মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মাসআলা- ১৩ মৃত্যুর সময় মোমেন ব্যক্তিকে নিম্ন লিখিত দশটি বা এর মধ্য থেকে কিছু সন্মানী প্রদান করা হয়।
১ - ফেরেশতা আসার পর, রুহ কবজ করার পূর্বে, “আসসালামু আলাইকুম” বলে।
২ - মোমেন ব্যক্তির রুহ কবজ করার জন্য সূর্যের ন্যায় উজ্জল চেহারা সম্পন্য ফেরেশতা আসে।
৩ - মোমেন ব্যক্তির রুহ নেয়ার জন্য ফেরেশতা জান্নাত থেকে সাদা রেশমী কাফন সাথে নিয়ে আসে।
৪ - রুহকে সুগন্ধিময় করার জন্য ফেরেশতা জান্নাত থেকে সুগন্ধিও সাথে নিয়ে আসে।
৫ - মোমেন ব্যক্তির রুহ কবজ করার সময় ফেরেশতা মোমেন ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তা’লার পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টির সুসংবাদ দেয়।
৬ - মোমেন ব্যক্তির রুহ শরীর থেকে বের করার পর তা থেকে পৃথিবীতে বিদ্ধমান উন্নত সুগন্ধির ন্যায় সুঘ্রাণ বের হয়।
৭ - মোমেন ব্যক্তির রুহের জন্য আকাশ ও যমিনের মাঝে বিদ্ধমান সমস্ত ফেরেশতা রহমতের জন্য দূয়া করে।
৮ - মোমেন ব্যক্তির রুহ আকাশে বহন কারী ফেরেশতাগণ আকাশের দরজায় মোমেন ব্যক্তির পরিচয় পেশ করে, তখন দরজায় অবস্থান কারী ফেরেশতা তাকে সু স্বাগতম জানিয়ে আকাশের দরজা খুলে দেয়।
৯ - প্রত্যেক আকাশের ফেরেশতাগণ মোমেন ব্যক্তির রুহকে অভ্যর্থনা জানাতে গিয়ে পরবর্তী আকাশ পর্যন্ত তার সাথে যায়।
১০ - সপ্তম আকাশে পৌঁছার পর মোমেন ব্যক্তির রুহ আল্লাহর নির্দেশে ইল্লিয়্যিনে ডুকিয়ে পুনরায় তা কবরে পাঠানো হয়।
নোটঃ উল্লেখিত বিশেষ সম্মানীর প্রমাণ পরবর্তী পৃষ্ঠা সমূহে মাসায়েলের সাথে উল্লেখিত হাদীস সমূহে দেখুন।
মাসআলা- ১৪ রুহ কবজ করার পূর্বে ফেরেশতা মোমেন ব্যক্তিকে আল্লাহর পক্ষ থেকে সালাম পৌঁছায়ঃ
অর্থঃ ফেরেশ্তাগণ যাদের মৃত্যু ঘটায় পবিত্র থাকা অবস্থায় তাঁরা তাদেরকে বলবে তোমাদের প্রতি সালাম! (সূরা নাহাল -৩২)
تَحِیَّتُہُمۡ یَوۡمَ یَلۡقَوۡنَہٗ سَلٰمٌ
অর্থঃ যেদিন তারা (মোমেনরা) আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে, সেদিন তাদের অভিবাদন হবে ‘সালাম’। (সূরা আহযাব-৪৪)
মাসআলা-১৫ মোমেন ব্যক্তির রূহ কবজ করার পূর্বে ফেরেশতা তাকে আল্লাহর সন্তুষ্টির সু সংবাদ দেয়, যার ফলে মোমেনের আত্মা আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের জন্য উদগ্রীব থাকেঃ
: قال رر من احب لقاء الله احب الله لقاءه ومن ، عن النبي عن عبادة ابن الشاير كرة لقاء الله كره الله لقاءه )) قالت عائشة رضي الله عنها او بغض ازواجه انا لنكرة الموت قال ر ( ليس ذلك ولكن المؤمن اذا حضرة الموت بشر برضوان الله و كرامته فليس شئ أحب إليه مما أمامه فأحب لقاء الله و احب الله لقاء هو ان الكافر اذا خضر بشر بعذاب الله وعقوبته فليس شيء اكره اليه مما أمامه فكره لقاء الله و كره الله لقاءه )) رواه البخار
অর্থঃ উবাদা বিন সামেত (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করাকে পছন্দ করে আল্লাহ ও তার সাথে সাক্ষাত করাকে পছন্দ করেন, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করাকে অপছন্দ করে আল্লাহও তার সাথে সাক্ষাত করাকে অপছন্দ করেন। আয়শা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) বা রাসূলের কোন এক স্ত্রী বললেনঃ অবশ্যই আমরা মৃত্যুকে অপছন্দ করি, তিনি বললেনঃ “এটা উদ্দেশ্য নয়, বরং মোমেন ব্যক্তি যখন মৃত্যু মুখে পতিত হয়, তখন তাকে তার প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং দয়া সম্পর্কে সু সংবাদ দেয়া হয়। তখন মোমেনের জন্য অপেক্ষমান প্রতি দান সমূহ থেকে আর কোন কিছুই তার নিকট অধিক পছন্দনীয় থাকে না। তখন সে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত পাওয়াকে অধিক পছন্দ করে। আর আল্লাহ ও তার সাথে সাক্ষাত করাকে অধিক পছন্দ করেন। পক্ষান্তরে কাফের যখন মৃত্যু মুখে পতিত হয়। তখন তাকে আল্লাহর আযাবের সু সংবাদ দেয়া হয়। তখন তার জন্য অপেক্ষমান শাস্তির চেয়ে অধিক অপছন্দনীয় আর কিছুই থাকে না। তখন সে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত পাওয়াকে অধিক অপছন্দ করে। আর আল্লাহ ও তার সাথে সাক্ষাত করাকে অধিক অপছন্দ করেন। (বোখারী)[1]
মাসআলা- ১৬ মোমেন ব্যক্তির রুহ কবজ করার জন্য সূর্যের ন্যায় উজ্জল চেহারা সম্পন্ন ফেরেশতা আসে।
মাসআলা- ১৭ মোমেন ব্যক্তির রুহ কবজ করার জন্য ফেরেশতা জান্নাত থেকে কাফন ও সুগন্ধি নিয়ে আসে।
মাসআলা-১৮ মোমেন ব্যক্তির রুহ কবজ করার পূর্বে ফেরেশতা মোমেন ব্যক্তিকে সম্বোধন করে বলে হে পবিত্র আত্মা আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টির প্রতি অগ্রসর হও।
মাসআলা- ১৯ মোমেন ব্যক্তির রুহ শরীর থেকে এত দ্রুত বের হয় যেমন পানির পাত্র থেকে পানি দ্রুত বের হয়।
মাসআলা-২০ মোমেন ব্যক্তির রুহ থেকে পৃথিবীতে বিদ্ধমান উন্নত সুগন্ধির ন্যায় সুঘ্রাণ আসতে থাকে।
মাসআলা-২১ মোমেন ব্যক্তির রুহ আসমানে বহন কারী ফেরেশতা প্রত্যেক আকাশের দরজায় দন্ডয়মান ফেরেশতার নিকট পরিচয় করিয়ে দেয়। তখন সেখানে দন্ডয়মান ফেরেশতা তাকে সু স্বাগতম জানিয়ে আকাশের দরজা খুলে দেয়।
মাসআলা-২২ মোমেন ব্যক্তির রুহকে সু স্বাগতম জানাতে প্রত্যেক আকাশের ফেরেশতা পরবর্তী আকাশ পর্যন্ত যায়।
মাসআলা-২৩ সপ্তম আকাশে পৌঁছার পর আল্লাহর নির্দেশে মোমেন ব্যক্তির রুহ ইল্লিয়ীনে প্রবেশ করিয়ে তাকে দ্বিতীয় বার কবরে ফেরত পাঠানো হয়।
في جنازة رجل من الانصار فانتهينا قال خرجنا مع رشول الله عن البراء بن عازب إلى القبر ولما يحد بعد فجلس شؤل الله فجلسنا حوله كانما على رءوسنا الطير في يده عود نفت به في الأرض فرفع رأسه فقال (( اشتعيدوا بالله من عذاب القبر )) مرتين او ثلاثا ، ثم قال : (( إن العبد المؤمن إذا كان في انقطاع من الدنيا و إقبال من الأجرة نزل اليه ملايكة من الماء بيض الوجوه، كأن وجوههم الشمس معهم كفن من أفان الجنة وختو من تؤط الجنية خشي يخلوا منه مد البصر ، ثم يجيء ملك الموت عليه السلام حتى يجلس عند رأيه فيقول : ايها النفس الطيبة : أخرجي إلى مغفرة من الله و رضوان قال : تخرج تسيل كما تيل القطرة من في الشقاء فيها ، فإذا اخدها لم يدعوها في يده طرفة عين حتى يأخذوها فيجعلوها في ذلك الكفن، وفي ذلك الحنوط ويخرج منه وجذث على وجه الأرض قال : فيصعدون بها فلا يمرون على فلامن أطيب نفحة مش الملايكة إلا قالوا : ما هذا الروح الطيب ؟ فيقولون : فلان ابن فلان، بأحسن أسمائه التى كان يسمون بها في الدينا، حتى ينتهوا بها إلى السماء الدنيا فيكون له فيفتح له، فيشية من ماء مقبنوها إلى الشماء التي تليها حتى ينتهي بها إلى الماء السابعة فيقول الله عز كل وجل : اكتبوا كتاب عبير في عليين وأعيدوه إلى الأرض في جسده )) رواه أحمد ( حسن )
অর্থঃ বারা বিন আযেব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ একদা আমরা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে এক আনসারী সাহাবীর জানাযায় অংশ গ্রহণ করার জন্য বের হই, আমরা যখন কবরের কাছে গিয়ে পৌঁছলাম তখনও কবর পরি পূর্ণ হয় নাই। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বসলেন, আমরাও তার সাথে বসে গেলাম, আমরা নিশ্চুপ হয়ে বসে ছিলাম, তাঁর হাতে একটি লাঠি ছিল তা দিয়ে তিনি মাটিতে দাগ কাটতে ছিলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হটাৎ তাঁর মাথা উঠিয়ে বললঃ কবরের আযাব থেকে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। এ কথা তিনি দুই বা তিন বার বললেনঃ অতঃপর বললেনঃ যখন মোমেন ব্যক্তি দুনিয়ার সম্পর্ক ছিন্ন করে, পরকাল অভিমুখে রওয়ানা হয়, তখন তার নিকট সূর্যের ন্যায় উজ্জ্বল চেহারা সম্পন্ন ফেরেশতা জান্নাত থেকে কাফন ও সুগন্ধি নিয়ে এসে তার সামনে বসে, অতঃপর মালাকুলমাওত এসে তার মাথার নিকট বসে বলেঃ হে পবিত্র আত্মা! তুমি আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টির প্রতি বের হয়ে আস, অতঃপর রুহ শরীর থেকে এত দ্রুত বের হয় যেমন পানির পাত্র থেকে পানি দ্রুত নিচে পড়ে যায়।
সাথে সাথে মালাকুর মাওত তাকে ধরে ফেলে এবং মালাকুল মাওত তাকে ধরা মাত্রই চোখের পলকে অন্য ফেরেশতা তাকে জান্নাতের কাফনে পেচিয়ে, জান্নাতের সুগন্ধি দিয়ে তাকে সু গন্ধময় করে দেয়। তখন ঐ রুহ থেকে পৃথিবীতে বিদ্ধমান উন্নত সুগন্ধির ঘ্রাণ আসতে থাকে। অতঃপর এ রুহকে নিয়ে ফেরেশতা আকাশ অভিমুখে রওয়ানা হয়, পথিমধ্যে যেখানেই ফেরেশতাদের সাথে সাক্ষাত হয় সেখানেই ফেরেশতারা জিজ্ঞেস করে যে এ পবিত্র আত্মা কার? উত্তরে ফেরেশতাগণ বলে যে, এ ওমুকের ছেলে ওমুক, যে পৃথিবীতে ওমুক সুন্দর নামে পরিচিত ছিল, ফেরেশতা তাকে নিয়ে পৃথিবীর নিকটবর্তী আকাশে পৌঁছে, তার জন্য দরজা খোলার আবেদন করে, তখন তার জন্য দরজা খুলে দেয়া হয়, অতঃপর ঐ আকাশের ফেরেশতা মোমেন ব্যক্তির রুহকে বিদায় জানাতে জানাতে পরবর্তী আকাশ পর্যন্ত নিয়ে যায়। এভাবে ফেরেশতা ঐ রুহ নিয়ে সপ্তম আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অতঃপর আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ আসে যে, আমার বান্দার নাম ইল্লিয়ীনে লিখে নিয়ে তাকে পৃথিবীতে তার শরীরে ফেরত পাঠাও। (আহমদ)[2]
মাসআলা-২৪ মোমেনের রুহ কবজ করার জন্য রহমতের ফেরেশতাগণ সাদা রেশমী কাফন সাথে নিয়ে আসে।
মাসআলা-২৫ রুহ কবজ করার পূর্বে ফেরেশতা মোমেন ব্যক্তিকে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং রহমতের সুসংবাদ দেয়।
মাসআলা-২৬ মোমেন ব্যক্তির শরীর থেকে নির্গত সুগন্ধি ফেরেশতাদেরকেও আনন্দিত করে।
মাসআলা-২৭ মৃত ঈমানদ্বার ব্যক্তির রুহ সমূহ যখন ইল্লিয়ীনে পৌঁছে তখন পূর্বের ঈমান দ্বারদের রুহের সাথে মিসে তারা আনন্দ উপভোগ করে এবং তারা একে অপরের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে।
عن أبي هريرة بينه عن النبي ، قال : (( إن المؤمن إذا اختضر اتت ملائكة الرحمة بحريرة بيضاء فيقولون : أخرجي راضية مرضية عنك إلى روح الله و ريحان ورب غير غضبان تخرج أطيب ريح المشي حتى انهم ليناوله بعضهم بعضا يشمونة حتى ياتوا به باب الشماء فيقولون حتى يأتوا به ارواح : ما أطيب هذه الريح التي جاءتكم منالارض فكلما اتوا سماء قالوا ذلك المؤين قال له أفرح به من أخبركم بغائيه إذا قدم عليه قال فيشلون ما فعل فلان قال - يقولون مموه حتى يشتريح فإنه كان في ممم الدنيا ، فاذا قال لهم : أما اتاكم فائه فذ ما قال : فيقولون دهب به إلى أمه الهاوية قال : وأما الكافر فإن ملائكة العذاب تأتيه فيقول أرجی م ؤطا عليك إلى عذاب الله وسخطه فيخرج كانتي رح جيفة فينطقون به إلى باب اخط لما أتو على الأرض قالوا ذلك حتى ياتوا به أرواح الأرض فيقولون : ما أنت هذه الري المحار )) رواه الحاكم وابن حبان
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যখন মোমেনের মৃত্যুর সময় কাছিয়ে আসে তখন রহমতের ফেরেশতা সাদা রেশমী কাফন নিয়ে আসে এবং বলেঃ হে রুহ আল্লাহর রহমত, জান্নাতের সুঘ্রাণ এবং তোমার প্রতি সন্তুষ্ট প্রভুর প্রতি, এ শরীর থেকে এমন ভাবে বের হও যে তুমি তোমার প্রভুর প্রতি সন্তষ্ট এবং তিনিও তোমার প্রতি সন্তষ্ট, মোমেন ব্যক্তির রুহ যখন শরীর থেকে বের হয় তখন তা থেকে উন্নত সু গন্ধির ঘ্রাণ আসে, এমনকি ফেরেশতারা একে অপরের কাছ থেকে নিয়ে এ সুগন্ধি শুকে, আর যখন আকাশের দরজায় পৌঁছে তখন আকাশের ফেরেশতারা পরস্পরে বলতে থাকে, এ কত উন্নত সুগন্ধি ময় রুহ যা পৃথিবী থেকে তোমাদের নিকট আসছে, যখনই ফেরেশতা তা নিয়ে পরবর্তী আকাশে পৌঁছে তখন ঐ আকাশের ফেরেশতারাও এ ধরনের মন্তব্যই করে, শেষ পর্যন্ত তা বহন কারী ফেরেশতারা ঐ রুহকে ঈমানদ্বারদের রুহ জগৎ ইল্লিয়ীনে নিয়ে যায়, এ রুহ ওখানে পৌঁছার পর পূর্ববর্তী রুহ সমূহ এত বেশী খুশী হয় যেমন তোমাদের কেউ তার আপন ভায়ের সাক্ষাতে খুশী হয়, এমন কি কিছু কিছু রুহ নতুন রুহ সমূহকে জিজ্ঞেস করে যে, ওমক ব্যক্তি কেমন আছে? অতঃপর তারা পরস্পরে বলতে থাকে যে, তাকে একটু ছেড়ে দাও আরাম করতে দাও, সে দুনিয়ার দুঃখ কষ্টের মধ্যে নিমজ্জিত ছিল, আরাম করার পর এ রুহ পুরাতন রুহ দেরকে বলতে থাকে যে, ঐ রুহ কি তোমাদের নিকট আসে নাই সে তো আগেই মৃত্যু বরণ করেছে, যা শোনে তারা দুঃখ করে বলে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।
কাফেরের নিকট আযাবের ফেরেশতা এসে বলে যে, হে অসন্তুষ্ট রুহ আল্লাহ্র শাস্তি ও অসন্তুষ্টির প্রতি বের হও, কাফেরের রুহ যখন শরীর থেকে বের হয় তখন তা থেকে এত দূর গন্ধ আসতে থাকে, যেমন কোন মৃত দেহ থেকে দূর গন্ধ আসে, ফেরেশতা যখন তাকে নিয়ে পৃথিবীর দরজায় আসে তখন ওখানের দারওয়ান বলে যে, এত দূরগন্ধ ময়! যখনই ফেরেশতা তাকে নিয়ে পৃথিবীর পরবর্তী দরজার সামনে আসে তখন ওখানের ফেরেশতাও এমনই বলে, শেষে আযাবের ফেরেশতা তাকে নিয়ে কাফেরদের রুহের সাথে সিজ্জিনে রেখে দেয়। (হাকেম, ইবনে হিব্বান)[3]
নোটঃ উল্লেখ্যঃ মৃত্যুর পর ঈমান দ্বারদের রুহ সমূহ সরকারী মেহমান খানায় পৌঁছিয়ে দেয়া হয় যা সপ্তম আকাশের উপর, যার নাম ইল্লিয়ীন আর কাফেরদের রূহ সমূহ সরকারী জেল খানায় পৌঁছিয়ে দেয়া হয় যা সপ্তম যমিনের নিচে, যার নাম সিজ্জিন। এব্যাপারে আল্লাহ্ ই সর্বাধিক জ্ঞাত আছেন!
মাসআলা-২৮ মোমেন ব্যক্তির রুহ শরীর থেকে বের হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে ফেরেশতা সু সংবাদ দিতে থাকে।
মাসআলা- ২৯ রুহকে আরশে আযীম পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক আকাশের দারওয়ান ফেরেশতা তাকে যথেষ্ঠ সম্মানের সাথে সু স্বাগতম জানাতে থাকে।
: قال ( و السميث تخضره الملائكة فإذا كان الرجل صالحا ، عن النبي عن أبي هريرة قالوا : أخرج ابنتها النفس الطيبة ! كانت في الجسد الطيب أخرج حميدة و أبشری بروح و ريحان ورب غير غضبان ، فلا يزال يقال لها حتى تخرج ثم يعرج بها الى السماء فيفتح لها فيقال : من هنا ” فيقولون فلان ، فقال : مرحبا بالنفس الطيبة كانت في الجسد الطيب أدخلى حميذ و أبشرى بروح وريحان ورب غير غضبان فلا يزال يقال لها ذلك حتى ينتهي بها الى الماء التي فيها الله عزوجل و اذا كان الرجل الشؤء قال : أخزجى ايتها النفس الخبيثة ! كانت في الجسد الخبي أخرجي ذميمة و ابشری بحميم و غشاق وآخر من شكله اواج فلا يزال يقال لها ذلك حتى تخرج ثم يعرج بها الى السماء فلا يفتح لها فيقال : من هذا ؟ فيقال فلان ، فقال :” مرحبا بالقس الخبيثة كانت في الجسد الخبيث از جعى ديمة فإنها لا تفتح لي ابواب الماء فيرسل بها من الماء ثم تصير إلى القبر )) رواه ابن ماجة ( صحيح )
অর্থঃ আবু হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ মৃত ব্যক্তি সৎ লোক হলে তার নিকট ফেরেশতা উপস্থিত হয়ে বলেঃ হে পবিত্র রুহ বের হও! তুমি এক পবিত্র দেহে ছিলা, তুমি প্রশংসা যোগ্য, আল্লাহর রহমতের সুসংবাদ গ্রহণ কর, তোমার জন্য রয়েছে জান্নাতের নে’মত সমূহ, তোমার প্রভু তোমার প্রতি সন্তুষ্ট, ফেরেশতা মৃত ব্যক্তিকে তার রুহ বের হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে একথা বলতে থাকে, অতঃপর যখন রুহ বের হয়ে আসে তখন ফেরেশতা তাকে নিয়ে আকাশের দিকে যেতে থাকে, তার জন্য আকাশের দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয়, এবং জিজ্ঞেস করা হয় যে, কে এ? ফেরেশ্তা উত্তরে বলে যে, এ ওমুক ব্যক্তি, উত্তরে বলা হয় যে এ পবিত্র আত্মার জন্য সু সংবাদ পৃথিবীতে সে এক পবিত্র শরীরের মধ্যে ছিল, হে পবিত্র আত্মা আকাশের দরজা দিয়ে খুশী হয়ে প্রবেশ কর, তোমার জন্য আল্লাহর রহমতের সু সংবাদ, জান্নাতের নে’মতের সুসংবাদ গ্রহণ কর, তোমার প্রতি সন্তুষ্ট প্রভূর সাক্ষাতে তুমি মোবারক ময় হও, প্রত্যেক আকাশ অতিক্রমের সময় ধারাবাহিক ভাবে তাকে এ সু সংবাদ দেয়া হতে থাকে, এভাবে ঐ রুহ আরশ পর্যন্ত পৌঁছে।
মৃত ব্যক্তি যদি খারাপ লোক হয়, তখন ফেরেশতারা বলে, হে খবীস রুহ! এ শরীর থেকে বের হও তুমি খবীস শরীরে ছিলা, লাঞ্ছিত হয়ে বের হও, এবং সু সংবাদ গ্রহণ কর উত্তপ্ত পানি ও পুঁজ এবং অন্যান্য আযাবের, ফেরেশতা রুহ বের করা পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে একথা বলতে থাকে, অতঃপর তাকে নিয়ে আকাশের দিকে যায়, তার জন্য আকাশের দরজা খোলা হয় না, আকাশের ফেরেশতা জিজ্ঞাস করে কে এ? উত্তরে বলা হয়, এ ওমুক ব্যক্তি আকাশের ফেরেশতা বলে, এ খবীস রুহ যা খবীস শরীরের মধ্যে ছিল এর জন্য কোন সু সংবাদ নেই, তাকে লাঞ্ছিত করে ফেরত পাঠাও, এ ধরনের খবীস রুহের জন্য আকাশের দরজা খোলা হয় না, তখন ফেরেশতা তাকে আকাশ থেকে নিচে নিক্ষেপ করে এবং সে কবরে ফিরত আসে, (ইবনে মাযা)[4]
মাসআলা- ৩০ মোমেন ব্যক্তির রুহ আকাশে পৌঁছার পূর্বেই ফেরেশতা তার জন্য রহমতের জন্য দূয়া করতে থাকে।
زوخ المؤمن تلقاها ملكان يعدانها قال حماد : فذكر عن أبي هريرة عنه قال إذا خرج من طيب ريحها و ذكر المشک ، قال : ويقول اهل الشماء : روح طيبة جاءت من قبل الأرض صلى الله و عليك وعلى جير كنت تغمريئه فينطلق به إلى ربه عزوجل ثم يقول : انطلقوا به إلى آخر الأجل ، قال : واين الكافر إذا خرجت وخله قال حماد وذكر بين نتنها وذكر غناو قول أهل الماء : ؤخ خبيثة جاء من قبل الأرض قال : فيقال : إنطلقوا به الى آخر ريطة كانت عليه على انفه هكذا . رواه مسلم الأجل قال أبو هريرة، فرد شؤن الله
অর্থঃ আবু হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেনঃ যখন মোমেন ব্যক্তির রুহ বের হয়, তখন দুই জন ফেরেশতা তা নিয়ে আকাশের দিকে যায়, হাদীসের বর্ণনা কারী হাম্মাদ বলেনঃ আবু হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) রুহ ও সুগন্ধির কথা উল্লেখ করে বলেনঃ আকাশের ফেরেশতারা ঐ রুহের সুঘ্রাণ পেয়ে বলে যে, কোন পবিত্র আত্মা হবে যা যমিনের দিক থেকে আসতেছে, আল্লাহ্ তোমার প্রতি এবং ঐ শরীরের প্রতি রহম করুন যেখানে তুমি লালিত হয়েছ, অতঃপর ফেরেশতা এ রুহকে তার প্রভূর নিকট নিয়ে যায়, আল্লাহ্ তখন এরশাদ করেন যে, কিয়ামত পর্যন্ত তাকে তার সুনির্দিষ্ট স্থান ইল্লিয়ীনে পৌঁছে দাও। হাদীসের বর্ণনা কারী কাফেরের রুহ বের হওয়ার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেনঃ আবু হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) রুহকে দুর্গন্ধময় এবং ফেরেশতার লা’নতের কথা উল্লেখ করে বলেনঃ আকাশের ফেরেশতারা বলে যে, কোন অপবিত্র আত্মা হবে যা যমিনের দিক থেকে আসতেছে, অতঃপর আল্লাহ্র পক্ষ থেকে নির্দেশ আসে যে, কিয়ামত পর্যন্ত তাকে তার সুনির্দিষ্ট স্থান সিজ্জিনে পৌঁছে দাও, আবু হুরাইরা (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেনঃ যখন (রাসূলুল্লা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাফেরের আত্মার দুর্গন্ধের কথা উল্লেখ করছিলেন তখন ঘৃণায় স্বীয় চাদরের আচল এভাবে স্বীয় নাকের উপর রেখেছিলেন, অতঃপর তিনি তার চাদর নাকের উপর রেখে দেখালেন। (মুসলিম)[5]
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।