hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মহা উপদেশ (‘আদী ইবন মুসাফিরের অনুসারীদের এর কাছে লেখা চিঠি)

লেখকঃ শাইখুল ইসলাম আহমাদ ইবন তাইমিয়্যাহ

৪৫
সালাত দীনের খুঁটি:
আর দীনের অন্যতম খুঁটি যা ছাড়া দীন প্রতিষ্ঠা হয় না তা হচ্ছে পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাত। এর প্রতি অন্যান্য বিধানের তুলনায় অধিক যতœবান হওয়া মুসলিমের ওপর ওয়াজিব। উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু- তার কর্মচারীদের প্রতি এ মর্মে চিঠি লিখতেন যে, আমার নিকট আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো সালাত আদায় করা। সুতরাং যে ব্যক্তি তার হিফাযত করল ও যথারীতি পালন করল সে তার দীনকে সংরক্ষণ করল ও দীন কায়েম করল। আর যে এটাকে নষ্ট করল তার পক্ষে অন্যসব কাজ নষ্ট করা অধিকতর সহজ। মহান আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে সর্বপ্রথম ওয়াজিবকৃত ইবাদাত হলো পাঁচ ওয়াক্ত সালাত। আল্লাহ তা‘আলা সালাত ওয়াজিব করার দায়িত্ব মি‘রাজের রজনীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সরাসরি কথোপোকথনের মাধ্যমে পালন করেন।

পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যাওয়ার পূর্ব মূহুর্তে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় উম্মতকে সর্বশেষ অসিয়ত সালাতের বিষয়ে করেছেন। তিনি বার বার বলেছেন।

«الصلاة الصلاة وما ملكت أيمانكم»

“সালাতের প্রতি যতœবান হও! সালাতের ব্যাপারে সতর্ক হও এবং তোমাদের কৃতদাসীর প্রতি যতœবান হও”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৫৯]

বান্দার আমলসমূহের মধ্যে সর্ব প্রথম সালাতের হিসাব নেওয়া হবে। সালাতই হলো, সর্বশেষ ইবাদাত যাকে দীন হারিয়ে ফেলবে। যখন সালাত চলে যাবে, তখন পূরো দীনই চলে যাবে। এটি দীনের মৌলিক খুঁটি। যখনই খুঁটি চলে যাবে তখন দীন ঢলে পড়বে।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«رأس الأمر الإسلام، وعموده الصلاة، وذروة سنامه الجهاد في سبيل الله»

“সকল কর্মের মূল হলো ইসলাম। তার খুঁটি হলো সালাত। আর এর সর্বোচ্চ চুড়া হলো আল্লাহ তা‘আলার রাস্তায় জিহাদ করা”। [সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ৩৬৫]

আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় গ্রন্থে বলেন,

﴿فَخَلَفَ مِنۢ بَعۡدِهِمۡ خَلۡفٌ أَضَاعُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَٱتَّبَعُواْ ٱلشَّهَوَٰتِۖ فَسَوۡفَ يَلۡقَوۡنَ غَيًّا ٥٩﴾ [ مريم : ٥٩ ]

“তাদের পর আসলো অপদার্থ উত্তরসূরীগণ, যারা সালাত নষ্ট করলো ও প্রবৃত্তির অনুসরণ করলো। সুতরাং তারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে”। [সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৫৯]

আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, নষ্ট করা অর্থ হলো নির্দিষ্ট সময় থেকে বিলম্ব করে পড়া। আর যদি তারা সালাত পরিত্যাগ করে তাহলে অবশ্যই কাফির হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿حَٰفِظُواْ عَلَى ٱلصَّلَوَٰتِ وَٱلصَّلَوٰةِ ٱلۡوُسۡطَىٰ ٢٣٨﴾ [ البقرة : ٢٣٨ ]

“তোমরা সালাতের হিফাযত কর এবং হিফাযত কর মধ্যবর্তী সালাতের”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৩৮]

সালাতের যতœ নেওয়া হলো সঠিক সময়ে তা সম্পাদন করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَوَيۡلٞ لِّلۡمُصَلِّينَ ٤ ٱلَّذِينَ هُمۡ عَن صَلَاتِهِمۡ سَاهُونَ ٥﴾ [ الماعون : ٤، ٥ ]

“ঐ সকল সালাত আদায়কারীদের জন্য ধ্বংস। যারা তাদের সালাত বিষয়ে উদাসীন”। [সূরা আল-মাউন, আয়াত: ৪-৫]

এরা হলো ঐসব লোক যারা সালাত বিলম্বে আদায় করে অর্থাৎ যখন সালাতের ওয়াক্ত চলে যায় তখন পড়ে।

মুসলিমগণ একমত যে, দিনের সালাতকে দেরি করে রাতে পড়া জায়েয নেই। অনুরূপভাবে রাতের সালাত বিলম্ব করে দিনে আদায় করা বৈধ নয়। এটি মুসাফির, অসুস্থ ও মুকিম কারো জন্যেই বৈধ নয়। তবে কোনো মুসলিমের বিশেষ প্রয়োজনে দিনের সালাত যোহর ও আসর একত্রিত করে আদায় করা জায়েয আছে। অনুরূপভাবে রাতের সালাত মাগরিব ও এশা এক ওয়াক্তে একত্র করে পড়া জায়েয আছে। এটি মুসাফির ও অসুস্থ ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য। তেমনি বর্ষা ও অনুরূপ অসুবিধাজনক অবস্থায়ও দুই ওয়াক্ত সালাত একত্রিত করে আদায় করা বৈধ।

আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমদের ওপর ওয়াজিব করে দিয়েছেন যে, তারা তাদের সাধ্যমত (সময়ে) সালাত আদায় করবে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ مَا ٱسۡتَطَعۡتُمۡ ١٦﴾ [ التغابن : ١٦ ]

“তোমাদের সাধ্যমত আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় কর”। [সূরা আত-তাগাবুন, আয়াত: ১৬]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«دَعُونِي مَا تَرَكْتُكُمْ، إِنَّمَا هَلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ بِسُؤَالِهِمْ وَاخْتِلاَفِهِمْ عَلَى أَنْبِيَائِهِمْ، فَإِذَا نَهَيْتُكُمْ عَنْ شَيْءٍ فَاجْتَنِبُوهُ، وَإِذَا أَمَرْتُكُمْ بِأَمْرٍ فَأْتُوا مِنْهُ مَا اسْتَطَعْتُمْ»

“আমি তোমাদের যার ওপর রেখে যাচ্ছি তার ওপর আমাকে তোমরা ছেড়ে দাও। তোমাদের পূর্বের যারা ধ্বংস হয়েছে, তার কারণ, তারা তাদের নবীদের বেশি বেশি প্রশ্ন করতে এবং মতবিরোধ করত। আমি যখন তোমাদের কোন বিষয়ে নিশেধ করি, তোমরা তা থেকে বিরত থাক। আর আমি যখন কোনো বিষয়ে তোমাদেরকে নির্দেশ দিই তা সাধ্যমত তোমরা বাস্তবায়ন কর”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭২৮৮]

পূর্ণ পবিত্রতা, পূর্ণ তেলাওয়াত, পূর্ণ রুকু ও সাজদাহসহ সালাত আদায় করা মুসল্লির ওপর অপরিহার্য। যদি সে ওযু ভঙ্গকারী অথবা অপবিত্র হয় আর যদি পানি না পায় অথবা পানি পাওয়া সত্ত্বেও সে অসুস্থ, ঠাণ্ডা ও অনুরূপ কোনো কারণে পানি ব্যবহারে ক্ষতির আশঙ্কা বোধ করে, এমতাবস্থায় সে পবিত্র মাটি দ্বারা মুখ মণ্ডল ও হাত মাসাহ করবে। তার পর সে সালাত আদায় করবে। উপরোক্ত কারণে আলিমদের ঐকমত্য অনুযায়ী সালাত বিলম্ব করা বৈধ নয়। অনুরূপভাবে কারা অন্তরীণ ব্যক্তি, আটক ও দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থ, পক্ষাঘাতগ্রস্তসহ নানা সমস্যা জর্জরিত ব্যক্তি, তাদের অবস্থার আলোকে সালাত আদায় করবে। আর যদি কেউ শত্রু এলাকায় অবস্থান করে তাহলে সে সালাতুল খাওফ বা ভয়ের সালাত আদায় করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَإِذَا ضَرَبۡتُمۡ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَلَيۡسَ عَلَيۡكُمۡ جُنَاحٌ أَن تَقۡصُرُواْ مِنَ ٱلصَّلَوٰةِ إِنۡ خِفۡتُمۡ أَن يَفۡتِنَكُمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْۚ إِنَّ ٱلۡكَٰفِرِينَ كَانُواْ لَكُمۡ عَدُوّٗا مُّبِينٗا ١٠١ وَإِذَا كُنتَ فِيهِمۡ فَأَقَمۡتَ لَهُمُ ٱلصَّلَوٰةَ فَلۡتَقُمۡ طَآئِفَةٞ مِّنۡهُم مَّعَكَ وَلۡيَأۡخُذُوٓاْ أَسۡلِحَتَهُمۡۖ فَإِذَا سَجَدُواْ فَلۡيَكُونُواْ مِن وَرَآئِكُمۡ وَلۡتَأۡتِ طَآئِفَةٌ أُخۡرَىٰ لَمۡ يُصَلُّواْ فَلۡيُصَلُّواْ مَعَكَ وَلۡيَأۡخُذُواْ حِذۡرَهُمۡ وَأَسۡلِحَتَهُمۡۗ وَدَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ لَوۡ تَغۡفُلُونَ عَنۡ أَسۡلِحَتِكُمۡ وَأَمۡتِعَتِكُمۡ فَيَمِيلُونَ عَلَيۡكُم مَّيۡلَةٗ وَٰحِدَةٗۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ إِن كَانَ بِكُمۡ أَذٗى مِّن مَّطَرٍ أَوۡ كُنتُم مَّرۡضَىٰٓ أَن تَضَعُوٓاْ أَسۡلِحَتَكُمۡۖ وَخُذُواْ حِذۡرَكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ أَعَدَّ لِلۡكَٰفِرِينَ عَذَابٗا مُّهِينٗا ١٠٢ فَإِذَا قَضَيۡتُمُ ٱلصَّلَوٰةَ فَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ قِيَٰمٗا وَقُعُودٗا وَعَلَىٰ جُنُوبِكُمۡۚ فَإِذَا ٱطۡمَأۡنَنتُمۡ فَأَقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَۚ إِنَّ ٱلصَّلَوٰةَ كَانَتۡ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِينَ كِتَٰبٗا مَّوۡقُوتٗا ١٠٣﴾ [ النساء : ١٠١، ١٠٣ ]

“আর যখন তোমরা ভূপৃষ্ঠে পর্যটন কর, তখন সালাত সংক্ষেপ [কসর] করলে তোমাদের কোনো দোষ নেই, যদি তোমরা আশংকা কর যে, কাফিরগণ তোমাদেরকে বিপদগ্রস্ত করবে। নিশ্চয় অবিশ্বাসীরা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। আর যখন তুমি তাদের (মুমিনদের) মধ্যে থাকবে, আর তাদের জন্যে (সালাতে ইমামত করবে) সালাত প্রতিষ্ঠিত করবে, তখন তাদের একদল যেন তোমার সাথে দণ্ডায়মান হয় এবং স্ব স্ব অস্ত্র গ্রহণ করে, অতঃপর যখন সাজদাহ সম্পন্ন করবে তখন যেন তারা তোমার পশ্চাদ্বর্তী হয় এবং অন্য দল যারা সালাত পড়ে নি তারা যেন অগ্রসর হয়ে তোমার সাথে সালাত পড়ে এবং স্ব স্ব সতর্কতা ও অস্ত্র গ্রহণ করে। অবিশ্বাসীরা ইচ্ছে করে যে, তোমরা স্বীয় অস্ত্র -শস্ত্র ও দ্রব্য সম্ভার সম্বন্ধে অসতর্ক হলেই তারা একযোগে তোমাদের ওপর নিপতিত হবে; এবং তাতে তোমাদের অপরাধ নেই-যদি তোমরা বৃষ্টিপাতে বিব্রত হয়ে অথবা পীড়িত অবস্থায় স্ব-স্ব অস্ত্র পরিত্যাগ কর এবং স্বীয় সতর্কতা অবলম্বন কর এবং নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা অবিশ্বাসীদের জন্যে অবমাননাকর শাস্তি প্রস্তুত করেছেন। অনন্তর যখন তোমরা সালাত সম্পন্ন কর তখন দাঁড়ানো, বসা ও শোয়া অবস্থায় আল্লাহ তা‘আলাকে স্মরণ কর, অতঃপর যখন তোমরা নিরাপদ হও তখন সালাত প্রতিষ্ঠিত কর। নিশ্চয় মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে সালাত আদায় করা অবশ্য কর্তব্য”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১০১-১০৩]

মুসলিম শাসকদের প্রতি সকল পুরুষ, মহিলা, শিশুসহ সর্বস্তরের মানুষকে সালাত আদায়ের নির্দেশ জারী করা ওয়াজিব। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«مروهم بالصلاة لسبع، واضربوهم على تركها لعشر، وفرقوا بينهم في المضاجع» .

‘‘তোমরা তাদেরকে সাত বছর বয়সে সালাতের আদেশ দাও। দশ বছর বয়সে সে সালাত পরিত্যাগ করলে তাকে বেত্রাঘাত কর, আর তাদের শয্যা পৃথক করে দাও”। [সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৫২৬; সুনান তিরমিযী: ৪৪৫/৩]

সালাতের পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তি যদি পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের কোনো একটি হতে বিরত থাকে অথবা কোনো একটি ফরয ইবাদাত পরিত্যাগ করে, তাহলে মুসলিম উম্মাহ এ মর্মে একমত যে, তার ওপর ইসলামী রাষ্ট্রের আদালত কর্তৃক ইসলামে ফিরে আসার সমন জারী হবে। যদি সে তওবা করতঃ স্ব-দীনে প্রত্যাবর্তন করে তাহলে ভালো। অন্যথায় তাকে হত্যা করতে হবে।

উক্ত উলামাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন, সালাত পরিত্যাগকারী দীন-চ্যুত কাফির। তার ওপর জানাযার সালাত আদায় করা যাবে না এবং মুসলিমদের কবরস্থানে তাকে দাফন করাও যাবে না। কেউ বলেন, ইচ্ছাকৃত সালাত ত্যাগকারী ডাকাত, হত্যাকারী ও বিবাহিত জিনাকারির ন্যায় হত্যা যোগ্য অপরাধী হবে।

সালাতের বিষয়টি হলো, মহা-গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তার মর্যাদাও সর্বাধিক। তাই সালাত পরি-ত্যাগকারীর শাস্তিও উপরোক্ত শাস্তির চেয়েও ভয়াবহ। কেননা, সালাত হলো দীনের স্তম্ভ ও খুঁটি। আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় কিতাবে সব ইবাদতের ওপর সালাতের গুরুত্ব ও মহত্বকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা কখনো তা এককভাবে বর্ণনা করেছেন। কখনো যাকাত, সবর, কুরবানী প্রভৃতির সঙ্গে উল্লেখ করেছেন। যথা, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَأَقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتُواْ ٱلزَّكَوٰةَ ٤٣﴾ [ البقرة : ٤٣ ]

“আর তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত দাও”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৪৩]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَٱسۡتَعِينُواْ بِٱلصَّبۡرِ وَٱلصَّلَوٰةِۚ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى ٱلۡخَٰشِعِينَ ٤٥﴾ [ البقرة : ٤٥ ]

“তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। এটি বড়ই কঠিন, তবে বিনয়ী ব্যক্তিদের কথা আলাদা”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৪৫, ৮৩, ১৬০; আরো দেখুন- সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৭৭; সূরা আন-নূর, আয়াত: ৫৬; সূরা আল-মুযযাম্মিল, আয়াত: ২০]

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَٱنۡحَرۡ ٢﴾ [ الكوثر : ٢ ]

“সুতরাং তোমার রবের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর এবং কুরবানি কর”। [সূরা আ-কাউসার, আয়াত: ২]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿قُلۡ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحۡيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ١٦٢ لَا شَرِيكَ لَهُۥۖ وَبِذَٰلِكَ أُمِرۡتُ وَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلۡمُسۡلِمِينَ ١٦٣﴾ [ الانعام : ١٦٢، ١٦٣ ]

“বল, নিশ্চয় আমার সালাত, আমার কুরবানি, আমার জীবন ও মরণ বিশ্বজগতের রব আল্লাহর জন্য। তার কোনো শরীক নেই। আমাকে এরই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আর আমিই সর্বপ্রথম মুসলিম (আত্মসমর্পণকারী)”। [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১৬২-১৬৩]

আর কখনো ভালো আমল দ্বারা শুরু করেছেন এবং সালাত দ্বারা সমাপনী করেছেন। যেমন, সূরা মা‘আরিজ-এ বর্ণিত হয়েছে,

﴿سَأَلَ سَآئِلُۢ بِعَذَابٖ وَاقِعٖ ١ لِّلۡكَٰفِرِينَ لَيۡسَ لَهُۥ دَافِعٞ ٢ مِّنَ ٱللَّهِ ذِي ٱلۡمَعَارِجِ ٣ تَعۡرُجُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَٱلرُّوحُ إِلَيۡهِ فِي يَوۡمٖ كَانَ مِقۡدَارُهُۥ خَمۡسِينَ أَلۡفَ سَنَةٖ ٤ فَٱصۡبِرۡ صَبۡرٗا جَمِيلًا ٥ إِنَّهُمۡ يَرَوۡنَهُۥ بَعِيدٗا ٦ وَنَرَىٰهُ قَرِيبٗا ٧ يَوۡمَ تَكُونُ ٱلسَّمَآءُ كَٱلۡمُهۡلِ ٨ وَتَكُونُ ٱلۡجِبَالُ كَٱلۡعِهۡنِ ٩ وَلَا يَسۡ‍َٔلُ حَمِيمٌ حَمِيمٗا ١٠ يُبَصَّرُونَهُمۡۚ يَوَدُّ ٱلۡمُجۡرِمُ لَوۡ يَفۡتَدِي مِنۡ عَذَابِ يَوۡمِئِذِۢ بِبَنِيهِ ١١ وَصَٰحِبَتِهِۦ وَأَخِيهِ ١٢ وَفَصِيلَتِهِ ٱلَّتِي تُ‍ٔۡوِيهِ ١٣ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ جَمِيعٗا ثُمَّ يُنجِيهِ ١٤ كَلَّآۖ إِنَّهَا لَظَىٰ ١٥ نَزَّاعَةٗ لِّلشَّوَىٰ ١٦ تَدۡعُواْ مَنۡ أَدۡبَرَ وَتَوَلَّىٰ ١٧ وَجَمَعَ فَأَوۡعَىٰٓ ١٨ ۞إِنَّ ٱلۡإِنسَٰنَ خُلِقَ هَلُوعًا ١٩ إِذَا مَسَّهُ ٱلشَّرُّ جَزُوعٗا ٢٠ وَإِذَا مَسَّهُ ٱلۡخَيۡرُ مَنُوعًا ٢١ إِلَّا ٱلۡمُصَلِّينَ ٢٢ ٱلَّذِينَ هُمۡ عَلَىٰ صَلَاتِهِمۡ دَآئِمُونَ ٢٣ وَٱلَّذِينَ فِيٓ أَمۡوَٰلِهِمۡ حَقّٞ مَّعۡلُومٞ ٢٤﴾ [ المعارج : ١، ٢٤ ]

“এক ব্যক্তি জানতে চাইল সে আযাব সম্পর্কে যা অবশ্যই সংঘটিত হবে। কাফিরদের জন্য তা প্রতিরোধ করার কেউ নেই। সে শাস্তি আসবে আল্লাহ তা‘আলার নিকট হতে যিনি (উচ্চ মর্যাদার অধিকারী) ঊর্ধ্ব গমনের পথগুলোর মালিক। ফিরিশতা এবং রূহ (জিবরীল) আল্লাহ তা‘আলার দিকে আরোহণ করবে এমন এক দিনে, যার পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। সুতরাং (হে নবী) ধৈর্য ধারণ করুন সুন্দর ও উত্তমভাবে। তারা সে দিনটিকে অনেক দূরে মনে করছে। কিন্তু আমি তা নিকটে দেখতে পাচ্ছি। সে দিন আকাশ হবে গলিত রূপার মতো, আর পাহাড়গুলো হবে রঙ্গিন পশমের মতো, সে দিন কোনো বন্ধু কোনো বন্ধুর খবর নিবে না, যদিও তাদেরকে মুখোমুখি দৃষ্টির সম্মুখে রাখা হবে, সে দিন অপরাধী ব্যক্তি আযাব থেকে বাঁচার জন্য বিনিময়ে তার সন্তানকে দিতে চাইবে, তার স্ত্রী ও ভাইকে, আর তার আত্মীয় স্বজনদের যারা তাকে আশ্রয় দিত। এমনকি পৃথিবীর সকলকে, যাতে তা (উক্ত আযাব) থেকে তাকে রক্ষা করতে পারে। না, কখনো নয়, ওটা জ্বলন্ত অগ্নিশিখা, যা চামড়া তুলে দিবে, জাহান্নাম সেই ব্যক্তিকে ডাকবে যে পেছনে ফিরে গিয়েছিল (আল্লাহ তা‘আলার হুকুম থেকে) এবং সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। সে সম্পদ জমা করত, অতঃপর তা আগলে রাখত, মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে খুবই অস্থির মনা করে, বিপদ তাকে স্পর্শ করলে সে উৎকণ্ঠিত হয়, কল্যাণ তাকে স্পর্শ করলে সে হয়ে পড়ে অতি কৃপণ, তবে সালাত আদায়কারীরা এমন নয়। যারা তাদের সালাতে স্থির সংকল্প”। [সূরা আল-মা‘আরিজ, আয়াত: ১–২৩]

সূরা মুমিনূনের শুরুতে বর্ণিত হয়েছে- আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿قَدۡ أَفۡلَحَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ١ ٱلَّذِينَ هُمۡ فِي صَلَاتِهِمۡ خَٰشِعُونَ ٢ وَٱلَّذِينَ هُمۡ عَنِ ٱللَّغۡوِ مُعۡرِضُونَ ٣ وَٱلَّذِينَ هُمۡ لِلزَّكَوٰةِ فَٰعِلُونَ ٤ وَٱلَّذِينَ هُمۡ لِفُرُوجِهِمۡ حَٰفِظُونَ ٥ إِلَّا عَلَىٰٓ أَزۡوَٰجِهِمۡ أَوۡ مَا مَلَكَتۡ أَيۡمَٰنُهُمۡ فَإِنَّهُمۡ غَيۡرُ مَلُومِينَ ٦ فَمَنِ ٱبۡتَغَىٰ وَرَآءَ ذَٰلِكَ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡعَادُونَ ٧ وَٱلَّذِينَ هُمۡ لِأَمَٰنَٰتِهِمۡ وَعَهۡدِهِمۡ رَٰعُونَ ٨ وَٱلَّذِينَ هُمۡ عَلَىٰ صَلَوَٰتِهِمۡ يُحَافِظُونَ ٩ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡوَٰرِثُونَ ١٠ ٱلَّذِينَ يَرِثُونَ ٱلۡفِرۡدَوۡسَ هُمۡ فِيهَا خَٰلِدُونَ ١١﴾ [ المؤمنون : ١، ١١ ]

“অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মুমিনগণ। যারা বিনয়-নম্র নিজেদের সালাতে। যারা অসার কার্য-কলাপ থেকে বিরত থাকে। যারা যাকাত দানে সক্রিয়। যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে নিজেদের স্ত্রী অথবা অধিকারভুক্ত দাসীগণ ব্যতীত, এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। সুতরাং কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা হবে সীমা লঙ্ঘনকারী। আর যারা আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। আর যারা নিজেদের সালাতে যতœবান থাকে। তারাই হবে উত্তরাধিকারী। তারা ফিরদাউসের উত্তরাধিকার লাভ করবে, যাতে তারা চিরস্থায়ী হবে”। [সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ১-১১]

পরিশেষে মহান আল্লাহ তা‘আলার নিকট আকুল আবেদন, তিনি যেন এর বিনিময়ে আমাকে ও আপনাদেরকে ঐ সকল ব্যক্তিদের ওয়ারিশ করেন যারা চিরস্থায়ী ভাবে জান্নাতুল ফিরদউস লাভে ধন্য হয়েছেন। আর তিনি যেন দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ দ্বারা আমার আপনাদের ও সকল মুমিন ভাইদের আমলনামা সমৃদ্ধ করেন।

«وَالسَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ، وَالْحَمْدُ لله وَحْدَه . وَصَلَّى اللهُ عَلٰى نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ وَآلِه وَصَحْبِه وَسَلَّمَ تَسْلِيْمًا كَثِيْرًا»

“আপনাদের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার রহমত ও বরকতের ধারা বর্ষিত হোক। সকল প্রশংসা এক আল্লাহ তা‘আলার জন্যে। আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বংশধর ও সহচরদের প্রতি শান্তি ও অফুরন্ত রহমত অবতীর্ণ হোক”। আমীন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন