hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে সার্বভৌমত্বের স্বরূপ

লেখকঃ ড. মোঃ আব্দুল কাদের

ইসলামে সার্বভৌমত্বের ধারণা
রাষ্ট্রের অন্যতম উপাদান হল সার্বভৌমত্ব। সার্বভৌম ক্ষমতা ছাড়া কোনো রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না। সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি। অনৈসলামিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় ব্যক্তি, গোত্র, শ্রেণী অথবা বিশেষ জনসংখ্যা সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। সাধারণ রাষ্ট্রে সার্বভৌম ক্ষমতার দু’টো দিক আছে। একটি হচ্ছে আভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্ব, অপরটি হচ্ছে বাহ্যিক সার্বভৌমত্ব। আভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্বের কারণে রাষ্ট্র তার অধীনস্থ জনসংখ্যা ও সংগঠণগুলোর উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে।

বাহ্যিক সার্বভৌমত্বের কারণে একটি রাষ্ট্র অন্য সকল রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ, কর্তৃত্ব ও হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকে। অতএব, সার্বভৌমত্ব হচ্ছে অবিভাজ্য, হস্তান্তর অযোগ্য ও চরম ক্ষমতা।

সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি। রাষ্ট্র যে ক’টি উপাদান নিয়ে গঠিত সার্বভৌমত্ব তাদের অন্যমত। রাষ্ট্রের অসীম এবং সর্বোচ্চ ক্ষমতাকে (Supreme power) সার্বভৌমত্ব বলা হয়। সার্বভৌমত্ব ছাড়া রাষ্ট্র গঠন হতে পারে না। এছাড়া রাষ্ট্রের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। সার্বভৌমত্ব ক্ষমতাই রাষ্ট্রকে অপরাপর সামাজিক সংগঠন হতে পৃথক করেছে। সার্বভৌমত্বের বলে রাষ্ট্র আভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে আইন প্রণয়ন ও প্রয়োজনবোধে ক্ষমতা প্রয়োগ বা শক্তি প্রয়োগ (Coercive power) দ্বারা আইন প্রবর্তনের চরম অধিকারপ্রাপ্ত হয় এবং বহির্দেশীয় ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে অন্যান্য স্বাধীন রাষ্ট্রের সাথে সর্ম্পক স্থাপন বা ছিন্ন প্রবর্তনের চরম অধিকারপ্রাপ্ত হয় এবং বহির্দেশীয় ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে অন্যান্য স্বাধীন রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্থাপন বা ছিন্ন করতে পারে।

অধ্যাপক গেটেল মনে করেন যে, “সার্বভৌমত্ব ধারণাটি আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভিত্তিস্বরূপ। এটি সকল আইনকে অনুমোদন দান করে এবং সকল আন্তর্জাতিকসম্পর্ক সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করে।’’ (The concept of Sovereignty is the basis of modern political science. It underlines the validity of all laws determines all international relations)

সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য। সরকারের মাধ্যমে এর প্রকাশ ও প্রয়োগ ঘটে মাত্র। সরকারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সার্বভৌম ইচ্ছার যে প্রকাশ ও প্রয়োগ ঘটে থাকে তা-ই আইনের মর্যাদা ও স্বীকৃতি লাভ করে। অতএব, রাষ্ট্রশক্তির স্বাধীন সত্তা, আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের পূর্ণ ক্ষমতাকেই সার্বভৌমত্ব বলা হয়।

ইসলামী রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সার্বভৌমত্বের উক্ত ব্যাখ্যা অচল। ইসলামী রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ক্ষমতার একচ্ছত্র ও নিরঙ্কুশ মালিক হলেন সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা‘আলা। রাষ্ট্র পরিচালনায় মানুষ আল্লাহর খলীফা বা প্রতিনিধি মাত্র। মহান আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে সরকার ইসলামী আইনকানুন অনুযায়ী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করবেন। সরকার স্বয়ংসম্পূর্ণ কোনো আইন রচনার অধিকারী নন।

এ মর্মে আল্লাহর ঘোষণা করেছেন

﴿أَلَا لَهُ ٱلۡخَلۡقُ وَٱلۡأَمۡرُۗ ﴾ [ الاعراف : ٥٤ ]

“সতর্ক হও, তাঁর সৃষ্টিতে তাঁরই হুকুম চলবে। [সূরা আল আ‘রাফ:৫৪।]

ইসলামী রাজনীতিতে সার্বভৌম প্রভুত্ব (Sovereignty) একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্য নির্দিষ্ট। তার প্রভুত্ব, একচ্ছত্র মালিকানা এবং নিরঙ্কুশ শাসন ক্ষমতা এ উভয় দিক দিয়েই অখণ্ড, অবিভাজ্য এবং অংশহীন। বিশ্ব নিখিলের প্রত্যেকটি বস্তুই আল্লাহর একচ্ছত্র প্রভুত্বের অধীন ও তাঁর অনুগত হয়ে আছে। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ وَلَهُۥٓ أَسۡلَمَ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ طَوۡعٗا وَكَرۡهٗا ٨٣ ﴾ [ ال عمران : ٨٣ ]

“আল্লাহর এ সৃষ্টি রাজ্যের একমাত্র মালিক তিনিই, এ ব্যাপারে কেউই তাঁর শরীক নয়” [সূরা আলে ইমরান:৮৩।]

﴿ وَهُوَ ٱلۡقَاهِرُ فَوۡقَ عِبَادِهِۦۚ ١٨ ﴾ [ الانعام : ١٨ ]

“তিনি তাঁর বান্দাদের উপর একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী” [সূরা আল আন‘আম:১৮।]

﴿ ٱللَّهُ خَٰلِقُ كُلِّ شَيۡءٖ وَهُوَ ٱلۡوَٰحِدُ ٱلۡقَهَّٰرُ ١٦ ﴾ [ الرعد : ١٦ ]

“যাবতীয় সৃষ্টির স্রষ্টা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা, তিনি এক ও মহাপরাক্রমশালী” [সূরা আর রা‘দ:১৬।]

﴿ وَلَمۡ يَكُن لَّهُۥ شَرِيكٞ فِي ٱلۡمُلۡكِ ٢ ﴾ [ الفرقان : ٢ ]

“আর তাঁর রাজত্বে কোনো শরীক নেই” [সূরা আল ফুরকান:২।]

অতএব, শাসন ক্ষমতা ও আইন রচনা এবং প্রভুত্বে নিরঙ্কুশ অধিকার একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার। কোনো ব্যক্তি মানুষ, পার্লামেন্ট বা কোনো রাজশক্তিও এদিক দিয়ে তাঁর অংশীদার হতে পারে না।

কারণ কুরআনের ঘোষণা :

﴿ ٓۚ إِنِ ٱلۡحُكۡمُ إِلَّا لِلَّهِۖ يَقُصُّ ٱلۡحَقَّۖ ٥٧ ﴾ [ الانعام : ٥٧ ]

“প্রভুত্ব ও আইন রচনায় মৌলিক এবং চূড়ান্ত অধিকার একমাত্র আল্লাহর” [সূরা আল আন‘আম:৫৭।]

আল্লাহর এ প্রভুত্ব ও সার্বভৌমত্বের অধিকারী নিরঙ্কুশ, অন্য কেউই তাঁর অংশীদার হতে পারে না। কাউকে তিনি এ কাজে তার শরীক করেন না।

প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ব্লেঞ্চলী বলেন, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের মধ্যে নিহিত। অথচ কুরআন বহু শতক পূর্বেই তা ঘোষণা করেছে।

﴿ فَعَّالٞ لِّمَا يُرِيدُ ١٦ ﴾ [ البروج : ١٦ ]

“তিনি যা ইচ্ছে তাই করার অধিকারী।’’ [সুরা আল বুরূজ:১৬।]

তার এ স্বাধীনতাকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তাঁর উপরও কোনরূপ বাধ্যবাধকতা কেউই আরোপ করতে পারে না। কুরআনের ঘোষণা,

﴿ لَا يُسۡ‍َٔلُ عَمَّا يَفۡعَلُ وَهُمۡ يُسۡ‍َٔلُونَ ٢٣ ﴾ [ الانبياء : ٢٣ ]

“ সার্বভৌম সত্তা যা করেন, সে বিষয়ে তাঁকে কেউ জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে না। তিনি কারো নিকট জবাবদিহি করতে বাধ্য নন” [সূরা আল আম্বিয়া:২৩।]

বরং সকলেই একমাত্র তাঁর সমীপেই জবাবদিহি করতে বাধ্য : সার্বভৌম সর্বোতভাবে আল্লাহর জন্য। তিনি বলেন,

﴿ هُوَ ٱلۡمَلِكُ ٱلۡقُدُّوسُ ٱلسَّلَٰمُ ٢٣ ﴾ [ الحشر : ٢٣ ]

“তিনি মালিক-বাদশা, অতীব মহান পবিত্র। পুরোপুরি শান্তি নিরাপত্তা দাতা” [সূরা আল হাশর:২৩।]

তিনি মহৎ মহান। মহানত্ব তাঁর একটি বিশেষ গুণ। এ গুণ বিশেষভাবে আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট। বস্তুত আল্লাহর সার্বভৌমত্ব সর্বাত্মক ও অবিভাজ্য। এটাই হচ্ছে তাওহীদের মূল কথা, একে বিভিন্নভাবে ভাগ করে এক এক ভাগের জন্য এক একজনকে সার্বভৌমত্বের মালিক মনে করা সুস্পষ্ট শির্ক।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন