hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

অধ্যয়ন ও জ্ঞানসাধনা

লেখকঃ আবু বকর সিরাজী

৯১
নয়. ধোঁকা-প্রতারণা ও হিংসা-বিদ্বেষ থেকে বাঁচা
বিরোধীতা-বিদ্রোহ, আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোনো কারণে ক্রোধান্বিত হওয়া, অহংকার-লৌকিকতা, আত্মম্ভরিতা, কৃপণতা, কাপুরুষতা, লোভ-লালসা, গর্ব-দাম্ভিকতা, দুনিয়ার স্বার্থ হাসিলের জন্য কারো সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, জাগতিক বিষয়ে অহংকার প্রদর্শন, আত্মপ্রশংসা কামনা করা, আত্মচিন্তা, আত্মস্বার্থ, মানুষের দোষ তালাশের পেছনে লেগে থাকা, নিজের দোষ সংশোধনের চেষ্টা না করা, বংশীয় ও গোত্রীয় গোঁড়ামী, গিবত-চোগলখোরি, মিথ্যাচার, মিথ্যা অপবাদ প্রদান, কাজে ও কথায় অশ্লীলতা, মানুষকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা ইত্যাদি বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ যাবতীয় নিম্নমানের ও নিকৃষ্ট স্বভাব থেকে নিজেকে পবিত্র রাখা এবং সুন্দর ও পবিত্র স্বভাব দ্বারা নিজেকে ঋদ্ধ করা। বিশেষভাবে নিকৃষ্ট আখলাক থেকে নিজেকে বাঁচানো। কেননা এটাই যাবতীয় অকল্যাণের মূল। বিশেষ করে হিংসা, অহংকার, আত্মম্ভরিতা, লৌকিকতা এবং মানুষকে তাচ্ছিল্য করা- এই চারটি মারাত্মক বদস্বভাব থেকে দূরে থাকা। আর এগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় হচ্ছে; হিংসা থেকে বাঁচার জন্য এই চিন্তা করা যে, এটা হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলার হেকমতের বিরুদ্ধে অভিযোগ। তাছাড়া এতে নিছক আমারই কষ্ট, অন্তরকে খামোখা এই কাজে ব্যাপৃত রাখা ইত্যাদি। عجب النفس বা আত্মম্ভরিতা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় হচ্ছে এই চিন্তা করা যে; ইলম ও প্রজ্ঞা, জ্ঞান ও হিকমত, মেধা ও সাহিত্যজ্ঞান ইত্যাদি আল্লাহ তা‘আলার দান। তিনি যখন তখন এসব নেয়ামত ফিরিয়ে নিতে পারেন। وَمَا ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ بِعَزِيزٍ ‘আল্লাহ তা‘আলার জন্য এটা মোটেও কঠিন ব্যাপার নয়।’

তাই এ নিয়ে আত্মতুষ্টির কিছু নেই। লৌকিকতার ব্যধি দূর করার জন্য এই ফিকির করা যে, কোনো মাখলুক কারো কোনো উপকার করতে পারে না। ক্ষতিও করতে পারে না। অতএব নিজের আমল কাউকে দেখানোতে লাভও নেই ক্ষতিও নেই। প্রতিদান পেতে হলে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকেই পেতে হবে। তিনি অন্তর্যামী। অতএব নিয়তের এই খারাবীর কারণে আমলের প্রতিদান বরবাদ হয়ে যাবে। কেননা হাদীছে ইরশাদ হয়েছে-

عَنْ أَبِي بَكَرَةَ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «مَنْ سَمَّعَ سَمَّعَ اللَّهُ بِهِ، وَمَنْ رَاءَى رَاءَى اللَّهُ بِهِ»

‘আবূ বাকরা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি শোনানোর জন্য আমল করে তার আমলের প্রতিদান হিসেবে আল্লাহ তা‘আলা কেয়ামত দিবসে অন্যদেরকে শুনিয়ে দেবেন যে, এই লোকটি শুধু মানুষকে শোনানোর এবং দেখানোর জন্যই আমল করত। (এভাবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে কেয়ামতবাসীর সামনে লাঞ্ছিত করবেন)। এবং যে ব্যক্তি দেখানোর জন্য আমল করবে তার সঙ্গেও অনুরূপ আচরণই করা হবে।’ [বুখারী: ৬৪৯৯; মুসলিম: ২৯৮৬]

আর মানুষকে তাচ্ছিল্য করার ব্যাধি দূর করতে অন্তরে সর্বদা এই আয়াত হাজির রাখা। যথা-

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا يَسۡخَرۡ قَوۡمٞ مِّن قَوۡمٍ عَسَىٰٓ أَن يَكُونُواْ خَيۡرٗا مِّنۡهُمۡ ﴾ [ الحجرات : ١١ ]

‘কোনো লোক যেন অন্য লোককে বিদ্রুপ না করে। হতে পারে যাকে বিদ্রুপ করা হয় সে বিদ্রুপকারীর চেয়ে উত্তম।’ {সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ১১}

উত্তম-অনুত্তমের মাপকাঠি হচ্ছে তাকওয়া। অতএব বাহ্যিক সাফল্য-ব্যর্থতার ভিত্তিতে কাউকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার কোনো সুযোগ নেই। কুরআন বলে-

﴿ إِنَّ أَكۡرَمَكُمۡ عِندَ ٱللَّهِ أَتۡقَىٰكُمۡۚ ﴾ [ الحجرات : ١٣ ]

‘তোমাদের সেই ব্যক্তিই আল্লাহ তা‘আলার নিকট বেশি সম্মানী, যে আল্লাহকে বেশি ভয় করে।’ {সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ১৩}

অন্য আয়াতে নিজের শূচিতা দাবির নিষেধাজ্ঞা এসেছে। যথা-

﴿ فَلَا تُزَكُّوٓاْ أَنفُسَكُمۡۖ هُوَ أَعۡلَمُ بِمَنِ ٱتَّقَىٰٓ ٣٢ ﴾ [ النجم : ٣٢ ]

‘সুতরাং তোমরা নিজেদের আত্মার পবিত্রতার দাবি করো না। কারণ তিনিই জানেন, তোমাদের মধ্যে কে বেশি মুত্তাকি।’ {সূরা আল-নাজম, আয়াত: ৩২]

সঙ্গে সঙ্গে একথাও ভাবা যে, না জানি যাকে তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে সে আমার চেয়ে আল্লাহ তা‘আলার নিকট কত বেশি উত্তম। অতএব অধম হয়ে উত্তমকে তাচ্ছিল্য করা যায় না।

إِن اللهّ تعالى أخفى ثلاثة في ثلاثة وليه في عباده، ورضاه في طاعته، وغضبه في معصيته

‘আল্লাহ তা‘আলা তিনটি বস্তুকে তিনটি বস্তুর মধ্যে লুকিয়ে রেখেছেন। যথা- নৈকট্য ইবাদতের মধ্যে, সন্তুষ্টি আনুগত্যের মধ্যে এবং ক্রোধ নাফরমানীর মধ্যে।’

মনে রাখতে হবে, আজ দুনিয়ায় নিজেকে অন্যের চেয়ে উচ্চতায় ভাবার পরিণাম কেয়ামত দিবসে ভয়াবহ রকমের বিপদের কারণ হতে পারে। যাদেরকে আজ আমি তুচ্ছ ভাবছি, কেয়ামত দিবসে আমার ঠিকানা হতে পারে তাদের পায়ের নিচে। এবিষয়ে একটি স্মরণীয় ঘটনা উল্লেখ করি।

عَنِ الْحَارِثِ بْنِ مُعَاوِيَةَ الْكِنْدِيِّ أَنَّهُ رَكِبَ إِلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يَسْأَلُهُ عَنْ ثَلَاثِ خِلَالٍ قَالَ فَقَدِمَ الْمَدِينَةَ فَسَأَلَهُ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ مَا أَقْدَمَكَ قَالَ لِأَسْأَلَكَ عَنْ ثَلَاثِ خِلَالٍ قَالَ وَمَا هُنَّ قَالَ رُبَّمَا كُنْتُ أَنَا وَالْمَرْأَةُ فِي بِنَاءٍ ضَيِّقٍ فَتَحْضُرُ الصَّلَاةُ فَإِنْ صَلَّيْتُ أَنَا وَهِيَ كَانَتْ بِحِذَائِي وَإِنْ صَلَّتْ خَلْفِي خَرَجَتْ مِنْ الْبِنَاءِ فَقَالَ عُمَرُ تَسْتُرُ بَيْنَكَ وَبَيْنَهَا بِثَوْبٍ ثُمَّ تُصَلِّي بِحِذَائِكَ إِنْ شِئْتَ وَعَنْ الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعَصْرِ فَقَالَ نَهَانِي عَنْهُمَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ وَعَنْ الْقَصَصِ فَإِنَّهُمْ أَرَادُونِي عَلَى الْقَصَصِ فَقَالَ مَا شِئْتَ كَأَنَّهُ كَرِهَ أَنْ يَمْنَعَهُ قَالَ إِنَّمَا أَرَدْتُ أَنْ أَنْتَهِيَ إِلَى قَوْلِكَ قَالَ أَخْشَى عَلَيْكَ أَنْ تَقُصَّ فَتَرْتَفِعَ عَلَيْهِمْ فِي نَفْسِكَ ثُمَّ تَقُصَّ فَتَرْتَفِعَ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْكَ أَنَّكَ فَوْقَهُمْ بِمَنْزِلَةِ الثُّرَيَّا فَيَضَعَكَ اللَّهُ تَحْتَ أَقْدَامِهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِقَدْرِ ذَلِكَ

‘একবার হারেছ ইবন মুআবিয়া কিন্দি উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট মদিনায় আগমন করলেন তিনটি বিষয় জানার জন্য। ...(হাদীছের দীর্ঘ বর্ণনার পর) আরেকটি হলো, কিস্সা বর্ণনা সম্পর্কে। তখন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এই কাজের প্রতি অনীহা প্রকাশ করে বললেন, ‘তুমি যা চাও।’ হারেছ কিন্দি বললেন, আমি আপনার সুস্পষ্ট বক্তব্য শুনতে চাই। তখন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমার ভয় হয় তুমি মানুষের মধ্যে কিসসা বর্ণনা করে কোনো পর্যায়ে গিয়ে নিজেকে তাদের চেয়ে উচ্চ ভাবতে শুরু করবে। মনে করবে তাদের তুলনায় তোমার স্থান ছুরাইয়া তারকার মতো উঁচুতে। ফলে কেয়ামত দিবসে আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে তোমার ধারণার পরিমাণ অনুযায়ী তাদের পায়ের নিচে স্থান দেবেন।’ [মুসনাদ আহমাদ: ১১১]

সুতরাং আমাদের নিয়তের স্বচ্ছতা, পবিত্রতা ও শুদ্ধতা থাকা দরকার। বিশেষ করে অন্যকে ছোটো ও তাচ্ছিল্য করার হীনপ্রবৃত্তি থেকে বাঁচা একান্ত কর্তব্য।

উত্তম আখলাকের আরেকটি আলামত হচ্ছে, সার্বক্ষণিক তাওবার আমল জারি রাখা, ইখলাসের সঙ্গে আমল করা, ইয়াকিন মজবুত করা, তাকওয়া-পরহেজাগারী, সবর-ধৈর্য, অল্পেতুষ্টি, যুহদ-দুনিয়াবিমুখতা, তাওয়াক্কুল, আত্মসমর্পণ, অভ্যন্তরীণ নিষ্কলুষতা, ক্ষমা-উদারতা, সদ্ব্যবহার, ইহসান-শোকর, মাখলুকের প্রতি সদয় হওয়া, আল্লাহ তা‘আলা ও মানুষের প্রতি লজ্জাশীলতা এবং আল্লাহ তা‘আলার প্রতি মহব্বত পোষণ করা ইত্যাদি। প্রকৃতপক্ষে এই শেষোক্ত গুণ হচ্ছে সমস্ত ভালোগুণের আধার এবং তা হাসিল হয় রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণের মধ্য দিয়ে। আয়াতে সে কথাই বলা হয়েছে। যেমন-

﴿ قُلۡ إِن كُنتُمۡ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِي يُحۡبِبۡكُمُ ٱللَّهُ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۚ وَٱللَّهُ غَفُورٞ رَّحِيمٞ ٣١ ﴾ [ ال عمران : ٣١ ]

‘আপনি বলুন, তোমরা যদি আল্লাহ তা‘আলাকে ভালোবাসো তবে আমার অনুসরণ করো। তাহলে আল্লাহ তা‘আলাও তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের যাবতীয় গুনাহ মাফ করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমাশীল ও দয়ালু।’ {সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩}১

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন