মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
নিশ্চয় মৃত্যু একটি করুন ঘটনা, ঘরের কোন এক ব্যক্তি মারা গেলে হটাৎ করে জীবনের অনেক কার্যক্রম থেমে যায়। তার রেখে যাওয়া কত কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায়, কত স্বপ্ন বিনষ্ট হয়ে যায়। কত নাবালগ বাচ্চা এতিম হয়ে যায়, কত বৃদ্ধ পিতা-মাতা নিরুপায় হয়ে যায়, কত সোহাগিনী তার সোহাগ তেকে বঞ্চিত হয়ে যায়, কত বোন তার ভায়ের আদর থেকে বঞ্চিত হয়ে যায়। এ অবস্থায় সাধারণত শোকাহতদের মাঝে দুইটি প্রতিকৃয়া দেখা যায়।
১-মৃত ব্যক্তিকে হারানোর চিন্তাঃ এটা মানুষের মানবিক স্বভাব গত ব্যাপার, ইসলামী সীমারেখার ভিতরে থেকে তার এ শোক প্রকাশ করা জায়েজ।
২-মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া কাজ কর্মঃ ঘরের কোন গুরুত্ব পূর্ণ ব্যক্তি মৃত্যু বরণ করলে পরিবারের বাকী লোকদের জীবন যাপনে ভিগ্ন ঘটে, তার স্থলাভিসিক্ত নির্নিত হওয়া, ওয়ারিশদের ধন সম্পদ বন্টন করা, ইত্যাদি এমন এক বিষয় যে মানুষকে তা করতেই হয়। ইসলামের সীমারেখার মধ্যে থেকে দুনিয়াবী এ সমস্ত বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করা এবং তার ব্যবস্থাপনা করা জায়েজ এবং তা অপরি হার্য। কিন্ত দুঃখ্য জনক বিষয় হল এই যে, মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশরা ইসলামের সীমারেখা পার হয়ে তাদের মন মস্তিস্ক এমন হয়ে যায় যে, মৃত্যুর মূল কথা তাদের স্মরণে থাকে না। হায়াত ও মওতের এ সংগ্রাম নিয়ে তারা এত ব্যস্ত থাকে যে, তারা ভাবার সুযোগ পায়না যে এদুইয়ের বাহিরে আর কোন কিছু আছে কি না? অথচ ওয়ারিশদের জন্য মূল পয়গাম হল এই যে, “আজ তার আর আগামী দিন তোমার পালা।” ফেরেশতা সকলের পিছনেই অপেক্ষা করছে।
আমাদের পূর্বসূরীদের মধ্যে এ ধরনের কত উদাহরণ অতিবাহিত হয়েছে যে, সুস্থ, ভাল লোক অভ্যাস মোতাবেক রাতে বিছানায় শুয়েছে, অথচ সকালে আর উঠতে পারে নাই কত লোক বাড়ি থেকে হজ্ব ওমরার উদ্যেশ্যে বের হয়, অথচ আর বাড়িতে ফিরে আসে না। কত বর যাত্রী সানাই নিয়ে বের হয়, অথচ ফিরার মুহূর্তে চলে তার মাতাম। কত মানুষ তার নিত্য নৈমত্বিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে আর সে মুহূর্তে তার ডাক চলে আসে, তখন সে ভাবেই সে চলে যায়, তার সমস্ত কাজ এলমেল ভাবে থেকেই যায়। জিন্দেগি আর মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য তো যেমন “আজ ও কাল” বলার মত। এ সত্যতাকে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কত সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন।
اليوم عمل ولا حساب و غدا حساب ولا عمل
অর্থঃ “আজ আমলের সময় হিসাবের সময় নয়, আগামি দিন হিসাবের দিন আমলের নয়।” (বোখারী)
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবদুল্লা বিন ওমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমাকে) উপদেশ দিতে গিয়ে বলেনঃ “আবদুল্লা! দুনিয়াতে মুসাফির বা পথিকের ন্যায় সময় কাটাও।” তাই আবদুল্লাবিন ওমার (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) বলতেনঃ “হে মানব মন্ডলী! যদি সন্ধা হয়ে যায় তাহলে সকাল পর্যন্ত তুমি বেচে থাকবে তা ভাবিওনা। আর যদি সকাল হয়ে যায় তাহলে সন্ধা পর্যন্ত তুমি বেচে থাকবে তাও ভাবিও না। সুস্থতাকে অসুস্থতার পূর্বে, জীবনকে মৃত্যুর পূর্বে, গনীমত মনে কর। (বোখারী)
আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেনঃ একদা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি চাটায়ের উপর খালী শরীরে শুয়ে ছিলেন এতে তাঁর শরীরে চাটায়ের দাগ পরে গেছে, তা দেখে আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! যদি আপনি বলতেন তাহলে আমরা আপনার জন্য ভাল বিছানার ব্যবস্থা করে দিতাম।” রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ “দুনিয়ার সাথে আমার কি সম্পর্ক? দুনিয়ার সাথে তো আমার সম্পর্ক এতটুক যেমন কোন পথিক পথ চলার সময় কোন একটি গাছের নিচে শুয়ে আরাম করে তার ক্লান্তি দূর করে, আবার ক্লান্তি কেটে গেলে চলতে শুরু করে, আর গাছ তার যথাস্থানেই থেকে যায়। (আহমদ, তিরমিযী, ইবনে মাযাহ)
দুনিয়াতে মানুষের ক্ষনস্থায়ী জিন্দিগীর কথা একটি উদাহরণের মাধ্যমে সুন্দর করে, অনুভব করা সম্ভব হবে এ দুনিয়া একটি পান্থ শালার ন্যায়, যেখানে পথিকরা কিছু সময়ের জন্য বসে আরাম করে, অতঃপর সামনে চলতে শুরু করে। পান্থশালায় কিছুক্ষনের জন্য আরাম গ্রহণ কারী মুসাফির এখানে জমিন ক্রয় করা, ব্যবসা করা, বাড়ি করা ইত্যাদি বিষয়ে কখনো চিন্তা করবে না। বরং লোভ হিন ব্যক্তি একথা চিন্তা করে যে এখানে একটু আরাম করতে পারলে ই হল। ক্ষনস্থায়ী জীবনের জন্য মানুষ কি ধোকায় পরে আছে, মাস বছর অতিক্রম হচ্ছে আর সে ভাবছে যে আমি যুবক হচ্ছি। অথচ প্রতি মুহূর্তে সে মৃত্যুর দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
হে গাফেল! ঘড়ির ঘন্টা তোমাকে সতর্ক করছে,
যে তোমার জীবনের একটি ঘন্টা কমে গেছে।
যত সময় অতিক্রম করছে মনে করছে যে সে যুবক হচ্ছে, নিজের কামনা বাসনাকে পুরণ করার জন্য দিন রাতকে একাকার করে দিচ্ছে, জীবন খুব সুন্দর ও সুখময় মনে হয়। মানুষ ১৮/২০ ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করে, রাত দিন কাজ করে করে চুল সাদা হয়ে যায়, তখনো মানুষ চিন্তা করে যে আমি এখনো যুবকই আছি সময়ের স্রোত সফলতা, ব্যর্থতা, সুখ, দুখ, নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে চলতে থাকে, আস্তে আস্তে মানুষ তার শক্তির অবনতি অনুভব করে, বার্ধক্য মৃত্যুর দরজায় নক করে, কিন্তু মৃত্যু থেকে গাফেল মানুষ জীবনের ক্রান্তি লগ্নে এসে ও তীব্রতা নিয়েই থাকে, আর চিন্তা করে যে এখনো সময় অনেক বাকী। দীর্ঘ কামনা-বাসনা, বিভিন্ন পদ লাভের আকাঙ্খা করতেই থাকে। ডলার, রিয়াল, দীনার, টাকা, রুপিয়া, প্লট, ফ্লাট, প্রাসাদ ইত্যাদির চক্করে জীবন চলতে থাকে, উচ্চ ভিলাস পূর্ণ জীবন যাপনের নেশায় রাত দিন অতিক্রম হতে থাকে, ডানে, বামে, সামনে, পিছনে, আত্মীয়- স্বজন মৃত্যু বরণ করতে থাকে, মানুষ বাহ্যিক শোক পালন করে, আবার জীবনের পিছনে ছুটতে শুরু করে, তার একথা ভাবার সুযোগই হয়না যে মৃত্যুর ফেরেশতা আমার জন্যও কোন সংবাদ রেখে গেছে। লিখিত বানী সামনেই থাকে কিন্ত দুনিয়া হাছিলে পাগল মনে তা পড়ার সুযোগ ই হয়না।
বলা হয়ে থাকে যে, কোন এক ব্যক্তির মালাকুল মাওতের সাথে বন্ধুত্ব হয়ে গিয়ে ছিল। তখন সে মালাকুল মাওতকে বললঃ তুমি আমার নিকট আসার এক বছর পূর্বে আমাকে জানাবে, যে এত তারিখে তুমি আমার নিকট আসতেছ, যাতে করে আমি মৃত্যুর প্রস্তুতি নিতে পারি, মালাকুল মাওত তাকে ওয়াদা দিল বটে কিন্তু হটাৎ করে এক দিন শাহী ফরমান নিয়ে তার নিকট উপস্থিত হয়ে গেল, মালাকুল মাওতকে হটাৎ সামনে দেখে সে আশ্চার্য হয়ে গিয়ে বললঃ তুমিতো একবছর পূর্বে আমার নিকট আসার ব্যাপারে ওয়াদা করে ছিলা, কিন্তু এখন হটাৎ করে চলে আসলা? মালাকুল মওত উত্তরে বললঃ এবছরের মাঝে আমি তোমার ওমক ওমক পরিচিত ব্যক্তি এবং ওমক ওমক আত্মীয় ও ওমক ওমক বন্ধুর নিকট এসে ছিলাম এবং তার মাধ্যমে তোমাকে বুঝাতে চেয়েছিলাম যে তুমি ও প্রস্তুতি নিয়ে থাক, তোমার নিকট ও আমি আসব। আমি ভেবে ছিলাম যে তুমি যথেষ্ঠ বুদ্ধিমান অতএব তুমি ইশারায় তা বুঝে নিবে, কিন্ত তুমি এত বড় বোকা ছিলে যে তা বুঝতে পার নাই, তাহলে এখন আমার কি করার আছে? যখন মালাকুল মাওত মাথার নিকট এসে দাড়ায় তখন মানুষ চিন্তা করে যে, ৬০/৭০ বছরের জীবন চোখ ফিরাতেই শেষ হয়ে গেল, শৈসব তো গতকালই অতিক্রম করলাম, যৌবন এক সুন্দর স্বপ্নের মত চলে গেল, কি পেলাম আর কি হারালাম তার হিসাব নিকাসের সুযোগই হয় নাই... এত দীর্ঘ অথচ এত সংক্ষিপ্ত জীবন...! তখন মানুষ আফসোসের সাথে বলবেঃ হায়...চেয়ে নিয়ে ছিলাম চার দিনের জীবন,
তার দুদিন কেটেছে আশা আকাঙ্খায়
আর দু দিন কেটেছে অপেক্ষায়।
হায় আমাদের সামনে, পিছনে, ঘটে যাওয়া মৃত্যুর ঘটনাবলী থেকে যদি আমরা নিজের মৃত্যুর কথা স্মরনে নিতাম!
প্রিয় পাঠক! এটা আল্লাহ্ তা’লার অপরিসীম দয়া ও অনুগ্রহ যে তিনি আমার মত এক সাধারন, গোনাগার, জ্ঞান হিন, আমল হিন, মানুষকে “তাফহিমুস্ সুন্নাহ” নামে ১৭ টি গ্রন্থ লিখার তাওফীক দান করেছেন। এ বিষয়ে আমি যতই আল্লাহর প্রশংসা করিনা কেন, তা হবে প্রয়োজনের তুলনায় কম। এ কল্যাণ মুলক কাজে, আমি আমার একনিষ্ঠ সাথী বর্গের ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, যে তারা কখনো আমাকে আমার এ একনিষ্ঠ কাজে সহযোগিতা করা থেকে বঞ্চিত করে নাই। আল্লাহ তা’লার নিকট দুয়া করি যেন তিনি এ কল্যাণ মুলক কাজে অংশ গ্রহণ কারী, সকল সাথীদের কে, দুনিয়া ও আখেরাতে ইজ্জত দান করেন। আমীন!
পূর্বের ন্যায় সহীহ হাদীসের আলোকে তা লিখার চেষ্টা করা হয়েছে, এর পরও যদি কোথাও কোন ভুল জ্ঞানীদের চোখে ধরা পরে তাহলে তারা অনুগ্রহ পূর্বক অবগত করাবেন, যাতে করে আমি তার কৃতজ্ঞতা পরায়ন হতে পারি। পরবর্তী গ্রন্থ হবে “আলামতে কিয়মত কা বায়ান।” ইনশা আল্লাহ!
তাফহিমুস্সুন্নার এখনো প্রায় অর্ধেক কাজ বাকী আছে, কতটুক পূর্ণতা পাবে, আর কতটুকু না পাবে তার সঠিক জ্ঞান আল্লাহর নিকট, যদি আল্লাহ্ তাঁর দয়া ও অনুগ্রহে বাকী কাজ টুকু পূর্ণ করার তাওফীক এ গোনা গারকে দেন তাহলে তা হবে তাঁর একান্ত করুনা ও অতুলনীয় ক্ষমতা বলে,
وما ذلك على الله بعزيز
অর্থঃ আর তা আল্লাহর জন্য কঠিন কিছু নয়। প্রিয় পাঠক বর্গের নিকট একনিষ্ঠ দুয়ার দরখাস্ত থাকল।
الحمد لله الذي بنعمته تتم الصالحات و ألف الف صلاة و سلام على افضل البريات و على اله و أصحابه اجمعين برحمتك يا ارحم الرحمين !؟
মোহাম্মদ ইকবাল কীলানী (আফাল্লাহু আনহু)।
রিয়াদ, সৌদী আরব।
৪ঠা রবিউল আওয়াল ১৪২২হিঃ।
২৫ জুন ২০০১ ইং।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/298/12
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।