hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

যেসব কারণে ইবাদাত বরবাদ হয়

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৪
জানাযার নামাযের পর আবার মোনাজাত করা
অনেক অঞ্চলে জানাযার নামাযের পর বা মৃত ব্যক্তির দাফনের পর সম্মিলিতভাবে উপস্থিত সকলে মিলে মোনাজাত করে থাকেন। এ প্রচলিত মোনাজাত নবী ﷺ এবং সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন ও তাবে তাবেয়ীন কারো যুগে ছিল না। সুতরাং এ প্রচলিত মোনাজাতসমূহ বিদআতের অন্তুর্ভুক্ত।

মিরকাত গ্রন্থ প্রণেতা বলেন,

لَا يَدْعُوْا لِلْمَيِّتِ بَعْدَ صَلٰوةِ الْجَنَازَةِ لِاَنَّهٗ يَشْبَهُ الزِّيَادَةَ فِىْ صَلٰوةِ الْجَنَازَةِ

অর্থাৎ জানাযার নামাযের পর দ্বিতীয়বার মৃত ব্যক্তির জন্য দু‘আ করবে না। কারণ এর দ্বারা জানাযার নামাযের মধ্যে অতিরিক্ত কিছু প্রসার হওয়ার সাথে সামঞ্জস্য হয়ে যায়। [মিরকাত, ২/২১৯।]

তবে জানাযার নামাযের পর বা দাফনের পর এককভাবে মৃত ব্যক্তির জন্য দু‘আ বা ক্ষমাপ্রার্থনা করা উত্তম।

মৃত ব্যক্তির বাড়িতে খতমের ব্যবস্থা করা :

প্রায় লক্ষ্য করা যায় যে, কারো আত্মীয়স্বজন মারা গেলে আশপাশের মাদ্রাসায় অথবা মসজিদে গিয়ে ছাত্র এবং ইমাম বা মাদ্রাসার শিক্ষকদেরকে খুঁজ করা হয় খতম পড়ানোর জন্য। আর অনেকেই এ দাওয়াত কবুল করেন এবং খতমও করেন। এরপর সম্মিলিত দু‘আ অনুষ্ঠান করে খাবার ও হাদিয়া গ্রহণ করেন। আসলে ইসলামে এ কাজের কোন ভিত্তি নেই। শাইখ আবদুল হক মোহাদ্দেছ দেহলবী (রহ.) তার ‘‘রদ্দে বিদআত’’ নামক কিতাবে লিখেছেন,

اَلْاِجْتِمَاعُ لِلْقِرَأَةِ بِالْقُرْاٰنِ عَلَى الْمَيِّتِ بِالتَّخَصُّصِ فِى الْمَقْبَرَةِ اَوِ الْمَسْجِدِ اَوِ الْبَيْتِ بِدْعَةٌ مَذْمُوْمَةٌ لِاَنَّهٗ لَمْ يَنْقُلْ مِنَ الصَّحَابَةِ شَيْئًا وَ فِيْهِ تَرْكُ الْاَدَابِ بِالْاَنْوَاعِ

অর্থাৎ কুরআন তেলাওয়াত করার জন্য ক্বারীদেরকে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে একত্রিত করা, বিশেষ করে কবরে বা মসজিদে অথবা ঘরে এসব নিন্দনীয় বিদআত। কেননা সাহাবাদের থেকে তার কোন চিহ্নমাত্র পাওয়া যায় না এবং এতে অনেক প্রকার আদবের খেলাফ কাজ হতে দেখা যায়।

খতমে শবিনা পড়া :

খতমে শবিনা পড়া বা পড়ানো কিংবা কোন হাফেজে কুরআন কর্তৃক সারা রাত জেগে অথবা দিনে মাইক দিয়ে কুরআন পড়া বিদআত। এ আমল তো একদিকে বিদআত, যার কারণে কোন সওয়াব পাওয়া যাবে না। অপর দিকে যারা এভাবে কুরআন পড়ে ও পড়ায় তারা সবাই গোনাহগার হবে। কারণ এভাবে কুরআন পাঠ করা হলে তা শুনার হক আদায় হয় না। অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَاِذَا قُرِئَ الْقُرْاٰنُ فَاسْتَمِعُوْا لَهٗ وَاَنْصِتُوْا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ﴾

যখন কুরআন পাঠ করা হয় তখন তোমরা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করবে এবং নিরব থাকবে, যেন তোমাদের প্রতি দয়া করা হয়। (সূরা আ‘রাফ- ২০৪)

হাদীসে তিন দিনের কমে কুরআন খতম করতে নিষেধ করা হয়েছে। যেমন-

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو ، اَنَّ النَّبِيَّ قَالَ : لَمْ يَفْقَهْ مَنْ قَرَاَ القُرْاٰنَ فِيْ اَقَلَّ مِنْ ثَلَاثٍ

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি তিন দিনের কম সময়ে কুরআন খতম করে সে কুরআনের কিছুই বুঝেনি। [তিরমিযী, হা/২৯৪৯; ইবনে মাজাহ, হা/১৩৪৭; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হা/৮০১৩; সুনানুস সুগরা লিল বায়হাকী, হা/৭৭৫; শু‘আবুল ঈমান, হা/১৯৮১।]

এ সম্পর্কে অন্য এক হাদীসে আয়েশা (রাঃ) বলেন,

وَلَا اَعْلَمُ نَبِىَّ اللهِ - - قَرَاَ الْقُرْاٰنَ كُلَّهٗ فِىْ لَيْلَةٍ وَلَا صَلّٰى لَيْلَةً اِلَى الصُّبْحِ وَلَا صَامَ شَهْرًا كَامِلًا غَيْرَ رَمَضَانَ

নবী ﷺ এক রাত্রে সমস্ত কুরআন তিলাওয়াত করেছেন এবং সমস্ত রাত্রব্যাপী নামায পড়েছেন অথবা রমাযান ব্যতীত অন্য কোন সময় পূর্ণ মাস রোযা রেখেছেন বলে আমার জানা নেই। [সহীহ মুসলিম, হা/১৭৭৩; নাসাঈ, হা/১৬০১; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪৩১৪; ইবনে খুযাইমা, হা/১১৭৭; মিশকাত, হা/১৫২৭।]

যেহেতু অধিকাংশ হাফেজই আলেম নন বিধায় তারা অনেকেই কুরআন-হাদীসের অর্থ বুঝেন না। অর্থের লোভে তারা আখেরাতের ব্যাপারে আরো অন্ধ হয়ে যান, তাদের তাকওয়া-পরহেজগারীও তেমন থাকে না। অথচ ইসালে সাওয়াব হিসেবে খতমে শবীনা পড়ে পারিশ্রমিক নেয়া ও দেয়া উভয়ই হারাম। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَا تَشْتَرُوْا بِاٰيَاتِيْ ثَمَنًا قَلِيْلًا﴾

আমার আয়াতসমূহ (কুরআন) অল্প মূল্যে বিক্রি করে দিও না। (সূরা বাক্বারা- ৪১)

অধিকাংশ মানুষ উক্ত আয়াত তিলাওয়াত করে সঠিক অর্থ বুঝার ব্যাপারে খুবই অন্ধ। ثَمَنًا قَلِيْلًا বা স্বল্প মূল্যের অর্থ সম্পর্কে তাফসীরে খাজেনে বলা হয়েছে, দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যাবতীয় সম্পদ। হাদীসে এসেছে,

قَالَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ شِبْلٍ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ يَقُوْلُ : اِقْرَؤُوا الْقُرْاٰنَ ، وَلَا تَغْلُوْا فِيْهِ ، وَلَا تَجْفُوْا عَنْهُ ، وَلَا تَأْكُلُوْا بِهٖ ، وَلَا تَسْتَكْثِرُوْا بِهٖ

আবদুর রহমান ইবনে শিবল (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, তোমরা কুরআন পাঠ করো এবং এ ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করো না। আর তোমরা কুরআনকে রিযিকের মাধ্যম বানিয়ো না এবং এর দ্বারা অধিক কোন কিছু আশা করো না। [মুসনাদে আহমাদ, হা/১৫৫৬৮।]

মাওলানা মহিউদ্দীন খান অনুদিত সৌদি আরব থেকে এক খন্ডে ছাপা সংক্ষিপ্ত তাফসীরে মা‘রেফুল কুরআনের ৩৫ পৃষ্ঠার ডানের কলামে লিখা আছে, ‘‘ইসালে সওয়াব উপলক্ষে খতমে কুরআনের বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ করা সর্বসম্মতভাবে নাজায়েয। আল্লামা শামী দুর্রে মুখতারের শরাহ এবং শিফাউল আলীল নামক গ্রন্থে বিস্তারিতভাবে এবং অকাট্য দলীলসহ একথা প্রমাণ করেছেন যে, কুরআন শিক্ষা দান বা অনুরূপ অন্যান্য কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণের যে অনুমতি পরবর্তীকালের ফকীহগণ দিয়েছেন, তার কারণ এমন এক ধর্মীয় প্রয়োজন যে, তাতে বিচ্যূতি দেখা দিলে গোটা শরীয়াতের বিধান ব্যবস্থার মূলে আঘাত আসবে। সুতরাং এ অনুমতি এসব বিশেষ প্রয়োজনের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ রাখা একান্ত আবশ্যক। এ জন্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে মৃতদের ইসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে কুরআন খতম করানো বা অন্য কোন দু‘আ-কালাম ও অযিফা পড়ানো হারাম। কারণ, এর উপর কোন ধর্মীয় মৌলিক প্রয়োজন নির্ভরশীল নয়। এখন যেহেতু পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কুরআন পড়া হারাম, সুতরাং যে পড়াবে এবং যে পড়বে, তারা উভয়ই গোনাহগার হবে। বস্তুত যে পড়েছে সে-ই যখন কোন সওয়াব পাচ্ছে না, তখন মৃত আত্মার প্রতি সে কী পৌঁছাবে? কবরের পাশে কুরআন পড়ানো বা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কুরআন খতম করানোর রীতি সাহাবী, তাবেয়ীন এবং প্রথম যুগের উম্মতগণের দ্বারা কোথাও প্রমাণিত নেই। সুতরাং এগুলো নিঃসন্দেহে বিদআত।’’

মৃত ব্যক্তির বাড়িতে যিয়াফত খাওয়া :

আমাদের দেশে লক্ষ্য করা যায় যে, কারো বাপ-মা বা আত্মীয়স্বজন মারা গেলে তিন দিন, চল্লিশ দিন বা প্রতি বৎসর মৃত্যুর তারিখে বড় আকারে খাবারের আয়োজন করে এবং তারা মনে করে যে, এর দ্বারা মৃত ব্যক্তির অনেক উপকার হয়। সমাজে এসব কাজ রেওয়াজ হিসেবে চালু থাকার কারণে অনেকে কষ্ট করে হলেও খাবারের আয়োজন করে। সমাজের নিয়ম রক্ষার জন্য সওয়াবের নিয়তে এসব কাজ করা স্পষ্ট বিদআত।

মৃত ব্যক্তির বাড়িতে মানুষ একত্র হওয়া এবং তাদের জন্য খানার ব্যবস্থা করা জাহেলী যুগের বিলাপ প্রথার অন্তর্ভুক্ত। ফুকাহাগণ বলেন, তৃতীয়া, দশমী, বিশা, চল্লিশা, তিন মাসী, ছয় মাসী ইত্যাদি দিন তারিখ নির্দিষ্ট করে ইসালে সওয়াবের নামে যে প্রথা চালু আছে, তা মাকরূহ এবং বিদআত।

عَنْ جَرِيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْبَجَلِيِّ ، قَالَ : كُنَّا نَرَى الْاِجْتِمَاعَ اِلٰى اَهْلِ الْمَيِّتِ وَصَنْعَةَ الطَّعَامِ مِنَ النِّيَاحَةِ

জারীর ইবনে আবদুল্লাহ আল বাজালী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা মৃত ব্যক্তির বাড়িতে মানুষ একত্রিত হওয়া এবং মৃত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে খানা পাকানোর ব্যবস্থা করা উভয়টিকেই জাহেলিয়াতের অন্তর্ভুক্ত মনে করতাম। [ইবনে মাজাহ, হা/১৬১২; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৯০৫।]

উক্ত হাদীসটিতে মৃত ব্যক্তির আত্মীয়স্বজন মৃত ব্যক্তির দাফনের পর, চাই কবরস্থানে হোক বা তার বাড়িতে হোক খাবারের আয়োজন করা মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ করার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাই এসব কাজ থেকে মুসলিম সমাজকে বিরত থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে করণীয় কী তা পরে আসছে- ইনশা-আল্লাহ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন