hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামে সার্বভৌমত্বের স্বরূপ

লেখকঃ ড. মোঃ আব্দুল কাদের

ভূমিকা
মহাগ্রন্থ আল-কুরআন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। এটি বিশ্ব মানবের শাশ্বত জীবন বিধান। মানুষের ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি লাভের উপায়সহ মানব জীবনের সার্বিক দিক ও বিভাগের বিশদ বিবরণ এ মহাগ্রন্থে বিধৃত হয়েছে, যা সর্বকালের, সর্বযুগের মানুষের জন্যে চিরন্তন আদর্শ। মানব জাতির চলার পাথেয় হিসেবে এ গ্রন্থের অবতারণা হয়েছে। এটি যাবতীয় কল্যাণের আঁধার, যার অনুশীলনের মাধ্যমে মানুষ পেতে পারে সরল সঠিক পথের দিশা।



ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনাদর্শ। ইসলাম যুক্তিবিরোধী, প্রগতি-বিমূখ বা আত্মবিশ্বাস নির্ভর ধর্ম নয়। ইসলাম আল্লাহর কাছে একমাত্র গ্রহণযোগ্য দীন। ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দীন বা জীবন ব্যবস্থা আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। এ ব্যাপারে আল- কুরআনের ঘোষণা দ্বীর্থহীন:

﴿ إِنَّ ٱلدِّينَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلۡإِسۡلَٰمُۗ ٩ ﴾ [ ال عمران : ١٩ ]

‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহর মনোনীত দীন হচ্ছে ইসলাম।’’ [সূরা আলে ইমরান: ১৯।]

ইসলাম সর্বপ্রকার বর্বরতা, অসত্যতা, উচ্ছৃঙ্খলতা, অন্যায় ও অসত্যকে দূর করার জন্য প্রচেষ্টা চালায়। ইসলাম একমাত্র আল্লাহর প্রভুত্বই স্বীকার করে। এ প্রভুত্ব আর সব কিছু হতে মহীয়ান, সম্পূর্ণ রূপে অবিভাজ্য, এর কোনো অংশীদার নেই। ইসলাম বিশুদ্ধ তাওহীদের ধারক। তাওহীদ বিরোধী ভাবধারার সঙ্গে ইসলামের কোনো আপোষ নেই। ইসলাম হলো আল্লাহর কাছে তাওহীদের মাধ্যমে আত্মসমপর্ণ করা, তাঁর আনুগত্য মেনে নেয়া, শির্ক থেকে মুক্ত থাকা।

মহান আল্লাহ বলেন:

﴿ قُلۡ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحۡيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ١٦٢ لَا شَرِيكَ لَهُۥۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرۡتُ وَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلۡمُسۡلِمِينَ ١٦٣ ﴾ [ الانعام : ، ١٦٣ ]

‘‘বলুন: আমার সালাত, আমার ইবাদত (কুরবানী ও হজ্জ) আমার জীবন মরণ সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহরই উদ্দেশ্যে, তাঁর কোনো শরীক নেই, আর আমি এরই জন্য আদিষ্ট হয়েছি এবং আমিই প্রথম মুসলিম।’’ [সূরা আল আন‘আম:১৬১-১৬২।]

ইসলাম মানবতার একমাত্র মুক্তিরপথ, ইসলামই পারে মানবতাকে যাবতীয় সমস্যা হতে মুক্তি দিতে। সকল মানুষের নিকট আজ একটি প্রশ্ন উত্থিত হচ্ছে যে, প্রকৃত সার্বভৌমত্ব কার? এ নিয়ে পণ্ডিতরা অনেক দ্বিধা বিভক্ত। সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত্তি। সার্বভৌমত্ব হচ্ছে রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত সকলের ওপর স্থাপিত এক অপ্রতিহত ক্ষমতা। এর রাষ্ট্রের রয়েছে প্রত্যেক প্রজা ও প্রত্যেক জসমঙ্ঘের ওপর শাসন করার ও বশ্যতা আদায় করার সীমাহীন ক্ষমতা। সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রের সে-ই বিশেষত্ব, যার ফলে রাষ্ট্র নিজের ইচ্ছা ব্যতীত অন্য কোনো কিছু মেনে নিতে বা অপর কারো কাছে আইনত দায়ী হতে পারে না, এ ক্ষমতার কারণে অন্য কোনো শক্তিই রাষ্ট্রের ওপর নিয়ন্ত্রন আরোপ করতে পারে না। সার্বভৌমত্ব থাকার জন্যই রাষ্ট্র অভ্যন্তরীন সকল ব্যাপারে অগাধ কর্তৃত্ব করার অধিকারী হয়ে থাকে; অনুরূপভাবে সার্বভৌম গুণের জন্যই রাষ্ট্র বাইরের সকল শক্তির অধীনতা বা নিয়ন্ত্রণ থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত।

সার্বভৌমত্ব শব্দটি উচ্চতর ক্ষমতা, নিরংকুশ কর্তৃত্ব ও আধিপত্ব্যের অর্থে ব্যবহৃত হয়। আর কোনো ব্যক্তির বা ব্যক্তি সমষ্টির কিংবা প্রতিষ্ঠানের সার্বভৌমত্বের অধিকারী অর্থ এ যে, তাঁর নির্দেশই আইন। আর এ আইন রাষ্ট্রের নাগরিকদের উপর জারি করার সর্বময় কর্তৃত্ব তারই। নাগরিকরা তার শর্তহীন আনুগত্য করতে বাধ্য। তা ইচ্ছায় ও আগ্রহে হোক কিংবা বাধ্য হয়ে হোক।

ইসলামের দৃষ্টিতে সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্য নির্দিষ্ট। তাঁর প্রভুত্ব, একচ্ছত্র মালিকানা এবং নিরংকুশ শাসন ক্ষমতা- এ উভয় দিক দিয়ে অখণ্ড, অবিভাজ্য এবং অংশহীন, বিশ্ব নিখিলের প্রত্যেকটি বস্তুই আল্লাহর একচ্ছত্র প্রভুত্বের অধীন ও তাঁর অনুগত হয়ে আছে। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿ وَلَهُۥ مَن فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ كُلّٞ لَّهُۥ قَٰنِتُونَ ٢٦ ﴾ [ الروم : ٢٦ ]

‘‘আসমান- যমীনে যা কিছু আছে সবকিছুর তাঁর। সবকিছুই তাঁর ফরমানের অনুগত।’’

এমনকি তাঁর রাজত্বেও কেউ অংশদারী নয়। [সূরা আর রূম:২৬।]

মহান আল্লাহ আরও বলেন:

﴿ وَلَمۡ يَكُن لَّهُۥ شَرِيكٞ فِي ٱلۡمُلۡكِ﴾ [ الفرقان : ٢ ]

“এবং রাজত্বে তাঁর কোনো শরীক নেই।’’ আর শাসন ক্ষমতা ও আইন রচনা এবং প্রভুত্ব নিরংকুশ অধিকার একমাত্র আল্লাহর। কোনো মানুষ, সংসদ, কোনো রাজশক্তি এ দিক দিয়ে তার অংশীদার হতে পারেনা, তিনি বলেন, ‘‘আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ফয়সালার ইখতিয়ার নেই।’’ [সূরা আল ফুরকান:২।]

অবশ্য এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ সার্বভৌমত্বের সংজ্ঞা নির্ধারণে কোনোরূপ ঐক্যমতে পৌঁছতে পারেননি। পশ্চিমা দুনিয়ায় সার্বভৌমত্বের ওপর প্রথম গবেষক Jean Bodin (১৫২৯-১৫৯৬ খি.) এর জন্মের প্রায় এক হাজার বছর পূর্বে মহানবী মুহাম্মদ (সা:) (৫৭০-৬৩২খি.) এর উপর পবিত্র কুরআন অবতীর্ণ হয়, যার মাধ্যমে আল্লাহর সার্বভৌমত্বকে একটি স্বচ্ছ স্বাধীন ধারণা হিসেবে তুলে ধরে মানবজাতির জন্য ঘোষণা করেন একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। আল-কুরআন হল সে আসমানী বিধান; যাতে আল্লাহ তা‘আলা আইনের মৌলিক প্রকৃতি ও বিধিবিধান প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর সার্বভৌমত্বের প্রমাণ ও ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলার বিধানের উপর ভিত্তি করে মুসলিম রাষ্ট্রচিন্তাবিদ ইমাম রাগেব ইসফাহানী, আবুল হাসান মাওয়ার্দী, ইমাম-গাযালী, ইবনে তাইমিয়া প্রমুখ অধিকতর বিশ্লেষণর্ধমী ও সূক্ষ্ণ দৃষ্টিভঙ্গীতে সার্বভৌমত্বের ধারণাটি পর্যালোচনা করেছেন। যা পাশ্চাত্যের রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের তুলনায় অনেক বেশী গভীর এবং বিজ্ঞানসম্মত।

মানুষ হল শুধুমাত্র আল্লাহর প্রতিনিধি। তাই সে মহান আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে ইসলামী আইন-কানুন অনুয়ায়ী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করবে। সরকার স্বয়ংসম্পূর্ণ কোনো আইন রচনার অধিকারী নন। সার্বভৌমত্ব নিয়ে মুসলিম রাষ্ট্রচিন্তাবিদগণের ধারণা ও পাশ্চাত্য রাষ্ট্র চিন্তাবিদদের ধারণা সম্পূর্ণ বিপরীত। তাই শুধুমাত্র সার্বভৌমত্ব শব্দটি দিয়ে পরিষ্কারভাবে ইসলাম এবং বিপরীত পদ্ধতিদ্বয়ের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা সম্ভব। বস্তুত পাশ্চাত্যের সার্বভৌমত্বের ধারণা ও ইসলমের দৃষ্টিতে সার্বভৌমত্বের ধারণার মাঝে মৌলিক পার্থক্য হলো সার্বভৌমত্বের উৎস সম্পর্কিত প্রশ্নের উপর। ইসলামকে বাদ দিয়ে আলোচনা করলে সার্বভৌমত্বের উৎস হল রাজতন্ত্রে রাজা, একনায়কতন্ত্রে একনায়ক, অভিজাততন্ত্রে মুষ্টিমেয় কতিপয় ব্যক্তি এবং গণতন্ত্রে জনগণ। ইসলামের দৃষ্টিতে সৃষ্টি করার ব্যাপারে যেমন আল্লাহ নিরংকুশ ক্ষমতার মালিক তেমনি মানুষের রাষ্ট্রীয় আইন-কানুন দেওয়ার বেলায়ও আল্লাহ নিরংকুশ ক্ষমতার মালিক। পাশ্চাত্য রাষ্ট্রতত্ত্বসমূহের প্রভাবে মানুষ ক্রমেই অধিকতর সংখ্যায় এ মত প্রচার করতে শুরু করেছেন যে, চূড়ান্ত সার্বভৌম শক্তির অধিকারী হচ্ছে ‘‘জনসাধারণ’’। সমস্ত রাষ্ট্রীয় সংস্থার গঠন এবং সামরিক আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে কেবল এ ‘‘জনসাধারণের’’ ইচ্ছাই হবে চূড়ান্ত। এমনকি যারা আধুনিক ইসলামী রাষ্ট্রের ভাব-কল্পনাকে স্বীকার করে নেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এমন ব্যক্তিও রয়েছেন, যাঁরা রাসূল (সা:) এর একটি উক্তির ভিত্তিতে সমগ্র জাতির ঐক্যবদ্ধ ইচ্ছাই (ইজমা) সার্বভৌম শক্তি এ দাবী করে থাকেন।

আল্লাহ সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী, সার্বভৌমত্বের অধিকারী, এ কথা প্রত্যেক মুসলিমের বিশ্বাস করতে হবে। কেননা মানুষ কখনো মানুষের উপর রাজা-বাদশাহ হতে পারে না, এটাই আল্লাহর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। পাশ্চাত্য সার্বভৌমত্বে জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস বলে মনে করা হয়, যা ঈমান আকিদার সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। তা সুস্পষ্টভাবে সকল মানবজাতির কাছে তুলে ধরার জন্য তথা তাদের আকিদা-বিশ্বাসকে শির্ক মুক্ত করার জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা আলোচ্য নিবন্ধে স্থান পেয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন