মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ইতিপূর্বে আমি আলোচনা করেছি যে, সত্যিই কবর অত্যন্ত ভীতি কর স্থান। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেনঃ “আমি কবরের চেয়ে ভীতি কর স্থান আর দেখি নাই।” (তিরমিযী)
এক লোকের জানাযার সময় রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কবরের পার্শ্বে বসেছিলেন তিনি কবরের ভয়াবহতার কথা স্মরণ করে এত কাঁদলেন যে এতে তাঁর চোখের পানিতে কবরের মাটি ভিজে গেল, আর তিনি বললেনঃ আমার ভাইগণ এই স্থানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেও। (তিরমিযী)
তিনি নিজে কবরের ফেতনা থেকে পানা চাইলেন এবং স্বীয় উম্মতদেরকে কবরের ফেতনা থেকে পানা চাওয়ার জন্য উপদেশ দিলেন। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) অভ্যাস এই ছিল যে কবরের কথা স্মরণ হলে তিনি এবং তাঁর সাহাবাগণ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে যেতেন। সালমান ফারসী (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেনঃ তিনটি বিষয় আমাকে চিন্তিত করে তোলে এবং এতে আমি আতঙ্কিত হয়ে যাই।
১- রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) সাহাবাগণের সংস্পর্শ থেকে দূরে সরে যাওয়ার ভয়। ২-কবরের আযাব ৩- কিয়ামতের ভয়। ৪ -মালেক বিন দীনার (রাহিমাহুল্লাহ) মৃত্যু ও কবরের কথা স্মরণ করে কাঁদতে কাঁদতে বেহুস হয়ে যেতেন। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উম্মত বর্গকে কবর যিয়ারতের নির্দেশ এজন্যই দিয়েছেন, যে এর মাধ্যমে পরকালের কথা স্মরণ হবে। (তিরমিযী)
মোসনাদে আহমদে বর্ণিত হয়েছে যে কবর যিয়ারত কর, এতে শিক্ষার পাথেয় রয়েছে। অর্থাৎ মানুষ দুনিয়ার কথা ভুলে গিয়ে পরকালের কথা স্মরণ করে। দুনিয়ার অস্থায়িত্যের কথা ভাবার সুযোগ হয়। অন্যের কবর দেখে নিজের কবরের কথা স্মরণ হয়। ক্ষনস্থায়ী দুনিয়ার লোভে পরে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নফরমানী করার কারণে লজ্জাবোধ সৃষ্টি হয়।
স্বীয় গোনাহ থেকে তাওবা করার আগ্রহ জাগে। কিন্তু আমাদের সামাজে যা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ এর বিপরিত। চিন্তা করুন যে কবরে শিরক সম্ভলিত কাওয়ালীর আসর জমে আছে, সেখান থেকে কি করে পরকালের কথা স্মরণ হবে। যেখানে ঢোল ও বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে যুবক ও যুবতীরা উন্মাদ হয়ে আছে, সেখানে কি করে মোন কার নাকীরের কথা স্মরণ হবে? যেখানে সুন্দর চেহারা ও সুঠাম দেহের অধিকারীদের নৃত্য চলে, সেখানে কে কবরের আযাব ও শান্তি নিয়ে চিন্তা করতে যাবে? যেখানে সিনামা থেয়েটারের নির্লজ্জ গান বাদ্য চলছে, সেখানে মৃত্যুর কথা কি করে স্মরণ হবে?
যেখানে পর্দা হিন যুবক যুবতীর অবাদ মিলা মিশা চলে, সেখানে কি করে তওবার আগ্রহ জাগবে? যেখানে মুরীদ ও ভক্তদের মদ পানের আসর জমজমাট হয়ে আছে, সেখানে কি করে পরকালের কথা স্মরন হবে? যেখানে রাত-দিন শুধু নযরানা ও মান্নত গ্রহণ করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা হচ্ছে, সেখানে কে পরকালের ওয়াজ করবে আর কেইবা তা শোনবে?
উল্লেখ্য ২০০১ ইং সালে বাবা ফরীদের মাজারে ওরসের সময় বেহেসতি দরজা দিয়ে অতিক্রম করতে আগ্রহীদের ভীরের চাপে ৬০ ব্যক্তি নিহত হয়। তার কারণ দর্শাতে গিয়ে বলা হয়েছে যে সরকার দরবারের খেদমতের জন্য আধ্যাত্মিক গুরুকে প্রতি বছর দেড় লক্ষ্য গ্রেন্ট দিত কিন্তু সে দিন বেহেশতী দরজা খোলার কয়েক ঘন্টা পূর্বে আধ্যাত্মিক গুরু কর্তীপক্ষের সাথে তর্ক শুরু করেন যে তার গ্রান্ট দেড় লক্ষ্যের পরিবর্তে ১৫ লক্ষ্য করা হোক, তাহলে সে দরজা খোলবে। তাই দরজা খুলতে দেরী হয়েছিল এবং দরজার আসে পাশে প্রচন্ড ভীরের কারণে এ দূর্ঘটনা ঘটেছিল।[1]
কবর পুজার শিরক পরকালে মানুষের ধ্বংশের কারণ, পৃথিবীতে তার সামাজিক অবক্ষয়, চারিত্রিক বিপর্জয়, ইত্যাদি বিষাক্ত পরিনতির অনুমান করা যাবে নিম্নে উল্লেখিত সংবাদ সমূহ থেকে।
১- বাহাদুল পুর জিলায় খাজা মাহকামুদ্দীনের মাজারে বাৎসরিক ওরসে আগত বাহাদুল পুর ইউনিভাসিটির দুই ছাত্রিকে আধ্যাত্মিক গুরুর ছেলে অপহরণ করেছে। পুলিশ আধ্যাত্মিক গুরুকে গ্রেপ্তার করেছে।[2]
২- রায়ভেন্ডে বাবা রহমত শাহের মাজারে ওরসের সময় ভেরাইটি প্রগ্রামের নামে সাত কেম্প জুড়ে চলছে মাদকতার প্রভাবে মাতলামী। ডজন ডজন যুবতী অশ্লীল নৃত্যের বিনিময়ে দর্শনার্থীদের কাছ থেকে লুটে নিচ্ছে অর্থ, দর্শনার্থীরা টাকার ভান্ডিল নিয়ে এখানে পৌঁছে যায়, রাত ভর নুপুরের ঝন্কার আর মদ পানের পালা চলতে থাকে। সাইকেল সু প্রগ্রামে যুবক যুবতীদের নৃত্যের মাধ্যমে যৌনতার আহ্বান চলে। ওরসের নামে জুয়া, মদপান, অস্ররে মহড়া চলে। শহরের অধিবাসীদের বিরোধিতার পরও তা প্রতিরোধের কোন লক্ষন নেই।[3]
৩ - দাতা মিলি আরো মদপান, অশ্লীল গান ও নৃত্য, পুলিশ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ্যের সহযোগীতায় ডজন ডজন মদের আসর জমে উঠেছে। অশ্লীল গান ও নৃত্য দেখার জন্য ১০ বছরের বাচ্চা থেকে নিয়ে ৭০ বছরের বৃদ্ধ ও অসংখ্য হারে এখানে উপস্থিত হচ্ছে। মাদকতা, অশ্লীলতা, ভাং-এর আসর পরিস্থিতিকে সার গরম করে রেখেছে। শত শত নোট সেখানে উড়ানো হচ্ছে, এক এক গ্রুপের নায়ক নায়িকারা একে অপরের সাথে দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত গলা গলি করছে, যুবকেরা তাদের পছন্দের নায়ক নায়িকাদেরকে বেছে রেখেছে, তার নাম নেয়া মাত্রই সে ইষ্টেজে এসে তাদেরকে মনরোঞ্জন করছে। এক নৃত্যশলায় নৃত্যরত অবস্থায় নায়ক নায়িকারা মাটিতে পরে গিয়ে ছিল আর এ দৃশ্য দেখতে গিয়ে নৃত্যশলার শত শত চেয়ার ভেঙ্গেছে।[4]
৪-ডাব্বা পীরেরা ভিনদেশী এজেন্টদের দায় দায়িত্বও পালন করতেছে। সরকারের উপরস্তদের সাথে গভীর সম্পর্ক, অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুলিশ আসামীদেরকে রাজনৈতিক এবং সরকারী উচ্চ পর্যায়ের ভয়ে গ্রেপ্তার করতে পারেনা, তারা পীর মুরীদির আড়ালে অসামাজিক কাজের সাথে জড়িত থাকে। দরবারের সাথে সমপৃক্ত ব্যক্তি রাজনৈতিক অনুষ্ঠান সমূহে রিতিমত অংশ গ্রহণ করে থাকে।[5]
৫-নারী দেহে তাবীজ প্রয়োগ কারী রাজপুত্র গ্রেপ্তার হয়েছে। আসামী ধর্ষণ, হত্যা, ডাকাতি, ইত্যাদি অভিযোগে অভিযুক্ত। বিভিন্ন থানার পুলিশ তাকে খুঁজতে ছিল, মুলতানে পীরের দরবার খুলে দান্ধা করছিল।[6]
প্রিয় পাঠক এখানে সংক্ষিপ্ত আকারে কিছু নমুনা তুলে ধরা হল। মাজার, খনকা, আস্তানাসমূহের অবস্থা সাধারণ স্থান থেকে ভিন্ন এবং রঙিন। কোথাও মনোরঞ্জন চলে আবার কোথাও চলে প্রদর্শনী। এমন কবর ও মাজার সমূহে গেলে মৃত্যুর কথা স্মরণ হবে? আখেরাতের স্মরণ কিভাবে হবে? আযাব ও সোয়াবের চিন্তা কি করে হবে। আল্লাহর ভয় কার অন্তরে পয়দা হবে। দুনিয়ার প্রতি অনাগ্রহ কি করে পয়দা হবে। এ কারণেই ইসলামে কবরে মেলা, মাহফিল, মদের আসর জমানো, মাজার আবাদ করা, ওরস করা, ফুল বিশিষ্ট চাদর দেয়া, কবর বা মাজারকে চুমা দেয়া, কবর ও মাজারে সিজদা করা, কবরের চতুর্পার্শ্বে ত্বওয়াফ করা, কবরে কোরবানী করা, খাবার বন্টন করা, কবরে শায়িত ব্যক্তির নিকট নিজের প্রয়োজনের কথা ব্যক্ত করা, সম্পূর্ণ রুপে হারাম, বড় শিরক। যে সমস্ত আলেমগণ এসমস্ত কার্যকলাপকে জায়েজ বলে মনে করেন তাদের নিকট আমরা অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বলতে চাই যে, মেহের বানী করে একটু চিন্তা করুন যে, কবরকে রং ঢং করা, ওরস করা, নযরনেয়াজ পেশ করা, মান্নত মানা, দান-খয়রাত করা, মনের আশা পুরনের জন্য দরখাস্ত করা, ইত্যাদি অপকর্মের সাথে জড়িত নারী-পুরুষরা যে লজ্জাকর অশ্লীল সংস্কৃতির জন্ম দিচ্ছে এর দায় দায়িত্য কে বহন করবে? কিয়ামতের দিন এর জওয়াব দেহিতা কে করবে?
দ্বিতীয়তঃ এসমস্ত ওলামাগনকে আমরা আরো একটা বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করতে চাই যে, একটি গ্রহণ যোগ্য বিষয় হল এই যে, ভাল কাজের ফল ভাল হয়, আর খারাপ কাজের ফল খারাপ হয়। এমন কখনো হয় নাই যে, আমের গাছে কলা হয়, আর কলা গাছে আম হয়। যদি মাজার ও খানকা সমূহে নযর নেয়াজ দেয়া, আশা পূরনের জন্য দরখাস্ত করা, ওরস ও মেলা বসানো ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ কাজ হয়ে থাকে, তাহলে এ ভাল কাজ থেকে অশ্লীলতা অন্যায় অপরাধ কেন সৃষ্টি হচ্ছে? ইসলামী প্রজাতন্ত্র পাকিস্থানে জুয়া ব্যভীচার, মদ পান, সহ অন্যান্য অপকর্ম থেকে তা পাক করার ব্যাপারে কি ওলামাগণ চেষ্টা করবে?
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।