hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

যেসব কারণে ইবাদাত বরবাদ হয়

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৩১
পীর-মুরিদী
ধর্মজ্ঞানে অজ্ঞ অধিকাংশ মানুষের আকিদা বা বিশ্বাস হলো, পীরের কাছে মুরিদ হওয়া ব্যতীত জান্নাতে যাওয়া যায় না। কিছু কিছু মহল পীরের নাম নিয়ে তাদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য সরলমনা মানুষকে তাদের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য কতগুলি যুক্তি দিয়ে থাকে, যা ধর্মের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ অলীক ও ভিত্তিহীন। যেমন অনেকে বলে থাকে- যার পীর নেই, তার পীর হলো শয়তান। যার পীর নেই তার শীর নেই ইত্যাদি। আবার অনেকে বলেন, পীর হলো জান্নাতের উকিল অর্থাৎ হাকীমের সামনে বাদী বিবাদীর যেমন কোন কথা চলে না, সমস্ত জেরা উকিলকেই করতে হয়। তেমনি কিয়ামতের মাঠেও পীর সাহেব উকিলের ন্যায় জেরা করে মুরীদকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। (নাউজুবিল্লাহ)

পীর কাউকে জান্নাতে নিয়ে যাবে- এর কোন দলিল-প্রমাণ নেই। চাই সে যত বড় পীর আর যত বড় কামেল ওলীই হোক না কেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ নিজেই এ ব্যাপারে অক্ষমতা প্রকাশ করেছেন।

عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ لَمَّا اُنْزِلَتْ هٰذِهِ الْاٰيَةُ ﴿وَانْذِرْ عَشِيْرَتَكَ الْاَقْرَبِيْنَ﴾ دَعَا رَسُوْلُ اللهِ - قُرَيْشًا فَاجْتَمَعُوْا فَعَمَّ وَخَصَّ فَقَالَ : يَا بَنِىْ كَعْبِ بْنِ لُؤَىٍّ أَنْقِذُوْا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِىْ مُرَّةَ بْنِ كَعْبٍ أَنْقِذُوْا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِىْ عَبْدِ شَمْسٍ أَنْقِذُوْا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِىْ عَبْدِ مَنَافٍ أَنْقِذُوْا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِىْ هَاشِمٍ أَنْقِذُوْا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا بَنِىْ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ أَنْقِذُوْا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ، يَا فَاطِمَةُ أَنْقِذِىْ نَفْسَكِ مِنَ النَّارِ فَإِنِّىْ لَا أَمْلِكُ لَكُمْ مِنَ اللهِ شَيْئًا غَيْرَ أَنَّ لَكُمْ رَحِمًا سَأَبُلُّهَا بِبَلَالِهَا

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়- ‘‘তোমার নিকটাত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দাও’’ [সূরা শু‘আরা- ২১৪।] তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ কুরাইশদেরকে ডাকলেন। ফলে তারা একত্রিত হলো। তারপর তিনি তাদের সাধারণ ও বিশেষ সকলকে সম্বোধন করে বললেন, হে কা‘ব ইবনে লুওয়াই এর বংশধর! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করো। হে মুর্রা ইবনে কা‘ব-এর বংশধর! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করো। হে আব্দে শামস্-এর বংশধর! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করো। হে আব্দে মানাফ-এর বংশধর! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। হে হাশিমের বংশধর! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করো। হে আবদুল মুত্তালিব-এর বংশধর! তোমরা নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। হে ফাতিমা! তুমি নিজেকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। কারণ, আল্লাহর (আযাব) থেকে রক্ষা করার ব্যাপারে আমার কোন ক্ষমতা নেই। অবশ্য আমি তোমাদের সঙ্গে আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করব। [সহীহ মুসলিম, হা/৫২২; নাসাঈ, হা/৩৬৪৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪০২, ৮৭২৬, ১০৭২৫; মিশকাত, হা/৫৩৭৩।]

কারো আনুগত্য করা যাবে না যদি সে আল্লাহর শরীয়াতের বিপরীতে কোন হুকুম করে। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

﴿إِنَّمَا الطَّاعَةُ فِى الْمَعْرُوْفِ﴾

আনুগত্য কেবল সৎ কাজে। [সহীহ মুসলিম, হা/৪৮৭২; সহীহ বুখারী, হা/৪৬১৫।]

এ হাদীস থেকে পরিষ্কার হয়ে গেল যে, শরীয়াতের বিরুদ্ধে কারো হুকুমের আনুগত্য করা যাবে না।

বর্তমানে পীর-মুরিদীর যে সিলসিলা দেখা যাচ্ছে, এটা সম্পূর্ণ নতুন ও মনগড়াভাবে উদ্ভাবিত। এটা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যুগে ছিল না, তিনি কখনো পীর-মুরিদি করেননি। তিনি নিজে বর্তমান অর্থে না ছিলেন পীর আর না ছিল তাঁর কোন মুরিদ। সাহাবায়ে কেরামও কখনো এই পীর-মুরিদী করেননি। তাঁদের কেউ কারো পীর ছিলেন না এবং তাদের মুরিদও কেউ ছিল না। তাবেয়ীন ও তাবে তবেয়ীনের যুগেও এ পীর-মুরিদীর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। অথচ বর্তমানকালের এক শ্রেণির পীর নামে কথিত জাহেল লোক ও তাদের ততোধিক জাহেলী মুরিদ এ পীর-মুরিদীকে ইসলামের অন্যতম ভিত্তিগত জিনিস বলে প্রচারণা চালাচ্ছে। আর এর মাধ্যমে অজ্ঞ লোকদেরকে মুরিদ বানিয়ে এক একটি বড় আকারের বিনা পুঁজির ব্যবসা সাজিয়ে বসেছে।

এ ক্ষেত্রে করণীয় :

কেউ যদি ওসীলা নিতে চায় তবে যেসব ওসীলা কুরআন ও সুন্নাহতে রয়েছে বা যেসব বিষয়ের ওসীলা নেয়া জায়েয আছে সেসব বিষয়ের ওসীলা নিতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَابْتَغُوْاۤ اِلَيْهِ الْوَسِيْلَةَ وَجَاهِدُوْا فِيْ سَبِيْلِهٖ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ﴾

হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং তাঁর ওসীলা তালাশ করো এবং তাঁর পথে জিহাদ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা মায়েদা- ৩৫)

এ আয়াত থেকে জানা যায় যে, ওসীলা তালাশ করা শুধু জায়েয নয়; বরং আল্লাহর নির্দেশ। কিন্তু প্রশ্ন থাকল যে, সেই ওসীলা কী জিনিস? উত্তর হলো- ওসীলা হচ্ছে নেক আমল। ব্যক্তি যে কোন নেক আমল করে আল্লাহর কাছে ওসীলা নিতে পারে। এছাড়াও আল্লাহ তা‘আলার গুণবাচক নামের ওসীলা নিয়ে তাঁর কাছে চাওয়া যায় এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা যায়।

যেমন বনী ইসরাঈলের তিন ব্যক্তি বিপদে পড়ে তারা নিজেদের নেক আমলের ওসীলা নিয়ে আল্লাহর কাছে দু‘আ করেছিলেন। ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন।

ইবনে উমর (রাঃ) কর্তৃক নবী ﷺ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা তিন ব্যক্তি (ঘর থেকে) বের হয়ে রাস্তা চলতে থাকাকালে ভারী বৃষ্টি শুরু হলে তারা একটি পাহাড়ের গর্তে প্রবেশ করল। (এ সময়) উপর থেকে একটি বড় পাথর খন্ড পড়ে গর্তের মুখ অাঁটকে গেল। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, তখন তারা একজন অন্যজনকে বলল, তোমাদের সর্বোৎকৃষ্ট আমলের কথা বলে (পাথর দূর হওয়ার জন্য) আল্লাহর নিকটে দু‘আ করো। সুতরাং তাদের একজন এ বলে প্রার্থনা করল, হে আল্লাহ! আমার বাবা-মা অত্যন্ত বয়স্ক হয়ে গিয়েছিলেন। আমি দুধ দোহন করে দুধের বাঁটি নিয়ে (সর্বপ্রথম) আমার (বৃদ্ধ) বাবা-মার কাছে যেতাম। এরপর আমার ছেলে-মেয়ে ও আমার স্ত্রীকে পান করতে দিতাম। একদিন আমি (বাড়ি) এসে দেখলাম আমার মা-বাবা ঘুমাচ্ছে। তাই আমি তাদেরকে জাগানো ভালো মনে করলাম না। আমার ছেলে-মেয়েরা ক্ষুধায় চিৎকার করে আমার পায়ের কাছে কাঁদতে থাকল। তথাপি আমি তাদের জেগে উঠার আশায় থাকলাম এবং এভাবেই ফজরের ওয়াক্ত হয়ে গেল। হে আল্লাহ! তুমি যদি জানো যে, একমাত্র তোমার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই আমি এমনটি করেছিলাম, তাহলে গর্তের মুখ থেকে পাথরটি একটু ফাঁক করে দাও। এরপর গুহার মুখ থেকে পাথর কিছুটা সরে গেল।

অন্যজন বলল, হে আল্লাহ! তুমি জানো, আমি আমার এক চাচাতো বোনকে খুব বেশি ভালোবাসতাম। কিন্তু সে বলল, তুমি আমাকে একশ’ দীনার না দেয়া পর্যন্ত আমার ভালোবাসা লাভ করতে পারবে না। সুতরাং অনেক কষ্টে আমি তা যোগাড় করলাম। অতঃপর আমি যখন তার পদদ্বয়ের মাঝে বসলাম তখন সে বলল, আল্লাহকে ভয় করো এবং (বিয়ে না করে) হারামভাবে আমার কুমারীত্ব ও সতীত্ব নষ্ট করো না। তখন আমি তাকে ছেড়ে উঠে পড়লাম। হে আল্লাহ! তুমি যদি মনে কর যে, একমাত্র তোমার সন্তুষ্টি লাভের জন্যই আমি তা করেছিলাম, তাহলে পাথরটি আরো একটু ফাঁক করে দাও। এরপর পাথরটি দুই-তৃতীয়াংশ সরে গেল।

তৃতীয় জন বলল, হে আল্লাহ! তুমি তো জানো, আমি তিন সা‘ খাদ্যশস্যের বিনিময়ে একজন কাজের লোক নিয়োগ করেছিলাম। অতঃপর আমি যখন তাকে তার মজুরী প্রদান করলাম তখন সে তা নিতে আপত্তি জানাল। আমি তা নিয়ে ক্ষেতে বপন করলাম এবং এভাবে তা দিয়ে গরু কিনলাম ও রাখালের ব্যবস্থা করলাম। পরে (এক সময়ে) সে লোক এসে বলল, হে আল্লাহর বান্দা! আমার পাওনাটা আমাকে দিয়ে দাও। আমি বললাম, গরুর পাল ও রাখাল যেখানে আছে সেখানে যাও এবং সেগুলো তোমারই মাল। সে বলল, আপনি কি আমার সাথে তামাশা করছেন? আমি বললাম, না, বরং ওগুলো সত্যিই তোমার। হে আল্লাহ! তুমি যদি মনে কর যে, একমাত্র তোমার সন্তুষ্টি লাভের জন্যই আমি এরূপ করেছিলাম, তাহলে পাথরটি অপসারণ করে গুহার মুখ খুলে দাও। সুতরাং গুহার মুখ খুলে দেয়া হলো। [সহীহ বুখারী, হা/২৩৩৩।]

এভাবে যেকোন নেক আমলের ওসীলা নিয়ে আল্লাহর কাছে দু‘আ করা যায় বা কিছু চাওয়া যায়। কিন্তু মাযার, পীর, ফকীর অথবা কোন ওলীর ওসীলা নিয়ে আল্লাহর কাছে চাওয়া ইসলামে জায়েয নয়। এটা হলো শিরক। প্রত্যেক মুসলিমকে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। কারণ মুশরিক অবস্থায় কেউ মারা গেলে তার জন্য জান্নাত হারাম হয়ে যায়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন