hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১ম খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

(৪) অশান্তি ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা
সে যুগের বৈশিষ্ট্য ছিল ভয় ও ত্রাস। সে ভীতি ও ত্রাসের উৎস ছিল তাতাররা। বছরের পর বছর ধরে উত্তাল তরঙ্গের মত তারা হানা দিতে থাকে।

ইবন কাছীর (র) মানুষের এই সন্ত্রস্ত ভাবকে এভাবে বর্ণনা করেছেনঃ “সংবাদ প্রচারিত হল যে, তাতাররা সিরিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং তারা মিসরেও হানা দেবে। ফলে মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠে এবং তারা দুর্বল থেকে দুর্বলতর হতে থাকে। তাদের জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ পায়। তারা পালাতে থাকে মিসরের ছোট ছোট শহর, কুরক, শূবাক ও সংরক্ষিত দুর্গগুলোর দিকে। উট বিক্রি হতে লাগল হাজার দিরহামে, গাধা পাঁচশ’ দিরহামে এবং গৃহের আসবাবপত্র ও খাদ্য-সামগ্রী পানির দরে বিক্রি হতে লাগল। শহরে ঘোষণা দেয়া হল—কেউ যেন পরিচয়পত্র ছাড়া পথে বের না হয়। পরে সংবাদ এল যে, মিসরের সুলতান শত্রুবাহিনীর বিরুদ্ধে সিরিয়া অভিমুখে বের হওয়ার পর পুনরায় মিসর ফিরে এসেছেন। এতে ভীতি আরো বহুগুণ বেড়ে গেল এবং অবস্থা আরো শোচনীয় হয়ে পড়ল। এদিকে খাদ্যাভাব, অতি বর্ষণ, প্রচণ্ড শীত, ক্ষুধা ও আকালের কারণে পশুপাল দুর্বল ও ক্ষীণ হয়ে পড়ে।"২৩ [ইবন কাসীর, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খঃ ১৪, পৃঃ ১৫, ১৬।]

তাতারদের ত্রাস এই ভীতিকে আরও তীব্রতর করে তোলে। তারা লাখ লাখ লোককে জবাই করে। বাড়িঘর ও প্রাসাদ-অট্টালিকা ধ্বংস করে, ধন-সম্পদ লুণ্ঠন করে এবং গাছপালা নির্মূল করে। তাতারদের ‘কাতীআ’ অঞ্চলে উপস্থিতি ইবন কাসীর (র) এভাবে বর্ণনা। করেছেনঃ “তাতাররা যখন দামেশকের নিকটবর্তী ‘কাতীআ’ অঞ্চলে পৌঁছে, তখন কাতীআ ও তার আশে-পাশে কোন লোক ছিল না। শহর ও দুর্গসমূহ লোকে লোকারণ্য হয়ে গেল। বাড়িঘর ও পথে-ঘাটে ভিড় জমে গেল। শহরে তখন কোন শাসক ছিল না, চোর-ডাকাতরা শহরে ও বাগ-বাগিচায় ঢুকে পড়ে। তারা সবকিছু ভেঙ্গে-চুরে দুমড়ে-মুচড়ে বিধ্বস্ত করে দেয় এবং যতটুকু পারল লুটপাট করে নিয়ে গেল। খুবানী, গম ও সকল শাক-সবজি সময়ের পূর্বেই কেটে তুলে নিয়ে যায়।"২৪ [ইবন কাসীর, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খঃ ১৪, পৃঃ ২৪।]

এ ভীতি তাতারদের সৃষ্ট সন্ত্রাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। বরং তাতাররা এবং ফিরিঙ্গীরা উভয় দলই এই ধ্বংসযজ্ঞে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অংশগ্রহণ করে। তাতাররা যা করেনি ফিরিঙ্গীরা তা ষোলকলায় পূর্ণ করে। তারা ৭৬৭ হিজরীতে আলেকজান্দ্রিয়ায় অভিযান পরিচালনা করে এবং ৪০০০ লোককে বন্দী করে এবং সাধ্যমত ধনসম্পদ লুণ্ঠন করে সমুদ্রপথে নিয়ে যায়। চারদিকে তখন শুধু ক্রন্দন, আর্তনাদ, হাহাকার, আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ ও আশ্রয় প্রার্থনা, হৃদয়বিদারক আহাজারী যা দেখে চোখ অশ্রুসজল হয় আর কান বধির হয়ে যায়।২৫ [ইবন কাসীর, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খঃ ১৪, পৃঃ ৩২৮।] ভয় শুধু বহিরাগত শত্রুদের পক্ষ থেকে ছিল না, অভ্যন্তরীণ অশান্তি ও বিপর্যয়ের ভয়ও ছিল। উদাহরণ স্বরূপ হাম্বলী সম্প্রদায় ও শাফিঈ সম্প্রদায়ের মধ্যে আকীদা সম্পর্কিত বিষয়ে সংঘটিত দাঙ্গাহাঙ্গামার উল্লেখ করা যেতে পারে। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি দামেশকে পর্যন্ত গড়ায় এবং উভয় পক্ষ নায়েবে সুলতান ‘টাংকর’-এর দপ্তরে উপস্থিত হয়। তিনি তাদের মধ্যে আপস রফা করে দেন।২৬ [ইবন কাসীর, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খঃ ১৪, পৃঃ ৭৭।]

নিরীহ মানুষদেরকে ভীতসন্ত্রস্ত রাখার ক্ষেত্রে উগ্রপন্থী দলগুলোর প্রভাব ছিল। এসকল দলের বিরুদ্ধে সৈন্য সমাবেশ করার ব্যাপারে গভর্নরদের কোন গরজ ছিল না। তবে শাংকল মাংকল একবার দুরান অঞ্চলে ওদের একটি দলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। তিনি তাদেরকে পরাজিত করেছিলেন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসাবে তাদের খণ্ডিত শিরগুলো বুসরার প্রাচীরের ওপর ঝুলিয়ে রেখেছিলেন।২৭ [ইবন কাসীর, আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খঃ ১৪, পৃঃ ২৭৭, ২৭৮।]

এ সময়ে শুধু অশান্তি, যুদ্ধ-বিগ্রহ ও গুপ্তঘাতকদের ভীতি ছিল তা নয় বরং তখন একাধিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও ঘটেছিল। কখনো কখনো দলে দলে পঙ্গপাল উড়ে এসে ক্ষেত-খামার ও ফলমূল, বৃক্ষের পাতা খেয়ে নিঃশেষ করে দিত। তখন পত্র-পল্লবহীন গাছগুলো লাঠির ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকত। মানুষের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল আর মৃত্যু চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। সাথে সাথে ভূমিকম্পে মানুষের বাড়িঘর ও যানবাহন ধ্বংস এবং অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হচ্ছিল। এর সাথে প্রলয়ঙ্করী বন্যা ও প্লাবন দেখা দেয় ফলে শহর ও নগর ধ্বংস হয় এবং প্রচুর প্রাণহানি ঘটে। নীলনদ থেকে বাঁধভাঙ্গা জোয়ার উঠে পানিতে শহর-নগর ডুবে যায় এবং বহু লোকজন মারা যায়। প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এটি সংক্রামিত হতে থাকে শহর থেকে শহরে, নগর থেকে নগরে। ফলে লাখ লাখ মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হয় এবং এতে মানুষের মনোবল ভেঙ্গে পড়ে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন