hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মহা উপদেশ (‘আদী ইবন মুসাফিরের অনুসারীদের এর কাছে লেখা চিঠি)

লেখকঃ শাইখুল ইসলাম আহমাদ ইবন তাইমিয়্যাহ

২৬
কুরআন কারীম বিষয়ে পূর্বসূরীদের মাযহাব:
কারণ, এ উম্মতের সঠিক পূর্বসূরী ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মাযহাব হলো, কুরআন আল্লাহ তা‘আলার কালাম; অবতীর্ণ বাণী সৃষ্ট বা মাখলুক নয়, এটি আল্লাহ তা‘আলার থেকে শুরু হয়েছে এবং তার নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। এ কথাই পূর্বসূরি একাধিক আলেম বলেছেন। সুফীয়ান ইবন ‘উয়াইনা ‘আমর ইবন দীনার –যিনি বিশিষ্ট তাবে‘ঈনদের একজন ছিলেন -তিনি বলেন, আমি মানুষের মুখে সব সময় শুনে আসছি তারা এ কথাই বলেন।

যে কুরআন আল্লাহ তা‘আলা তার রাসূলের ওপর নাযিল করেছেন তাই হলো এ কুরআন যেটিকে মুসলিমগণ তিলাওয়াত করে এবং তাকে গ্রন্থাকারে লিপিবদ্ধ করে, তা অবশ্যই আল্লাহ তা‘আলার বাণী, অন্য কারো বাণী নয়, যদিও বান্দাগণ তা স্বীয় যের, যবর, পেশ ও নিজ কন্ঠে তিলাওয়াত করে এবং তারা তা অন্যের কাছে পৌঁছায়। কারণ, কালাম তার বলে ধরা হয় যে প্রথমে তা বলে। কালাম তার হয় না যে পৌছানোর জন্য বা উচ্চারণের উদ্দেশ্যে বলে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَإِنۡ أَحَدٞ مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ ٱسۡتَجَارَكَ فَأَجِرۡهُ حَتَّىٰ يَسۡمَعَ كَلَٰمَ ٱللَّهِ ثُمَّ أَبۡلِغۡهُ مَأۡمَنَهُۥۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ قَوۡمٞ لَّا يَعۡلَمُونَ ٦﴾ [ التوبة : ٦ ]

“যদি মুশরিকদের মধ্যে হতে কেউ তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে তাকে আশ্রয় দাও, যাতে সে আল্লাহ তা‘আলার বাণী শুনতে পায়, অতঃপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌঁছিয়ে দাও”। [সূরা আত-তাওবা, আয়াত: ৬]

এটিই কুরআন যা গ্রন্থকারে সংরক্ষিত রয়েছে। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

﴿بَلۡ هُوَ قُرۡءَانٞ مَّجِيدٞ ٢١ فِي لَوۡحٖ مَّحۡفُوظِۢ ٢٢﴾ [ البروج : ٢١، ٢٢ ]

“বরং এটি কুরআন মাজীদ, সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ আছে”। [সূরা আল-বুরুজ, আয়াত: ২১-২২]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿رَسُولٞ مِّنَ ٱللَّهِ يَتۡلُواْ صُحُفٗا مُّطَهَّرَةٗ ٢ فِيهَا كُتُبٞ قَيِّمَةٞ ٣﴾ [ البينة : ٢، ٣ ]

আল্লাহ তা‘আলার নিকট হতে এক রাসূল যিনি আবৃত্তি করেন পবিত্র গ্রন্থ। যাতে সু-প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থাসমূহ রয়েছে”। [সূরা-বাইয়্যিনাহ, আয়াত: ২-৩]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿إِنَّهُۥ لَقُرۡءَانٞ كَرِيمٞ ٧٧ فِي كِتَٰبٖ مَّكۡنُونٖ ٧٨﴾ [ الواقعة : ٧٧، ٧٨ ]

“নিশ্চয় এটা সম্মানিত কুরআন, যা সুরক্ষিত কিতাবে লিখিত আছে”। [সূরা আল-ওয়াকি‘আহ, আয়াত: ৭৭-৭৮]

আল-কুরআন তার বর্ণ, ছন্দ ও অর্থে আল্লাহ তা‘আলার বাণী। সবই কুরআন ও আল্লাহর বাণীর অন্তর্ভুক্ত। হরফের শেষের যের, যবর, পেশ, তানভীন, সাকিন হরফেরই পূর্ণতা। যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«من قرأ القرآن فأعربه فله بكل حرف عشر حسنات»

“যে ব্যক্তি কুরআন তেলাওয়াত করল তার শেষ বর্ণের ধ্বনি (যাবার, যের, পেশ, তানভীন, সাকিন ইত্যাদি) উচ্চারণ করে পড়ল, প্রতিটি হরফের জন্যে তার দশটি করে পুণ্য রয়েছে”। [বাইহাকী শুয়াবুল ঈমান, হাদীস, নং ৫৩৩]

আবু বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, কুরআনের ই‘রাব (যাবার, যের, পেশ, তানভীন, সাকিন ইত্যাদি) সংরক্ষণ করা কুরআনের কোনো কোনো হরফ (সাত হরফে নাযিল হওয়ার কোনো একটি হরফ) সংরক্ষণ করার চেয়ে আমার নিকট উত্তম।

মুসলিমগণ যদি স্বরচি‎হ্ন (নুকতা ও যের, যাবার ও পেশ) বিহীন কুরআন লিপিবদ্ধ করতে পছন্দ করে, তাহলে তা বৈধ। যেমন, সাহাবীগণ নুকতা ও হারাকাত বিহীন মাসহাফ লিপিবদ্ধ করেছেন। কেননা, তারা ছিলেন আদি আরবী ভাষী। আরবী ভাষাগত কোনো ভুল তাদের ছিল না। উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কুরআনের যে কপিটি তাবে‘ঈনদের যুগে বিভিন্ন শহরে প্রেরণ করেছিলে তাও ছিল অনুরূপ।

অতঃপর তাতে জনগণের তিলাওয়াত ভুল পরিলক্ষিত হয়। তখন প্রয়োজনের দাবীতে আল কুরআনের সংকলিত গ্রন্থাবলী স্বরচিহ্নের (নুকতা, যের, যাবার ও পেশ) দ্বারা হারাকাত দেওয়া হয়। তারপর বর্ণের ওপর আধুনিক স্বরচি‎হ্ন প্রদান করা হয়। বিষয়টি নিয়ে আলেমদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। ইমাম আহমাদ ও অন্যান্য আলেমদের থেকে এ বিষয়ে মতবিরোধ বর্ণিত রয়েছে। কেউ কেউ এটিকে অপছন্দ করেছেন এবং বলেছেন এটি বিদ‘আত। কেউ কেউ বলেছেন যে, মাকরূহ হবে না, প্রয়োজন দেখা দেওয়ার কারণে। অপর দিকে কেউ কেউ ই‘রাব বর্ণনার সুবিধার্থে হারাকাত দেওয়া পছন্দ করেছেন কিন্তু নুকতা দেওয়া অপছন্দ করেছেন।

সহীহ কথা হলো এতে কোনো প্রকার অসুবিধা নেই।

শব্দ যে আল্লাহর বাণীর অংশ এর সত্যায়ন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত হাদীস, যাতে এসেছে যে, আল্লাহ তা‘আলা শব্দ আকারে কথা বলেছেন। আদম আলাইহিস সালামকে সশব্দে ডেকেছেন। (যখন শব্দ প্রমাণিত হয় তখন তো স্বরচি‎হ্ন অবশ্যই প্রমাণিত। [অনুবাদক]) হাদীসে এ বিষয়ে বহু উদাহরণ বিদ্যমান। এটিই হলো পূর্বসূরি আলেম সমাজ ও আহলে সুন্নাহর আক্বীদার সারাংশ।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের ইমামগণ বলেন, আল্লাহ তা‘আলার কালাম মাখলুক তথা সৃষ্ট নয়। চাই তা পঠিত হোক বা লিখিত হোক। বান্দার কুরআন তেলাওয়াতকে মাখলুক বলা যাবে না। কারণ, তাতে অবতীর্ণ কুরআন প্রবিষ্ট। আর এও বলা যাবে না যে, তা মাখলুক নয়। কারণ, তাতে বান্দার কর্ম প্রবিষ্ট। পূর্বসূরী ইমামদের কেউ এ কথা কখনো বলেনি যে, বান্দার কুরআন তিলাওয়াতের শব্দ চিরস্থায়ী। বরং যারা এ কথা বলেছেন অর্থাৎ ‘বান্দার কুরআন তিলাওয়াতের শব্দ মাখলুক নয়’ তাদের প্রতিবাদ করেছেন। আর যে ব্যক্তি এ কথা বলে যে ‘মিদাদ’ বা কালি চিরস্থায়ী সে সবচেয়ে বড় মূর্খ ও সুন্নাহ থেকে অনেক দূরে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿قُل لَّوۡ كَانَ ٱلۡبَحۡرُ مِدَادٗا لِّكَلِمَٰتِ رَبِّي لَنَفِدَ ٱلۡبَحۡرُ قَبۡلَ أَن تَنفَدَ كَلِمَٰتُ رَبِّي وَلَوۡ جِئۡنَا بِمِثۡلِهِۦ مَدَدٗا ١٠٩﴾ [ الكهف : ١٠٩ ]

“তুমি বল: সমুদ্রগুলি যদি আমার রবের কথা লিপিবদ্ধ করার জন্য কালি হয়ে যায়, তবে আমার রবের কথা লেখা শেষ হওয়ার আগেই সমুদ্র অবশ্যই নিঃশেষ হয়ে যাবে যদিও এর মতো আরো সমুদ্র আনা হয়”। [সূরা আল-কাহাফ, আয়াত: ১০৯] উপরের আয়াত প্রমাণ করে যে, কালি দ্বারা আল্লাহ তা‘আলার কথাসমূহ লেখা হয়।

অনুরূপভাবে যারা বলে, কুরআন মাসহাফে নয়, মাসহাফে যা রয়েছে তা হলো, কালী, কাগজ, বিবরণ ও শব্দগুচ্ছ, তারাও পথভ্রষ্ট ও বিদ‘আতী। সুতরাং কুরআন হলো তা যা আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর অবতীর্ণ করেছেন, আর তা দুইটি গিলাফের মাঝখানে রয়েছে। কালাম মাসহাফেই- যে পদ্ধতিতে মানুষ তাকে কুরআন বলে জানে -তার রয়েছে বিশেষ বৈশিষ্ট্য যদ্বারা অন্য সব বস্তু থেকে তা স্বতন্ত্র।

অনুরূপভাবে যে সুন্নাতের ওপর বাড়াবাড়ি করে এবং বলে, বান্দার শব্দ ও তার আওয়াজ স্থায়ী, সেও গোমরাহ ও বিদ‘আতী। যেমন ঐ ব্যক্তি যে বলে, আল্লাহ তা‘আলা শব্দ ও আওয়াজ দ্বারা কথা বলে না। সেও বিদ‘আতী ও সুন্নাহকে অস্বীকারকারী।

অনুরূপভাবে যে বাড়ায় এবং বলে কালী সর্বপ্রাচীন, সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় গোমরাহ যে বলে মাসহাফে আল্লাহর কোনো কালাম নেই।

আর যে সব মূর্খরা এর ওপর বাড়িয়ে এ কথা বলে, কাগজ, চামড়া, কালী ও দেওয়ালের টুকরা আল্লাহর কালাম। সে ঐ ব্যক্তির মতো যে বলে, আল্লাহ তা‘লার কুরআন বলেন নি এবং কুরআন তার বাণীও নয়। কুরআনে কারীম আল্লাহর কালাম সাব্যস্ত করণে এ ধরনের বাড়াবাড়ি ঠিক তার বিপরীতে পন্থীদের নিষেধ করার মতই; যারা কুরআন আল্লাহর কালাম হওয়ার দিকে নিষেধ করার ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন করে থাকে। আর উভয় দলই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বাইরের লোক।

অনুরূপভাবে আল্লাহর কালামের নুকতা, হারাকাত ইত্যাদিতে আলাদা আলাদা করে হ্যাঁ-বাচক বা না-বাচক কিছু বলা উভয়টিই বিদ‘আত। এ বিদ‘আতটি (শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যার সময়কালের) একশ বা তার চেয়ে সামান্য বেশি বছর ধরে আবিস্কার হয়েছে। কারণ, যে বলে যে কালী দ্বারা হরফে নুকতা ও হারাকাত দেওয়া হয়, তা কাদীম বা সর্বপ্রাচীন সে অবশ্যই গোমরাহ ও মূর্খ। আর যে বলে কুরআনের ই‘রাব তথা শেষ শব্দের হারাকাত কুরআনের অন্তর্ভুক্ত নয় সেও গোমরাহ ও বিদ‘আতী।

বরং কর্তব্য হচ্ছে এটা বলা যে, এ আরবী কুরআন সবই আল্লাহর কালাম বা বাণী। আর তখন যাবতীয় হরফ ও ই‘রাব (শব্দের শেষের) বা হরকাতও সেটার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে যেমনটি যাবতীয় অর্থ তার অন্তর্ভুক্ত হবে।

আরও বলা হবে যে, দু’ গিলাফের মাঝখানে থাকা সবই আল্লাহর কালাম বা বাণী। কারণ, যদি মাসহাফটি নুকতা ও হারাকাত বিশিষ্ট হয় তখন এ কথা বলা যাবে যে, দুই গিলাফের মধ্যে পঠিতব্য কথা সবই আল্লাহ তা‘আলার বাণী। আর যদি নুকতা ও হারাকাত বিহীন লেখা হয়, যেমন পুরাতন মাসহাফ যেটি সাহাবীগণ লিপিবদ্ধ করেছেন, তখনও এ কথা বলা যাবে যে, দুই গিলাফের মধ্যে পঠিতব্য কথা সবই আল্লাহ তা‘আলার বাণী। সুতরাং মুসলিমদের মাঝে একটি নতুন বিষয়ের অবতারণা করে, তাদেরকে এমন কোনো ফিতনায় জড়ানো জায়েয নেই; যার কোনো বাস্তব উপকারিতা নেই, বরং তা কেবল শব্দগত মতপার্থক্য। কেননা দীনের মধ্যে দলীলবিহীন নতুন কিছু করা জায়েয নেই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন