মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মহা উপদেশ (‘আদী ইবন মুসাফিরের অনুসারীদের এর কাছে লেখা চিঠি)
লেখকঃ শাইখুল ইসলাম আহমাদ ইবন তাইমিয়্যাহ
৩৩
তার শাসন আমলের কতক বড় বড় ঘটনা:
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/54/33
এক. হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর হত্যা কার্য তার অন্যতম। তিনি হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে হত্যার নির্দেশ দেন নি এবং তার হত্যার সংবাদে আনন্দ প্রকাশ করেন নি। তার সম্মানহানি করে দন্তের উপর লাঠির আঘাত করে ঠাট্টা বিদ্রƒপও করেন নি। হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর মস্তক শাম এ নিয়ে যেতেও নির্দেশ দেন নি। তাকে হত্যার কারণে তিনি আনন্দ প্রকাশ করেন নি; বরং তিনি হুসাইনকে বাধা প্রদানের নির্দেশ দেন এবং তার কর্মকে প্রতিহত করতে নির্দেশ দেন তাতে যদি যুদ্ধ করা লাগে তবুও। ইয়াজিদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী ও প্রতিনিধি তার নির্দেশের ওপর বাড়াবাড়ি করেছে। সামর ইবন জুল জাওশান সৈন্যদলকে উবাইদুল্লাহ ইবন যিয়াদের নেতৃত্বে তাকে হত্যার জন্য উৎসাহিত করেছে। ফলে উবাইদুল্লাহ ইবন যিয়াদ তার প্রতি সীমালঙ্ঘন করেছিল। তখন হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাকে ইয়াজিদ এর নিকট নিয়ে যাওয়া অথবা প্রহরারত অবস্থায় সুরক্ষিত সীমান্ত শহরে পাঠানো বা মক্কায় প্রত্যাবর্তন করার জন্যে তাদের নিকট আবেদন করেছিলেন। তারা হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর আবেদন প্রত্যাখ্যান করে এবং আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেয়। সে উমার ইবন সা‘আদকে নির্দেশ দেন সে যেন হুসাইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ফলে তারা তাকে ও তার পরিবারের কিছু সংখ্যক ব্যক্তিবর্গকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
তার হত্যাকাণ্ড ছিল ভয়াবহ বিপদসমূহের অন্যতম। কেননা, হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ও তার পূর্বে উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কে হত্যা করা এ উম্মতের ভয়াবহ ফিতনাসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। তাদের দুজনকে তারাই হত্যা করেছে যারা আল্লাহ তা‘আলার নিকট সৃষ্টির নিকৃষ্টতম জীব।
তারপর হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর পরিবারবর্গ যখন তার দরবারে এসেছিলেন, তিনি তাদেরকে যথোচিত সম্মান প্রদর্শন করেছিলেন এবং তাদেরকে সসম্মানে মদিনায় পাঠিয়ে ছিলেন। ইয়াজিদ কর্তৃক বর্ণিত আছে যে, তিনি হুসাইন এর হত্যার জন্য উবাইদুল্লাহ ইবন যিয়াদকে অভিসম্পাত করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমি ইরাকের অনুসারীদের বিষয়ে সন্তুষ্ট ছিলাম শুধুমাত্র হুসাইনের হত্যা ছাড়া। তা সত্ত্বেও তিনি তার হত্যার কোন প্রতিবাদ করেছেন এমন কোন কর্ম তার থেকে প্রকাশ পায়নি। তার হত্যার প্রতিশোধ ও বদলাও নেননি অথচ এটা তার ওপর ওয়াজিব ছিল। তাই হক পন্থীরা তার অন্যান্য কার্যকলাপের সাথে এ গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব পরিত্যাগ করার সমালোচনা করেছেন। পক্ষান্তরে যারা তার সঙ্গে শক্রতামূলক আচরণ করে, তারা তার ওপর বহু মিথ্যা অপবাদ চাপিয়ে দেয়।
আর দ্বিতীয় ঘটনা হলো, মদীনাবাসীগণ তার সঙ্গে আনুগত্যের শপথ গ্রহণের পর তা ভঙ্গ করেছিল, তার প্রেরিত প্রতিনিধিকে পরিবারসহ সেখান থেকে বের করে দিয়েছিল। অতঃপর তিনি একটি সৈন্যদলকে এ মর্মে প্রেরণ করেন যে, মদীনাবাসীর নিকট তারা আনুগত্য কামনা করবে, এতে যদি তারা সম্মত না হয় তাহলে তারা তিন দিন পর্যন্ত তাদের বুঝার সুযোগ দিবে। তারপর বাধা দিলে তারা অস্ত্রের সাহায্যে মদিনায় প্রবেশ করবে। তিন দিন পর তাদের রক্তকে তারা হালাল হিসাবে গ্রহণ করবে। নির্দেশ মোতাবেক সৈন্যদল তিনদিন পর্যন্ত মদিনায় অপেক্ষায় ছিল। তারপর তারা গণহত্যা শুরু করে, লুটতরাজ আরম্ভ করে, হারাম-কৃত মহিলাদেরকে জোর পূর্বক যৌন-ক্রিয়ার পাত্রে পরিণত করে। তারপর সে অপর একটি সৈন্য বাহিনীকে মক্কায় প্রেরণ করে, তারা মক্কা অবরোধ করে। ইয়াজিদের মৃত্যু পর্যন্ত তারা মক্কা অবরোধ করে রেখেছিল। এ ছিল ইয়াজিদের অত্যাচার ও সীমালঙ্ঘনের সংক্ষিপ্ত চিত্র যা তার নির্দেশে সংঘটিত হয়েছিল। এ জন্য আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদা হলো তাকে গালিও দিবে না ভালোবাসবেও না।
ছালিহ ইবন আহমদ ইবন হাম্বল বলেন, আমি আমার বাবাকে বললাম, জনগণ বলে, তারা ইয়াজিদকে ভালোবাসে। তিনি বললেন, হে আমার বৎস, যে আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে কি ইয়াজিদকে ভালবাসতে পারে! আমি বললাম, হে আমার বাবা! তাহলে আপনি তাকে অভিসম্পাত করেন না কেন? তিনি বললেন, হে আমার বৎস্য! তুমি কি কখনও তোমার বাবাকে কারো প্রতি অভিশাপ দিতে দেখেছ?
তার কর্তৃক বর্ণিত আছে- তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো: ইয়াজিদ ইবন মু‘আবিয়া কর্তৃক হাদীস বর্ণনা করুন। তিনি জবাবে বললেন, না। ইসলামে তার কোনো সম্মানিত স্থান নেই। সে কি ঐ ব্যক্তি নয় যে মদিনাবাসীর ওপর এই এই অপকর্ম ও অত্যাচার করেছিল?
মুসলিম নেতৃবর্গ আলিমদের নিকট ইয়াজিদ হলো রাজতান্ত্রিক বাদশাহদের অন্যতম। আল্লাহ তা‘আলার অলী ও সৎ মানুষদের মতো তারা তাকে ভালোবাসেন না। তাকে তারা গালিও দেন না। কেননা, কোনো নির্দিষ্ট মুসলিমকে অভিশাপ দেওয়া তারা পছন্দ করেন না। কেননা, ইমাম বুখারী সহীহ বুখারীতে উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক সহীহ সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, জনৈক ব্যক্তি যাকে হিমার (গাধা) বলা হতো। সে খুব বেশি মদ পান করত। আর যখন মদ খেত তখন আল্লাহ তা‘আলার রাসূলের নিকট আনা হতো এবং মদ পানের শাস্তি স্বরূপ তাকে প্রহার করা হতো। একবার এক ব্যক্তি বলল, আল্লাহ তা‘আলা তোমার প্রতি অভিশাপ করুন! কারণ, তুমি বারবার আল্লাহ তা‘আলার নবীর নিকট এ অপরাধ নিয়ে আস। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ ব্যক্তিকে বললেন,
«لا تلعنه فإنه يحب الله ورسوله»
“তাকে অভিশাপ করো না। কারণ, সে আল্লাহ তা‘আলা ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ভালোবাসে”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ১২৪]
তা সত্ত্বেও আহলে সুন্নাহর একদল লোক তাকে অভিশাপ করা বৈধ মনে করেন। কেননা, তারা বিশ্বাস করেন তিনি এমন নির্মম অত্যাচার করেছিলেন, যে অত্যাচার করার কারণে সে অত্যাচাকারীকে অভিশাপ করা যেতে পারে।
অপর দল তাকে মহব্বত করা পছন্দ করেন। কারণ, সে একজন মুসলিম। সাহাবীগণের যুগে সে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। সাহাবীগণ তার আনুগত্যের বায়‘আত নিয়েছিলেন। তারা বলেন, তার বহু কল্যাণময়ী কাজও ছিল। অথবা তিনি যা করেছিলেন তাতে তিনি একজন মুজতাহেদ ছিলেন।
সঠিক কথা হল, যার প্রতি মুসলিম ইমামগণের মতামত প্রতিষ্ঠিত, তা হলো তাকে বিশেষভাবে ভালোবাসারও দরকার নেই এবং তাকে অভিসম্পাত করাও যাবে না। তারপরও যদি সে যালিম ও ফাসিক হয়ে থাকে, আল্লাহ তা‘আলা যালিম ও ফাসিককে ক্ষমা করে দেন। বিশেষ করে যখন সে কোন মহান কাজ করে থাকে। ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে ইমাম বুখারী সহীহ বুখারীতে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, প্রথম যে দল কুসতুন্তনিয়্যা (কনস্টান্টিনোপল) যুদ্ধ করবে তারা ক্ষমা প্রাপ্ত হবে। আর ঐ স্থানে প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল ইয়াজিদ ইবন মু‘আবিয়ার নেতৃত্বে। আবু আইয়ুব আনসারীও রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার সঙ্গী ছিলেন।
অবশ্য ইয়াজিদ ইবন মু‘আবিয়া ও তার চাচা ইয়াজিদ ইবন ‘আবী সুফিয়ান দুইজনের নাম এক হওয়ার কারণে সংশয় দেখা দেয়। ইয়াজিদ ইবন আবু সুফিয়ান হলেন সাহাবী। তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠতম সাহাবীগণের অন্যতম। তিনি হারব কুরাইশ বংশের বিশিষ্ট ব্যক্তি। শাম এর আমীরদের মধ্যে তিনি অন্যতম যাদের আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু শাম বিজয়ের জন্যে প্রেরণ করেছিলেন। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাকে বিদায় কালীন তার উষ্ট্রবাহন ধরে হেঁটে হেঁটে অসীয়ত করছিলেন। তিনি তাকে বলেছিলেন, হে আল্লাহ তা‘আলার রাসূলের প্রতিনিধি! তুমি আরোহণ করবে নাকি আমি অবতরণ করবো? তিনি তার জবাবে বলেছিলেন, আমি আরোহী হবো না আর তুমি অবতরণকারী হবে না। আমি আশা করি আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় আমার জীবনের পাপরাশি শেষ হয়ে যাক।
উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর খিলাফত আমলে শাম বিজয়ের পর যখন তিনি মারা যান, তখন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু- তার ভাই মু‘আবিয়াকে রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু- তার স্থলাভিষিক্ত করেন। তারপর উসমান ইবন আফফান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু- এর খিলাফত আমলে ইয়াজিদের জন্ম হয়। মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু- শামে প্রতিষ্ঠিত হলেন এবং তারপর যা ঘটার তা ঘটে গেল।
ওয়াজিব হলো এ বিষয়ে মধ্যপন্থা অবলম্বন করা। ইয়াজিদ ইবন মু‘আবিয়ার সমালোচনার দ্বারা মুসলিমদেরকে পরীক্ষায় ফেলা থেকে বিরত থাকা। কারণ, এরূপ করা সম্পূর্ণ বিদ‘আত, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মাযহাবের পরিপন্থী। এ সব বিভ্রান্তির ফলে কতিপয় জাহিল মনে করে ইয়াজিদ ইবন মু‘আবিয়া শীর্ষ স্থানীয় সাহাবীগণের অন্যতম এবং ন্যায়পরায়ণ মুসলিম ইমাম। অথচ এটি সুস্পষ্ট ভুল।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/54/33
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।