hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১ম খন্ড

লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইবন কাসীর আদ-দামেশকী (র)

৭৫
তাঁবু গম্বুজের নির্মাণ প্রসঙ্গ
কিতাবীরা বলে, আল্লাহ তা’আলা একবার মূসা (আ)-কে শিমশার কাঠ, পশুর চামড়া ও ভেড়ার পশমের দ্বারা একটি তাঁবু তৈরি করতে নির্দেশ দিলেন। তাদের বিস্তারিত বর্ণনা অনুযায়ী রঙিন রেশম, স্বর্ণ ও রৌপ্য দ্বারা এটাকে সজ্জিত করার হুকুম দেয়া হয়েছিল। এতে ছিল ১০টি শামিয়ানা। প্রতিটি শামিয়ানার দৈর্ঘ্য ছিল ২৮ হাত ও প্রস্থ ছিল ৪ হাত। এতে ছিল ৪টি দরজা। এর রশিগুলো ছিল বিভিন্ন প্রকার ও বিভিন্ন বর্ণের রেশমের, এতে এর চৌকাঠ এবং তাক ছিল স্বর্ণ-রৌপের। প্রতিটি কোণে ছিল ২টি দরজা, এছাড়া আরো অনেক বড় বড় দরজা ছিল। এর পর্দাগুলো ছিল রঙিন রেশমের।

এ ধরনের বহু সাজসজ্জার সামগ্রী ছিল, যার ফিরিস্তি ছিল দীর্ঘ। আল্লাহ তা’আলা মূসা (আ)-কে শিমশার কাঠের একটি সিন্দুকও তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। যার দৈর্ঘ্য আড়াই হাত এবং প্রস্থ দুই হাত এবং উচ্চতা ছিল দেড় হাত। ভিতরে ও বাইরে খাঁটি স্বর্ণ দ্বারা মোড়ানো, এটার চার কোণে ছিল চারটি আঙটা, সম্মুখ ভাগের দুই দিকে ছিল চারটি আঙটা; সম্মুখ ভাগের দুই দিক ছিল স্বর্ণের পাখাবিশিষ্ট। তাদের ধারণায় দুইজন ফেরেশতার মূর্তি যেগুলো মুখামুখিভাবে স্থাপিত ছিল। এগুলো ছিল বাসলিয়াল নামক এক প্রসিদ্ধ শিল্পীর তৈরি। তারা তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন শিমশার কাঠের একটি খাঞ্চা তৈরি করতে যার দৈর্ঘ দুই হাত ও প্রস্থ ছিল দেড় হাত। এতে ছিল উপরের ডালায় স্বর্ণের তালা ও স্বর্ণের মুকুট; এর চতুর্দিকে ছিল চারটি আঙটা যেগুলোর কিনারাগুলো ছিল সোনা দিয়ে মোড়ানো, আনারের ন্যায় কাঠের তৈরি। তারা তাকে নির্দেশ দেন, তিনি যেন খাঞ্চাটিতে বড় বড় বরতন; পেয়ালা ও গ্লাসের ব্যবস্থা করেন। তিনি যেন স্বর্ণের মিনারা তৈরি করেন যাতে প্রতি দিকে তিনটি করে ৬টি সোনার আলোক স্তম্ভ থাকে, আবার প্রতিটি স্তম্ভে যেন ৩টি করে বাতি থাকে। আর মিনারের মধ্যে যেন চারটি ঝাড় বাতি থাকে। এগুলো এবং অন্যান্য পানপাত্র যেন স্বর্ণ দ্বারা নির্মিত হয়। এ সবই ছিল বাসলিয়ালের তৈরী। বাসলিয়াল পশু যবাইর বেদীও তৈরী করে। উপরোক্ত তাঁবুটি তাদের বছরের প্রথম দিন স্থাপন করা হয়। আর সেই দিনটি ছিল বসন্ত ঋতুর প্রথম দিন। আবার ‘শাহাদতের তাবৃত’ও এতে স্থাপন করা হয়েছিল। সম্ভবত কুরআনুল করীমে নিম্নোক্ত আয়াতে এর প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে।

إِنَّ ءَایَةَ مُلۡكِهِۦۤ أَن یَأۡتِیَكُمُ ٱلتَّابُوتُ فِیهِ سَكِینَة مِّن رَّبِّكُمۡ وَبَقِیَّة مِّمَّا تَرَكَ ءَالُ مُوسَىٰ وَءَالُ هَـٰرُونَ تَحۡمِلُهُ ٱلۡمَلَـٰۤىِٕكَةُۚ إِنَّ فِی ذَ  ٰ⁠ لِكَ لَـَٔایَة لَّكُمۡ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِینَ [Surat Al-Baqarah 248]

“তার রাজত্বের নিদর্শন এই যে, তোমাদের কাছে সেই ‘তাবৃত (ইসরাইলীদের পবিত্র সিন্দুক) আসবে, যাতে তোমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে চিত্ত প্রশান্তি এবং মূসা ও হারূন বংশীয়গণ যা পরিত্যাগ করেছে তার অবশিষ্টাংশ থাকবে; ফেরেশতাগণ এটা বহন করে আনবে। তোমরা মু’মিন হও, তবে অবশ্যই তোমাদের জন্য এটাতে নিদর্শন রয়েছে।” (সূরা বাকারাঃ ২৪৮)

ইসরাঈলী কিতাবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। এতে রয়েছে তাদের শরীয়ত, তাদের জন্যে নির্দেশাবলী, তাদের কুরবানীর বৈশিষ্ট্য ও নিয়ম-পদ্ধতি সম্বন্ধে আলোচনা। আবার এতে বর্ণিত রয়েছে যে, তার গম্বুজ তাদের বাছুর পূজার পূর্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আর পূজার ব্যপারটি ঘটেছিল তাদের বায়তুল মুকাদ্দাসে আগমনের পূর্বে। আবার এটা ছিল তাদের কাছে কাবা শরীফ তুল্য। তারা এটার ভিতরে ও এটার দিকে মুখ করে প্রার্থনা করত এবং এটার কাছেই আল্লাহ তা’আলার নৈকট্য লাভের আশা করত। মূসা (আ) যখন এটার ভিতরে প্রবেশ করতেন, তখন বনী ইসরাঈলরা এর পাশে দণ্ডায়মান থাকত। এটার দ্বারপ্রান্তেই মেঘমালার জ্যোতির্ময় স্তম্ভ অবতীর্ণ হত। তখন তারা আল্লাহ তা’আলার উদ্দেশে সিজদায় লুটিয়ে পড়ত। আল্লাহ তা’আলা মেঘমালার স্তম্ভের ভেতর থেকে মূসা (আ)-এর সাথে কথা বলতেন। মেঘমালাটি ছিল আল্লাহ তা’আলার নূর। আল্লাহ তা’আলা মূসা (আ)-কে লক্ষ্য করে একান্তে কথা বলতেন। তার প্রতি আদেশ-নিষেধ অবতীর্ণ করতেন এবং মূসা (আ) তাবূতের কাছে দণ্ডায়মান থাকতেন ও পূর্বোক্ত মূর্তি দুইটির মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান করতেন। ঐ সময় শাসন সংক্রান্ত ফয়সালাদি আসতো। ইবাদতখানায় স্বর্ণ, রঙিন মুক্তার ব্যবহার তাদের শরীয়তে বৈধ ছিল। কিন্তু আমাদের শরীয়তে বৈধ নয়। আমাদের শরীয়তে মসজিদে জাঁকজমকপূর্ণ অলংকরণ নিষিদ্ধ, যাতে সালাতে মুসল্লীদের মনোযোগ বিঘ্নিত না হয়। মসজিদুন নববী সম্প্রসারণের সময় উমর ইবন খাত্তাব (রা) নির্মাণ কার্যে নিযুক্ত ব্যক্তিকে বললেন, এমনভাবে মসজিদটি নির্মাণ কর যাতে বেশি বেশি লোকের জায়গা হয়। তবে মসজিদকে লাল কিংবা হলদে রং করা থেকে বিরত থাকো। কেননা, তাতে মুসল্লীগণের একাগ্রতা বিঘ্নিত হবে। আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) বলেন, আমরা অবশ্যই আমাদের মসজিদসমূহ এমনভাবে সাজাবো না যেরূপ ইয়াহুদ ও নাসারাগণ তাদের গির্জা ও ইবাদতখানাগুলোকে সাজায়। এটা হবে মসজিদের ইজ্জত-সম্মান ও পবিত্রতা রক্ষার উদ্দেশ্যে। কেননা, এই উম্মত পূর্বেকার উম্মতের মত নয়। তাদেরকে আল্লাহ তা’আলা তাদের সালাতে আল্লাহ্ তা’আলার প্রতি একনিষ্ঠ ও মনোযোগী হবার, গাইরুল্লাহ থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখার, এমনকি অন্য সকল চিন্তা ও ধ্যান-ধারণা থেকে মুক্ত থেকে শুধু আল্লাহ তা’আলার দিকে একাগ্রচিত্ত হবার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহর জন্যেই সমস্ত প্রশংসা।

উপরোক্ত ‘তাঁবু গম্বুজ’ তীহ্ প্রান্তরে বনী ইসরাঈলদের সাথে ছিল, তারা এটার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করত। এটা ছিল তাদের কিবলা ও কাবা এবং মূসা (আ) ছিলেন তাদের ইমাম আর তাঁর ভাই হারূন (আ) ছিলেন কুরবানীর দায়িত্বপ্রাপ্ত। যখন হারূন (আ) এবং তারপর মূসা (আ) ইনতিকাল করলেন, তখন হারূন (আ)-এর বংশধররা নিজেদের মধ্যে কুরবানী প্রথা চালু রাখেন এবং এটা আজ পর্যন্তও তাদের মধ্যে চালু রয়েছে। মূসা (আ) এরপর তার খাদেম ইউশা ইবন নূন (আ) রিসালাতসহ সমস্ত কাজের দায়িতুভার গ্রহণ করেন এবং তিনি তাদেরকে নিয়ে বায়তুল মুকাদ্দাসে প্রবেশ করেন। এ ঘটনাটি পরে বর্ণনা করা হবে।

মোদ্দা কথা, বায়তুল মুকাদ্দাসের নিয়ন্ত্রণভার যখন ইউশা ইবন নূন (আ)-এর উপর ন্যস্ত হল, তখন তিনি বায়তুল মুকাদ্দাসের একটি পাথরের উপর এই তাঁবু গম্বুজটি স্থাপন করেন। বনী ইসরাঈলরা এটার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করত। অতঃপর যখন তাঁবু গম্বুজটি বিনষ্ট হয়ে যায় তখন তারা গম্বুজের স্থান অর্থাৎ পাথরের দিকেই সালাত আদায় করতে লাগল। এজন্যেই ইউশা (আ)-এর পর থেকে রাসূলল্লাহ (সা)-এর যুগ পর্যন্ত সমস্ত নবীর কিবলা ছিল এটাই। এমনকি রাসলল্লাহ (সা)ও হিজরতের পূর্বে বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে আদায় করতেন, তবে কাবা শরীফকে সামনে রেখেই তা করতেন। রাসূল (সা) যখন মদীনায় হিজরত করেন, তখন তাঁকে বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করার নির্দেশ দেয়া হয় এবং ষোল মাস মতান্তরে সতের মাস তিনি বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত আদায় করেন। অতঃপর দ্বিতীয় হিজরীর শাবান মাসে আসরের নামাযে মতান্তরে জোহরের সময় ইবরাহীমী কিবলা কাবার দিকে কিবলা পরিবর্তিত হয়। তাফসীরে এ সম্পর্কে নিম্ন বর্ণিত আয়াতের ব্যাখায় বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ

۞ سَیَقُولُ ٱلسُّفَهَاۤءُ مِنَ ٱلنَّاسِ مَا وَلَّىٰهُمۡ عَن قِبۡلَتِهِمُ ٱلَّتِی كَانُوا۟ عَلَیۡهَاۚ قُل لِّلَّهِ ٱلۡمَشۡرِقُ وَٱلۡمَغۡرِبُۚ یَهۡدِی مَن یَشَاۤءُ إِلَىٰ صِرَ  ٰ⁠طࣲ مُّسۡتَقِیم ࣲ[Surat Al-Baqarah 142]

قَدۡ نَرَىٰ تَقَلُّبَ وَجۡهِكَ فِی ٱلسَّمَاۤءِۖ فَلَنُوَلِّیَنَّكَ قِبۡلَة تَرۡضَىٰهَاۚ فَوَلِّ وَجۡهَكَ شَطۡرَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِۚ وَحَیۡثُ مَا كُنتُمۡ فَوَلُّوا۟ وُجُوهَكُمۡ شَطۡرَهُۥۗ [Surat Al-Baqarah 144]

‘নির্বোধ লোকেরা বলবে যে, তারা এ যাবত যে কিবলা অনুসরণ করে আসছিল এটা হতে কিসে তাদেরকে ফিরিয়ে দিল? বল, পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছে সরল পথে পরিচালিত করেন। আকাশের দিকে তোমার বার বার তাকানোকে আমি অবশ্য লক্ষ্য করি। সুতরাং তোমাকে অবশ্যই এমন কিবলার দিকে ফিরিয়ে দিচ্ছি, যা তুমি পছন্দ কর। অতএব, তুমি মসজিদুল হারমের দিকে মুখ ফিরাও। তোমরা যেখানেই থাক না কেন সেদিকে মুখ। ফিরাও। (সূরা বাকারাঃ ১৪২: ১৪৪)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন