hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

অধ্যয়ন ও জ্ঞানসাধনা

লেখকঃ আবু বকর সিরাজী

১০০
সপ্তম পর্ব: ইলমের মাধ্যম কিতাবাদীর সঙ্গে আচরণ
এক.

ছাত্রদের উচিত হচ্ছে ইলম হাসিলের মাধ্যম জরুরীকিতাবগুলো ক্রয় করে পাঠ করা। তবে শুধু কিতাব সংগ্রহ করাকে ‘ইলম হাসিল হয়ে গেল’ বলে মনে করবে না। জনৈক বুযুর্গ বলেন,

إذا لم تكن حافظاً واعياً، فجمعك للكتب لا ينفع

‘তুমি যদি নিজে সংরক্ষণকারীই না হও, তবে সংগ্রহকৃত কিতাব তোমার উপকারে আসবে না।’

কিতাব কেনা সম্ভব হলে দরসের আলোচ্য বিষয় লিখে নেয়ার দরকার নেই। অপরাগতা ছাড়া সর্বদা এই লিখে নেয়ার চেষ্টায় ব্যাপৃত থাকা কাম্য নয়। ক্রয় বা ইজারা নেয়ার সুযোগ থাকা অবস্থায় কিতাব ধার নেয়ার চেষ্টা করবে না। কিতাব লিখতে হস্তাক্ষর সুন্দর করার চেষ্টা করবে বটে, তবে সুন্দর হস্তাক্ষরের চেয়ে বিশুদ্ধ করার প্রতি নজর বেশি দেবে।

দুই.

ক্ষতি করার আশঙ্কা না থাকলে কাউকে কিতাব ধার দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত নয়। কেননা কিতাব ধার দেয়াও ইলমের সহযোগিতা করার শামিল। অথচ সাধারণ বস্তু ধার দেয়াতেই অনেক ফযীলত রয়েছে। জনৈক ব্যক্তি বিখ্যাত মনীষী আবূল আতাহিয়াকে বললেন, ‘আমাকে আপনার কিতাব ধার দিন। জবাবে তিনি বললেন, আমি কিতাব ধার দেওয়া অপছন্দ করি। তখন ওই লোকটি বললেন, আপনি কি জানেন না যে, সম্পর্ক বজায় থাকে অপ্রিয়তার মধ্য দিয়েই? তার কথা শুনে তিনি তাকে কিতাব ধার দিলেন।’

আর ধারগ্রহীতার উচিত হচ্ছে ধারদাতার শোকরিয়া আদায় ও কিতাবের হেফাজত করা। প্রয়োজন ছাড়া দীর্ঘ সময় নিজের কাছে ওই কিতাব না রাখা। ধার নেওয়া কিতাবে কোনো কিছু না লেখা। মালিকের অনুমতি ছাড়া তাতে কোনো কিছু সংযোজন না করা এবং তা তৃতীয় কাউকে না দেয়া। তবে কিতাব যদি অনির্দিষ্টভাবে ওয়াকফের হয় তবে সতর্কতার সঙ্গে তাতে কিছু যোগ করা বা যোগ্যতার শর্তে তাতে ভুল থাকলে সংশোধন করার অবকাশ আছে। জনৈক ব্যক্তি বুঝি কিতাব ধার দিয়ে ভোগান্তিতে পড়েই নিম্নোক্ত কবিতাটি বলেছিলেন!

أيها المستعير مني كتاباً ... ارض لي فيه ما لنفسك ترضى

‘হে আমার কিতাবগ্রহীতা! এতে আমার ব্যাপারে তাই পছন্দ করো যা তুমি নিজের জন্য পছন্দ করো!

তিন.

পাঠ বা লেখার সময় কিতাব ভূমিতে ছড়িয়ে রাখবে না। বরং বেঞ্চ বা কিতাব রাখার সাধারণ স্থানে রাখবে। যাতে কিতাব হেফাজতে থাকে এবং মলাট দ্রুত খুলে না যায়। ভূমি থেকে উঁচু ও শুষ্কস্থানে কিতাব রাখবে, যাতে তা ভিজে না যায়। তাকের ওপর কিতাব রাখার সময় মর্যাদা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সাজিয়ে রাখবে। অতএব কুরআন মাজীদ হলে তা সবার ওপরে রাখবে। আর উচিত হচ্ছে পবিত্র, পরিচ্ছন্ন তাকে কুরআন মাজীদ রাখা। অতপর ধারাবাহিকভাবে নিরেট হাদীছ, তাফসীর, উসুলে দীন, উসুলে ফিকহ, ফিকহ, নাহব, সরফ, আরবী শের ইত্যাদি কিতাব রাখা। যদি দুটি কিতাব শাস্ত্রীয় মর্যাদায় সমান হয় তবে যাতে কুরআনের আয়াত বা হাদীছ বেশি সেটা ওপরে রাখা। যদি তাতেও সমান হয় তবে মুসান্নিফের মর্যাদা অনুসারে ওপরে-নিচে রাখা। যদি এতেও দুইজন সমান সমান হন তবে সংকলনে যিনি অগ্রগামী এবং মানুষের হাতে যার কিতাব বেশি সেটা ওপরে রাখা। কিতাবের নাম শেষ পৃষ্ঠায় নিচে লিখবে, যাতে অনেকগুলোর মধ্যে থেকে তা বের করা সহজ হয়। সাবধান! কিতাবকে কখনও পাখার কাজে ব্যবহার করবে না, এর সঙ্গে হেলান দেবে না এবং এর দ্বারা মশা, মাছি মারবে না বা তাড়াবে না কিংবা এর ওপর মশা বসলে সেখানেই মশা মেরে ফেলবে না।

চার.

কারো কাছ থেকে কিতাব ধার নিলে যথাযথ অবস্থায় ফেরত দেবে। ভাজ করা, দাগ কাটা, অপ্রাসাঙ্গিক কিছু লেখা ইত্যাদি কাজ থেকে বিরত থাকবে।

পাঁচ.

শরঈ ইলমের কোনো কিতাব লিখলে শরীর, কাপড় ও মনের পবিত্রতা নিয়ে কিবলামুখী হয়ে বসবে। যে কোনো কিতাব - بسم الله الرحمن الرحيم দ্বারা শুরু করবে। কিতাবের ভূমিকা হলে এর সঙ্গে আল্লাহ তা‘আলার হামদ এবং রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরূদও যুক্ত করবে। এরপর কিতাবের মূল বিষয় লিখবে। লিখনীর মধ্যে যতবার আল্লাহ তা‘আলার নাম আসবে ততবার তাজিমসূচক কোনো শব্দ যুক্ত করবে। যেমন, তা‘আলা, সুবহানাহু, আয্যা ওয়া জাল্লা, তাকাদ্দাসা ইত্যাদি। আর যতবার রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম আসবে ততবার সালাত ও সালাম পাঠ করবে।

বুযুর্গানে কেরাম সালাত ও সালাম উভয়টি পাঠ করতেন এবং এর সঙ্গে তাঁর পরিবার-পরিজনকেও শামিল করে এভাবে বলতেন,

صلى الله عليه وعلى آله وسلم

যদি বারবারও লেখার প্রয়োজন পড়ে তবু দরূদের কোনো বাক্য সংক্ষিপ্ত করবে না। যেমন, (সা.), (দ.) (আ.) কিংবা আরবীতে লিখলে, صلع، أو صلم، أو صلم،

এসব সংকীর্ণতা ও কৃপণতা রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহান সত্তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। সাহাবায়ে কেরামের নাম আসলে রাদিয়াল্লাহ তা‘আলা আনহু, পুণ্যবান পুর্বসুরী ও নেককার ব্যক্তিত্বগণের নাম আসলে রাহিমাহুল্লাহ তা‘আলা লিখবে।

ছয়.

অতি সূক্ষ্ম এবং অস্পষ্ট হস্তাক্ষরে কোনো কিছু লিখবে না। বুযুর্গানে কেরাম বলেন, তুমি সেটাই লিখ, প্রয়োজনের সময় যা তোমার কাজে দেয়। তা লিখ না, প্রয়োজনের সময় যা তোমাকে কাজে দেয় না। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো শেষ বয়স ও বার্ধক্যকাল। অনেকে নানা কারণে সংক্ষেপ ও ক্ষুদ্রাক্ষরে লেখে। কিন্তু মনে রাখা উচিত, বার্ধক্যের সময় ক্ষুদ্রলেখা পাঠ করতে সমস্যা হবে।

সাত.

নিজের লেখা বা কিতাবের কোনো বিষয় উস্তাদ বা অন্য কোনো কিতাবের সাহায্যে সহীহ-শুদ্ধ করে নেয়ার সময় হরকত দিয়ে আলামতযুক্ত করে রাখবে। ভুলের স্থানও চিহ্নিত করে রাখবে। শুদ্ধ ও সংস্কার করে নেয়ার ক্ষেত্রে যে ধরনের সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করার রীতি আছে সেগুলো ব্যবহার করবে।

আট.

লেখার শিরোনাম, উপশিরোনাম, অধ্যায়, পর্ব, ভূমিকা, উপসংহার ইত্যাদি লাল বা মোটা হরফে লেখাতে দোষ নেই। কেননা এভাবে পাঠোদ্ধার সহজ হয়। এমনিভাবে মাযহাব, ইমামের নাম, তাদের বক্তব্য, অভিধান, সংখ্যা ইত্যাদি ভিন্ন কালিতে লেখা যেতে পারে। কিতাবে কোনো বিষয় নতুন যুক্ত করলে কিংবা সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করলে শুরুতে পাঠককে সে ব্যাপারে অভিহিত করবে। যাতে প্রকৃত মর্ম উদ্ধার করা সহজ হয়।

নয়.

কোনো কিছু মুছে ফেলার দরকার হলে লেখার ওপরে দাগ টেনে দেবে। খুটিয়ে ওঠানোর চেষ্টা করবে না। বলা হয়ে থাকে - الضرب أولى من الحك

লেখাপড়া, আমল-আখলাক, চাল-চলন, কাজকর্ম সবকিছুতে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আহলে বায়ত, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, তাবে তাবেঈন, ফকীহ, মুহাদ্দিসীন, মুসান্নিফ, মুআল্লিফ, রাহবার, শায়খ-উস্তাদ প্রত্যেককে তার প্রাপ্য সম্মান প্রদান করবে। তাদের আন্তরিক দোয়াকে নিজের জীবনের সফলতা লাভের সিঁড়ি বলে মনে করবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন