hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

যেসব কারণে ইবাদাত বরবাদ হয়

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৮
ঈদে মীলাদুন্নবী
ইসলামী শরীয়াতে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ঘোষিত ঈদ হলো দু’টি- ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। তৃতীয় কোন ঈদের কথা আল্লাহর রাসূলের পক্ষ হতে বর্ণিত হয়নি এবং ঐ দিন উদযাপন করার কোন কথাও রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেননি। রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ নির্দিষ্ট করে উক্ত তারিখে প্রচলিত মিলাদ মাহফিলের ব্যবস্থা করা, জসনে জুলুস করা, ঐ দিনকে নির্দিষ্ট করে উক্ত দিনে ফকির মিসকীন এবং মানুষ একত্রিত করে খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদির ব্যবস্থা করার কোন রেওয়াজ নবী ﷺ ও সাহাবায়ে কেরাম থেকে তার কোন প্রমাণ নেই। যদি তার প্রমাণ থাকত, তাহলে সে ব্যাপারে সমালোচনা করার মতো কারো অধিকার থাকত না। কেননা তারা যা করেছেন তাদের আনুগত্য করা এবং যা পরিহার করেছেন তা বর্জন করার নামই হলো দ্বীন। আর তার বিপরীত করাই হলো বেদ্বীন এবং শরীয়াত পরিপন্থী।

নবুওয়াত প্রাপ্তির পর নবী ﷺ দীর্ঘ ২৩ বছর জীবিত ছিলেন। তারপর খুলাফায়ে রাশিদীনের সময়কাল ছিল ৩০ বছর। তারপর ১০০ বছর ছিল সাহাবায়ে কেরামের। আর কম বেশি ২২০ বছর পর্যন্ত ছিল তাবেয়ীগণের যুগ। আর তাদের মধ্যে নবী ﷺ এর পরিপূর্ণ ভালোবাসা ছিল; কিন্তু তাদের সময় মিলাদের কোন অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল না।

বর্তমানে প্রচলিত মিলাদের সার সংক্ষেপ হলো, কিছু মানুষ একত্রিত হয়ে একই সাথে একই আওয়াজে উচ্চৈঃস্বরে সুর মিলিয়ে দরূদ এবং সালাম পাঠ করে। আর কোন কোন জায়গায় এই মিলাদের স্বরূপ হলো এক পর্যায়ে কিয়াম করবে এবং সবশেষে একটি দীর্ঘ মোনাজাত করবে। অথচ এ জাতীয় প্রচলিত মিলাদের নাম নিশানা ইসলামের সোনালী যুগে ছিল বলে তার বিন্দুমাত্র দলীল বা প্রমাণ নেই। তাই এটা শরীয়াতের দৃষ্টিতে সর্বসম্মতিক্রমে বিদআত, গোমরাহী বা পথভ্রষ্টতা।

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জন্ম তারিখ নিয়ে মতপার্থক্য :

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জন্ম তারিখ নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জন্ম তারিখ নির্দিষ্টভাবে নির্ণয় সম্ভব হয়নি।

১. ইবনে আবদুল বার্র মনে করেন, তিনি রবিউল আউয়াল মাসের দুই তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন।

২. কেউ বলেছেন রবিউল আউয়াল মাসের ১০ তারিখ, যেমন আবু জাফর বাকের।

৩. কেউ বলেছেন, রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ, যেমন ইবনে ইসহাক।

৪. কেউ বলেছেন, তিনি রমাযান মাসে জন্ম গ্রহণ করেছেন, যেমন ইবনে আব্দুল বার্র জুবাইর ইবনে বাক্কার থেকে বর্ণনা করেছেন। [আস-সিরাতুন নববিয়াহ’’ পৃ: ১৯৯-২০০।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জন্মের নির্দিষ্ট তারিখ সম্পর্কে আলেমদের এ মতবিরোধই প্রমাণ করে যে, তার জন্মের নির্দিষ্ট তারিখ সম্পর্কে নিশ্চয়তা ছিল না; সুতরাং এ দিনটি পালন করা তো আরো পরের কথা।

আরো একটি বিষয় বিবেচনা যোগ্য, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যুগে কোন বাধা না থাকা সত্ত্বেও মীলাদুন্নবী উদযাপন না করা। নবী ﷺ এর প্রতি ভালোবাসা সাহাবীদের মধ্যে বিদ্যমান ছিল, যার ভিত্তিতে তারা ইচ্ছা করলে মীলাদুন্নবী উদযাপন করতে পারতেন, এতে কোন বাধাও ছিল না। এ সত্ত্বেও যেহেতু সাহাবায়ে কেরাম মীলাদুন্নবী উদযাপন করেননি, তাই এটা বিদআত।

মিলাদের সূচনা :

সর্বপ্রথম এ দিনটি উদযাপন করা হয় মিসরের কায়রোতে। ফাতেমি খলিফারা চতুর্থ শতাব্দীতে এর প্রচলন আরম্ভ করে। তারা ছয়টি মীলাদ বা জন্মউৎসব প্রবর্তন করে, মীলাদুন্নবী, মীলাদে আলী, মীলাদে ফাতেমাতুজ জোহরা, মীলাদে হাসান ও হুসাইন এবং তখনকার খলিফার মীলাদ। সপ্তম শতাব্দীতে ‘ইরবিল’ শহরে সর্বপ্রথম এ মীলাদ আরম্ভ করে বাদশাহ আবু সাঈদ। সেই থেকে আজ পর্যন্ত তা চলে আসছে এবং তাতে আরো বৃদ্ধি ও সংযোজন ঘটেছে। তারা এতে তাদের প্রবৃত্তির চাহিদা অনুযায়ী সবকিছু যোগ করেছে। তাদেরকে এর প্রত্যাদেশ করেছে মানব ও জিন শয়তানরা। [আল-ইবাদা ফি মাদাররিল ইবতেদা, পৃ: ২৫১।]

প্রত্যেক যুগে এই মিলাদের প্রতিবাদ করা হয়েছে :

এই প্রচলিত মিলাদ মাহফিল নামক ধর্মীয় কুসংস্কার দমনের ব্যাপারে প্রত্যেক যুগের উলামায়ে হাক্কানীগণ জোর প্রতিবাদ করে গেছেন। যেমন,

وَمِنْ جُمْلَةِ مَا اَحْدَثُوْهُ مِنَ الْبِدَعِ مِنْ اِعْتِقَادِهِمْ اَنَّ ذٰلِكَ مِنْ اَكْبَرِ الْعِبَادَاتِ وَاِظْهَارِ الشَّعَائِرِ مَا يَفْعَلُوْنَهٗ فِى الشَّهْرِ الْرَبِيْعِ الْاَوَّلِ مِنَ الْمَوْلَدِ وَقَدْ اِحْتَوٰى ذٰلِكَ عَلٰى بِدَعٍ وَمُحَرَّمَاتٍ اِلٰى اَنْ قَالَ وَهٰذِهِ الْمَفَاسِدُ مُتَرَتَّبَةٌ عَلٰى فِعْلِ الْمَوْلَدِ اِذَا عَمِلَ بِالسِّمَاعِ فَاِنْ خَلَا مِنْهُ وَعَمِلَ طَعَامًا فَقَطْ وَنَوٰى بِهِ الْمَوْلَدَ وَدَعَا اِلَيْهِ الْاَخَوَانَ وَالْمُسْلِمَ مِنْ كُلِّ تَقَدُّمِ ذِكْرِهٖ فَهُوَ بِدَعٌ بِنَفْسِ نِيَّتِهٖ فَقَطْ لِاَنَّ ذٰلِكَ زِيَادَةٌ فِى الدِّيْنِ لَيْسَ مِنْ عَمَلِ السَّلَفِ الْمَاضِيْنَ وَاِتِّبَاعُ السَّلَفِ اَولٰى

বিশ্বাসগতভাবে মানুষ যে সমস্ত নতুন বিদআত আবিষ্কার করেছে তার মধ্যে যাকে তারা বড় ইবাদাত হিসেবে মনে করে এবং যার বাস্তবায়নকে শরীয়াতের বড় নিদর্শন বলে প্রকাশ করেন তা হলো মিলাদ মাহফিল। তারা রবিউল আউয়াল মাসেই এ উৎসবটি করে থাকে। সুতরাং এ ব্যাপারে বাস্তব ও সত্য কথা হলো এটা সম্পূর্ণভাবে বিদআত এবং অনৈসলামিক প্রথা ও হারাম কাজ। তিনি আরো বলেন, ঐ মজলিসে মিলাদের অন্যতম খারাপের দিক হলো, এর মধ্যে ছেমা (গান বাদ্য জনিত কাজ) হয়। অবশ্যই মজলিসে মিলাদ ছেমা থেকে পবিত্র থাকলেও মিলাদের নিয়তে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা এবং এতে আত্মীয়স্বজনকে আমন্ত্রণ করা, যদিও তা এক প্রকার কুসংস্কারমুক্ত, তথাপি কেবল নিয়তের (মিলাদ অনুষ্ঠানের) কারণে তা বিদআত এবং এটা ধর্মের মধ্যে এক নতুন কাজের উদ্ভাবন, যা সালফে সালেহীনের যামানায় ছিল না। অথচ সালফে সালেহীনদের পদাংক অনুসরণ করা এবং তাদের আনুগত্য করাই উত্তম। [মাদাখিলু ইবনে হাজ্জ, মিশরী ছাপা ১/৮৫।]

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেছেন, কতক লোকের মীলাদুন্নবীর আবিষ্কার, তারা হয়তো নাসারাদের অনুকরণে করেছে, যেমন তারা ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মানুষ্ঠান পালন করে। বস্তুত রাসূলুল্লাহ ﷺ এর পরিপূর্ণ মুহাববত ও সম্মানের পরিচয় হচ্ছে, তাঁর আনুগত্য ও অনুসরণ করা, তাঁর নির্দেশ পালন করা এবং প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে তাঁর সুন্নাত জীবিত করা, তাঁর আনিত দ্বীন প্রচার করা এবং এজন্য অন্তর, হাত ও মুখ দ্বারা জিহাদ করা। কারণ এটাই আমাদের পূর্বসূরি মুহাজির, আনসার ও তাদের যথাযথ অনুসারীদের নীতি ও আদর্শ ছিল। [ইকতেদাউস সিরাত : পৃ: ২৯৪-২৯৫।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাত অনুসরণের মধ্যেই তাঁর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ পায়। আরো প্রকাশ পায় তাঁর সুন্নাতের শিক্ষা বিস্তার ও প্রসার করা এবং তাঁর সুন্নাতের উপর থেকে যে কোন হামলা প্রতিরোধ করা ইত্যাদিতে। মূলত এটাই ছিল সাহাবাদের পদ্ধতি। কিন্তু পরবর্তী যুগের লোকেরা নিজেদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে এবং এসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শয়তানও তাদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ কে নিয়ে বছরে শুধু একদিন কিংবা একমাসই ঈদ বা আনন্দবোধ করতে হবে কেন? তিনি তো আমাদের জন্য প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তের জন্যই আনন্দের উৎস। কারণ যখন যেখানেই আল্লাহ তা‘আলার স্মরণ বা আনুগত্য করতে হয়, তখন সেখানেই তাঁকে অনুসরণ ও অনুকরণ করেই তা করতে হয়। অন্যথায় আল্লাহর স্মরণ বা আনুগত্যই শুদ্ধ নয়। সুতরাং শুধু ঐ দিন বা ঐ মাস নয়, বরং রাসূলুল্লাহ ﷺ এর পুরো জীবনই অনুকরণের জন্য সর্বোত্তম আর্দশ। [সূরা আহযাব- ২১।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন