hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে সার্বভৌমত্বের স্বরূপ

লেখকঃ ড. মোঃ আব্দুল কাদের

সার্বভৌমত্বের ইসলামী সংজ্ঞা (Islamic Defination of Sovereignty)
ইসলাম কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিগোষ্ঠীর সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে না। গতানুগতিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় ব্যক্তি, গোত্র, শ্রেণী অথবা বিশেষ জনসংখ্যা সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। রাষ্ট্রের সকল নাগরিককেই বিনা দ্বিধায় সার্বভৌম শক্তির আদেশ পালন করতে হয়, তার সিদ্ধান্তকে চরম সিদ্ধান্ত বলে মেনে নিতে হয়। এহেন অসীম ও নিরঙ্কুশ ক্ষমতা কোনো ব্যক্তির হাতে এলে তা দ্বারা বৃহত্তর মানব সমাজের যথার্থ কল্যাণ হতে পারে না। কেননা মানুষ একদিকে যেমন পূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী নয় অন্যদিকে তেমনি সে স্বার্থপরতা, অর্থলোভ, ক্ষমতা ও প্রাধান্য লিপ্সা ইত্যাদি মানবীয় দুর্বলতার অধীন। এমতাবস্থায় সার্বভৌম ক্ষমতা তার উপর ন্যস্ত হলে সে তার সীমাবদ্ধতার দরুন বা অন্যের উপর প্রাধান্য বিস্তারের মানসে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি প্রবর্তন করবে। যদিও কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিগোষ্ঠীকে সার্বভৌম শক্তি বলে মেনে নেয়া হয়, তথাপিও তার বা তাদের মধ্যে সার্বভৌম শক্তির গুণাবলী থাকতে পারে না, কারণ জন্মগতভাবে সে/তারা এসব গুণ থেকে বঞ্চিত। অমরত্ব, চিরঞ্জীবতা, চিরস্থায়িত্ব, ব্যাপকতা, অবিভাজ্যতা, নিখুঁত জ্ঞানের অধিকার, ভুলভ্রান্তির উর্ধ্বে অবস্থান ইত্যাদি গুণ মানুষের নেই, থাকতে পারে না। আর নেই বলেই তার উপর সার্বভৌম ক্ষমতা অর্পিত হলে তা মানব সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার বিপরীতে ক্ষুদ্র স্বার্থে সমাজ ও রাষ্ট্রে বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় প্রধান মূলনীতি হচ্ছে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব। মানুষের উপর হুকুমত, প্রভুত্ব ও কর্তৃত্ব করার অধিকার বিশ্ব সৃষ্টিকর্তা, বিধানদাতা আল্লাহ ব্যতীত আর কারো নেই। মানুষের উপর থেকে মানুষের প্রভুত্ব উৎখাতের মধ্যেই রয়েছে গণমানুষের চরম আযাদী। মানুষ একমাত্র আল্লাহর অধীন। কোনো ব্যক্তি মানুষের উপর প্রভুত্ব ও কর্তৃত্ত্ব করার অধিকারী নয়। ইসলামী রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহরই। আইন রচনা করার অধিকারও তাঁরই। কুরআনে এসেছে বস্তুত সার্বভৌম ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া আর কারো জন্যই নয়। তাঁর নির্দেশ এ যে, তাঁকে ছাড়া আর কারো দাসত্ব ও বন্দেগী করা যাবে না। আল্লাহ তাঁর সার্বভৌমত্বে কাউকে অংশীদাররূপে গ্রহণ করেন না। ‘‘আসমান ও যমীনের সার্বভৌমত্ব ও ক্ষমতা আল্লাহর, আর তিনি ব্যতীত পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী আর কেউ নেই।’’

কাজেই দেখা যায় যে, ইসলামী বিধানুযায়ী আল্লাহ সার্বভৌম শক্তির মালিক। আর আল্লাহর সার্বভৌমত্ব বলতে বুঝায় আল্লাহর চূড়ান্ত, চরম ও অপ্রতিহত ক্ষমতা। এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে আল্লাহ তো মানুষের ধরাছোঁয়ার উর্ধ্বে; কাজেই পার্থিব রাষ্টীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও যাবতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য কার শরণাপন্ন হওয়া যাবে? এর জবাব অত্যন্ত স্পষ্ট। আল্লাহ মানুষের কল্যাণের জন্য সকল আইন বিধান আল কুরআনের মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট প্রেরণ করেছেন, সেই জীবন বিধানকে বিজয়ী ব্যবস্থা হিসেবে মানুষের জীবন ও যমীনে প্রতিষ্ঠার জন্য। তাই আল কুরআনের অনুশাসন যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য লোকায়ত শাসনের প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী। এ ক্ষেত্রে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মেনে নেওয়ার অর্থ হবে, যাদের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োগের দায়িত্ব থাকবে তারা হবেন আল্লাহর বিধানের অধীন এবং সেই সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠার জন্যই আল্লাহর রাসূলগণ এসেছেন।

আইন প্রণয়নের ক্ষমতা কেবল আল্লাহর। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সে আইনের বাস্তবায়নকারী। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে: হে নবী, আমার বান্দাহদের উপর আপনার কোনো আধিপত্য নেই। অর্থাৎ আপনার রবের আধিপত্যই যথেষ্ট।

মদীনার ইসলামী রাষ্ট্রের প্রশাসনে মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সার্বভৌমত্বের প্রয়োগকারী ছিলেন মাত্র। আল্লাহ কর্তৃক সার্বভৌমত্বে আনুগত্য প্রকাশের মাধ্যমে তিনি ছিলেন মদীনার ইসলামী রাষ্ট্রের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। বস্তুত মদীনা রাষ্ট্রে আল্লাহ ছিলেন আইনগত সার্বভৌমত্বের (Legal Sovereignty) অধিকারী। আর মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন কার্যত সার্বভৌমত্বের (Real Sovereignty) বা রাজনৈতিক সার্বভৌমত্বের (Political Sovereignty) অধিকারী। গতানুগতিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আইনগত সার্বভৌমত্ব এবং কার্যত সার্বভৌমত্বের মধ্যে পার্থক্য মাঝে মাঝে দেখানো হয়। তবে এটা স্পষ্ট থাকা প্রয়োজন যে, ইসলামের দৃষ্টিতে সার্বভৌমত্বের এ দু দিক বা রূপ দুটি ভিন্ন বস্তু নয়। এটি যেন মুদ্রার দুটি দিক, যেন এপিট ওপিট এবং এ দুয়ের সমন্বয়েই ইসলামী সার্বভৌমত্বের আসল রূপ ফুটে উঠে।

ইসলামের আইনগত সার্বভৌম (Legal Sovereignty) হচ্ছেন আল্লাহ এবং আল্লাহ প্রদত্ত বিধিবিধান যা রাষ্ট্রের চূড়ান্ত নির্দেশ বা আইনের আকারে প্রকাশিত হয়। উক্ত আইন দেশের বিচারালয়ে স্বীকৃত হয়ে কার্যকর হয়। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপ্রধানসহ প্রশাসনে সবাই আল্লাহর আইনের অধীন। রাষ্ট্রপ্রধান আল্লাহর আইনের বরখেলাফ কিছু করলে বিচারালয় তাকে যে কোনো শাস্তি দিতে পারে। বিচারক আল্লাহর আইনের প্রতিনিধি (খলীফা) হিসেবেই বিচার করবেন। বস্তুত: এটাই আইনের শাসন, যা একমাত্র ইসলামী রাষ্ট্র ছাড়া অন্য কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়। কার্যত সার্বভৌম (political Sovereignty) মূলত আল্লাহর বিধানকে বাস্তবায়নের কার্যই সম্পাদন করবে। আইনগত সার্বভৌমের প্রদত্ত আইনকে পরিপূর্ণভাবে কার্যকর করে রাষ্ট্রব্যবস্থায় জনকল্যাণকর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবর্তমানে সৎ ও ঈমানদার লোকদের প্রতিনিধিত্ব ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা একান্ত প্রয়োজন। ইসলামের দৃষ্টিতে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মেনে নিলে রাষ্ট্র ও শাসনব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য হবে তাঁরই বিধানসমূহ বাস্তবে কার্যকর করা। অন্য কথায়, এক্ষেত্রে রাষ্ট্র হবে আল্লাহর বিধানকে কার্যকর করণের যন্ত্র মাত্র। এ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা হবে আল্লাহর। আল্লাহর এ সর্বোচ্চ ক্ষমতা ইসলামী শরীয়াহর প্রয়োগ ও প্রতিষ্ঠার ভেতর দিয়েই বিমূর্ত হয়ে উঠে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন