মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
অনেক মানুষ শুধু নামায-রোযা ও হজ্জ-যাকাতকে ইবাদাত মনে করে থাকেন। তারা ব্যবসা-বাণিজ্য, লেনদেন, ইসলামী আইন বাস্তবায়ন- এসব বিষয়কে ইবাদাত মনে করেন না। আসলে এ ধারণা মোটেই সঠিক নয়। কেননা ইসলাম হচ্ছে একটি পূর্নাঙ্গ দ্বীন বা জীবনব্যবস্থা। একজন মানুষ তার জীবন পরিচালনা করতে যতগুলো বিষয়ের সম্মুখীন হতে হয় সকল বিষয়ের সমাধা ইসলামে রয়েছে। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নবীর সুন্নাহ মুতাবিক মানবজীবনের সকল কাজই ইবাদাতের মধ্যে গণ্য হয়। যদি কিছু বিষয়কে দ্বীনের বাহিরে রাখা হয় এবং কিছু বিষয়কে দ্বীন মনে করা হয় তাহলে এটাই বুঝা যায় যে, ইসলাম পরিপূর্ণ দ্বীন নয়। অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম। (সূরা মায়েদা- ৩)
যারা মানবজীবনের কিছু বিষয়কে দ্বীনের বাহিরে রাখেন বা মনে করেন যে, এ ব্যাপারে ইসলামের কোন দিকনিদের্শনা নেই, তারা কি কুরআনের এ আয়াতটিকে মিথ্যা মনে করেন? অথচ আল্লাহ তা‘আলা কখনো মিথ্যা বলেন না। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,
﴿وَمَنْ اَصْدَقُ مِنَ اللهِ حَدِيْثًا﴾
আল্লাহর কথার চেয়ে সত্য কথা আর কার হতে পারে? (সূরা নিসা- ৮৭)
সুতরাং মানব জীবনের ব্যক্তিগত জীবন থেকে নিয়ে রাষ্ট্রীয় জীবন পর্যন্ত সকল দিক ও বিভাগ দ্বীনের আওতাভুক্ত। একজন মানুষ যেমন তার ব্যক্তি জীবনকে ইসলামের আলোকে গড়ে তুলবে অনুরূপভাবে তার পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় কাজকর্মকেও ইসলামের আওতায় নিয়ে আসবে। সমাজের সর্বত্র আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নের সকল কার্যক্রমই ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,
আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মরণ সবই জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই উদ্দেশ্যে (নিবেদিত)। (সূরা আন‘আম- ১৬২, ১৬৩)
জীবনের সকল কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার উদ্দেশ্যে করলে তা ইবাদাতে পরিণত হয়ে যায়।
খানা খাওয়াও ইবাদাত :
কোন ব্যক্তি যদি এ নিয়তে খাবার খায় যে, সে এ খাবার খেয়ে শক্তি অর্জন করে আল্লাহ দ্বীন পালন করবে, তাহলে তার এ খাওয়াটাও ইবাদাত হিসেবে গণ্য হবে। কেননা সুস্থ থাকার জন্য খাবার গ্রহণ করাও আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
হে ঈমানদারগণ! আমি তোমাদেরকে রিযিকস্বরূপ যা দান করেছি সেই পবিত্র বস্তুসমূহ হতে খাও এবং আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদাত করে থাক। (সূরা বাক্বারা- ১৭২)
জ্ঞানার্জন করাও ইবাদাত :
কোন ব্যক্তি যদি এ নিয়তে জ্ঞানার্জন করে যে, আমি ইসলাম সম্পর্কে জেনে নিজে আমল করব এবং মানুষকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দেব, তাহলে এটা তার জন্য ইবাদাত হিসেবে গণ্য হবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
তাদের প্রত্যেক দল থেকে এমন একটি অংশ কেন বের হয় না, যারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করত। যখন তারা তাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে আসত তখন তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করত, যাতে করে তারা সতর্ক হয়ে যায়। (সূরা তাওবা- ১২২)
বিয়ে-শাদী করাও ইবাদাত :
কোন ব্যক্তি যদি এ নিয়তে বিয়ে-শাদি করে যে, এতে আমার চরিত্র ও সতিত্বের হেফাযত হবে। পারিবারিক সুখ-শান্তি অর্জিত হবে। তাহলে বৈবাহিক জীবনটা ইবাদাত হিসেবে গণ্য হবে। কেননা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা অবিবাহিত ছেলেমেয়েদেরকে বিবাহ দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
তোমাদের মধ্যে যাদের স্ত্রী নেই তাদের বিবাহের ব্যবস্থা করো এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরও বিবাহের ব্যবস্থা করো। যদি তারা অভাবী হয়, (তাহলে) আল্লাহ (অচিরেই) তাঁর অনুগ্রহ দিয়ে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন; আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ। (সূরা নূর- ৩২)
উপার্জন করাও ইবাদাত :
কোন ব্যক্তি যদি এ নিয়তে উপার্জন করে যে, আমি উপার্জন করব নিজের এবং নিজের পরিবার-পরিজনের প্রয়োজন মিটানোর জন্য এবং দান-সাদাকা করে সওয়াব অর্জনের জন্য। আমি চাকুরী করব কেবল বেতন পাওয়ার জন্য নয় বরং উদ্দেশ্য থাকবে- আমার এ কাজ দ্বারা জনগণ উপকৃত হবে। জ্ঞান শিক্ষা দেব এ উদ্দেশ্যে যে, এতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা লাভ করবে, ফলে তারা ইহকালীন ও পরকালীন জগতে লাভবান হতে পারবে এবং অন্যকে শিক্ষা দানের মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীন প্রচার ও তা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে। কোন ব্যক্তি যদি সৎভাবে উপার্জন করে এবং পরিবার-পরিজনের ভরণ-পোষণের জন্য ব্যয় করে তবে এটার জন্য সে আল্লাহর কাছে সওয়াব পাবে। বান্দা স্ত্রীর মুখে যে লোকমা উঠিয়ে দেয় তার জন্যও সে পুরস্কার পায়, যা নবী ﷺ এর নিচের হাদীস থেকে জানা যায়।
সা‘দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি মক্কায় রোগাক্রান্ত থাকাকালীন নবী ﷺ আমাকে দেখতে আসলেন। আর সা‘দ (রাঃ) এমন জায়গায় ইন্তিকাল করতে অপছন্দ করতেন, যে স্থান হতে তিনি হিজরত করেছেন। তিনি বললেন, ইবনে আফরার উপর আল্লাহ রহম করুন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি আমার সমুদয় মালের অসীয়ত করব? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তাহলে এক-তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন, এক-তৃতীয়াংশ করা যায় আর এক-তৃতীয়াংশও অনেক। তোমার ওয়ারিসগণকে গরীব ও মানুষের নিকট হাত পাতবে এমন অবস্থায় রেখে যাওয়ার চেয়ে মালদার রেখে যাওয়া উত্তম এবং তুমি নেকীর উদ্দেশ্যে যা ব্যয় করবে, তা সাদাকা হিসেবে গণ্য হবে। এমনকি তোমার স্ত্রীর মুখে তুমি যে লোকমা তুলে দাও সেটিও সাদাকার অন্তর্ভুক্ত। অতি শীঘ্রই আল্লাহ তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন। তোমার দ্বারা কিছু সংখ্যক লোক উপকৃত ও কিছু সংখ্যক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সে সময় তার একটি মাত্র মেয়ে ছিল। [সহীহ বুখারী, হা/২৭৪২।]
আল্লাহর বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করাও ইবাদাত :
কোন ব্যক্তি যদি বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺ যে পদ্ধতিতে মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, ঠিক সে নিয়মে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রচেষ্টা করে তাহলে তার রাজনৈতিক জীবনটাও ইবাদাত হিসেবে গণ্য হবে। কোন ব্যক্তি যদি আল্লাহর বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করে তাহলে তার এই রাষ্ট্র পরিচালনা করাটাও একটি ইবাদাত। বরং এটি আরো বড় ইবাদাত। কেননা যখন কোন ব্যক্তি আল্লাহ বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করবে তখন সমাজের সর্বত্র আল্লাহর বিধান কায়েম হবে। সকল মানুষ আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করার পরিবেশ পাবে। এতে করে ইবাদাত করা সকলের জন্য সহজসাধ্য হবে। নতুবা রাষ্ট্র যদি ইসলামের আওতায় না আসে বরং কুফরী নীতি-আদর্শ অনুযায়ী পরিচালিত হয় তাহলে কোন ব্যক্তি যতই চেষ্টা করুক না কেন সে ইসলামের সকল বিধান পালন করতে সক্ষম হবে না। এমনকি আল্লাহর অনেক ফরয বিধানও সে পালন করতে পারবে না।
এজন্য যেসব ইমাম বা নেতা ইসলামের নির্দেশ অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করবেন নবী ﷺ তাদের বিরাট পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা হাশরের ময়দানে যে সাত দল ব্যক্তিকে তার আরশের ছায়ায় স্থান দেবেন তাদের মধ্যে প্রথম সারিতেই তারা অন্তর্ভুক্ত হবেন। নিচের হাদীসটিতে এর প্রমাণ রয়েছে।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, সাত শ্রেণীর লোককে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ছায়ায় স্থান দেবেন যেদিন তাঁর ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া থাকবে না :
১। ন্যায়পরায়ণ শাসক।
২। সেই যুবক যে আল্লাহর ইবাদতের মধ্য দিয়ে বড় হয়।
৩। সেই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। যখন সে বেরিয়ে আসে তখন পুনরায় মসজিদে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকে।
৪। সেই দুব্যক্তি যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একে অপরকে ভালোবাসে, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই একত্রিত হয় এবং পৃথক হয়।
৫। সেই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং দু’চোখে অশ্রু বিসর্জন দেয় অর্থাৎ কান্না করে।
৬। সেই ব্যক্তি যাকে কোন সম্ভ্রান্ত সুন্দরী নারী (খারাপ কাজের জন্য) আহবান করে; কিন্তু সে বলে ‘‘আমি আল্লাহকে ভয় করি’’।
৭। সেই ব্যক্তি যে গোপনে দান করে এমনকি তার বাম হাত জানে না তার ডান হাত কী দান করেছে। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/৩৫০৫; সহীহ বুখারী, হা/৬৬০; সহীহ মুসলিম, হা/২৪২৭; তিরমিযী, হা/২৩৯১; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৪৪৮৬; ইবনে খুযাইমা, হা/৩৫৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯৬৬৫।]
সুতরাং আমাদেরকে পূর্ণাঙ্গ মুসলিম হতে হলে অবশ্যই আল্লাহর সকল বিধান পালন করতে হবে। কিছু বিধান পালন করলাম এবং কিছু বিধানকে ছেড়ে দিলাম- এটা কোন মুসলিমের কাজ হতে পারে না। কারণ যে ব্যক্তি এমনটি করবে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য দুনিয়াতে লাঞ্ছনা ও আখেরাতে শাস্তির বিধান রেখেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
তবে তোমরা কি গ্রন্থের (কুরআনের) কিছু অংশ বিশ্বাস কর আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? অতএব তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করবে তাদের পার্থিব জীবনে দুর্গতি ব্যতীত কিছুই নেই এবং কিয়ামত দিবসে তারা কঠোর শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত হবে। আর তোমরা যা করছ আল্লাহ সে বিষয়ে অমনোযোগী নন। (সূরা বাকারা- ৮৫)
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/274/7
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।