hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১ম খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

৩৫
আদম (আ)-এর ওফাত ও আপন পুত্র শীছ (আ)-এর প্রতি তাঁর ওসীয়ত
শীছ অর্থ আল্লাহর দান। হাবীলের নিহত হওয়ার পর তিনি এ সন্তান লাভ করেছিলেন বলে আদম ও হাওয়া (আ) তার এ নাম রেখেছিলেন।

আবু যর (রা) রাসূলুল্লাহ (সা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা একশ’ চারখানা সহীফা (পুস্তিকা) নাযিল করেন। তন্মধ্যে পঞ্চাশটি নাযিল করেন শীছ-এর উপর।

মুহাম্মদ ইবন ইসহাক বলেন, মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এলে আদম (আ) তাঁর পুত্র শীছ (আ)-কে ওসীয়ত করেন, তাকে রাত ও দিবসের ক্ষণসমূহ এবং সেসব ক্ষণের ইবাদতসমূহ শিখিয়ে যান ও ভবিষ্যতে ঘটিতব্য তুফান সম্পর্কে অবহিত করে যান। মুহাম্মদ ইবন ইসহাক (র) বলেন, আজকের সকল আদম সন্তানের বংশধারা শীছ পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়ে যায় এবং শীছ ব্যতীত আদম (আ)-এর অপর সব ক’টি বংশধারাই বিলুপ্ত হয়ে যায়। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

কোন এক জুমু’আর দিনে আদম (আ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলে ফেরেশতাগণ আল্লাহর পক্ষ হতে জান্নাত থেকে কিছু সুগন্ধি ও কাফন নিয়ে তাঁর নিকট আগমন করেন এবং তাঁর পুত্র এবং স্থলাভিষিক্ত শীছ (আ)-কে সান্ত্বনা দান করেন। মুহাম্মদ ইবন ইসহাক (র) বলেন, আর সাত দিন ও সাতরাত পর্যন্ত চন্দ্র ও সূর্যের গ্রহণ লেগে থাকে।

ইমাম আহমদের পুত্র আবদুল্লাহ বর্ণনা করেন যে, য়াহয়া ইবন যামরা সাদী বলেন, মদীনায় আমি এক প্রবীণ ব্যক্তিকে কথা বলতে দেখতে পেয়ে তার পরিচয় জানতে চাইলে লোকেরা বলল, ইনি উবাই ইবন কা’ব। তখন তিনি বলছিলেন যে, “আদম (আ)-এর মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এলে তিনি তাঁর পুত্রদেরকে বললেন, আমার জান্নাতের ফল খেতে ইচ্ছে হয়। ফলে তাঁরা ফলের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন। পথে তাঁদের সঙ্গে কতিপয় ফেরেশতার সাক্ষাৎ ঘটে। তাদের সাথে আদম (আ)-এর কাফন, সুগন্ধি, কয়েকটি কুঠার, কোদাল ও থলে ছিল। ফেরেশতাগণ তাদেরকে বললেন, হে আদম-পুত্রগণ! তোমরা কী চাও এবং কী খুঁজছে? কিংবা বললেন, তোমরা কি উদ্দেশ্যে এবং কোথায় যাচ্ছো? উত্তরে তারা বললেন, আমাদের পিতা অসুস্থ। তিনি জান্নাতের ফল খাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। এ কথা শুনে ফেরেশতাগণ বললেনঃ তোমরা ফিরে যাও। তোমাদের পিতার ইন্তিকালের সময় ঘনিয়ে এসেছে। যা হোক, ফেরেশতাগণ আদম (আ)-এর নিকট আসলে হাওয়া (আ) তাদের চিনে ফেলেন এবং আদম (আ)-কে জড়িয়ে ধরেন। তখন আদম (আ) বললেন, আমাকে ছেড়ে দিয়ে তুমি সরে যাও। কারণ তোমার আগেই আমার ডাক পড়ে গেছে। অতএব, আমি ও আমার মহান রব-এর ফেরেশতাগণের মধ্য থেকে তুমি সরে দাড়াও। তারপর ফেরেশতাগণ তার জানকবয করে নিয়ে গোসল দেন, কাফন পরান, সুগন্ধি মাখিয়ে দেন এবং তার জন্য বগলী কবর খুঁড়ে জানাযার নামায আদায় করেন। তারপর তাঁকে কবরে রেখে দাফন করেন। তারপর তারা বললেন, হে আদমের সন্তানগণ! এ হলো তোমাদের দাফনের নিয়ম। এর সনদ সহীহ।

ইবন আসাকির (র) ইবন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ ফেরেশতাগণ আদম (আ)-এর জানাযায় চারবার, আবু বকর (রা) ফাতিমা (রা)-এর জানাযায় চারবার, উমর (রা) আবূ বকর (রা)-এর জানাযায় চারবার এবং সুহায়ব (রা)-র উমর (রা)-এর জানাযায় চারবার তাকবীর পাঠ করেন।৭৬(হাদীসটি বিশুদ্ধ হয়ে থাকলে এটাকে রসূলুল্লাহ (সা)-এর একটি ভবিষ্যদ্বাণী বলে বিবেচনা করতে হবে। - সম্পাদক) ইবন আসাকির বলেন, শায়বান ব্যতীত অন্যান্য রাবী মাইমূন সূত্রে ইবন উমর (রা) থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেন।

আদম (আ)-কে কোথায় দাফন করা হয়েছে, এ ব্যাপারে মতভেদ আছে। প্রসিদ্ধ মত হলো, তাঁকে সে পাহাড়ের নিকটে দাফন করা হয়েছে, যে পাহাড় থেকে তাঁকে ভারতবর্ষে নামিয়ে দেয়া হয়েছিল। কেউ কেউ বলেন, মক্কার আবু কুবায়স পাহাড়ে তাকে দাফন করা হয়। কেউ কেউ বলেন, মহা প্লাবনের সময় হযরত নূহ (আ) আদম ও হাওয়া (আ)-এর লাশ একটি সিন্দুকে ভরে বায়তুল মুকাদ্দাসে দাফন করেন। ইবন জারীর এ তথ্য বর্ণনা করেছেন। ইবন আসাকির কারো কারো সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আদম (আ)-এর মাথা হলো মসজিদে ইবরাহীম (আ)-এর নিকট আর পা দু’খানা হলো বায়তুল মুকাদ্দাস-এর সাখরা নামক বিখ্যাত পাথর খণ্ডের নিকট। উল্লেখ্য যে, আদম (আ)-এর ওফাতের এক বছর পরই হাওয়া (আ)-এর মৃত্যু হয়।

আদম (আ)-এর আয়ু কত ছিল এ সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। ইবন আব্বাস (রা) ও আবু হুরায়রা (রা) থেকে মারফু সূত্রে বর্ণিত হাদীসে আমরা উল্লেখ করে এসেছি যে, আদম (আ)-এর আয়ু লাওহে মাহফুজে এক হাজার বছর লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আদম (আ) ন’শ ত্রিশ বছর জীবন লাভ করেছিলেন বলে তাওরাতে যে তথ্য আছে, তার সঙ্গে এর কোন বিরোধ নেই। কারণ ইহুদীদের এ বক্তব্য আপত্তিকর এবং আমাদের হাতে যে সংরক্ষিত সঠিক তথ্য রয়েছে; তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে তা প্রত্যাখ্যাত। তাছাড়া ইহুদীদের বক্তব্য ও হাদীসের তথ্যের মাঝে সমন্বয় সাধন করাও সম্ভব। কারণ তাওরাতের তথ্য যদি সংরক্ষিত হয়; তা হলে তা অবতরণের পর পৃথিবীতে অবস্থান করার মেয়াদের উপর প্রয়োগ হবে। আর তাহলে সৌর হিসাবে ন’শ ত্রিশ বছর আর চান্দ্র হিসাবে নয় শ’ সাতান্ন বছর। এর সঙ্গে যোগ হবে ইবন জারীর-এর বর্ণনানুযায়ী অবতরণের পূর্বে জান্নাতে অবস্থানের মেয়াদকাল তেতাল্লিশ বছর। সর্বসাকুল্যে এক হাজার বছর।

‘আতা খুরাসানী বলেন, আদম (আ)-এ ইন্তিকাল হলে গোটা সৃষ্টিজগত সাতদিন পর্যন্ত ক্রন্দন করে। ইবন আসাকির (র) এ তথ্য বর্ণনা করেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র শীছ (আ) তার স্থলাভিষিক্ত হন। তিনি সে হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী নবী ছিলেন যা ইবন হিব্বান তার সহীহ-এ আবু যর (রা) থেকে মারফু সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, শীছ (আ)-এর উপর পঞ্চাশটি সহীফা নাযিল হয়। এরপর তার মৃত্যু ঘনিয়ে আসলে তাঁর ওসীয়ত অনুসারে তাঁর পুত্র আনূশ, তারপর তাঁর পুত্র কীনন দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তারপর তিনিও মৃত্যুবরণ করলে তার ছেলে মাহলাঈল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পারসিকদের ধারণা মতে, মাহলাঈল সপ্তরাজ্যের তথা গোটা পৃথিবীর রাজা ছিলেন। তিনি-ই সর্ব প্রথম গাছপালা কেটে শহর, নগর ও বড় বড় দুর্গ নির্মাণ করেন। বাবেল ও ‘সূস আল-আকসা নগরী তিনিই নির্মাণ করেন। তিনিই ইবলীস ও তার সাঙ্গপাঙ্গদেরকে পরাজিত করে তাদেরকে পৃথিবী সীমান্তবর্তী অঞ্চলসমূহ এবং বিভিন্ন পাহাড়ী উপত্যকায় তাড়িয়ে দেন। আর তিনিই একদল অবাধ্য জিন-ভূতকে হত্যা করেন। তাঁর একটি বড় মুকুট ছিল। তিনি লোকজনের উদ্দেশে বক্তৃতা প্রদান করতেন। তাঁর রাজত্ব চল্লিশ বছর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। তার মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র য়ারদ তার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এরপর তারও মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এলে তিনি আপন পুত্র খানুখকে ওসীয়ত করে যান। প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী এ খানুখ-ই হলেন ইদরীস (আ)।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন