hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে সার্বভৌমত্বের স্বরূপ

লেখকঃ ড. মোঃ আব্দুল কাদের

৩১
সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে রাসূলের পদমর্যদা
দুনিয়াতে আল্লাহর আইনগত সার্বভৌমত্বের প্রতিনিধি হচ্ছে আল্লাহর প্রেরিত নবী-রাসূলগণ অন্যকথায় আমাদের আইন রচিয়তা ও সংবিধানদাতা আমাদের জন্য কি আইন এবং কি নির্দেশ দিয়েছেন তা জানাবার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছেন আম্বিয়ায়ে কেরাম। এ কারণে ইসলামে নির্দ্বিধায় তাদের অনুসরণ করার সুস্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বস্তুত বহুসংখ্যক সার্বভৌমত্বের দাসত্ব থেকে মানব সভ্যতাকে মুক্ত করে এক আল্লাহর একক সার্বভৌমত্বের অধীন করে একমাত্র তাঁর ইবাদত প্রতিষ্ঠার জন্যই আল্লাহ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সর্বশেষ নবী এবং রাসূলরূপে প্রেরণ করেছেন। এ সম্পর্কে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী হল, আমি সর্বশেষ নবী, আমার পর আর কোনো নবী আসবে না। সুতরাং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানব জীবনে মহান আল্লাহর আইনগত সার্বভৌমত্বের প্রতিনিধি। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ هُوَ ٱلَّذِيٓ أَرۡسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلۡهُدَىٰ وَدِينِ ٱلۡحَقِّ لِيُظۡهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡمُشۡرِكُونَ ٣٣ ﴾ [ التوبة : ٣٣ ]

‘‘তিনি তাঁর রাসূলকে পথ নির্দেশ ও সত্য দীন দিয়ে প্রেরণ করেছেন, যাতে একে সব ধর্মের উপর প্রবল করে দেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।’’ [সূরা আত তাওবাহ:৩৩।]

এখানে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য সার্বভৌমত্বের প্রয়োগ করা হলেও তিনি নিজে সার্বভৌম ছিলেন না। তিনি নিজে কখনও এ দাবী করেন নি। একইভাবে খলিফা, রাজা-বাদশাহ বা জনগণ কেউই সার্বভৌম নন। তাঁরা শুধু আল্লাহর সার্বভৌমত্বের যিম্মাদার। তাঁদের দায়িত্ব আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা ও তদানুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা। কুরআনে মহান আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَأَطِيعُواْ ٱلرَّسُولَ وَأُوْلِي ٱلۡأَمۡرِ مِنكُمۡۖ ٥٩ ﴾ [ النساء : ٥٩ ]

‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আনুগত্য করবে আল্লাহর, রাসূলের এবং তোমাদের (অর্থাৎ ঈমানদারদের মধ্যকার) কর্তৃত্বশীলদের।” [সূরা আন নিসা:৫৯।]

মানুষ মূলত মহান আল্লাহর নিকট থেকেই কর্তৃত্ব লাভ করে থাকে এবং যিম্মাদার হিসেবে এ দায়িত্ব পালন করে। এ কথা প্রমাণ করে যে, সার্বভৌমত্ব দু ধরনের। একটি প্রকৃত ও মৌলিক বা একান্তভাবে আল্লাহর। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে প্রদত্ত বা অর্পিত এ দুটি সার্বভৌমত্বের ধারণাই ইসলামে বিদ্যমান এবং এদের মাঝে কখনও বিরোধ হয় না। কাজেই সার্বভৌমত্বের আসল মালিক আল্লাহ তা‘আলা আর তাঁর পক্ষ থেকে এর ধারক হচ্ছে মুসলিম জনগণ।

মুসলিমদের উপর আল্লাহর অর্পিত এ দায়িত্ব অত্যন্ত কঠিন ও গুরুভার। আল্লাহ বলেন,

﴿ إِنَّ ٱللَّهَ يَأۡمُرُكُمۡ أَن تُؤَدُّواْ ٱلۡأَمَٰنَٰتِ إِلَىٰٓ أَهۡلِهَا ٥٨ ﴾ [ النساء : ٥٨ ]

‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দেন যে, তোমরা যেন প্রাপ্য আমানতসমূহ প্রাপকদের নিকট পৌঁছে দাও।’’ [সূরা আন নিসা:৫৮।]

এ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে যে কোনো অবহেলা ও খামখেয়ালীপনার বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করে আল্লাহ বলেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَخُونُواْ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ وَتَخُونُوٓاْ أَمَٰنَٰتِكُمۡ وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ٢٧ ﴾ [ الانفال : ٢٧ ]

‘‘হে ঈমানদারগণ! খেয়ানত করো না আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সাথে। আর খেয়ানত করো না নিজেদের পারস্পরিক আমানত জেনে শুনে।’’ [সূরা আল আনফাল:২৭।]

ইসলামের ইতিহাসের চতুর্থ খলিফ আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে বলেছিলেন :

ان عملك ليس لك بطعمة ولكنه فى عنقك أمانة وأنت مسترعى بما فوقك ليس لك ان تقتات فى رعيه

তোমার কাজ ও কর্তৃত্ব তোমার জন্য কোনো স্বাদের খাদ্য নয় বরং তা তোমার ঘাড়ের উপর একটি ভারী আমানত। তোমার উপরস্থের জন্য তুমি প্রহরার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি। তুমি তার প্রহরার কাজে কোনোরূপ রোজগার করতে পার না।’’ [নাহজুল বালাগাহ, রিসালাহ, নং-৫।]

তিনি আরো বলেন:

حق على الامام ان يحكم بما انزل الله وان يؤدى الامانة فاذا فعل ذالك فحق على الناس ان يسمعوا له وان يطيعوه وأن يجيبوه اذا دعوا

ইমাম-রাষ্ট্রনায়কের অধিকার হচ্ছে যে, সে আল্লাহর নাযিল করা বিধানের ভিত্তিতে শাসন কার্য চলাবে এবং আমানত আদায় করবে। সে যদি তা করে তাহলে জনগণের উপর তার এ অধিকার হবে যে, তারা তার কথা শুনবে ও তার আনুগত্য করবে এবং যখন সে ডাকবে, তখন তারা তার ডাকে সাড়ে দেবে।’’ [আল আমওয়াল লি-আবী উবাইদ, ১২ খৃ. পৃ. ৩৭৭।]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

من اطاعنى فقد اطاع الله ومن يعصنى فقد عصى الله ومن يطع الامير فقد اطاعنى ومن يعصى الامير فقد عصانى -

‘‘যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করলো, সে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহরই আনুগত্য করলো, যে আমার অবাধ্যতা করলো সে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহকেই অবাধ্যতা করল। যে শাসকের আনুগত্য করল সে প্রকৃতপক্ষে আমারই আনুগত্য করলো। আর যে শাসকের অবাধ্যতা করলো প্রকৃতপক্ষে সে আমারই অবাধ্যতা করলো।’’ [মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল বুখারী (রহ:), আল জামে সহীহ, কিতাবুল আহকাম, ২য় খ-; পৃ. ১০৫৭, ইমাম মুসলিম, সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ইমামাত, ২য় খ-, পৃ. ১২৪।]

মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত হাদীস :

أن رسول الله صلى الله وسلم لما بعثه الى اليمن قال كيف تقضى إذا عرض لك قضاء قال : أقضى بكتاب الله قال فإن لم تجد فى كتاب رسول الله؟ قال فبسنة رسول الله عليه وسلم، قال : فإن لم تجد فى سنة رسول الله قال أجتهد برأيي ولا آلو . قال فضرب رسول الله صلى الله عليه وسلم على صدره وقال : الحمد لله الذي وفق رسول رسول الله لما يرضى به رسول الله صلى الله عليه وسلم

‘‘যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ইয়েমেনে (শাসনভার দিয়ে) পাঠালেন, তখন তাকে বললেন: তোমার সম্মুখে যখন কোনো বিচারের দায়িত্ব আসবে, তখন তুমি কিভাবে তার ফয়সালা দেবে? তিনি বলেন, আল্লাহর কিতাব অনুসারে। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, যদি আল্লাহর কিতাবে তা না পাও? তিনি বললেন, তাহলে আল্লাহর রাসূলের সুন্নাহ মুতাবিক। আবার তিনি বললেন: যদি আল্লাহর রাসূলের সুন্নাহতেও না পাও? তিনি বললেন, তাহলে আমি গভীর চিন্তা-ভাবনা করে আমার বিবেক ও ইজতিহাদের আলোকে ফয়সালা করবো, তার একটুও কমতি করবো না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বুকে হাত মেরে বললেন: সেই আল্লাহর জন্য সকল প্রশংসা, যিনি তাঁর রাসূলের রাসূল বা দূতকে আল্লাহর রাসূলের পছন্দসই কাজের তওফীক দিয়েছেন।’’ [মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং ৩৫৫০ (তিরমিযী, আবূ দাউদ ও দারিমীর বরাতে)।]

উপরোক্ত আয়াত ও হাদীস থেকে জানা গেল যে, আল্লাহ তা‘আলাই প্রকৃতপক্ষে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁরই প্রতিনিধি বা খলীফাস্বরূপ। নবী-রাসূলের অনুপস্থিতিতে তাঁদের নিয়োজিত বা মনোনীত বা তাঁদের নীতির আলোকে যিনিই শাসন ক্ষমতার অধিষ্ঠিত হবেন, তিনিই আমীররূপে, ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুরূপে বিবেচিত হবেন। কুরাআন-সুন্নাহর আলোকেই তাঁর নেতৃত্ব পরিচালিত হবে এবং যেখানে স্পষ্টত কুরআন-হাদীসের নির্দেশ না পাওয়া যায়, সে ব্যাপারে ইজমা, কিয়াস এবং পরামর্শের আশ্রয় নেবেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন