্যায়ণ ও দৃঢ় করে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَأَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ الْكِتَابِ وَمُهَيْمِنًا عَلَيْهِ﴾ [ المائدة : ৪৮[
অর্থ: আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি সত্যগ্রন্থ, যা পূর্ববতী গ্রন্থ সমূহের সত্যায়নকারী এবং সেগুলোর বিষয় বস্তুর রক্ষণাবেক্ষণকারী। সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ আয়াত ৪৮।
مُصَدِّقًا لِمَا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ الْكِتَابِ এর অর্থ: ক্বুরআনুল কারীম পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহে বিশুদ্ধ যা রয়েছে তা সত্যায়ন করে।
وَمُهَيْمِنًا عَلَيْهِ এর অর্থ: ক্বুরআন পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব সমূহের রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং সাক্ষ্যদাতা।
সকল মানুষের জন্য ক্বুরআনকে মজবুতভাবে ধারণ করা ওয়াজিব। সকল সৃষ্টিজীবের উপর ক্বুরআনের আনুগত্য এবং তদানুযায়ী আমল করা আবশ্যক। কিন্তু পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবগুলো নির্দিষ্ট ক্বওম বা জাতির জন্য ছিল। আল্লাহ্ তায়ালা রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে উদ্দেশ্য করে বলেন:
﴿وَأُوحِيَ إِلَيَّ هَذَا الْقُرْآنُ لِأُنْذِرَكُمْ بِهِ وَمَنْ بَلَغَ﴾ [ الأنعام : ১৯[
অর্থ: (আপনি বলুন:) আমার প্রতি এ কুরআন অবর্তীর্ণ হয়েছে, যাতে আমি তোমাদেরকে এবং যাদের কাছে এ কুরআন পৌঁছে সবাইকে ভীতি প্রদর্শন করি। সূরাহ্ আল আন্আম আয়াত ১৯।
২- পবিত্র ক্বুরআনের হেফাযতের দায়িত্ব আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) নিজেই নিয়েছেন। তাই পরিবর্তনকারীর (কালো) হাত এর প্রতি প্রসারিত হয়নি এবং হবে না। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ﴾
অর্থ: আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক। সূরাহ্ আল্ হিজর - ৯।
৩৩
গ- যখন আমরা ক্বুরআনের বিশেষত্ব ও একক বৈশিষ্ট জানতে পারলাম তখন জানা দরকার ক্বুরআনের প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য কি?কুরআনের প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য:
- পবিত্র ক্বুরআনুল কারীমকে ভালোবাসা ও সম্মান করা আমাদের উপর ওয়াজিব বা আবশ্যক। কেননা, ইহা মহান রব্বুল আলামীনের বাণী। সঙ্গত কারনেই তা সর্বাধিক সত্য এবং উত্তম কথা।
- ক্বুরআন মাজীদ পড়া, এর আয়াত ও সূরাহ্ সমূহ নিয়ে গবেষনা করা, ক্বুরআনের নসিহত, সংবাদ সমূহ এবং ঘটনাবলী নিয়ে চিন্তা করা আমাদের একান্ত কর্তব্য।
- ক্বুরআনের হুকুম-আহ্কাম, আদেশ সমূহ এবং শিষ্টাচার গুলোর অনুসরণ ও আনুগত্য করা আমাদের জন্য ওয়াজিব। উম্মুল মু'মিনীন আয়িশা রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চরিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে বলেছিলেন: ﴿كَانَ خُلُقُهُ الْقُرْآنَ﴾ অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চরিত্র ছিল আল্ ক্বুরআন। মুসনাদে আহমাদ ৫০/১১৬, সহীহ্ মুসলিম।
হাদীসের অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হলেন ক্বুরআনের বিধিবিধান ও শরীয়তের বাস্তবরূপ। তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্বুরআনের দিক নির্দেশনাকে পরিপূর্ণরূপে অনুসরণ করেছেন। আর এ জন্যই রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্য করা আমাদের জন্য আবশ্যক। কেননা, তিনিই (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হলেন আমাদের প্রত্যেকের জন্য অনুসরণীয় নমুনা। যেমন: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا﴾ [ الأحزاب : ২১[
অর্থ: যারা আল্লাহ্ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রাসূলুল্লাহর (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। সূরাহ্ আল্ আহ্যাব আয়াত ২১।
- পবিত্র ক্বুরআনুল কারীমকে ভালোবাসা ও সম্মান করা আমাদের উপর ওয়াজিব বা আবশ্যক। কেননা, ইহা মহান রব্বুল আলামীনের বাণী। সঙ্গত কারনেই তা সর্বাধিক সত্য এবং উত্তম কথা।
- ক্বুরআন মাজীদ পড়া, এর আয়াত ও সূরাহ্ সমূহ নিয়ে গবেষনা করা, ক্বুরআনের নসিহত, সংবাদ সমূহ এবং ঘটনাবলী নিয়ে চিন্তা করা আমাদের একান্ত কর্তব্য।
- ক্বুরআনের হুকুম-আহ্কাম, আদেশ সমূহ এবং শিষ্টাচার গুলোর অনুসরণ ও আনুগত্য করা আমাদের জন্য ওয়াজিব। উম্মুল মু'মিনীন আয়িশা রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চরিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে বলেছিলেন: ﴿كَانَ خُلُقُهُ الْقُرْآنَ﴾ অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চরিত্র ছিল আল্ ক্বুরআন। মুসনাদে আহমাদ ৫০/১১৬, সহীহ্ মুসলিম।
হাদীসের অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হলেন ক্বুরআনের বিধিবিধান ও শরীয়তের বাস্তবরূপ। তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্বুরআনের দিক নির্দেশনাকে পরিপূর্ণরূপে অনুসরণ করেছেন। আর এ জন্যই রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্য করা আমাদের জন্য আবশ্যক। কেননা, তিনিই (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হলেন আমাদের প্রত্যেকের জন্য অনুসরণীয় নমুনা। যেমন: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا﴾ [ الأحزاب : ২১[
অর্থ: যারা আল্লাহ্ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রাসূলুল্লাহর (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। সূরাহ্ আল্ আহ্যাব আয়াত ২১।
আল্লাহ্ তায়ালা আমাদেরকে ক্বুরআনে সংবাদ দিয়েছেন যে আসমানী কিতাব প্রাপ্ত ইয়াহুদ-নাসারারা তাদের কিতাবগুলোকে পরিবর্তন করেছে। ফলে পরবর্তীতে আল্লাহর নাযিলকৃত আকৃতিতে আর ফিরে আসেনি। ইয়াহুদীরা তাওরাতকে পরিবর্তন-পরিবর্ধন করতঃ তার বিধিবিধান নিয়ে খেল-তামাশায় লিপ্ত হয়েছে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿مِنَ الَّذِينَ هَادُوا يُحَرِّفُونَ الْكَلِمَ عَنْ مَوَاضِعِهِ﴾ [ النساء : ৪৬[
অর্থ: কোন কোন ইয়াহুদী তাওরাতের শব্দাবলীকে তার লক্ষ্য থেকে মোড় ঘুড়িয়ে নেয় (এবং মনগড়া অর্থ করে)। সূরাহ্ আন নিসা আয়াত ৪৬।
এমনিভাবে নাসারা বা খৃষ্টানেরা তাদের প্রতি অবতীর্ণ আসমানী কিতাব ইন্জীলের বিকৃতি করতঃ তার বিধিবিধানকে পরিবর্তন করেছে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) নাসারাদের সম্পর্কে বলেছেন:
﴿وَإِنَّ مِنْهُمْ لَفَرِيقًا يَلْوُونَ أَلْسِنَتَهُمْ بِالْكِتَابِ لِتَحْسَبُوهُ مِنَ الْكِتَابِ وَمَا هُوَ مِنَ الْكِتَابِ وَيَقُولُونَ هُوَ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ وَمَا هُوَ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ وَيَقُولُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ وَهُمْ يَعْلَمُونَ﴾ [ آل عمران : ৭৮[
অর্থ: আর তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা বিকৃত উচ্চারণে মুখ বাঁকিয়ে কিতাব পাঠ করে। যাতে তোমরা মনে কর যে, তারা কিতাব থেকেই পাঠ করছে। অথচ তারা যা আবৃত্তি করছে তা আদৌ কিতাব নয়। এবং তারা বলে যে, এসব কথা আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত। অথচ এসব আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত নয়। তারা বলে যে, এটি আল্লাহর কথা অথচ এসব আল্লাহর কথা নয়। আর তারা জেনে শুনে আল্লাহরই প্রতি মিথ্যারোপ করে। সূরাহ্ আলি ইমরান আয়াত ৭৮।
অতএব, বর্তমান বাজারে ইয়াহুদ-নাসারাদের নিকটে যে তাওরাত ও ইন্জীল পাওয়া যায় তা মূসা এবং ঈসা আলাইহিমাস্ সালামের উপর নাযিলকৃত তাওরাত ও ইন্জীল নয়।
বর্তমানে আহলে কিতাবদের (ইয়াহুদ-নাসারা) নিকটে বিদ্যমান তাওরাত ও ইন্জীল বিকৃত আক্বীদাহ্ (বিশ্বাস), বাতিল সংবাদাদি এবং মিথ্যা ঘটনাবলীতে পরিপূর্ণ। তাই ক্বুরআন ও সহীহ্ হাদীস এ কিতাবদ্বয়ের যা কিছু সত্যায়ন করেছে আমরা তা সত্যায়ন করি। আর ক্বুরআন ও সুন্নাহ্ যা মিথ্যা বলে প্রমাণ করেছে তাকে মিথ্যা হিসেবে জানি।
﴿مِنَ الَّذِينَ هَادُوا يُحَرِّفُونَ الْكَلِمَ عَنْ مَوَاضِعِهِ﴾ [ النساء : ৪৬[
অর্থ: কোন কোন ইয়াহুদী তাওরাতের শব্দাবলীকে তার লক্ষ্য থেকে মোড় ঘুড়িয়ে নেয় (এবং মনগড়া অর্থ করে)। সূরাহ্ আন নিসা আয়াত ৪৬।
এমনিভাবে নাসারা বা খৃষ্টানেরা তাদের প্রতি অবতীর্ণ আসমানী কিতাব ইন্জীলের বিকৃতি করতঃ তার বিধিবিধানকে পরিবর্তন করেছে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) নাসারাদের সম্পর্কে বলেছেন:
﴿وَإِنَّ مِنْهُمْ لَفَرِيقًا يَلْوُونَ أَلْسِنَتَهُمْ بِالْكِتَابِ لِتَحْسَبُوهُ مِنَ الْكِتَابِ وَمَا هُوَ مِنَ الْكِتَابِ وَيَقُولُونَ هُوَ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ وَمَا هُوَ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ وَيَقُولُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ وَهُمْ يَعْلَمُونَ﴾ [ آل عمران : ৭৮[
অর্থ: আর তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা বিকৃত উচ্চারণে মুখ বাঁকিয়ে কিতাব পাঠ করে। যাতে তোমরা মনে কর যে, তারা কিতাব থেকেই পাঠ করছে। অথচ তারা যা আবৃত্তি করছে তা আদৌ কিতাব নয়। এবং তারা বলে যে, এসব কথা আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত। অথচ এসব আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত নয়। তারা বলে যে, এটি আল্লাহর কথা অথচ এসব আল্লাহর কথা নয়। আর তারা জেনে শুনে আল্লাহরই প্রতি মিথ্যারোপ করে। সূরাহ্ আলি ইমরান আয়াত ৭৮।
অতএব, বর্তমান বাজারে ইয়াহুদ-নাসারাদের নিকটে যে তাওরাত ও ইন্জীল পাওয়া যায় তা মূসা এবং ঈসা আলাইহিমাস্ সালামের উপর নাযিলকৃত তাওরাত ও ইন্জীল নয়।
বর্তমানে আহলে কিতাবদের (ইয়াহুদ-নাসারা) নিকটে বিদ্যমান তাওরাত ও ইন্জীল বিকৃত আক্বীদাহ্ (বিশ্বাস), বাতিল সংবাদাদি এবং মিথ্যা ঘটনাবলীতে পরিপূর্ণ। তাই ক্বুরআন ও সহীহ্ হাদীস এ কিতাবদ্বয়ের যা কিছু সত্যায়ন করেছে আমরা তা সত্যায়ন করি। আর ক্বুরআন ও সুন্নাহ্ যা মিথ্যা বলে প্রমাণ করেছে তাকে মিথ্যা হিসেবে জানি।
আসমানী কিতাবসমূহের উপর ঈমান আনার বেশ কিছু প্রভাব রয়েছে। নিচে কিছু প্রভাব উল্লেখ করা হল:
১- বান্দার প্রতি আল্লাহর বিশেষ মনোযোগ, অনুগ্রহ ও পূর্ণ রহমাত সম্পর্কে জ্ঞানলাভ। কেননা, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) প্রত্যেক ক্বওম বা জাতির জন্য একটি করে কিতাব নাযিল করেছেন। যার মাধ্যমে তিনি তাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন এবং এই কিতাবের দ্বারাই তাদের উভয় জাগতিক কল্যাণ অর্জিত হবে।
২- শরীয়ত প্রবর্তনে আল্লাহর হিকমত সম্পর্কে জ্ঞানার্জন। কেননা, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) প্রত্যেক জাতির জন্য তাদের অবস্থা ও ব্যক্তি চরিত্রের উপযোগী শরীয়ত প্রবর্তন করেছেন। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنْكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا﴾ [ المائدة : ৪৮]
অর্থ: আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি আইন ও পথ দিয়েছি। সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ আয়াত ৪৮।
৩- আসমানী কিতাব নাযিলের ক্ষেত্রে আল্লাহ্ তায়ালার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। কেননা, এ সকল কিতাব দুনিয়া ও আখিরাতে আলো এবং পথ নির্দেশক। সঙ্গত কারণেই এ বড় নিয়ামতের জন্য আল্লাহ্ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করতে হবে।
১- বান্দার প্রতি আল্লাহর বিশেষ মনোযোগ, অনুগ্রহ ও পূর্ণ রহমাত সম্পর্কে জ্ঞানলাভ। কেননা, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) প্রত্যেক ক্বওম বা জাতির জন্য একটি করে কিতাব নাযিল করেছেন। যার মাধ্যমে তিনি তাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন এবং এই কিতাবের দ্বারাই তাদের উভয় জাগতিক কল্যাণ অর্জিত হবে।
২- শরীয়ত প্রবর্তনে আল্লাহর হিকমত সম্পর্কে জ্ঞানার্জন। কেননা, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) প্রত্যেক জাতির জন্য তাদের অবস্থা ও ব্যক্তি চরিত্রের উপযোগী শরীয়ত প্রবর্তন করেছেন। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنْكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا﴾ [ المائدة : ৪৮]
অর্থ: আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি আইন ও পথ দিয়েছি। সূরাহ্ আল মায়িদাহ্ আয়াত ৪৮।
৩- আসমানী কিতাব নাযিলের ক্ষেত্রে আল্লাহ্ তায়ালার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। কেননা, এ সকল কিতাব দুনিয়া ও আখিরাতে আলো এবং পথ নির্দেশক। সঙ্গত কারণেই এ বড় নিয়ামতের জন্য আল্লাহ্ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করতে হবে।
রিসালাত মানুষের জন্য একান্ত আবশ্যক। সকল বিষয়ের চেয়ে রিসালাতের প্রয়োজনীয়তা বেশী। রিসালাত হলো পৃথিবীর আত্মা, আলো এবং জীবন। অতএব, আত্মা, জীবন এবং আলো না থাকলে পৃথিবীতে কি কল্যাণ থাকতে পারে? রিসালাতের সূর্য ব্যতীত দুনিয়া অন্ধকার। রাসূলগণের মাধ্যম ব্যতীত উভয় জাগতিক কল্যাণ ও মুক্তিলাভ এবং ভালো-মন্দের পার্থ্যক্য করার কোন উপায় বা পথ নেই। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) রিসালাতকে রুহ্ বা আত্মা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আর আত্মা না থাকলে জীবনও থাকবে না। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَكَذَلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ رُوحًا مِنْ أَمْرِنَا مَا كُنْتَ تَدْرِي مَا الْكِتَابُ وَلَا الْإِيمَانُ وَلَكِنْ جَعَلْنَاهُ نُورًا نَهْدِي بِهِ مَنْ نَشَاءُ مِنْ عِبَادِنَا﴾ سورة الشورى - ৫২
অর্থ: এমনিভাবে আমি আপনার কাছে এক ফেরেশতা প্রেরণ করেছি আমার আদেশক্রমে। আপনি জানতেন না, কিতাব কি এবং ঈমান কি? কিন্তু আমি একে করেছি নূর, যাদ্বারা আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করি। সূরাহ্ আশ্ শুরা আয়াত ৫২। রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা ঈমানের অন্যতম রোকন বা স্তম্ভ।
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ﴾ [ البقرة : ২৮৫]
অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলিমগণও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহ্র প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর রাসূলগণের মাঝে কোন তারতম্য করিনা। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াত ২৮৫।
কোন পার্থক্য ব্যতীত সকল নবী ও রাসূলগণের উপর ঈমান আনা আবশ্যক তা অত্র আয়াত দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। তাই আমরা ইয়াহুদী নাসারাদের মত কতক রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন এবং কতক রাসূলকে অস্বীকার করি না। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈমান সম্পর্কে বলেছেন:
﴿أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ﴾ ( صحيح مسلم ১/৮৭)
অর্থ: ঈমান হলো, তুমি আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম), তাঁর ফেরেশ্তাগণ, কিতাবসমূহ, রাসূলগণ, ক্বিয়ামত দিবস এবং তাক্বদীরের ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। সহীহ্ মুসলিম ১/৮৭।
বর্তমানে আধুনিক ও উন্নত নামধারী রাষ্ট্রগুলো যে অশান্তি, দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা ও বিশৃঙ্খলার সম্মুখীন হচ্ছে তা মূলতঃ রিসালাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার কারণেই।
﴿وَكَذَلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ رُوحًا مِنْ أَمْرِنَا مَا كُنْتَ تَدْرِي مَا الْكِتَابُ وَلَا الْإِيمَانُ وَلَكِنْ جَعَلْنَاهُ نُورًا نَهْدِي بِهِ مَنْ نَشَاءُ مِنْ عِبَادِنَا﴾ سورة الشورى - ৫২
অর্থ: এমনিভাবে আমি আপনার কাছে এক ফেরেশতা প্রেরণ করেছি আমার আদেশক্রমে। আপনি জানতেন না, কিতাব কি এবং ঈমান কি? কিন্তু আমি একে করেছি নূর, যাদ্বারা আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করি। সূরাহ্ আশ্ শুরা আয়াত ৫২। রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা ঈমানের অন্যতম রোকন বা স্তম্ভ।
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ﴾ [ البقرة : ২৮৫]
অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলিমগণও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহ্র প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর রাসূলগণের মাঝে কোন তারতম্য করিনা। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াত ২৮৫।
কোন পার্থক্য ব্যতীত সকল নবী ও রাসূলগণের উপর ঈমান আনা আবশ্যক তা অত্র আয়াত দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। তাই আমরা ইয়াহুদী নাসারাদের মত কতক রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন এবং কতক রাসূলকে অস্বীকার করি না। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈমান সম্পর্কে বলেছেন:
﴿أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ﴾ ( صحيح مسلم ১/৮৭)
অর্থ: ঈমান হলো, তুমি আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম), তাঁর ফেরেশ্তাগণ, কিতাবসমূহ, রাসূলগণ, ক্বিয়ামত দিবস এবং তাক্বদীরের ভালো-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। সহীহ্ মুসলিম ১/৮৭।
বর্তমানে আধুনিক ও উন্নত নামধারী রাষ্ট্রগুলো যে অশান্তি, দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা ও বিশৃঙ্খলার সম্মুখীন হচ্ছে তা মূলতঃ রিসালাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার কারণেই।
এ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে আল্লাহ্ তা'য়ালা প্রত্যেক উম্মতে তাদের মধ্য থেকেই একজন করে রাসূল প্রেরণ করেছেন। যিনি তাদেরকে এক-অদ্বিতীয় লাশারীক আল্লাহর ইবাদাতের প্রতি আহ্বান করেন। রাসূলগণ (আলাইহিমুস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম) সকলেই সত্যবাদী ও সত্যায়ীত। আল্লাহ্ভীরু, বিশ্বস্ত, সঠিক পথ প্রদর্শণকারী এবং হেদায়াত প্রাপ্ত। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যে দায়িত্ব দিয়ে তাঁদেরকে প্রেরণ করেছিলেন তা তাঁরা পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। কোন কিছু গোপন, পরিবর্তন এবং নিজেদের পক্ষ থেকে তাতে কম-বেশী করেননি। যেমন আল্লাহ্ বলেন:
﴿فَهَلْ عَلَى الرُّسُلِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ﴾
অর্থ: রাসূলের দায়িত্ব তো শুধুমাত্র সুসপষ্ট বাণী পৌঁছিয়ে দেয়া। সূরাহ্ আন্ নাহল আয়াত ৩৫।
সকল নবীগণ স্পষ্ট সত্যের উপর ছিলেন এবং সকলের দাওয়াত ছিল আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসের প্রতি। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ﴾ [ النحل : ৩৬[
অর্থ: আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা এক আল্লাহর ইবাদাত কর এবং তাগুত থেকে নিরাপদ থাক। সূরাহ্ আন্ নাহ্ল আয়াত ৩৬।
তবে হালাল-হারামের শাখা প্রশাখায় নবীগণের (আলাইহিমুস্ সলাতু ওয়াস্ সালাম) শরীয়তে কিছুটা ভিন্নতা ছিল। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنْكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا﴾ ( المائدة -৪৮)
অর্থ: আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি আইন ও পথ দিয়েছি। সূরাহ্ আল্ মায়িদাহ্ আয়াত ৪৮।
রাসূলগণের প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে শামিল করে:
প্রথম: এ বিশ্বাস রাখা যে তাঁদের সকলের রিসালাত মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত এবং সত্য। অতএব, কেউ কোন একজন রাসূলের (আলাইহিমুস্ সালাম) রিসালাতকে অস্বীকার করলে সে যেন সকল নবীর রিসালাতকে অস্বীকার করলো।
দ্বিতীয়: আল্লাহ্ যে সকল নবীর নাম উল্লেখ করেছেন তাঁদের প্রতি ঈমান আনা। যেমন: মুহাম্মাদ, ইব্রাহীম, মূসা, ঈসা এবং নূহ্ আলাইহিমুস্ সালাম। আর যে সকল নাবীর নাম আমরা জানিনা তাদের প্রতি সংক্ষিপ্ত বা মৌলিক ভাবে ঈমান আনতে হবে।
তৃতীয়: রাসূলগণের বিশুদ্ধ সংবাদগুলোকে সত্যায়ণ করা।
চতুর্থ: আমাদের নিকটে যে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রেরণ করা হয়েছে তাঁর শরীয়ত মোতাবেক আমল করা। তিনি হলেন, সর্বোত্তম এবং শেষ নবী ও রাসুল মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
﴿فَهَلْ عَلَى الرُّسُلِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ﴾
অর্থ: রাসূলের দায়িত্ব তো শুধুমাত্র সুসপষ্ট বাণী পৌঁছিয়ে দেয়া। সূরাহ্ আন্ নাহল আয়াত ৩৫।
সকল নবীগণ স্পষ্ট সত্যের উপর ছিলেন এবং সকলের দাওয়াত ছিল আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসের প্রতি। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللَّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوتَ﴾ [ النحل : ৩৬[
অর্থ: আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা এক আল্লাহর ইবাদাত কর এবং তাগুত থেকে নিরাপদ থাক। সূরাহ্ আন্ নাহ্ল আয়াত ৩৬।
তবে হালাল-হারামের শাখা প্রশাখায় নবীগণের (আলাইহিমুস্ সলাতু ওয়াস্ সালাম) শরীয়তে কিছুটা ভিন্নতা ছিল। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنْكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا﴾ ( المائدة -৪৮)
অর্থ: আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি আইন ও পথ দিয়েছি। সূরাহ্ আল্ মায়িদাহ্ আয়াত ৪৮।
রাসূলগণের প্রতি ঈমান চারটি বিষয়কে শামিল করে:
প্রথম: এ বিশ্বাস রাখা যে তাঁদের সকলের রিসালাত মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত এবং সত্য। অতএব, কেউ কোন একজন রাসূলের (আলাইহিমুস্ সালাম) রিসালাতকে অস্বীকার করলে সে যেন সকল নবীর রিসালাতকে অস্বীকার করলো।
দ্বিতীয়: আল্লাহ্ যে সকল নবীর নাম উল্লেখ করেছেন তাঁদের প্রতি ঈমান আনা। যেমন: মুহাম্মাদ, ইব্রাহীম, মূসা, ঈসা এবং নূহ্ আলাইহিমুস্ সালাম। আর যে সকল নাবীর নাম আমরা জানিনা তাদের প্রতি সংক্ষিপ্ত বা মৌলিক ভাবে ঈমান আনতে হবে।
তৃতীয়: রাসূলগণের বিশুদ্ধ সংবাদগুলোকে সত্যায়ণ করা।
চতুর্থ: আমাদের নিকটে যে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে প্রেরণ করা হয়েছে তাঁর শরীয়ত মোতাবেক আমল করা। তিনি হলেন, সর্বোত্তম এবং শেষ নবী ও রাসুল মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
নবীর শাব্দিক অর্থ: নবী শব্দটি আরবী, যার অর্থ সংবাদ দাতাচ আরবী নাবাউন শব্দ হতে এর উতপত্তি। নাবাউন মানে সংবাদ, অতএব নবী হলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে বার্তা বাহক। অথবা নবী শব্দটি নাবওয়াতুন হতে এসেছে, আর নাবওয়াহ্ বলা হয় যমীনের উঁচু অংশকে, অতএব নবী হলেন সৃষ্টির মধ্যে সর্ব শ্রে ও মর্যাদান ব্যক্তি।
নবীর পারিভাষিক সংজ্ঞা:
এমন এক স্বাধীন পুরুষ মানুষ যাঁকে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তাঁর ওয়াহী পৌঁছানোর জন্য চয়ণ করেছেন।
রাসূল শব্দের আভিধানিক অর্থ: যিনি তাঁকে পাঠিয়েছেন তিনি তার অনুগত।
রাসূলের পারিভাষিক অর্থ: এমন স্বাধীন পুরুষ মানুষ, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যাকে শরীয়তের মাধ্যমে নবী করে বিরোধী সমপ্রদায়ের নিকটে তা প্রচারের আদেশ দিয়েছেন।
নবী ও রাসূলের মধ্যে পার্থক্য:
রাসূল নবী থেকে খাস। অতএব প্রত্যেক রাসূল নবী, কিন্তু প্রত্যেক নবী রাসূল নন। রাসূলকে নতুন শরীয়ত দিয়ে আল্লাহ্ দ্রোহী অথবা যারা তাঁর দ্বীন জানেনা তাদের নিকটে তা পৌঁছানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নবী যাঁকে পূর্বের শরীয়ত মোতাবেক দাওয়াত দেওয়ার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
নবীর পারিভাষিক সংজ্ঞা:
এমন এক স্বাধীন পুরুষ মানুষ যাঁকে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তাঁর ওয়াহী পৌঁছানোর জন্য চয়ণ করেছেন।
রাসূল শব্দের আভিধানিক অর্থ: যিনি তাঁকে পাঠিয়েছেন তিনি তার অনুগত।
রাসূলের পারিভাষিক অর্থ: এমন স্বাধীন পুরুষ মানুষ, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যাকে শরীয়তের মাধ্যমে নবী করে বিরোধী সমপ্রদায়ের নিকটে তা প্রচারের আদেশ দিয়েছেন।
নবী ও রাসূলের মধ্যে পার্থক্য:
রাসূল নবী থেকে খাস। অতএব প্রত্যেক রাসূল নবী, কিন্তু প্রত্যেক নবী রাসূল নন। রাসূলকে নতুন শরীয়ত দিয়ে আল্লাহ্ দ্রোহী অথবা যারা তাঁর দ্বীন জানেনা তাদের নিকটে তা পৌঁছানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নবী যাঁকে পূর্বের শরীয়ত মোতাবেক দাওয়াত দেওয়ার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
রাসূলগণের গুণাবলী: তাঁরা মানুষ, তাই মানুষের মত তাঁদেরও পানাহারের প্রয়োজন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَا أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ إِلَّا رِجَالًا نُوحِي إِلَيْهِمْ﴾ [ الأنبياء : ৭[
অর্থ: আপনার পূর্বে আমি মানুষই প্রেরণ করেছি, যাদের কাছে আমি ওহী পাঠাতাম। সূরাহ্ আল আম্বিয়া আয়াত ৭।
রাসূলগণ অন্যান্য মানুষের মত অসুস্থ হন এবং তাঁদেরও মৃত্যু আসে। তাই রব এবং ইবাদাতের দাবিদার হওয়ার ক্ষেত্রে রাসূলগণের (আলাইহিমুস্ সালাম) কোন অধিকার নেই।
তবে তাঁরা মানুষের বাহ্যিক সৃষ্টি এবং চরিত্রগত দিক দিয়ে পরিপূর্ণতার পর্যায়ে পৌঁছেছেন। বংশগত দিক থেকে তাঁরা উত্তম মানুষ এবং সম্পূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী। তাঁরা স্পষ্টভাষী যা তাঁদেরকে নবূয়ত ও রিসালাতের দায়িত্ব পালনে যোগ্য করে তোলে।
মানুষকে রাসূল হিসেবে প্রেরণের হিকমত হলো যাতে মানুষেরা নিজেদের মধ্যে একজনকে নমুনা হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। ফলে তারা সহজেই রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অনুসরণ করতে সক্ষম হয়। (ফেরেশতাকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করা হলে মানুষ তাঁকে দেখেই ভয় পেত, কেননা তাঁদের আকৃতি ভিন্ন, তখন বিরুদ্ধবাদীরা বলত মানুষকে কেন রাসূল হিসেবে প্রেরণ করা হলো না? তাছাড়া ফেরেশতাকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করলে আরো বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতো)।
রাসূলগণের অন্যতম গুণ হলো আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) (অন্য সকল মানুষ বাদ দিয়ে কেবল মাত্র ) তাঁদের নিকটে ওহী পাঠিয়েছেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ﴾ [ الكهف : ১১০[
অর্থ: বলুন, আমিও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ্। সূরাহ্ আল কাহাফ আয়াত ১১০।
এখান থেকে বুঝা যায় আল্লাহ্ সকল মানুষের মাঝ থেকে তাঁদেরকে চয়ণ করেছেন। অন্য স্থানে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
[ ﴿اللَّهُ أَعْلَمُ حَيْثُ يَجْعَلُ رِسَالَتَهُ﴾ [ الأنعام : ১২৪
অর্থ: আল্লাহ্ এ বিষয়ে সুপরিজ্ঞাত যে, কোথায় স্বীয় পয়গাম প্রেরণ করতে হবে। সূরাহ্ আল আনআ'ম আয়াত ১২৪।
রাসূলগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে যা প্রচার করেন সে ব্যাপারে তাঁরা নিষ্পাপ। তাই তাঁরা আল্লাহর পক্ষ থেকে তাবলীগে এবং তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যা দিয়ে তাঁদেরকে প্রেরণ করেছেন তা বাস্তবায়নে ভুল করেন না।
রাসূলদের অন্যতম গুণ হলো সত্যবাদীতা, তাই রাসূলগণ তাঁদের কথা ও কাজে সত্যবাদী। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿هَذَا مَا وَعَدَ الرَّحْمَنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُون﴾ [ يس : ৫২[
অর্থ: রহমান আল্লাহ্ তো এরই ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং রসূলগণ সত্য বলেছিলেন। সূরাহ্ ইয়াসীন আয়াত ৫২। রাসূলগণের আরেকটি গুণ হলো ধৈর্য্য ধারন করা। তাঁরা সুসংবাদদাতা এবং ভয় প্রদর্শনকারী। মানুষদেরকে আল্লাহর দ্বীনের পথে আহ্বান করেন। একাজ আঞ্জাম দিতে গিয়ে তাঁদের উপর অনেক কষ্ট, নির্যাতন নেমে এসেছে। এতদ সত্বেও তাঁরা ধৈর্য্য ধারন করতঃ আল্লাহর কালিমাকে উঁচু করার জন্য কাজ করেছেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَاصْبِرْ كَمَا صَبَرَ أُولُو الْعَزْمِ مِنَ الرُّسُلِ﴾ [ الأحقاف : ৩৫[
অর্থ: অতএব, আপনি সবর করুন, যেমন উচ্চ সাহসী রাসূলগণ সবর করেছেন। সূরাহ্ আল আহ্ক্বাফ আয়াত ৩৫।
রাসূলগণের আলামত বা নিদর্শনসমূহ:
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তাঁদেরকে অকাট্য প্রমাণ এবং স্পষ্ট মু'জিযা (মানুষের সাধ্যাতিত বিষয়) দিয়ে শক্তিশালী করেছেন। যা তাঁদের সত্যতা এবং তাঁদের নবূয়ত ও রিসালাতের বিশুদ্ধতার উপর প্রমাণ বহন করে। সঙ্গত কারনেই আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) স্বীয় রাসূলগণের সত্যতা এবং দৃঢ়তা প্রমাণে তাঁদের হাতে মানুষের সাধ্যাতীত বিষয়সমূহ সংঘটিত করেছেন।
রাসূলগণের আলামত ও মু'জিযার পরিচয়: তা হলো মানুষের সাধ্যাতীত অলৌকিক বিষয়াবলী যা আল্লাহ্ তা'য়ালা স্বীয় নবী ও রাসূলগণের হাতে প্রকাশ করেছেন। (অনুরূপ মু'জিযা মানুষ ঘটাতে অপারগ)।
এ সকল মু'জিযা ও নিদর্শনের উদাহরণ: ঈসা কর্তৃক তাঁর ক্বওম বা জাতি তাদের বাড়িতে কি খাবে ও কি গুদামজাত করবে তার সংবাদ দেওয়া, মূসা এর লাঠি সাপে রুপান্তরিত হওয়া এবং আমাদের মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্য চাঁদ দ্বিখন্ডিত হওয়া ইত্যাদী।
﴿وَمَا أَرْسَلْنَا قَبْلَكَ إِلَّا رِجَالًا نُوحِي إِلَيْهِمْ﴾ [ الأنبياء : ৭[
অর্থ: আপনার পূর্বে আমি মানুষই প্রেরণ করেছি, যাদের কাছে আমি ওহী পাঠাতাম। সূরাহ্ আল আম্বিয়া আয়াত ৭।
রাসূলগণ অন্যান্য মানুষের মত অসুস্থ হন এবং তাঁদেরও মৃত্যু আসে। তাই রব এবং ইবাদাতের দাবিদার হওয়ার ক্ষেত্রে রাসূলগণের (আলাইহিমুস্ সালাম) কোন অধিকার নেই।
তবে তাঁরা মানুষের বাহ্যিক সৃষ্টি এবং চরিত্রগত দিক দিয়ে পরিপূর্ণতার পর্যায়ে পৌঁছেছেন। বংশগত দিক থেকে তাঁরা উত্তম মানুষ এবং সম্পূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী। তাঁরা স্পষ্টভাষী যা তাঁদেরকে নবূয়ত ও রিসালাতের দায়িত্ব পালনে যোগ্য করে তোলে।
মানুষকে রাসূল হিসেবে প্রেরণের হিকমত হলো যাতে মানুষেরা নিজেদের মধ্যে একজনকে নমুনা হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। ফলে তারা সহজেই রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অনুসরণ করতে সক্ষম হয়। (ফেরেশতাকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করা হলে মানুষ তাঁকে দেখেই ভয় পেত, কেননা তাঁদের আকৃতি ভিন্ন, তখন বিরুদ্ধবাদীরা বলত মানুষকে কেন রাসূল হিসেবে প্রেরণ করা হলো না? তাছাড়া ফেরেশতাকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করলে আরো বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতো)।
রাসূলগণের অন্যতম গুণ হলো আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) (অন্য সকল মানুষ বাদ দিয়ে কেবল মাত্র ) তাঁদের নিকটে ওহী পাঠিয়েছেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ﴾ [ الكهف : ১১০[
অর্থ: বলুন, আমিও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ্। সূরাহ্ আল কাহাফ আয়াত ১১০।
এখান থেকে বুঝা যায় আল্লাহ্ সকল মানুষের মাঝ থেকে তাঁদেরকে চয়ণ করেছেন। অন্য স্থানে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
[ ﴿اللَّهُ أَعْلَمُ حَيْثُ يَجْعَلُ رِسَالَتَهُ﴾ [ الأنعام : ১২৪
অর্থ: আল্লাহ্ এ বিষয়ে সুপরিজ্ঞাত যে, কোথায় স্বীয় পয়গাম প্রেরণ করতে হবে। সূরাহ্ আল আনআ'ম আয়াত ১২৪।
রাসূলগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে যা প্রচার করেন সে ব্যাপারে তাঁরা নিষ্পাপ। তাই তাঁরা আল্লাহর পক্ষ থেকে তাবলীগে এবং তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যা দিয়ে তাঁদেরকে প্রেরণ করেছেন তা বাস্তবায়নে ভুল করেন না।
রাসূলদের অন্যতম গুণ হলো সত্যবাদীতা, তাই রাসূলগণ তাঁদের কথা ও কাজে সত্যবাদী। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿هَذَا مَا وَعَدَ الرَّحْمَنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُون﴾ [ يس : ৫২[
অর্থ: রহমান আল্লাহ্ তো এরই ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং রসূলগণ সত্য বলেছিলেন। সূরাহ্ ইয়াসীন আয়াত ৫২। রাসূলগণের আরেকটি গুণ হলো ধৈর্য্য ধারন করা। তাঁরা সুসংবাদদাতা এবং ভয় প্রদর্শনকারী। মানুষদেরকে আল্লাহর দ্বীনের পথে আহ্বান করেন। একাজ আঞ্জাম দিতে গিয়ে তাঁদের উপর অনেক কষ্ট, নির্যাতন নেমে এসেছে। এতদ সত্বেও তাঁরা ধৈর্য্য ধারন করতঃ আল্লাহর কালিমাকে উঁচু করার জন্য কাজ করেছেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَاصْبِرْ كَمَا صَبَرَ أُولُو الْعَزْمِ مِنَ الرُّسُلِ﴾ [ الأحقاف : ৩৫[
অর্থ: অতএব, আপনি সবর করুন, যেমন উচ্চ সাহসী রাসূলগণ সবর করেছেন। সূরাহ্ আল আহ্ক্বাফ আয়াত ৩৫।
রাসূলগণের আলামত বা নিদর্শনসমূহ:
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তাঁদেরকে অকাট্য প্রমাণ এবং স্পষ্ট মু'জিযা (মানুষের সাধ্যাতিত বিষয়) দিয়ে শক্তিশালী করেছেন। যা তাঁদের সত্যতা এবং তাঁদের নবূয়ত ও রিসালাতের বিশুদ্ধতার উপর প্রমাণ বহন করে। সঙ্গত কারনেই আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) স্বীয় রাসূলগণের সত্যতা এবং দৃঢ়তা প্রমাণে তাঁদের হাতে মানুষের সাধ্যাতীত বিষয়সমূহ সংঘটিত করেছেন।
রাসূলগণের আলামত ও মু'জিযার পরিচয়: তা হলো মানুষের সাধ্যাতীত অলৌকিক বিষয়াবলী যা আল্লাহ্ তা'য়ালা স্বীয় নবী ও রাসূলগণের হাতে প্রকাশ করেছেন। (অনুরূপ মু'জিযা মানুষ ঘটাতে অপারগ)।
এ সকল মু'জিযা ও নিদর্শনের উদাহরণ: ঈসা কর্তৃক তাঁর ক্বওম বা জাতি তাদের বাড়িতে কি খাবে ও কি গুদামজাত করবে তার সংবাদ দেওয়া, মূসা এর লাঠি সাপে রুপান্তরিত হওয়া এবং আমাদের মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্য চাঁদ দ্বিখন্ডিত হওয়া ইত্যাদী।
রাসূল পাঠানোর উদ্দেশ্য হলো মানুষেরা যাতে তাদের এক মাত্র সত্য মা'বূদকে চিনতে পারে এবং রাসূলগণ তাদেরকে এক-অদ্বিতীয় লাশারীক আল্লাহর ইবাদতের প্রতি আহ্বান করেন। তাঁরা পৃথিবীতে আল্লাহর দ্বীন (ইসলাম) প্রতিা করতঃ তাতে ফাটল সৃষ্টি হতে নিষেধ করেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ شَرَعَ لَكُمْ مِنَ الدِّينِ مَا وَصَّى بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَى وَعِيسَى أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ﴾ [ الشورى : ১৩[
অর্থ: তিনি তোমাদের জন্যে দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই নির্ধারিত করেছেন, যার আদেশ দিয়েছিলেন নূহ্কে, যা আমি প্রত্যাদেশ করেছি আপনার প্রতি এবং যার আদেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই মর্মে যে, তোমরা দ্বীনকে প্রতিতি কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না। সূরাহ্ আশ্ শুরা আয়াত ১৩।
আল্লাহ্ রাসূল প্রেরণ করেছেন সুসংবাদ ও ভয় প্রদর্শনের জন্য, তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَا نُرْسِلُ الْمُرْسَلِينَ إِلَّا مُبَشِّرِينَ وَمُنْذِرِينَ﴾ [ الكهف : ৫৬[
অর্থ: আমি রাসূলগণকে সুসংবাদ দাতা ও ভয় প্রদর্শন কারীরূপেই প্রেরণ করি। সূরাহ্ আল কাহাফ আয়াত ৫৬।
রাসূলগণের (আলাইহিমুস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম) সুসংবাদ দেওয়া ও ভয় প্রদর্শন করা উভয় জাগতিক। অনুগতদেরকে তাঁরা দুনিয়াতে সুন্দর জীবনের সুসংবাদ দেন। আল্লাহর ঘোষনা:
﴿مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً﴾ [ النحل : ৯৭[
অর্থ: যে সৎকর্ম সমপাদন করে এবং সে ঈমানদার, পুরুষ হোক কিংবা নারী আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব। সূরাহ্ আন্ নাহ্ল আয়াত ৯৭।
রাসূলগণ অনুগতদের দুনিয়ার শাস্তি এবং ধ্বংসের ভয় প্রদর্শন করেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَإِنْ أَعْرَضُوا فَقُلْ أَنْذَرْتُكُمْ صَاعِقَةً مِثْلَ صَاعِقَةِ عَادٍ وَثَمُودَ﴾ [ فصلت : ১৩[
অর্থ: অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলুন: আমি তোমাদেরকে সতর্ক করলাম এক কঠোর আযাব সমপর্কে আদ ও সামুদের আযাবের মত। সূরাহ্ (ফুস্সিলাত) হামীম সাজদাহ্ আয়াত ১৩।
রাসূলগণ অনুগতদেরকে পরকালীন জান্নাত ও তার নিয়ামতের সুসংবাদ দেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ﴾ [ النساء : ১৩[
অর্থ: যে কেউ আল্লাহ ও রাসূলের আদেশমত চলে, তিনি তাকে জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন। যেগুলোর তলদেশ দিয়ে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হবে। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। এ হল বিরাট সাফল্য। সূরাহ্ আন নিসা আয়াত ১৩। রাসূলগণ পাপী ও অবাধ্যদেরকে পরকালে শাস্তির ভয় প্রদর্শন করেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَتَعَدَّ حُدُودَهُ يُدْخِلْهُ نَارًا خَالِدًا فِيهَا وَلَهُ عَذَابٌ مُهِينٌ﴾ [ النساء : ১৪[
অর্থ: যে কেউ আল্লাহ্ ও রাসূলের অবাধ্যতা করে এবং তার সীমা অতিক্রম করে তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সে সেখানে চিরকাল থাকবে। তার জন্যে রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। সূরাহ্ আন্ নিসা আয়াত ১৪।
সঠিক ও উন্নত চরিত্র এবং বিশুদ্ধ ইবাদাতের উত্তম আদর্শ-নমুনা স্থাপনের জন্যও আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) রাসূলগণকে প্রেরণ করেছেন। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আমাদের প্রিয় নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ক্ষেত্রে বলেছেন:
﴿لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا﴾ [ الأحزاب : ২১[
অর্থ: যারা আল্লাহ্ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রাসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। সূরাহ্ আল আহ্যাব - ২১।
﴿ شَرَعَ لَكُمْ مِنَ الدِّينِ مَا وَصَّى بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَى وَعِيسَى أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ﴾ [ الشورى : ১৩[
অর্থ: তিনি তোমাদের জন্যে দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই নির্ধারিত করেছেন, যার আদেশ দিয়েছিলেন নূহ্কে, যা আমি প্রত্যাদেশ করেছি আপনার প্রতি এবং যার আদেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই মর্মে যে, তোমরা দ্বীনকে প্রতিতি কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না। সূরাহ্ আশ্ শুরা আয়াত ১৩।
আল্লাহ্ রাসূল প্রেরণ করেছেন সুসংবাদ ও ভয় প্রদর্শনের জন্য, তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَا نُرْسِلُ الْمُرْسَلِينَ إِلَّا مُبَشِّرِينَ وَمُنْذِرِينَ﴾ [ الكهف : ৫৬[
অর্থ: আমি রাসূলগণকে সুসংবাদ দাতা ও ভয় প্রদর্শন কারীরূপেই প্রেরণ করি। সূরাহ্ আল কাহাফ আয়াত ৫৬।
রাসূলগণের (আলাইহিমুস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম) সুসংবাদ দেওয়া ও ভয় প্রদর্শন করা উভয় জাগতিক। অনুগতদেরকে তাঁরা দুনিয়াতে সুন্দর জীবনের সুসংবাদ দেন। আল্লাহর ঘোষনা:
﴿مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً﴾ [ النحل : ৯৭[
অর্থ: যে সৎকর্ম সমপাদন করে এবং সে ঈমানদার, পুরুষ হোক কিংবা নারী আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব। সূরাহ্ আন্ নাহ্ল আয়াত ৯৭।
রাসূলগণ অনুগতদের দুনিয়ার শাস্তি এবং ধ্বংসের ভয় প্রদর্শন করেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَإِنْ أَعْرَضُوا فَقُلْ أَنْذَرْتُكُمْ صَاعِقَةً مِثْلَ صَاعِقَةِ عَادٍ وَثَمُودَ﴾ [ فصلت : ১৩[
অর্থ: অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলুন: আমি তোমাদেরকে সতর্ক করলাম এক কঠোর আযাব সমপর্কে আদ ও সামুদের আযাবের মত। সূরাহ্ (ফুস্সিলাত) হামীম সাজদাহ্ আয়াত ১৩।
রাসূলগণ অনুগতদেরকে পরকালীন জান্নাত ও তার নিয়ামতের সুসংবাদ দেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ﴾ [ النساء : ১৩[
অর্থ: যে কেউ আল্লাহ ও রাসূলের আদেশমত চলে, তিনি তাকে জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন। যেগুলোর তলদেশ দিয়ে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হবে। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। এ হল বিরাট সাফল্য। সূরাহ্ আন নিসা আয়াত ১৩। রাসূলগণ পাপী ও অবাধ্যদেরকে পরকালে শাস্তির ভয় প্রদর্শন করেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَتَعَدَّ حُدُودَهُ يُدْخِلْهُ نَارًا خَالِدًا فِيهَا وَلَهُ عَذَابٌ مُهِينٌ﴾ [ النساء : ১৪[
অর্থ: যে কেউ আল্লাহ্ ও রাসূলের অবাধ্যতা করে এবং তার সীমা অতিক্রম করে তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সে সেখানে চিরকাল থাকবে। তার জন্যে রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। সূরাহ্ আন্ নিসা আয়াত ১৪।
সঠিক ও উন্নত চরিত্র এবং বিশুদ্ধ ইবাদাতের উত্তম আদর্শ-নমুনা স্থাপনের জন্যও আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) রাসূলগণকে প্রেরণ করেছেন। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আমাদের প্রিয় নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ক্ষেত্রে বলেছেন:
﴿لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا﴾ [ الأحزاب : ২১[
অর্থ: যারা আল্লাহ্ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রাসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। সূরাহ্ আল আহ্যাব - ২১।
আমরা বিশ্বাস করি যে মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বান্দা এবং রাসূল, তিনি পূর্বের এবং পরের সকল নবী-রাসূল ও মানুষদের সর্দার বা নেতা। তিনি সর্বশেষ নবী তাঁর পরে আর কোন নবী আসবে না। তিনি তাঁর উপর অর্পিত রিসালাতের দায়িত্ব উম্মতের নিকটে সঠিকভাবে পৌঁছিয়েছেন। আমানত আদায় করেছেন, উম্মাতকে নসিহত করেছেন এবং আল্লাহর রাস্তায় সত্য জিহাদ করেছেন।
তিনি যা সংবাদ দিয়েছেন তা সত্যায়ন করা, তাঁর আদেশকৃত কাজে তাঁর আনুগত্য করা, নিষেধ ও সতর্ককৃত কাজ হতে দূরে থাকা, তাঁর সুন্নাত মোতাবেক আল্লাহর ইবাদাত করা এবং অন্যকে বাদ দিয়ে কেবল তাঁর আনুগত্য করা আমাদের জন্য ওয়াজিব। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا﴾ [ الأحزاب : ২১[
অর্থ: যারা আল্লাহ্ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রাসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। সূরাহ্ আল আহ্যাব আয়াত ২১।
প্রত্যেক মুসলিমের জন্য নিজের পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততী, সকল মানুষ এবং নিজের আত্মার চেয়ে মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বেশী ভালবাসা ওয়াজিব।
রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ﴾
অর্থ: আমি তোমাদের কারও নিকটে তার পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততী এবং সকল মানুষ থেকে প্রিয় ও অধিক ভালবাসার পাত্র না হওয়া পর্যন্ত সে মু'মিন হতে পারবে না। বুখারী ১/২৪, মুসলিম।
রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ভালবাসার সত্যিকার প্রমাণ হলো তাঁর অনুসরণ ও অনুকরণ করা। তাঁর আনুগত্য ব্যতীত বাস্তব সৌভাগ্য এবং পূর্ণ হেদায়াত সম্ভব নয়। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَإِنْ تُطِيعُوهُ تَهْتَدُوا وَمَا عَلَى الرَّسُولِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ﴾
অর্থ: তোমরা যদি তাঁর আনুগত্য কর, তবে সৎ পথ পাবে। রাসূলের দায়িত্ব তো কেবল সুসপষ্টরূপে পৌঁছে দেয়া। সূরাহ্ আন্ নূর আয়াত ৫৪।
- রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা নিয়ে এসেছেন তা গ্রহণ করা, তাঁর সুন্নাতের আনুগত্য করা এবং তাঁর পথ নির্দেশকে সম্মান করা আমাদের জন্য ওয়াজিব বা আবশ্যক। যেমন আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِي أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا﴾ [ النساء : ৬৫[
অর্থ: অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে।
অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হূষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে। সূরাহ্ আন্ নিসা আয়াত ৬৫।
- রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিরোধিতা করা থেকে সতর্ক থাকা আমাদের জন্য আবশ্যক। কেননা, তাঁর (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিরোধিতা করা ফিতনা পথ ভ্রষ্টতা এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির কারণ। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
} فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ { [ النور : ৬৩[
অর্থ: অতএব যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদেরকে সপর্শ করবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে। সূরাহ্ আন্ নূর আয়াত ৬৩।
তিনি যা সংবাদ দিয়েছেন তা সত্যায়ন করা, তাঁর আদেশকৃত কাজে তাঁর আনুগত্য করা, নিষেধ ও সতর্ককৃত কাজ হতে দূরে থাকা, তাঁর সুন্নাত মোতাবেক আল্লাহর ইবাদাত করা এবং অন্যকে বাদ দিয়ে কেবল তাঁর আনুগত্য করা আমাদের জন্য ওয়াজিব। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا﴾ [ الأحزاب : ২১[
অর্থ: যারা আল্লাহ্ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রাসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। সূরাহ্ আল আহ্যাব আয়াত ২১।
প্রত্যেক মুসলিমের জন্য নিজের পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততী, সকল মানুষ এবং নিজের আত্মার চেয়ে মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বেশী ভালবাসা ওয়াজিব।
রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ﴾
অর্থ: আমি তোমাদের কারও নিকটে তার পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততী এবং সকল মানুষ থেকে প্রিয় ও অধিক ভালবাসার পাত্র না হওয়া পর্যন্ত সে মু'মিন হতে পারবে না। বুখারী ১/২৪, মুসলিম।
রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ভালবাসার সত্যিকার প্রমাণ হলো তাঁর অনুসরণ ও অনুকরণ করা। তাঁর আনুগত্য ব্যতীত বাস্তব সৌভাগ্য এবং পূর্ণ হেদায়াত সম্ভব নয়। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَإِنْ تُطِيعُوهُ تَهْتَدُوا وَمَا عَلَى الرَّسُولِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ﴾
অর্থ: তোমরা যদি তাঁর আনুগত্য কর, তবে সৎ পথ পাবে। রাসূলের দায়িত্ব তো কেবল সুসপষ্টরূপে পৌঁছে দেয়া। সূরাহ্ আন্ নূর আয়াত ৫৪।
- রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা নিয়ে এসেছেন তা গ্রহণ করা, তাঁর সুন্নাতের আনুগত্য করা এবং তাঁর পথ নির্দেশকে সম্মান করা আমাদের জন্য ওয়াজিব বা আবশ্যক। যেমন আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِي أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا﴾ [ النساء : ৬৫[
অর্থ: অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে।
অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হূষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে। সূরাহ্ আন্ নিসা আয়াত ৬৫।
- রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বিরোধিতা করা থেকে সতর্ক থাকা আমাদের জন্য আবশ্যক। কেননা, তাঁর (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিরোধিতা করা ফিতনা পথ ভ্রষ্টতা এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির কারণ। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
} فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ { [ النور : ৬৩[
অর্থ: অতএব যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদেরকে সপর্শ করবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে। সূরাহ্ আন্ নূর আয়াত ৬৩।
পূর্বের রিসালাতসমূহের তুলনায় রিসালাতে মুহাম্মাদীয়ার বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। রিসালাতে মুহাম্মাদীয়ার কিছু বৈশিষ্ট্য আমরা নিচে তুলে ধরছি:
- রিসালাতে মুহাম্মাদীয়া পূর্বের রিসালাতগুলির সমাপ্তি বা ইতি টেনেছে, আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿مَا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِنْ رِجَالِكُمْ وَلَكِنْ رَسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا﴾ [ الأحزاب : ৪০[
অর্থ: মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ্ সব বিষয়ে জ্ঞাত। সূরাহ্ আল্ আহ্যাব আয়াত ৪০।
- রিসালাতে মুহাম্মাদীয়া পূর্বের রিসালাত সমুহের নাসিখ বা রহিতকারী। তাই আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্য ব্যতীত কোন দ্বীন বা ধর্ম ক্ববুল করবেন না। তাঁর পথ ব্যতীত কেউ জান্নাতে পৌঁছতে পারবে না। সঙ্গত কারনেই তিনি হলেন সবচেয়ে মর্যাদাবান রাসূল, তাঁর উম্মাত শ্রে উম্মাত এবং তাঁর শরীয়ত হলো পরিপূর্ণ শরীয়ত। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ﴾ [ آل عمران : ৮৫[
অর্থ: যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখিরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত। সূরাহ্ আল্ ইমরান আয়াত ৮৫। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَا يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الْأُمَّةِ يَهُودِيٌّ وَلَا نَصْرَانِيٌّ ثُمَّ يَمُوتُ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِالَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ إِلَّا كَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ﴾ ( صحيح مسلم - (১ / ৩৬৫(
অর্থ: সেই সত্বার শপথ যাঁর হাতে মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আত্মা, এ উম্মাতের যে কোন ব্যক্তি চাই সে ইয়াহুদী বা খ্রীস্টান হোক আমার কথা শুনার পর আমি যা সহকারে প্রেরিত হয়েছি তার প্রতি ঈমান না এনে মারাগেলে সে জাহান্নামীদের অন্তর্ভূক্ত হবে। সহীহ মুসলিম ১/৩৬৫।
- রিসালাতে মুহাম্মাদীয়াহ্ সাকালাইন বা মানুষ ও জ্বিন উভয় জাতির জন্য। আল্লাহ্ তায়ালা জ্বিনদের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন:
﴿يَا قَوْمَنَا أَجِيبُوا دَاعِيَ اللَّهِ وَآمِنُوا بِهِ يَغْفِرْ لَكُمْ مِنْ ذُنُوبِكُمْ وَيُجِرْكُمْ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ﴾ [ الأحقاف : ৩১[
অর্থ: হে আমাদের সমপ্রদায়, তোমরা আল্লাহর দিকে আহ্বানকারীর কথা মান্য কর এবং তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তোমাদের গোনাহ মার্জনা করবেন। সূরাহ্ আল্ আহ্ক্বাফ আয়াত ৩১। অপর আয়াতে মহান আল্লাহ্ বলেন:
﴿وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا كَافَّةً لِلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ﴾ [ سبأ : ২৮ [
অর্থ: আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সুসংবাদাতা ও সতর্ককারী রূপে পাঠিয়েছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না। সূরাহ্ সাবা আয়াত ২৮। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿فُضِّلْتُ عَلَى الْأَنْبِيَاءِ بِسِتٍّ : أُعْطِيتُ جَوَامِعَ الْكَلِمِ وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ وَأُحِلَّتْ لِيَ الْغَنَائِمُ وَجُعِلَتْ لِيَ الْأَرْضُ طَهُورًا وَمَسْجِدًا وَأُرْسِلْتُ إِلَى الْخَلْقِ كَافَّةً وَخُتِمَ بِيَ النَّبِيُّونَ﴾ ( صحيح مسلم - (৩ / ১০৯(
অর্থ: ছয়টি জিনিসের মাধ্যমে আমাকে অন্যান্য নবীর উপর প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে:
১- আমাকে অল্প কথায় ব্যপক অর্থ প্রকাশের যোগ্যতা দেওয়া হয়েছে।
২- শত্রুর হৃদয়ে ভয়ের মাধ্যমে আমাকে সহযোগীতা করা হয়েছে।
৩- আমার জন্য গণিমতের মাল হালাল করা হয়েছে।
৪- (পবিত্র) যমীনকে আমার জন্য পবিত্রকারী ও মাসজিদ করা হয়েছে।
৫- সকল সৃষ্টজীবের নিকটে আমাকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে এবং
৬- আমার মাধ্যমে নবূয়ত সমাপ্ত করা হয়েছে। সহীহ্ মুসলিম ৩/১০৯।
- রিসালাতে মুহাম্মাদীয়া পূর্বের রিসালাতগুলির সমাপ্তি বা ইতি টেনেছে, আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿مَا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِنْ رِجَالِكُمْ وَلَكِنْ رَسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا﴾ [ الأحزاب : ৪০[
অর্থ: মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ্ সব বিষয়ে জ্ঞাত। সূরাহ্ আল্ আহ্যাব আয়াত ৪০।
- রিসালাতে মুহাম্মাদীয়া পূর্বের রিসালাত সমুহের নাসিখ বা রহিতকারী। তাই আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আনুগত্য ব্যতীত কোন দ্বীন বা ধর্ম ক্ববুল করবেন না। তাঁর পথ ব্যতীত কেউ জান্নাতে পৌঁছতে পারবে না। সঙ্গত কারনেই তিনি হলেন সবচেয়ে মর্যাদাবান রাসূল, তাঁর উম্মাত শ্রে উম্মাত এবং তাঁর শরীয়ত হলো পরিপূর্ণ শরীয়ত। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ﴾ [ آل عمران : ৮৫[
অর্থ: যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখিরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত। সূরাহ্ আল্ ইমরান আয়াত ৮৫। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَا يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الْأُمَّةِ يَهُودِيٌّ وَلَا نَصْرَانِيٌّ ثُمَّ يَمُوتُ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِالَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ إِلَّا كَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ﴾ ( صحيح مسلم - (১ / ৩৬৫(
অর্থ: সেই সত্বার শপথ যাঁর হাতে মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আত্মা, এ উম্মাতের যে কোন ব্যক্তি চাই সে ইয়াহুদী বা খ্রীস্টান হোক আমার কথা শুনার পর আমি যা সহকারে প্রেরিত হয়েছি তার প্রতি ঈমান না এনে মারাগেলে সে জাহান্নামীদের অন্তর্ভূক্ত হবে। সহীহ মুসলিম ১/৩৬৫।
- রিসালাতে মুহাম্মাদীয়াহ্ সাকালাইন বা মানুষ ও জ্বিন উভয় জাতির জন্য। আল্লাহ্ তায়ালা জ্বিনদের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন:
﴿يَا قَوْمَنَا أَجِيبُوا دَاعِيَ اللَّهِ وَآمِنُوا بِهِ يَغْفِرْ لَكُمْ مِنْ ذُنُوبِكُمْ وَيُجِرْكُمْ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ﴾ [ الأحقاف : ৩১[
অর্থ: হে আমাদের সমপ্রদায়, তোমরা আল্লাহর দিকে আহ্বানকারীর কথা মান্য কর এবং তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তোমাদের গোনাহ মার্জনা করবেন। সূরাহ্ আল্ আহ্ক্বাফ আয়াত ৩১। অপর আয়াতে মহান আল্লাহ্ বলেন:
﴿وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا كَافَّةً لِلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ﴾ [ سبأ : ২৮ [
অর্থ: আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সুসংবাদাতা ও সতর্ককারী রূপে পাঠিয়েছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না। সূরাহ্ সাবা আয়াত ২৮। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿فُضِّلْتُ عَلَى الْأَنْبِيَاءِ بِسِتٍّ : أُعْطِيتُ جَوَامِعَ الْكَلِمِ وَنُصِرْتُ بِالرُّعْبِ وَأُحِلَّتْ لِيَ الْغَنَائِمُ وَجُعِلَتْ لِيَ الْأَرْضُ طَهُورًا وَمَسْجِدًا وَأُرْسِلْتُ إِلَى الْخَلْقِ كَافَّةً وَخُتِمَ بِيَ النَّبِيُّونَ﴾ ( صحيح مسلم - (৩ / ১০৯(
অর্থ: ছয়টি জিনিসের মাধ্যমে আমাকে অন্যান্য নবীর উপর প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে:
১- আমাকে অল্প কথায় ব্যপক অর্থ প্রকাশের যোগ্যতা দেওয়া হয়েছে।
২- শত্রুর হৃদয়ে ভয়ের মাধ্যমে আমাকে সহযোগীতা করা হয়েছে।
৩- আমার জন্য গণিমতের মাল হালাল করা হয়েছে।
৪- (পবিত্র) যমীনকে আমার জন্য পবিত্রকারী ও মাসজিদ করা হয়েছে।
৫- সকল সৃষ্টজীবের নিকটে আমাকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছে এবং
৬- আমার মাধ্যমে নবূয়ত সমাপ্ত করা হয়েছে। সহীহ্ মুসলিম ৩/১০৯।
রাসূলদের প্রতি ঈমান আনার বড় প্রভাব রয়েছে, তন্মধ্যে কিছু নিচে উল্লেখ করাহল:
১- বান্দার প্রতি আল্লাহর বিশেষ দয়া ও গুরুত্ব সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন। কেননা তিনি মানুষদের প্রতি রাসূল প্রেরণ করেছেন, যাতে তাঁরা তাদেরকে সঠিক পথের দিশা দেন এবং তাদের নিকটে ইবাদাতের পদ্ধতি বর্ণনা করেন।
কারণ মানুষের জ্ঞান এসব জানার জন্য যথেষ্ট নয়। আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ﴾ [ الأنبياء : ১০৭[
অর্থ: আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি। সূরাহ্ আল্ আম্বিয়া আয়াত ১০৭।
২- এই বড় নিয়ামতের দরুন মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা।
৩- রাসূলগণকে (আলাইহিমুস্ সলাতু ওয়াস্ সালাম) ভালবাসা, তাঁদেরকে সম্মান করা এবং তাঁদের উপযুক্ত প্রশংসা করা। কেননা, তাঁরা আল্লাহর ইবাদাত করেছেন, রিসালাত পৌঁছানো এবং বান্দাদেরকে নসিহতের খিদমত আঞ্জাম দিয়েছেন।
৪- রাসূলগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে যে রিসালাত নিয়ে এসেছেন তার অনুসরণ করতঃ সে অনুযায়ী আমল করা। এর মাধ্যমে মু'মিনগণ তাঁদের জীবনে কল্যাণ ও হিদায়াত লাভ করবেন এবং উভয় জগতে সৌভাগ্যবান হবেন।
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَمَنِ اتَّبَعَ هُدَايَ فَلَا يَضِلُّ وَلَا يَشْقَى (১২৩) وَمَنْ أَعْرَضَ عَنْ ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنْكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَى﴾ [ طه : ১২৩ - ১২৪[
অর্থ: (এরপর যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে হেদায়েত আসে), তখন যে আমার বর্ণিত পথ অনুসরণ করবে, সে পথভ্রষ্ট হবে না এবং কষ্টে পতিত হবে না।
যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব। সূরাহ্ ত্বহা আয়াত ১২৩-১২৪।
১- বান্দার প্রতি আল্লাহর বিশেষ দয়া ও গুরুত্ব সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন। কেননা তিনি মানুষদের প্রতি রাসূল প্রেরণ করেছেন, যাতে তাঁরা তাদেরকে সঠিক পথের দিশা দেন এবং তাদের নিকটে ইবাদাতের পদ্ধতি বর্ণনা করেন।
কারণ মানুষের জ্ঞান এসব জানার জন্য যথেষ্ট নয়। আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ﴾ [ الأنبياء : ১০৭[
অর্থ: আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি। সূরাহ্ আল্ আম্বিয়া আয়াত ১০৭।
২- এই বড় নিয়ামতের দরুন মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা।
৩- রাসূলগণকে (আলাইহিমুস্ সলাতু ওয়াস্ সালাম) ভালবাসা, তাঁদেরকে সম্মান করা এবং তাঁদের উপযুক্ত প্রশংসা করা। কেননা, তাঁরা আল্লাহর ইবাদাত করেছেন, রিসালাত পৌঁছানো এবং বান্দাদেরকে নসিহতের খিদমত আঞ্জাম দিয়েছেন।
৪- রাসূলগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে যে রিসালাত নিয়ে এসেছেন তার অনুসরণ করতঃ সে অনুযায়ী আমল করা। এর মাধ্যমে মু'মিনগণ তাঁদের জীবনে কল্যাণ ও হিদায়াত লাভ করবেন এবং উভয় জগতে সৌভাগ্যবান হবেন।
আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَمَنِ اتَّبَعَ هُدَايَ فَلَا يَضِلُّ وَلَا يَشْقَى (১২৩) وَمَنْ أَعْرَضَ عَنْ ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنْكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَى﴾ [ طه : ১২৩ - ১২৪[
অর্থ: (এরপর যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে হেদায়েত আসে), তখন যে আমার বর্ণিত পথ অনুসরণ করবে, সে পথভ্রষ্ট হবে না এবং কষ্টে পতিত হবে না।
যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব। সূরাহ্ ত্বহা আয়াত ১২৩-১২৪।
ক্বিয়ামত আসবে নিশ্চিতভাবে এ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা এবং তার জন্য আমল করা। ক্বিয়ামতের পূর্বে সংঘটিত আলামতসমূহের প্রতি বিশ্বাসও এর অন্তর্ভূক্ত হবে।
মৃত্যু ও তৎপরবর্তী ক্ববরের পরীক্ষা, আযাব, নিয়ামত, সিঙ্গায় ফূৎকার, ক্ববর হতে সৃষ্টি জীবসমূহের বহির্গমন, ক্বিয়ামতের ভয়াবহতা, হাশরের ময়দান ও আমলনামাসমূহ্ উম্মুক্তকরণ, মীযান বা দাঁড়ি পাল্লা স্থাপন, পূলসিরাত, হাউযে কাওসার, শাফায়াত, জান্নাত ও তার নিয়ামতসমূহ যার সর্বোচ্চ হলো আল্লাহর দর্শন, জাহান্নাম ও তার শাস্তি যার কঠিনতম শাস্তি হলো আল্লাহর দর্শন হতে বঞ্চিত হওয়া ইত্যাদী। এসব কিছু ক্বিয়ামত দিবসের উপর ঈমান আনার অন্তর্ভুক্ত।
মৃত্যু ও তৎপরবর্তী ক্ববরের পরীক্ষা, আযাব, নিয়ামত, সিঙ্গায় ফূৎকার, ক্ববর হতে সৃষ্টি জীবসমূহের বহির্গমন, ক্বিয়ামতের ভয়াবহতা, হাশরের ময়দান ও আমলনামাসমূহ্ উম্মুক্তকরণ, মীযান বা দাঁড়ি পাল্লা স্থাপন, পূলসিরাত, হাউযে কাওসার, শাফায়াত, জান্নাত ও তার নিয়ামতসমূহ যার সর্বোচ্চ হলো আল্লাহর দর্শন, জাহান্নাম ও তার শাস্তি যার কঠিনতম শাস্তি হলো আল্লাহর দর্শন হতে বঞ্চিত হওয়া ইত্যাদী। এসব কিছু ক্বিয়ামত দিবসের উপর ঈমান আনার অন্তর্ভুক্ত।
ক্বুরআনুল কারীমের বিভিন্ন স্থানে ক্বিয়ামত দিবসের উল্লেখ রয়েছে। প্রতিটি স্থানে ক্বুরআন এর প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে, উপযুক্ত স্থানে এর প্রতি সতর্ক করেছে।
আরবী ভাষার ব্যাকরণিক বিভিন্ন পদ্ধতিতে ক্বিয়ামত সংঘটিত হওয়ার তাগিদ করা হয়েছে। ক্বুরআনে এ দিবসের প্রতি গুরুত্বের নমুনা হলো, অনেক স্থানেই এ দিবসের প্রতি ঈমানকে আল্লাহর প্রতি ঈমানের সাথে সংশ্লিষ্ট করেছে। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ذَلِكَ يُوعَظُ بِهِ مَنْ كَانَ مِنْكُمْ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ﴾ [ البقرة : ২৩২[
অর্থ: (আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও এবং তারপর তারাও নির্ধারিত ইদ্দত পূর্ণ করতে থাকে, তখন তাদেরকে পূর্ব স্বামীদের সাথে পারসপরিক সমমতির ভিত্তিতে নিয়মানুযায়ী বিয়ে করতে বাধা প্রদান করো না)।
এ উপদেশ তাকেই দেয়া হচ্ছে, যে আল্লাহ্ ও ক্বিয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াত ২৩২।
- ক্বুরআনুল কারীমে ক্বিয়ামতের অনেক উদ্ধৃতি এসেছে। এমনকি ক্বুরআনের প্রায় প্রতিটি পাতায় আপনি ক্বিয়ামত দিবস এবং তার বিভিন্ন অবস্থার আলোচনা পাবেন।
- ক্বিয়ামত দিবসের গুরুত্বের মধ্যে রয়েছে আল্লাহ্ এ দিবসকে বিভিন্ন নামে নামকরণ করেছেন। যা এ দিবস সংঘটিত হওয়ার উপর দৃঢ় প্রমাণ বহন করে। যেমন, আল্ হাক্বক্বাহ্, আল্ ওয়াক্বিয়াহ্ এবং ক্বিয়ামাহ ইত্যাদী।
- ক্বিয়ামতের কিছু নাম এমন রয়েছে যা তাতে সংঘটিত বিভীষিকার উপর প্রমাণ বহন করে। যেমন, আল্ গাশিয়াহ্, আত্বম্মাহ্, আস্সক্ষাহ্ এবং আল্ ক্বারিয়াহ্।
ক্বুরআনে বর্ণিত ক্বিয়ামত দিবসের আরো কিছু নাম: ইয়াওমুদ্দীন, ইয়াওমুল হিসাব, ইয়াওমুল জাম্, ইয়াওমুল খুলূদ, ইয়াওমুল খুরূজ, ইয়াওমুল হাসরাহ্ এবং ইয়াওমুত্তানাদ।
- ক্বিয়ামত দিবসের প্রতি ঈমান আনার অধিক গুরুত্ব দেওয়ার হিকমত হল: মানুষের দিকনির্দেশনা, সৎ কর্মে তাদের ধারাবাহিকতা এবং তাক্বওয়ার (আল্লাহর ভয়) ক্ষেত্রে এ দিবসের প্রতি ঈমানের বড় প্রভাব রয়েছে।
- ক্বিয়ামত দিবসের প্রতি ঈমান ও সৎ আমলকে এক সাথে উল্লেখ করার ক্বুরআনিক নীতি এ হিক্মতের প্রতি ইঙ্গিত দেয়। আল্লাহ্ তা'য়ালা বলেন:
﴿إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللَّهِ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَلَمْ يَخْشَ إِلَّا اللَّهَ فَعَسَى أُولَئِكَ أَنْ يَكُونُوا مِنَ الْمُهْتَدِينَ﴾ [ التوبة : ১৮[
অর্থ: নিঃসন্দেহে তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করবে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি এবং কায়েম করেছে সালাত ও আদায় করে যাকাত; আল্লাহ্ ব্যতীত আর কাউকে ভয় করে না। অতএব, আশা করা যায়, তারা হিদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে। সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ আয়াত ১৮। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَهَذَا كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ مُبَارَكٌ مُصَدِّقُ الَّذِي بَيْنَ يَدَيْهِ وَلِتُنْذِرَ أُمَّ الْقُرَى وَمَنْ حَوْلَهَا وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ يُؤْمِنُونَ بِهِ وَهُمْ عَلَى صَلَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ﴾ [ الأنعام : ৯২[
অর্থ: এ কোরআন এমন গ্রন্থ, যা আমি অবতীর্ন করেছি; বরকতময়, পূর্ববর্তী গ্রন্থের সত্যতা প্রমাণকারী এবং যাতে আপনি মক্কাবাসী ও পাশ্ববর্তীদেরকে ভয় প্রদর্শন করেন।
যারা পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তারা স্বীয় সালাত সংরক্ষণ করে। সূরাহ্ আল্ আন্আম আয়াত ৯২।
সম্ভবত ক্বিয়ামত দিবসকে বেশী উল্লেখের কারণ হলো, দুনিয়ার টান ও তার সম্পদের মোহে মানুষ এ দিবসকে বেশী ভুলে এ সম্পর্কে অসতর্ক থাকে। তাই এ দিবস ও তাতে উল্লেখিত শাস্তি-নিয়ামতের প্রতি ঈমান দুনিয়ার প্রতি অতিরঞ্জিত ভালবাসা কমিয়ে ভাল কাজে প্রতিযোগীতার আগ্রহ যোগাবে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انْفِرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الْأَرْضِ أَرَضِيتُمْ بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الْآخِرَةِ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا قَلِيلٌ﴾ [ التوبة : ৩৮[
অর্থ: হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কি হল, যখন আল্লাহর পথে বের হবার জন্যে তোমাদের বলা হয়, তখন মাটি জড়িয়ে ধর, তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? অথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপকরণ অতি অল্প। সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ আয়াত ৩৮।
আল্লাহর উপর ঈমানের পর শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস ব্যতীত কোন জিনিষ মানুষকে দুনিয়ার মোহ্ বা ভালবাসা থেকে ফিরাতে পারে না। যখন কেউ বিশ্বাস করবে সকল সম্পদ ধ্বংসশীল তখন আল্লাহর আনুগত্য ও হুকুম পালনে আগ্রহী হবে। দুনিয়া থেকে বিমুখ হয়ে বিশ্বাস করবে যে দুনিয়ার সম্পদের পরিবর্তে তাকে পরকালে উচ্চ ও স্থায়ী নিয়ামত দেওয়া হবে।
সাথে এ বিশ্বাসও রাখবে যে, দুনিয়ার জীবনে পার্থিব সম্পদের মোহে আল্লাহর সীমা অতিক্রম করলে পরকালে তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ভোগ করতে হবে।
মানুষ যখন শেষ দিবস বা পরকালে বিশ্বাস করবে তখন সে নিশ্চিত হবে যে দুনিয়ার কোন নিয়ামতই পরকালের নিয়ামতের সাথে তুলনা করা যায় না। অপর দিকে ক্বিয়ামতের প্রতি বিশ্বাস না রাখা এবং আল্লাহর রাস্তায় দুনিয়ায় পাওয়া শাস্তির সাথে পরকালের শাস্তির কোন তুলনা হয় না। আবার পরকালে বিশ্বাস এবং দুনিয়াতে আল্লাহর পথে কষ্টের জন্য পরকালে যে নিয়ামত দেওয়া হবে তার সাথে দুনিয়ার কোন নিয়ামতের তুলনা হয় না
আরবী ভাষার ব্যাকরণিক বিভিন্ন পদ্ধতিতে ক্বিয়ামত সংঘটিত হওয়ার তাগিদ করা হয়েছে। ক্বুরআনে এ দিবসের প্রতি গুরুত্বের নমুনা হলো, অনেক স্থানেই এ দিবসের প্রতি ঈমানকে আল্লাহর প্রতি ঈমানের সাথে সংশ্লিষ্ট করেছে। যেমন আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ذَلِكَ يُوعَظُ بِهِ مَنْ كَانَ مِنْكُمْ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ﴾ [ البقرة : ২৩২[
অর্থ: (আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও এবং তারপর তারাও নির্ধারিত ইদ্দত পূর্ণ করতে থাকে, তখন তাদেরকে পূর্ব স্বামীদের সাথে পারসপরিক সমমতির ভিত্তিতে নিয়মানুযায়ী বিয়ে করতে বাধা প্রদান করো না)।
এ উপদেশ তাকেই দেয়া হচ্ছে, যে আল্লাহ্ ও ক্বিয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে। সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ আয়াত ২৩২।
- ক্বুরআনুল কারীমে ক্বিয়ামতের অনেক উদ্ধৃতি এসেছে। এমনকি ক্বুরআনের প্রায় প্রতিটি পাতায় আপনি ক্বিয়ামত দিবস এবং তার বিভিন্ন অবস্থার আলোচনা পাবেন।
- ক্বিয়ামত দিবসের গুরুত্বের মধ্যে রয়েছে আল্লাহ্ এ দিবসকে বিভিন্ন নামে নামকরণ করেছেন। যা এ দিবস সংঘটিত হওয়ার উপর দৃঢ় প্রমাণ বহন করে। যেমন, আল্ হাক্বক্বাহ্, আল্ ওয়াক্বিয়াহ্ এবং ক্বিয়ামাহ ইত্যাদী।
- ক্বিয়ামতের কিছু নাম এমন রয়েছে যা তাতে সংঘটিত বিভীষিকার উপর প্রমাণ বহন করে। যেমন, আল্ গাশিয়াহ্, আত্বম্মাহ্, আস্সক্ষাহ্ এবং আল্ ক্বারিয়াহ্।
ক্বুরআনে বর্ণিত ক্বিয়ামত দিবসের আরো কিছু নাম: ইয়াওমুদ্দীন, ইয়াওমুল হিসাব, ইয়াওমুল জাম্, ইয়াওমুল খুলূদ, ইয়াওমুল খুরূজ, ইয়াওমুল হাসরাহ্ এবং ইয়াওমুত্তানাদ।
- ক্বিয়ামত দিবসের প্রতি ঈমান আনার অধিক গুরুত্ব দেওয়ার হিকমত হল: মানুষের দিকনির্দেশনা, সৎ কর্মে তাদের ধারাবাহিকতা এবং তাক্বওয়ার (আল্লাহর ভয়) ক্ষেত্রে এ দিবসের প্রতি ঈমানের বড় প্রভাব রয়েছে।
- ক্বিয়ামত দিবসের প্রতি ঈমান ও সৎ আমলকে এক সাথে উল্লেখ করার ক্বুরআনিক নীতি এ হিক্মতের প্রতি ইঙ্গিত দেয়। আল্লাহ্ তা'য়ালা বলেন:
﴿إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللَّهِ مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَلَمْ يَخْشَ إِلَّا اللَّهَ فَعَسَى أُولَئِكَ أَنْ يَكُونُوا مِنَ الْمُهْتَدِينَ﴾ [ التوبة : ১৮[
অর্থ: নিঃসন্দেহে তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করবে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি এবং কায়েম করেছে সালাত ও আদায় করে যাকাত; আল্লাহ্ ব্যতীত আর কাউকে ভয় করে না। অতএব, আশা করা যায়, তারা হিদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে। সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ আয়াত ১৮। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَهَذَا كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ مُبَارَكٌ مُصَدِّقُ الَّذِي بَيْنَ يَدَيْهِ وَلِتُنْذِرَ أُمَّ الْقُرَى وَمَنْ حَوْلَهَا وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ يُؤْمِنُونَ بِهِ وَهُمْ عَلَى صَلَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ﴾ [ الأنعام : ৯২[
অর্থ: এ কোরআন এমন গ্রন্থ, যা আমি অবতীর্ন করেছি; বরকতময়, পূর্ববর্তী গ্রন্থের সত্যতা প্রমাণকারী এবং যাতে আপনি মক্কাবাসী ও পাশ্ববর্তীদেরকে ভয় প্রদর্শন করেন।
যারা পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তারা স্বীয় সালাত সংরক্ষণ করে। সূরাহ্ আল্ আন্আম আয়াত ৯২।
সম্ভবত ক্বিয়ামত দিবসকে বেশী উল্লেখের কারণ হলো, দুনিয়ার টান ও তার সম্পদের মোহে মানুষ এ দিবসকে বেশী ভুলে এ সম্পর্কে অসতর্ক থাকে। তাই এ দিবস ও তাতে উল্লেখিত শাস্তি-নিয়ামতের প্রতি ঈমান দুনিয়ার প্রতি অতিরঞ্জিত ভালবাসা কমিয়ে ভাল কাজে প্রতিযোগীতার আগ্রহ যোগাবে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انْفِرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الْأَرْضِ أَرَضِيتُمْ بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الْآخِرَةِ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا قَلِيلٌ﴾ [ التوبة : ৩৮[
অর্থ: হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কি হল, যখন আল্লাহর পথে বের হবার জন্যে তোমাদের বলা হয়, তখন মাটি জড়িয়ে ধর, তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? অথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপকরণ অতি অল্প। সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ আয়াত ৩৮।
আল্লাহর উপর ঈমানের পর শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস ব্যতীত কোন জিনিষ মানুষকে দুনিয়ার মোহ্ বা ভালবাসা থেকে ফিরাতে পারে না। যখন কেউ বিশ্বাস করবে সকল সম্পদ ধ্বংসশীল তখন আল্লাহর আনুগত্য ও হুকুম পালনে আগ্রহী হবে। দুনিয়া থেকে বিমুখ হয়ে বিশ্বাস করবে যে দুনিয়ার সম্পদের পরিবর্তে তাকে পরকালে উচ্চ ও স্থায়ী নিয়ামত দেওয়া হবে।
সাথে এ বিশ্বাসও রাখবে যে, দুনিয়ার জীবনে পার্থিব সম্পদের মোহে আল্লাহর সীমা অতিক্রম করলে পরকালে তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ভোগ করতে হবে।
মানুষ যখন শেষ দিবস বা পরকালে বিশ্বাস করবে তখন সে নিশ্চিত হবে যে দুনিয়ার কোন নিয়ামতই পরকালের নিয়ামতের সাথে তুলনা করা যায় না। অপর দিকে ক্বিয়ামতের প্রতি বিশ্বাস না রাখা এবং আল্লাহর রাস্তায় দুনিয়ায় পাওয়া শাস্তির সাথে পরকালের শাস্তির কোন তুলনা হয় না। আবার পরকালে বিশ্বাস এবং দুনিয়াতে আল্লাহর পথে কষ্টের জন্য পরকালে যে নিয়ামত দেওয়া হবে তার সাথে দুনিয়ার কোন নিয়ামতের তুলনা হয় না
আমরা মৃত্যুকে সত্য বলে বিশ্বাস করি। মহান আল্লাহ্ বলেন:
﴿قُلْ يَتَوَفَّاكُمْ مَلَكُ الْمَوْتِ الَّذِي وُكِّلَ بِكُمْ ثُمَّ إِلَى رَبِّكُمْ تُرْجَعُونَ﴾ [ السجدة : ১১[
অর্থ: বলুন: তোমাদের প্রাণ হরণের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা তোমাদের প্রাণ হরণ করবে। অতঃপর তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। সূরাহ্ আস্ সাজ্দাহ্ আয়াত ১১।
এটা প্রমাণিত বিষয় যা কারো অজানা নয়, এতে কোন সন্দেহ ও সংশয় নেই। আমরা বিশ্বাস করি যারাই মৃত্যু বরণ করে বা তাকে হত্যা করা হয় অথবা যে কোন কারণে তার মৃত্যু হোক না কেন তা তার নির্দিষ্ট সময় শেষ হয়ে যাওয়ার কারনেই। মানুষের নির্দিষ্ট সময় হতে কোন কিছু কম করা হয় না। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلِكُلِّ أُمَّةٍ أَجَلٌ فَإِذَا جَاءَ أَجَلُهُمْ لَا يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً وَلَا يَسْتَقْدِمُونَ﴾ [ الأعراف : ৩৪[
অর্থ: প্রত্যেক সমপ্রদায়ের একটি মেয়াদ রয়েছে। যখন তাদের মেয়াদ এসে যাবে, তখন তারা না এক মুহুর্ত পিছে যেতে পারবে, আর না এগিয়ে আসতে পারবে। সূরাহ্ আল্ আ'রাফ আয়াত ৩৪।
আমরা ক্ববরের ফিৎনা বা পরীক্ষায় বিশ্বাস করি: তা হলো দাফনের পরে মৃত ব্যক্তিকে তার রব (পালনকর্তা), দ্বীন (ধর্ম) এবং নবী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা।
ঈমানদারদেরকে আল্লাহ্ তায়ালা প্রতিতি কথার উপর দৃঢ় রাখবেন ফলে মু'মিন ব্যক্তি বলবেন: আমার রব্ব আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম), আমার ধর্ম ইসলাম এবং আমার নবী হলেন মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
আর অত্যাচারীদেরকে আল্লাহ্ পথ ভ্রষ্ট করবেন, ফলে কাফের ব্যক্তি বলবে: হায়!হায়! আমি কিছু জানি না।
মুনাফিক্ব বা সন্দিহান ব্যক্তি বলবে: আমি জানি না, মানুষদেরকে কিছু বলতে শুনেছিলাম আমি তাই বলেছিলাম।
আমরা ক্ববরের আযাব ও নিয়ামতে (শান্তিতে) বিশ্বাস করি, ক্ববরের আযাব হবে অত্যাচারী কাফের ও মুনাফেক্বদের। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَوْ تَرَى إِذِ الظَّالِمُونَ فِي غَمَرَاتِ الْمَوْتِ وَالْمَلَائِكَةُ بَاسِطُو أَيْدِيهِمْ أَخْرِجُوا أَنْفُسَكُمُ الْيَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ الْهُونِ بِمَا كُنْتُمْ تَقُولُونَ عَلَى اللَّهِ غَيْرَ الْحَقِّ وَكُنْتُمْ عَنْ آيَاتِهِ تَسْتَكْبِرُونَ﴾ [ الأنعام : ৯৩[
অর্থ: যদি আপনি দেখেন যখন জালেমরা মৃত্যু যন্ত্রণায় থাকে এবং ফেরেশতারা স্বীয় হস্ত প্রসারিত করে বলে, বের কর স্বীয় আত্মা! অদ্য তোমাদেরকে অবমাননাকর শাস্তি প্রদান করা হবে। কারণ, তোমরা আল্লাহর উপর অসত্য বলতে এবং তাঁর আয়াতসমূহ থেকে অহংকার করতে। সূরাহ্ আল্ আন্আম আয়াত ৯৩। আল্লাহ্ তায়ালা ফেরআউনের পরিবার সম্পর্কে বলেন:
﴿النَّارُ يُعْرَضُونَ عَلَيْهَا غُدُوًّا وَعَشِيًّا وَيَوْمَ تَقُومُ السَّاعَةُ أَدْخِلُوا آلَ فِرْعَوْنَ أَشَدَّ الْعَذَابِ﴾ [ غافر : ৪৬[
অর্থ: সকালে ও সন্ধ্যায় তাদেরকে আগুনের সামনে পেশ করা হয় এবং যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে, সেদিন আদেশ করা হবে, ফেরাউন গোত্রকে কঠিনতর আযাবে দাখিল কর। সূরাহ্ আল-মু'মিন - ৪৬। যাইদ বিন সাবিত রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿ِإنَّ هَذِهِ الْأُمَّةَ تُبْتَلَى فِي قُبُورِهَا فَلَوْلَا أَنْ لَا تَدَافَنُوا لَدَعَوْتُ اللَّهَ أَنْ يُسْمِعَكُمْ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ الَّذِي أَسْمَعُ مِنْهُ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ النَّارِ قَالُوا نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ النَّارِ فَقَالَ تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ قَالُوا نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْر﴾ ) صحيح مسلم - ১৪/ ২৮(
অর্থ: এই উম্মত ক্ববরে পরীক্ষিত হবে, যদি তোমরা দাফন করা ছেড়ে না দিতে তবে আমি ক্ববরের আযাবের যে শব্দ শুনতে পায় তোমাদেরকেও তা শোনার জন্য আল্লাহর নিকটে অবশ্যই দুয়া' করতাম।
এরপর তিনি আমাদের মুখোমুখি হয়ে বললেন: তোমরা জাহান্নামের শাস্তি হতে আল্লাহর নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা কর, তাঁরা বললেন: আমরা আল্লাহর নিকটে জাহান্নামের শাস্তি হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এরপর বললেন: তোমরা ক্ববরের শাস্তি হতে আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা কর, তাঁরা বললেন: আমরা আল্লাহর নিকটে ক্ববরের আযাব হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। সহীহ্ মুসলিম ১৪/২৮।
অপর দিকে ক্ববরের নিয়ামত (শান্তি) সত্যবাদী মু'মিনদের জন্য, মহান আল্লাহ্ বলেন:
﴿إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمُ الْمَلَائِكَةُ أَلَّا تَخَافُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَبْشِرُوا بِالْجَنَّةِ الَّتِي كُنْتُمْ تُوعَدُونَ﴾ [ فصلت : ৩০ [
অর্থ: নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ্, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে, তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শোন। সূরাহ্ হামীম আস্ সাজ্দাহ্ আয়াত ৩০। অন্যত্রে মহান রব্বুল আলামীন বলেন:
﴿فَلَوْلَا إِذَا بَلَغَتِ الْحُلْقُومَ (৮৩) وَأَنْتُمْ حِينَئِذٍ تَنْظُرُونَ (৮৪) وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْكُمْ وَلَكِنْ لَا تُبْصِرُونَ (৮৫) فَلَوْلَا إِنْ كُنْتُمْ غَيْرَ مَدِينِينَ (৮৬) تَرْجِعُونَهَا إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ (৮৭) فَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنَ الْمُقَرَّبِينَ (৮৮) فَرَوْحٌ وَرَيْحَانٌ وَجَنَّتُ نَعِيمٍ﴾ [ الواقعة : ৮৩ ৮৯[
অর্থ: অতঃপর যখন কারও প্রাণ কন্ঠাগত হয়। এবং তোমরা তাকিয়ে থাক, তখন আমি তোমাদের অপেক্ষা তার অধিক নিকটে থাকি; কিন্তু তোমরা দেখ না। যদি তোমাদের হিসাব-কিতাব না হওয়াই ঠিক হয়, তবে তোমরা এই আত্মাকে ফিরাও না কেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?
যদি সে নৈকট্যশীলদের একজন হয়; তবে তার জন্যে আছে সুখ, উত্তম রিযিক এবং নিয়ামতে ভরা উদ্যান। সূরাহ্ আল্ ওয়াক্বিয়াহ্ আয়াত ৮৩-৮৯।
বারা বিন আযিব হতে বর্ণিত রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেই মু'মিনের ব্যাপারে বলেছেন যে দুই ফেরেশ্তার প্রশ্নের উত্তর দেয়:
﴿فَيُنَادِي مُنَادٍ فِي السَّمَاءِ أَنْ صَدَقَ عَبْدِي فَأَفْرِشُوهُ مِنْ الْجَنَّةِ وَأَلْبِسُوهُ مِنْ الْجَنَّةِ وَافْتَحُوا لَهُ بَابًا إِلَى الْجَنَّةِ قَالَ فَيَأْتِيهِ مِنْ رَوْحِهَا وَطِيبِهَا وَيُفْسَحُ لَهُ فِي قَبْرِهِ مَدَّ بَصَرِهِ﴾ ( مسند أحمد - ৩৭/ ৪৯০(
অর্থ: (যখন মু'মিন ব্যক্তি ফেরেশ্তার প্রশ্নের উত্তর দিবে) তখন আসমানে একজন আহ্বানকারী জোর আওয়াজে বলবে: আমার বান্দা সত্য বলেছে, তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দাও।
রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:ফলে তার নিকটে জান্নাতের রহমত (আরাম আয়েশ), সুগন্ধি আসতে থাকবে এবং দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত তার ক্ববর প্রশস্ত করা হবে। মুসনাদে আহমাদ ৩৭/৪৯০, সুনানে আবূ দাউদ।
ক্ববরের আযাব এবং দুই ফেরেশ্তার প্রশ্নোত্তর সাব্যস্তে মুতাওয়াতির সূত্রে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনেক হাদীস পাওয়া যায়। যে ব্যক্তি আযাবের যোগ্য সে কবরে শাস্তি ভোগ করবে আর যে নিয়ামতের যোগ্য সে কবরে শান্তিলাভ করবে। অতএব, তা সাব্যস্তের আক্বীদাহ্ পোষণ এবং তার প্রতি ঈমান আনা ওয়াজিব। ক্ববরের শাস্তি-শান্তির ধরনের ব্যাপারে আমাদের কথা বলার অধিকার নেই।
এ ব্যাপারে কথা বলা মানুষের জ্ঞানের বাইরে। কেননা, এ বিষয়ে তার সাথে কোন অঙ্গিকার করা হয়নি এবং এটা দুনিয়ার কোন বিষয় না। ক্ববরের অবস্থা গায়েবী (অদৃশ্য) বিষয় যা অনুভূতি দিয়ে অনুমান করা সম্ভব নয়।
যদি তা অনুভূতি দিয়ে জানা যেত তবে গায়েবের (অদৃশ্যের) প্রতি বিশ্বাসের কোন লাভ বা তাৎপর্য থাকতো না। মানুষকে ইবাদাতের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার হিক্মত শেষ হয়ে যেত। মানুষেরা ক্ববরের শাস্তি অনুভব করতে পারলে দাফন করা বন্ধ করে দিত। যেমন রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿فَلَوْلَا أَنْ لَا تَدَافَنُوا لَدَعَوْتُ اللَّهَ أَنْ يُسْمِعَكُمْ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ الَّذِي أَسْمَعُ مِنْهُ﴾
অর্থ: যদি তোমরা দাফন করা বন্ধ না করে দিতে তবে আমি ক্ববরের যে আযাব শুনতে পায় তা তোমাদেরকে শুনানোর জন্য আল্লাহর নিকটে অবশ্যই দুয়া করতাম। সহীহ্ মুসলিম। আর যেহেতু এই হিকমত পশু-পাখির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় তাই তারা ক্ববরের আযাব শুনতে ও অনুভব করতে পারে।
﴿قُلْ يَتَوَفَّاكُمْ مَلَكُ الْمَوْتِ الَّذِي وُكِّلَ بِكُمْ ثُمَّ إِلَى رَبِّكُمْ تُرْجَعُونَ﴾ [ السجدة : ১১[
অর্থ: বলুন: তোমাদের প্রাণ হরণের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা তোমাদের প্রাণ হরণ করবে। অতঃপর তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। সূরাহ্ আস্ সাজ্দাহ্ আয়াত ১১।
এটা প্রমাণিত বিষয় যা কারো অজানা নয়, এতে কোন সন্দেহ ও সংশয় নেই। আমরা বিশ্বাস করি যারাই মৃত্যু বরণ করে বা তাকে হত্যা করা হয় অথবা যে কোন কারণে তার মৃত্যু হোক না কেন তা তার নির্দিষ্ট সময় শেষ হয়ে যাওয়ার কারনেই। মানুষের নির্দিষ্ট সময় হতে কোন কিছু কম করা হয় না। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلِكُلِّ أُمَّةٍ أَجَلٌ فَإِذَا جَاءَ أَجَلُهُمْ لَا يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً وَلَا يَسْتَقْدِمُونَ﴾ [ الأعراف : ৩৪[
অর্থ: প্রত্যেক সমপ্রদায়ের একটি মেয়াদ রয়েছে। যখন তাদের মেয়াদ এসে যাবে, তখন তারা না এক মুহুর্ত পিছে যেতে পারবে, আর না এগিয়ে আসতে পারবে। সূরাহ্ আল্ আ'রাফ আয়াত ৩৪।
আমরা ক্ববরের ফিৎনা বা পরীক্ষায় বিশ্বাস করি: তা হলো দাফনের পরে মৃত ব্যক্তিকে তার রব (পালনকর্তা), দ্বীন (ধর্ম) এবং নবী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা।
ঈমানদারদেরকে আল্লাহ্ তায়ালা প্রতিতি কথার উপর দৃঢ় রাখবেন ফলে মু'মিন ব্যক্তি বলবেন: আমার রব্ব আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম), আমার ধর্ম ইসলাম এবং আমার নবী হলেন মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।
আর অত্যাচারীদেরকে আল্লাহ্ পথ ভ্রষ্ট করবেন, ফলে কাফের ব্যক্তি বলবে: হায়!হায়! আমি কিছু জানি না।
মুনাফিক্ব বা সন্দিহান ব্যক্তি বলবে: আমি জানি না, মানুষদেরকে কিছু বলতে শুনেছিলাম আমি তাই বলেছিলাম।
আমরা ক্ববরের আযাব ও নিয়ামতে (শান্তিতে) বিশ্বাস করি, ক্ববরের আযাব হবে অত্যাচারী কাফের ও মুনাফেক্বদের। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَلَوْ تَرَى إِذِ الظَّالِمُونَ فِي غَمَرَاتِ الْمَوْتِ وَالْمَلَائِكَةُ بَاسِطُو أَيْدِيهِمْ أَخْرِجُوا أَنْفُسَكُمُ الْيَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ الْهُونِ بِمَا كُنْتُمْ تَقُولُونَ عَلَى اللَّهِ غَيْرَ الْحَقِّ وَكُنْتُمْ عَنْ آيَاتِهِ تَسْتَكْبِرُونَ﴾ [ الأنعام : ৯৩[
অর্থ: যদি আপনি দেখেন যখন জালেমরা মৃত্যু যন্ত্রণায় থাকে এবং ফেরেশতারা স্বীয় হস্ত প্রসারিত করে বলে, বের কর স্বীয় আত্মা! অদ্য তোমাদেরকে অবমাননাকর শাস্তি প্রদান করা হবে। কারণ, তোমরা আল্লাহর উপর অসত্য বলতে এবং তাঁর আয়াতসমূহ থেকে অহংকার করতে। সূরাহ্ আল্ আন্আম আয়াত ৯৩। আল্লাহ্ তায়ালা ফেরআউনের পরিবার সম্পর্কে বলেন:
﴿النَّارُ يُعْرَضُونَ عَلَيْهَا غُدُوًّا وَعَشِيًّا وَيَوْمَ تَقُومُ السَّاعَةُ أَدْخِلُوا آلَ فِرْعَوْنَ أَشَدَّ الْعَذَابِ﴾ [ غافر : ৪৬[
অর্থ: সকালে ও সন্ধ্যায় তাদেরকে আগুনের সামনে পেশ করা হয় এবং যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে, সেদিন আদেশ করা হবে, ফেরাউন গোত্রকে কঠিনতর আযাবে দাখিল কর। সূরাহ্ আল-মু'মিন - ৪৬। যাইদ বিন সাবিত রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿ِإنَّ هَذِهِ الْأُمَّةَ تُبْتَلَى فِي قُبُورِهَا فَلَوْلَا أَنْ لَا تَدَافَنُوا لَدَعَوْتُ اللَّهَ أَنْ يُسْمِعَكُمْ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ الَّذِي أَسْمَعُ مِنْهُ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ النَّارِ قَالُوا نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ النَّارِ فَقَالَ تَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ قَالُوا نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْر﴾ ) صحيح مسلم - ১৪/ ২৮(
অর্থ: এই উম্মত ক্ববরে পরীক্ষিত হবে, যদি তোমরা দাফন করা ছেড়ে না দিতে তবে আমি ক্ববরের আযাবের যে শব্দ শুনতে পায় তোমাদেরকেও তা শোনার জন্য আল্লাহর নিকটে অবশ্যই দুয়া' করতাম।
এরপর তিনি আমাদের মুখোমুখি হয়ে বললেন: তোমরা জাহান্নামের শাস্তি হতে আল্লাহর নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা কর, তাঁরা বললেন: আমরা আল্লাহর নিকটে জাহান্নামের শাস্তি হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এরপর বললেন: তোমরা ক্ববরের শাস্তি হতে আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা কর, তাঁরা বললেন: আমরা আল্লাহর নিকটে ক্ববরের আযাব হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। সহীহ্ মুসলিম ১৪/২৮।
অপর দিকে ক্ববরের নিয়ামত (শান্তি) সত্যবাদী মু'মিনদের জন্য, মহান আল্লাহ্ বলেন:
﴿إِنَّ الَّذِينَ قَالُوا رَبُّنَا اللَّهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوا تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمُ الْمَلَائِكَةُ أَلَّا تَخَافُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَبْشِرُوا بِالْجَنَّةِ الَّتِي كُنْتُمْ تُوعَدُونَ﴾ [ فصلت : ৩০ [
অর্থ: নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ্, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয় এবং বলে, তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না এবং তোমাদের প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুসংবাদ শোন। সূরাহ্ হামীম আস্ সাজ্দাহ্ আয়াত ৩০। অন্যত্রে মহান রব্বুল আলামীন বলেন:
﴿فَلَوْلَا إِذَا بَلَغَتِ الْحُلْقُومَ (৮৩) وَأَنْتُمْ حِينَئِذٍ تَنْظُرُونَ (৮৪) وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْكُمْ وَلَكِنْ لَا تُبْصِرُونَ (৮৫) فَلَوْلَا إِنْ كُنْتُمْ غَيْرَ مَدِينِينَ (৮৬) تَرْجِعُونَهَا إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ (৮৭) فَأَمَّا إِنْ كَانَ مِنَ الْمُقَرَّبِينَ (৮৮) فَرَوْحٌ وَرَيْحَانٌ وَجَنَّتُ نَعِيمٍ﴾ [ الواقعة : ৮৩ ৮৯[
অর্থ: অতঃপর যখন কারও প্রাণ কন্ঠাগত হয়। এবং তোমরা তাকিয়ে থাক, তখন আমি তোমাদের অপেক্ষা তার অধিক নিকটে থাকি; কিন্তু তোমরা দেখ না। যদি তোমাদের হিসাব-কিতাব না হওয়াই ঠিক হয়, তবে তোমরা এই আত্মাকে ফিরাও না কেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?
যদি সে নৈকট্যশীলদের একজন হয়; তবে তার জন্যে আছে সুখ, উত্তম রিযিক এবং নিয়ামতে ভরা উদ্যান। সূরাহ্ আল্ ওয়াক্বিয়াহ্ আয়াত ৮৩-৮৯।
বারা বিন আযিব হতে বর্ণিত রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেই মু'মিনের ব্যাপারে বলেছেন যে দুই ফেরেশ্তার প্রশ্নের উত্তর দেয়:
﴿فَيُنَادِي مُنَادٍ فِي السَّمَاءِ أَنْ صَدَقَ عَبْدِي فَأَفْرِشُوهُ مِنْ الْجَنَّةِ وَأَلْبِسُوهُ مِنْ الْجَنَّةِ وَافْتَحُوا لَهُ بَابًا إِلَى الْجَنَّةِ قَالَ فَيَأْتِيهِ مِنْ رَوْحِهَا وَطِيبِهَا وَيُفْسَحُ لَهُ فِي قَبْرِهِ مَدَّ بَصَرِهِ﴾ ( مسند أحمد - ৩৭/ ৪৯০(
অর্থ: (যখন মু'মিন ব্যক্তি ফেরেশ্তার প্রশ্নের উত্তর দিবে) তখন আসমানে একজন আহ্বানকারী জোর আওয়াজে বলবে: আমার বান্দা সত্য বলেছে, তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দাও।
রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:ফলে তার নিকটে জান্নাতের রহমত (আরাম আয়েশ), সুগন্ধি আসতে থাকবে এবং দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত তার ক্ববর প্রশস্ত করা হবে। মুসনাদে আহমাদ ৩৭/৪৯০, সুনানে আবূ দাউদ।
ক্ববরের আযাব এবং দুই ফেরেশ্তার প্রশ্নোত্তর সাব্যস্তে মুতাওয়াতির সূত্রে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনেক হাদীস পাওয়া যায়। যে ব্যক্তি আযাবের যোগ্য সে কবরে শাস্তি ভোগ করবে আর যে নিয়ামতের যোগ্য সে কবরে শান্তিলাভ করবে। অতএব, তা সাব্যস্তের আক্বীদাহ্ পোষণ এবং তার প্রতি ঈমান আনা ওয়াজিব। ক্ববরের শাস্তি-শান্তির ধরনের ব্যাপারে আমাদের কথা বলার অধিকার নেই।
এ ব্যাপারে কথা বলা মানুষের জ্ঞানের বাইরে। কেননা, এ বিষয়ে তার সাথে কোন অঙ্গিকার করা হয়নি এবং এটা দুনিয়ার কোন বিষয় না। ক্ববরের অবস্থা গায়েবী (অদৃশ্য) বিষয় যা অনুভূতি দিয়ে অনুমান করা সম্ভব নয়।
যদি তা অনুভূতি দিয়ে জানা যেত তবে গায়েবের (অদৃশ্যের) প্রতি বিশ্বাসের কোন লাভ বা তাৎপর্য থাকতো না। মানুষকে ইবাদাতের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার হিক্মত শেষ হয়ে যেত। মানুষেরা ক্ববরের শাস্তি অনুভব করতে পারলে দাফন করা বন্ধ করে দিত। যেমন রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿فَلَوْلَا أَنْ لَا تَدَافَنُوا لَدَعَوْتُ اللَّهَ أَنْ يُسْمِعَكُمْ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ الَّذِي أَسْمَعُ مِنْهُ﴾
অর্থ: যদি তোমরা দাফন করা বন্ধ না করে দিতে তবে আমি ক্ববরের যে আযাব শুনতে পায় তা তোমাদেরকে শুনানোর জন্য আল্লাহর নিকটে অবশ্যই দুয়া করতাম। সহীহ্ মুসলিম। আর যেহেতু এই হিকমত পশু-পাখির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় তাই তারা ক্ববরের আযাব শুনতে ও অনুভব করতে পারে।
ক্বিয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা ওয়াজিব। ক্বিয়ামত আসবে এতে কোন সন্দেহ নেই। এর নির্দিষ্ট সময় আল্লাহ্ ব্যতীত কেউ জানে না, তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) এ বিষয়টি সকল মানুষ থেকে গোপন রেখেছেন। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿يَسْأَلُونَكَ عَنِ السَّاعَةِ أَيَّانَ مُرْسَاهَا قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِنْدَ رَبِّي لَا يُجَلِّيهَا لِوَقْتِهَا إِلَّا هُوَ ثَقُلَتْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ لَا تَأْتِيكُمْ إِلَّا بَغْتَةً يَسْأَلُونَكَ كَأَنَّكَ حَفِيٌّ عَنْهَا قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِنْدَ اللَّهِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ﴾ [ الأعراف : ১৮৭[
অর্থ: আপনাকে জিজ্ঞেস করে, কিয়ামত কখন অনুতি হবে? বলে দিন এর খবর তো আমার পালনকর্তার কাছেই রয়েছে। তিনিই তা অনাবৃত করে দেখাবেন নির্ধারিত সময়ে। আসমান ও যমীনের জন্য সেটি অতি কঠিন বিষয়। যখন তা তোমাদের উপর আসবে অজান্তেই এসে যাবে। আপনাকে জিজ্ঞেস করতে থাকে, যেন আপনি তার অনুসন্ধানে লেগে আছেন। বলে দিন, এর সংবাদ বিশেষ করে আল্লাহর নিকটই রয়েছে। কিন্তূ তা অধিকাংশ লোকই উপলব্ধি করে না। সূরাহ্ আল্ আ'রাফ আয়াত ১৮৭।
ক্বিয়ামতের আলামত, সঙ্কেত ও নিদর্শন সম্পর্কে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনেক হাদীস আছে। সহীহ্ সূত্রে পাওয়া যায় রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্বিয়ামতের কিছু ছোট আলামতের সংবাদ দিয়েছেন।
যার অধিকাংশ মানুষের দুর্নীতি, পারস্পারিক গোলযোগ এবং আল্লাহর সঠিক পথ থেকে তাদের পদস্খলনের সাথে সম্পৃক্ত।
ক্বিয়ামতের কিছু ছোট আলামত জিবরীল এর হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। তিনি রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ক্বিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন এ ব্যাপারে প্রশ্নকৃত প্রশ্নকারী থেকে অধিক জ্ঞাতনন। জিবরীল বলেছিলেন, তাহলে এর আলামত বা নিদর্শন সম্পর্কে আমাকে সংবাদ দিন? তখন রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন:
﴿قَالَ أَنْ تَلِدَ الْأَمَةُ رَبَّتَهَا وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِ﴾ ( صحيح مسلم - ১/ ৮৭(
অর্থ: দাসী তার মালিককে জন্ম দিবে (মায়ের সাথে ছেলে মেয়েরা দাসীর মতো আচরণ করবে বা যুদ্ধ বিগ্রহ বেশী হওয়ার কারণে সন্তান ও পিতা-মাতার খোজ থাকবে না, ফলে সন্তানেরা মায়ের মালিক হবে), জুতা ও বস্ত্রহীন গরীব ছাগল চারণকারীরা বাড়ি বা বিল্ডিং নিয়ে একে অপরের উপর গর্ব করবে। (বুখারী ও মুসলিম)।
এক ব্যক্তি রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন ক্বিয়ামত কখন সংঘটিত হবে? রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন:
﴿إِذَا ضُيِّعَتْ الْأَمَانَةُ فَانْتَظِرْ السَّاعَةَ قَالَ كَيْفَ إِضَاعَتُهَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ إِذَا أُسْنِدَ الْأَمْرُ إِلَى غَيْرِ أَهْلِهِ فَانْتَظِرْ السَّاعَةَ﴾ ( صحيح البخاري ২০/১৪৯)
অর্থ: যখন আমানত নষ্ট করা হবে তখন তুমি ক্বিয়ামতের অপেক্ষা করবে। সাহাবী বললেন: কিভাবে আমানত নষ্ট হবে?
তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: যখন অযোগ্য ব্যক্তিকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হবে তখন তুমি ক্বিয়ামতের অপেক্ষা কর। সহীহুল বুখারী ২০/১৪৯।
ক্বিয়ামতের বড় আলামত বা নিদর্শন:
ইহা ক্বিয়ামতের নিকটবর্তী সেই আলামতসমূহ যার পরেই ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে। আর তা কর্তিত পুঁতির মালার (কাঠির) ন্যায় ধারাবাহিকভাবে আসতে থাকবে।
সহীহ্ হাদীসে এরূপ দশটি আলামতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। হুযাইফাহ্ বিন উসাইদ্ আল্ গিফারী বর্ণিত হাদীসে এসেছে তিনি বলেন:
﴿اطَّلَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَيْنَا وَنَحْنُ نَتَذَاكَرُ فَقَالَ مَا تَذَاكَرُونَ قَالُوا نَذْكُرُ السَّاعَةَ قَالَ إِنَّهَا لَنْ تَقُومَ حَتَّى تَرَوْنَ قَبْلَهَا عَشْرَ آيَاتٍ فَذَكَرَ الدُّخَانَ وَالدَّجَّالَ وَالدَّابَّةَ وَطُلُوعَ الشَّمْسِ مِنْ مَغْرِبِهَا وَنُزُولَ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَأَجُوجَ وَمَأْجُوجَ وَثَلَاثَةَ خُسُوفٍ خَسْفٌ بِالْمَشْرِقِ وَخَسْفٌ بِالْمَغْرِبِ وَخَسْفٌ بِجَزِيرَةِ الْعَرَبِ وَآخِرُ ذَلِكَ نَارٌ تَخْرُجُ مِنْ الْيَمَنِ تَطْرُدُ النَّاسَ إِلَى مَحْشَرِهِمْ﴾ ) صحيح مسلم - (১৪ / ৯৪)
অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন আমাদের উপর উঁকি মেরে দেখলেন আমরা পরস্পর কোন বিষয়ে আলোচনা করছি। তিনি বললেন: তোমরা কি আলোচনা করছো? তাঁরা বললেন: আমরা ক্বিয়ামতের আলোচনা করছি। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: দশটি আলামত দেখার আগে ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না।
আর সেগুলো হল: ধোঁয়া, দাজ্জাল, দাব্বাহ্ (চতুষ্পদ জন্তুর বহির্গমন), পশ্চিম দিগন্ত হতে সূর্য উদিত হওয়া, ঈসা বিন মারইয়ামের অবতরণ, ইয়াজুজ-মাজুজের বের হওয়া, তিনটি ভূমি ধস: প্রাচ্যে, পাশ্চাত্যে এবং আরব উপদ্বীপে।
আর সর্বশেষে ইয়ামান থেকে এক আগুন বের হবে যা মানুষদেরকে হাশরের ময়দানের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে। সহীহ্ মুসলিম। উদাহরণসরূপ আমরা একটি বড় আলামত সম্পর্কে আলোচনা করবো, সেটি হল:
দাজ্জালের প্রকাশ:
দাজ্জাল হলো কুফরী, পথ ভ্রষ্টতা এবং ফিতনার মূল। সকল নাবী আলাইহিমুস্ সালাম নিজ নিজ উম্মতকে দাজ্জালের ব্যাপারে সতর্ক ও ভয় প্রদর্শন করেছেন। নবীগণ তাঁদের উম্মতের নিকট দাজ্জালের সকল গুণাগুণ এবং আলামত স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। আমাদের নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাজ্জালের ব্যাপারে তাঁর উম্মতকে এমনভাবে সতর্ক ও তার আলামত বর্ণনা করেছেন যা চক্ষুস্মান ব্যক্তির নিকটে গোপন থাকতে পারে না।
আনাস রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿مَا مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا وَقَدْ أَنْذَرَ أُمَّتَهُ الْأَعْوَرَ الْكَذَّابَ أَلَا إِنَّهُ أَعْوَرُ وَإِنَّ رَبَّكُمْ لَيْسَ بِأَعْوَرَ وَمَكْتُوبٌ بَيْنَ عَيْنَيْهِ ك ف ر﴾ ) صحيح مسلم -১৪/ ১৫৮)
অর্থ: প্রত্যেক নবী তাঁর উম্মতকে এক চোখ কানা দাজ্জাল থেকে সতর্ক করেছেন। জেনে রেখো দাজ্জালের এক চোখ কানা, কিন্তু তোমাদের রব (পালনকর্তা) কানা নয়। আর দাজ্জালের দুই চোখের মাঝে (কপালে) কাফ; ফা; র; তথা কাফের লেখা থাকবে। বুখারী ও মুসলিম। আবূ হুরাইরাহ্ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿أَلَا أُحَدِّثُكُمْ حَدِيثًا عَنْ الدَّجَّالِ مَا حَدَّثَ بِهِ نَبِيٌّ قَوْمَهُ إِنَّهُ أَعْوَرُ وَإِنَّهُ يَجِيءُ مَعَهُ بِمِثَالِ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ فَالَّتِي يَقُولُ إِنَّهَا الْجَنَّةُ هِيَ النَّارُ وَإِنِّي أُنْذِرُكُمْ كَمَا أَنْذَرَ بِهِ نُوحٌ قَوْمَهُ﴾ ( صحيح البخاري - (১১ / ১২১)
অর্থ: আমি কি তোমাদেরকে দাজ্জাল সম্পর্কে সেই হাদীস বলব না যা প্রত্যেক নাবী তাঁর জাতিকে বলেছেন ? দাজ্জালের এক চোখ কানা হবে। তার সাথে জান্নাত ও জাহান্নাহামের অনুরুপ জান্নাত-জাহান্নাম থাকবে। দাজ্জাল যেটাকে জান্নাত বলবে সেটা মূলত জাহান্নাম। আমি তোমাদেরকে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করছি যেমন নূহ্ তাঁর জাতিকে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন। বুখারী ও মুসলিম। ইল্ম (জ্ঞান) ও আমল ব্যাতীত দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচা সম্ভব নয়।
ইল্ম হল: এ জ্ঞান থাকা যে দাজ্জাল শরীর বিশিষ্ট খাদ্য-পানীয় গ্রহণ করে। তার অপূর্ণতা হলো এক চোখ কানা হবে। তার উভয় চোখের মাঝে (কপালে) কাফের লেখা থাকবে।
আমল হল: প্রত্যেক সালাতের শেষ তাশাহুদে আল্লাহর নিকটে দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা, সূরা আল্ কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করা। কেননা রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿مَنْ حَفِظَ عَشْرَ آيَاتٍ مِنْ أَوَّلِ سُورَةِ الْكَهْف عُصِمَ مِنْ الدَّجَّالِ﴾ ( صحيح مسلم - (৪ / ২৩৮)
অর্থ: যে ব্যক্তি সূরাহ্ আল্ কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করল সে দাজ্জাল থেকে মুক্তি পাবে। সহীহ্ মুসলিম।
﴿يَسْأَلُونَكَ عَنِ السَّاعَةِ أَيَّانَ مُرْسَاهَا قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِنْدَ رَبِّي لَا يُجَلِّيهَا لِوَقْتِهَا إِلَّا هُوَ ثَقُلَتْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ لَا تَأْتِيكُمْ إِلَّا بَغْتَةً يَسْأَلُونَكَ كَأَنَّكَ حَفِيٌّ عَنْهَا قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِنْدَ اللَّهِ وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ﴾ [ الأعراف : ১৮৭[
অর্থ: আপনাকে জিজ্ঞেস করে, কিয়ামত কখন অনুতি হবে? বলে দিন এর খবর তো আমার পালনকর্তার কাছেই রয়েছে। তিনিই তা অনাবৃত করে দেখাবেন নির্ধারিত সময়ে। আসমান ও যমীনের জন্য সেটি অতি কঠিন বিষয়। যখন তা তোমাদের উপর আসবে অজান্তেই এসে যাবে। আপনাকে জিজ্ঞেস করতে থাকে, যেন আপনি তার অনুসন্ধানে লেগে আছেন। বলে দিন, এর সংবাদ বিশেষ করে আল্লাহর নিকটই রয়েছে। কিন্তূ তা অধিকাংশ লোকই উপলব্ধি করে না। সূরাহ্ আল্ আ'রাফ আয়াত ১৮৭।
ক্বিয়ামতের আলামত, সঙ্কেত ও নিদর্শন সম্পর্কে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনেক হাদীস আছে। সহীহ্ সূত্রে পাওয়া যায় রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্বিয়ামতের কিছু ছোট আলামতের সংবাদ দিয়েছেন।
যার অধিকাংশ মানুষের দুর্নীতি, পারস্পারিক গোলযোগ এবং আল্লাহর সঠিক পথ থেকে তাদের পদস্খলনের সাথে সম্পৃক্ত।
ক্বিয়ামতের কিছু ছোট আলামত জিবরীল এর হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। তিনি রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ক্বিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন এ ব্যাপারে প্রশ্নকৃত প্রশ্নকারী থেকে অধিক জ্ঞাতনন। জিবরীল বলেছিলেন, তাহলে এর আলামত বা নিদর্শন সম্পর্কে আমাকে সংবাদ দিন? তখন রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন:
﴿قَالَ أَنْ تَلِدَ الْأَمَةُ رَبَّتَهَا وَأَنْ تَرَى الْحُفَاةَ الْعُرَاةَ الْعَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ فِي الْبُنْيَانِ﴾ ( صحيح مسلم - ১/ ৮৭(
অর্থ: দাসী তার মালিককে জন্ম দিবে (মায়ের সাথে ছেলে মেয়েরা দাসীর মতো আচরণ করবে বা যুদ্ধ বিগ্রহ বেশী হওয়ার কারণে সন্তান ও পিতা-মাতার খোজ থাকবে না, ফলে সন্তানেরা মায়ের মালিক হবে), জুতা ও বস্ত্রহীন গরীব ছাগল চারণকারীরা বাড়ি বা বিল্ডিং নিয়ে একে অপরের উপর গর্ব করবে। (বুখারী ও মুসলিম)।
এক ব্যক্তি রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন ক্বিয়ামত কখন সংঘটিত হবে? রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন:
﴿إِذَا ضُيِّعَتْ الْأَمَانَةُ فَانْتَظِرْ السَّاعَةَ قَالَ كَيْفَ إِضَاعَتُهَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ إِذَا أُسْنِدَ الْأَمْرُ إِلَى غَيْرِ أَهْلِهِ فَانْتَظِرْ السَّاعَةَ﴾ ( صحيح البخاري ২০/১৪৯)
অর্থ: যখন আমানত নষ্ট করা হবে তখন তুমি ক্বিয়ামতের অপেক্ষা করবে। সাহাবী বললেন: কিভাবে আমানত নষ্ট হবে?
তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: যখন অযোগ্য ব্যক্তিকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হবে তখন তুমি ক্বিয়ামতের অপেক্ষা কর। সহীহুল বুখারী ২০/১৪৯।
ক্বিয়ামতের বড় আলামত বা নিদর্শন:
ইহা ক্বিয়ামতের নিকটবর্তী সেই আলামতসমূহ যার পরেই ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে। আর তা কর্তিত পুঁতির মালার (কাঠির) ন্যায় ধারাবাহিকভাবে আসতে থাকবে।
সহীহ্ হাদীসে এরূপ দশটি আলামতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। হুযাইফাহ্ বিন উসাইদ্ আল্ গিফারী বর্ণিত হাদীসে এসেছে তিনি বলেন:
﴿اطَّلَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَيْنَا وَنَحْنُ نَتَذَاكَرُ فَقَالَ مَا تَذَاكَرُونَ قَالُوا نَذْكُرُ السَّاعَةَ قَالَ إِنَّهَا لَنْ تَقُومَ حَتَّى تَرَوْنَ قَبْلَهَا عَشْرَ آيَاتٍ فَذَكَرَ الدُّخَانَ وَالدَّجَّالَ وَالدَّابَّةَ وَطُلُوعَ الشَّمْسِ مِنْ مَغْرِبِهَا وَنُزُولَ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَأَجُوجَ وَمَأْجُوجَ وَثَلَاثَةَ خُسُوفٍ خَسْفٌ بِالْمَشْرِقِ وَخَسْفٌ بِالْمَغْرِبِ وَخَسْفٌ بِجَزِيرَةِ الْعَرَبِ وَآخِرُ ذَلِكَ نَارٌ تَخْرُجُ مِنْ الْيَمَنِ تَطْرُدُ النَّاسَ إِلَى مَحْشَرِهِمْ﴾ ) صحيح مسلم - (১৪ / ৯৪)
অর্থ: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন আমাদের উপর উঁকি মেরে দেখলেন আমরা পরস্পর কোন বিষয়ে আলোচনা করছি। তিনি বললেন: তোমরা কি আলোচনা করছো? তাঁরা বললেন: আমরা ক্বিয়ামতের আলোচনা করছি। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: দশটি আলামত দেখার আগে ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না।
আর সেগুলো হল: ধোঁয়া, দাজ্জাল, দাব্বাহ্ (চতুষ্পদ জন্তুর বহির্গমন), পশ্চিম দিগন্ত হতে সূর্য উদিত হওয়া, ঈসা বিন মারইয়ামের অবতরণ, ইয়াজুজ-মাজুজের বের হওয়া, তিনটি ভূমি ধস: প্রাচ্যে, পাশ্চাত্যে এবং আরব উপদ্বীপে।
আর সর্বশেষে ইয়ামান থেকে এক আগুন বের হবে যা মানুষদেরকে হাশরের ময়দানের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে। সহীহ্ মুসলিম। উদাহরণসরূপ আমরা একটি বড় আলামত সম্পর্কে আলোচনা করবো, সেটি হল:
দাজ্জালের প্রকাশ:
দাজ্জাল হলো কুফরী, পথ ভ্রষ্টতা এবং ফিতনার মূল। সকল নাবী আলাইহিমুস্ সালাম নিজ নিজ উম্মতকে দাজ্জালের ব্যাপারে সতর্ক ও ভয় প্রদর্শন করেছেন। নবীগণ তাঁদের উম্মতের নিকট দাজ্জালের সকল গুণাগুণ এবং আলামত স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। আমাদের নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাজ্জালের ব্যাপারে তাঁর উম্মতকে এমনভাবে সতর্ক ও তার আলামত বর্ণনা করেছেন যা চক্ষুস্মান ব্যক্তির নিকটে গোপন থাকতে পারে না।
আনাস রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿مَا مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا وَقَدْ أَنْذَرَ أُمَّتَهُ الْأَعْوَرَ الْكَذَّابَ أَلَا إِنَّهُ أَعْوَرُ وَإِنَّ رَبَّكُمْ لَيْسَ بِأَعْوَرَ وَمَكْتُوبٌ بَيْنَ عَيْنَيْهِ ك ف ر﴾ ) صحيح مسلم -১৪/ ১৫৮)
অর্থ: প্রত্যেক নবী তাঁর উম্মতকে এক চোখ কানা দাজ্জাল থেকে সতর্ক করেছেন। জেনে রেখো দাজ্জালের এক চোখ কানা, কিন্তু তোমাদের রব (পালনকর্তা) কানা নয়। আর দাজ্জালের দুই চোখের মাঝে (কপালে) কাফ; ফা; র; তথা কাফের লেখা থাকবে। বুখারী ও মুসলিম। আবূ হুরাইরাহ্ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿أَلَا أُحَدِّثُكُمْ حَدِيثًا عَنْ الدَّجَّالِ مَا حَدَّثَ بِهِ نَبِيٌّ قَوْمَهُ إِنَّهُ أَعْوَرُ وَإِنَّهُ يَجِيءُ مَعَهُ بِمِثَالِ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ فَالَّتِي يَقُولُ إِنَّهَا الْجَنَّةُ هِيَ النَّارُ وَإِنِّي أُنْذِرُكُمْ كَمَا أَنْذَرَ بِهِ نُوحٌ قَوْمَهُ﴾ ( صحيح البخاري - (১১ / ১২১)
অর্থ: আমি কি তোমাদেরকে দাজ্জাল সম্পর্কে সেই হাদীস বলব না যা প্রত্যেক নাবী তাঁর জাতিকে বলেছেন ? দাজ্জালের এক চোখ কানা হবে। তার সাথে জান্নাত ও জাহান্নাহামের অনুরুপ জান্নাত-জাহান্নাম থাকবে। দাজ্জাল যেটাকে জান্নাত বলবে সেটা মূলত জাহান্নাম। আমি তোমাদেরকে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করছি যেমন নূহ্ তাঁর জাতিকে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন। বুখারী ও মুসলিম। ইল্ম (জ্ঞান) ও আমল ব্যাতীত দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচা সম্ভব নয়।
ইল্ম হল: এ জ্ঞান থাকা যে দাজ্জাল শরীর বিশিষ্ট খাদ্য-পানীয় গ্রহণ করে। তার অপূর্ণতা হলো এক চোখ কানা হবে। তার উভয় চোখের মাঝে (কপালে) কাফের লেখা থাকবে।
আমল হল: প্রত্যেক সালাতের শেষ তাশাহুদে আল্লাহর নিকটে দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা, সূরা আল্ কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করা। কেননা রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿مَنْ حَفِظَ عَشْرَ آيَاتٍ مِنْ أَوَّلِ سُورَةِ الْكَهْف عُصِمَ مِنْ الدَّجَّالِ﴾ ( صحيح مسلم - (৪ / ২৩৮)
অর্থ: যে ব্যক্তি সূরাহ্ আল্ কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করল সে দাজ্জাল থেকে মুক্তি পাবে। সহীহ্ মুসলিম।
ক্বুরআন, সুন্নাহ্, মানুষের জ্ঞান ও অবিকৃত মন-মানসিকতা পূনরুত্থানে বিশ্বাসের প্রমাণ বহণ করে। তাই আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে কবরস্থিতদেরকে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ক্ববর হতে পূরুত্থান করবেন। প্রত্যেক শরীরে আত্মা ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং সকল মানুষ আল্লাহ্ রব্বুল আলামীনের সামনে দন্ডায়মান হবে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿ثُمَّ إِنَّكُمْ بَعْدَ ذَلِكَ لَمَيِّتُونَ (১৫) ثُمَّ إِنَّكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ تُبْعَثُونَ﴾ [ المؤمنون [
অর্থ: এরপর তোমরা মৃত্যুবরণ করবে, অতঃপর ক্বিয়ামতের দিন তোমরা পুনরুত্থিত হবে। সূরাহ্ আল্ মু'মিনূন আয়াত ১৫-১৬। নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
{ يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حُفَاةً عُرَاةً غُرْلًا }
অর্থ: ক্বিয়ামতের দিন মানুষদেরকে জুতা, বস্ত্র ও খাৎনাবিহীন অবস্থায় একত্রিত করা হবে। বুখারী ও মুসলিম।
সকল মুসলিমগণ পুনরুত্থান সাব্যস্তে ঐক্যমত, বাস্তবতার চাহিদাও তাই। কেননা, হিক্মত তো এটাই চায় যে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সৃষ্টিজীবের জন্য একটা প্রত্যাবর্তনস্থল করবেন যাতে তিনি তাদেরকে রাসূলদের মাধ্যমে দেওয়া দায়িত্বের প্রতিদান দিবেন। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ ﴾ [ المؤمنون : ১১৫[
অর্থ: তোমরা কি ধারণা কর যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবে না? সূরাহ্ আল মু'মিনূন আয়াত ১১৫।
অসম্ভব মনে করে কাফেররা মৃত্যু পরবর্তী পূনুরুত্থানকে অস্বীকার করে। এ ধারণা ভুল, শরীয়ত, অনুভূতি এবং জ্ঞান এ ধারণার বাতিল হওয়ার উপর প্রমাণ বহন করে। শরীয়তের দলীল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿زَعَمَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنْ لَنْ يُبْعَثُوا قُلْ بَلَى وَرَبِّي لَتُبْعَثُنَّ ثُمَّ لَتُنَبَّؤُنَّ بِمَا عَمِلْتُمْ وَذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ﴾ [ التغابن : ৭[
অর্থ: কাফেররা দাবী করে যে, তারা কখনও পুনরুত্থিত হবে না। বলুন, অবশ্যই হবে। আমার পালনকর্তার কসম, তোমরা নিশ্চয় পুনরুত্থিত হবে। অতঃপর তোমাদেরকে অবহিত করা হবে যা তোমরা করতে। এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ। সূরাহ্ আত্ তাগাবুন আয়াত ৭।
অন্য স্থানে মহান রব্বুল আলামীন বলেন:
﴿وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لَا تَأْتِينَا السَّاعَةُ قُلْ بَلَى وَرَبِّي لَتَأْتِيَنَّكُمْ عَالِمِ الْغَيْبِ لَا يَعْزُبُ عَنْهُ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَلَا فِي الْأَرْضِ وَلَا أَصْغَرُ مِنْ ذَلِكَ وَلَا أَكْبَرُ إِلَّا فِي كِتَابٍ مُبِينٍ﴾ [ سبأ : ৩[
অর্থ: কাফিররা বলে আমাদের উপর ক্বিয়ামত আসবে না। বলুন: কেন আসবে না? আমার পালনকর্তার শপথ-অবশ্যই আসবে। তিনি অদৃশ্য সমপর্কে জ্ঞাত। নভোমন্ডলে ও ভূ-মন্ডলে তাঁর আগোচরে নয় অণু পরিমাণ কিছু, না তদপেক্ষা ক্ষুদ্র এবং না বৃহৎ-সব কিছু আছে সুসপষ্ট কিতাবে। সূরাহ্ সাবা আয়াত ৩। পুনরুত্থান সত্যের ব্যাপারে সকল আসমানী কিতাব একমত।
অনুভূতির দলীল: আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর বান্দাদেরকে দুয়িাতেই মৃতকে জীবিত করে দেখিয়েছেন। সূরাতুল বাক্বারাতে এ ব্যাপারে পাঁচটি দৃষ্টান্ত রয়েছে, প্রথমটি আমরা উল্লেখ করছি: তা হলো যখন মূসা এর জাতি তাঁকে বলেছিল: আল্লাহ্ তাআ'লাকে স্পষ্টভাবে না দেখা পর্যন্ত আমরা তোমার প্রতি ঈমান আনব না, অতঃপর আল্লাহ্ তাদেরকে মৃত্যু দানকরতঃ পুণরায় জীবিত করেন। এ ক্ষেত্রেই আল্লাহ্ বনী ইসরাঈলকে সম্বোধন করে বলেন:
﴿وَإِذْ قُلْتُمْ يَا مُوسَى لَنْ نُؤْمِنَ لَكَ حَتَّى نَرَى اللَّهَ جَهْرَةً فَأَخَذَتْكُمُ الصَّاعِقَةُ وَأَنْتُمْ تَنْظُرُونَ (৫৫) ثُمَّ بَعَثْنَاكُمْ مِنْ بَعْدِ مَوْتِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ﴾ [ البقرة : ৫৫ ، ৫৬[
অর্থ: আর যখন তোমরা বললে, হে মূসা , কস্মিনকালেও আমরা তোমাকে বিশ্বাস করব না, যতক্ষণ না আমরা আল্লাহকে প্রকাশ্যে দেখতে পাব। বস্তূতঃ তোমাদিগকে পাকড়াও করল বিদ্যুৎ। অথচ তোমরা তা প্রত্যক্ষ করছিলে।
তারপর মরে যাবার পর তোমাদিগকে আমি তুলে দাঁড় করিয়েছি, যাতে করে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে নাও। সূরাহ্ আল্ বাক্বারাহ্ আয়াত ৫৫-৫৬।
অন্যান্য দৃষ্টান্তের মধ্যে দ্বিতীয়টি হল: ঐ নিহিত ব্যক্তি যার ব্যাপারে বানী ইসরাঈলরা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছিল। তখন আল্লাহ্ তায়ালা তাদেরকে একটা গাভী জবাই করে তার কিছু অংশ দিয়ে মৃত ব্যক্তিকে প্রহার করতে বললেন, যাতে মৃত ব্যক্তি (জীবিত হয়ে) তার হত্যাকারী সম্পর্কে তাদেরকে সংবাদ দেয়।
তৃতীয়টি হল: ঐ সমপ্রদায়ের ঘটনা যারা মৃত্যু ভয়ে তাদের ঘর থেকে পলায়ন করেছিল। ফলে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তাদেরকে মৃত্যু দিয়ে পূণরায় জীবিত করেন। চতুর্থ দৃষ্টান্ত হল: ঐ ব্যক্তির ঘটনা যে একটা মৃত গ্রামের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল তখন সে ঐ গ্রামের পূণরায় জীবিত হওয়াকে অসম্ভব মনে করল। তখন আল্লাহ্ তাকে একশত বৎসর মৃত রেখে আবার জীবিত করলেন। পঞ্চমটি হলো ইবরাহীম এর পাখি জীবিত করার ঘটনা। বিস্তারিত দেখুন সূরাহ্ আল্ বাক্বারাহ্ আয়াত: ৭৩, ২৪৩, ২৫৯, ২৬০
পূনরুত্থান সম্ভবপর হওয়ার জ্ঞানগত দলীল দুইভাগে বিভক্ত:
প্রথমটি হল: আল্লাহ্ তায়ালা আসমান যমীন ও তার মধ্যবর্তী বস্তুসমূহের সৃষ্টিকর্তা। তিনিই (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) প্রথমবার এগুলো সৃষ্টি করেছেন। আর যিনি শুরুতেই এসব কিছু সৃষ্টি করতে সক্ষম তিনি পূনরায় তা সৃষ্টি করতে অক্ষম নন। বরং তার জন্য তখন এটা আরো সহজ হবে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَهُوَ الَّذِي يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ وَهُوَ أَهْوَنُ عَلَيْهِ وَلَهُ الْمَثَلُ الْأَعْلَى فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ﴾ [ الروم : ২৭[
অর্থ: তিনিই প্রথমবার সৃষ্টিকে অস্তিত্বে আনয়ন করেন, অতঃপর তিনি পুণরায় সৃষ্টি করবেন। এটা তাঁর জন্যে সহজ। আকাশ ও পৃথিবীতে সর্বোচ্চ মর্যাদা তাঁরই এবং তিনিই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। সূরাহ্ আর্ রুম আয়াত ২৭।
হাড্ডি ক্ষয় প্রাপ্ত ও পচে যাওয়ার পর তা পূনরায় জীবিত করাকে যারা অস্বীকার করে তাদের প্রতিবাদ করতঃ আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আদেশ দিয়ে বলেছেন:
﴿قُلْ يُحْيِيهَا الَّذِي أَنْشَأَهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ وَهُوَ بِكُلِّ خَلْقٍ عَلِيمٌ﴾ [ يس : ৭৯[
অর্থ: বলুন, যিনি প্রথমবার সেগুলোকে সৃষ্টি করেছেন, তিনিই জীবিত করবেন। তিনি সর্বপ্রকার সৃষ্টি সম্পর্কে সম্যক অবগত। সূরাহ্ ইয়াসীন আয়াত ৭৯।
দ্বিতীয়টি হল: যমীন মৃত ও শুষ্ক হয়ে তাতে কোন সবুজ ঘাস, গাছ-পালা থাকে না। এরপর আল্লাহ্ তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। ফলে তা জীবিত হয়ে সবুজ আকার ধারণ করতঃ আন্দোলিত হয়ে উঠে এবং তাতে সকল প্রকার সুন্দর উদ্ভিদ গজায়। যিনি যমীনকে মরে যাওয়ার পর জীবিত করতে সক্ষম তিনি অন্য সকল মৃতকেও জীবিত করতে সক্ষম। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَنَزَّلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً مُبَارَكًا فَأَنْبَتْنَا بِهِ جَنَّاتٍ وَحَبَّ الْحَصِيدِ (৯) وَالنَّخْلَ بَاسِقَاتٍ لَهَا طَلْعٌ نَضِيدٌ (১০) رِزْقًا لِلْعِبَادِ وَأَحْيَيْنَا بِهِ بَلْدَةً مَيْتًا كَذَلِكَ الْخُرُوجُ﴾ [ق : ৯ ১১[
অর্থ: আমি আকাশ থেকে কল্যাণময় বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং তদ্বারা বাগান ও শস্য উদগত করি, যেগুলোর ফসল আহরণ করা হয়। এবং লম্বমান খর্জুর বৃক্ষ, যাতে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ খর্জুর, বান্দাদের জীবিকাস্বরূপ এবং বৃষ্টি দ্বারা আমি মৃত জনপদকে সঞ্জীবিত করি। এমনিভাবে পুনরুত্থান ঘটবে। সূরাহ্ আল্ ক্বাফ আয়াত ৯-১১।
প্রত্যেক জ্ঞানবান ব্যক্তিই জানে, যিনি বড় জিনিষ করতে সক্ষম তিনি তার চেয়ে ছোট জিনিষ করতে অধিক সক্ষম। আসমান-যমীন এত বড়, প্রশস্ত এবং তার সৃষ্টি বৈচিত্রময় হওয়া সত্বেও মহান আল্লাহই আসমান যমীনকে পূর্ব নমুনা ছাড়া সৃষ্টি করেছেন। ফলে এটা স্পষ্টভাবে প্রমান হয় যে হাড্ডি পচে যাওয়ার পরও তা থেকে পূণরায় মানুষ সৃষ্টি করা আল্লাহর জন্য অত্যন্ত সহজ। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿أَوَلَيْسَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِقَادِرٍ عَلَى أَنْ يَخْلُقَ مِثْلَهُمْ بَلَى وَهُوَ الْخَلَّاقُ الْعَلِيمُ﴾ [ يس : ৮১[
অর্থ: যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন, তিনিই কি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করতে সক্ষম নন? হ্যাঁ, (সক্ষম) এবং তিনি মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ। সূরাহ্ ইয়াসীন আয়াত ৮১।
﴿ثُمَّ إِنَّكُمْ بَعْدَ ذَلِكَ لَمَيِّتُونَ (১৫) ثُمَّ إِنَّكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ تُبْعَثُونَ﴾ [ المؤمنون [
অর্থ: এরপর তোমরা মৃত্যুবরণ করবে, অতঃপর ক্বিয়ামতের দিন তোমরা পুনরুত্থিত হবে। সূরাহ্ আল্ মু'মিনূন আয়াত ১৫-১৬। নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
{ يُحْشَرُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حُفَاةً عُرَاةً غُرْلًا }
অর্থ: ক্বিয়ামতের দিন মানুষদেরকে জুতা, বস্ত্র ও খাৎনাবিহীন অবস্থায় একত্রিত করা হবে। বুখারী ও মুসলিম।
সকল মুসলিমগণ পুনরুত্থান সাব্যস্তে ঐক্যমত, বাস্তবতার চাহিদাও তাই। কেননা, হিক্মত তো এটাই চায় যে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সৃষ্টিজীবের জন্য একটা প্রত্যাবর্তনস্থল করবেন যাতে তিনি তাদেরকে রাসূলদের মাধ্যমে দেওয়া দায়িত্বের প্রতিদান দিবেন। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿أَفَحَسِبْتُمْ أَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا وَأَنَّكُمْ إِلَيْنَا لَا تُرْجَعُونَ ﴾ [ المؤمنون : ১১৫[
অর্থ: তোমরা কি ধারণা কর যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবে না? সূরাহ্ আল মু'মিনূন আয়াত ১১৫।
অসম্ভব মনে করে কাফেররা মৃত্যু পরবর্তী পূনুরুত্থানকে অস্বীকার করে। এ ধারণা ভুল, শরীয়ত, অনুভূতি এবং জ্ঞান এ ধারণার বাতিল হওয়ার উপর প্রমাণ বহন করে। শরীয়তের দলীল: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿زَعَمَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنْ لَنْ يُبْعَثُوا قُلْ بَلَى وَرَبِّي لَتُبْعَثُنَّ ثُمَّ لَتُنَبَّؤُنَّ بِمَا عَمِلْتُمْ وَذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ﴾ [ التغابن : ৭[
অর্থ: কাফেররা দাবী করে যে, তারা কখনও পুনরুত্থিত হবে না। বলুন, অবশ্যই হবে। আমার পালনকর্তার কসম, তোমরা নিশ্চয় পুনরুত্থিত হবে। অতঃপর তোমাদেরকে অবহিত করা হবে যা তোমরা করতে। এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ। সূরাহ্ আত্ তাগাবুন আয়াত ৭।
অন্য স্থানে মহান রব্বুল আলামীন বলেন:
﴿وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لَا تَأْتِينَا السَّاعَةُ قُلْ بَلَى وَرَبِّي لَتَأْتِيَنَّكُمْ عَالِمِ الْغَيْبِ لَا يَعْزُبُ عَنْهُ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ فِي السَّمَاوَاتِ وَلَا فِي الْأَرْضِ وَلَا أَصْغَرُ مِنْ ذَلِكَ وَلَا أَكْبَرُ إِلَّا فِي كِتَابٍ مُبِينٍ﴾ [ سبأ : ৩[
অর্থ: কাফিররা বলে আমাদের উপর ক্বিয়ামত আসবে না। বলুন: কেন আসবে না? আমার পালনকর্তার শপথ-অবশ্যই আসবে। তিনি অদৃশ্য সমপর্কে জ্ঞাত। নভোমন্ডলে ও ভূ-মন্ডলে তাঁর আগোচরে নয় অণু পরিমাণ কিছু, না তদপেক্ষা ক্ষুদ্র এবং না বৃহৎ-সব কিছু আছে সুসপষ্ট কিতাবে। সূরাহ্ সাবা আয়াত ৩। পুনরুত্থান সত্যের ব্যাপারে সকল আসমানী কিতাব একমত।
অনুভূতির দলীল: আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর বান্দাদেরকে দুয়িাতেই মৃতকে জীবিত করে দেখিয়েছেন। সূরাতুল বাক্বারাতে এ ব্যাপারে পাঁচটি দৃষ্টান্ত রয়েছে, প্রথমটি আমরা উল্লেখ করছি: তা হলো যখন মূসা এর জাতি তাঁকে বলেছিল: আল্লাহ্ তাআ'লাকে স্পষ্টভাবে না দেখা পর্যন্ত আমরা তোমার প্রতি ঈমান আনব না, অতঃপর আল্লাহ্ তাদেরকে মৃত্যু দানকরতঃ পুণরায় জীবিত করেন। এ ক্ষেত্রেই আল্লাহ্ বনী ইসরাঈলকে সম্বোধন করে বলেন:
﴿وَإِذْ قُلْتُمْ يَا مُوسَى لَنْ نُؤْمِنَ لَكَ حَتَّى نَرَى اللَّهَ جَهْرَةً فَأَخَذَتْكُمُ الصَّاعِقَةُ وَأَنْتُمْ تَنْظُرُونَ (৫৫) ثُمَّ بَعَثْنَاكُمْ مِنْ بَعْدِ مَوْتِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ﴾ [ البقرة : ৫৫ ، ৫৬[
অর্থ: আর যখন তোমরা বললে, হে মূসা , কস্মিনকালেও আমরা তোমাকে বিশ্বাস করব না, যতক্ষণ না আমরা আল্লাহকে প্রকাশ্যে দেখতে পাব। বস্তূতঃ তোমাদিগকে পাকড়াও করল বিদ্যুৎ। অথচ তোমরা তা প্রত্যক্ষ করছিলে।
তারপর মরে যাবার পর তোমাদিগকে আমি তুলে দাঁড় করিয়েছি, যাতে করে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে নাও। সূরাহ্ আল্ বাক্বারাহ্ আয়াত ৫৫-৫৬।
অন্যান্য দৃষ্টান্তের মধ্যে দ্বিতীয়টি হল: ঐ নিহিত ব্যক্তি যার ব্যাপারে বানী ইসরাঈলরা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছিল। তখন আল্লাহ্ তায়ালা তাদেরকে একটা গাভী জবাই করে তার কিছু অংশ দিয়ে মৃত ব্যক্তিকে প্রহার করতে বললেন, যাতে মৃত ব্যক্তি (জীবিত হয়ে) তার হত্যাকারী সম্পর্কে তাদেরকে সংবাদ দেয়।
তৃতীয়টি হল: ঐ সমপ্রদায়ের ঘটনা যারা মৃত্যু ভয়ে তাদের ঘর থেকে পলায়ন করেছিল। ফলে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তাদেরকে মৃত্যু দিয়ে পূণরায় জীবিত করেন। চতুর্থ দৃষ্টান্ত হল: ঐ ব্যক্তির ঘটনা যে একটা মৃত গ্রামের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল তখন সে ঐ গ্রামের পূণরায় জীবিত হওয়াকে অসম্ভব মনে করল। তখন আল্লাহ্ তাকে একশত বৎসর মৃত রেখে আবার জীবিত করলেন। পঞ্চমটি হলো ইবরাহীম এর পাখি জীবিত করার ঘটনা। বিস্তারিত দেখুন সূরাহ্ আল্ বাক্বারাহ্ আয়াত: ৭৩, ২৪৩, ২৫৯, ২৬০
পূনরুত্থান সম্ভবপর হওয়ার জ্ঞানগত দলীল দুইভাগে বিভক্ত:
প্রথমটি হল: আল্লাহ্ তায়ালা আসমান যমীন ও তার মধ্যবর্তী বস্তুসমূহের সৃষ্টিকর্তা। তিনিই (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) প্রথমবার এগুলো সৃষ্টি করেছেন। আর যিনি শুরুতেই এসব কিছু সৃষ্টি করতে সক্ষম তিনি পূনরায় তা সৃষ্টি করতে অক্ষম নন। বরং তার জন্য তখন এটা আরো সহজ হবে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَهُوَ الَّذِي يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ وَهُوَ أَهْوَنُ عَلَيْهِ وَلَهُ الْمَثَلُ الْأَعْلَى فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ﴾ [ الروم : ২৭[
অর্থ: তিনিই প্রথমবার সৃষ্টিকে অস্তিত্বে আনয়ন করেন, অতঃপর তিনি পুণরায় সৃষ্টি করবেন। এটা তাঁর জন্যে সহজ। আকাশ ও পৃথিবীতে সর্বোচ্চ মর্যাদা তাঁরই এবং তিনিই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। সূরাহ্ আর্ রুম আয়াত ২৭।
হাড্ডি ক্ষয় প্রাপ্ত ও পচে যাওয়ার পর তা পূনরায় জীবিত করাকে যারা অস্বীকার করে তাদের প্রতিবাদ করতঃ আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) আদেশ দিয়ে বলেছেন:
﴿قُلْ يُحْيِيهَا الَّذِي أَنْشَأَهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ وَهُوَ بِكُلِّ خَلْقٍ عَلِيمٌ﴾ [ يس : ৭৯[
অর্থ: বলুন, যিনি প্রথমবার সেগুলোকে সৃষ্টি করেছেন, তিনিই জীবিত করবেন। তিনি সর্বপ্রকার সৃষ্টি সম্পর্কে সম্যক অবগত। সূরাহ্ ইয়াসীন আয়াত ৭৯।
দ্বিতীয়টি হল: যমীন মৃত ও শুষ্ক হয়ে তাতে কোন সবুজ ঘাস, গাছ-পালা থাকে না। এরপর আল্লাহ্ তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। ফলে তা জীবিত হয়ে সবুজ আকার ধারণ করতঃ আন্দোলিত হয়ে উঠে এবং তাতে সকল প্রকার সুন্দর উদ্ভিদ গজায়। যিনি যমীনকে মরে যাওয়ার পর জীবিত করতে সক্ষম তিনি অন্য সকল মৃতকেও জীবিত করতে সক্ষম। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَنَزَّلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً مُبَارَكًا فَأَنْبَتْنَا بِهِ جَنَّاتٍ وَحَبَّ الْحَصِيدِ (৯) وَالنَّخْلَ بَاسِقَاتٍ لَهَا طَلْعٌ نَضِيدٌ (১০) رِزْقًا لِلْعِبَادِ وَأَحْيَيْنَا بِهِ بَلْدَةً مَيْتًا كَذَلِكَ الْخُرُوجُ﴾ [ق : ৯ ১১[
অর্থ: আমি আকাশ থেকে কল্যাণময় বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং তদ্বারা বাগান ও শস্য উদগত করি, যেগুলোর ফসল আহরণ করা হয়। এবং লম্বমান খর্জুর বৃক্ষ, যাতে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ খর্জুর, বান্দাদের জীবিকাস্বরূপ এবং বৃষ্টি দ্বারা আমি মৃত জনপদকে সঞ্জীবিত করি। এমনিভাবে পুনরুত্থান ঘটবে। সূরাহ্ আল্ ক্বাফ আয়াত ৯-১১।
প্রত্যেক জ্ঞানবান ব্যক্তিই জানে, যিনি বড় জিনিষ করতে সক্ষম তিনি তার চেয়ে ছোট জিনিষ করতে অধিক সক্ষম। আসমান-যমীন এত বড়, প্রশস্ত এবং তার সৃষ্টি বৈচিত্রময় হওয়া সত্বেও মহান আল্লাহই আসমান যমীনকে পূর্ব নমুনা ছাড়া সৃষ্টি করেছেন। ফলে এটা স্পষ্টভাবে প্রমান হয় যে হাড্ডি পচে যাওয়ার পরও তা থেকে পূণরায় মানুষ সৃষ্টি করা আল্লাহর জন্য অত্যন্ত সহজ। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿أَوَلَيْسَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِقَادِرٍ عَلَى أَنْ يَخْلُقَ مِثْلَهُمْ بَلَى وَهُوَ الْخَلَّاقُ الْعَلِيمُ﴾ [ يس : ৮১[
অর্থ: যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন, তিনিই কি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করতে সক্ষম নন? হ্যাঁ, (সক্ষম) এবং তিনি মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ। সূরাহ্ ইয়াসীন আয়াত ৮১।
আমরা উপস্থিতি বা আমলনামা পেশে বিশ্বাসী, মানুষদেরকে তাদের রবের সামনে (হিসাবের জন্য) উপস্থিত করা হবে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَيَوْمَئِذٍ وَقَعَتِ الْوَاقِعَةُ (১৫) وَانْشَقَّتِ السَّمَاءُ فَهِيَ يَوْمَئِذٍ وَاهِيَةٌ (১৬) وَالْمَلَكُ عَلَى أَرْجَائِهَا وَيَحْمِلُ عَرْشَ رَبِّكَ فَوْقَهُمْ يَوْمَئِذٍ ثَمَانِيَةٌ (১৭) يَوْمَئِذٍ تُعْرَضُونَ لَا تَخْفَى مِنْكُمْ خَافِيَةٌ﴾ [ الحاقة : ১৫ ১৮[
অর্থ: সেদিন ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে। সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে ও বিক্ষিপ্ত হবে। এবং ফেরেশতাগণ আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে ও আট জন ফেরেশতা আপনার পালনকর্তার আরশকে তাদের উর্ধ্বে বহন করবে।
সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোন কিছু গোপন থাকবে না। সূরাহ্ আল্ হাক্কাহ্ আয়াত ১৫-১৮। অন্য স্থানে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَعُرِضُوا عَلَى رَبِّكَ صَفًّا لَقَدْ جِئْتُمُونَا كَمَا خَلَقْنَاكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ بَلْ زَعَمْتُمْ أَلَّنْ نَجْعَلَ لَكُمْ مَوْعِدًا﴾ [ الكهف : ৪৮[
অর্থ: তারা আপনার পালনকর্তার সামনে পেশ হবে সারিবদ্ধ ভাবে এবং বলা হবে: তোমরা আমার কাছে এসে গেছ; যেমন তোমাদেরকে প্রথম বার সৃষ্টি করেছিলাম। না, তোমরা তো বলতে যে, আমি তোমাদের জন্যে কোন প্রতিশ্রুত সময় নির্দিষ্ট করব না। সূরাহ্ আল্ কাহাফ আয়াত ৪৮।
আমরা হিসাবে বিশ্বাসী, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সৃষ্ট জীবের হিসাব নিবেন, মু'মিন বান্দার হিসাব আল্লাহ্ আলাদা করে নিবেন।
ক্বুরআন হাদীসের বর্ণনা মতে মু'মিনগণ তাদের গুণাহের কথা স্বীকার করবেন। কিন্তু কাফিরদের ভাল-মন্দ ওজন করে হিসাব নেওয়া হবে না। কারণ, তাদের কোন ভাল কাজ থাকবে না। তবে তাদের আমলগুলো গননা করে তাদেরকে তার উপর দাঁড় করানো হবে এবং তারা নিজেদের পাপের কথা স্বীকার করবে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿يَا أَيُّهَا الْإِنْسَانُ إِنَّكَ كَادِحٌ إِلَى رَبِّكَ كَدْحًا فَمُلَاقِيهِ (৬) فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ (৭) فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا (৮) وَيَنْقَلِبُ إِلَى أَهْلِهِ مَسْرُورًا (৯) وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ وَرَاءَ ظَهْرِهِ (১০) فَسَوْفَ يَدْعُو ثُبُورًا (১১) وَيَصْلَى سَعِيرًا (১২) إِنَّهُ كَانَ فِي أَهْلِهِ مَسْرُورًا (১৩) إِنَّهُ ظَنَّ أَنْ لَنْ يَحُورَ (১৪) بَلَى إِنَّ رَبَّهُ كَانَ بِهِ بَصِيرًا﴾ [ الإنشقاق : ৬ ১৫[
অর্থ: হে মানুষ, তোমাকে তোমরা পালনকর্তা পর্যন্ত পৌঁছতে কষ্ট স্বীকার করতে হবে, অতঃপর তার সাক্ষাৎ ঘটবে। যাকে তার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে,
তার হিসাব-নিকাশ সহজে হয়ে যাবে, এবং সে তার পরিবার-পরিজনের কাছে হূষ্টচিত্তে ফিরে যাবে। এবং যাকে তার আমলনামা পিঠের পশ্চাদ্দিক থেকে দেয়া হবে, সে মৃত্যুকে আহবান করবে, এবং জাহান্নামে প্রবেশ করবে। সে তার পরিবার-পরিজনের মধ্যে আনন্দিত ছিল। সে মনে করত যে, সে কখনও ফিরে যাবে না। কেন যাবে না? (অবশ্যই সে আল্লাহর নিকটে ফিরে যাবে) তার পালনকর্তা তো তাকে দেখতেন। সূরাহ্ আল্ ইনশিক্বাক্ব আয়াত ৬-১৫।
আয়িশা রাযিয়াল্লাহু আন্হা হতে বর্ণিত, রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿لَيْسَ أَحَدٌ يُحَاسَبُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَّا هَلَكَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلَيْسَ قَدْ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى : فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْه وَسَلَّمَ إِنَّمَا ذَلِكِ الْعَرْضُ وَلَيْسَ أَحَدٌ يُنَاقَشُ الْحِسَابَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَّا عُذِّبَ﴾ ( صحيح البخاري - (২০ / ২০৩(
অর্থ: ক্বিয়ামতের দিন যার হিসাব নেওয়া হবে সে ধ্বংস হবে। আমি (আয়িশা রাযিয়াল্লাহু আন্হা) বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) , আল্লাহ কি বলেননি:
﴿فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا﴾
অর্থ: যার ডান হাতে তার আমলনামা দেওয়া হবে তার খুব সহজ হিসাব নেওয়া হবে। সূরাহ্ আল্ ইনশিক্বাক্ব ৭-৮।
তখন তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: এটা কেবল পেশ বা উপস্থিত করা। আর ক্বিয়ামত দিবসে যার পূন্খানুপূংখ হিসাব নেওয়া হবে তাকে আযাব ভোগ করতেই হবে। সহীহুল বুখারী ২০/২০৩।
আমরা বিশ্বাস করি প্রত্যেক মানুষকে ক্বিয়ামত দিবসে তার আমলনামা দেওয়া হবে। যখন মুহমিন তার আমলনামায় তাওহীদ ও সৎআমল দেখবে তখন সে খুব খুশী হবে এবং তা মানুষের মাঝে প্রচার করবে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَيَقُولُ هَاؤُمُ اقْرَءُوا كِتَابِيَهْ (১৯) إِنِّي ظَنَنْتُ أَنِّي مُلَاقٍ حِسَابِيَهْ (২০) فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَاضِيَةٍ (২১) فِي جَنَّةٍ عَالِيَةٍ (২২) قُطُوفُهَا دَانِيَةٌ (২৩) كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيئًا بِمَا أَسْلَفْتُمْ فِي الْأَيَّامِ الْخَالِيَةِ﴾ [ الحاقة : ১৯ ২৪[
অর্থ: অতঃপর যার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে, সে বলবে: নাও, তোমরাও আমলনামা পড়ে দেখ। আমি জানতাম যে, আমাকে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে। অতঃপর সে সুখী জীবন-যাপন করবে, সুউচ্চ জান্নাতে। তার ফলসমূহ অবনমিত থাকবে। বিগত দিনে তোমরা যা প্রেরণ করেছিলে, তার প্রতিদানে তোমরা খাও এবং পান কর তৃপ্তি সহকারে। সূরাহ্ আল্ হাক্কাহ্ আয়াত ১৯-২৪।
কিন্তু কাফির, মুনাফিক্ব এবং পথভ্রষ্ট সমপ্রদায়কে পিছন দিক দিয়ে তাদের বাম হাতে আমলনামা দেওয়া হবে। তখন কাফেররা আফসোস করতঃ ধ্বংস, মৃত্যু ও বড় বিষয়গুলিকে ডাকবে এবং স্মরণ করবে।
আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِشِمَالِهِ فَيَقُولُ يَا لَيْتَنِي لَمْ أُوتَ كِتَابِيَهْ (২৫) وَلَمْ أَدْرِ مَا حِسَابِيَهْ (২৬) يَا لَيْتَهَا كَانَتِ الْقَاضِيَةَ (২৭) مَا أَغْنَى عَنِّي مَالِيَهْ (২৮) هَلَكَ عَنِّي سُلْطَانِيَهْ (২৯) خُذُوهُ فَغُلُّوهُ (৩০) ثُمَّ الْجَحِيمَ صَلُّوهُ﴾
অর্থ: যার আমলনামা তার বাম হাতে দেয়া হবে, সে বলবে: হায় আমায় যদি আমার আমল নামা না দেয়া হতো। আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব! হায়! আমার মৃত্যুই যদি শেষ হত। আমার ধন-সম্পদ আমার কোন উপকারে আসল না। আমার ক্ষমতাও বরবাদ হয়ে গেল। ফেরেশতাদেরকে বলা হবে: ধর একে গলায় বেড়ি পড়িয়ে দাও, অতঃপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে। সূরাহ্ আল্ হাক্কাহ্ আয়াত ২৫-৩১।
﴿فَيَوْمَئِذٍ وَقَعَتِ الْوَاقِعَةُ (১৫) وَانْشَقَّتِ السَّمَاءُ فَهِيَ يَوْمَئِذٍ وَاهِيَةٌ (১৬) وَالْمَلَكُ عَلَى أَرْجَائِهَا وَيَحْمِلُ عَرْشَ رَبِّكَ فَوْقَهُمْ يَوْمَئِذٍ ثَمَانِيَةٌ (১৭) يَوْمَئِذٍ تُعْرَضُونَ لَا تَخْفَى مِنْكُمْ خَافِيَةٌ﴾ [ الحاقة : ১৫ ১৮[
অর্থ: সেদিন ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে। সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে ও বিক্ষিপ্ত হবে। এবং ফেরেশতাগণ আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে ও আট জন ফেরেশতা আপনার পালনকর্তার আরশকে তাদের উর্ধ্বে বহন করবে।
সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোন কিছু গোপন থাকবে না। সূরাহ্ আল্ হাক্কাহ্ আয়াত ১৫-১৮। অন্য স্থানে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَعُرِضُوا عَلَى رَبِّكَ صَفًّا لَقَدْ جِئْتُمُونَا كَمَا خَلَقْنَاكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ بَلْ زَعَمْتُمْ أَلَّنْ نَجْعَلَ لَكُمْ مَوْعِدًا﴾ [ الكهف : ৪৮[
অর্থ: তারা আপনার পালনকর্তার সামনে পেশ হবে সারিবদ্ধ ভাবে এবং বলা হবে: তোমরা আমার কাছে এসে গেছ; যেমন তোমাদেরকে প্রথম বার সৃষ্টি করেছিলাম। না, তোমরা তো বলতে যে, আমি তোমাদের জন্যে কোন প্রতিশ্রুত সময় নির্দিষ্ট করব না। সূরাহ্ আল্ কাহাফ আয়াত ৪৮।
আমরা হিসাবে বিশ্বাসী, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সৃষ্ট জীবের হিসাব নিবেন, মু'মিন বান্দার হিসাব আল্লাহ্ আলাদা করে নিবেন।
ক্বুরআন হাদীসের বর্ণনা মতে মু'মিনগণ তাদের গুণাহের কথা স্বীকার করবেন। কিন্তু কাফিরদের ভাল-মন্দ ওজন করে হিসাব নেওয়া হবে না। কারণ, তাদের কোন ভাল কাজ থাকবে না। তবে তাদের আমলগুলো গননা করে তাদেরকে তার উপর দাঁড় করানো হবে এবং তারা নিজেদের পাপের কথা স্বীকার করবে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿يَا أَيُّهَا الْإِنْسَانُ إِنَّكَ كَادِحٌ إِلَى رَبِّكَ كَدْحًا فَمُلَاقِيهِ (৬) فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ (৭) فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا (৮) وَيَنْقَلِبُ إِلَى أَهْلِهِ مَسْرُورًا (৯) وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ وَرَاءَ ظَهْرِهِ (১০) فَسَوْفَ يَدْعُو ثُبُورًا (১১) وَيَصْلَى سَعِيرًا (১২) إِنَّهُ كَانَ فِي أَهْلِهِ مَسْرُورًا (১৩) إِنَّهُ ظَنَّ أَنْ لَنْ يَحُورَ (১৪) بَلَى إِنَّ رَبَّهُ كَانَ بِهِ بَصِيرًا﴾ [ الإنشقاق : ৬ ১৫[
অর্থ: হে মানুষ, তোমাকে তোমরা পালনকর্তা পর্যন্ত পৌঁছতে কষ্ট স্বীকার করতে হবে, অতঃপর তার সাক্ষাৎ ঘটবে। যাকে তার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে,
তার হিসাব-নিকাশ সহজে হয়ে যাবে, এবং সে তার পরিবার-পরিজনের কাছে হূষ্টচিত্তে ফিরে যাবে। এবং যাকে তার আমলনামা পিঠের পশ্চাদ্দিক থেকে দেয়া হবে, সে মৃত্যুকে আহবান করবে, এবং জাহান্নামে প্রবেশ করবে। সে তার পরিবার-পরিজনের মধ্যে আনন্দিত ছিল। সে মনে করত যে, সে কখনও ফিরে যাবে না। কেন যাবে না? (অবশ্যই সে আল্লাহর নিকটে ফিরে যাবে) তার পালনকর্তা তো তাকে দেখতেন। সূরাহ্ আল্ ইনশিক্বাক্ব আয়াত ৬-১৫।
আয়িশা রাযিয়াল্লাহু আন্হা হতে বর্ণিত, রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿لَيْسَ أَحَدٌ يُحَاسَبُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَّا هَلَكَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلَيْسَ قَدْ قَالَ اللَّهُ تَعَالَى : فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْه وَسَلَّمَ إِنَّمَا ذَلِكِ الْعَرْضُ وَلَيْسَ أَحَدٌ يُنَاقَشُ الْحِسَابَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَّا عُذِّبَ﴾ ( صحيح البخاري - (২০ / ২০৩(
অর্থ: ক্বিয়ামতের দিন যার হিসাব নেওয়া হবে সে ধ্বংস হবে। আমি (আয়িশা রাযিয়াল্লাহু আন্হা) বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) , আল্লাহ কি বলেননি:
﴿فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا﴾
অর্থ: যার ডান হাতে তার আমলনামা দেওয়া হবে তার খুব সহজ হিসাব নেওয়া হবে। সূরাহ্ আল্ ইনশিক্বাক্ব ৭-৮।
তখন তিনি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: এটা কেবল পেশ বা উপস্থিত করা। আর ক্বিয়ামত দিবসে যার পূন্খানুপূংখ হিসাব নেওয়া হবে তাকে আযাব ভোগ করতেই হবে। সহীহুল বুখারী ২০/২০৩।
আমরা বিশ্বাস করি প্রত্যেক মানুষকে ক্বিয়ামত দিবসে তার আমলনামা দেওয়া হবে। যখন মুহমিন তার আমলনামায় তাওহীদ ও সৎআমল দেখবে তখন সে খুব খুশী হবে এবং তা মানুষের মাঝে প্রচার করবে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَيَقُولُ هَاؤُمُ اقْرَءُوا كِتَابِيَهْ (১৯) إِنِّي ظَنَنْتُ أَنِّي مُلَاقٍ حِسَابِيَهْ (২০) فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَاضِيَةٍ (২১) فِي جَنَّةٍ عَالِيَةٍ (২২) قُطُوفُهَا دَانِيَةٌ (২৩) كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيئًا بِمَا أَسْلَفْتُمْ فِي الْأَيَّامِ الْخَالِيَةِ﴾ [ الحاقة : ১৯ ২৪[
অর্থ: অতঃপর যার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে, সে বলবে: নাও, তোমরাও আমলনামা পড়ে দেখ। আমি জানতাম যে, আমাকে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে। অতঃপর সে সুখী জীবন-যাপন করবে, সুউচ্চ জান্নাতে। তার ফলসমূহ অবনমিত থাকবে। বিগত দিনে তোমরা যা প্রেরণ করেছিলে, তার প্রতিদানে তোমরা খাও এবং পান কর তৃপ্তি সহকারে। সূরাহ্ আল্ হাক্কাহ্ আয়াত ১৯-২৪।
কিন্তু কাফির, মুনাফিক্ব এবং পথভ্রষ্ট সমপ্রদায়কে পিছন দিক দিয়ে তাদের বাম হাতে আমলনামা দেওয়া হবে। তখন কাফেররা আফসোস করতঃ ধ্বংস, মৃত্যু ও বড় বিষয়গুলিকে ডাকবে এবং স্মরণ করবে।
আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِشِمَالِهِ فَيَقُولُ يَا لَيْتَنِي لَمْ أُوتَ كِتَابِيَهْ (২৫) وَلَمْ أَدْرِ مَا حِسَابِيَهْ (২৬) يَا لَيْتَهَا كَانَتِ الْقَاضِيَةَ (২৭) مَا أَغْنَى عَنِّي مَالِيَهْ (২৮) هَلَكَ عَنِّي سُلْطَانِيَهْ (২৯) خُذُوهُ فَغُلُّوهُ (৩০) ثُمَّ الْجَحِيمَ صَلُّوهُ﴾
অর্থ: যার আমলনামা তার বাম হাতে দেয়া হবে, সে বলবে: হায় আমায় যদি আমার আমল নামা না দেয়া হতো। আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব! হায়! আমার মৃত্যুই যদি শেষ হত। আমার ধন-সম্পদ আমার কোন উপকারে আসল না। আমার ক্ষমতাও বরবাদ হয়ে গেল। ফেরেশতাদেরকে বলা হবে: ধর একে গলায় বেড়ি পড়িয়ে দাও, অতঃপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে। সূরাহ্ আল্ হাক্কাহ্ আয়াত ২৫-৩১।
আমরা ক্বিয়ামতের ময়দানে মীযান বা দাঁড়ি পাল্লায় বিশ্বাস করি। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا وَكَفَى بِنَا حَاسِبِينَ﴾ [ الأنبياء : ৪৭[
অর্থ: আমি ক্বিয়ামতের দিন ন্যায়বিচারের মানদন্ড স্থাপন করব। সুতরাং কারও প্রতি জুলুম হবে না। যদি কোন আমল সরিষার দানা পরিমাণও হয়, আমি তা উপস্থিত করব এবং হিসাব গ্রহণের জন্যে আমিই যথেষ্ট। সূরাহ্ আল্ আম্বিয়া আয়াত ৪৭। রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাদীস প্রমাণ করে, যে দাঁড়ি পাল্লায় আমল ওজন করা হবে তার দুটি পাল্লা থাকবে যা অনুভব করা এবং দেখা যাবে।
হিসাব শেষ হওয়ার পরে আমলসমূহ ওজন করা হবে। কেননা হিসাব হবে বান্দা কর্তৃক নিজ আমলের স্বীকারোw³র জন্য আর ওজন হবে তার পরিমাণ প্রকাশের জন্য যাতে সে অনুযায়ী প্রত্যেককে প্রতিদান দেওয়া হয়।
আমরা পূলসিরাতে বিশ্বাস করি, আর তা হলো জান্নাতে যাওয়ার পথে জাহান্নামের উপর স্থাপিত ব্রীজ। প্রত্যেক মানুষ নিজ আমল অনুযায়ী এই ব্রীজের উপর দিয়ে অতিক্রম করবে। মানুষের মধ্যে কেউ চোখের পলকে তা অতিক্রম করবে, কেউ বিদ্যুৎ গতিতে, কেউ বাতাসের গতিতে, কেউ দ্রুতগামী ঘোড়ার মত, কেউ উটের আরোহীর মত, কেউ স্বাভাবিক গতিতে, কেউ হেঁটে, কেউ নিতম্বের উপর ভরকরে তা অতিক্রম করবে।
আবার পূলসিরাতের বাঁকা আঁকড়া (বাঁকা পেরেক বা হুঁক) কাউকে আঁকড়ে ধরবে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। উল্লেখ্য পূলসিরাতের উপর লোহার বাঁকা আঁকড়া থাকবে যাতে মানুষেরা নিজেদের আমল অনুযায়ী বিদ্ধ হবে, আর যারা পূলসিরাত পার হতে সক্ষম হবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
জানা আবশ্যক যে ব্যক্তি আল্লাহর সোজা পথ দ্বীন ইসলামের উপর এ দুনিয়ায় অবিচল থাকবে সে ব্যক্তি পরকালে অনায়াসে পূলসিরাত পার হতে সক্ষম হবে। আর যারা এ দুনিয়াতে সরল পথ হতে বিচ্যুত হবে তারা পরকালে পূলসিরাত পার হতে পারবে না। ক্বিয়ামতের দিন পূলসিরাতের নিকটে মুনাফিক্বরা মুহমিনদের থেকে পৃথক হয়ে যাবে, মুনাফিক্বরা পিছনে পড়ে যাবে, মু'মিনগণ আগে যাবে এবং উভয়ের মাঝে একটা প্রাচীরের মাধ্যমে বাধার সৃষ্টি করা হবে ফলে মুনাফিক্বরা মুহমিনদের নিকট পৌঁছতে পারবে না।
﴿وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَإِنْ كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا وَكَفَى بِنَا حَاسِبِينَ﴾ [ الأنبياء : ৪৭[
অর্থ: আমি ক্বিয়ামতের দিন ন্যায়বিচারের মানদন্ড স্থাপন করব। সুতরাং কারও প্রতি জুলুম হবে না। যদি কোন আমল সরিষার দানা পরিমাণও হয়, আমি তা উপস্থিত করব এবং হিসাব গ্রহণের জন্যে আমিই যথেষ্ট। সূরাহ্ আল্ আম্বিয়া আয়াত ৪৭। রাসূলের (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাদীস প্রমাণ করে, যে দাঁড়ি পাল্লায় আমল ওজন করা হবে তার দুটি পাল্লা থাকবে যা অনুভব করা এবং দেখা যাবে।
হিসাব শেষ হওয়ার পরে আমলসমূহ ওজন করা হবে। কেননা হিসাব হবে বান্দা কর্তৃক নিজ আমলের স্বীকারোw³র জন্য আর ওজন হবে তার পরিমাণ প্রকাশের জন্য যাতে সে অনুযায়ী প্রত্যেককে প্রতিদান দেওয়া হয়।
আমরা পূলসিরাতে বিশ্বাস করি, আর তা হলো জান্নাতে যাওয়ার পথে জাহান্নামের উপর স্থাপিত ব্রীজ। প্রত্যেক মানুষ নিজ আমল অনুযায়ী এই ব্রীজের উপর দিয়ে অতিক্রম করবে। মানুষের মধ্যে কেউ চোখের পলকে তা অতিক্রম করবে, কেউ বিদ্যুৎ গতিতে, কেউ বাতাসের গতিতে, কেউ দ্রুতগামী ঘোড়ার মত, কেউ উটের আরোহীর মত, কেউ স্বাভাবিক গতিতে, কেউ হেঁটে, কেউ নিতম্বের উপর ভরকরে তা অতিক্রম করবে।
আবার পূলসিরাতের বাঁকা আঁকড়া (বাঁকা পেরেক বা হুঁক) কাউকে আঁকড়ে ধরবে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। উল্লেখ্য পূলসিরাতের উপর লোহার বাঁকা আঁকড়া থাকবে যাতে মানুষেরা নিজেদের আমল অনুযায়ী বিদ্ধ হবে, আর যারা পূলসিরাত পার হতে সক্ষম হবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
জানা আবশ্যক যে ব্যক্তি আল্লাহর সোজা পথ দ্বীন ইসলামের উপর এ দুনিয়ায় অবিচল থাকবে সে ব্যক্তি পরকালে অনায়াসে পূলসিরাত পার হতে সক্ষম হবে। আর যারা এ দুনিয়াতে সরল পথ হতে বিচ্যুত হবে তারা পরকালে পূলসিরাত পার হতে পারবে না। ক্বিয়ামতের দিন পূলসিরাতের নিকটে মুনাফিক্বরা মুহমিনদের থেকে পৃথক হয়ে যাবে, মুনাফিক্বরা পিছনে পড়ে যাবে, মু'মিনগণ আগে যাবে এবং উভয়ের মাঝে একটা প্রাচীরের মাধ্যমে বাধার সৃষ্টি করা হবে ফলে মুনাফিক্বরা মুহমিনদের নিকট পৌঁছতে পারবে না।
আল্লাহ্ কর্তৃক মুহমিনদের জন্য প্রস্তুত রাখা জান্নাত এবং কাফেরদের জন্য প্রস্তুত রাখা জাহান্নামে আমরা বিশ্বাসী। অতএব, জান্নাত জাহান্নাম উভয়টি সত্য তাতে কোন সন্দেহ নেই। জাহান্নাম আল্লাহর শত্রুদের এবং জান্নাত তাঁর বন্ধুদের বাসস্থান। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿فَإِنْ لَمْ تَفْعَلُوا وَلَنْ تَفْعَلُوا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ (২৪) وَبَشِّرِ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أَنَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ كُلَّمَا رُزِقُوا مِنْهَا مِنْ ثَمَرَةٍ رِزْقًا قَالُوا هَذَا الَّذِي رُزِقْنَا مِنْ قَبْلُ وَأُتُوا بِهِ مُتَشَابِهًا وَلَهُمْ فِيهَا أَزْوَاجٌ مُطَهَّرَةٌ وَهُمْ فِيهَا خَالِدُونَ﴾ (২৫) [ البقرة [
অর্থ: আর যদি তা না পার-অবশ্য তা তোমরা কখনও পারবে না, তাহলে সে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তূত করা হয়েছে কাফিরদের জন্য।
আর হে নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজসমূহ করেছে, আপনি তাদেরকে এমন বেহেশ্তের সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান থাকবে। যখনই তারা খাবার হিসেবে কোন ফল প্রাপ্ত হবে, তখনই তারা বলবে, এতো অবিকল সে ফলই যা আমরা ইতিপূর্বেও লাভ করেছিলাম।
বস্তূতঃ তাদেরকে একই প্রকৃতির ফল প্রদান করা হবে। এবং সেখানে তাদের জন্য শুদ্ধচারিনী রমণীকূল থাকবে। আর সেখানে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে। সূরাহ্ আল্ বাক্বারাহ্ আয়াত ২৪-২৫।
পবিত্র ক্বুরআনের অনেক স্থানে জান্নাত জাহান্নাম এবং শান্তি ও শাস্তির আলোচনা এসেছে। যখনি জান্নাতের আলোচনা এসেছে তার সাথে জাহান্নামের আলোচনা করা হয়েছে, এর বিপরীতটিও হয়েছে।
কখনও জান্নাতের আগ্রহ দেখিয়ে সে পথে আহ্বান করা হয়েছে, কখনও জাহান্নামের প্রতি অনিহা প্রকাশ করে তা থেকে সতর্ক করা হয়েছে। কখনও আল্লাহ্ তাঁর বন্ধুদের জন্য জান্নাতে কি নিয়ামত প্রস্তুত রেখেছেন সে সংবাদ দিয়েছেন। অপর দিকে তাঁর শত্রুদের জন্য জাহান্নামে যে যন্ত্রণাদায়ক কঠিন শাস্তি জমা করে রেখেছেন তার সংবাদ দিয়েছেন। আমরা দৃঢ় বিশ্বাস করি যে জান্নাত জাহান্নাম সৃষ্ট ও বর্তমানে তা বিদ্যমান। আল্লাহ্ জান্নাত সম্পর্কে বলেন:
﴿وَسَارِعُوا إِلَى مَغْفِرَةٍ مِنْ رَبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِينَ﴾ [ آل عمران : ১৩৩[
অর্থ: তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা এবং জান্নাতের দিকে ছুটে যাও যার সীমানা হচ্ছে আসমান ও যমীন, যা তৈরী করা হয়েছে মুত্তাক্বীনদের জন্য। সূরাহ্ আলি ইমরান আয়াত ১৩৩। জাহান্নাম সম্পর্কে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿اتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ﴾ [ البقرة : ২৪[
অর্থ: তাহলে সেই জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তূত করা হয়েছে কাফিরদের জন্য। সূরাহ্ আল্ বাক্বারাহ্ আয়াত ২৪। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿إِذَا مَاتَ أَحَدُكُمْ فَإِنَّهُ يُعْرَضُ عَلَيْهِ مَقْعَدُهُ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ فَإِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَمِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَإِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَمِنْ أَهْلِ النَّارِ﴾ ( صحيح البخاري - (১১ / ১৮(
অর্থ: যখন তোমাদের কেউ মৃত্যু বরণ করে তখন সকাল সন্ধ্যায় তার সামনে নিজ বাসস্থান পেশ করা হয়। যদি ঐ ব্যক্তি জান্নাতী হয় তবে জান্নাতীদের বাসস্থান আর জাহান্নামী হলে জাহান্নামীদের বাসস্থান সকাল সন্ধ্যায় তার নিকটে পেশ করা হয়। সহীহুল বুখারী ১১/১৮।
জান্নাত-জাহান্নাম সৃষ্ট ও বর্তামানে বিদ্যমানতার পক্ষে ক্বুরআন হাদীসের অনেক দলীল রয়েছে। তাই আহলুস্সুন্নাহ্ ওয়াল জামাআ'ত ঐক্যমত হয়েছেন যে জান্নাত-জাহান্নাম সৃষ্ট এবং বর্তমানে প্রস্তুতকৃত।
আমরা বিশ্বাস করি জান্নাত-জাহান্নাম পূরাতন, নষ্ট এবং ধ্বংস হবে না। ক্বুরআন হাদীসের দলীল এর উপর প্রমাণ বহন করে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) জান্নাতের ব্যাপারে বলেন:
﴿مَثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ أُكُلُهَا دَائِمٌ وَظِلُّهَا تِلْكَ عُقْبَى الَّذِينَ اتَّقَوْا وَعُقْبَى الْكَافِرِينَ النَّارُ﴾ [ الرعد : ৩৫
অর্থ: পরহেযগারদের জন্যে প্রতিশ্রুত জান্নাতের অবস্থা এই যে, তার নিম্নে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। তার ফলসমূহ চিরস্থায়ী এবং ছায়াও। এটা তাদের প্রতিদান, যারা সাবধান হয়েছে এবং কাফেরদের প্রতিফল অগ্নি। সূরাহ্ আর রাহদ আয়াত ৩৫। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ يَنْعَمُ لَا يَبْأَسُ لَا تَبْلَى ثِيَابُهُ وَلَا يَفْنَى شَبَابُهُ﴾ ( صحيح مسلم - (১৩ /৪৭৫ )
অর্থ: যে জান্নাতে প্রবেশ করবে সে নিয়ামতে থাকবে, দূঃখ কষ্ট নিরাশা তাকে স্পর্শ করবে না। তাদের কাপড় পূরাতন হবে না এবং তার যৌবন নষ্ট হবে না। মুসলিম ১৩/৪৭৫। অপর বর্ণনাতে পাওয়া যায় তারা জান্নাতে চিরস্থায়ী হবে এবং মৃত্যু বরণ করবে না। জাহান্নামের স্থায়ী হওয়া ও ধ্বংস না হওয়ার দলীল হলো মহান আল্লাহর বাণী:
﴿يُرِيدُونَ أَن يَخْرُجُواْ مِنَ النَّارِ وَمَا هُم بِخَارِجِينَ مِنْهَا وَلَهُمْ عَذَابٌ مُّقِيمٌ﴾ المائدة ৩৭
অর্থ: তারা (জাহান্নামীরা) জাহান্নামের আগুন থেকে বের হয়ে আসতে চাইবে কিন্তু তা থেকে বের হতে পারবে না। তারা চিরস্থায়ী শাস্তি ভোগ করবে। সূরাহ্ আল্ মায়িদাহ্ আয়াত ৩৭। অন্য স্থানে মহান আল্লাহ্ বলেন:
﴿وَالَّذِينَ كَفَرُوا لَهُمْ نَارُ جَهَنَّمَ لَا يُقْضَى عَلَيْهِمْ فَيَمُوتُوا وَلَا يُخَفَّفُ عَنْهُمْ مِنْ عَذَابِهَا كَذَلِكَ نَجْزِي كُلَّ كَفُورٍ﴾ [ فاطر : ৩৬[
অর্থ: আর যারা কাফের হয়েছে, তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাদেরকে মৃত্যুর আদেশও দেয়া হবে না যে, তারা মরে যাবে এবং তাদের থেকে তার শাস্তিও লাঘব করা হবে না। আমি প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে এভাবেই শাস্তি দিয়ে থাকি। সূরাহ্ আল্ ফাত্বির আয়াত ৩৬।
হে আল্লাহ্ আমরা তোমার সন্তুষ্টি ও জান্নাত এবং এ দুইয়ের নিকটবর্তীকারী কথা ও কাজ প্রার্থনা করছি। আপনার রাগ ও জান্নাম এবং এ দুইয়ের নিকটবর্তীকারী কথা ও কাজ হতে আপনার নিকটে আশ্রয় চাচ্ছি। আমীন।
﴿فَإِنْ لَمْ تَفْعَلُوا وَلَنْ تَفْعَلُوا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ (২৪) وَبَشِّرِ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أَنَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ كُلَّمَا رُزِقُوا مِنْهَا مِنْ ثَمَرَةٍ رِزْقًا قَالُوا هَذَا الَّذِي رُزِقْنَا مِنْ قَبْلُ وَأُتُوا بِهِ مُتَشَابِهًا وَلَهُمْ فِيهَا أَزْوَاجٌ مُطَهَّرَةٌ وَهُمْ فِيهَا خَالِدُونَ﴾ (২৫) [ البقرة [
অর্থ: আর যদি তা না পার-অবশ্য তা তোমরা কখনও পারবে না, তাহলে সে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তূত করা হয়েছে কাফিরদের জন্য।
আর হে নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজসমূহ করেছে, আপনি তাদেরকে এমন বেহেশ্তের সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান থাকবে। যখনই তারা খাবার হিসেবে কোন ফল প্রাপ্ত হবে, তখনই তারা বলবে, এতো অবিকল সে ফলই যা আমরা ইতিপূর্বেও লাভ করেছিলাম।
বস্তূতঃ তাদেরকে একই প্রকৃতির ফল প্রদান করা হবে। এবং সেখানে তাদের জন্য শুদ্ধচারিনী রমণীকূল থাকবে। আর সেখানে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে। সূরাহ্ আল্ বাক্বারাহ্ আয়াত ২৪-২৫।
পবিত্র ক্বুরআনের অনেক স্থানে জান্নাত জাহান্নাম এবং শান্তি ও শাস্তির আলোচনা এসেছে। যখনি জান্নাতের আলোচনা এসেছে তার সাথে জাহান্নামের আলোচনা করা হয়েছে, এর বিপরীতটিও হয়েছে।
কখনও জান্নাতের আগ্রহ দেখিয়ে সে পথে আহ্বান করা হয়েছে, কখনও জাহান্নামের প্রতি অনিহা প্রকাশ করে তা থেকে সতর্ক করা হয়েছে। কখনও আল্লাহ্ তাঁর বন্ধুদের জন্য জান্নাতে কি নিয়ামত প্রস্তুত রেখেছেন সে সংবাদ দিয়েছেন। অপর দিকে তাঁর শত্রুদের জন্য জাহান্নামে যে যন্ত্রণাদায়ক কঠিন শাস্তি জমা করে রেখেছেন তার সংবাদ দিয়েছেন। আমরা দৃঢ় বিশ্বাস করি যে জান্নাত জাহান্নাম সৃষ্ট ও বর্তমানে তা বিদ্যমান। আল্লাহ্ জান্নাত সম্পর্কে বলেন:
﴿وَسَارِعُوا إِلَى مَغْفِرَةٍ مِنْ رَبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِينَ﴾ [ آل عمران : ১৩৩[
অর্থ: তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা এবং জান্নাতের দিকে ছুটে যাও যার সীমানা হচ্ছে আসমান ও যমীন, যা তৈরী করা হয়েছে মুত্তাক্বীনদের জন্য। সূরাহ্ আলি ইমরান আয়াত ১৩৩। জাহান্নাম সম্পর্কে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿اتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ﴾ [ البقرة : ২৪[
অর্থ: তাহলে সেই জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তূত করা হয়েছে কাফিরদের জন্য। সূরাহ্ আল্ বাক্বারাহ্ আয়াত ২৪। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿إِذَا مَاتَ أَحَدُكُمْ فَإِنَّهُ يُعْرَضُ عَلَيْهِ مَقْعَدُهُ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ فَإِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَمِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَإِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَمِنْ أَهْلِ النَّارِ﴾ ( صحيح البخاري - (১১ / ১৮(
অর্থ: যখন তোমাদের কেউ মৃত্যু বরণ করে তখন সকাল সন্ধ্যায় তার সামনে নিজ বাসস্থান পেশ করা হয়। যদি ঐ ব্যক্তি জান্নাতী হয় তবে জান্নাতীদের বাসস্থান আর জাহান্নামী হলে জাহান্নামীদের বাসস্থান সকাল সন্ধ্যায় তার নিকটে পেশ করা হয়। সহীহুল বুখারী ১১/১৮।
জান্নাত-জাহান্নাম সৃষ্ট ও বর্তামানে বিদ্যমানতার পক্ষে ক্বুরআন হাদীসের অনেক দলীল রয়েছে। তাই আহলুস্সুন্নাহ্ ওয়াল জামাআ'ত ঐক্যমত হয়েছেন যে জান্নাত-জাহান্নাম সৃষ্ট এবং বর্তমানে প্রস্তুতকৃত।
আমরা বিশ্বাস করি জান্নাত-জাহান্নাম পূরাতন, নষ্ট এবং ধ্বংস হবে না। ক্বুরআন হাদীসের দলীল এর উপর প্রমাণ বহন করে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) জান্নাতের ব্যাপারে বলেন:
﴿مَثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ أُكُلُهَا دَائِمٌ وَظِلُّهَا تِلْكَ عُقْبَى الَّذِينَ اتَّقَوْا وَعُقْبَى الْكَافِرِينَ النَّارُ﴾ [ الرعد : ৩৫
অর্থ: পরহেযগারদের জন্যে প্রতিশ্রুত জান্নাতের অবস্থা এই যে, তার নিম্নে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। তার ফলসমূহ চিরস্থায়ী এবং ছায়াও। এটা তাদের প্রতিদান, যারা সাবধান হয়েছে এবং কাফেরদের প্রতিফল অগ্নি। সূরাহ্ আর রাহদ আয়াত ৩৫। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ يَنْعَمُ لَا يَبْأَسُ لَا تَبْلَى ثِيَابُهُ وَلَا يَفْنَى شَبَابُهُ﴾ ( صحيح مسلم - (১৩ /৪৭৫ )
অর্থ: যে জান্নাতে প্রবেশ করবে সে নিয়ামতে থাকবে, দূঃখ কষ্ট নিরাশা তাকে স্পর্শ করবে না। তাদের কাপড় পূরাতন হবে না এবং তার যৌবন নষ্ট হবে না। মুসলিম ১৩/৪৭৫। অপর বর্ণনাতে পাওয়া যায় তারা জান্নাতে চিরস্থায়ী হবে এবং মৃত্যু বরণ করবে না। জাহান্নামের স্থায়ী হওয়া ও ধ্বংস না হওয়ার দলীল হলো মহান আল্লাহর বাণী:
﴿يُرِيدُونَ أَن يَخْرُجُواْ مِنَ النَّارِ وَمَا هُم بِخَارِجِينَ مِنْهَا وَلَهُمْ عَذَابٌ مُّقِيمٌ﴾ المائدة ৩৭
অর্থ: তারা (জাহান্নামীরা) জাহান্নামের আগুন থেকে বের হয়ে আসতে চাইবে কিন্তু তা থেকে বের হতে পারবে না। তারা চিরস্থায়ী শাস্তি ভোগ করবে। সূরাহ্ আল্ মায়িদাহ্ আয়াত ৩৭। অন্য স্থানে মহান আল্লাহ্ বলেন:
﴿وَالَّذِينَ كَفَرُوا لَهُمْ نَارُ جَهَنَّمَ لَا يُقْضَى عَلَيْهِمْ فَيَمُوتُوا وَلَا يُخَفَّفُ عَنْهُمْ مِنْ عَذَابِهَا كَذَلِكَ نَجْزِي كُلَّ كَفُورٍ﴾ [ فاطر : ৩৬[
অর্থ: আর যারা কাফের হয়েছে, তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাদেরকে মৃত্যুর আদেশও দেয়া হবে না যে, তারা মরে যাবে এবং তাদের থেকে তার শাস্তিও লাঘব করা হবে না। আমি প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে এভাবেই শাস্তি দিয়ে থাকি। সূরাহ্ আল্ ফাত্বির আয়াত ৩৬।
হে আল্লাহ্ আমরা তোমার সন্তুষ্টি ও জান্নাত এবং এ দুইয়ের নিকটবর্তীকারী কথা ও কাজ প্রার্থনা করছি। আপনার রাগ ও জান্নাম এবং এ দুইয়ের নিকটবর্তীকারী কথা ও কাজ হতে আপনার নিকটে আশ্রয় চাচ্ছি। আমীন।
এ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যে সকল ভালো-মন্দ আল্লাহর ফয়সালা ও পরিমাপ অনুযায়ী হয়। আল্লাহ্ যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। তাঁর ইচ্ছা ছাড়া কোন কিছুই হয় না। তাঁর ইচ্ছা হতে কোন কিছু বেরিয়ে যেতে পারে না। আল্লাহর নির্ধারিত তাক্বদীর বা ফয়সালা হতে বেরিয়ে যেতে পারবে না। তাঁর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ব্যবস্থাপনাতেই দুনিয়ার সব কিছু হয়। নির্ধারিত তাক্বদীর ও লওহে মাহ্ফুযে লিপিবদ্ধ ফয়সালা ও ভাগ্য কেউ অতিক্রম করতে পারবে না।
তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বান্দার কর্ম, বাধ্যতা ও অবাধ্যতার সৃষ্টি কারী। এতদসত্বেও আল্লাহ্ বান্দাদেরকে আদেশ ও নিষেধ করেছেন, নিজেদের কাজের স্বাধীনতা দিয়েছেন, বাধ্য করেননি। বরং তাক্বদীর বান্দার শক্তি ও ইচ্ছানুযায়ী বাস্তবায়িত হবে, আল্লাহ্ তাদের এবং তাদের শক্তির সৃষ্টি কর্তা।
তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) নিজের রহমতে যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দান করেন, যাকে ইচ্ছা নিজের হিকমতে বিপথগামী করেন। তিনি যা করেন সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবেন না কিন্তু বান্দা নিজ কর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। তাক্বদীর বা আল্লাহর ফয়সালার প্রতি বিশ্বাস রাখা ঈমানের অন্যতম রোকন।
যেমন ঈমান সম্পর্কে জিবরীল এর প্রশ্নের উত্তরে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন:
﴿أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ﴾ ( صحيح مسلم - (১/ ৮৭(
অর্থ: ঈমান হলো, তুমি আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম), তাঁর ফেরেশ্তা, রাসূলগণ আলাইহিমুস্ সালাম, শেষ দিবস এবং ভাগ্যের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। সহীহ্ মুসলিম ১/৮৭। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অপর হাদীসে বলেন:
﴿لَوْ أَنَّ اللَّهَ عَذَّبَ أَهْلَ سَمَاوَاتِهِ وَأَهْلَ أَرْضِهِ لَعَذَّبَهُمْ غَيْرَ ظَالِمٍ لَهُمْ وَلَوْ رَحِمَهُمْ كَانَتْ رَحْمَتُهُ لَهُمْ خَيْرًا مِنْ أَعْمَالِهِمْ وَلَوْ كَانَ لَكَ جَبَلُ أُحُدٍ أَوْ مِثْلُ جَبَلِ أُحُدٍ ذَهَبًا أَنْفَقْتَهُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا قَبِلَهُ اللَّهُ مِنْكَ حَتَّى تُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ وَتَعْلَمَ أَنَّ مَا أَصَابَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُخْطِئَكَ وَأَنَّ مَا أَخْطَأَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُصِيبَكَ وَأَنَّكَ إِنْ مِتَّ عَلَى غَيْرِ هَذَا دَخَلْتَ النَّارَ﴾ ) مسند أحمد - (৪৪ / ৯৩(
অর্থ: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যদি আসমান-যমীন বাসীকে শাস্তি দেন তবে অত্যাচারী না হয়েই তিনি তাদেরকে শাস্তি দিতে পারবেন। আর তিনি তাদেরকে দয়া করলে তার রহমত বান্দার আমল থেকে উত্তম হবে। যদি তোমার ওহুদ পাহাড় সমপরিমাণ স্বর্ণ থাকে আর তুমি তা আল্লাহর পথে ব্যায় কর তবে তাক্বদীরের ভালো-মন্দের প্রতি ঈমান না আনা পর্যন্ত আল্লাহ্ তোমার সে দান গ্রহণ করবেন না।
জেনে রেখো, তোমার ভাগ্যে যা ঘটেছে তা থেকে বাঁচার কোন উপায় নাই আর যা তোমার ভাগ্যে ঘটেনি তা তোমার পাওয়ার নাই। তুমি এ বিশ্বাস ছাড়া ইন্তিকাল করলে জাহান্নামে যাবে। মুসনাদে আহমাদ ৪৪/৯৩।
ক্বদ্র বা তাক্বদীর হল: আল্লাহর হিকমত ও পূর্ব জ্ঞানানুযায়ী নির্ধারিত বিশ্ববাসীর তাক্বদীর বা ভাগ্যের ভাল-মন্দ।
তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বান্দার কর্ম, বাধ্যতা ও অবাধ্যতার সৃষ্টি কারী। এতদসত্বেও আল্লাহ্ বান্দাদেরকে আদেশ ও নিষেধ করেছেন, নিজেদের কাজের স্বাধীনতা দিয়েছেন, বাধ্য করেননি। বরং তাক্বদীর বান্দার শক্তি ও ইচ্ছানুযায়ী বাস্তবায়িত হবে, আল্লাহ্ তাদের এবং তাদের শক্তির সৃষ্টি কর্তা।
তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) নিজের রহমতে যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দান করেন, যাকে ইচ্ছা নিজের হিকমতে বিপথগামী করেন। তিনি যা করেন সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবেন না কিন্তু বান্দা নিজ কর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। তাক্বদীর বা আল্লাহর ফয়সালার প্রতি বিশ্বাস রাখা ঈমানের অন্যতম রোকন।
যেমন ঈমান সম্পর্কে জিবরীল এর প্রশ্নের উত্তরে রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন:
﴿أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ﴾ ( صحيح مسلم - (১/ ৮৭(
অর্থ: ঈমান হলো, তুমি আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম), তাঁর ফেরেশ্তা, রাসূলগণ আলাইহিমুস্ সালাম, শেষ দিবস এবং ভাগ্যের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। সহীহ্ মুসলিম ১/৮৭। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অপর হাদীসে বলেন:
﴿لَوْ أَنَّ اللَّهَ عَذَّبَ أَهْلَ سَمَاوَاتِهِ وَأَهْلَ أَرْضِهِ لَعَذَّبَهُمْ غَيْرَ ظَالِمٍ لَهُمْ وَلَوْ رَحِمَهُمْ كَانَتْ رَحْمَتُهُ لَهُمْ خَيْرًا مِنْ أَعْمَالِهِمْ وَلَوْ كَانَ لَكَ جَبَلُ أُحُدٍ أَوْ مِثْلُ جَبَلِ أُحُدٍ ذَهَبًا أَنْفَقْتَهُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ مَا قَبِلَهُ اللَّهُ مِنْكَ حَتَّى تُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ وَتَعْلَمَ أَنَّ مَا أَصَابَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُخْطِئَكَ وَأَنَّ مَا أَخْطَأَكَ لَمْ يَكُنْ لِيُصِيبَكَ وَأَنَّكَ إِنْ مِتَّ عَلَى غَيْرِ هَذَا دَخَلْتَ النَّارَ﴾ ) مسند أحمد - (৪৪ / ৯৩(
অর্থ: আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যদি আসমান-যমীন বাসীকে শাস্তি দেন তবে অত্যাচারী না হয়েই তিনি তাদেরকে শাস্তি দিতে পারবেন। আর তিনি তাদেরকে দয়া করলে তার রহমত বান্দার আমল থেকে উত্তম হবে। যদি তোমার ওহুদ পাহাড় সমপরিমাণ স্বর্ণ থাকে আর তুমি তা আল্লাহর পথে ব্যায় কর তবে তাক্বদীরের ভালো-মন্দের প্রতি ঈমান না আনা পর্যন্ত আল্লাহ্ তোমার সে দান গ্রহণ করবেন না।
জেনে রেখো, তোমার ভাগ্যে যা ঘটেছে তা থেকে বাঁচার কোন উপায় নাই আর যা তোমার ভাগ্যে ঘটেনি তা তোমার পাওয়ার নাই। তুমি এ বিশ্বাস ছাড়া ইন্তিকাল করলে জাহান্নামে যাবে। মুসনাদে আহমাদ ৪৪/৯৩।
ক্বদ্র বা তাক্বদীর হল: আল্লাহর হিকমত ও পূর্ব জ্ঞানানুযায়ী নির্ধারিত বিশ্ববাসীর তাক্বদীর বা ভাগ্যের ভাল-মন্দ।
তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস চারটি বিষয়কে শামিল করে:
প্রথম: এ বিশ্বাস রাখা যে আল্লাহ্ তায়ালা সকল বিষয় সংক্ষিপ্ত ও বিস্তারিত জানেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সকল সৃষ্টিজীব সম্পর্কে সৃষ্টির পূর্বেই অবগত আছেন। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বান্দার সৃষ্টির পূর্বেই তাদের রিযিক্ব, জীবনের নির্ধারিত সময়, কথা-কাজ, তাদের চলা-ফেরা, গোপনীয় ও প্রকাশ্য সব বিষয়, কে জান্নাতী, কে জাহান্নামী তা অবগত আছেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ﴾ [ الحشر : ২২[
অর্থ: তিনিই আল্লাহ্ তায়ালা, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন, তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা। সূরাহ্ আল্ হাশ্র আয়াত ২২। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ وَمِنَ الْأَرْضِ مِثْلَهُنَّ يَتَنَزَّلُ الْأَمْرُ بَيْنَهُنَّ لِتَعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ وَأَنَّ اللَّهَ قَدْ أَحَاطَ بِكُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا﴾ [ الطلاق : ১২[
অর্থ: আল্লাহ্ সপ্তাকাশ সৃষ্টি করেছেন এবং পৃথিবীও সেই পরিমাণে, এসবের মধ্যে তাঁর আদেশ অবতীর্ণ হয়, যাতে তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান এবং সবকিছু তাঁর গোচরীভূত। সূরাহ্ আত্বলাক্ব আয়াত ১২।
দ্বিতীয়: এ বিশ্বাস রাখা যে আল্লাহর পূর্ব জ্ঞানানুযায়ী পৃথিবীতে যা কিছু ঘটবে তা তিনি লওহে মাহ্ফুজে লিপিবদ্ধ করেছেন। এর দলীল হলো মহান আল্লাহর বাণী:
﴿مَا أَصَابَ مِنْ مُصِيبَةٍ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي أَنْفُسِكُمْ إِلَّا فِي كِتَابٍ مِنْ قَبْلِ أَنْ نَبْرَأَهَا إِنَّ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ﴾ [ الحديد : ২২[
অর্থ: পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ। সূরাহ্ আল্ হাদীদ আয়াত ২২।
রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿كَتَبَ اللَّهُ مَقَادِيرَ الْخَلَائِقِ قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِخَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ قَالَ وَعَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ﴾ ( صحيح مسلم - (১৩/ ১১৭(
অর্থ: আসমান যমীন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে আল্লাহ্ তায়ালা মাখলুক্ব বা সৃষ্টজীবের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করেছেন। সহীহ্ মুসলিম ১৩/১১৭।
তৃতীয় বিষয়: আল্লাহর অনিবার্য (যা বাস্তবায়ীত হবেই) ইচ্ছার প্রতি বিশ্বাস রাখা যা কেউ প্রতিরোধ করতে পারে না। আল্লাহর শক্তিকে কেউ অপারগ করতে সক্ষম নয়। সংঘটিত যাবতীয় ঘটনাসমূহ আল্লাহর শক্তি ও ইচ্ছানুযায়ী হয়। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যা চান তা সংঘটিত হয়, যা চান না তা হয় না। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَمَا تَشَاءُونَ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا﴾ [ الإنسان : ৩০[
অর্থ: আল্লাহ্র অভিপ্রায় ব্যতিরেকে তোমরা অন্য কোন অভিপ্রায় পোষণ করবে না। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়। সূরাহ্ আদ্দাহ্র আয়াত ৩০। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) অন্যত্রে বলেন:
﴿وَيَفْعَلُ اللَّهُ مَا يَشَاءُ﴾ [ إبراهيم : ২৭[
অর্থ: আল্লাহ্ যা ইচ্ছা, তা করেন। সূরাহ্ ইবরাহীম আয়াত ২৭।
চতুর্থ বিষয়: আল্লাহ্ তায়ালা একাই সকল কিছু সৃষ্টি করেছেন, তিনি ব্যতীত অন্য সব কিছু মাখলুক্ব বা সৃষ্ট। আল্লাহ্ তায়ালা সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ ﴾ [ الرعد : ১৬[
অর্থ: আল্লাহই প্রত্যেক বস্তুর স্রষ্টা এবং তিনি একক, পরাক্রমশালী। সূরা আর্ রাহদ আয়াত ১৬। অন্য স্থানে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًا﴾ [ الفرقان : ২[
অর্থ: তিনি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তাকে শোধিত করেছেন পরিমিতভাবে। সূরাহ্ আল্ ফুরক্বান আয়াত ২।
ইহা জানা আবশ্যক যে সৃষ্টিকুল সৃষ্টির আগে তাদের ভাগ্যের ভালো মন্দ জানা মহান আল্লাহর অসীম শক্তিরই বহিঃপ্রকাশ।
পৃথিবীর সবকিছু আল্লাহর নির্ধারিত নিয়মেই চলছে। তাঁর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ইচ্ছা বাস্তবায়িত হবেই। বান্দার ইচ্ছা আল্লাহর ইচ্ছার আওতাধীন, তিনি তাদের জন্য যা চান তা হয়, আর যা চাননা তা হয় না।
তেমনি জানা আবশ্যক তাক্বদীর মূলত বান্দার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর গোপনীয় বিষয়, কোন নৈকট্যশীল ফেরেশতা বা প্রেরীত রাসূল তা জানেন না।
মু'মিন তার পালনকর্তাকে পরিপূর্ণ গুণে গুনান্বিত করে, তাই সে বিশ্বাস করে পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে তার একটা হিকমত আছে। যদি কোন বিষয়ে আল্লাহর হিক্মত জানতে না পারে তবে সকল কিছু ব্যপ্তকারী আল্লাহর জ্ঞানের সামনে নিজের জ্ঞানের সল্পতা বুঝতে পারে। ফলে মহাজ্ঞানী সর্বজ্ঞ আল্লাহর উপর বাদানুবাদ করে না।
তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তাঁর কর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন না কিন্তু মানুষেরা নিজেদের কর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।
প্রথম: এ বিশ্বাস রাখা যে আল্লাহ্ তায়ালা সকল বিষয় সংক্ষিপ্ত ও বিস্তারিত জানেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) সকল সৃষ্টিজীব সম্পর্কে সৃষ্টির পূর্বেই অবগত আছেন। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বান্দার সৃষ্টির পূর্বেই তাদের রিযিক্ব, জীবনের নির্ধারিত সময়, কথা-কাজ, তাদের চলা-ফেরা, গোপনীয় ও প্রকাশ্য সব বিষয়, কে জান্নাতী, কে জাহান্নামী তা অবগত আছেন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمَنُ الرَّحِيمُ﴾ [ الحشر : ২২[
অর্থ: তিনিই আল্লাহ্ তায়ালা, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন, তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা। সূরাহ্ আল্ হাশ্র আয়াত ২২। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ وَمِنَ الْأَرْضِ مِثْلَهُنَّ يَتَنَزَّلُ الْأَمْرُ بَيْنَهُنَّ لِتَعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ وَأَنَّ اللَّهَ قَدْ أَحَاطَ بِكُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا﴾ [ الطلاق : ১২[
অর্থ: আল্লাহ্ সপ্তাকাশ সৃষ্টি করেছেন এবং পৃথিবীও সেই পরিমাণে, এসবের মধ্যে তাঁর আদেশ অবতীর্ণ হয়, যাতে তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান এবং সবকিছু তাঁর গোচরীভূত। সূরাহ্ আত্বলাক্ব আয়াত ১২।
দ্বিতীয়: এ বিশ্বাস রাখা যে আল্লাহর পূর্ব জ্ঞানানুযায়ী পৃথিবীতে যা কিছু ঘটবে তা তিনি লওহে মাহ্ফুজে লিপিবদ্ধ করেছেন। এর দলীল হলো মহান আল্লাহর বাণী:
﴿مَا أَصَابَ مِنْ مُصِيبَةٍ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي أَنْفُسِكُمْ إِلَّا فِي كِتَابٍ مِنْ قَبْلِ أَنْ نَبْرَأَهَا إِنَّ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ﴾ [ الحديد : ২২[
অর্থ: পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ। সূরাহ্ আল্ হাদীদ আয়াত ২২।
রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿كَتَبَ اللَّهُ مَقَادِيرَ الْخَلَائِقِ قَبْلَ أَنْ يَخْلُقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِخَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ قَالَ وَعَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ﴾ ( صحيح مسلم - (১৩/ ১১৭(
অর্থ: আসমান যমীন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে আল্লাহ্ তায়ালা মাখলুক্ব বা সৃষ্টজীবের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করেছেন। সহীহ্ মুসলিম ১৩/১১৭।
তৃতীয় বিষয়: আল্লাহর অনিবার্য (যা বাস্তবায়ীত হবেই) ইচ্ছার প্রতি বিশ্বাস রাখা যা কেউ প্রতিরোধ করতে পারে না। আল্লাহর শক্তিকে কেউ অপারগ করতে সক্ষম নয়। সংঘটিত যাবতীয় ঘটনাসমূহ আল্লাহর শক্তি ও ইচ্ছানুযায়ী হয়। তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) যা চান তা সংঘটিত হয়, যা চান না তা হয় না। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন:
﴿وَمَا تَشَاءُونَ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا﴾ [ الإنسان : ৩০[
অর্থ: আল্লাহ্র অভিপ্রায় ব্যতিরেকে তোমরা অন্য কোন অভিপ্রায় পোষণ করবে না। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়। সূরাহ্ আদ্দাহ্র আয়াত ৩০। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) অন্যত্রে বলেন:
﴿وَيَفْعَلُ اللَّهُ مَا يَشَاءُ﴾ [ إبراهيم : ২৭[
অর্থ: আল্লাহ্ যা ইচ্ছা, তা করেন। সূরাহ্ ইবরাহীম আয়াত ২৭।
চতুর্থ বিষয়: আল্লাহ্ তায়ালা একাই সকল কিছু সৃষ্টি করেছেন, তিনি ব্যতীত অন্য সব কিছু মাখলুক্ব বা সৃষ্ট। আল্লাহ্ তায়ালা সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ ﴾ [ الرعد : ১৬[
অর্থ: আল্লাহই প্রত্যেক বস্তুর স্রষ্টা এবং তিনি একক, পরাক্রমশালী। সূরা আর্ রাহদ আয়াত ১৬। অন্য স্থানে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًا﴾ [ الفرقان : ২[
অর্থ: তিনি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তাকে শোধিত করেছেন পরিমিতভাবে। সূরাহ্ আল্ ফুরক্বান আয়াত ২।
ইহা জানা আবশ্যক যে সৃষ্টিকুল সৃষ্টির আগে তাদের ভাগ্যের ভালো মন্দ জানা মহান আল্লাহর অসীম শক্তিরই বহিঃপ্রকাশ।
পৃথিবীর সবকিছু আল্লাহর নির্ধারিত নিয়মেই চলছে। তাঁর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ইচ্ছা বাস্তবায়িত হবেই। বান্দার ইচ্ছা আল্লাহর ইচ্ছার আওতাধীন, তিনি তাদের জন্য যা চান তা হয়, আর যা চাননা তা হয় না।
তেমনি জানা আবশ্যক তাক্বদীর মূলত বান্দার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর গোপনীয় বিষয়, কোন নৈকট্যশীল ফেরেশতা বা প্রেরীত রাসূল তা জানেন না।
মু'মিন তার পালনকর্তাকে পরিপূর্ণ গুণে গুনান্বিত করে, তাই সে বিশ্বাস করে পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে তার একটা হিকমত আছে। যদি কোন বিষয়ে আল্লাহর হিক্মত জানতে না পারে তবে সকল কিছু ব্যপ্তকারী আল্লাহর জ্ঞানের সামনে নিজের জ্ঞানের সল্পতা বুঝতে পারে। ফলে মহাজ্ঞানী সর্বজ্ঞ আল্লাহর উপর বাদানুবাদ করে না।
তিনি (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) তাঁর কর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন না কিন্তু মানুষেরা নিজেদের কর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।
আমরা তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের যে গুণাবলী বর্ণনা করেছি তা বান্দার ইচ্ছা ও সামর্থ্যের আওতাধীন কাজে তার চাহিদার পরিপন্থি নয়। কেননা, শরীয়ত ও বাস্তবতায় তা প্রমাণিত বিষয়। শরীয়তের দলীল, আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ইচ্ছার ব্যাপারে বলেন:
﴿ذَلِكَ الْيَوْمُ الْحَقُّ فَمَنْ شَاءَ اتَّخَذَ إِلَى رَبِّهِ مَآبًا﴾ [ النبأ : ৩৯[
অর্থ: এই দিবস সত্য। অতঃপর যার ইচ্ছা, সে তার পালনকর্তার কাছে ঠিকানা তৈরী করুক। সূরাহ্ আন-নাবা আয়াত ৩৯। শক্তি বা সামর্থ্যের ব্যাপারে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ﴾ [ البقرة : ২৮৬[
অর্থ: আল্লাহ্ কোন ব্যক্তির উপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত কিছু আরোপ করেন না। সে ভাল যা করেছে সে তার সওয়াব পাবে এবং স্বীয় মন্দ কৃতকর্মের জন্য নিজেই নিগ্রহ ভোগ করবে। সূরাহ্ আল-বাক্বারাহ্ আয়াত ২৮৬।
বাস্তবতার দলীল হল: প্রত্যেক ব্যক্তিই জানে যে তার নিজস্ব একটা ইচ্ছা ও শক্তি আছে যার মাধ্যমে সে কোন কাজ করে বা ছেড়ে দেয়। স্বেচ্ছায় (যেমন হাঁটা বা চলা-ফেরা করা) এবং অনিচ্ছায় যা হয় (যেমন, কাঁপা বা শিহরিত হয়ে উঠা) সে তার মাঝে পার্থ্যক্য করতে পারে। তবে বান্দার ইচ্ছা ও শক্তি আল্লাহর ইচ্ছা ও শক্তির আওতাধীন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَا تَشَاؤُونَ إِلَّا أَن يَشَاءَ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيماً حَكِيماً﴾ ] الإنسان -৩০[
অর্থ: আল্লাহর অভিপ্রায় ব্যতিরেকে তোমরা অন্য কোন অভিপ্রায় পোষণ করবে না। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। সূরাহ্ আল-ইনসান (দাহ্র) আয়াত ৩০।
তাছাড়া সারা বিশ্বের মালিকানা আল্লাহর হাতে সেহেতু তাঁর রাজত্বে তাঁর ইচ্ছা ও জ্ঞান ব্যতীত কোন কিছুই হয় না।
আল্লাহর আদিষ্ট কাজ পরিত্যাগ বা নিষেধকৃত কাজ করার ক্ষেত্রে তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস দিয়ে বান্দার দলীল পেশের কোন সুযোগ নাই। অতএব, যে ব্যক্তি খারাপ কাজ করে ভাগ্যের দোহায় দেয় তার এ দলীল কয়েকভাবে বাতিল বলে গন্য: প্রথমত: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنْ النَّارِ وَمَقْعَدُهُ مِنْ الْجَنَّةِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ عَلَى كِتَابِنَا وَنَدَعُ الْعَمَلَ قَالَ اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ﴾ ( صحيح البخاري - (১৫ / ৩০৩(
অর্থ: জান্নাত ও জাহান্নামে তোমাদের সকলের স্থান লিখা আছে। সাহাবাগণ বললেন: হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমরা কি আমাদের ঐ লিখার উপর ভরসা করে আমল করা ছেড়ে দিব না? তিনি বললেন: তোমরা আমল কর, কেননা প্রত্যেক ব্যw³র জন্য সে কাজই সহজ করে দেওয়া হবে যে জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। বুখারী ও মুসলিম।
দ্বিতীয়ত: আল্লাহ্ বান্দাকে আদেশ ও নিষেধ করেছেন, আর সে যা পালন করতে সক্ষম তারই তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ﴾ [ التغابن : ১৬[
অর্থ: তোমাদের সাধ্যানুযায়ী তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। সূরাহ্ আত্-তাগাবুন আয়াত ১৬।
যদি বান্দাকে কোন কাজ করতে বাধ্য করা হতো তবে তার সাধ্যের বাইরে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হতো যা করা ছাড়া তার কোন উপায় থাকতো না।
অথচ এমনটি সম্পূর্ণ বাতিল। এ জন্যই জ্ঞানের স্বল্পতা, ভুল বা জোর পূর্বক বান্দার মাধ্যমে কোন অপরাধ হলে তার কোন গুণাহ্ হবে না। কেননা তার ওজর (অজুহাত) রয়েছে।
তৃতীয়ত: আল্লাহর লিখিত তাক্বদীর বা ভাগ্য গোপনীয় বিষয় বাস্তবায়ীত না হওয়া পর্যন্ত তা জানা যায় না। বান্দা কোন কাজ করার পূর্বেই ইচ্ছা করে থাকে অতএব, বান্দা কর্তৃক কোন কাজের ইচ্ছা করা আল্লাহর লিখিত ভাগ্য লিপির উপর ভিত্তি করে নয়।
এমতাবস্থায় তাক্বদীরের মাধ্যমে বান্দার দলীল পেশ করা বাতিল বলে গন্য। কেননা কোন ব্যক্তি যা জানে না তা ঐ ব্যক্তির জন্য দলীল হতে পারে না।
অবাধ্য ব্যক্তি প্রতিবাদ করে যদি বলে, এ পাপ আমার ভাগ্যে লিখা ছিল। তাকে বলা হবে: তুমি পাপ করার পূর্বে আল্লাহর ইল্ম সম্পর্কে কে তোমাকে অবহিত করল? যেহেতু তুমি (আল্লাহর ইলম) জানো না এবং তোমাকে ইচ্ছা ও শক্তি দেওয়া হয়েছে, তোমার সামনে ভাল-মন্দ উভয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে, এমতাবস্থায় তুমিই পাপের পছন্দকারী বা ইচ্ছাকারী। তুমি পাপকে সওয়াবের কাজের উপর প্রাধান্য দিয়েছো, অতএব, তোমাকেই তোমার পাপের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
চতুর্থত: ওয়াজিব কাজ পরিত্যাগ করে বা পাপ কাজে লিপ্ত হয়ে তাক্বদীরের অজুহাত দানকারী ব্যক্তির উপর কেউ আক্রমন করে তার সম্পদ হরণ করে, অথবা তার ইজ্জত হানী করে তাক্বদীরের দোহায় দিয়ে যদি বলে আমাকে দোষারোপ করিওনা।
কেননা তোমার উপর আমার আক্রমন তাক্বদীরের অন্তর্ভূক্ত তবে ঐ ব্যক্তি তা গ্রহণ করবে না। আশ্চর্যের ব্যাপার কিভাবে অন্য কেউ তার উপর আক্রমন করলে তাক্বদীরের দলীল সে গ্রহণ করছে না, অথচ আল্লাহর অবাধ্যতা ও তাঁর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) উপর বাড়াবাড়ির ব্যাপারে নিজের ক্ষেত্রে সেই তাক্বদীরেরই দলীল দিচ্ছে?!
﴿ذَلِكَ الْيَوْمُ الْحَقُّ فَمَنْ شَاءَ اتَّخَذَ إِلَى رَبِّهِ مَآبًا﴾ [ النبأ : ৩৯[
অর্থ: এই দিবস সত্য। অতঃপর যার ইচ্ছা, সে তার পালনকর্তার কাছে ঠিকানা তৈরী করুক। সূরাহ্ আন-নাবা আয়াত ৩৯। শক্তি বা সামর্থ্যের ব্যাপারে আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ﴾ [ البقرة : ২৮৬[
অর্থ: আল্লাহ্ কোন ব্যক্তির উপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত কিছু আরোপ করেন না। সে ভাল যা করেছে সে তার সওয়াব পাবে এবং স্বীয় মন্দ কৃতকর্মের জন্য নিজেই নিগ্রহ ভোগ করবে। সূরাহ্ আল-বাক্বারাহ্ আয়াত ২৮৬।
বাস্তবতার দলীল হল: প্রত্যেক ব্যক্তিই জানে যে তার নিজস্ব একটা ইচ্ছা ও শক্তি আছে যার মাধ্যমে সে কোন কাজ করে বা ছেড়ে দেয়। স্বেচ্ছায় (যেমন হাঁটা বা চলা-ফেরা করা) এবং অনিচ্ছায় যা হয় (যেমন, কাঁপা বা শিহরিত হয়ে উঠা) সে তার মাঝে পার্থ্যক্য করতে পারে। তবে বান্দার ইচ্ছা ও শক্তি আল্লাহর ইচ্ছা ও শক্তির আওতাধীন। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿وَمَا تَشَاؤُونَ إِلَّا أَن يَشَاءَ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيماً حَكِيماً﴾ ] الإنسان -৩০[
অর্থ: আল্লাহর অভিপ্রায় ব্যতিরেকে তোমরা অন্য কোন অভিপ্রায় পোষণ করবে না। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। সূরাহ্ আল-ইনসান (দাহ্র) আয়াত ৩০।
তাছাড়া সারা বিশ্বের মালিকানা আল্লাহর হাতে সেহেতু তাঁর রাজত্বে তাঁর ইচ্ছা ও জ্ঞান ব্যতীত কোন কিছুই হয় না।
আল্লাহর আদিষ্ট কাজ পরিত্যাগ বা নিষেধকৃত কাজ করার ক্ষেত্রে তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস দিয়ে বান্দার দলীল পেশের কোন সুযোগ নাই। অতএব, যে ব্যক্তি খারাপ কাজ করে ভাগ্যের দোহায় দেয় তার এ দলীল কয়েকভাবে বাতিল বলে গন্য: প্রথমত: রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
﴿مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنْ النَّارِ وَمَقْعَدُهُ مِنْ الْجَنَّةِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ عَلَى كِتَابِنَا وَنَدَعُ الْعَمَلَ قَالَ اعْمَلُوا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ﴾ ( صحيح البخاري - (১৫ / ৩০৩(
অর্থ: জান্নাত ও জাহান্নামে তোমাদের সকলের স্থান লিখা আছে। সাহাবাগণ বললেন: হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমরা কি আমাদের ঐ লিখার উপর ভরসা করে আমল করা ছেড়ে দিব না? তিনি বললেন: তোমরা আমল কর, কেননা প্রত্যেক ব্যw³র জন্য সে কাজই সহজ করে দেওয়া হবে যে জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। বুখারী ও মুসলিম।
দ্বিতীয়ত: আল্লাহ্ বান্দাকে আদেশ ও নিষেধ করেছেন, আর সে যা পালন করতে সক্ষম তারই তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) বলেন:
﴿فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ﴾ [ التغابن : ১৬[
অর্থ: তোমাদের সাধ্যানুযায়ী তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। সূরাহ্ আত্-তাগাবুন আয়াত ১৬।
যদি বান্দাকে কোন কাজ করতে বাধ্য করা হতো তবে তার সাধ্যের বাইরে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হতো যা করা ছাড়া তার কোন উপায় থাকতো না।
অথচ এমনটি সম্পূর্ণ বাতিল। এ জন্যই জ্ঞানের স্বল্পতা, ভুল বা জোর পূর্বক বান্দার মাধ্যমে কোন অপরাধ হলে তার কোন গুণাহ্ হবে না। কেননা তার ওজর (অজুহাত) রয়েছে।
তৃতীয়ত: আল্লাহর লিখিত তাক্বদীর বা ভাগ্য গোপনীয় বিষয় বাস্তবায়ীত না হওয়া পর্যন্ত তা জানা যায় না। বান্দা কোন কাজ করার পূর্বেই ইচ্ছা করে থাকে অতএব, বান্দা কর্তৃক কোন কাজের ইচ্ছা করা আল্লাহর লিখিত ভাগ্য লিপির উপর ভিত্তি করে নয়।
এমতাবস্থায় তাক্বদীরের মাধ্যমে বান্দার দলীল পেশ করা বাতিল বলে গন্য। কেননা কোন ব্যক্তি যা জানে না তা ঐ ব্যক্তির জন্য দলীল হতে পারে না।
অবাধ্য ব্যক্তি প্রতিবাদ করে যদি বলে, এ পাপ আমার ভাগ্যে লিখা ছিল। তাকে বলা হবে: তুমি পাপ করার পূর্বে আল্লাহর ইল্ম সম্পর্কে কে তোমাকে অবহিত করল? যেহেতু তুমি (আল্লাহর ইলম) জানো না এবং তোমাকে ইচ্ছা ও শক্তি দেওয়া হয়েছে, তোমার সামনে ভাল-মন্দ উভয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে, এমতাবস্থায় তুমিই পাপের পছন্দকারী বা ইচ্ছাকারী। তুমি পাপকে সওয়াবের কাজের উপর প্রাধান্য দিয়েছো, অতএব, তোমাকেই তোমার পাপের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
চতুর্থত: ওয়াজিব কাজ পরিত্যাগ করে বা পাপ কাজে লিপ্ত হয়ে তাক্বদীরের অজুহাত দানকারী ব্যক্তির উপর কেউ আক্রমন করে তার সম্পদ হরণ করে, অথবা তার ইজ্জত হানী করে তাক্বদীরের দোহায় দিয়ে যদি বলে আমাকে দোষারোপ করিওনা।
কেননা তোমার উপর আমার আক্রমন তাক্বদীরের অন্তর্ভূক্ত তবে ঐ ব্যক্তি তা গ্রহণ করবে না। আশ্চর্যের ব্যাপার কিভাবে অন্য কেউ তার উপর আক্রমন করলে তাক্বদীরের দলীল সে গ্রহণ করছে না, অথচ আল্লাহর অবাধ্যতা ও তাঁর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) উপর বাড়াবাড়ির ব্যাপারে নিজের ক্ষেত্রে সেই তাক্বদীরেরই দলীল দিচ্ছে?!
আক্বীদাহ্ বা বিশ্বাস হওয়া সত্বেও তাক্বদীরের প্রতি ঈমান আনা ওয়াজিব। ইহা ঈমানের অন্যতম রুকন তথা স্তম্ভ, যে ব্যক্তি তা অস্বীকার করবে সে কাফের বলে গণ্য হবে। মানুষের জীবনে তাক্বদীরের প্রতি ঈমান আনার বেশ কিছু প্রভাব রয়েছে।
নিচে কিছু প্রভাব উল্লেখ করা হল:
তাক্বদীর অন্যতম মূখ্য কারণ যা ব্যক্তিকে দুনিয়াবী জীবনে পূর্ণোদ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টিজনক কাজ করার প্রতি আহ্বান করে। তাক্বদীরের প্রতি ঈমান মুহমিনের কাজ করা ও বড় কর্মসমূহে বিশ্বাস ও দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে যাওয়ার পথে শক্তিশালী উৎসাহদানকারী বিষয়। মু'মিনদেরকে আল্লাহর উপর ভরসা করার সাথে সাথে উপকরণ গ্রহণের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আর তারা এবিশ্বাসেরও আদিষ্ট হয়েছেন যে আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত উপকরণ বা মাধ্যম কোন ফল দিতে পারে না। কেননা, আল্লাহই উপকরণ ও ফলা-ফল সৃষ্টি করেছেন। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿الْمُؤْمِنُ الْقَوِيُّ خَيْرٌ وَأَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ الْمُؤْمِنِ الضَّعِيفِ وَفِي كُلٍّ خَيْرٌ احْرِصْ عَلَى مَا يَنْفَعُكَ وَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ وَلَا تَعْجَزْ وَإِنْ أَصَابَكَ شَيْءٌ فَلَا تَقُلْ لَوْ أَنِّي فَعَلْتُ كَانَ كَذَا وَكَذَا وَلَكِنْ قُلْ قَدَرُ اللَّهِ وَمَا شَاءَ فَعَلَ فَإِنَّ لَوْ تَفْتَحُ عَمَلَ الشَّيْطَانِ﴾ ( صحيح مسلم - (১৩/১৪২(
অর্থ: শক্তিশালী মুহমিন আল্লাহর নিকটে দূর্বল মুহমিন থেকে ভাল এবং প্রিয়, প্রত্যেকের মাঝেই কল্যাণ রয়েছে, তোমার উপকারী বিষয়ে আগ্রহ পোষণ কর।
আল্লাহর নিকটে সাহায্য প্রার্থনা কর, কখনো দূর্বল হবে না বা নিজেকে দূর্বল মনে করবে না। তোমার কোন কিছু হলে (যেমন বিপদ বা উদ্দিষ্ট বস্তু না পাওয়া) এ কথা বলিওনা যে আমি যদি এমন করতাম তবে এমন হতো। তবে বলো আল্লাহ্ ইহাই নির্ধারণ করেছিলেন এবং তিনি যা চেয়েছেন তাই করেছেন, কেননা লাও বা যদি শব্দটি শয়তানের কর্ম খুলে দেয়। সহীহ্ মুসলিম ১৩/১৪২।
জিহাদের মাধ্যমে মুসলিমগণ যখন কোন স্থানের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন করতে চেয়েছেন, তখন তারা জিহাদের সকল উপকরণ অবলম্বন করেছেন, অতঃপর আল্লাহর উপর ভরসা করেছেন। তারা এমনটি বলেননি যে আল্লাহ্ তায়ালা মুহমিনদের বিজয় এবং কাফিরদের পরাজয় লিখে রেখেছেন। তাই আমাদের প্রস্তুতি, জিহাদ, ধৈর্য্য এবং যুদ্ধের ময়দানে যাবার প্রয়োজন নেই (এমন কথা তারা বলেননি)।
বরং এসব কিছুই তারা করেছেন ফলে আল্লাহ্ তাদেরকে সহযোগীতা করতঃ বিজয়ী করেছেন এবং তাদের মাধ্যমে ইসলামকে মর্যাদা দিয়েছেন।
২- তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাসের মাধ্যমে মানুষ তার নিজের ক্বদর বা মর্যাদার পরিধি জানতে পারবে। ফলে সে কখনো অহংকার, অহমিকা ও ঔদ্ধত্য প্রকাশ করবে না। কেননা সে তার ভাগ্য ও ভবিষ্যতে কি হবে তা জানতে অপারগ। সুতরাং মানুষ তার অপারগতা এবং আল্লাহর নিকটে সার্বক্ষণিক স্বীয় প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করাই আবশ্যক।
মানুষ যখন কল্যাণে থাকে তখন অহঙ্কার ও দাম্ভিকতা করে ঐ কল্যাণ নিয়ে ধোকায় থাকে। যখন তার অকল্যাণ হয় তখন সে অস্থির ও চিন্তিত হয়ে উঠে।
তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাসই ভাল অবস্থায় মানুষকে অহঙ্কার, দাম্ভিকতা এবং খারাপ অবস্থায় চিন্তা থেকে মুক্ত রাখতে পারে। তখন সে বিশ্বাস করে যা সংঘটিত হয়েছে তা ভাগ্যের লিখনের কারণেই হয়েছে, যা আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ঐ কর্ম সম্পাদন হওয়ার পূর্বেই জানেন। পূর্ববর্তী কোন এক মনিষী বলেন:
﴿من لم يؤمن بالقدر لم يتهن بعيشه﴾
অর্থ: যে ব্যক্তি তাক্বদীরে বিশ্বাস করে না সে তার জীবন নিয়ে শান্তি পায় না।
৩- তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস সমাজে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা যা মুহমিনদের মাঝে হিংসা বিদ্বেষের সৃষ্টি করে তা নির্মূল করে, যেমন: হিংসা বিদ্বেষের মতো নোংরা অভ্যাস। আল্লাহ্ কাউকে যে নিয়ামত দিয়েছেন মুহমিন সে ব্যাপারে মানুষের প্রতি বিদ্বেষ রাখেনা। কেননা, আল্লাহই তাদেরকে রিযিক্ব দিয়েছেন এবং ঐ সকল নিয়ামত তাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। সে জানে যখন সে অন্যের হিংসা করবে তখন সে তাক্বদীরের উপরই আপত্তি ও প্রতিবাদ করল।
৪- তাক্বদীরে বিশ্বাস কঠিনতার মুক্বাবিলায় অন্তরে সাহস যোগায়, অঙ্গিকারকে শক্তিশালী করে।
ফলে মুহমিন জিহাদের ময়দানে দৃঢ় থাকে এবং মৃত্যুকে ভয় করে না, কেননা, সে দৃঢ় বিশ্বাস করে মানুষের মৃত্যুর সময় নির্ধারিত যা সামান্য আগে পরে হয় না।
যখন মু'মিনদের অন্তরে এ বিশ্বাস গেঁথেগিয়েছিল তখন তারা জিহাদে ও তা চালিয়ে যেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিল। তাই শত্রুর শক্তি ও সংখ্যা যাই হোকনা কেন মুজাহিদগণ জিহাদের ময়দানে দৃঢ়তা ও স্থায়িত্বের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেগেছেন। কেননা, তারা নিশ্চিত বিশ্বাস করতেন যে মানুষের ভাগ্যে যা লিখা আছে তাই ঘটবে।
৫- তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস মুহমিনের অন্তরে ঈমানের বিভিন্ন বাস্তবতার চারা রোপন করে। তাই সে সব সময় আল্লাহর নিকটে সাহায্য প্রার্থনা, তাঁর উপর ভরসা এবং তাওয়াক্কুল করে। সাথে সাথে এজন্য উপকরণ অবলম্বন করে। মুহমিন সব সময় আল্লাহর নিকটে ঈমানের উপর অটল থাকার জন্য সহযোগীতা চাই, সে নিজেও দানশীল হয় এবং অন্য মানুষকে দান-দয়া করতে ভালবাসে।
তাই তো দেখা যায় সে অন্যের প্রতি সদয় হয়ে তাদের প্রতি কল্যাণের হাত বাড়িয়ে দেয়।
৬- তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাসের প্রভাব হলো আল্লাহর পথে আহ্বানকারী নির্দিধায় দাওয়াতী কাজ চালিয়ে যায়। অত্যাচারী ও কাফিরদেরকে প্রকাশ্যে দাওয়াত দেয়, আল্লাহর পথে কাজ করতে কোন নিন্দুকের নিন্দার ভয় করে না।
৭- মানুষের সামনে ঈমানের বাস্তবতা ও চাহিদা তুলে ধরেন। তেমনি তিনি মানুষের সামনে কুফরি ও নিফাক্বী বা কপটতার আসলরুপ বর্ণনা করতঃ তা থেকে মানুষদেরকে সতর্ক করেন। বাতিল ও তার নকল বা মিথ্যার দিক উম্মোচন করেন। অত্যাচারীদের সামনে সত্য কথা (ইসলামের দাওয়াত) বলেন। কারণ, মুহমিন এসকল কিছু করেন দৃঢ় ঈমান, আল্লাহর উপর আস্থা ও ভরসা রেখে, এ পথে যে কষ্ট হবে তাতে তিনি ধৈর্য্য ধারণ করেন।
কারণ তিনি দৃঢ় বিশ্বাসী যে মৃত্যু ও রিযিক্ব একমাত্র আল্লাহর হাতে। বান্দার শক্তি ও সহযোগী যতই বেশী হোক না কেন তারা ঐ সবের সামান্য কিছুর মালিকানা রাখেনা।
আল্লাহ্ তাআ'লা আমাদের নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাঁর পরিবার এবং সকল সাথীদের উপর সলাত ও সালাম বর্ষণ করুন। আমীন।
নিচে কিছু প্রভাব উল্লেখ করা হল:
তাক্বদীর অন্যতম মূখ্য কারণ যা ব্যক্তিকে দুনিয়াবী জীবনে পূর্ণোদ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টিজনক কাজ করার প্রতি আহ্বান করে। তাক্বদীরের প্রতি ঈমান মুহমিনের কাজ করা ও বড় কর্মসমূহে বিশ্বাস ও দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে যাওয়ার পথে শক্তিশালী উৎসাহদানকারী বিষয়। মু'মিনদেরকে আল্লাহর উপর ভরসা করার সাথে সাথে উপকরণ গ্রহণের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আর তারা এবিশ্বাসেরও আদিষ্ট হয়েছেন যে আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত উপকরণ বা মাধ্যম কোন ফল দিতে পারে না। কেননা, আল্লাহই উপকরণ ও ফলা-ফল সৃষ্টি করেছেন। রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
﴿الْمُؤْمِنُ الْقَوِيُّ خَيْرٌ وَأَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ الْمُؤْمِنِ الضَّعِيفِ وَفِي كُلٍّ خَيْرٌ احْرِصْ عَلَى مَا يَنْفَعُكَ وَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ وَلَا تَعْجَزْ وَإِنْ أَصَابَكَ شَيْءٌ فَلَا تَقُلْ لَوْ أَنِّي فَعَلْتُ كَانَ كَذَا وَكَذَا وَلَكِنْ قُلْ قَدَرُ اللَّهِ وَمَا شَاءَ فَعَلَ فَإِنَّ لَوْ تَفْتَحُ عَمَلَ الشَّيْطَانِ﴾ ( صحيح مسلم - (১৩/১৪২(
অর্থ: শক্তিশালী মুহমিন আল্লাহর নিকটে দূর্বল মুহমিন থেকে ভাল এবং প্রিয়, প্রত্যেকের মাঝেই কল্যাণ রয়েছে, তোমার উপকারী বিষয়ে আগ্রহ পোষণ কর।
আল্লাহর নিকটে সাহায্য প্রার্থনা কর, কখনো দূর্বল হবে না বা নিজেকে দূর্বল মনে করবে না। তোমার কোন কিছু হলে (যেমন বিপদ বা উদ্দিষ্ট বস্তু না পাওয়া) এ কথা বলিওনা যে আমি যদি এমন করতাম তবে এমন হতো। তবে বলো আল্লাহ্ ইহাই নির্ধারণ করেছিলেন এবং তিনি যা চেয়েছেন তাই করেছেন, কেননা লাও বা যদি শব্দটি শয়তানের কর্ম খুলে দেয়। সহীহ্ মুসলিম ১৩/১৪২।
জিহাদের মাধ্যমে মুসলিমগণ যখন কোন স্থানের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন করতে চেয়েছেন, তখন তারা জিহাদের সকল উপকরণ অবলম্বন করেছেন, অতঃপর আল্লাহর উপর ভরসা করেছেন। তারা এমনটি বলেননি যে আল্লাহ্ তায়ালা মুহমিনদের বিজয় এবং কাফিরদের পরাজয় লিখে রেখেছেন। তাই আমাদের প্রস্তুতি, জিহাদ, ধৈর্য্য এবং যুদ্ধের ময়দানে যাবার প্রয়োজন নেই (এমন কথা তারা বলেননি)।
বরং এসব কিছুই তারা করেছেন ফলে আল্লাহ্ তাদেরকে সহযোগীতা করতঃ বিজয়ী করেছেন এবং তাদের মাধ্যমে ইসলামকে মর্যাদা দিয়েছেন।
২- তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাসের মাধ্যমে মানুষ তার নিজের ক্বদর বা মর্যাদার পরিধি জানতে পারবে। ফলে সে কখনো অহংকার, অহমিকা ও ঔদ্ধত্য প্রকাশ করবে না। কেননা সে তার ভাগ্য ও ভবিষ্যতে কি হবে তা জানতে অপারগ। সুতরাং মানুষ তার অপারগতা এবং আল্লাহর নিকটে সার্বক্ষণিক স্বীয় প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করাই আবশ্যক।
মানুষ যখন কল্যাণে থাকে তখন অহঙ্কার ও দাম্ভিকতা করে ঐ কল্যাণ নিয়ে ধোকায় থাকে। যখন তার অকল্যাণ হয় তখন সে অস্থির ও চিন্তিত হয়ে উঠে।
তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাসই ভাল অবস্থায় মানুষকে অহঙ্কার, দাম্ভিকতা এবং খারাপ অবস্থায় চিন্তা থেকে মুক্ত রাখতে পারে। তখন সে বিশ্বাস করে যা সংঘটিত হয়েছে তা ভাগ্যের লিখনের কারণেই হয়েছে, যা আল্লাহ্ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ঐ কর্ম সম্পাদন হওয়ার পূর্বেই জানেন। পূর্ববর্তী কোন এক মনিষী বলেন:
﴿من لم يؤمن بالقدر لم يتهن بعيشه﴾
অর্থ: যে ব্যক্তি তাক্বদীরে বিশ্বাস করে না সে তার জীবন নিয়ে শান্তি পায় না।
৩- তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস সমাজে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা যা মুহমিনদের মাঝে হিংসা বিদ্বেষের সৃষ্টি করে তা নির্মূল করে, যেমন: হিংসা বিদ্বেষের মতো নোংরা অভ্যাস। আল্লাহ্ কাউকে যে নিয়ামত দিয়েছেন মুহমিন সে ব্যাপারে মানুষের প্রতি বিদ্বেষ রাখেনা। কেননা, আল্লাহই তাদেরকে রিযিক্ব দিয়েছেন এবং ঐ সকল নিয়ামত তাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। সে জানে যখন সে অন্যের হিংসা করবে তখন সে তাক্বদীরের উপরই আপত্তি ও প্রতিবাদ করল।
৪- তাক্বদীরে বিশ্বাস কঠিনতার মুক্বাবিলায় অন্তরে সাহস যোগায়, অঙ্গিকারকে শক্তিশালী করে।
ফলে মুহমিন জিহাদের ময়দানে দৃঢ় থাকে এবং মৃত্যুকে ভয় করে না, কেননা, সে দৃঢ় বিশ্বাস করে মানুষের মৃত্যুর সময় নির্ধারিত যা সামান্য আগে পরে হয় না।
যখন মু'মিনদের অন্তরে এ বিশ্বাস গেঁথেগিয়েছিল তখন তারা জিহাদে ও তা চালিয়ে যেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিল। তাই শত্রুর শক্তি ও সংখ্যা যাই হোকনা কেন মুজাহিদগণ জিহাদের ময়দানে দৃঢ়তা ও স্থায়িত্বের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেগেছেন। কেননা, তারা নিশ্চিত বিশ্বাস করতেন যে মানুষের ভাগ্যে যা লিখা আছে তাই ঘটবে।
৫- তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস মুহমিনের অন্তরে ঈমানের বিভিন্ন বাস্তবতার চারা রোপন করে। তাই সে সব সময় আল্লাহর নিকটে সাহায্য প্রার্থনা, তাঁর উপর ভরসা এবং তাওয়াক্কুল করে। সাথে সাথে এজন্য উপকরণ অবলম্বন করে। মুহমিন সব সময় আল্লাহর নিকটে ঈমানের উপর অটল থাকার জন্য সহযোগীতা চাই, সে নিজেও দানশীল হয় এবং অন্য মানুষকে দান-দয়া করতে ভালবাসে।
তাই তো দেখা যায় সে অন্যের প্রতি সদয় হয়ে তাদের প্রতি কল্যাণের হাত বাড়িয়ে দেয়।
৬- তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাসের প্রভাব হলো আল্লাহর পথে আহ্বানকারী নির্দিধায় দাওয়াতী কাজ চালিয়ে যায়। অত্যাচারী ও কাফিরদেরকে প্রকাশ্যে দাওয়াত দেয়, আল্লাহর পথে কাজ করতে কোন নিন্দুকের নিন্দার ভয় করে না।
৭- মানুষের সামনে ঈমানের বাস্তবতা ও চাহিদা তুলে ধরেন। তেমনি তিনি মানুষের সামনে কুফরি ও নিফাক্বী বা কপটতার আসলরুপ বর্ণনা করতঃ তা থেকে মানুষদেরকে সতর্ক করেন। বাতিল ও তার নকল বা মিথ্যার দিক উম্মোচন করেন। অত্যাচারীদের সামনে সত্য কথা (ইসলামের দাওয়াত) বলেন। কারণ, মুহমিন এসকল কিছু করেন দৃঢ় ঈমান, আল্লাহর উপর আস্থা ও ভরসা রেখে, এ পথে যে কষ্ট হবে তাতে তিনি ধৈর্য্য ধারণ করেন।
কারণ তিনি দৃঢ় বিশ্বাসী যে মৃত্যু ও রিযিক্ব একমাত্র আল্লাহর হাতে। বান্দার শক্তি ও সহযোগী যতই বেশী হোক না কেন তারা ঐ সবের সামান্য কিছুর মালিকানা রাখেনা।
আল্লাহ্ তাআ'লা আমাদের নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাঁর পরিবার এবং সকল সাথীদের উপর সলাত ও সালাম বর্ষণ করুন। আমীন।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন