মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
‘‘সার্বভৌমত্বের ইংরেজী প্রতিশব্দ Sovereignty’ যা ল্যাটিন শব্দ ‘Superanus’ এবং Sovrano থেকে উৎপত্তি হয়েছে। এ দু’টি ল্যাটিন শব্দের অর্থ হলো ‘Supreme’ অর্থাৎ প্রধান বা চূড়ান্ত। সুতরাং ব্যুৎপত্তিগত অর্থে সার্বভৌমত্ব বলতে এক বিশেষ ক্ষমতাকে বুঝায়। এ ক্ষমতা হল: চরম, চূড়ান্ত ও অবাধ, এ ক্ষমতার অধিকারী হলো রাষ্ট্র। [গোলাম মোস্তফা চৌধুরী, রাষ্ট্র বিজ্ঞান পরিচিতি (ঢাকা: গ্রন্থ কুটির, এপ্রিল ২০০৯ইং), পৃ.৭৩।]
শাব্দিক অর্থ বিশ্লেষণ করলে, আমরা বলতে পারি, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতাকে সার্বভৌমত্ব বলে।
রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা বলতে বুঝায়, রাষ্ট্রের সে সব মৌলিক, সর্বোচ্চ ও অসীম ক্ষমতা, যা ব্যক্তি সংসদ বা রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত যে কোনো বস্তুর উপর অবাধভাবে প্রয়োগ করা চলে।
একটু গভীরে শাব্দিক অর্থকে চিন্তা করলে পাই, কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি সমষ্টির কিংবা প্রতিষ্ঠানের সার্বভৌমত্বের অধিকারী হওয়ার অর্থ এ যে, তাঁর নির্দেশই আইন। আর এ আইন রাষ্ট্রের নাগরিকদের উপর জারি করার সর্বময় কর্তৃত্ব তারই। নাগরিকরা তার শর্তহীন আনুগত্য করতে বাধ্য তা ইচ্ছায় ও আগ্রহে হোক কিংবা বাধ্য হয়ে হোক। তাঁর নিজের ইচ্ছা ব্যতীত বাইরের কোনো শক্তি তার শাসন ক্ষমতাকে বিন্দুমাত্র সীমাবদ্ধ ও সংকোচিত করতে পারে না।
সার্বভৌমত্বের অধিকারীর ইচ্ছারই আইন অস্তিত্ব লাভ করে এবং তা নাগরিকদেরকে আনুগত্যের রজ্জুতে বেঁধে দেয়।
A Dictionary of social science অভিধান অনুসারে সার্বভৌমত্বের অর্থ হল;
ক. কোনো আইন-ব্যবস্থায় বিধি-বিধান দ্বারা প্রদত্ত আইন প্রণয়ন ও সংশোধন করার কর্তৃত্ব;
খ. রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও নৈতিক কর্তৃত্ব;
গ. রাজনৈতিক ও আইনগত ক্ষমতা চর্চার কার্যকর উৎস বা এইরূপ ক্ষমতা চর্চার উপর কার্যকর প্রভাব;
ঘ. কোনো জনসমাজের স্বাধীন আইনগত বা নৈতিক মর্যাদা। [বিপুল রঞ্জন নাথ, রাজনৈতিক তত্ত্ব ও সংগঠন (ঢাকা বাংলাবাজার , বুক সোসাইটি, , জুলাই, ১৯৯৭ ইং), পৃ.১০৪।]
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ সার্বভৌমত্বকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, নিম্নে গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞাগুলো উল্লেখ করা হলো।
ষোড়শ শতাব্দির ফরাসি দার্শনিক জ্যাঁ বোঁদা (Bodin) প্রথম সার্বভৌমত্বের ধারণাটি সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন। তিনি বলেছেন, Sovereignty is supreme power over citizens and subjects, Unrestrained by law. অর্থাৎ ‘‘সার্বভৌমত্ব হলো নাগরিক এবং জনগণের উপর প্রযুক্ত আইনের দ্বারা অনিয়ন্ত্রিত চূড়ান্ত ক্ষমতা’’ [প্রফেসর ইয়াসমিন আহমেদ, রাষ্ট্রীয় তত্ত্ব ও সংগঠন (ঢাকা: আজিজিয়া বুক ডিপো, ৭ম প্রকাশ: এপ্রিল, ২০০৬ ইং), পৃ: ২১।]
আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানিদের মধ্যে খ্যাতনামা মার্কিন অধ্যাপক বার্জেস (Prof.burgess) এর মতে সার্বভৌমত্ব হলো: ‘The original, absolute, unlimited power over the individual subject and over all associations of subject’’. অর্থাৎ “ব্যক্তি-প্রজা ও প্রজাদের অন্যান্য সংঘের উপর মৌলিক চূড়ান্ত ও অপরিসীম ক্ষমতাই সার্বভৌমত্ব। [বিপুল রঞ্জন নাথ, রাজনৈতিক তত্ত্ব ও সংগঠন (ঢাকা: বক সোসাইটি, ৪র্থ সংস্করণ, জুলাই ১৯৯৭ইং), পৃ: ১০৩।]
জন অষ্টিন (John Austin) বলেন, ‘‘যদি কোনো সুনির্দিষ্ট উর্ধ্বতন ব্যক্তি অনুরূপ কোনো উর্ধ্বতন ব্যক্তির প্রতি স্বাভাবিকভাবে অনুগত না থাকে অথচ কোনো নির্দিষ্ট সমাজের অধিকাংশ ব্যক্তির নিকট হতে স্বাভাবিক আনুগত্য লাভ করেন, তা হলে সেই সুনিদিষ্ট ব্যক্তি ঐ সমাজের সার্বভৌম এবং সমাজ (উর্ধ্বতন ব্যক্তিসহ) রাষ্ট্রীয় ও স্বতন্ত্র সমাজ বিশেষ। [সৈয়দ মকসুদ আলী, রাষ্ট্র বিজ্ঞান, ঢাকা: মাওলা ব্রাদার্স, ১ম সংস্করণ, এপ্রিল ১৯৬৬ইং, পঙৃ. ৬৬।]
প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী পোলক (Pollock) বলেছেন, ‘‘সার্বভৌমত্ব সেই ক্ষমতা যা সাময়িক নয়, যা অন্য কারো নিকট থেকে প্রাপ্ত ক্ষমতা নয়, যা এমন কোনো নিয়মের দ্বারা সীমাবদ্ধ নয় যা রাষ্ট্র বদলাতে পারে না।’’ [প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, রাষ্ট্র বিজ্ঞানের কথা, ঢাকা: প্রকাশনায় বাংলাদেশ বুক করপোরেশন লি: জানুয়ারী ২০০৬, পৃ.২০৬।]
উইলোবী (Willoughby) বলেছেন, sovereignty is the supreme will of the state ‘‘সার্বভৌমত্ব হল রাষ্ট্রের চরম ইচ্ছা।’’ [মো: মোরশেদুজ্জামান, রাজনৈতিক তত্ত্ব ও সংগঠন, ঢাকা: কোয়ালিটি পাবলিকেশন, ডিসেম্বর ২০০৫, পৃ.২২৪।]
রূশোর (১৭৪২-১৮৩২) মতে, সার্বভৌম শক্তি সর্বোচ্চ এবং অবারিত ক্ষমতার অধিকারী, কিন্তু বিশেষ কোনো ব্যক্তি বা শাসকের হাতে সীমিত থাকতে পারে না। রূশো সার্বভৌমত্বকে অবিভাজ্য একক এবং অসীম বলেছেন। [মো: নূরুল ইসলাম, ইসলামের রাষ্ট্রব্যবস্থা, আহসান পাবলিকেশন, , এপ্রিল ২০০৯ইং, পৃ.২৪৩।] তাছাড়া ‘রূশো সার্বভৌমত্বকে অদুষনীয়, অবিচ্ছেদ্য, প্রতিনিধিত্বের অযোগ্য, অবিভাজ্য ও অবিনশ্বর বলে বর্ণনা করেছেন’’। [মুহাম্মদ, আয়েশ উদ্দীন, রাষ্ট্র চিন্তা পরিচিতি মৌসুমী পাবলিকেশন্স, সিপাইপাড়া, রাজশাহী, জুন, ২০০৫, পৃ, ৪৪২।]
তিনি সার্বভৌমত্বকে রাষ্ট্রের সেই গুণ হিসাবে গণ্য করেন, যার ফলে রাষ্ট্র তার নিজস্ব ইচ্ছা্ ব্যতীত অন্য কোনো কিছুর দ্বারা আইনগতভাবে বাধিত থাকতে পারে না, বা নিজের ব্যতীত অন্য কোনো শক্তির দ্বারা সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না’’
গ্রোটিয়াস (Hugo Grotius) বলেছেন , ‘‘সার্বভৌমত্ব হল চূড়ান্ত রাজনৈতিক ক্ষমতা যা সেই ব্যক্তির উপর ন্যস্ত আছে, যার কার্যকলাপ অপর কারও আজ্ঞাধীন নয়, যার ইচ্ছা কেউ অতিক্রম করিতে পারে না’’। [মুহাম্মদ, আয়েশ উদ্দীন, রাষ্ট্র চিন্তা পরিচিতি মৌসুমী পাবলিকেশন্স, সিপাইপাড়া, রাজশাহী, জুন, ২০০৫, পৃ, ৪৪২।]
হব্স (Hobbes) এর মতে ‘‘সার্বভৌম কথা হল ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টির সেই ক্ষমতা যা যুদ্ধের অবস্থা থেকে শান্তির ও শৃঙ্খলার অবস্থায় পৌঁছার জন্য মানুষ পারস্পরিক চুক্তি করে পদাধিকারির হাতে তুলে দিয়েছে’’। [বিপুল রঞ্জন নাথ, প্রাগুক্ত, পৃ. ১০৪।]
উপরোক্ত আলোচনায়, আমাদের কাছে ফুটে উঠে, যার বলে রাষ্ট্র অপ্রতিরোধ্য অন্তহীন ক্ষমতাসম্পন্ন এবং অসীম প্রতিপত্তির অধিকারী হতে পারে তাই সার্বভৌমত্ব। রাষ্ট্র বল প্রয়োগ এবং শাস্তি প্রদানের ভীতির সাহায্যে সকলকে তার নির্দেশ ও আইন পালনে বাধ্য করতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/746/4
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।