hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে সার্বভৌমত্বের স্বরূপ

লেখকঃ ড. মোঃ আব্দুল কাদের

১৯
খ. ভূ-মণ্ডল ও নভোমণ্ডলে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব :
আল্লাহ তো আসমান ও জমিন এবং দু‘য়ের মধ্যে যা কিছু আছে সব কিছুর নিরংকুশ মালিক। এখানে কেউ-ই-অংশ বসাতে পারে না। বিশ্ব জাহানের যিনি শাসক-পরিচালক, মানুষের শাসক পরিচালকও তিনিই। মানুষের কাজ কারবারেও তিনিই সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী এবং তিনি ছাড়া অন্য কোনো মানবীয় ও অ-মানবীয় শক্তির নিজের পক্ষ থেকে নির্দেশ-ফয়সালা দান করার অধিকার নেই।’’

মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ أَلَمۡ تَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۗ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ مِن وَلِيّٖ وَلَا نَصِيرٍ ١٠٧ ﴾ [ البقرة : ١٠٦، ]

‘‘তুমি কি জান না যে, নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব আল্লাহর? আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারী নেই।’’ [সূরা আল বাকারা:১০৬।]

﴿ وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٌ ١٨٩ ﴾ [ ال عمران : ١٨٩ ]

‘‘আর আল্লাহর জন্যই হল আসমান ও যমীনের বাদশাহী। আল্লাহই সর্ববিষয়ে ক্ষমতার অধিকারী।’’ [সূরা আলে ইমরান:১৮৯।]

কুরআনে অন্যত্র আরো এসেছে,

﴿ ۗ وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَيۡنَهُمَاۚ يَخۡلُقُ مَا يَشَآءُۚ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ ١٧ ﴾ [ المائ‍دة : ١٧ ]

‘‘নভোমণ্ডল, ভূ-মণ্ডল ও এতদুয়ের মধ্যে যা আছে, সবকিছুর উপর আল্লাহ তা‘আলারই আধিপত্য। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন। আল্লাহ সবকিছুর উপর শক্তিমান।’’ [সূরা আল মায়েদা:১৮।]

﴿ وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَيۡنَهُمَاۖ وَإِلَيۡهِ ٱلۡمَصِيرُ ١٨ ﴾ [ المائ‍دة : ١٨ ]

‘‘আকাশ ও পৃথিবীর এবং এ দুয়ের মধ্যকার সবকিছুর নিরংকুশ মালিকানা আল্লাহরই। এর সবকিছুকেই তার দিকে ফিরে যেতে হবে।’’৩০

﴿ أَلَمۡ تَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ يُعَذِّبُ مَن يَشَآءُ وَيَغۡفِرُ لِمَن يَشَآءُۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ ٤٠ ﴾ [ المائ‍دة : ٤٠ ]

‘‘তুমি কি জাননা যে, আল্লাহ নিমিত্তেই নভোমণ্ডল ও ভূ-মণ্ডলের আধিপত্য। তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন এবং যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আর আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।’’ [সূরা আল মায়েদা:৪০।]

﴿ لِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا فِيهِنَّۚ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرُۢ ١٢٠ ﴾ [ المائ‍دة : ١٢٠ ]

‘‘নভোমণ্ডল, ভূ-মণ্ডল এবং এতদুভয়ে অবস্থিত সবকিছুর আধিপত্য আল্লাহরই। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। ’’ [সূরা আল মায়েদা:১২০।]

﴿ لَّهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرۡجَعُ ٱلۡأُمُورُ ٥ ﴾ [ الحديد : ٥ ]

‘‘তিনিই আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর রাজত্ব ও সার্বভৌমত্বের একমাত্র মালিক। সকল ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ও মীমাংসার জন্য তারই দিকে ফিরতে হবে।’’ [সূরা আল হাদীদ: ৫।]

এ ভূ-মণ্ডল ও নভোমণ্ডলে মহান আল্লাহর সার্বভৌমত্বের স্বরুপ উপলব্ধি করতে হলে ভূ-মণ্ডল ও নভোমণ্ডল সর্ম্পকে সম্যক ধারণা লাভ করতে হবে। এ মহাবিশ্বের প্রতিটি বিষয় ও সৃষ্টির সাথে এবং এর পরিচালনার সাথে আল্লাহর শক্তি ও ক্ষমতা প্রত্যেকটি মুহূর্তে বিরাজমান। মহান রাব্বুল আলামীন এ বিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কে বলেন,

﴿ أَوَ لَمۡ يَرَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ أَنَّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ كَانَتَا رَتۡقٗا فَفَتَقۡنَٰهُمَاۖ ﴾ [ الانبياء : ٣٠ ]

‘‘যারা অস্বীকারকারী তারা কি চিন্তা করে দেখে না যে, এ আসমান ও জমিন মিলিত অবস্থায় ছিল অতঃপর আমরা এ গুলোকে আলাদা করে দিয়েছি।’’ [সূরা আল আম্বিয়া:৩০।]

আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, এ মহাবিশ্ব একসময় একটি পিণ্ড ছিল। আর এরপর মহাবিস্ফোরনের মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টি। আর এ বিষয়টিকে আল্লাহ বলেছেন,

﴿ إِنَّمَا قَوۡلُنَا لِشَيۡءٍ إِذَآ أَرَدۡنَٰهُ أَن نَّقُولَ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ ٤٠ ﴾ [ النحل : ٤٠ ]

‘‘আমরা কোনো কিছু সৃষ্টি করতে ইচ্ছা করলে তখন তো কেবল সেটার উদ্দেশ্য আমাদের কথা হয়, ‘হয়ে যাও’। আর তখনই তা হয়ে যায়।’’ [সূরা আন নাহল: ৪০।]

আমাদের পৃথিবী সৌরজগতের একটি গ্রহ। আর এ সৌরজগতের কেন্দ্রে রয়েছে সূর্য নামক নক্ষত্র। এ রকম প্রত্যেকটি নক্ষত্রেরই একটি নিজস্ব বলয় ও কক্ষ রয়েছে। আর এ রকম অনেকগুলো নক্ষত্র ও তাদের জগৎ মিলে হয় একটি গ্যালাক্সী। অনেকগুলো গ্যালাক্সীর মধ্যে একটি গ্যালাক্সীর হচ্ছে Milkyway গ্যালাক্সী। আর এ গ্যালাক্সীর মধ্যেই আমাদের সৌরজগত অবস্থিত। এ গ্যালাক্সীকে কেন্দ্র করেই এ সবকিছু আবর্তিত হচ্ছে। মিল্কিওয়ে Galaxy তে প্রায় ১০০ বিলিয়ন নক্ষত্র রয়েছে। আর গ্যালাক্সীসমূহ cluster কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে। একটি cluster এ অনেকগুলো যে গ্যালাক্সী রয়েছে। আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সী যে cluster এর অবস্থিত তার নাম Local group এতে ৩২টি গ্যালাক্সী রয়েছে। মহাবিশ্বের আরেকটি cluster হচ্ছে Hercules cluster এতে দশ হাজার (১০,০০০) গ্যালাক্সী রয়েছে। আর এরকম কতগুলো cluster রয়েছে তা মহাকাশবিদরা এখনো ধারণা করতে পারে নি। তাই আমরা এটুকু অন্তত উপলব্ধি করতে পারি যে, মহাবিশ্বের বিশালত্ব আমাদের ধারনার বাইরে এবং তা পরিমাপ করা হয়ত আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। এ মহাবিশ্বের সবকিছুই পরিভ্রমনশীল, এ সকল সৃষ্টির মধ্যে একমাত্র আল্লাহর সার্বভৌমত্ব সর্বদা বিরাজমান।

মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ كُلّٞ فِي فَلَكٖ يَسۡبَحُونَ ٣٣ ﴾ [ الانبياء : ٣٣ ]

‘‘প্রত্যেকই আপন কক্ষপথে পরিভ্রমনশীল।’’ [সূরা আত তাকভীর:১৫।]

এখানে শেষ নয়। এ মহাবিশ্ব এখনও প্রসারমান এবং গ্যালাক্সীগুলোর দুরত্ব পরস্পর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ মহাবিশ্বের আয়াতন ক্রমেই বাড়ছে। এ বিষয়ে প্রবিত্র কুরআনের বাণী প্রনিধানযোগ্য,

﴿ وَٱلسَّمَآءَ بَنَيۡنَٰهَا بِأَيۡيْدٖ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ ٤٧ ﴾ [ الذاريات : ٤٧ ]

‘‘অর্থাৎ আমি আসমান সৃষ্টি করেছি আর আমিই এর প্রসারকারী।’’৩৭

আর গ্যালাক্সী গুলো পরস্পর দূরে সরে যাওয়ার গতি হচ্ছে প্রতি ঘন্টায় ৩০০ মাইল। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে,

﴿ فَلَآ أُقۡسِمُ بِٱلۡخُنَّسِ ١٥ ﴾ [ التكوير : ١٥ ]

‘‘শপথ তারকারাজির যা দূরে সরে যাচ্ছে।’’৩৮

গ্রহ, নক্ষত্র, উপগ্রহের আর্বতনের মাধ্যমে সংগঠিত হচ্ছে দিন রাত। এখানেও আল্লাহর পরিপূর্ণ সার্বভৌমত্ব সর্বদা বিরাজমান। দিন কখনো রাতকে অতিক্রম করতে পারে না এবং গ্রহ-নক্ষত্র কখনো একটি অপরটির সাথে মিলিত হয় না।

﴿ لَا ٱلشَّمۡسُ يَنۢبَغِي لَهَآ أَن تُدۡرِكَ ٱلۡقَمَرَ ٤٠ ﴾ [ يس : ٤٠ ]

‘‘সূর্যের সাধ্য নেই যে চন্দ্রকে নাগাল পাবে এবং রাত্রি অগ্রে চলে না দিনের।’’ [সূরা ইয়াসিন:৪০।]

নভোমণ্ডলের প্রত্যেকটি গ্রহ, নক্ষত্র, গ্যালাক্সী, ক্লাস্টার, তাদের নিজস্ব কক্ষপথে এবং নিজস্ব আকর্ষণ শাক্তিকে কেন্দ্র করে পরিচালনশীল রয়েছে। কোনো নক্ষত্র অন্য কোনো নক্ষত্রের বা গ্রহের উপর নির্ভরশীল হয়।

মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ ٱللَّهُ ٱلَّذِي رَفَعَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ بِغَيۡرِ عَمَدٖ تَرَوۡنَهَا ٢ ﴾ [ الرعد : ٢ ]

‘‘আল্লাহ তিনি যিনি আসমানসমূহ স্থাপন করেছেন কোনো খুঁটি ছাড়াই যা তোমরা দেখতে পাও।’’ [সূরা আর রা‘দ:২।]

তবে এ মহাবিশ্বের পরিনতি কি হবে? এটি কি এভাবেই প্রসারমান থাকবে নাকি অন্য কিছু। এ প্রসারমান অবস্থা থেমে যাবে এবং সবকিছুই দ্রুত একত্রিত হতে থাকবে এবং Singularity তে ফিরে যাবে। অর্থাৎ Big Bang এর পূর্বে যেমন ছিল এবং দ্বিতীয়বারও আবার বিস্ফোরন ঘটবে, এটাকে বলা যায় Big crunch। এর পর নতুন মহাবিশ্ব সৃষ্টি হবে যা হবে চির স্থায়ী। এ বিষয়টিকে মহান রাববুল আলামীন এভাবে বলেছেন:

﴿ يَوۡمَ نَطۡوِي ٱلسَّمَآءَ كَطَيِّ ٱلسِّجِلِّ لِلۡكُتُبِۚ كَمَا بَدَأۡنَآ أَوَّلَ خَلۡقٖ نُّعِيدُهُۥ ١٠٤ ﴾ [ الانبياء : ١٠٤ ]

‘‘সে দিন, যে দিন আমি আসমানকে কাগজের পৃষ্টাগুলোর মত ভাঁজ করে রাখব, যেভাবে সর্ব প্রথম সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম অনুরূপভাবে আমরা সেটার পুনরাবৃত্তি ঘটাব।’’ [সূরা আল আম্বিয়া:১০৪।]

আজকের আধুনিক বিজ্ঞান গবেষণা করে প্রমাণ করেছে যে, বিশ্ব সৃষ্টি এর প্রসার এবং চূড়ান্ত পরিণতি পবিত্র কুরআনে অনেক আগেই বর্ণনা করা হয়েছে। তাই আমরা উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝতে পারি যে, মহাবিশ্বের প্রত্যেকটি অনু-পরমানুতে আল্লাহর ক্ষমতা ও সার্বভৌমত্ব বিদ্যমান।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন