hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মহা উপদেশ (‘আদী ইবন মুসাফিরের অনুসারীদের এর কাছে লেখা চিঠি)

লেখকঃ শাইখুল ইসলাম আহমাদ ইবন তাইমিয়্যাহ

১০
অনুচ্ছেদ: মনে জাগরুক করা ও স্মরণ করা
হে পাঠক মণ্ডলী! আপনারা, আল্লাহ তা‘আলা আপনাদেরকে সংশোধন করুন, আল্লাহ তা‘আলা আপনাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন যে, তিনি আপনাদেরকে তাঁর দীনের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন। ইয়াহূদী, খ্রিস্টান ও মুশরিক, যার ইসলাম থেকে বের হয়ে গেছে তাদের যে পরীক্ষার সম্মূখীন হতে হয়েছে তা থেকে আল্লাহ তা‘আলা আপনাদেরকে রক্ষা করেছেন। নি‘আমতসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ ও মহান নি‘আমত হলো ইসলাম। তাই ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো দীন তথা জীবন ব্যবস্থা আল্লাহ তা‘আলা কবুল করবেন না। মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥﴾ [ ال عمران : ٨٥ ]

“যারা ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো দীন (জীবন ব্যবস্থা) অনুসন্ধান করবে তা কখনই গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫]

অনুরূপভাবে আল্লাহ তা‘আলা আপনাদেরকে সুন্নতের সাথে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত করে রাফেদ্বী [রাফেদ্বী সম্প্রদায়ের নামকরণের মূল হচ্ছে, যায়েদ ইবন আলী ইবন হুসাইন ইবন আলী ইবন আবী তালেব হিশাম ইবন আব্দুল মালিকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বের হওয়ার পর যায়েদের অনুসারীদের কেউ কেউ আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু সম্পর্কে অপবাদ ও গাল দেয়। তখন তিনি তাদের নিষেধ করেন। তারা শুনলো না বরং তার সঙ্গ ত্যাগ করল। তার সাথে কেবল একশত অস্বারোহী ছিল। তখন তিনি তাদের বললেন, তোমরা আমাকে ‘রফদ্ব’ করলে অর্থাৎ ছেড়ে দিলে? তারা বলল, হাঁ, তারপর থেকে তাদের রাফেদ্বী বলা হতো। আবার কেউ কেউ বলেন, তাদের রাফেদ্বী বলার কারণ, তারা যায়েদ ইবন আলীকে ছেড়ে চলে যায়। তারা আবু বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু সম্পর্কে তার মতামত জানতে চাইলে তিনি তাদের প্রসংশা করেন এবং বলেন, আমি আমার পিতাকে তাদের বিষয়ে ভালো ছাড়া কোন খারাপ মন্তব্য করতে দেখিনি। তারা দুই আমার দাদার দুই বাহু ছিলেন সুতরাং আমি তাদের থেকে দায় মুক্তি ঘোষণা দিতে পারবো না। তার কথা শোনে তারা তাকে ছেড়ে দিল এবং প্রত্যাখ্যান করল এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। তখন তাদের বললেন, তোমরা আমাকে ‘রফদ্ব’ করলে বা ছেড়ে দিলে। সে সময় থেকে তাদেরকে ‘রাফেদ্বী’ বলা হয়। তারপর নামটি শিয়াদের ওপর প্রয়োগ করা হয়।], জাহমিয়া [জাহাম ইবন সাফওয়ানের অনুসারী। তারা বলে জান্নাত ও জাহান্নামের অধিবাসীরা তাতে প্রবেশ করার পর জান্নাত ও জাহান্নাম ধ্বংস হয়ে যাবে। তখন কেবল আল্লাহ ছাড়া আর কেউ থাকবে না। তারা বলে ঈমান হলো, শুধু আল্লাহকে জানা আর কুফর হলো, আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞতা।], খারেজী [খারেজী যারা তাহকীম তথা শালিসের পর আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর পক্ষ ত্যাগ করেন। কারণ, তিনি তাহকীম কবুল করেন। অথচ তারাই তাকে তাহকীম মেনে নেওয়ার ওপর বাধ্য করেন। তারা বলেছিল, অপর পক্ষ আমাদের আল্লাহর কিতাবের দিক আহ্বান করছে আর তুমি আমাদের তলোয়ারের দিকে আহ্বান করছ? তারপর যখন আলী রা. তাদের কথা অনুযায়ী তাহকীম মেনে নেন, তখন তারা বলে, তুমি কাফের হয়ে গেছ। কারণ, তুমি মানুষকে বিচারক মানছ।] ও কাদারিয়্যাদের [কাদারিয়্যাহ: যারা কাদার তথা তাকদীরকে অস্বীকার করে তাদের বলা হয় কাদারিয়্যাহ। তারা বলে, কোনো কদর তথা পূর্ব নির্ধারিত কিছু নাই, সব কর্ম নতুন। তারা আরো বিশ্বাস করে সব বান্দা তার কর্মে স্রষ্টা। তাদের কাদারিয়্যাহ এ জন্য বলা হয়, তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে কাদরকে অস্বীকার করে এবং সবকিছু বান্দার পক্ষ থেকে হয় অর্থাৎ কাদরকে তারা বান্দার জন্য সাব্যস্ত করে। এদেরকে এ উম্মতের মুজূসী বলা হয়ে থাকে।] মতো বহু বিদ‘আতপন্থী পথভ্রষ্ট দলের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন। যাদের অনেকেই আপনাদের সামনেই আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ, গুণাবলী, তারা ফায়সালা ও তাকদীর নির্ধারণকে অস্বীকার করেছে অথবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণকে গাল দিয়েছে। যাকে আল্লাহ তা‘আলা ইসলাম নামক নি‘আমত দ্বারা ধন্য করেছেন তার জন্য এটিই আল্লাহর তা‘আলার নি‘আমতরাজীর মধ্যে সবচেয়ে বড় নি‘আমত। কারণ, এ ইসলামই হলো ঈমানের পরিপূর্ণতা ও দীনের সম্পূর্ণতা। এ কারণেই আপনাদের মধ্যে বহু দুনিয়া বিমুখ দীনদার, পরিচ্ছন্ন জীবনের অধিকারী, যোদ্ধা ও মুজাহিদ রয়েছে যার দৃষ্টান্ত বিদ‘আতী গোষ্ঠিদের মধ্যে পাওয়া দূর্লভ।

সাহায্যপ্রাপ্ত মুসলিম সৈন্য ও আল্লাহর বাহিনীর মধ্যে তোমাদের এমন সব লোক সব সময়েই রয়েছে যাদের কারো দ্বারা আল্লাহ এ দীনকে শক্তিশালী করেন এবং মুমিনদের সম্মান বৃদ্ধি করেন। আর তোমাদের মধ্যে যারা দুনিয়া বিমূখ ও ইবাদাতগার, তাদের মধ্যে এমন অনেক লোকও আছে যার রয়েছে অনেক পাক-পবিত্র ‘হাল’ বা ভালো অবস্থা এবং সন্তোষজনক পন্থা। আর তার রয়েছে দূরদর্শিতা ও অসাধারণ প্রতিভা।

তোমাদের মধ্যে রয়েছে আল্লাহর বন্ধু, যারা আল্লাহকে ভয় করত, দুনিয়াতে যাদের রয়েছে সততার সু-খ্যাতি। কারণ, পূর্বের মনীষীগণ যেমন, শাইখুল ইসলাম আবুল হাসান আলী ইবন আহমদ ইবন ইউসুফ আল-কুরাশী এবং তারপর বিশিষ্ট শেখ আদী ইবন মুসাফির আল-উমাওয়ী এবং আরো যারা তাদের পথের পথিক, তাদের দীনদারী, সুন্নতের অনুসরণ ও তাকওয়ার কারণে আল্লাহ তাদের সম্মান কত বাড়িয়ে দিয়েছেন এবং তাদের মর্তবাকে কত মহান করেছেন।

আর শাইখ (‘আদী) ছিলেন আল্লাহর নেক বান্দা ও সুন্নাতের অনুসারী বড় বড় মাশায়েখ ও সম্মানী মনীষীদের অন্যতম এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন পরিচ্ছন্ন জীবনের অধিকারী এবং উন্নত চরিত্র ও বৈশিষ্টের কেন্দ্রবিন্দু যা জ্ঞানী বলতে সবাই জানত। উম্মতের মধ্যে তার অবদান খুবই সু-প্রসিদ্ধ এবং তার সততা খুবই আলোচিত। আর তার থেকে যে আকীদা বা বিশ্বাস পাওয়া যায় তা তার পূর্বের যে সব মাশায়েখদের পথের পথিক ছিলেন তাদের আকীদা বা বিশ্বাসের ব্যতিক্রম ছিল না। যেমন বিশিষ্ট ইমাম আবুল ফারাজ আব্দুল ওয়াহেদ ইবন মুহাম্মাদ ইবন আলী আল-আনছারী আশ-শীরাযী, (দামেশকী) এবং শাইখুল ইসলাম (আল-হাক্বারী) ও আরো যারা তাদের উভয়ের মত। এ সব মাশাইখ (আকীদা ও আমলের) বড় বড় মূলনীতিসমূহের ক্ষেত্রে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মূলনীতিসমূহ থেকে বের হন নি; বরং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মূলনীতিসমূহের প্রতি তাদের ছিল সযত্ন চলাচল ও আগ্রহ উদ্দীপনা এবং তা প্রচার প্রসার ঘটানোর প্রতি ছিল প্রকট আগ্রহ ও চাহিদা। আর যারা দীন, ফযল ও ভালো কাজের বিরোধিতা করত তাদের প্রত্যাখ্যান করার ব্যাপারে তারা ছিলেন উদগ্রীব। আল্লাহ তা‘আলা তাদের সম্মান ও মর্যাদাকে কতইনা বৃদ্ধি করেছেন। তারা তাদের বড়দের মূলনীতি সম্পর্কে শুধু বলত: ভালো, কোনো মন্তব্য করত না। অথচ তাদের কথা এবং তাদের মতো যারা রয়েছেন তাদের বিষয়ে এ কথা দিবালোকের মতো সত্য যে, তাদের কথার মধ্যেও দুর্বল হাদীস, অগ্রণযোগ্য কথা-বার্তা ও বাতিল কিয়াস রয়েছে যা কেবল সুক্ষ্ম দৃষ্টির অধিকারী জ্ঞানীরাই ধরতে পারেন।

কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যতীত কারও কথাই নির্দ্বিধায় গ্রহণযোগ্য নয়, রাসূল ব্যতীত প্রতিটি মানুষের কথা গ্রহণীয়ও হতে পারে এবং বর্জনীয়ও হতে পারে। বিশেষ করে পরবর্তী যুগের অনেক মুসলিম যারা পবিত্র কুরআন, হাদীস এবং এ দু’য়ের সমন্বয়ে নির্গত ফিকহের আলোকে সমাধান গ্রহণ করে নি। তারা সহীহ ও দ‘ঈফ হাদীসসমূহের মধ্যে পার্থক্যও করে নি। কিয়াস করার পরিণতি ও তার ভয়াবহ রূপ সম্পর্কে তারা এত বেশি সতর্কও ছিল না। বস্তুতঃ এ সব কারণগুলোর সাথে সাথে আরো যোগ হয়েছিল, তাদের প্রবৃত্তি চর্চার প্রাধান্য, মানব রচিত মতাদর্শের আধিক্যতা, মতভেদ ও দলাদলির প্রকট রূপ এবং শত্রুতা ও বিভক্তির বিভীষিকা। উল্লিখিত বিষয়াবলী ও এ জাতীয় কারণগুলো মানুষের মধ্যে দু’টো অন্যায় গুণের উদ্রেক করে। মানুষের মধ্যে যুলুম-অত্যাচার ও অজ্ঞতার শক্তিকে বৃদ্ধি করে। যে দু’টি গুণে মানুষ গুণান্বিত হওয়ার কথাটি আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন। যাদের পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে কারীমে বলেছেন,

﴿وَحَمَلَهَا ٱلۡإِنسَٰنُۖ إِنَّهُۥ كَانَ ظَلُومٗا جَهُولٗا ٧٢﴾ [ الاحزاب : ٧٢ ]

“কিন্তু মানুষ ওটা বহন করল, সে তো অতিশয় যালিম, অতিশয় অজ্ঞ”। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৭২]

যখন আল্লাহ তা‘আলা মানুষের প্রতি জ্ঞান ও ন্যায় দ্বারা ভূষিত করার মাধ্যমে দয়া করেন, তখন তিনি তাকে এ ধরনের গোমরাহী থেকে নাজাত দেন। তাই আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَٱلۡعَصۡرِ ١ إِنَّ ٱلۡإِنسَٰنَ لَفِي خُسۡرٍ ٢ إِلَّا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَتَوَاصَوۡاْ بِٱلۡحَقِّ وَتَوَاصَوۡاْ بِٱلصَّبۡرِ ٣ ﴾ [ العصر : ١، ٤ ]

“মহাকালের শপথ, মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। কিন্তু তারা নয়, যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয়, ধৈর্য ধারণে পরস্পরকে উদ্বুদ্ধ করে থাকে”। [সূরা আল-আছর, আয়াত: ১-৩]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَجَعَلۡنَا مِنۡهُمۡ أَئِمَّةٗ يَهۡدُونَ بِأَمۡرِنَا لَمَّا صَبَرُواْۖ وَكَانُواْ بِ‍َٔايَٰتِنَا يُوقِنُونَ ٢٤﴾ [ السجدة : ٢٤ ]

“আর আমরা তাদের মধ্য হতে নেতা মনোনীত করেছিলাম যারা আমার নির্দেশ অনুসারে পথ প্রদর্শন করত, যতদিন তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল আর আমার আয়াতসমূহের ওপর দৃঢ় বিশ্বাসী ছিল”। [সূরা আস-সাজদাহ, আয়াত: ২৪]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন