মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
কোর‘আন মাজীদের দুই জায়গায় আল্লাহ তালা শহীদদেরকে জীবিত বলেছেন এবং সাথে সাথেই তাদেরকে মৃত বলতে নিষেধ করা হয়েছে। এদুটি আয়াত যারা বলে যে মৃতরা শোনে তাদের বড় দলীল। ইমাম আহলুসসুন্নাহ আহমদ রেজা খাঁন বেরলভী স্বীয় গ্রন্থে নিম্নে উল্লেখিত ঘটনাবলী বর্ণনা করেছেন। “দুই ভাই আল্লাহ্র রাস্তায় শহীদ হয়েছে, তাদের তৃতীয় আরেক ভাই ছিল, যে জীবিত ছিল, যখন তার বিয়ের দিন আসল তখন ঐ উভয় শহীদ ভাই তার বিয়েতে অংশ গ্রহনের জন্য তাশরীফ নিলেন। তৃতীয় ভাই আশ্চার্য হয়ে বললঃ তোমরা তো মৃত্যুবরণ করেছ, তারা বললঃ আল্লাহ্ আমাদেরকে তোমার বিয়েতে অংশ গ্রহণের জন্য প্রেরণ করেছেন। অতঃপর এ দুই ভাই তাদের তৃতীয় ভায়ের বিয়ে পড়িয়ে দিয়ে আবার আলমে বারযাখে ফেরত চলে গেল।
শহীদ, ওলী, সৎলোকদেরকে তাদের কবর সমূহে জীবিত বলে প্রমাণ করার পর তাদের নিকট প্রয়োজন মিটানোর জন্য দূয়া করা, বিপদাপদে তাদের স্মরনাপন্ন হওয়া, তাদের নামে নযর নেয়াজ করা, তাদের মাজারে এটা সেটা দান করা, ওরস করা, জায়েজ বলে প্রমাণিত করা হয়। এখানেও “মৃতরা শোনতে পায়” একথার দাবীদাররা ঐ ভ্রান্তিতে আছে যা আমি পূর্বের পৃষ্ঠা সমূহে উল্লেখ করেছি। যে তারা শহীদদের বারযাখী জিন্দেগিকে দুনিয়ার জিন্দেগির মত মনে করে। বারযাখে তাদের পানাহারকে দুনিয়ার পানাহারের ন্যায় মনে করে।[1]
বারযাখে তাদের শোনা ও বলাকে দুনিয়ায় তাদের শোনা ও বলার মত মনে করে। একথা আমরা পূর্বে আলোচনা করেছি যে বারযাখের জীবন একটি পরিপূর্ণ জীবন, যেখানে মৃতদের পানাহার, বলা, শোনা, দেখা, চিনা, চিন্তা, আনন্দ আরাম উপভোগ করা ইত্যাদি প্রমাণিত। কিন্তু এগুলি দুনিয়ার পানাহার, জীবন থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। বলা, শোনা, দেখা, চিনা, চিন্তা, আনন্দ আরাম উপভোগ করা ইত্যাদি, থেকে ভিন্ন। আমরা পূর্বে উল্লেখিত দুটি আয়াতের শানে নুযুল থেকে মূল বিষয়টি বুঝার ব্যাপারে অনেক সহযোগীতা পাব। তাই আমরা এখানে পূর্বে উল্লেখিত আয়াত দুটির শানে নুযুল উল্লেখ করব। সূরা বাকারার এ আয়াত–
যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে, তাদেরকে তোমরা মৃত বলনা, বরং তারা জীবিত, কিন্ত তোমরা তা অনুভব করতে পারনা? (সূরা বাক্বারা -১৫৪)
এ আয়াতে শহীদ গণকে জীবিত বলার পেক্ষাপট হল এই যে, বদরের যুদ্ধে শাহাদাত বরণ কারী সাহাবাগণ সম্পর্কে কাফেররা বলেছিল যে, ওমক ওমক মারা গেছে এবং জীবনের আরাম আয়েশ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এরই উত্তরে আল্লাহ তা’লা এ আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। শহীদদেরকে মৃত বলনা বরং তারা জীবিত। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের) নিকট এ আয়াতের ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করা হল, তখন তিনি বললেনঃ শহীদগণের রুহ সবুজ পাখীর আকৃতিতে এমন এক বেলুনের মধ্যে থাকে যা আল্লাহর আরশের সাথে জুলন্ত।
যখন মন চায় তখন জান্নাতে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে চলে যায় আবার ঐ বেলুনে ফিরে আসে। এক বার আল্লাহ্ তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন যে তোমাদের কি কোন মনবাসনা আছে? শহীদ গণের রুহেরা উত্তরে বললঃ জান্নাতের যেখানে খুশী সেখানেই আমরা যাই, এর পর আমরা আর কি চাই। আল্লাহ্ তালা তাদেরকে তিন বার এ প্রশ্ন করলেন, অতঃপর শহীদ গণের রুহ যখন দেখলো যে উত্তর দেয়া ব্যতীত মুক্তি নেই তখন তারা বললঃ হে আল্লাহ আমরা চাই যে আমাদের রুহ সমূহকে আমাদের শরীরে ফেরত দেয়া হোক আর আমরা দ্বিতীয় বার আল্লাহর পথে শহীদ হই। যখন আল্লাহ দেখলেন যে তাদের আর কোন চাহিদা নেই তখন তাদেরকে ছাড়লেন। (মুসলিম)
অর্থঃ যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে, তাদেরকে তোমরা মৃত ধারণা করনা, বরং তারা জীবিত, তারা তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে জীবিকা প্রাপ্ত হয়। (সূরা আল ইমরান ১৬৯)
এ আয়াতে শহীদ গণকে জীবিত বলার প্রেক্ষাপট এই যে, উহুদের যুদ্ধে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কার মোশরেকদের সাথে মদীনা শহরের বাহিরে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিলেন। মোনাফেকরা এ বলে যুদ্ধের ময়দান থেকে দূরে সরে পরল যে, মদীনা শহরে থেকে কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করার ব্যাপারে আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় নাই। তাই আমরা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করব না। যুদ্ধের পর মোনাফেকরা বলতে লাগল যে, যদি আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ করা হত, তাহলে এ যুদ্ধে মোসলমানরা মার খেতনা। মোনাফেকদের এদৃষ্টি ভঙ্গির উত্তর আল্লাহ এ আয়াতের মাধ্যমে দিলেন। যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে, তাদেরকে তোমরা মৃত ধারণা করনা, বরং তারা জীবিত, তারা তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে জীবিকা প্রাপ্ত হয়।
উহুদের যুদ্ধে শাহাদাত বরণ কারি আবদুল্লাহ বিন আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুর) কথা হাদীসে এসেছে যে, আবদুল্লাহ বিন আমর (রাযিয়াল্লাহু আনহুর) ছেলে যাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহু) কে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ হে যাবের আমি কি তোমাকে ঐ কথা বলবনা, যে আচরণ আল্লাহ্ তা’লা তোমার পিতার সাথে করেছেন? যাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বললঃ কেন না? রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তা’লা কোন ব্যক্তির সাথে পর্দার আড়াল ব্যতীত কোন কথা বলেন নাই, কিন্ত তোমার পিতার সাথে সরাসরী কথা বলেছেন এবং বলেছেন যে হে আমার বান্দা! যা মন চায় তা আমার নিকট চাও আমি তোমাকে তা দিব।
তোমার পিতা বলছে। হে আমার রব! আমাকে পুনরায় জীবিত কর যাতে করে আমি তোমার পথে যুদ্ধ করে আবার শাহাদাত বরণ করতে পারি। আল্লাহ তা’লা বললেনঃ এ সিদ্ধান্ত তো আমি পূর্বেই দিয়েছি যে, মৃত্যুর পর দুনিয়াতে আর ফেরত আসা যাবে না। তখন তোমার পিতা আবার বললঃ হে আমার রব! আমার পক্ষ থেকে দুনিয়া বাসীকে একথা জানিয়ে দিন যে, আমি এ কামনা করেছি, যে আমাকে পুনরায় জীবিত কর, যাতে করে আমি তোমার পথে যুদ্ধ করে আবার শাহাদাত বরণ করতে পারি। তখন আল্লাহ্ তা’লা এ আয়াত অবতীর্ণ করলেন যে, যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে, তাদেরকে তোমরা মৃত ধারণা করনা, বরং তারা জীবিত, তারা তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে জীবিকা প্রাপ্ত হয়। (সূরা আল ইমরান ১৬৯) (ইবনে মাজাহ)
সূরা বাকারা ও সূরা আল ইমরানের আয়াতদ্বয় থেকে নিম্নোক্ত বিষয় সমূহ স্পষ্ট হয়।
১ - শহীদ গণের শরীর কবরে থাকে আর তাদের রুহ শাহাদাতের পর সরাসরী জান্নাতে পৌঁছিয়ে দেয়া হয়।
২ - শহীদ গণের রুহ জান্নাতে প্রবেশের পর পৃথিবীতে ফেরত আসা সম্ভব নয়। কিতাব ও সুন্নাতের উল্লেখিত দলীল সমূহের সাথে সাথে, নিম্নোক্ত বিধান গুলির প্রতি ও একটু দৃষ্টি দিন, যা এ বিষয়টিকে আরো স্পষ্ট করবে, যে শহীদ গণের বারযাখী জীবন এপৃথিবীর জীবনের মত নয়।
ক - শহীদ, ওলীগনের মৃত্যুর পর তাদের বিধবা স্ত্রীর জন্য অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জায়েজ, যেমন সাধারণ কোন মোসলমান মৃত্যু বরণ করলে, তার স্ত্রীর জন্য অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জায়েজ। যদি শহীদ ও ওলীগণ জীবিত থাকে তাহলে তাদের স্ত্রীদের জন্য অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার অনুমতি কেন দেয়া হল?
খ - শহীদ, ওলীগণ মৃত্যুর পর তাদের সম্পদ তাদের উত্তর সূরীদের মাঝে এমন ভাবে বন্টন করা হয়, যেমন কোন সাধারণ মোসলমান মারা গেলে তার সম্পদ সমূহ, তার উত্তর সূরীদের মাঝে বন্টন করা হয়। যদি শহীদ ও ওলীগণ জীবিত থাকে তাহলে তাদের সম্পদ তাদের উত্তর সূরীদের মাঝে কেন বন্টন করার নির্দেশ দেয়া হল।
গ - শহীদ ও ওলীগণের মৃত্যুর পর তাদের জন্য জানাযার নামাযে এমন ভাবে মাগফেরাত কামনা করে দূয়া করা হয় যেমন সাধারণ কোন মোসলমান মারা গেলে তার জানাযার নামাযে মাগফেরাত কামনা করে দূয়া করা হয়।
ঘ - শহীদ ও ওলীগণ মৃত্যুবরন করার পর তাদেরকে এমন ভাবে কবরে দাফন করা হয়, যেমন কোন এক জন সাধারণ মোসল মান মারা গেলে দাফন করা হয়। যদি শহীদ ও ওলীগণ মৃত্যুর পর দুনিয়ার মতই জীবিত থাকে তাহলে তাদেরকে দাফন করার নির্দেশ কেন দেয়া হল?
শহীদ গণের বারযাখী জীবন সম্পর্কে কোর‘আন ও সুন্নার বর্ণনা এত স্পষ্ট যে সাধারণ কোন শিক্ষিত মোসলমানও তা বুঝতে পারবে যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বর্ণনা সমূহের আলোকে শহীদ ও ওলীগণের রুহ তাদের কবর সমূহে নেই। বরং তা জান্নাতে বা ইল্লীয়ীনে আছে। আর তারা জান্নাত বা ইল্লীয়ীন থেকে দুনিয়াতে ফেরত আসতে পারবে না, না তারা কারো কোন আহ্বান শোনে, না কোন মনবাসনা পুরনের জন্য কোন দূয়াকারীর ডাকে সারা দিতে পারে। না কোন মোরাকাবা মোশাহাদার মাধ্যমে কোন কিছু জানতে পারে। না তারা কোন কথাবার্তা বলতে পারে। এ ধরনের বাতিল, বিত্তীহিন কথার দাবী এমন লোকেরাই করতে পারে, যার মূল লক্ষ উদ্দেশ্য শুধু দুনিয়ার সম্পদ অর্জন ও মর্যাদা হাসিল করা। আর যে আল্লাহ্র নিকট জওয়াব দেহিতার কথা একেবারেই ভুলে গেছে।
ফুটনোট
[1] - মাজমূয়া রাসায়েল আ’লা হযরত। ১ম খঃ পৃঃ ১৭৫
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/298/15
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।