hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১ম খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

৫৬
হযরত ইব্রাহীম (আ)-এর ইনতিকাল ও তাঁর বয়স প্রসঙ্গ
ইবন জারীর (র) তার ইতিহাস গ্রন্থে লিখেছেন, হযরত ইব্রাহীম (আ) নমরূদ (ইবন কিনআন)-এর যুগে জন্মগ্রহণ করেন। কথিত আছে যে, এই নমরূদই ছিল প্রসিদ্ধ বাদশাহ যাহ্হাক। সে দীর্ঘ এক হাজার বছর যাবত বাদশাহী করেছিল বলে মনে করা হয়ে থাকে। তার শাসন আমল ছিল জুলুম-অত্যাচারে পরিপূর্ণ। কোন কোন ইতিহাসবিদের মতে, এই নমরূদ ছিল বনূ রাসিব গোত্রের লোেক। এই গোত্রেই হযরত নূহ (আ) প্রেরিত হয়েছিলেন। নমরূদ ঐ সময় সমগ্র দুনিয়ার বাদশাহ ছিল। ইতিহাসবিদগণ উল্লেখ করেছেন, একদা আকাশে একটি নক্ষত্র উদিত হয়। তার জ্যোতির সম্মুখে সূর্য ও চন্দ্র নিষ্প্রভ হয়ে যায়। এ অবস্থায় লোকজন ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। নমরূদ বিচলিত হয়ে দেশের সব গণক ও জ্যোতির্বিদদের একত্র করে এর কারণ জিজ্ঞেস করে। তারা জানাল, আপনার রাজত্বের মধ্যে এমন এক শিশুর জন্ম হবে যার হাতে আপনার বাদশাহীর পতন ঘটবে। নমরূদ তখন রাজ্যব্যাপী ঘোষণা দিল, এখন থেকে কোন পুরুষ স্ত্রীর কাছে যেতে পারবে না এবং এখন থেকে কোন শিশুর জন্ম হলে তাকে হত্যা করা হবে। এতদসত্ত্বেও হযরত ইবরাহীম (আ) ঐ সময়ে জন্মগ্রহণ করেন। আল্লাহ তাকে হিফাজত করেন ও পাপিষ্ঠদের ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেন। তিনি তাকে উত্তমভাবে লালন-পালনের ব্যবস্থা করেন। ক্রমশ বড় হয়ে তিনি যৌবনে পদার্পণ করেন, যা পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে। হযরত ইবরাহীম (আ)-এর জন্মভূমি ছিল ‘সূস’ কারও মতে ‘বাবেল’, কারও মতে কূছায় ৮০ (মু’জামুল বুলদান কিতাবে এর নাম লেখা হয়েছে ‘কূছা’ كاف এর উপর পেশ, واو সাকিন, ثا এর উপর যবর ও শেষে আলিফে মাকসূরা ياء সহ লেখা হয়ে থাকে। যেহেতু এটা চার অক্ষর বিশিষ্ট শব্দ। কুছায় নামে তিনটি জায়গা আছে (১) সাওয়াদুল ইরাকে (২) বাবেলে (৩) মক্কায়। ইরাকের কুছায় দুটি (১) কুছায় তারীক (২) কুছায় রীবী। এটাই ইব্রাহীম (আ)-এর স্মৃতি বিজড়িত স্থান এবং এখানেই তার জন্ম হয়। এ দু’টি স্থানই বাবেলে অবস্থিত। এখানেই ইবরাহীম (আ)-কে আগুনে নিক্ষেপ করা হয়। উক্ত দুটি কুছায় বাবেলের দুই প্রান্তে অবস্থিত।) -এর পার্শ্ববর্তী সাওয়াদ নামক এক গ্রাম। ইতিপূর্বে হযরত ইবন আব্বাস (রা)-এর একটি বর্ণনা উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে হযরত ইব্রাহীম (আ) দামেশকের পূর্ব পার্শ্বে বারযাহ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। আল্লাহ হযরত ইব্রাহীম (আ)-এর হাতে নমরূদের পতন ঘটাবার পর তিনি প্রথমে হারানে এবং পরে সেখান থেকে শাম দেশে হিজরত করেন এবং সেখান থেকে ঈলিয়ায় গিয়ে বসবাস করেন। অতঃপর ইসমাঈল ও ইসহাক (আ)-এর জন্ম হয়। তারপর কিনআনের অন্তর্গত হিবরূন নামক স্থানে সারাহর ইনতিকাল হয়। আহলে কিতাবগণ উল্লেখ করেছেন, মৃত্যুকালে সারাহর বয়স হয়েছিল একশ’ সাতাশ বছর। ইবরাহীম (আ) সারাহর মৃত্যুতে অত্যন্ত মর্মাহত হন এবং দুঃখ প্রকাশ করেন। বনূ হায়ছ গোত্রের আফরূন ইবন সাখার নামক এক ব্যক্তির কাছ থেকে চারশ’ মিছকালের বিনিময়ে তিনি একটি জায়গা ক্রয় করেন এবং সারাহকে সেখানে দাফন করেন। এরপর ইবরাহীম (আ)-এর পুত্র ইসহাককে রুফাকা বিনত বাতূঈল ইবন নাহূর ইবন তারাহ্-এর সাথে বিবাহ করান। পুত্রবধুকে আনার জন্যে তিনি নিজের ভৃত্যকে পাঠিয়ে দেন। সে রুফাকা ও তার দুধ-মা ও দাসীদেরকে উটের উপর সওয়ার করে নিয়ে আসে।

আহলি কিতাবদের বর্ণনাঃ হযরত ইবরাহীম (আ) অতঃপর কানতুরা নাম্নী এক মহিলাকে বিবাহ করেন এবং তার গর্ভে যামরান, ইয়াকশান, মাদান, মাদয়ান, শায়াক ও শূহ-এর জন্ম হয়। এদের প্রত্যেকের সন্তান-সন্ততি সম্পর্কেও বিবরণ রয়েছে।

ইবন আসাকির বিভিন্ন প্রাচীন পণ্ডিতদের বরাতে ইবরাহীম (আ)-এর কাছে মালাকুল মওতের আগমন সম্পর্কে আহলে কিতাবদের উপাখ্যানসমূহ বর্ণনা করেছেন। সঠিক অবস্থা আল্লাহই ভাল জানেন। কেউ কেউ বলেছেন, হযরত দাউদ (আ) ও হযরত সুলায়মান (আ)-এর মত হযরত ইবরাহীম (আ)-ও আকস্মিকভাবে ইনতিকাল করেন। কিন্তু আহলে কিতাব ও অন্যদের বর্ণনা এর বিপরীত। তারা বলেছেন, ইবরাহীম (আ) পীড়িত হয়ে একশ’ পঁচাত্তর বছর মতান্তরে একশ’ নব্বই বছর বয়সে ইনতিকাল করেন এবং আফরান হায়ছীর সেই জমিতে তাঁর সহধর্মিনী সারাহর কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়। ইসমাঈল (আ) ও ইসহাক (আ) উভয়ে দাফনকার্য সম্পাদন করেন। ইবনুল-কালবী বলেছেন, ইবরাহীম (আ) দু’শ বছর বয়সে ইনতিকাল করেন। আবু হাতিম ইবন হিব্বান তাঁর 'সহীহ’ গ্রন্থে মুফাযযল... আবূ হুরায়রা (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন, হযরত ইবরাহীম (আ) বাটালীর সাহায্যে খাতুনা করান। তখন তার বয়স ছিল একশ’ বিশ বছর। এরপর তিনি আশি বছর কাল জীবিত থাকেন। হাফিজ ইবন আসাকির (র) আবু হুরায়রা (রা) সূত্রে এ হাদীসখানা মওকূফ’ভাবে বর্ণনা করেছেন।

তারপর ইবন হিব্বান (র) এ হাদীস যারা মারফূভাবে বর্ণনা করেছেন তাদের বর্ণনাকে বাতিল বলে অভিহিত করেছেন, যেমন মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ (র) আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (সা) বলেছেন, ইবরাহীম (আ) যখন একশ’ বিশ বছর বয়সে উপনীত হন, তখন খাতনা করান এবং এরপর আশি বছর জীবিত থাকেন। আর তিনি কাদাম (ছুঁতারের বাইস) দ্বারা খানা করিয়েছিলেন। হাফিজ ইবন আসাকির (র) আবূ হুরায়রা (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন। নবী করীম (সা) বলেছেনঃ ইবরাহীম (আ) যখন খাৎনা করান তখন তাঁর বয়স ছিল আশি বছর। ইবন হিব্বান আবদুর রাযযাক থেকে বর্ণনা করেছেন যে, কাদূম একটা গ্রামের নাম। আমার জানা মতে 'সহীহ’ গ্রন্থে যা এসেছে তা এই যে, ইবরাহীম (আ) যখন খানা করান তখন তিনি আশি বছর বয়সে পৌঁছেন। অন্য বর্ণনায় তাঁর বয়স ছিল আশি বছর। এ দুটি বর্ণনার কোনটিতেই এ কথা নেই যে, তিনি পরে কত দিন জীবিত ছিলেন। আল্লাহই সম্যক অবগত। মুহাম্মদ ইবন ইসমাঈল ‘তাফসীরে ওকী’র মধ্যে ‘যিয়াদাত’ থেকে উদ্ধৃত করেছেন। আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেনঃ ইবরাহীম (আ) সর্বপ্রথম পায়জামা পরিধান করেন, সর্বপ্রথম মাথার চুলে সিঁথি কাটেন, সর্বপ্রথম ক্ষৌর কর্ম করেন, সর্বপ্রথম খাৎনা করান কাদূমের সাহায্যে। তখন তাঁর বয়স ছিল একশ’ বিশ বছর এবং তারপরে আশি বছর জীবিত থাকেন। তিনিই সর্বপ্রথম অতিথিকে আহার করান, সর্বপ্রথম প্রৌঢ়ত্বে উপনীত হন। এ মওকুফ হাদীসটি মারফু হাদীসেরই অনুরূপ। ইবন হিব্বান (র) এ ব্যাপারে ভিন্ন মত পোষণ করেন।

ইমাম মালিক (র) সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব (রা) থেকে বর্ণনা করেন। ইবরাহীম (আ)-ই প্রথম ব্যক্তি যিনি অতিথিকে আহার করান এবং প্রথম মানুষ যিনি খাৎনা করান, সর্বপ্রথম তিনিই গোঁফ ছাঁটেন, সর্বপ্রথম তিনিই প্রৌঢ়ত্বের শুভ্রতা প্রত্যক্ষ করেন। ইবরাহীম (আ) বললেন, হে আমার প্রতিপালক! এটা কী? আল্লাহ বললেন, এ হল মর্যাদা। ইবরাহীম (আ) বললেন, হে প্রতিপালক! তা হলে আমায় মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করে দিন। ইয়াহয়া ও সাঈদ ব্যতীত অন্য সবাই আরও কিছু বাড়িয়ে বলেছেন যেমনঃ তিনিই সর্বপ্রথম লোক যিনি গোঁফ ছোট করেন, সর্বপ্রথম ক্ষৌরকর্ম করেন, সর্বপ্রথম পায়জামা পরিধান করেন। হযরত ইবরাহীম (আ)-এর কবর, তাঁর পুত্র ইসহাক (আ)-এর কবর ও তাঁর পৌত্র ইয়াকূব (আ)-এর কবর ‘মুরাব্বা’ নামক গোরস্তানে যা হযরত সুলায়মান ইবন দাউদ (আ) হিবরূন (Hebron) শহরে তৈরি করেছিলেন। বর্তমানে এর নাম বালাদুল খলীল (খলীলের শহর)।৮১ (সম্প্রতিকালে শহরটি খলিলীয়া নামে পরিচিতি।) বনী ইসরাঈলের যুগ থেকে আমাদের এই যুগ পর্যন্ত বংশ ও জাতি পরম্পরায় ধারাবাহিকভাবে এ কথাই চলে আসছে। যে, হযরত ইবরাহীম (আ)-এর কবর মুরাব্বাতে অবস্থিত। সুতরাং কথাটা যে সঠিক, তা নিশ্চিতভাবে বলা চলে। তবে কোন নির্ভরযোগ্য সূত্রে তাঁর কবর কোনটি তা নির্ণিত হয়নি। সুতরাং ঐ স্থানটির যত্ন করা এবং তার সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করা সকলের কর্তব্য, এ স্থানটি পদদলিত করা উচিত নয়। কেননা, হতে পারে যে স্থানটি পদদলিত করা হচ্ছে তারই নিচে হযরত ইবরাহীম খলীল বা তার কোন পুত্রের কবর রয়েছে। ইবন আসাকির ওহব ইবন মুনাব্বিহ সূত্রে বলেছেন, হযরত ইবরাহীম (আ)-এর কবরের কাছে একটি প্রাচীন শিলা পাওয়া গিয়েছে, যার উপর নিম্নলিখিত কবিতা লেখা রয়েছেঃ

الهى جهولا امله يموت من جا اجله

او من دنا من حتفه - لم تغن عنه حيله

وكيف يبقى اخر - من مات عنه اوله

والمرء لا يصحبه - في القبر الا عمله

অর্থঃ হে আল্লাহ! যে ব্যক্তির নির্ধারিত সময় ঘনিয়ে আসে তার সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা জলাঞ্জলি দিয়ে মৃত্যুর কাছে সে আত্মসমর্পণ করে। মৃত্যু যার দুয়ারে এসে যায় তাকে কোন কলাকৌশল আর বাঁচিয়ে রাখতে পারে না। পূর্বের লোকই যখন গত হয়ে গেছে, তখন আর শেষের লোক টিকে থাকে কোন উপায়ে। মানুষ তার কবরের সাথী নিজের আমল ভিন্ন কাউকেই পাবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন