hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কবরের বর্ণনা

লেখকঃ মুহাম্মদ ইকবাল কীলানী

কবরে তিনটি প্রশ্ন
কবরে মোনকার নাকীর তিনটি প্রশ্ন করবেঃ ( من ربك؟ ) তোমার প্রভূ কে? ( من نبيك؟ ) তোমার নাবী কে? ( مادينك؟ ) তোমার দ্বীন কি ছিল? বাহ্যিক ভাবে তিনটি প্রশ্নের উত্তরই সংক্ষিপ্ত এবং সহজ। যে আমার প্রভূ আল্লাহ, আমার নাবী মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার দ্বীন ইসলাম। প্রকৃত ঘটনা হল এই যে তিনটি প্রশ্নই এত ব্যপক যে মানুষের সারা জীবনের আমলের সার সংক্ষেপ এ প্রশ্ন সমূহের মধ্যে রয়েছে। কবরে এ প্রশ্ন সমূহের উত্তর শুধু ঐ ব্যক্তিই দিতে পারবে যে তার সারা জীবন এ প্রশ্ন গুলির উত্তরের আলোকে ঘড়ে তুলেছে। জ্ঞান ও পদ মর্যাদার বড়াই, চাতুরতা সেদিন মানুষের কোন কাজে আসবে না।

১৯৩০-৪০ দশকের কথা, আমার সম্মানিত পিতা, (লেখকের) হাফেজ মোহাম্মদ ইদ্রীস কীলানী (রাহিমাহুল্লাহ) জামেয়া মোহাম্মাদীয়া গোযরা নোয়ালায় শিক্ষকতার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি একটি ঘটনা বর্ণনা করতেন যে, কিলয়া নোয়ালা গ্রাম থেকে, গোজরা নোয়ালা শহরে যেতে হলে আমাদেরকে গোন্দা নোয়ালা আডাহ হয়ে যেতে হত, সেখানে এক ব্যক্তি ঘোড়ার ঘাস বিক্রি করত। যখন ই আমর ঐ দিক দিয়ে যেতাম তখনই ঐ ব্যক্তির কণ্ঠে ধারাবাহিক ভাবে সোনতে পেতাম যে “দুই পয়সা আটি, দুই পয়সা আটি”। তার সারা জীবন এভাবেই ঘাষ বিক্রি করতে করতে পার হয়েছে। কোন দিন সে না নামায পড়েছে না কোর’আন তেলওয়াত করেছে না আল্লাহ ও তার রাসূলের কথা স্মরণ করেছে।

যখন সে মৃত্যু শয্যায় সায়িত হল, তখন তার আত্মীয়-স্বজনরা তার পাশে বসে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়তে শুরু করল, যাতে তার মুখেও এ কালেমা জারী হয়। কিন্তু আফসোস! মৃত্যুর সময় ও তার মুখ থেকে ঐ কথা গুলিই বের হতে থাকল যা সে তার সারাজীবন বলতে ছিল। “দুই পয়শা আটি, দুই পয়সা আটি”। আর একথা বলতে বলতেই সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল। মূলত মৃত্যুর সময় মানুষের সারা জীবনের আমলের আলোকে তার মৃত্যু হয়ে থাকে। মৃত্যুর সময় লা ইলাহা ইল্লাল্লা শুধু ঐ সৌভাগ্যবান ব্যক্তির মুখ দিয়েই বের হবে, যে মূলত তার সারাজীবনে নিরন্‌কুশ ভাবে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর দাবী পূরণ করেছে। এ একই অবস্থা হবে কবরে প্রশ্নের উত্তরের বেলায় ও, সেখানে ঐ প্রশ্ন গুলোর সঠিক উত্তর সেই দিতে পারবে যে তার সারাজীবনকে ঐ প্রশ্নের উত্তর গুলির আলোকে পরিচালনা করেছে। তোমার প্রভূ কে? এর উত্তরে– আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোন মা’বুদ নেই। তা ঐ ব্যক্তিই বলতে পারবে যে প্রকৃত অর্থেই আল্লাহকে তার প্রভূ হিসেবে মেনেছে। যে শুধু এক আল্লাহর সাথেই সম্পর্ক রেখেছে।

এক আল্লাহ কেই দাতা ও চাহিদা পুরণ কারী হিসেবে বিশ্বাস করেছে। এক আল্লাহ কেই স্বীয় গাউস এবং সমস্যা দূর কারী হিসেবে বিশ্বাস করেছে। এক আল্লাহ কেই স্বীয় ভাগ্য নির্ধারক ও স্বীয় জীবন ও মরনের মালিক হিসেবে জেনেছে। তারই নামে নযর নেওয়াজ করেছে। তারই নামে মান্নত মেনেছে। তারই নামে নামায আদায় করেছে, রোযা রেখেছে, দান-খয়রাত করেছে। শুধু তারই ভয় অন্তরে রেখেছে। কিন্তু যে আল্লাহর সাথে অন্যকে ও স্বীয় ভাগ্য নির্ধারক, জীবন- মরনের মালিক বলে মনে করেছে। আল্লাহর সাথে অন্য কাওকে দাতা, চাহিদা পূরণ কারী, বলে মেনেছে। অন্য কাওকে স্বীয় গাউস ও সমস্যা দূর কারী হিসেবে মেনেছে। অন্যের নামে নযর নেওয়াজ করেছে। অন্যের নামে মান্নত মেনেছে, আল্লাহর সাথে অন্যের নামে ও নামায পড়েছে, অন্যের নামে দান খয়রাত ও করেছে। এমন ব্যক্তির যবানে মৃত্যুর সময় কি করে লা-ইলাহাইল্লাল্লাহ আসবে? এ একই অবস্থা হবে দ্বিতীয় প্রশ্নের ব্যাপারেও।

যে তোমার নবী কে? সুনে তো মনে হয় যে উত্তর বহুত সহজ ও সংক্ষেপ। যে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল। কিন্ত এ সহজ প্রশ্নের উত্তর ও মানুষের সারা জীবনের আমলের সাথে সম্পৃক্ত। যে ব্যক্তি নামায, রোজা, দান খয়রাত, থেকে নিয়ে উঠা-বসা, সোয়া -জাগা, খানা-পিনা, ব্যবসায়ী লেন-দেন, বিয়ে শাদী, জীবন-মরণ, সকল বিষয়ে শুধু রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) ত্বরীকা অনুযায়ী চলেছে তাকেই শুধু পথ পদর্শক হিসেবে মেনেছে, তাকেই শুধু নিজের ইমাম মেনেছে, তাকেই শুধু আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেছে। তাঁকে স্বীয় পিতা- মাতা পরিবার পরিজন সহ অন্যন্য সকলের চেয়ে অধীক মোহাব্বত করেছে, তারই যবানে এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর আসবে। আর যে পদে পদে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) হাদীসের বিপক্ষ্যে স্বীয় ইমাম গণের কথাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, তাঁর দিক নির্দেশনার বিপক্ষ্যে স্বীয় পীর মুরসিদের দিক নির্দেশনাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, তার সুন্নাতের বিপক্ষ্যে স্বীয় ওলামাদের প্রচলণ কৃত বিদআত সমূহকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, তাঁর শিক্ষার বিপক্ষ্যে স্বীয় বুযুর্গদের শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।

তাঁর আদেশের বিপক্ষ্যে স্বীয় হযরতদের কাশফকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) বিপক্ষে অন্যন্য দলীয় বা রাজনৈতিক ব্যক্তি বর্গকে অধিক মোহাব্বত এবং বিশ্বাস করেছে তাদের যবানে এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর কি করে আসবে? তৃতীয় প্রশ্ন দ্বীনের ব্যাপারে যে তোমার দ্বীন কি ছিল? উল্লেখ্য যে আরবী ভাষায় দ্বীন শব্দটি ব্যাপক অর্থ বোধক, মানুষ যে পদ্ধতি অবলম্ভনে জীবন যাপন করে তাকে তার দ্বীন বলা হয়। অতএব যে তার সারা জীবন ইসলামী ভাব ধারা অনুযায়ী যাপন করেছে, ইসলামী আদব অনুযায়ী জীবন চালিয়েছে, ইসলামী রিতী-নীতিতে জীবন চালিয়েছে, ইসলামী বিধি-বিধান মেনে চলেছে, ইসলামী নিদর্শন সমূহকে সম্মান করেছে, তার মুখদিয়ে সঠিক উত্তর বের হবে।

কিন্তু যে ইহুদী, নাসারা, হিন্দুদের রীতি নীতি, সংস্কৃতি পালন করেছে, তাদের পোশাক তাদের অভ্যাসকে নিজের পোশাক ও অভ্যাসে পরিনত করেছে তাদের আচার আচরণকে নিজের আচার আচরণে পরিনত করেছে, তাদের সংস্কৃতিকে পছন্দ করেছে, তাদের নির্দশন সমূহকে মহাব্বত করেছে, তাদের রাজনৈতিক, দলীয়, সামাজিক, সাহিত্যিক ব্যক্তি বর্গকে মহাব্বত করেছে, তাদের আইন কানুন মেনে চলেছে। তাদের মুখ দিয়ে কি করে বের হবে যে আমার দ্বীন ইসলাম? পরীক্ষা চাই বড় হোক আর ছোট তার স্বভাবই হল এই যে পরীক্ষার্তীর মনের মধ্যে চিন্তা ঢুকিয়ে দেয়া। তাই অধিকাংশ মানুষ পরীক্ষার পূর্বেই চিন্তিত থাকে। যে ব্যক্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি ব্যতীত হলে আসে তার কথা তো বাদই, বরং যে ব্যক্তি সারা বছর ব্যাপী প্রস্তুতি নিয়েছে সেও মাঝে মধ্যে এত চিন্তিত হয়ে যায়, যার ফলে ভাল করে মুখস্ত করা উত্তর ও ভুলে যায়। অথচ পৃথিবীর এপরীক্ষায় ফেল করার ভয় ব্যতীত আর কোন ভয় নেই।

গভীর ভাবে চিন্তা করে দেখুন কবরের অন্ধকার, একাকীত্ব, মানুষ নয় এমন সৃষ্টি, হাতে লোহার হাতুড়ী, জীবনের প্রথম এমন পরিস্থিতীর সম্মুক্ষীন হওয়া, ফেল হলে শাস্তির ভয়, সেখানে না পাওয়া যাবে কোন মুক্তি দাতা না থাকবে পালানোর মত কোন স্থান! অধিকাংশ মানুষের অবস্থা তো এই যে, রাতের বেলায় যদি কোন ব্যক্তি হটাৎ করে দরজায় নক করে তাহলে ভয়ে রক্ত শুকাতে শুরু করে, পুলিশের সাধারণ কোন সীপাহীকে নিজের দিকে আসতে দেখলে শরীর ঘামতে থাকে। বন্ধ ঘরে বসে থাকার মুহূর্তে হটাৎ কারেন্ট চলে গেলে অন্ধকারে কিছুক্ষন বসে থাকতে মানুষ ভয় পায়। সাহাবাগণ এ ভয়ে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করেছিল যে হে আল্লাহর রাসূল! যে ব্যক্তির মাথার উপর ফেরেশতা হাতুড়ী নিয়ে দাড়িয়ে থাকবে সে তো ভয়ে মাটির ভুত হয়ে যাবে কি করে সে উত্তর দিবে? তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তা’লা ঈমানদার লোকদেরকে কালেমায়ে তাওহীদের বরকতে দুনিয়া এবং আখেরাতে (কবরে) দৃঢ় পদ করবেন। (আহমদ)

আয়শা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এভয়ের কথা প্রকাশ করলেন যে, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমিতো একজন দূর্বল মহিলা কবরে আমার কি অবস্থা হবে? তিনি তাকেও একই কথা বললেন যে, আল্লাহ তা’লা ঈমানদার লোকদেরকে কালেমায়ে তাওহীদের বরকতে কবরের প্রশ্ন উত্তরের সময় দৃঢ় পদ রাখবেন। (বায্‌যার)

অন্যান্য সাহাবাগণের প্রশ্নের উত্তরে ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একথার ই পুনরাবৃত্তি করলেন যা থেকে নিম্নোক্ত বিষয় সমূহ স্পষ্ট হয়ঃ

(১) কবরের পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য সর্ব প্রথম ও প্রধান শর্ত হল আক্বীদা ও তাওহীদ বিত্তিক আমল। তাই সমস্ত মোসলমানের উচিত স্বিয় আক্বীদাকে বড় ও ছোট শিরক থেকে মুক্ত রাখা এবং এরই আলোকে অন্যন্য সমস্ত আমল করা।

(2) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) দিক নির্দেশনা থেকে একথা স্পষ্ট হয় যে আক্বীদা ও তাওহীদ ভিত্তিক আমল হওয়া সত্বে ও কবরের পরীক্ষায় দৃঢ় পদ থাকা শুধু আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহের মাধ্যমেই সম্ভব। তাই স্বীয় আক্বীদা ও আমল শুদ্ধ করার পর আল্লাহর নিকট তার অনুগ্রহ প্রাপ্তির জন্যও দূয়া করতে হবে।

قَالَا رَبَّنَا ظَلَمۡنَاۤ اَنۡفُسَنَا ٜ وَ اِنۡ لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَ تَرۡحَمۡنَا لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۲۳﴾

হে আমাদের প্রতি পালক! আমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছি, আপনি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন, তবে আমরা ক্ষতি গ্রস্তদের অন্তর ভুক্ত হয়ে যাব। (সূরা আ’রাফ-২৩)

উল্লেখিত দুইটি বিষয়ের আলোকে আমল করলে আশা করা যায় যে আল্লাহ তাঁর এ দূর্বল ও গোনাগার বান্দাদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন। নিশ্চয় তিনি দানশীল, অনুগ্রহ পরায়ন, ক্ষমতাবান, অত্যন্ত দয়ালু।

চতুর্থ প্রশ্নঃ কবরে উল্লেখিত তিনটি প্রশ্ন ব্যতীত আরো একটি প্রশ্ন করা হবে, এ প্রশ্ন সফল কাম সৌভাগ্যবান এবং ব্যর্থ দূর্ভাগ্য বানদের কেও করা হবে। সফল কামদেরকে ফেরেশতা জিজ্ঞেস করবে যে, এ প্রশ্ন সমূহের উত্তর তুমি কি ভাবে যেনেছ। সে বলবেঃ আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি, তার প্রতি ঈমান এনেছি, এবং তা সত্য বলে বিশ্বাস করেছি। (আহমদ, আবু দাউদ)

ব্যর্থ দূভাগ্য বানদেরকে ফেরেশতাগণ প্রশ্ন করবেন যে, لادروت لا تليت؟ তুমি শিখ নাই, জান নাই? অতঃপর তার উভয় কানের মাঝে হাতুড়ী দিয়ে আঘাত করা হবে ফলে সে করুন ভাবে কাঁদতে থাকবে, তার কান্যার আওয়াজ জ্বীন ও ইনসান ব্যতীত সকল সৃষ্টিজীব শোনতে পাবে। (বোখারী, মুসলিম)

এ চতুর্থ প্রশ্ন যা মোমেন ও কাফের সকলকে ই করা হবে এ থেকে নিম্নোক্ত বিষয় সমূহ স্পষ্ট হয়।

(১) কোর‘আন মাজীদই একমাত্র কিতাব যা আমাদেরকে কবরের তিনটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর প্রস্তুত করার জন্য যথেষ্ঠ হবে।

(২) কবরের পরীক্ষায় শুধু ঐ সমস্ত লোকই সফল কাম হবে যারা কোর‘আন মাজীদের প্রতি ঈমান এনেছে, তা তেলওয়াত করেছে, তা বুঝেছে এবং সে অনুযায়ী আমল করেছে।

(৩) মৃত্যুর পর কাফের ও মোশরেকদের প্রতি সর্বপ্রথম যে কঠোরতা আরোপ হবে তাহল এই যে কোর‘আন মাজীদ শিখার জন্য কেন চেষ্টা কর নাই?

(৪) কোর‘আন মাজীদ না পড়া বা না বোঝার অন্যায়ের কারণে অপরাধীর উভয় কাধের মাঝে হাতুড়ী দিয়ে আঘাত করা হবে। যার অর্থ দাড়ায় এই যে মস্তিস্ক আল্লাহ দান করেছেন কোর‘আন শিখা ও বুঝার জন্য, এ মস্তিস্ককে সঠিক ভাবে কাজে না লাগানোর কারণে কাফেরকে এ শাস্তি দেয়া হবে।

এ চারটি পয়েন্ট থেকে এ অনুমান করা দূরহ নয় যে প্রত্যেক মোসলমানের জন্য কোর‘আন মাজীদ পড়া, বুঝা, এবং সে অনুযায়ী আমল করা কত গুরত্ব পূর্ণ। কোর‘আন মাজীদের বরকত, সোয়াব অবশ্যই আছে, কিন্তু কোর‘আন অবর্তীণের মূল উদ্দেশ্য হল এই যে, তা মানুষের জন্য হেদায়েত সরুপ, যাতে করে তারা পথ ভ্রষ্টতা থেকে রক্ষা পায় এবং পরকালীন শাস্তি থেকে রক্ষা পায়। আল্লাহ তা’লা এরশাদ করেনঃ

فَمَنِ اتَّبَعَ ہُدَایَ فَلَا یَضِلُّ وَ لَا یَشۡقٰی ﴿۱۲۳﴾

অর্থঃ যে আমার পথ অনুসরণ করবে সে বিপথগামী হবে না ও দুঃখ্য কষ্ট পাবে না। (সূরা ত্বোয়-হা-১২৩)

অর্থাৎ পরকালে শাস্তির সম্মুখীন হবে না।

অন্যত্র আল্লাহ তা’লা এরশাদ করেনঃ

فَمَنۡ تَبِعَ ہُدَایَ فَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿۳۸﴾

অর্থঃ যে আমার উপদেশ অনুসরণ করবে বস্তুতঃ তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিত হবে না। (সূরা বাকারা -৩৮)

ভিন্ন অর্থে বলা যেতে পারে যে যারা কোর‘আন মাজীদ তেলওয়াত করবে না সে অনুযায়ী আমল করবে না, নিঃসন্দেহে সে পৃথিবীতে পথভ্রষ্ট হবে এবং পরকালে শাস্তির সম্মুখীন হবে। আর এ শাস্তির শুরু হবে কবর থেকে। এদিক থেকে উচিত ছিল আমাদের সর্বাধিক শ্রম, সর্বাধিক সময়, সর্বাধিক যোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা কোর‘আন শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যয় করা, কোর‘আন তেলওয়াত আমাদের প্রতিদিনের রুটিং ভিত্তিক কাজের একটি গুরত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে গণ্য হওয়া। কোর‘আন মাজীদ শ্রবণ আমাদের মন- মস্তিস্কের প্রশান্তির কারণ হওয়া।

সকাল-সন্ধা আমাদের বাসস্থান থেকে সুমধুর কন্ঠে তার তেলওয়াত ভেসে আসা। আমাদের সন্তানরা বালেগ হওয়ার পূর্বে কোর‘আন মাজীদের প্রতি এতটা আশেক হওয়া যে জীবন ভর তাঁর তেলওয়াত, অর্থ বুঝা, তা নিয়ে গবেষনা করা তাদের অজিফা হিসেবে গ্রহণ করা। কিন্তু আফসোস! আজ সবচেয়ে বেশি অমনযোগিতা, অবমূল্যায়ন, এ কোর‘আন মাজীদেরই এবং তা প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা পৃথিবী, কবর, পরকালে আমাদের সফলতার চাবিকাঠি। এ বাস্তবতা কতইনা বেদনা দায়ক যে, আমরা প্রতিদিন সংবাদ পত্র পাঠের জন্য ঘন্টা দুইঘন্টা সময় পাই, কিন্ত কোর‘আন মাজীদ শিখা, বুঝা, অনুধাবনের জন্য পোনের বিশ মিনিট ও মিলে না।

আমাদের প্রিয় জন্মভূমির শতকরা ৯০ জন লোকই পরিবার-পরিজনকে নিয়ে টিভির সামনে বসে প্রিয় জীবনের মূল্যবান সময় বরবাদ করে কিন্তু স্বীয় পরিবার-পরিজন নিয়ে বসে কোর‘আন মাজীদ শিখার শিখানোর জন্য সামান্য সময় ও জোটেনা। বাচ্চা চার-পাঁচ বৎসরে উপনিত হলেই পিতা-মাতা, তাকে দুনিয়াবী শিক্ষা দীক্ষা, দেয়ার ব্যাপারে চিন্তিত হয়ে যায়, যে তাকে কোন স্কুলে ভর্তী করানো যায়, ভবিষ্যতে তাকে কি বানানো যায়। অথচ কোর‘আন শিখানোর ব্যাপারে মোটে ও চিন্তা আসে না। দুনিয়াবী শিক্ষা-দীক্ষার ব্যাপারে পিতা-মাতা পানির মত টাকা-পয়সা খরচ করে অথচ কোর‘আন শিখার ব্যাপারে এর দশ ভাগের এক ভাগ খরচ করাও পিতা- মাতার জন্য কষ্ট কর হয়ে যায়। ফলে দেখা যায় যে বিশ-পঁচিশ বছরের একটি ছেলের নিকট চাকুরির ব্যাপারে তার নিকট তিন চার রকমের ডিগ্রী থাকে, কিন্ত পঞ্চাশ-ষাট বছর বয়স হওয়া সত্ত্বেও কোর‘আন মাজীদ একবার খতম করার মত সৌভাগ্য হয়না।

কোর‘আন মাজীদ শিক্ষার ব্যাপারে ইসলামী প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের (লেখকের দেশ) সার্বিক অবস্থাও দুঃখ জনক। কোন মহল্লা, বাজার, মার্কেট, পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্রে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কোন বাসে আরোহণ করলে চতুর্দিক থেকে লজ্জাকর গান, কান ফাটা মিউজিকের আওয়াজ শোনা যায়। এমনকি আযান, নামায, জু‘মার খোতবার সময়ও আমাদের মোসলমান ভায়েরা তা মজা করে শোনা থেকে বঞ্চিত থাকতে অপ্রস্তুত। এর বিপরীতে কতজন দোকান দার, কয়টি মহল্লা বা কয়টি বাস এমন পাওয়া যাবে যেখানে গান বাজানোর পরিবর্তে কোর’আন কারীম তেলওয়াত হচ্ছে! হয়ত বা হাজারে একটি। লা হওলা ওলা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়ুল আযীম। কোর’আন মাজীদের শিক্ষা থেকে এ মারাত্বক গাফিলতি এবং অমনযোগীতার একটি কারণ এই হতে পারে যে কোর‘আন মাজীদের গুরত্ব সম্পর্কে অজ্ঞতা, আমাদের এধারণাই নেই যে পৃথিবীতে আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক, সর্ব প্রকার চিন্তা, দুঃখ্য, অসুস্থতার চিকিৎসা এ কোর’আন মাজীদে রয়েছে।

দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার পর আলমে বারযাখে (কবরে) এ কোর‘আন মাজীদই আমাদের নাজাতের বাহন হবে। এমনি ভাবে আলমে বারযাখের পর, পরকালে এ কোর‘আন মাজীদ ই আমাদের সুপারীশ কারী হবে। আমাদের এ বিষয়ে কোন অনুভুতিই নেই যে আল্লাহ তা’লা কোর‘আন মাজীদকে আমাদের জন্য কত বড় নে’মত হিসেবে দান করেছেন। কোর‘আন মাজীদ থেকে হেদায়েত প্রাপ্ত হওয়ার পরিবর্তে আমরা একে শুধু খায়র ও বরকতের কিতাব মনে করে বিয়ে-শাদীর ক্ষেত্রে উপহার হিসেবে পেশ করা, মেয়েকে বিদায় দেয়ার সময় তাঁর ছায়া দিয়ে তাকে অতিক্রম করানো, ঝগরা-ঝাটির সময় তা নিয়ে কসম করা বা তাকে সাক্ষী হিসেবে ব্যবহার করা, জ্বিন তাড়ানোর ব্যাপারে তাঁ দিয়ে তাবীজ বানানো। বিপদের সময় এর মাধ্যমে শুভ-অশুভ নির্ধারণ। মৃতদেরকে ইসলামে সোয়াবের উদ্দেশ্যে তা পাঠ করিয়ে নেয়া ইত্যাদিকে আমরা ধরে নিয়েছি যে এই বুঝি কোর‘আন অবতীর্নের উদ্দেশ্য। অথচ তা হল এমন যে কোন পাগলের হাতে হিরা, জাওহরের বহুত বড় ভান্ডার থাকা এবং সে তা পাথরের টুকরা মনে করে উদ্দেশ্য হিন ভাবে নষ্ট করার মত।

কোর‘আন মাজীদ থেকে দূরে থাকা এবং তার প্রতি অমনযোগীতার একটি কারণ এও যে একথা মনে করা যে, কোর‘আন মাজিদ বহুত কঠিন গ্রন্থ। এটা পড়া এবং বুঝা শুধু আলেম ওলামাদের কাজ, এটা সবার বুঝার বিষয় নয়। যদি এধারনা সঠিক হত তাহলে কবরে প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারা প্রত্যেক লোকের উপর এ কঠোরতা কেন করা হয় যে, তুমি কি শিখ নাই এবং পড় নাই? আল্লাহ তা’লা কোর‘আন মাজীদে এ ভ্রান্তির অপনোদন কল্পে বলেন যে,

وَ لَقَدۡ یَسَّرۡنَا الۡقُرۡاٰنَ لِلذِّکۡرِ فَہَلۡ مِنۡ مُّدَّکِرٍ ﴿۱۷﴾

অর্থঃ শিক্ষা গ্রহণের জন্য এ কোর‘আনকে আমি তোমাদের জন্য সহজ করেছি, আছে কি কেউ যে এখান থেকে শিক্ষা নিবে। (সূরা কামার -১৭)

আমরা একথা মানি যে সত্যই কোর‘আন মাজীদে এমন কিছু স্থান আছে যা সকলের জন্য বুঝা কষ্ট কর। কিন্তু প্রশ্ন হল যে, একারণে কি পূর্ণ কোর‘আন পড়া থেকে বিরত থাকা ঠিক হবে? যদি কোন ছাত্রের কেমিষ্ট্রি বা ফিজিক্সের কোন ফরমূলা বুঝতে কষ্ট হয় তাহলে তো তার পিতা-মাতা একথা বলেনা যে বাবা এটা বাদ দাও, এটা তোমার বুঝার বিষয় নয়। বরং ছেলের জন্য উচু মানের কোন টিউটর ঠিক করে দেয়া হয়, যাতে করে ছেলে পরীক্ষায় সফল হতে পারে দুনিয়াবী ব্যাপারে আমাদের মাথা এত কাজ করে কিন্ত দ্বীনের ব্যাপার হলে আমরা কেন এত অবুঝ হয়ে যাই। যদি কোর‘আন মাজিদে কোন কঠিন স্থান চলে আসে তাহলে তা বুঝার চেষ্টা না করে দ্রুত তা পড়া ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অথচ উচিত ছিল এই যে গভীর ভাবে তা অধ্যয়ন করা, এর পর যদি কোন কিছু বুঝতে সমস্যা হয়, তাহলে কোন ভাল আলেমের কাছ থেকে দিক নির্দেশনা নেয়া এবং কবরের পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার ব্যাপারে সর্বাত্তক সাধনা করা এমন না করা যে প্রথম দিনই না পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে পরীক্ষায় ফেলের ব্যাপারে শীল মোহর মেরে বসে না থাকা।

কোর‘আন মাজীদ বুঝা থেকে দূরে থাকার আরো একটি কারণ এও হতে পারে যে কিছু কিছু মানুষ অধিক জ্ঞান অর্জন করাকে ধ্বংশের কারণ মনে করে, তাদের ধারনা যে ইবলীস ও বড় পন্ডিত ছিল এবং স্বীয় পান্ডিত্ত্বের কারণেই পথ ভ্রষ্ট হয়েছে। সুতরাং যতটুকু জানা আছে এর উপর আমল করাই যথেষ্ঠ। এ ভ্রান্তিও শয়তানের একটি কু প্রবঞ্চনা। ইবলীস তার পান্ডিত্ত্বের কারণে নয় বরং সে পথভ্রষ্ট হয়েছিল তার অহংকারের কারণে। এজন্য দেখুন সূরা বাক্বারার ৩৪নং আয়াত। জ্ঞানীদের প্রশংসায় আল্লাহ তা’লা বলেনঃ

اِنَّمَا یَخۡشَی اللّٰہَ مِنۡ عِبَادِہِ الۡعُلَمٰٓؤُا

অর্থঃ “নিশ্চয় আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে আলেমগণই আল্লাহকে ভয় করে।” (সূরা ফাতের-২৮)

অন্যত্র আল্লাহ্ তা’লা এরশাদ করেনঃ

قُلۡ ہَلۡ یَسۡتَوِی الَّذِیۡنَ یَعۡلَمُوۡنَ وَ الَّذِیۡنَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ

অর্থঃ “বলুন যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান?” (সূরা যুমার-৯)

চিন্তার বিষয় যে কোর‘আন কারীমে আল্লাহ তা’লা যার প্রশংসা করেছেন তা মানুষের জন্য মুক্তির মাধ্যম না ধ্বংশের? কোন কোন মানুষ বয়সের কারণে কোর’আন মাজীদ পড়তে লজ্জা বোধ করে মূলত এটা ও একটি খারাপ দিক, কেননা দুনিয়াবী ব্যাপারে প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যু পর্যন্ত তার উন্নতি কল্পে সাধনা চালায় অথচ এটাকে সে বেমানান বলে মনে করে না। কিন্ত দ্বীনের ব্যাপার হলে এ সমস্ত চিন্তা-ভাবনা কি করে চলে আসে? সাহাবাগনের মধ্যে কেউ পঞ্চাশ বছর বয়সে মোসল মান হয়েছে, কেউ ষাট বছর বয়সে, এর পর তারা কোর‘আন মাজীদ শিখেছে, কেউ কেউ তা মুখস্ত ও করেছে। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেনঃ দ্বীনি এলম অর্জন করা প্রত্যেক মোসলমানের উপর ফরজ। (ত্বাবারানী)

এজন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন বয়স নির্ধারণ করেন নাই। কোর‘আন মাজীদ শিখা থেকে মানুষের দুরে থাকার আরো একটি কারণ হল এই যে, বিভিন্ন ধরনের পাঁচ সূরা বিভিন্ন ওযিফার বই, যা মানুষ নিত্য দিনের রুটিন ভীত্তিক কাজে পরিনত করেছে, মূলত তা করা দরকার ছিল কোর‘আন মাজীদের ব্যাপারে। আর যারা এগুলি পাঠ করে তারা এর পরে কোর‘আন মাজীদ পাঠের আর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনা। কোর‘আন মাজীদের কিছু কিছু সূরা এবং আয়াতের অবশ্যই ফযিলত আছে, কিন্তু এর অর্থ এ নয় যে শুধু এসমস্ত সূরা সমূহকে যথেষ্ঠ মনে করে বাকী পুরা কোর‘আন তেলওয়াত থেকে বিরত থাকবে। বরং এর অর্থ হল এই যে, কোর‘আন মাজীদ প্রতিদিন তেলওয়াতের পর যে অধিক সোয়াব অর্জন করতে চাইবে সে এ সূরা সমূহ তেলওয়াত করবে।

এমনি ভাবে কিছু কিছু দ্বীনি সংগঠন নিজেদের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে তাদের সদশ্যদের জন্য নির্দিষ্ট সিলেবাস তৈরী করে দেয় যদিও তা কোন দোষনীয় ব্যাপার নয়, কিন্ত এ সিলেবাসকে এত গুরত্ব দেয়া যে দাওয়াতের মূল ভীত্তি এরই উপর তা নিঃসন্দেহে দোষনীয় ব্যাপার। কোর‘আন মাজীদের বাছাইকৃত কতগুলী আয়াত তেলওয়াত করা মোটেও কোর‘আন তেলওয়াতের উদ্দেশ্য নয়। বরং মূল উদ্দেশ্য হল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরা কোর‘আন পাঠ করা, এর বিধি-বিধান সম্পর্কে অবগত হওয়া এবং সে অনুযায়ী আমল করা। সাধারণ মানুষকে কোর‘আন মাজীদ শিখা থেকে দূরে রাখার ব্যাপারে সবচেয়ে বেশী কাজ করেছে সূফী বাদীদের আকীদা। তাদের মতে কোর‘আন মাজীদের একটি জাহেরী অর্থ আর একটি বাতেনী, তাদের মতে কোর‘আনের জাহেরী অর্থের চেয়ে বাতেনী অর্থই উত্তম তবে তা পড়ার মাধ্যমে হাসীল হয়না বরং তা সিনা বা সিনায় হাসীল হয়ে থাকে।

সূফীদের নিকট একথা অত্যন্ত প্রসিদ্ধ যে “ইলম দারসী না বুধ দারসিনা বুদ” ইলম পড়ার মাধ্যমে হাসীল হয়না বরং তা হয়ে থাকে সিনা বাসিনা (অন্তর থেকে অন্তরে) কোন কোন সূফী আরো এক কদম অগ্রসর হয়ে বলেছঃ “আল ইলমু হিজাবুল আকবার”কোর’আনী ইলম ত্বরীকতের রাস্তায় সবচেয়ে বড় বাধা। চিন্তা করুন যে দলের মূল ভীত্তি কোর‘আন মাজীদ থেকে দূরে রাখার উপর ঐ দলে কোর‘আন মাজীদে হাত রাখার মত এত বড় অন্যায় কে করবে। কোর’আন মাজীদের ব্যাপারে আমাদের এ গাফিলতি ও অমনযোগীতা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য ক্ষতী বয়ে আনবে এবং আমাদের লজ্জার কারণ হবে। এ থেকে বাঁচার মত রাস্তা শুধু এই যে আমরা যত দ্রুত সম্ভব কোর‘আন পড়া শুরু করব, অতীত জীবনে কোর‘আন মাজীদের প্রতি গাফিলতি এবং অমনযোগীতার ক্ষতী পুরনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা, কোর‘আন মাজীদ আমাদেরকে শুধু এ দুনিয়াতেই হেদায়েত, কল্যান ও বরকতে আলোকময় করবে না বরং কবরে ও দৃঢ়পদ থাকা ও পরকালে মুক্তির পথ সুগম করবে। ইনশাআল্লাহ!

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন