hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মহা উপদেশ (‘আদী ইবন মুসাফিরের অনুসারীদের এর কাছে লেখা চিঠি)

লেখকঃ শাইখুল ইসলাম আহমাদ ইবন তাইমিয়্যাহ

২৩
তাওহীদের বাস্তবায়ন ও সব ধরনের শির্কের অণু-কণা থেকে সতর্ক করণ:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাওহীদকে বাস্তবায়ন করেন এবং উম্মতকে তা শিক্ষা দেন। তাই জনৈক ব্যক্তি যখন তার সামনে বলেছিল আল্লাহ তা‘আলা যা চান ও আপনি যা চান। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জবাবে বলেছিলেন,

«أجعلتني لله ندا؟ بل ما شاء الله وحده»

“তুমি কি আমাকে আল্লাহ তা‘আলার সঙ্গে শরীক করছ; বরং আল্লাহ তা‘আলা এককভাবে যা চান তাই হয়”।

তারপর বললেন,

«لا تقولوا : ما شاء الله وشاء محمد ولكن قولوا : ما شاء الله ثم شاء محمد»

“তুমি এভাবে বলবে না যে, আল্লাহ তা‘আলা যা চান ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা চান; বরং বলবে, আল্লাহ তা‘আলা যা চান অতঃপর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা চায়”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৩৪, সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২১১৭]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্যের নামে শপথ করতে নিষেধ করছেন। তিনি বলেন -

«من كان حالفا فليحلف بالله أو ليصمت»

“যে শপথ করতে চায় সে আল্লাহ তা‘আলার নামে শপথ করবে অথবা নীরব থাকবে”। [সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৬৮৫]

তিনি আরো বলেন,

«من حلف بغير الله فقد أشرك»

“যে আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্যের নামে শপথ করল সে শির্ক করল”। [সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ১৩৫]

তিনি আরো বলেন,

«لا تطروني كما أطرت النصارى ابن مريم إنما أنا عبد فقولوا عبد الله ورسوله»

“তোমরা আমাকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না, যেমন করে খ্রিস্টানগণ ইবন মারইয়ামের বিষয়ে বাড়াবাড়ি করেছে। নিশ্চয় আমি একজন বান্দা। অতএব, তোমরা বল, আপনি আল্লাহ তা‘আলার বান্দা ও তার রাসূল”। [সহীহ বুখারী ৪৭৮/৬]

এ কারণে আলেমগণ একমত হয়েছেন যে, কোনো ব্যক্তি কোনো সৃষ্ট বস্তুর নামে শপথ করতে পারবে না। যথা- কা‘বা ও অন্যান্য বস্তুর নামে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সাজদাহ করতেও নিষেধ করেছেন। কোনো কোনো সাহাবী তাকে সাজদাহ করতে চাইলে তিনি তাদের নিষেধ করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«لا يصلح السجود إلا الله»

“আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া সাজদাহ পাওয়ার উপযোগী কেউই নেই”। [সুনান তিরমিযী ৩২৪/৪]

তিনি আরো বলেন,

«لو كنت آمراً أحدا أن يسجد لأحد لأمرت المرأة أن تسجد لزوجها»

“আমি যদি এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে সাজদাহ দেওয়ার নির্দেশ দিতাম তাহলে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম সে যেন তার স্বামীকে সাজদাহ করে”। [সুনান আবু দাউদ ৬৭/৩]

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলেন,

«أرأيت لو مررت بقبري أكنت ساجدا له؟»

“তুমি যদি আমার কবরের পার্শ্ব দিয়া অতিক্রম কর তাহলে কি কবরকে সাজদাহ দিবে? তিনি বললেন, না”। [সুনান আবু দাউদ ৬৭/৩]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, فلا تسجد لي “আমাকে সাজদাহ করবে না”।

এজন্য কবরকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মৃত্যুকালীন অসুস্থতার সময় বলেন,

«لعن الله اليهود والنصارى اتخذوا قبور أنبيائهم مساجد»

“আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানদের প্রতি লা‘নত বর্ষণ করুন। কারণ, তারা নবীদের কবরসমূহকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করেছে।”

তারা যে কাজ করছে তা থেকে তিনি উম্মতকে সর্তক করে দিয়েছেন। ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, ‘যদি আশঙ্কা না হতো তাহলে ঘরের বাহিরে প্রকাশ্য স্থানে তার কবর দেওয়া হত কিন্তু মানুষ মসজিদ হিসেবে গ্রহণ করতে পারে এ সম্ভাবনায় তিনি তা অপছন্দ করেছেন’। [সহীহ বুখারী, সালাত অধ্যায়: ৫৩২/১]

সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর পাঁচ দিন পূর্বে বলেছেন:

«إن من قبلكم كانوا يتخذون القبور مساجد، ألا فلا تتخذوا القبور مساجد، فإني أنهاكم عن ذلك»

“তোমাদের পূর্বের লোকেরা কবরসমূহকে মসজিদে পরিণত করত। সাবধান! তোমরা কবরসমূহকে মসজিদে পরিণত করবে না। আমি তোমাদের এ বিষয়ে নিষেধ করলাম”।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন,

«اللهم لا تجعل قبري وثنا يعبد، اشتد غضب الله على قوم اتخذوا قبور أنبيائهم مساجد»

“হে আল্লাহ তা‘আলা! তুমি আমার কবরকে উপাসনার মূর্তি বানিয়ে দিও না। আল্লাহ তা‘আলার গযব ঐ সম্প্রদায়ের প্রতি প্রকট হয়, যারা নবীদের কবরসমূহকে মসজিদরূপে (ইবাদতের স্থান) গ্রহণ করেছে”।

তিনি আরো বলেন,

«لا تتخذوا بيتي عيدا ولا بيوتكم قبورا، وصلوا عليّ حيث كنتم فإن صلاتكم تبلغن»

“তোমরা আমার ঘরকে উৎসবস্থলে পরিণত করো না। আর তোমাদের গৃহগুলোকে কবরে পরিণত করো না। তোমরা যেখানেই থাক না কেন আমার ওপর দরুদ পাঠ কর। কেননা তোমাদের দরুদ আমার নিকট পৌঁছবে”। [সুনান আবু দাউদ: ৪৪৭/২]

এ কারণে পৃথিবীর সকল আলেম সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ শরী‘আতসম্মত নয় এবং এর নিকট সালাত পড়াও ইসলামী বিধি সম্মত নয়; বরং ইসলামের শীর্ষ স্থানীয় আলেম ও নেতৃবর্গের অভিন্ন সিদ্ধান্ত যে, কবরের পার্শ্বের সালাত ইবাদাত হিসেবে গৃহীত হবে না, বরং তা অবশ্যই বাতিল বলে গণ্য হবে।

মুসলিমদের কবর যিয়ারত করা, দাফনের পূর্বে মৃত ব্যক্তির সমমর্যাদা সম্পন্ন লোকের নেতৃত্বে তাদের জানাযার সালাত সম্পাদন করা সুন্নত। আল্লাহ তা‘আলা মুনাফিকদের প্রসঙ্গে বলেন,

﴿وَلَا تُصَلِّ عَلَىٰٓ أَحَدٖ مِّنۡهُم مَّاتَ أَبَدٗا وَلَا تَقُمۡ عَلَىٰ قَبۡرِهِ﴾ [ التوبة : ٨٤ ]

“তাদের মধ্যে কেউ মারা গেলে কখনই তুমি তার জানাযার সালাতে দাঁড়াবে না ও তার কবরের কাছে দাঁড়াবে না”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৮৪]

এ আয়াতের ‘দলীলুল খিতাব’ বা ভাষ্যের দাবী থেকে প্রমাণিত হলো যে, সাধারণ মুমিনগণের কবরের উপরে তাদের জন্য (জানাযার) সালাত আদায় করা যাবে এবং তাদের কবরের পার্শ্বে দাঁড়ানা যাবে।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণেরকে কবর যিয়ারত-কালীন নিম্নোক্ত দো‘আ শিক্ষা দিয়েছেন-

«السلام عليكم أهل دار قوم مؤمنين، وإنا إن شاء الله بكم لاحقون، يرحم الله المستقدمين منا ومنكم والمستأخرين، نسأل الله لنا ولكم العافية، اللهم لا تحرمنا أجرهم، ولا تفتنا بعدهم، واغفر لنا ولهم»

“হে মুমিন সম্প্রদায়ের গৃহকর্মী আপনাদের প্রতি শান্তি অবতীর্ণ হোক। আমরা ও ইনশা-আল্লাহ তা‘আলা আপনাদের সঙ্গে মিলিত হবো। আমাদের ও আপনাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী লোকদের প্রতি শান্তি অবতীর্ণ করুক। আমাদের ও আপনাদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ তা‘আলা তাদের প্রতিদান থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করিও না, তাদের পরে আমাদেরকে পরীক্ষায় অবতীর্ণ করিও না। আমাদেরকে ও তাদেরকে ক্ষমা করে দাও”। [মুসনাদ, হাদীস নং ২৪৮০১]

আর এটা এজন্যই যে, মূর্তিপূজার কারণসমূহের অন্যতম কারণ হলো, কবরকে সম্মান প্রদর্শন করা, সেখানে ইবাদাত ও অনুরূপ কর্ম সম্পাদন করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَقَالُواْ لَا تَذَرُنَّ ءَالِهَتَكُمۡ وَلَا تَذَرُنَّ وَدّٗا وَلَا سُوَاعٗا وَلَا يَغُوثَ وَيَعُوقَ وَنَسۡرٗا ٢٣﴾ [ نوح : ٢٣ ]

“তারা বলল, তোমরা তোমাদের ইলাহদেরকে ছেড়ে দিও না। ছেড়ে দিও না ওদ্দা, সুয়া‘আ, ইয়াগুসা, ইয়া‘উকা ও নাছরা (নামক মূর্তিদেরকে)”। [সূরা নূহ, আয়াত: ২৩]

সালাফদের একটি দল বলেন, এসব নামে বর্ণিত লোকেরা সমকালীন জাতির ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি ছিলেন। যখন তারা মারা গেলেন তখন তারা তাদের কবরের প্রতি মনোযোগী হয়ে পড়ল। তারপর তাদের ভাস্কর্য, প্রতিচ্ছবি নির্মাণ করে তাদের ‘ইবাদত করা শুরু করল।

তাই আলেমদের ঐকমত্য সংঘটিত হয়েছে, যে লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি সালাম করতে চায় সে তার কবরের পাথর স্পর্শ ও চুমু দিতে পারবে না। কারণ চুমা দেওয়া ও স্পর্শ করা বায়তুল্লাহ তথা আল্লাহ তা‘আলার ঘর কা‘বার রুকন বা কোণসমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট। সুতরাং আল্লাহ তা‘আলার ঘরকে মানুষের ঘরের সঙ্গে সাদৃশ্য করা যাবে না।

অনুরূপভাবে কবরে তওয়াফ, সালাত ও ইবাদতের জন্য সমবেতও হওয়া যাবে না। বস্তুত তওয়াফ, সালাত ও ইবাদাত করা আল্লাহ তা‘আলার ঘরসমূহের অধিকার। আর সেগুলো ঐ মসজিদসমূহ; যাতে উচ্চস্বরে আযানের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার নাম প্রচারের জন্যে, আল্লাহর যিকিরের জন্য আল্লাহ তা‘আলা অনুমতি দিয়েছেন। মানুষের ঘর (কবর)সমূহে উপরোক্ত ইবাদাত বৈধ হবে না। কারণ তা করলে ঈদ হিসাবে বিবেচিত হবে। যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, لا تتخذوا بيتي عيدا “তোমরা আমার ঘরকে উৎসবস্থলে পরিণত করো না”। [সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ২০৪২]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন