hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে সার্বভৌমত্বের স্বরূপ

লেখকঃ ড. মোঃ আব্দুল কাদের

১৮
ক. সকল কিছুর উর্ধ্বে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব :
আল্লাহর সার্বভৌমত্ব নিখিল বিশ্ব ও গোটা মানব জাতির উপর। মানুষকে আল্লাহ অধিকার দিয়েছেন খলিফা হওয়ার। খলিফা হলে সে সার্বভৌত্বের অধিকারী হবে এমন নয়। বরং সেই তার কার্যক্রম পরিচালনা করবে মজলিশে শুরা তথা পরামর্শ সভার মাধ্যমে। আর মজলিশে শুরার কোনো অধিকার নেই আল্লাহর আইনের পরিবর্তন করার। অধিকার আছে শুধু কুরআন-হাদীসের আইন বাস্তবায়ন করার পথ ও উপায় নির্ধারণ করার। এছাড়া মানুষ কখনো মানুষের উপর রাজা বাদাশাহ হতে পারে না, এটাই আল্লাহর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। অন্য ধর্মে মানুষের উপর মানুষ রাজা বাদশাহ, কিন্তু ইসলাম ধর্মে তা নেই। তাই বলতে পারি মানুষের বাদশাহ বা প্রভু “মানুষ নয়’’ কেবলমাত্র ‘‘আল্লাহ’’। আল্লাহ নিজেই তাঁর পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন,

﴿ هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِي لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡمَلِكُ ٱلۡقُدُّوسُ ٱلسَّلَٰمُ ٱلۡمُؤۡمِنُ ٱلۡمُهَيۡمِنُ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡجَبَّارُ ٱلۡمُتَكَبِّرُۚ سُبۡحَٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يُشۡرِكُونَ ٢٣ ﴾ [ الحشر : ٢٣ ]

‘‘তিনি আল্লাহ, যিনি ছাড়া হক্ক কোনো ইলাহ নেই, তিনিই অধিপতি, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তিদাতা, তিনিই নিরাপত্তা বিধায়ক, তিনি রক্ষক, তিনিই পরাক্রমশালী, তিনিই প্রবল, তিনিই অতীব মহামান্বিত। তারা যাকে শরীক স্থির করে আল্লাহ তা থেকে পবিত্র, মহান।’’ [সূরা হাশর:২৩।]

এ আয়াতের দিকে দৃষ্টিপাত করলে আমরা দেখতে পাই, মূল আয়াতে الملك শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। যার অর্থ বাদশাহ, নিরঙ্কুশ অধিনায়ক কেবলমাত্র তিনি। আল্লাহ কোনো এলাকায় বা রাষ্ট্রে বা রাজ্যে নয়। সমগ্র সৃষ্টি লোকের সারা জাহানের অধিপতি বাদশাহ। তাঁর প্রভুত্ব ও সার্বভৌমত্ব সমগ্র সৃষ্টিলোকের উপর নিরংকুশভাবে প্রতিষ্ঠিত। প্রতিটি জিনিসের মালিক তিনিই। তাহাঁর আধিপত্য কর্তৃত্ব ও আইন বিধানের অধীন এখানকার প্রতিটি জিনিস। তাহার সার্বভৌমত্ব (Sovereigny) সীমাবদ্ধ নয়।

মহান আল্লাহ বলেন :

﴿ لَّهُۥ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ كُلّٞ لَّهُۥ قَٰنِتُونَ ١١٦ ﴾ [ البقرة : ١١٦ ]

‘‘পৃথিবীর ও আকাশমণ্ডলে যা কিছু আছে সবই তাহার দাসানুদাস, সবই তাহাঁর আদেশানুগত।’’ ১৩ [সূরা আল বাকারা:১১৬।]

অন্যত্র আল্লাহ বলেছেন।

﴿ فَعَّالٞ لِّمَا يُرِيدُ ١٦ ﴾ [ البروج : ١٦ ]

‘‘তিনিই যা করতে চান তা তিনি করে ফেলেন।” [সূরা আল বুরুজ:১৬।]

﴿ لَا يُسۡ‍َٔلُ عَمَّا يَفۡعَلُ وَهُمۡ يُسۡ‍َٔلُونَ ٢٣ ﴾ [ الانبياء : ٢٣ ]

‘‘তিনি যা করেন সেই জন্য কারো ও নিকট জবাবদিহি করতে বাধ্য নয়, বরং সবাই তার নিকটই জবাবদিহি করতে বাধ্য।’’ [সূরা আল আম্বিয়া:২৩।]

অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ وَٱللَّهُ يَحۡكُمُ لَا مُعَقِّبَ لِحُكۡمِهِۦۚ وَهُوَ سَرِيعُ ٱلۡحِسَابِ ٤١ ﴾ [ الرعد : ٤١ ]

‘‘আর আল্লাহই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তার সিদ্ধান্তের পূনর্বিবেচনা করতে পারে এমন কেউ নেই।’’ [সূরা আর রাদ:৪১।]

﴿ وَهُوَ يُجِيرُ وَلَا يُجَارُ عَلَيۡهِ ٨٨ ﴾ [ المؤمنون : ٨٨ ]

‘‘তিনি আশ্রয় দান করেন, তার বিরুদ্ধে আশ্রয় দেওয়ার কেউ নেই।’’ [সূরা আল মুমেনুন:৮৮।]

মানুষ রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে দাবি করে, আমি সকল ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতির উর্ধ্বে, আমি কুদ্দুস, অথচ পবিত্র কুরআনে ‘‘কুদ্দুস’’ অর্থ এমন সত্তা যার কোনোরূপ ত্রুটি বা অসম্পূর্ণতা কিংবা আশোভনতা ও অশুচিতা পাওয়া যাবে না। আল্লাহ তা হতে অনেক দূরে। তাঁর সম্পর্ক কোনো খারাপ ধারণা পোষণ করা যেতে পারে না। আর সার্বভৌমত্বের অধিকারী হতে হলে তা প্রথম শর্ত। আর সার্বভৌমত্বের ধারক সত্তা যে কোনোরূপ দুষ্ট, অসচ্ছরিত্র ও অশুভ মানসিকতাপূর্ণ হতে পারে না। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণে যারা সার্বভৌমত্বের দাবী করে তারা এগুলো থেকে মুক্ত নয়। কাজেই প্রকৃত সার্বভৌমত্বের মালিক আল্লাহ ছাড়া কেউ নয়।

আল্লাহই একমাত্র আস-সালাম ( السلام )। মানুষ একবার রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারলে দাবি করে, আমিই সালাম বা শান্তি দাতা মানুষ কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার জন্য যখন ভোট চায় তখন বলে, আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে আমি শান্তি দিতে পারবো। সে আরো বলে, শান্তি সমাজে ফিরিয়ে আনার জন্য কেউ আমার মত যোগ্যতা রাখে না। অথচ মানুষের নিজের-ই-শান্তির প্রয়োজন, তাই মানুষ রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারলে তার হাতে শান্তির যা কিছু থাকে তার সবটুকুই সে নিজে ভোগ করতে চায়। সে তার নিজের লোক যাদের ঘাড়ের উপর সওয়ার হয়ে সে ক্ষমতায় টিকে থাকে তাদের কিছু ভাগ দেয়। আর বাদবাকি লোকগুলোকে সে কোনোক্রমেই শান্তিতে রাখতেও চায় না এবং চাইলেও তা পারে না। কারণ সেতো একজন মানুষ। যা তার নিজের-ই দরকার তা সে নিজে না রেখে কি অন্যকে দিতে চাইবে? তা কখনোই চাইবে না। তাই সকল কিছুর উপরেই আল্লাহর সার্বভৌমত্ব।

আল্লাহই একমাত্র আল-মুমিন ( المؤمن )। অর্থ ভয়-বিপদ হতে, সুরক্ষিত। আর আল-কুরআনের দৃষ্টিতে আল-মুমিন সেই যে অন্যদের নিরাপত্তা দান করে। যারা নিজেদেরকে সার্বভৌমত্বের দাবীদার বলে মনে করে, তার নিজের জান-মাল ও মান-ইজ্জতের নিরাপত্তার ব্যবস্থাই যখন তার নিজের হাতে নেই তখন অন্যের জান-মাল ও মান-ইজ্জতের হেফাজতের দায়িত্ব সে কি করে নিতে পারে? কাজেই আল্লাহ যেহেতু সৃষ্টিকুলের নিরাপত্তা দান করেন, সেহেতু সার্বভৌমত্ব শুধু আল্লাহর।

আল্লাহই একমাত্র আল-মুমিন ( المهيمن )। কুরআনে এ শব্দটির তিনটি অর্থ বুঝানো হয়েছে, পাহারাদার ও সংরক্ষণকর্তা, পর্যবেক্ষক; যিনি সৃষ্টি সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যাপারে সর্বদা কর্মতৎপর। আল্লাহ সমস্ত সৃষ্টির পাহারাদারী সংরক্ষণ করছেন। তিনি কারোও থেকে নিরাপত্তা চান না। কিন্তু যারা সার্বভৌমত্বের দাবী করে তারা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য পাহারাদার নিযুক্ত করতে হয়। সুতরাং সার্বভৌমত্ব আল্লাহর এ কথাই প্রমাণিত হয়।

আল্লাহই একমাত্র আল-মুমিন ( العزيز )। আল-আযীয বলতে এমন এক সত্তাকে বুঝায় যার বিরুদ্ধে কেউ মাথা জাগাতে পারে না। যার সিদ্ধান্ত প্রতিরোধ করার সাধ্য কারোও নেই। যার সম্মুখে অন্য সকলেই নিঃশক্তি অসহায় ও অক্ষম। এ ধারণা যারা সার্বভৌমত্বের দাবীদার তাদের জন্য মোটেই প্রয়োজ্য নয়। সুতরাং আল্লাহই পরাক্রমশালী। আর তারই সার্বভৌমত্ব।

আল্লাহই একমাত্র আল-মুমিন ( الجبار )। এর অর্থ শক্তি প্রয়োগকারী, এটা শুধূ আল্লাহর জন্যই প্রযোজ্য, কারণ তিনি যা খুশি তার পরিকল্পনাকারী এবং তার বাস্তবায়ন কারী অন্য কারো দ্বারা তা সম্ভব নয়। ইহা ছাড়া জাববার শব্দে বিরাটত্ব ও মহানত্বের অর্থও নিহিত রয়েছে।

আল্লাহই একমাত্র আল-মুমিন ( المتكبر )। মানুষের স্বভাব হল এমন, একটু ক্ষমতা পেলেই সে ক্ষমতার বড়াই করা শুরু করে দেয়, কিন্তু ক্ষমতার বড়াই করার অধিকার রাখেন একমাত্র আল্লাহ। তাই সার্বভৌমত্বের অধিকারী আল্লাহ।

এর দুটি অর্থ- (১) যে আসলে বড় না কিন্তু শুধু শুধুই বড়াই করে বেড়ায়।

(২) যে আসলেই বড় এবং বড় হইয়া থাকে, মানুষ, শয়তান কিংবা অন্য কিছুতেই প্রকৃত বড়ত্ব নাই। এ কারণে নিজেকে বড় মনে করা ও অন্যান্যদের উপর নিজের বড়ত্ব জাহির করা-বড়াই করে বেড়ানো এর একটা মিথ্যা ও অমূলক দাবি বিশেষ। যার মত বড় দোষ আর কিছুই হতে পারেনা। আল্লাহ তা‘আলা প্রকৃতপক্ষেই বড়, সমস্ত বড়ত্ব তারই জন্য, বড়ত্ব তাতেই শোভা পায়। তাঁর মুকাবিলায় প্রতিটি জিনিসই হীন ও নগন্য।২৪

কুরআনে এসেছে,

﴿ أَلَيۡسَ ٱللَّهُ بِأَحۡكَمِ ٱلۡحَٰكِمِينَ ٨ ﴾ [ التين : ٨ ]

‘‘আল্লাহ কি সব শাসনকর্তার বড় শাসনকর্তা নন?’’ ২৫

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন